বিষাদময়_প্রহর পর্ব ১৩

0
914

#বিষাদময়_প্রহর
#লাবিবা_ওয়াহিদ
|| পর্ব ১৩ ||

চড়ের এক কোণে পানিতে পা ডুবিয়ে হাঁটছি।
অবাধ্য স্রোতের ঢেউ বারংবার পায়ের সাথে এসে বারি খাচ্ছে।
ছোট-বড় ঢেউয়ে আমার জিন্স আর কুর্তির নিচের অংশ প্রায় ভিজে গেছে, তাও ভালো লাগছে হাঁটতে।
অন্যরা দূরে হাঁটতে আর ছবি তুলছে।
অবশ্য আমিও তুলেছি সবার সাথে আর নিহান ভাইয়ের সাথেও কয়েকটা তোলা হয়েছে, তবে আমার ফোনে আর ওনার ফোন মিলিয়েই।
আর নিহান ভাইয়াও বেশ মজা করছে সকলের সাথে।
কিন্তু সাবা আপু যেন সারাক্ষণ নিহান ভাইয়ার সাথে লেগেই থাকবে।
এর ভাবগতি আমার একদম পছন্দ না তাই দূরেই দাঁড়িয়ে আছি।
এর ন্যাকামি সহ্য হয় না।
এতোগুলো মানুষ থাকতেও কেন যেন আমার একাই ভালো লাগছে।
প্রচুর বাতাস! বাতাসে আমার এক সাইডে ঝুলানো ওড়নাটা অবাধ্য হয়ে বাতাসের সাথে তাল মিলিয়ে উড়ছে।
আমি একবার ওড়না সামলাচ্ছি তো একবার জিন্স পা থেকে উপরে উঠাচ্ছি।
একসময় বিরক্ত হয়ে গেলাম ওড়না আর কুর্তি সামলাতে।
হুট করে সমুদ্রের দিকে নজর যেতেই হা করে তাকালাম।
সূর্য অস্ত যাচ্ছে।
সূর্যটা যেন সমুদ্রের গভীরে ডুব দিচ্ছে ঠান্ডা হবার জন্য।
আস্তে আস্তে সূর্য ডুবে গেলেও আকাশ কেমন লাল হলুদ রঙে ভরপুর।
সূর্য ডোবার সময় মনে হচ্ছিলো এই সুদীর্ঘ বিশাল সমুদ্র যেন সূর্যকে টুপ করে গিলে ফেললো।
নিজের এমন বাচ্চামো ভাবনায় নিজ মনেই হেসে দিলাম।
আলো কে বিদায় দিয়ে চারপাশে অন্ধকার নামতেই আমরা সমুদ্রের পার থেকে আবার হেঁটে হেঁটেই রিসোর্টের দিকে রওনা দিলাম।
নিহান ভাইয়া, নিবিড় ভাইয়াসহ আরও কিছু ভাইয়ারা এখানকার এক বড় বাজারের দিকে গেলো।
বারবিকিউ করার জন্য যা কেনাকাটা প্রয়োজন তাই সারতে গেছে তারা।
রাস্তাতেই মায়ের কল পাওয়ায় বেশ কিছুক্ষণ কথা হলো।
নানু নাকি কিছুটা সুস্থ এই আশ্বাসই দিলেন মা।
নানুর সাথেও কথা বললাম, তারা বললো সকালের দিকে নাকি কল দিয়েছিলো কিন্তু আমি ঘুমিয়ে থাকায় জিনিয়াকে মা জাগাতে নিষধ করেছিলেন।
এরপর কিছুক্ষণ মা আমায় একনাগারে উপদেশ দিয়ে গেলো,
এটা করবি না, সেটা করবি না, নিজের দিকে খেয়াল রাখবি, একা বের হবি না আরও অনেককিছু।
আমি শুধু চুপচাপ হজম করে গেলাম।
কথা শেষ করতে করতেই আমরা রিসোর্টে পৌঁছে গেলাম। রিসোর্টে ঢুকতেই ইনু দৌড়ে আমার কাছে এসে কোলে লাফ দিয়ে উঠে পরলো।
ইনুর এহেম কান্ডে সকলে ফিক করে হেসে দেয়, সাথে আমিও।
হিদ ইনুকে দেখে আমার থেকে দূরে সরে দাঁড়ালো।
ইনু হিদের এভাবে সরে যাওয়া বেশ ভালোভাবেই লক্ষ্য করলো সাথে হিদের ভাব-ভঙ্গিও।
ইনুর মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি আসতেই সে লাফ দিয়ে হিদের কাধে গিয়ে বসলো।
হিদ এক চিৎকার দিয়ে ইনুকে থাবা দিয়ে ফেলে অন্যদিকে দিলো দৌড়।
ইনু নিজেকে সামলে হিদকে জ্বালাতে হিদের পিছেই দৌড় লাগালো।
ওদের দুইজনের কান্ড দেখে সকলে হেসেই চলেছে।
হিদের দৌড়াদৌড়ির মাঝে আন্টি এসে বলে,

