বামনের ঘরে চাঁদ পর্ব ১৫

0
605

বামনের ঘরে চাঁদ

সাজিয়ানা মুনির

১৫

( কার্টিসি ছাড়া কপি নিষেধ )

নীল আকাশটায় মেঘ জমেছে। চারিদিক অন্ধকারে ঢেকেছে । খোলা জানালা মাড়িয়ে সুড়সুড় করে দমকা হাওয়া আসছে। নিশ্চুপ ঘরটায় বিদ্যুৎ চমকানোর ভারী ভারী আওয়াজ ভাসছে। সারা ঘরের লোক স্তব্ধ এখনো। চাঁদের কাণ্ডে হতভম্ব।
চাঁদের খোলা কেশ শূন্য আকাশের কালো মেঘেদের মত উড়ছে। র/ক্তিম চাহনি, দৃষ্টিতে অগ্নির মত তেজ। নির্ভয়, অশঙ্কভাবে চেয়ে। হাত থেকে চুঁয়ে চুঁয়ে র/ক্ত ঝরছে। গলায় পোছ লেগে খানিক কে/টেছে। চোখজোড়া থেকে যেন আগুন ঝরছে। আবারও গম্ভীর , দৃঢ় কণ্ঠে বলল চাঁদ,
‘ যেতে দেও। নয়তো ম/রতে দেও।’
শিকদার সাহেব দরজার সামনে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে। চাঁদের মতই দৃঢ় কণ্ঠে বলল সে,
‘ এসব ভণ্ডামি করে আমাকে ভয় দেখাতে পারবেনা চাঁদ। নাটক বন্ধ করে চুপচাপ বিয়ের জন্য তৈরি হও।’

শ্বশুরের কথায় পৃথা বিস্মিত দৃষ্টিতে চেয়ে রইল। মেয়ের এমন দশায় মানুষটার চেহারায় বিন্দুমাত্র চিন্তার রেশ নাই। এক পিতার এ কেমন কঠিন হৃদয়? উনি কি আদৌ চাঁদের কিছু হয়!
বাবার কথায় অতি দুঃখে হেসে ফেলল চাঁদ। চোখজোড়া থেকে অশ্রু গড়িয়ে পড়লো টপটপ। ঠোঁটে তাচ্ছিল্যের হাসি মেলে আফসোসের সুরে বলল,
‘ আপনার থেকে এরচেয়ে বেশি কিছু আশা করিনা। ছোট থেকে আজ অবধি আমার কোন কথাটায় বিশ্বাস ছিল আপনার? আপনার মন পাবার জন্য কি করিনি আমি? যেই বয়সে হেসেখেলে পাড় করার কথা ছিল আমার, সেই বয়সে আপনার মন জোগানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছি। নিজের হাসিখুশি বাল্যকাল ধামাচাপা দিয়ে, কালচারাল, স্পোর্টস এক্টিভিটি’স ক্লাসের পেছনে দাঁড়িয়েছি। বাবার কাছে আবদার করার বয়সে, অবহেলায় জর্জরীত হয়েছি। সর্বক্ষণ ফুপুর মুখে, ‘আমি অশুভ’ শুনে এসেছি। প্রতিমুহূর্ত নিজের সাথে যুদ্ধ করেছি। শেষমেশ বিজনেস ডিলের মাধ্যম হলাম। যখন সুখের সন্ধানে বাড়ি ছাড়লাম, সহ্য হলো না আপনাদের। ভণ্ড পীরের কথায় নিজের পাপ গুছাতে বলি দিতে নিয়ে এলেন!’
শিকদার সাহেব তেতে উঠলেন। ভারী কণ্ঠে ধমকে উঠলেন। বললেন,
‘ মুখ সামলে কথা বলো। কার সম্পর্কে কি বলছ, ভেবে নিয়ো।’
চোখে নোনা জল নিয়ে শব্দ করে হেসে ফেলল চাঁদ। কান্নাভেজা নিষ্প্রাণ সুরে বলল,
‘ একজন ভণ্ড প্রতারক লোকের জন্য এত টান। অথচ আপনার সন্তান মৃত্যুর পথে দাঁড়িয়ে তা নিয়ে বিন্দুমাত্র আক্ষেপ অনুভূতি নেই আপনার! কেমন বাবা আপনি? আদৌ আপনি আমার বাবা তো!’

