#বিরহের_নাম_তুমি
#পর্ব_৩৪
#মুন্নি_আক্তার_প্রিয়া
___________________
৮৯.
সময়ের বিবর্তনে ব্যস্ততা কাটিয়েও সূচনাকে সময় দিচ্ছে আদিল। তার খুব করে ইচ্ছে করে সারাক্ষণ সূচনার আশেপাশে থাকতে। চোখভরে দেখতে। হাতে হাত রাখতে। কিন্তু অতসব ইচ্ছের এখন মূল্য নেই। আর কয়েক মাস পরেই সূচনার ফাইনাল পরীক্ষা। সেই যে ফার্স্ট ইয়ারে মেয়েটার সাথে পরিচয় হয়েছিল! কীভাবে যে মাঝখানে এতগুলো মাস চোখের পলকেই কেটে গেল তা বোধ করি সে খেয়ালই করেনি। সময়কে কেন বেঁধে রাখা যায় না? সূচনার পরীক্ষা শেষ হলেই ওদের দুজনের বিয়ে। এইযে মাঝখানে আদিল এই কাঙ্ক্ষিত সময়ের জন্য উন্মুখ হয়ে অপেক্ষা করত, এ অপেক্ষাটা ছিল মিষ্টি মধুর। তার ভালো লাগে সূচনাকে পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে। অপরদিকে এতদিনেও সূচনা একটুখানিও স্বাভাবিক হতে পারেনি আদিলের সাথে। এমনটা নয় যে, সে চেষ্টা করেনি। চেষ্টা অবশ্যই করেছে সহজ এবং স্বাভাবিক হওয়ার। কিন্তু কোথায় যেন একটা বাঁধা! দ্বিধা। এতে কিন্তু আদিল একটুও ধৈর্যহারাও হয়নি। উপরন্তু সে সূচনার মাথায় হাত বুলিয়ে সর্বদাই বলে,’এত তাড়াহুড়ার তো কিছু নেই। বিয়ের পর গোটা সংসার জীবন পড়ে রয়েছে। তখন না হয় আবার চেষ্টা করবে।’
সূচনা স্মিত হাসত। মনে মনে তার সংশয়ও লাগত। আসলেই কি মানুষটা এত ভালো? নাকি সেও রাসেলের মতোই? ভয় লাগে। ভীষণ ভয় লাগে এসব ভাবলেই।
পাশাপাশি হাঁটছে দুজন। দুজনেই নিরব এবং নিশ্চুপ। দুজনের মনের মাঝেই চলছে নানান রকম চিন্তা-ভাবনা এবং কথাবার্তা। সূচনার পরনে কলেজের সাদা ড্রেস। কাঁধে কালো ব্যাগ। আদিল একবার সূচনার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল,’এই হিজাবটা কি আমার পাঠানো?’
সূচনা ভ্রুঁ কুঁচকে তাকায়। বিস্মিত হয় আদিলের প্রশ্নে। এমনকি সে ঠিক বুঝতেও পারেনি। আদিল নিজে থেকেই বলল,’পার্সেল গিয়েছিল না তোমার কাছে? এক ডজন সাদা হিজাবের।’
এবার যেন সূচনার সব মনে পড়ে যায়। সে ঐ হিজাবগুলো এখনো তুলে রেখে দিয়েছে। একটাও ব্যবহার করেনি। কিন্তু কথা হচ্ছে হিজাবগুলো তাহলে আদিল পাঠিয়েছিল?
‘কী হলো?’ প্রশ্ন করে আদিল। সূচনা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। কোনো উত্তর করে না।
‘তুমি কি হিজাবগুলো পাওনি?’
এবার মাথা নাড়ে সূচনা। হাতের ইশারায় বুঝিয়ে দেয় এই হিজাবটা তার দেওয়া নয়। আদিল এবার প্রশ্ন করে,’হিজাবগুলো তাহলে কী করেছ?’
সূচনা ব্যাগ থেকে তার ফোন বের করে। আদিলকে টেক্সট করে লিখে,’ঐগুলা এখনো ঐভাবেই রেখে দিয়েছি। একটাও পরিনি।’
ম্যাসেজটি পরে আদিল অবাক হয়ে বলে,’সেকি! কেন?’