—“আরে আরে! এভাবে দৌড়াচ্ছিস কেন নাহিদা? দুইদিন পর মেয়ের বিয়ে হবে আর এই মেয়ে কিনা সামান্য বিড়ালের ভয়ে দৌড়াচ্ছে! এই নাহিদা দাঁড়া বলছি। ইনুউ!”

ইনুকে ধমক দিয়ে ডাকতেই ইনু থেমে গেলো।
আর ইনু থামতেই হিদ থামলো।
অনেকক্ষণ দৌড়ানোর ফলে বেচারী হিদ হাঁপিয়ে গেছে অনেকটা।
আমি এসবের মাঝে আগেভাগেই রুমে চলে আসলাম ফ্রেশ হতে।
ফ্রেশ হওয়ার পর অনেকটা হালকা লাগছে এখন।
নিচে গিয়ে দেখি নিহান ভাইয়ারা চলে এসেছে জরুরি কেনাকাটা সেরে।
আমি দেরী না করে রিসোর্টের পেছনে বাগানের দিকে গেলাম।
এখানে যে যার মতো কাজ করে যাচ্ছে কিন্তু নিহান ভাইয়াকে বাগানে দেখলাম না।
গেলো কই উনি?
নিজের অজান্তেই ভ্রুজোড়া কিঞ্চিৎ কুচকে ফেললাম নিহান ভাইয়ার চিন্তায়।
হঠাৎ বিকালের কথা মাথায় আসতেই মেজাজ খারাপ করে বাগানের দিকে এগোলাম।
নিবিড় ভাইয়া ইট-পাথর নিয়েয়ে চুলা বানানোর দায়িত্বে আছেন।
সে চুলা সেটিং করে মাঝে দিয়ে হাতে ভেঙ্গে ভেঙ্গে কয়লা ফেলছে।
নিবিড় ভাইয়ার পাশে খেয়াল করে দেখলাম এক ব্যাগ কয়লা, আর চুলাটাও অনেক বড় করে করা হয়েছে।
ভাইয়া সেই কয়লা জোরে চাপ দিয়ে ভাঙ্গার চেষ্টা করে চলেছে।
কিছুক্ষণ পর আদ্রান(হিদের কাজিন) ভাইয়া নিবিড় ভাইয়াকে হেল্প করতে চলে আসলো।
নিবিড় ভাইয়া আদ্রান ভাইয়ার থেকে চোখ ফেরানোর সময়ই সে আমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো।
আমাদের চোখাচোখি হতেই নিবিড় ভাইয়া বলে উঠলো,

—“ওভাবে সঙয়ের মতোন দাঁড়িয়ে না থেকে এখানে এসে তো হেল্প করতেই পারিস! এমন করে দাঁড়ায় আছোস যেন রানী ভিক্টোরিয়া দাঁড়িয়ে নিজের দাস-দাসীদের কাজ পর্যবেক্ষণ করছে।”

নিবিড় ভাইয়ার কথাতে আদ্রান ভাইয়া হো হো করে হেসে দিলো।
আমি রক্তচক্ষু দৃষ্টিতে ভাইয়ার দিকে তাকালাম।

—“নিহান ভাইয়ার মতো তুমিও শুরু করলা নিবিড় ভাইয়া!!”

