বিনিময়ে_তোমায়_চাই 1+2

0
1299

#বিনিময়ে_তোমায়_চাই?
#লাবিবা_ওয়াহিদ
#পার্ট_০১+০২
.
আজ আমার বিয়ে। নিজের স্বামীর কথা রাখতে বাবা মায়ের পছন্দে বিয়ে টা করতে বাধ্য হচ্ছি। প্রায় ২মাস হলো আমার হাসবেন্ড আমার প্রথম ভালোবাসা মারা যায়। বিয়েটা হচ্ছে আমারই বস আনাফ ওয়াহিদের সাথে।
,
১০মাস আগে,
,
রিফা আজ ওয়াহিদ কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিতে এসেছে। তবে এই অফিসে জয়েন হতে ভালো রেজাল্ট লাগে কিন্তু রিফার রেজাল্ট তেমন ভালো না সেখানে পিএ এর চাকরি তবুও রিফা ভাবলো একবার ট্রাই করতে ক্ষতি কি? এটা নিয়ে রিফা অনেক ভয় পেয়ে আছে। অনেকেই ইন্টারভিউ দিতে এসেছে প্রায় ২০০ থেকে ৩০০। রিফার যে করেই হোক তার চাকরি টা প্রয়োজন নইলে রিফার হাসবেন্ড ইমনের চিকিৎসা করবে কি করে। রিফা এবং ইমনের রিলেশন প্রায় ২বছর। ২জন ২জনকে অনেকটা ভালোবাসে। পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে দুইজন বিয়ে করে। রিফার পরিবার মেনে নিলেও ইমনের পরিবার মেনে নেয়নি। কারণ রিফা রা মধ্যবিত্ত। তাই ইমন রিফাকে নিয়ে আলাদা ফ্লাটে থাকতো। ইমনও একটা কোম্পানিতে জব করে সংসার চালাতো। খুব আনন্দেই চলছিলো তাদের ছোট্ট সংসার। কিন্তু রিফা হয়তো জানতো না তার আনন্দ স্থায়ী নয়। একদিন ইমন বাসায় ফেরার পথে খুব বড় এক্সিডেন্ট হয়। এতে রিফা অনেকটাই ভেঙ্গে পরে। প্রথম দুইদিন অনেক কস্টে টাকা জোগার করে ইমনের অপারেশন করায়। তারপর প্রায় তিনদিন লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। প্রায় অনেক টাকাই খরচ হয়ে যায়। প্রথম দিক দিয়ে সপ্তাহে ১০হাজারের মতো লেগেছে ইমনের চিকিৎসায়। অপারেশন এর টাকা আর খরচ রিফা এবং তার বাবাই দিচ্ছে। রিফা আর খরচ সামলাতে না পেরে ঠিক করলো তার শশুড় বাড়ি থেকে সাহায্য নিবে। কিন্তু তারাও সাহায্য করলো না। এতে রিফা আরও হতাশ হয়। পরে জানতে পারে ইমন তাদের আসল ছেলে না। তারপর আর তাদের সাথে যোগাযোগ করেনি রিফা। একদিন হসপিটালে গিয়ে জানতে পারে তার ভালোবাসা কোমায় আছে জ্ঞান কবে ফিরবে সেটা ডক্টর রাও বলতে পারছে না। এতে সেদিন রিফা পাথর হয়ে যায় অতি কষ্টে। তবুও হার না মেনে চাকরি খুজতে বেরিয়ে পড়ে।কারণ তার বাবাকে সে আর কষ্ট দিতে চায় না।নিজে চাকরি করে নিজের টাকায় ইমনের চিকিৎসা করাবে বলে।অনেক খুজে রিফা ওয়াহিদ কোম্পানি তে আসে জবের খোজে।তাই এখন ইন্টারভিউর জন্য অপেক্ষা করছে।সবার শেষে রিফাকে ডাকা হলো।সেও কাপা কাপা পায়ে প্রবেশ করে এবং তাদের সামনে বসে।রিফার সামনে বসে আছে আনাফ আর আনিফা।আনিফা হচ্ছে আনাফের বড় বোন।

আনিফা-তোমার ফাইল টা দেখতে পারি মিস?