সূচনা পূণরায় লিখল,’কোনো আগুন্তুকের পাঠানো কোনো কিছু আমি কেন ব্যবহার করব?’
আদিল এবার হেসে ফেলে। সূচনার মাথায় হাত রেখে বলে,’পাগলি! এখন তো জানলে, সেই আগুন্তুকটা কে? এখন তো আর সমস্যা থাকার কথা নয়।’
প্রত্যুত্তরে সূচনাও স্মিত হাসল।
________
৯০.
সূচনা বাড়িতে ফিরে দেখে চাচা-চাচি এসেছেন। চাচা সূচনাকে দেখতে পেয়েই হেসে বললেন,’এসেছিস তুই! আয় বোস।’
সূচনা চাচার পাশেই বসল। চাচা-চাচি মূলত এসেছেন জারিফের বিয়ের দাওয়াত দিতে। আপাতত বিয়েটা হবে একদমই ঘরোয়াভাবে। দুই পরিবারের অল্প কিছু সদস্যদের নিয়েই আয়োজিত এ বিয়ের অনুষ্ঠান। জারিফ সুস্থ হয়ে ফিরে এলেই জাঁকজমকভাবে পূণরায় বিয়ের অনুষ্ঠান করা হবে।
জারিফ এবং প্রীতির বিয়ে হবে শুনে সূচনা ভীষণ-ই খুশি হয়। অবশেষে দুটি ভালোবাসার মানুষ এক হচ্ছে।
তার উদ্দশ্যে চাচি বললেন,’এবার আর রাগ করে বসে থেকো না। বিয়েতে এসো। নয়তো দেখা যাবে তুমি না গেলে এবারও আমার ছেলে বিয়ে করবে না।’
চাচি কথাটা গম্ভীরভাবেই বললেন। তবে সূচনার খারাপ লাগল না। জারিফের যে প্রীতির সাথে বিয়ে হচ্ছে এতেই সে খুশি। তবে এবার সে সত্যিই বিয়েতে যাবে। চাচা আলাদাভাবে আদিলের পরিবারকেও দাওয়াত করে এসেছেন। বিয়ে কাল রাতে। তাই বিয়ের জন্য উপহার আজ রাতেই কিনে রাখতে হবে। সূচনা ঠিক করেছে ভূমি অফিস থেকে আসলে রাতে গিয়ে কিনে আনবে।
______
৯১.
আদিলের খালা এসেছেন আজ দু’দিন যাবৎ। সংসার সামলিয়ে বেড়াতে আসার খুব একটা সুযোগ হয়ে ওঠে না। আদিলের বিয়ে ঠিক হয়েছে এই সুবাদে অবশেষে সে সময় করে চলেই আসেন। সূচনার সম্পর্কে তিনি সবই শুনেছেন। কিন্তু সামনা-সামনি খোলামেলা কথা বলবেন বলে হঠাৎ করে সময় বের করে চলে আসা।
খালা চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বলেন,’দুনিয়াতে মেয়ের অভাব ছিল নাকি বল তো? কত সুন্দর সুন্দর মেয়ে আছে। ঐ মেয়ে তো আর একাই সুন্দর না। আর্থিক অবস্থাও তো মনে হয় খুব একটা ভালো না। তাহলে সব জেনেশুনে এমন একটা মেয়েকে ছেলের বউ করতেছিস কেন?’
আদিলের মা একটু নড়েচড়ে বসে বললেন,’আপা, একমাত্র ছেলের বউ হিসেবে আমারও প্রথম সূচনাকে পছন্দ ছিল না। আমারও ইচ্ছে ছিল সবদিক দিয়ে পার্ফেক্ট এমন একটা মেয়ে আসুক। টাকা-পয়সা কোনো ব্যাপার না। আল্লাহ্ আদিলের বাবাকে যতটুকু দিয়েছে আলহামদুলিল্লাহ্ আমরা ততটুকুতেই অনেক ভালো আছি। সূচনা বোবা, এটা শুধু সমস্যা না। বিরাট সমস্যা। প্রতিবেশী অনেকেও কানাকানি করে জানি। কিন্তু কী করব বলো? ছেলের সুখের আগে তো আর কিছু নেই। সংসার করবে আমার ছেলে। ওরই যদি সমস্যা না থাকে তাহলে আমাদের আর কী সমস্যা হবে?’