শিকদার সাহেব চুপ। খানিক নীরব থেকে চাঁদ আবারও বলল,
‘টাকা পয়সা বিলাসিতা এসব জীবনে কিছুই না। যদি না থাকে আত্মসম্মান, স্নেহের টান। আমার হয়তো মায়ের সাথে ম/রে যাওয়া উচিত ছিল। বৃথা এই জীবন। জীবনে না কেউ আপন রইল, না পেলাম পরিবারের আদর। আমাকে এতই যখন অপছন্দ ছিল আপনার, জন্মের সাথে সাথে মে/রে ফেললেন না কেন?’
রুমানা বেগম আড়চোখে ভাইয়ের দিকে তাকালো। ভাইয়ের দৃষ্টিতে ভালো সাজার জন্য, শিকদার সাহেবের পক্ষ নিয়ে বলল,
‘ অনেক নাটক হয়েছে চাঁদ। বাবার মুখেমুখে তর্ক! হু/মকি দিচ্ছিস? এসব বন্ধ কর এইবার। আরেকটু পর বাড়িতে মেহমান আসবে। তৈরী হ চল।’
চাঁদ চেঁচিয়ে উঠল। ক্রোধ ঢালা কণ্ঠে চিৎকার করে বলল,
‘ কেমন মহিলা মানুষ আপনি? আদৌ কি আপনি মানুষ! একজন বিবাহিতা মেয়েকে বিয়ে করতে বলছেন? কোন আইন ধর্মে আছে এমন! বিলাসবহুল জীবন হাতছাড়া হবে বলে, যে মহিলা বিয়ের ছয় মাসের মাথায় স্বামী পরিবার ছেড়ে বাবার বাড়িতে এসে উঠেছে। সেই মানুষ আবার সংসারের মূল্য কি বুঝবে?’
ন্যাঁকা কান্না শুরু করল রুমানা বেগম। ফ্যাচফ্যাচ নাক টেনে বলল,
‘ এসব আমার প্রাপ্য ছিল? জন্ম দিয়ে মা ম/রেছে। আমি ছোট থেকে কোলেপিঠে করে মানুষ করেছি তোকে। তার এই অবদান দিলি চাঁদ? ‘
চাঁদ শক্ত হলো। দৃঢ় কণ্ঠে বলল,
‘ আমার জীবনে বিন্দুমাত্র অবদান নেই আপনার। চিরকাল শুধু অপমান আর ছোট করে এসেছেন। যা কিছু করেছেন সব ছিল নিজের লাভের জন্য দেখানো, আহ্লাদ। আপনার ভাইয়ের চোখে ভালো হওয়ার জন্য চোখেচোখে রেখেছেন। আমার লালন পালন, বাকি সব কাজ কাজের লোকের করা। প্রতি মুহূর্ত অশুভ, অলক্ষ্মী বলে আমাকে তিলেতিলে আমার নিশ্বাস কেঁড়েছেন, আমার আত্মবিশ্বাস পিষে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছেন। আপনার ভয় ছিল, আপনার ভাই আপনার থেকে বেশি ,আমাকে না গুরুত্ব দিয়ে ফেলে আবার। এ বাড়ির প্রত্যেকে মুখোশধারী, স্বার্থপর! ঘৃ/ণা করি আমার সব রক্তের সম্পর্ক।’
রুমানা বেগম রাগে তিড়বিড় করে উঠলো। চাঁদের উদ্দেশ্যে বলল,
‘ অনেক হয়েছে এসব নাটক। আ/ত্মহত্যার মানুষ এমন হুমকি দেয়না। তোর করার হলে, যা করার করে ফেলতি এতক্ষণে।’
পৃথা চেঁচিয়ে উঠলো, বলল,
‘ এসব কি বলছেন ফুপু! আপনার মাঝে কি বিন্দুমাত্র মানবতা নেই? চাঁদ বাচ্চা মেয়ে, পাগলামি করছে। আপনি ওকে না থামিয়ে, উল্টো ওকে উষ্কানি দিয়ে দিচ্ছেন? ‘
রুমানা বেগম ধমকে উঠলো। পৃথার উদ্দেশ্যে বলল,
‘ তুমি কোনো কথা বলবা না। এখন যা হচ্ছে তোমার কারণে হচ্ছে। সবকিছু ঠিক চলছিলো। মাঝে দিয়ে তুমি এসে বাগড়া বাঁধালে। এবার ওর নাটক সামলাও।’
পৃথা চুপ রইল না। পাল্টা জবাব দিলো। দুজনের তর্কাতর্কি লাগলো।
আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামছে। দূ্রে কোথাও বাজ পড়ছে। বৃষ্টির ছিটাফোঁটা চাঁদের গায়ে এসে পড়ছে। নির্ভীক চোখজোড়া বুঝে নিলো চাঁদ। ছোট থেকে তার সাথে ঘটে যাওয়া সকল অন্যায় চোখের পাতায় ভেসে উঠলো। জীবনে আপন বলতে তার কিছুই নেই। না আছে কোনো ভালোবাসার মানুষ। যাকে মন প্রাণ দিয়ে ভালোবাসলো সেই মানুষটাও তার সাথে প্রতা/রণা করলো, ঠকা/লো! সবার কাছে সে য/ন্ত্রণা বিরক্তের কারণ। এমন জীবন রেখে কি লাভ?
বন্ধ চোখের পাতা ভিজে এলো। দুই ফোঁটা অশ্রু গালে এসে জমলো। রাগ চেপেছে চাঁদের মাথায়। সারাজীবনের এত অবহেলা, প্রতার/ণা , অভিনয়ে ক্লান্ত সে। কোনকিছু নিয়ে ভাবলো না আর। চট করে ভাঙা ফুলদানির ধা/রালো টুকরো দিয়ে গলায় আঘা/ত করল। গলগল করে র/ক্ত ঝরতে শুরু করল। আস্তে আস্তে চাঁদ মাটিতে লুটিয়ে পড়লো।
সারা ঘরের মানুষ স্তব্ধ, হতভম্ব। এটা কি করল চাঁদ? নিজের গলায় আঘা/ত করল! পৃথা দৌড়ে আসলো। জাপ্টে এসে চাঁদকে ধরল। চাঁদের সামনে সবকিছু অন্ধকার হয়ে আসছে। ধীরেধীরে মস্তিষ্ক নিস্তেজ হয়ে পড়ছে। চোখজোড়া থেকে অশ্রু গড়িয়ে পড়লো। রগ কা/টা মুরগির মত ছটফট করছে। নিস্তেজ কণ্ঠে ফিসফিস করে বলল,
‘ আমাকে কেন ঠকালেন আষাঢ়! সত্যিই কি এত বিরক্তের কারণ ছিলাম আপনার?’
পৃথা চাঁদকে জড়িয়ে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলল। তার কান্নাভেজা আহাজারি চিৎকার,
‘ এটা তুই কি করলি চাঁদ। চাঁদ…
রুবেল শাওন অন্যসবাই চাঁদের দিকে পা বাড়াতে চেঁচিয়ে উঠলো পৃথা। চিৎকার করে বলল,
‘ খবরদার কেউ পা বাড়াবেন না। মেয়েটার এই দশার জন্য আপনারা দায়ী। যদি আজ চাঁদের কিছু হয়, আমি নিজে সাক্ষী হয়ে আপনাদের সবার নামে কেস করবো।’
চাঁদের ছটফটানি ধীরেধীরে কমে আসছে, শরীর নিথর হয়ে পড়ছে। র/ক্তে ফ্লোর ভিজে। পৃথা হাউমাউ করে কাঁদছে। চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজ শুনে বাড়ির কাজের লোকজন সবাই ছুটে আসলো। সবাই চাঁদকে ধরাধরি করে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে বের হলো।