রিফা-হ্যা আপু সরি ম্যাম এই নিন।

বলেই রিফা তার ফাইল টা আনিফার দিকে এগিয়ে দিলো

আনিফা মুচকি হেসে বললো,

আনিফা-সমস্যা নেই তুমি আমায় আপু বলেও ডাকতে পারো।

রিয়া- আচ্ছা আপু।

এবার আনিফা রিফার ফাইল চেক করতে লাগলো।

আনিফা- রিফা মেহেরিন তাইনা?

রিফা- হ্যা আপু।

আনিফা- তবে রিফা তোমার রেজাল্ট তো ভালো না।

রিফা- আপু রেজাল্ট খারাপ সেটা আমিও জানি তবে আমার যে চাকরি টা খুবই দরকার।

আনিফা- বাট রেজাল্ট ভালো না হলে আমরা জব দেইনা আবার সেটা পিএ,

রিফা- আপু প্লিজ একটু বুঝুন আমার যে খুব খুব জরুরি। আমি আপনায় প্রমিস করছি আমার কাজ আমি ঠিকমতোই করবো।

আনিফা- সরি।

রিফা আর কিছু বললো না মন খারাপ করে ফাইলটা নিয়ে চলে যাচ্ছিলো তখনই আনাফ বলে উঠলো,

আনাফ- দাড়ান মিস রিফা।

আনাফের কন্ঠে রিফা দাড়ালো এবং পেছনে ধুরে বললো,

রিফা- জি স্যার বলুন।

আনাফ- আপনার চাকরি কনফার্ম।

আনিফা- কি বলছিস তুই এসব?(অবাক হয়ে)

আনাফ- যা বলছি তাই হবে।

রিফা-সত্যিই স্যার?

আনাফ-হ্যা আজ থেকে আপনিই আমার পিএ।

রিফা-থ্যাংক ইউ সো মাচ স্যার।(খুশিতে)

আনাফ-ম্যানেজার?

ম্যানেজার-জী স্যার।

আনাফ-মিস রিফাকে তার এডভান্স দিয়ে দাও।

ম্যানেজার-ওকে স্যার আপনি(রিফাকে উদ্দেশ্য করে) আসুন আমার সাথে।

রিফা-ওকে স্যার।

বলেই রিফা ম্যানেজারর পিছে পিছে চলে গেলো।আর আনিফা আনাফকে বলতে লাগলো।

আনিফা-হচ্ছেটা কি আনাফ পাগল নাকি তুই এতো লো রেজাল্টের মেয়েকে নিজের পিএ করে নিচ্ছিস?

আনাফ-আমি যা করেছি একদম ঠিক করেছি

সব মেয়েরা ইন্টারভিউ না দিতে না আমাকে দেখতে আসে আর এই রিফা একবারের জন্যও আমার দিকে ফিরে তাকালো না তাহলে ভাব মেয়েটা ভালো হবে কিনা?

আনিফা-হুম তা ঠিক তোর আগের পিএ তো কাজের কাজ কিছুই করেনি শুধু শুধুই তোর পিছে ঘুর ঘুর করেছে।

আনাফ-সেজন্যই তো ওই বেয়াদব টার চাকরি নিয়েছি।

আনিফা-হুম তা ঠিক কিন্তু তোর কি মনে হয় এই রিফা নিজের কাজ ঠিকমতো করবে?

আনাফ-আমার চয়েস কখনো বিফলে যায়না।

আনিফা-হুম তা দেখা যাবে।

আনাফ-হুম দেখতে থাক।

আনিফা-তা আমি যাই তোর ইন্টারভিউ তো শেষ।

আনাফ-ওকে মেরি বেহেন যা।

আনিফা-হুহ কাজের সময় কাজি কাজ ফুরলে পাজি

আনাফ-অবশ্যই।(হেসে)

আনিফা-তোকে তো আমি পরে দেখে নিবো।(রেগে)

আনাফ-এখনি দেখ না মানা করেছে কে?