‘তাই বলে তুই বোঝাবি না আদিলকে? মা হিসেবে তোর কোনো দায়িত্ব নাই?’
‘অবশ্যই আছে। ওকে ভালো-মন্দের তফাৎ যা বোঝানোর ছোটোবেলাতেই বুঝিয়ে দিয়েছি। ও এখন প্রাপ্ত বয়স্ক। ওর অধিকারে হস্তক্ষেপ করার মতো সময় আর এখন নেই। জোর করে কোনো সিদ্ধান্তও আমরা এখন আর চাপিয়ে দিতে পারি না। তাছাড়া কথা বলতে পারায়, না পারায় কী আসে যায় বলো তো? একটা সহজ জিনিস সহজভাবে মেনে নিলেই দেখবে সবটা পানির মতো। আসলে, আমরাই সিম্পল একটা বিষয়কে জটিল করে তুলি।’
‘ভালোই! তোর মতো শাশুড়ি পাবে বলেই ঐ মেয়ে শান্তিতে থাকতে পারবে।’
মা মৃদু হেসে বললেন,’আমার ছেলের ভালো থাকা এখন শুধু আমাদের ঘিরেই নয় আপা। আদিলের ভালো থাকার আরেক নাম হচ্ছে সূচনা। আমার দ্বারা যদি মেয়েটা কখনো কষ্ট পায়, তাহলে সেই আঘাত আমার ছেলেও পাবে। আমার প্রতি ওর যেই শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, সম্মান সেটাতে ঘুনে ধরবে তখন। আমি যদি মেয়েটার সাথে অশান্তি করি, তাহলে রেষারেষি ঘরে থাকবেই। সামনা-সামনি হোক বা আগে-পিছে আদিলের চোখে আমি কিছুটা হলেও খারাপ হয়ে যাব। আমি তো সেটা চাই না। আর এমনও তো নয় যে, সূচনা ওকে ফাঁসিয়েছে বা ওদের রিলেশন ছিল। খোঁজ-খবর সব নিয়েছি। মেয়েটা অনেক বেশি সহজ-সরল। কারও সাথে কোনো সম্পর্ক ছিল না। এমনকি ও তো নাকি আদিলকেও বিয়ে করতে রাজি হচ্ছিল না। তাহলে বলো তো, ওর সাথে আমি ঝামেলা করবটা কী নিয়ে? নির্দোষ মেয়েটার সাথে অযথা আমি রেষারেষি করতে যাব কেন? আমি ওকে অনেক বেশি ভালোবাসব। তাহলেই না আমার প্রতি ওর ভালোবাসা জন্ম নেবে। তাছাড়া একটা কথা তো ভুলে না গেলেই নয়। আমার ঘরেও একটা মেয়ে রয়েছে। নুসরাতও একদিন পরের বাড়ি যাবে। আমি যদি পরের মেয়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করি, আল্লাহ্ না করুক একই কাজ যদি আমার মেয়ের সাথে করে ওর শাশুড়ি? তাহলে কি আমি মা হিসেবে সেটা সহ্য করতে পারব? ছেলে-মেয়ে বোবা, কানা ল্যাংড়া, খারাপ যাই হোক না কেন প্রতিটি বাবা-মায়ের কাছেই অমূল্য রতন। সূচনার মায়ের কাছেও তো ও অনেক দামি। তাহলে পরের মেয়েকে আমি কেন কষ্ট দেবো বলো তো?’
বড়ো খালা এ ব্যাপারে আর বেশি কথা আগাতে পারলেন না। চা শেষ করে বললেন,’যা তোদের ভালো মনে হয় করবি। আমার তো আর সমস্যা নেই।’
‘বাদ দাও তাহলে এসব। এতদিন পরে আসলে বলো আজ রাতে স্পেশাল কী রান্না করব?’