ঘন বর্ষণ, চারিদিক অন্ধকারে ঢেকে। ভর দুপুরে যেন অন্ধকার নেমে এসেছে ভুবনে। হন্তদন্ত পাগল পাগল হয়ে, কোনো রকম শিকদার বাড়ির সামনে পৌঁছেছে আষাঢ়। সারা শরীর ভিজে একাকার। চুল থেকে চুঁয়েচুঁয়ে পানি ঝরছে। যেই গেটের ভেতর প্রবেশ করবে, অমনি পৃথার মোবাইল থেকে ফোন এলো। অপর পাশ হতে এম্বুল্যান্সের তুখোড় আওয়াজ শোনা গেল। পৃথা কান্নাভেজা ভাঙা স্বরে বলল,
‘ চাঁদ সুই/সাইড করার চেষ্টা করেছে। ক্রিটিকাল সিচুয়েশন। ওকে সিটি হসপিটালে নিয়ে যাচ্ছি।’
স্তব্ধ হয়ে গেল আষাঢ়। হাত ফসকে মোবাইলটা মাটিতে পড়লো। মুহূর্তেই চোখের সামনে সব অন্ধকার হয়ে এলো। মস্তিষ্ক অকেজো হয়ে পড়ল। কান থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। কি শুনলো! মাথা কাজ করছেনা। নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। শরীর থরথর কাঁপছে। চোখজোড়া ঝাপসা হয়ে এলো তার। শরীর অসার হয়ে আসছে, হাঁটু ভেঙে বসে পড়লো রাস্তার কাদাপানিতে। বাড়ির সামনে চলন্ত রাস্তা। রিকশা অটোরিকশার আনাগোনা। আষাঢ়ের নিস্তেজ শরীর বর্ষণে ভিজে একাকার। বড় আঘা/তটা মেনে নিতে সময় লাগছে। হুঁশজ্ঞান সবটা হারিয়েছে। হ্ঠাৎ সামনে থেকে অটোরিকশা এসে ধাক্কা দিলো। আষাঢ় ছিটকে রাস্তার পাশে যেয়ে পড়লো। অটো চালক অটোরিকশা থামিয়ে তড়িঘড়ি করে নেমে এলো। পিচ ঢালা রাস্তার ঘর্ষণে হাতটা অনেকটুকু কে/টেছে আষাঢ়ের। বৃষ্টির পানির সাথে র/ক্ত মিশে টপটপ করে পড়ছে। অটো ড্রাইভার ঝটপট পায়ে আষাঢ়ের কাছে গেল, আশেপাশের লোকজন জড় হলো। ব্যান্ডেজ করার জন্য পাশের ফার্মেসীতে নিয়ে যেতে চাইলে আষাঢ় নাকচ করল। গম্ভীর নিথর স্বরে বলল,
‘ কিছু লাগবে না। সিটি হাসপাতালের সামনে নামিয়ে দেন আমায়।’
ত্রিশ মিনিটের রাস্তার পুরো সময়টা ছটফট করল আষাঢ়। নিশ্বাস নিভে আসছে। এই সময়টাকে এক যুগ মনে হচ্ছে তার। কি করবে সে? তবে কি সত্যি সত্যি হারিয়ে ফেলতে চলেছে তার চাঁদকে! ভেবেই দম বন্ধ হয়ে আসছে। মৃ/ত্যু সমান য/ন্ত্রণা হচ্ছে। ভয়, আতঙ্কে চোখ ভিজে আসছে।