আনিফা প্রচন্ড রেগে বললো,

আনিফা-মর তুই। (রেগে)

বলেই অফিস থেকে বেরিয়ে সোজা বাসায় চলে গেলো।আর আনাফ সেখানে দাড়িয়েই হাসতে লাগলো।

তো এখন আমাদের হিরোর পরিচয় টা দিয়ে দেই।

গল্পের হিরো হলো আনাফ ওয়াহিদ। সবে মাত্র দেশের বাইরে থেকে পড়াশোনা করে দেশে ফিরেছে এক সপ্তাহ হলো যেদিন ফিরেছে তার পরের দিনই অফিস জয়েন করেছে। আনাফ দেখতে মা্হশাআল্লাহ মেয়েদের ক্রাশ। আর আনিফা হলো আনাফের বড় বোন। মাঝে মধ্যে অফিসে আসে আবার চলে যায়। আনাফের পিএ ছিলো পুরো আনাফ পাগলি। সারাদিন আনাফের দিকে হা করে তাকিয়ে থাকে কাজে কোনো মনই ছিলো না। বিভিন্ন অযুহাতে শুধুই আনাফের কাছে ঘেষার চেষ্টা করতো। আনাফ এতে অনেকটাই বিরক্ত আর রেগে ছিলো। তবুও প্রকাশ করতো না। গতদিনে তো মেয়েটা প্রপোজ করে বসে আনাফকে। আনাফ রেগে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে অফিস থেকে বের করে দেয়। আনাফের এই রূপ দেখে সকল মেয়ে স্টাফরাই ভয় পেয়ে যায়। তাই আর তারা আনাফের ধারে কাছে ঘেষার চেষ্টা করেনি। আর ছেলে স্টাফরা অল্প অল্প হাসে।

তারপর আনাফ ঠিক করে নতুন পিএ খুজবে। নোটিশ পাওয়ার সাথে সাথে প্রায় ১০০-২০০ মেয়ে ইন্টারভিউ দিতে চলে আসে। বেশিরভাগ চাকরির জন্য নয় আনাফকে দেখার জন্য। আনাফ বড় বিজন্যাসমেন এর ছেলে হওয়ায় সোসাইটি তে কম বেশি সবাই চিনে। কিন্তু এই ১০০ থেকে ২০০ মেয়ের মধ্যে রিফাকেই সিলেক্ট করে।

রিফা ম্যানেজারের সাথে যায় এবং রিফাকে এডভান্স হিসেবে ১ লাখ টাকা দিলো।রিফা এতো টাকা দেখে অবাক হয়ে বললো,

রিফা-স্যার এতো টাকা?

ম্যানেজার-হুম এডভান্স।

রিফা-ওওও আচ্ছা।

ম্যানেজার-এখন তুমি বাসায় যেতে পারো কাল থেকে সঠিক সময়ে আসবা কেমন?

রিফা-ওকে স্যার।

বলেই রিফা অফিস থেকে বেরিয়ে গেলো।আনাফ তার রুমের কাচের জানালা দিয়ে বাইরের ব্যস্ত শহর দেখছিলো।তখনি আনাফের নিচের দিকে চোখ গেলো এবং দেখলো রিফা একটা রিক্সায় করে কোথায় জেনো চলে গেলো।এতে আনাফ মুচকি হাসলো।

রিফা রিক্সায় করে সোজা হসপিটালের সামনে চলে আসলো।হসপিটালে পৌছে ইমনের কাছে গেলো।ইমনকে স্যালাইনের মাধ্যমে খাওয়ানো হয়।রিফা চোখ মুছে মুচকি হেসে বললো,

রিয়া- আজ আমি চাকরি পেয়েছি তাও জানো কোন কোম্পানিতে?ওয়াহিদ ইন্ডাস্ট্রিতে।এখন থেকে প্রচুর পরিশ্রম করে তোমায় সুস্থ করে তুলবো।জানো তোমার দুষ্টামি ভরা কথা গুলো খুব মিস করছি।আচ্ছা কবে তুমি আমার কাছে ফিরে আসবে সুস্থ হয়ে?