‘গরুর মাংস ভুনা কর। এত চেষ্টা করি তোর মতো করে গরুর মাংস ভুনা করতে! কিন্তু হয়ই না। বাড়িতে গরুর মাংস রান্না করলেই তোর দুলাভাই বলবে, আসমার হাতের গরুর মাংস ভুনার কোনো তুলনাই হয় না। এই হলো কাহিনী বুঝেছিস।’
দু’বোনই হেসে ওঠে এবার।
______
৯২.
শপিংমল ঘুরে ঘুরে সূচনা এবং ভূমিকা দু’বোনের-ই মাথা ঘুরে গেছে। কিন্তু জারিফের জন্য কী গিফ্ট নেবে সেটাই এখনো খুঁজে বের করতে পারেনি। এ মুহূর্তে ওদের মনে হচ্ছে ছেলেদের উপহার দেওয়াটাও খুবই জটিল এবং দুঃসাধ্য, অভাবনীয়। মেয়েদের তো এক পাতা টিপও উপহার দেওয়া যায়। কিন্তু ছেলেদের? হতাশ হয়ে দুজনে শপিংমলের গ্রাউন্ড ফ্লোরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। শপিংমলে এসেছে এক ঘণ্টারও বেশি সময়। এই সময়ে শুধু প্রীতির জন্য শাড়ি আর কিছু ব্র্যান্ডের কসমেটিক্স কিনেছে। অসহায় হয়ে পড়েছে জারিফের বেলাতেই। একবার ভেবেছে ঘড়ি, শার্ট-প্যান্ট এগুলো দেবে। পরক্ষণে মনে হলো এগুলো অনেক কমন হয়ে যায়। অফিস থেকে বাড়িতে ফিরে রেস্ট নেওয়ারও সময় পায়নি বলে ভূমিকা হাঁপিয়ে পড়েছে। তার মনে হচ্ছে বিছানা তাকে ডাকছে।
সূচনা অসহায় দৃষ্টিতে কতকক্ষণ বোনের দিকে তাকিয়ে থাকে। তারপর ইশারায় জিজ্ঞেস করে,’আদিলকে জিজ্ঞেস করব, কী গিফট্ করা যায়?’
ভূমিকা কী ভেবে যেন নাকচ করে দেয়। পরক্ষণেই বলে,’শোন, উপহার তো উপহার-ই। জারিফকে যদি আমরা দুই টাকার লজেন্সও দিই তাহলে সেটাও উপহার বুঝেছিস? সূতরাং এত ভাবনা-চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। চল, একটা ঘড়ি আর পাঞ্জাবি কিনে সোজা বাড়িতে যাব। আমার শরীর আর চলছে না।’
সূচনা বোনের কথাতে সায় দেয়। তারপর দুজনে মিলে চলে যায় ঘড়ির দোকানে। আকস্মিকভাবেই সেখানে দেখা হয়ে যায় শোহেব আর শিশিরের সঙ্গে। সাথে সাথে দাঁত কিড়মিড় করে তাকায় ভূমিকা।
অন্যদিকে শিশির খুশি হয়ে যায় দু’বোনকে দেখে। শোহেবকে দেখে অবশ্য কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেল না। শিশির বিস্মিত হয়ে বলল,’তোমরা এখানে!’
ভূমি স্বাভাবিকভাবেই বলল,’জারিফের জন্য কিছু শপিং করতে এসেছি।’
‘কী উপলক্ষে? বিয়ে?’
‘হ্যাঁ।’
‘গ্রেট! তা কী কিনলে?’