ইমার্জেন্সি রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছে পৃথা। খানিক দূরে রুবেল, শাওন, শিকদার সাহেব, রুমানা বেগম দাঁড়িয়ে। রুবেলের চোখমুখে অনুতপ্ততার ছায়া। রাগ, দম্ভ, ইগোর কারণে এসব কি করে ফেলল সে? চাঁদের উপর রাগ মেটাতে যেয়ে এতবড় একটা অন্যায় করে ফেলল! মেয়েটাকে মৃত্যুর মুখে দাঁড় করিয়ে দিলো। যে মেয়েটা বাধ্য হয়ে আত্মহ/ত্যা করলো। কি করে এতটা অ/ন্যায় ব্যভিচার করতে পারলো সে! মা ম/রা বোনটাকে এতটা নিস্ব করে দিলো সে। ম/রার আগে মা তাকেই তো বোনকে দেখে রাখার দায়িত্ব দিয়েছিলো। বাবার কথায় এটা সে কি করল!
হুড়মুড় করে ছুটে এলো আষাঢ়। ইমার্জেন্সি রুমের সামনে পৃথাকে দেখে বলল,
‘ কেমন আছে ও? ঠিক হয়ে যাবে তো আমার চাঁদ।ডাক্তার কি বলছে? খুব কি র/ক্ত ক্ষয় হয়েছে। এসব কি করে হলো। ওকে আট…
আষাঢ়ের অগোছালো অনবরত প্রশ্নে পৃথা থমকে গেল। পৃথা আষাঢ়কে ফোন করতে চায়নি প্রথমে। কিন্তু চাঁদের অবস্থা এতটাই গুরুতর যে ফোন না করে পারেনি। তাছাড়া কাগজে কলমে চাঁদ এখনো আষাঢ়ের স্ত্রী। পৃথা চোখ তুলে নিখুঁত দৃষ্টিতে দেখছে আষাঢ়কে। হাত থেকে অনবরত র/ক্ত ঝরছে। চোখজোড়া জলে ভিজে। চেহারায় স্পষ্ট ভয়, আতঙ্ক। চাঁদকে যে পাগলের মত ভালোবাসে চায় তা মুখশ্রীতে ভেসে আছে। এই মানুষটা কি করে ঠকাতে পারে চাঁদকে! কোথাও কি পৃথার ভুল হচ্ছে। আদৌ কি এসবে আষাঢ় জড়িত আছে? পৃথা আষাঢ়কে শান্ত করতে চেষ্টা করল। ঠান্ডা স্বরে বলল,
‘ তেমন দাবেনি, গাঢ় আঁচড় পড়েছে অনেক র/ক্ত ক্ষয় হয়েছে। ভেতরে চিকিৎসা চলছে। এখনো বলা যাচ্ছে না কিছু।’
আষাঢ় ক্ষান্ত হলো না অস্থিরতায় বুক ধরফর করছে। নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। অস্থির চঞ্চল দৃষ্টিতে আশেপাশে তাকালো। রুবেলের দিক চোখ আটকাতে তেতে উঠলো। ক্ষিপ্ত পায়ে সেদিকে গেল। এলোপাতাড়ি কয়েকটা ঘুষি মারলো রুবেলের মুখে। সবাই হতভম্ব। কিছু বুঝে উঠার আগেই মাটি থেকে তুলে রুবেলের গলা চেপে দেয়ালে আটকালো। রাগী ক্ষিপ্ত কণ্ঠে বলল,
‘ তুই কথা দিয়েছিলি চাঁদকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিবি। অতীতের দোহাই দিয়ে, ব্লাক/মেইল করে সেদিন নিয়ে গিয়েছিলি চাঁদকে। আজ যদি আমার চাঁদের কিছু হয়! দুনিয়ার কোনো নিয়ম আমি মানবো না। সবকিছু জ্বালিয়ে দিবো।তোকে খু/ন করে ফেলবো।’
আঘা/ত যখন প্রেয়সীর গায়ে লাগে, প্রেমিক ভয়ঙ্কর রকম হিং/স্র হয়ে যায় তখন। আষাঢ়ের রাগী চিৎকারে সবাই ঘাবড়ে গেল। রুবেলের উপর থেকে টেনে সরাতে চাইলো। পারছে না। দশ অসুরের শক্তি যেন তার শরীরে ভর করেছে। এদিকে রুবেলের নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। পৃথা দূর থেকে দাঁড়িয়ে সব দেখছে। স্বামীর জন্য বিন্দুমাত্র খারাপ লাগা কাজ করছেনা মনে। যে মানুষটা কোলেপিঠে মানুষ করা ছোটবোনকে আত্মহ/ত্যা করতে বাধ্য করে, সেই মানুষের জন্য আবার কিসের সহানুভূতিতা!