—“তো কি করবো? তুই তো আমাদের কষ্টের তামাশা দেখোস!”

হঠাৎ কি একটা মনে আসতেই দাঁত কেলিয়ে বললাম,
—“ও আচ্ছা তাই! এখন যদি সেদিনে কান ধ…”

আমাকে কিছু বলতে না দিয়ে নিবিড় ভাইয়া তড়িঘড়ি করে বললো,
—“ওই দেখ গিয়ে আবার তোর ইনু আমার আদরের বোনটাকে জ্বালাচ্ছে।”

নিবিড় ভাইয়ার এমন কথা ঘুরানো দেখে আমি ফিক করে হেসে দিলাম।
তারপর ভ্রু জোড়া কুচকে হাসতে হাসতে নিবিড় ভাইয়াকে ইশারায় বললাম,”কেমন দিলাম?”
নিবিড় ভাইয়া ইশারা বুঝতে পেরে করুণ দৃষ্টিতে তাকালো যা দেখে আমার হাসির বেগ আরও বেড়ে গেলো।
আদ্রান ভাইয়া বুঝতে না পেরে বললো,

—“হ্যাঁ রে নিবিড় নাফিহা এমন হাসছে কেন?”

—“মাথায় যে বাঁদর চাপসে তাই পাগলের মতো হাসে।” বিড়বিড় করে বললো নিবিড়।

—“কিছু বললি?”

—“নাহ ভাইয়া কাজে মনোযোগ দি।”

আমাদের হাসাহাসির মাঝেই নিহান ভাইয়া এন্ট্রি নিলো।

—“কিরে এতো হাসাহাসি চলছে কেন?”

আমি হাসি দিয়েই নিহান ভাইয়ার দিকে তাকালাম।
কিন্তু নিহান ভাইয়াকে দেখে আমার হাসি থামিয়ে চোখ কপালে তুলে ফেললাম।
নিহান ভাইয়া কিছুটা ঢোলা টিশার্ট আর হাফপ্যান্ট পরেছে।
আমি হা করে তাকিয়ে চোখ নামিয়ে ফেললাম।
এর এমন পোশাক দেখেই বোঝা যায়, এর লজ্জাশরম বলতে কিছু নাই।
হঠাৎ দূরে তাকাতেই দেখলাম সাবা আপু যেন চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে নিহান ভাইয়াকে।
আপুর চাহনিতে আমি জ্বলে উঠলাম।
নিহান ভাই আমার থেকে চোখ ফিরিয়ে নিবিড় ভাইয়াদের দিকে তাকিয়ে কর্কশ গলায় বলে,

—“৫মিনিটের কাজে তোরা দুইটায় মিলে ১ঘন্টা লাগাস? বলি এই কয়লা ভাঙ্গতে তোদের এতো সময় লাগছে কেন? শরীরের এনার্জি কি সব সমুদ্রে বিসর্জন দিয়ে আসছোস? যা সর তোরা সামনে থেকে, তোদের মতো অকর্মারে আমি কয়লা ভাঙ্গতে বলসিলাম।”

বলেই নিবিড় ভাইয়াদের দিকে এগিয়ে গেলেন উনি।
ওনার মুখে “কয়লা” শব্দটা শুনতেই আমার আবার বিকালের কথা মনে পরে গেলো।
বিকালের কথা মনে করতে করতেই নিজের অজান্তেই গালে আমার হাত চলে গেলো।
হুট করে ম্যাসেজের টং শব্দে আমার ধ্যান ভেঙ্গে গেলো।
ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি নিহান ভাইয়ার ম্যাসেজ।
এই না উনি কয়লা ভাঙ্গতে গেছে ভেবেই আমি চুলার পাশে বসে থাকা নিহান ভাইয়ার দিকে তাকালাম।
নিহান ভাইয়া এক হাতে তার ফোন নিয়ে আমার দিকেই তাকিয়ে।
তার দৃষ্টিতে দুষ্টুমি ভাব স্পষ্ট!
আমি তড়িঘড়ি করে ম্যাসেজ সিন করলাম।
ম্যাসেজে লেখা,

—“কয়লার কথা এতো ভাবিস না। শুধু জেনে রাখিস আমাকে রাগালে এবারের মতো কয়লা না পোড়া পাতিলের কালি মুখে লাগাবো ভালো করে।”