‘জারিফের জন্য এখনো কিছুই কিনিনি। ঘড়ি আর পাঞ্জাবি নেব ভাবছি।’
‘ওহ আচ্ছা। আমিও ভাইয়ার সাথে এসেছি। ঘড়ি অবশ্য ভাইয়ার জন্য।’
‘ওহ আচ্ছা।’ বলে ভূমিকা সেলসম্যানকে কিছু নিউ ব্র্যান্ডের ঘড়ি দেখাতে বলে। সূচনা পাশ থেকে ইশারায় ভূমিকে বলে,’আমি শিশির ভাইয়ার সাথে গিয়ে পাঞ্জাবি কিনে আনি? তাহলে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরা যাবে।’
ভূমিকা আড়দৃষ্টিতে একবার শোহেবের দিকে তাকায়। সে গম্ভীর হয়ে ঘড়ি দেখছে। মনে হচ্ছে মন-মেজাজ আজ বিশেষ ভালো নেই। সূতরাং ভূমির সাথেও তার কথা কাটাকাটা কিংবা ঝগড়া হওয়ার সম্ভাবনা একদম শূন্যের কোঠায়। এদিকে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরাটাও প্রয়োজন। তাই সূচনার প্রস্তাবে সে রাজি হয়ে যায়। শিশিরকে বলে,’একটা হেল্প করলে খুব খুশি হতাম।’
‘অবশ্যই আপু। বলো কী করতে হবে।’ বলল শিশির।
‘সূচনার সাথে গিয়ে একটা পাঞ্জাবি কিনে দিতে পারবে? আসলে অফিস থেকে ফিরে এখনো রেস্ট নেওয়া হয়নি। তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে পারলে আমার জন্য খুব ভালো হতো।’
‘কেন না? অবশ্যই। আমার কোনো সমস্যা নেই।’
‘ধন্যবাদ ভাই।’
ভূমি সূচনাকে টাকা দিয়ে বলল,’একটা পারফিউমও কিনে নিস।’
সূচনা মাথা নাড়িয়ে শিশিরের সাথে চলে যায়। শোহেব সব শুনেও এতক্ষণ নিশ্চুপ ছিল। এবার সে মুখ খুলল। বলল,’এখন আমার বেশ সন্দেহ লাগে। এটা আমার ভাই নাকি তার তথাকথিত আপুর!’
ভূমিকা দু’ভ্রু কুঁচকে তাকায়। সে শোহেবের কথাবার্তার আগামাথা কিছুই তো বুঝতে পারছে না। লোকটার কি আপনমনে কথা বলার স্বভাব রয়েছে নাকি? শোহেব এবার ভূমির দিকে তাকিয়ে বলল,’ওভাবে তাকিয়ে থাকার কিছু নেই। কথাগুলো আমি আপনাকেই বলেছি।’
‘কেন বলেছেন?’
‘কেন বলব না?’
‘এখানেও আপনার সমস্যা? আপনার মন এত ছোটো কেন?’
‘আমার মন ছোটো হতে যাবে কেন? আমার মন বিশাল বড়ো। বিশ্বাস না করলে প্রবেশ করে দেখুন।’
‘বিরক্তিকর!’
‘পুরনো কথা শুনতে ভালো লাগে না। নতুন কিছু ট্রাই করুন।’
‘আপনি মস্ত বড়ো একটা ফাজিল।’
‘সবার সামনে না। আপনার সামনে আসলেই কেন জানি ফাজিল হয়ে যাই। কেন বলুন তো?’
ভূমি আর একটা কথাও না বলে হাতে ধরে রাখা ঘড়িটা প্যাক করতে বলে সেলসম্যানকে। শোহেব জিজ্ঞেস করে,’বোবায় ধরেছে নাকি? আচ্ছা এই টপিক বাদ। এটা বলুন যে, আপনি আমায় ফলোটলো করেন নাকি? না মানে, হুটহাট যেখানে যাই সেখানেই চলে আসেন। প্রেমেট্রেমে পড়েননি তো?’
ভূমিকা বিল মিটিয়ে দিয়ে বের হওয়ার সময় বলল,’এত ফালতু সময় নেই আমার।’
দুজনের ঝগড়া দেখে মেয়ে সেলসম্যানটি এতক্ষণ হাসছিল। ভূমি চলে যেতেই শোহেব সেলসম্যানের দিকে তাকিয়ে বলল,’আশ্চর্য! মেয়েটা এত কাঠখোট্টা স্বভাবের কেন?’
চলবে…
[কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ। আইডি রেস্ট্রিকশনে থাকায় পোস্ট এবং কমেন্টে ব্লকে ছিলাম তাই গল্প দিতে পারিনি। সকলে রেসপন্স করে যাবেন।]