বলেই রিফার চোখ বেয়ে দুফোটা জল গড়িয়ে পড়লো।রিফা জানে এগুলো বললে ইমন কিছু শুনবে না,বলবেও না আর বুঝবেও না।তবুও এটা ভেবে বলে তার মন হালকা করার জন্য।রিফা সেদিনের মতো হসপিটাল থেকে বাসায় চলে আসে।রিফাকে আসতে দেখে রিফার মা বলে,

আম্মু-এসেছিস মা?

রিফা-হ্যা আম্মু।

আম্মু-জব হয়েছে?

রিফা-হ্যা মা ওয়াহিদ কোম্পানিতে পিএ এর চাকরিতে।




চলবে❤

(নতুন গল্প শুরু হলো। জানিনা আপনাদের কেমন লাগতে পারে। তবুও ভালো লেখার চেষ্টা করবো। ১ম পর্ব ছোট করে দিলাম ভালো রেস্পন্স পেলে নিয়মিত বড় করে দিবো ইনশাল্লাহ❤)

#বিনিময়ে_তোমায়_চাই?
#লাবিবা_ওয়াহিদ
#পার্ট_০২

আম্মু-কি বলিস এতো বড় কোম্পানির পিএ?(অবাক হয়ে)

রিফা-হ্যা আম্মু সত্যিই বলছি।

আম্মু-ইমনের কাছে গিয়েছিস?

রিফা-হুম আম্মু সেখান থেকেই আসলাম।

আম্মু-এখন কেমন আছে?

রিফা-আগের মতোই মা।কবে যে কোমা থেকে ফিরবে।(আনমনে)

আম্মু-চিন্তা করিস না সব ঠিক হয়ে যাবে।এখন যা গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয় তোর বাবা এখনি চলে আসবে।

রিফা-আচ্ছা মা।

বলেই রিফা নিজের রুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ফ্রেশ হয়ে রুম থেকে বেরিয়ে বাবার রুমের দিকে চলে গেলো একটা প্যাকেট নিয়ে।

রিফা-বাবা আসবো?

বাবা-হ্যা আয় শুনলাম ওয়াহিদ কোম্পানিতে পিএ তে জব পেয়েছিস?

রিফা -হ্যা বাবা।

বাবা-ভাবতে পারছি না তুই এতো কম রেজাল্ট নিয়ে এতো বড় ভালো একটা কোম্পানি তে চাকরি পেয়েছিস।

রিফা-হুম।

বাবা-পড়াশোনা তো ভালো করে করতেই পারিস নি ইমনের………

পুরোটা না বলে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে।রিফা কিছু বলছে না চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে আছে।

বাবা-আচ্ছা বাদ দে এখন বল কি বলতে এসেছিস?

রিফা-আসলে বাবা…….

বলেই রিফা তার প্যাকেট টা তার বাবার হাতে দিলো

বাবা-কি আছে এতে?

বলেই প্যাকেট টা খুলে দেখলো অনেক টাকা।এতো টাকা দেখে রিফার বাবা অবাক হয়ে যায় এবং বলে,

বাবা-এতো টাকা কোথায় পেলি আর আমাকেই বা এতো টাকা দিলি কেন?

রিফা-টাকা টা চাকরিতে এডভান্স।

বাবা-ওও তা আমায় কেন দিচ্ছিস?

রিফা-তুমি ইমনের চিকিৎসার জন্য অনেকের কাছেই ধার করেছো তাদের ধার এটা দিয়ে মিটিয়ে দিবে।

বাবা-আরে তোর টাকা তোর কাছেই রাখ আমি ঠিক মিটিয়ে দিবো।

রিফা-না বাবা আমি চাইনা তুমি আমার জন্য কারো কাছে অপমানিত হও।অনেক তো করেছো তুমি আর কতো করবে?

বাবা-যতদিন বেচে আছি।

রিফা-ওওহ বাবা অনেক করেছো এবার তো আমায় করতে দাও?

রিফার বাবা হেসে বললো,

বাবা-আচ্ছা আচ্ছা তুই করিস।

রিফাও মুচকি হাসলো।

এইদিনে,

রানিয়া ওয়াহিদ টিভি দেখছে এমন সময়ই আনিফা বাড়ি ঢুকে।আনিফাকে দেখে রানিয়া বেগম জিজ্ঞেস করলো,

রানিয়া-কি পিএ হলো?