চলবে……..

ফুলে সজ্জিত ঘরটায় প্রবেশ করতে থমকে গেল আরাধ্য। ঘুটঘুটে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে আছে সব। মোবাইলের ফ্লাশ লাইট অন করে ভেতরের দিক পা বাড়াল। গোলাপের পাপড়িতে সারাঘর ছড়িয়ে ছিটিয়ে। বিছানায় হাতপা মেলে উপুড় হয়ে শুয়ে আছে সাধনা। আরাধ্য ডাকলো। নড়েচড়ে উঠলো সাধনা। পিটপিট দৃষ্টি মেলে আরাধ্যের মুখপানে একবার চাইল। তারপর আবার বালিশে মুখ ডুবিয়ে ঘুম জড়ানো আদো আদো সুরে বলল,
‘ আমি খুব ক্লান্ত আরাধ্য ভাই। বিছানা ছাড়া আমার একদম ঘুম হয়না। আপনার যদি খুব বেশি সমস্যা হয়, ওই চেয়ারে বসে রাত কা/টাতে পারেন।’
কথা শেষ করে সাধনা ঘুমে তলিয়ে গেল আবার।
আরাধ্য আশাহত চেয়ে। তার এখানে ঘুমাতে সমস্যা তা কখন বলল! ঘুমানোর জন্য বিছানায় জায়গার প্রয়োজন। যা পুরোটাই সাধনার দখলে। ক্লান্ত হাত পা মেলে বক্র হয়ে শুয়ে আছে। গায়ে এখনো বিয়ের পোশাক জড়ানো। গহনা গুলো পর্যন্ত শরীর থেকে ছাড়ায়নি। এতটা ঘুমকাতুরে কেউ কি করে হয়! ভেবেই আরাধ্য তপ্ত গম্ভীর শ্বাস ফেলল…..

পড়ুন ইবুক ‘সেনিওরিতা’

উপন্যাসটি পাবেন ‘ বইটই’ অ্যাপে। প্রমোকোড ব্যবহার করে ৫০ টাকার বই মাত্র ৩৮ টাকায় পেয়ে যাচ্ছেন। ঝটপট অর্ডার করে ফেলুন। অর্ডার করেছেন তো?

প্রোমোকোড – EBOOKMELA2023

টাইপোগ্রাফি করেছে Afroja Akter jhuma বান্ধবী❤️🌺

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here