বেপরোয়া ভালবাসা পর্ব ২৩

0
1914

#বেপরোয়া_ভালবাসা
#পর্বঃ২৩
লেখনীঃ মনা হোসাইন

আদি চোখ খুলে খুব স্বাভাবিক ভাবে বলল,
-“কিছু বলছিলি…?

আদিবা কি উত্তর দিবে বুঝে উঠতে পারল না।
আদি কী তাহলে শুনেনি..?নাকি শুনেও না শোনার অভিনয় করছে? বিষয়টা আদিবার মাথায় ঢুকল না। আদি ঠোঁটের র*ক্ত মুছতে মুছতে বেশ শান্ত ভাবে বলল,
-“এখন তোর কি শাস্তি পাওয়া উচিত?

আদিবা এবারেও উত্তর দেওয়ার ভাষা খুঁজে পেল না সে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে দেখে আদি বাঁকা হাসল।
-“ঘটনা কী?

-“না মানে কিছু না…

-“আচ্চা চল তাহলে যাওয়া যাক। ভয় পেতে হবে না আজ কোন শাস্তি দিব না. যা করতে বলেছিলাম করছিস সে ভাল করে হোক বা খারাপ করে করেছিস তো। তোকে আগেই বলেছি এখনো বলছি তুই যদি আমার কথা শুনিস পৃথিবীর সব সুখ তোর পায়ের কাছে এনে দিব।

আদিবা আদিত্যের কথার মানে বুঝল না। আদি কি ইচ্ছে করেই প্রপোজালের ব্যাপারটা এড়িয়ে যাচ্ছে?

-“ভ ভ ভাইয়া…

-‘হুম কিছু বলবি…?

আদিবা কিছু বলতে চেয়েছিল। কিন্তু কথাগুলো পেটের মাঝে ঘুরপাক খেলেও মুখে আসছে না। গলার কাছে এসে আটকে যাচ্ছে কেন যেন বলে উঠতে পারছে না। আদিকে আজ অন্যদিনের মত রাগী লাগছে না তাকে বেশ খুশি খুশি লাগছে। ড্রাইভ করতে করতে মুচকি হাসছে আদিত্য যেন যুদ্ধ জয় করে ফিরছে। এদিকে কোন কারন ছাড়াই আদিবা নার্ভাস ফিল করছে। কেমন যেন লাগছে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে সে ভয় পাচ্ছে নাকি লজ্জা পাচ্ছে প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেল না।

-“আচ্ছা আদিবা ধর আজ রাতে আমরা বাসায় ফিরলাম না। সারারাত রাস্তায় রাস্তায় ঘুরলাম কেমন হবে ব্যপারটা? অদ্ভুত কিন্তু এক্সাইটেড টাইপের কিছু একটা হবে তাই না?

-“কিন্তু আমরা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরব কেন?

-“যুক্তিক প্রশ্ন রাস্তায় ঘুরার মত কিছু তো ঘটেনি।
আচ্ছা বাদ দে এই প্লেন ক্যান্সেল।

-“ভাইয়া আপনি একটু অদ্ভুত আচারন করছেন না?

-“করছি বুঝি..?

-“আপনি তো সবসময় আমার উপড় রেগে থাকেন আজ আমি আপনায় ব্যাথা দিলাম তবুও রাগ করলেন না..?

-“রাগ করতে ইচ্ছে হল না। জানিস আদিবা তুই দেখতে খুব মিষ্টি… আদিত্য কথা শেষ করার আগে আদিবার হিচকি উঠে গেল সে চোখ বড় বড় করে বলল।

-“ভাইয়া পানি খাব.

আদিত্য আদিবার দিকে তাকিয়ে আবারো হাসল। না তারপর স্টেয়ারিং এর পাশ থেকে পানির বোতল নিয়ে আদিবার দিকে এগিয়ে দিল। আদিবা এই আদিত্যকে চিনতে পারছে না। আদিত্যের আচারন আদিবার সুবিধার মনে হচ্ছে না অস্বাভাবিক লাগছে আর যাই হোক আদি কখনো আদিবাকে মিষ্ট বলতে পারে না।

-“কাকিয়া বলছিল তোকে নাকি কয়েকবছর ধরে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু বিয়ে হচ্ছে না ব্যাপারটা কি সত্য?

-“মা এসব বলল আপনায়..?