আনিফা-হ্যা মাম্মা।

রানিয়া-ওহ তা তুই এতোক্ষণ কোথায় ছিলি?

আনিফা-আসলেএ পিয়ানু……..

রানিয়া-এখনো তোর পিয়ানুর অভ্যাস টা গেলো না?

আনিফা-ট্রাই করেছি ভুলার কিন্তু তবুও ভুলতে পারিনা।

রানিয়া-ওওওহ এই মেয়েকে নিয়ে পারিনা,আচ্ছা যা রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয় আমি খাবার দিচ্ছি।

আনিফা-আচ্চা মাম্মা।

বলেই আনিফা রুমে চলে গেলো।এইদিকে রানিয়া বেগম খাবার বাড়তে লাগলো।কিছুক্ষণের মধ্যেই আনিফা চলে আসলো।আনিফা নিচে নেমে খাবার টা সেরে টিভি দেখতে থাকলো।সন্ধ্যা ৭ টায় আনাফ অফিস থেকে আসলো।বাসায় এসে দেখে আনিফা সিরিয়াল দেখছে।

আনাফ-কিরে সিরিয়াল দেখে শশুর বাড়িতে আগুন লাগাবি নাকি?

আনিফা-ওই বজ্জাত তোর কি আর খেয়ে দেয়ে কাজ নেই সবসময় আমার পেছনে লাগিস?

আনাফ-তোরেই যদি না জালাতে পারি তাহলে এতো বড় কোম্পানির এমডি হলার কোন দুঃখে?

আনিফা-তোর লন্ডনে থাকাই উচিত ছিলো কেন যে মরতে এখানে এলি ধুরররররর।

আনাফ-কেন আমজ আমার বাড়িতে আসন না তো তোর শশুরবাড়িতে যাবো নাকি?

আনিফা-এই তুই সমসময় এতো শশুরবাড়ি শশুরবাড়ি করিস কেন?

আনাফ-আমার টা নাই তাই তোর টা বলি।

আনিফা-আমারও শশুরবাড়ি নেই।

আনাফ-তাহলে রায়হান(আনিফার উডবি হাসবেন্ড) মেয়বি জংগল থেকে উঠে আসছে।

রানিয়া-আহ তোরা কি শুরু করলি বলতো?

আনিফা-দেখো না মাম্মা কি শুরু করেছে তখন থেকে

আনাফ-মাম্মা আমি কিছুই করি নি।

আনিফা-না মাম্মা ও মিথ্যা বলছে।

রানিফা-আহ হয়েছে অনেক বলছিস প্রতিদিন একই কাহিনী শুনতে।

আনাফ-কিন্তু মাম্মা………

রানিয়া-অনেক বলেছিস এখন এখান থেকে যা ফ্রেশ হয়ে আয়।

আনাফ-ওকে।

বলেই আনাফ নিজের রুমে চলে গেলো।

রাতে,

রিফা ডিনার করে নিজের রুমে চলে আসলো।তারপর আলমারি থেকে একটা ছবি নিয়ে বিছানার দিকে গেলো।শুয়ে শুয়ে ছবিটার দিকে তাকিয়ে ভাবছে পুরোনো স্মৃতি গুলো।হ্যা ইমনের ছবি সেটা।ইমন আর রিফা দুইজন এক সাথে।ছবিটা দেখতে দেখতেই রিফা ঘুমিয়ে পড়লো।

এইদিকে,

আনাফ বেলকনিতে বসে রাতের আমাশ দেখছে আর কফি খাচ্ছে।এটা আনাফের রেগুলার অভ্যাস।কিন্তু আজ কেন জানিনা আনাফের বারবার রিফার চেহারাটা ভেসে উঠছে।

আনাফ-(এই মেয়েটা কে নিয়ে আমি এতো ভাবছি কেন?ধুর কি যে হচ্ছে।)

আরও কিছুক্ষণ থেকে রুমে চলে আসলো।

পরেরদিন,

রিফা খুব তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে এবং ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নিলো।তারপর রেডি হয়ে সোজা হাসপাতালে চলে গেলো ইমনের সাথে দেখা করার জন্য।হসপিটালে গিয়ে দেখলো ইমন আগের মতোই আছে।রিফা গিয়ে ইমনের পাশে বসলো।রিফা জলজল চোখে বললো,