নিহান ভাইয়ার এমন ম্যাসেজে আমি বিষম খেলাম।
তারপর বেশ কিছুক্ষণ নিহান ভাইয়াকে মনে মনে বকে উদ্ধার করে ফেললাম।
বদ লোক একটা! সারাক্ষণ আমার সামনে পিছে, আগে পরে আঠার মতো লেগে থাকবে।
সবসময় আমাকে হেয় করার ফন্দি, যত্তোসব!
তারপর নিহান ভাইয়ার দিকে না তাকিয়ে আশেপাশে হিদকে খুঁজতে লাগলাম।
আদ্রান ভাইয়া উঠে কোথায় যেন চলে গেলো আর নিবিড় ভাইয়ার ফোন আসতেই সে উঠে চলে গেলো।
নিশ্চয়ই ভাবী ফোন করেছে।
এখন আমি আশেপাশে না হিদকে পাচ্ছি, না জিনিয়াকে পাচ্ছি আর না আহিরা আপুকে।
তাই আমার আর কি করার, একটা চেয়ার টেনে বসে নিহান ভাইয়ার কয়লা ভাঙ্গা দেখছি।
উনি একেকটা কয়লা ব্যাগ থেকে বের করে হাতে নিচ্ছে আর তা হাতে নিয়ে ভেঙ্গে কয়েক টুকরো করে চুলার মাঝে রাখছে।

হিদ হাতে কিছু থালা, বাটি নিয়ে বাগানের দিকেই যাচ্ছিলো।
অসাবধানতায় হুট করে কারো সাথে জোরে ধাক্কা খেলো হিদ।
তার হাতে থাকা থালাবাটিগুলো পরতে গিয়েও পরেনি তার আগেই হিদ সেগুলোকে সামলে নিয়েছে।
সব সামলে হিদ যে মানুষটির সাথে ধাক্কা খেলো সেই মানুষটির দিকে মাথা উঁচু করে তাকালো।
নিমিষেই যেন হিদের হাসসোজ্জ্বল মুখখানা আঁধারে ঢেকে গেলো।
আদ্রানও বিনয়ের দৃষ্টিতে হিদের দিকে তাকিয়ে রয়।
মুহূর্তেই তার চোখজোড়ায় ভেসে উঠলো কঠিন আকাঙ্ক্ষা, না পাওয়ার বেদনা, চাপা কষ্টের পাহাড়।
হিদ যেন আদ্রানের চোখের ভাষা নিমিষেই পড়ে ফেললো কিন্তু তা তার মুখমন্ডলে ফুটিয়ে তুলেনি।
হিদ আদ্রানকে না চেনার ভান ধরে পাশ কাটিয়ে চলে আসতে নিতেই আদ্রানের কথায় হিদ থেমে গেলো।

—“নাহিদা, আমাকে কি আরেকটা সুযোগ দেয়া যায় না?”

নাহিদা তাচ্ছিল্যের একটা হাসি দিলো।
তাচ্ছিল্যের সুরেই বলে উঠলো,

—“আপনি আপনার শেষ সুযোগ ৩ বছর আগেই হারিয়ে ফেলেছেন আদ্রান ভাইয়া যখন আপনি নিজ থেকে আমার অনুভূতি গুলোর সাথে আবেগের তুলনা করেছেন। এখন আমারও মনে হচ্ছে কি জানেন, আবেগের বসে অনেক বড় ভুল করে ফেলেছিলাম যাইহোক আমি নিজেকে শুধরে নিয়েছি।”

বলেই নাহিদা আর একমুহূর্ত দাঁড়িয়ে না থেকে ধপাধপ পা ফেলে চলে গেলো।
আদ্রান করুণ দৃষ্টিতে নাহিদার যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো।
তার ভেতরটা যেন কেউ ক্ষত-বিক্ষত করে দিচ্ছে কিন্তু সে চাইলেও তার এই দীর্ঘ ক্ষততে মলম লাগাতে পারছে না।
৩ বছর আগের স্মৃতি তাকে যেন ক্ষণে ক্ষণে পুড়িয়ে মারছে।
এতো কঠিন কেন সবকিছু?