-“নাহ বাসায় সবাই আমার বিয়ের কথা বলছিল তখন তোর নামটাও শুনলাম। জিজ্ঞাস করায় বলল কোন এক অজানা কারনে তোর বিয়ে হচ্ছে না। কারন টা কী বলতো?

-“আমার বিয়ে না হওয়ায় আপনার খুব অসুবিধে হয়েছে মনে হচ্ছে…

-“তা তো একটু হয়েছেই..আচ্ছা বাদ দে তোর কেমন ছেলে পছন্দ বলতো দেখি খুঁজে পাওয়া যায় কিনা..

-“মজা করছেন?

-“কেন মনে হচ্ছে আমি মজা করছি.?

ভাইয়া আমার কথা বলতে ইচ্ছে করছে না। গল্প বাদ দিয়ে ড্রাইভ করুন।

আদিবা কত সংকোচ ভুলে মনের কথা বলেছিল আদি তার কথার কোন গুরুত্বই দিল না উলটে কত আবল তাবল কথা বলল দেখে আদিবার ভিষন রাগ হল।গাড়ি এসে বাসার সামনে থামতেই আদিবা হনহন করে ভিতরে চলে গেল। গিয়ে কিছুটা অবাক হল বাসার সবাই ড্রয়িং রুমে গোল সভা বসিয়েছে। এখানে বাসার প্রত্যেকেই উপস্থিত একমিনিটের জন্য আদিবার অসুস্থতার জন্য হয়ত সবাই অপেক্ষা করছে কিন্তু পরক্ষনেই মনে হল পরিবারের কেউই তাকে এতগুরুত্ব দিবে না,দেওয়া সম্ভব না।সে মরল কি বাঁচল তাতে কারো কিছু যায় আসে না। তাই দীর্ঘশ্বাস ফেলে সিঁড়ির দিকে পা বাড়াল সাথে সাথে তার মা পথ আগলে দাঁড়াল এর মধ্যেই আদিও এসে বাসায় ঢুকল কিন্তু ঠোঁটে দাগ থাকায় সে সবার সামনে দাঁড়াতে চাইল না তাড়াতাড়ি উপড়ে চলে যেতে চাইল কিন্তু সিঁড়ির অর্ধেক আসতেই তার পা দুটি আটকে গেল। সারা শরীর যেন কেঁপে উঠল। কপালের মাঝ বরাবর রগ ফুলে উঠল সেকি ঠিক শুনেছে? আদিত্য রাগি চোখে পিছন ঘুরে তাকাল।

নিচে আদিবার মা আদিবাকে প্রশ্ন করছেন,
-“কিরে চুপ করে আছিস কেন উত্তর দে আদিবা..ছেলেটা কে?

আদিবা অবাক হয়ে বলল,
-‘তুমি কি বলছ মা আমি বুঝতে পারছি না কিসের ছেলে..?

-“এত রাতে তোকে ফোন করে কে? তোর সাথে কোন ছেলের কথা বলতে থাকতে পারে.? তাও একবার না এই নিয়ে দশবারের উপড়ে ফোন দিয়েছে। কে সে জবাব দে। এই জন্যেই তুই বিয়েতে রাজি হোস না?

-“মা কিসব বলছো?

-“কি বলব তাহলে আমায় শিখিয়ে দে.. পাঁচ বছর ধরে তুই বাসার বাইরে যাস আত্মীয়রাও পর্যন্ত তোকে চিনে না তারমধ্যে ছেলে বন্ধু আসল কোথা থেকে..?

আদিবা উত্তর দেওয়ার আগেই আদির দিকে তাকাল কারন এখানে তাকে নিয়ে কে কি ভাবছে সে নিয়ে তার কোন চিন্তা নেই তার একমাত্র চিন্তা আদিকে নিয়ে কোন ছেলে রাতের বেলার তাকে ফোন করেছে এটা আদি কিছুতেই মানবে না সে যদি আদিবার বন্ধুও হয় তবুও না।

আদিবাকে তাকাতে দেখে আদি শক্ত গলায় বলল,

-“আদিবা সেকেন্ড অপশনটা ভাল ছিল



চলবে…!!
(পর্ব ছোট হয়েছে জানি বাট ৯ টা পার হয়ে গিয়েছে তাই আর লিখতে পারলাম না আগামীকাল বোনাস পার্ট দিয়ে দিব)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here