রিফা-আজ আমার অফিসের প্রথম দিন।আমি নিজের জান লাগিয়ে দিবো তোমায় ভালো চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করতে।তোমায় ছাড়া কতদিন কেটে যাচ্ছে।থাকতে পারছি না আর।প্লিজ তাড়াতাড়ি আমার কাছে ফিরে এসো।তোমার কি আমার কথা একদমই মনে পড়ছে না?

বলেই কিচ্ছুক্ষণ কাদলো রিফা।তারপর চোখ মুছে বললো,

রিফা-আচ্ছা এখন আমি আসি কেমন?নইলে দেরি হয়ে যাবে।

বলেই ইমনের মাথায় হাত বুলিয়ে চলে আসলো অফিসে।ম্যানেজার রিফাকে দেখে রিফার কাছে গিয়ে বললো,

ম্যানেজার -আসো তোমাকে তোমার কেবিন দেখিয়ে দেই।

রিফা-ওকে স্যার।

তারপর ম্যানেজার ওকে ৭ম তলায় নিয়ে গেলো। রিফা ৭ম তলা দেখে আরো অনেক অবাক।কারণ ফাস্ট ফ্লোর এর থেকে ৭ম ফ্লোর আরো অনেকটা বেশি সুন্দর।এখানে প্রায় অনেক স্টাফও আছে।সবাই যে যার মতো কাজ করছে।ম্যানেজার রিফাকে রিফার কেবিনে যেতে যেতে বললো,

ম্যানেজার -এটাই হলো স্যার এর কেবিন। যখন দরকার পড়বে স্যার এর কাছে আসবে।

রিফা-আচ্ছা স্যার।

তারপর ম্যানেজার রিফার কেবিন দেখিয়ে বললো,

ম্যানেজার – এখন থেকে এটা তোমার কেবিন।

রিফা কেবিন দেখে তো পুরো অবাক।কারণ ২ পাশের দেওয়াল পুরো কাচের।আর আরেক দেওয়ালে কয়েকটা ছোট বড় পেইন্টিং।রুমটা বেশি বড়ও না আবার বেশি ছোটও না।খুব ভালো লেগেছে রিফার রুমটা। পরিবেশটা খুবই মনোরম।ম্যানেজার রিফাকে রেখে নিজের কাজে চলে গেলো। রিফা চেয়ারে বসে পড়লো আর ভাবতে লাগলো এখন সে কি করবে।এমন সময়ই টেবিলে থাকা ল্যান্ডফোনে কল আসে।রিফা তাড়াহুড়ো করে কল্টা রিসিভ করলো,

রিফা-হ্যা……. হ্যালো?

আনাফ-আমার কেবিনে আসুন ফাস্ট।

রিফা -ও….ওকে স্যার।

বলেই রিফা দৌড়িয়ে আনাফের কেবিনে গিয়ে বললো,

রিফা-মে আই কাম ইন স্যার।

আনাফ-ইয়েস কাম।(বাহ ভদ্রতা আছে ভালো)

রিফা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো।কারণ ভার্সিটিতে একবার এক টিচার রিফাকে তার কেবিনে ডেকেছিলো রিফাও গিয়েছিলো তবে পারমিশন আর দরজায় নক ছাড়া।এ নয়ে রিফাকে যে কতো অপমান করেছে যে দরজা দেখলেই তার ওইদিনের ঘটনা মনে পড়ে যায়।রিফা আস্তে আস্তে গিয়ে বললো,

রিফা-স্যার কিছু বলবেন?।

আনাফ-হুম তা তো অবশ্যই নইলে তোমার চেহারা দেখার জন্য দেখেছি নাকি?

রিফা-না আসলেএ……সরি স্যার।

আনাফ-ইটস ওকে।

তখনি আরেকজন নক করলো,

আনাফ- কাম ইন।

নিধি- স্যার আমায় ডেকেছেন?

আনাফ- হ্যা……






চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here