কমিশনার রহমান পুরো এলাকা তন্নতন্ন করে খুঁজেও নিজের ছেলেকে পেলো না।
আজ প্রায় ৩ দিন হতে চললো তার ছেলে ফয়সাল নিখোঁজ।
তিনদিন হলো তার স্ত্রীকে বাপের বাড়ি রেখে এসেছেন উনি।
সাজিদ অফিসের কাজে দেশের বাইরে গিয়েছে তার বসের সাথে।
এদিকে কমিশনার যখন কিছুতেই ফয়সালকে খুঁজে পেলো না তখন সে সিদ্ধান্ত নিলো থানায় ডায়রী করবে।
যেদিন সিদ্ধান্ত নিলো সেদিনই তার স্ত্রী মিসেস রহমান বাড়িতে ফিরলো।
কমিশনার রহমানকে চিন্তিত দেখে মিসেস রহমানের কপালে চিন্তার ভাঁজ পরলো।

—“হ্যাঁ গো তোমায় এমন চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন?”

—“৩ দিন ধরে ফয়সাল নিখোঁজ তো চিন্তিত হবো না?”

—“কি বললে নিখোঁজ?” অনেকটা অবাক হয়েই জিজ্ঞেস করলো মিসেস রহমান।

—“হ্যাঁ তাইতো থানায় ডায়রী করতে যাচ্ছি।”

কমিশনার রহমানের কথার মাঝেই মিসেস রহমান ফিক করে হেসে দিয়ে বলে,

—”কে বললো তোমায় আমাদের ফয়সাল নিখোঁজ?”

মিসেস রহমানের কথা শুনে কমিশনার রহমান ভ্রু কিঞ্চিৎ কুচকে ফেললো।
মিসেস রহমান হেসে আবার বললো,

—”তোমার ছেলে সেদিন রাতে হুট করেই তার বন্ধুদের নিয়ে ট্যুরে গেছে। তুমি তখন ঘুমিয়ে ছিলে বলে আমাকেই বলে গেলো। পরেরদিন সকালে তাড়াহুড়োয় খেয়ালই ছিলো না তোমাকে জানাতে।”

—“তো ফোন রিসিভ করে না কেন?”

—“সেখানে এই ঢাকা-শহরের মতো এতো নেটওয়ার্ক আছে নাকি? এমন জায়গায় গেছে আমি নিজেও ফোন দিয়ে পাই না। তাও সমস্যা নেই ছেলে আমাকে জানিয়ে গেছে এটাই অনেক।”
কমিশনার চুপ করে রইলো উত্তরে আর কিছু বললো না।

আজ ছেলেরা বারবিকিউ করবে আর আমরা মেয়েরা আরামসে নরম ঘাসের উপর বসে আড্ডা দিবো।
ছেলেদের সাথে আঙ্কেলও যোগ দিলো।
আন্টি অনেকবার বারণ করেছে যেন আগুনের সামনে না যায় এখন প্রচুর গরম কিন্তু কে শুনে কার কথা?
তাকে কিছু বললেই তার একটাই কথা,

—“আহ নিরুপমা! একদিন একটু আকটু পরিবারের জন্য করলে কিছু হবে না। তুমি বিরক্ত না করে চুপ করে বসে থাকো যাও।”

—“দেখেছিস নিহান দেখেছিস? বুড়ো হয়েছে তাও তার মাতলামো গেলো না!”

—“আহ মা তোমরা ঝগড়া থামাও তো। বাবা থাকতে চাইছে থাকুক।”

আন্টি গাল ফুলিয়ে আমার পাশে এসে বসে পরলো।
তাদের খুনশুটি দেখে আমার আগের দিনগুলোর কথা মনে পরে গেলো।
কতো সুখে ছিলাম আমরা, আজ বাবা থাকলে হয়তো প্রতিদিনই এমন খুনশুটি দেখতাম মা-বাবার।
মুহূর্তেই চোখের কোণ ভিঁজে গেলো।

চলবে!!!

বিঃদ্রঃ ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। গঠনমূলক মন্তব্যের প্রত্যাশায় রইলাম।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here