বান্ধুবিকে প্রপোজ,Part – 5 & end
writer – ArFin SuMon
আমি অনেকক্ষণ ধরে রেস্টুরেন্ট এ বসে
আছি। তবে জুলির কোন খবর নেই।
প্রায় দুই ঘন্টা বসে ছিলাম। তারপর আমি
রেস্টুরেন্ট থেকে বের হলাম। ঠিক এমন সময়
পিছন থেকে কেউ আমাকে ডাক দিল।
পিছনে তাকিয়ে দেখি।সেটা
রেস্টুরেন্টের ওয়েটার ছিল।তখন সে
আমাকে বলল..
ওয়েটারঃ- ভাই আপনি কি কারো জন্য অপেক্ষা
করছিলেন।
আমি বললাম,
আমিঃ- হ্যাঁ।
ওয়েটারঃ- সেই অপেক্ষার মানুষটি একটি
মেয়ে নয় তো?
আমিঃ- হুম একটি মেয়ে। তবে তুমি জানলে
কিভাবে?
ওয়েটারঃ- একটা মেয়ে আমাকে একটা চিঠি দেয়।
আর বলে যায় একটা লোক আসবে তাকে
দিতে।এবং বলল অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
মেয়েটি আমাকে কিছুই বলল নাহ।
তার নাম এমনকি যাকে দিব চিঠিটা তার কোন
পরিচয়।তবে মেয়েটি অনেক টেনশনে ছিল।
আর অনেক তারাতারি রেস্টুরেন্ট থেকে
বেরিয়ে গেলো।
আর আপনাকে অনেক বসে থাকতে দেখে
আমার মনে হল আপনি কারো জন্য
অপেক্ষা করছিলেন।
এই নেন চিঠি আর এই
ফুলটা আপনাকে দিয়েছে সে।
.
আমি চিঠিটা হাতে নিয়ে খুলে দেখি।
হ্যাঁ চিঠিটা জুলি লিখেছিল।তারপর
আমি চলে এলাম বাসায়।
–এসে দেখি জুলি আম্মুর ফোনে অনেক
গুলো কল দিয়েছে। তবে কেউ কল গুলো
রিসিভ করে নি।তখন
জুলির মেসেজ দেখতে পেলাম সেখানে
লেখা ছিল।
–I am sorry আমি তোমার সাথে দেখা
করতে গিয়েছিলাম তবে পারি নি।
চিঠিটা পড়ো সেখানে আমার সব কথা
লেখা আছে।আর ফুলটা তোমার জন্য I love
you তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
.
–কথা গুলোতে অনেক কান্না লুকিয়ে ছিল
বোঝা যাচ্ছিল। তখন আমি জুলির দেওয়া
চিঠিটা খুললাম।সেখানে যা লেখা ছিল
তা দেখে আমি বিস্মিত হলাম।এবং অনেক
চিন্তিত।আর মর্মহত, সেখানে লেখা
ছিল,,,
.
–তুমি যখন তিন মাস আমাকে কোন কল কর
নি। কোন কন্টাক্ট কর নি।
তখন আমার অনেক টেনশন হচ্ছিল।আমি
আন্টি কে ফোন করি। আন্টি বলে তুমি নাকি নিখোঁজ।
আমি আরো টেনশন করতে শুরু করি তখন
আমি খাওয়া দাওয়া,সব কিছু ছেড়ে
তোমার কথা ভাবতাম।
আমার বাবা মা আমাকে নিয়ে খুব
টেনশনে পরে যায়।
তখন আমার বাবা ঠিক করল আমাকে
বিয়ে দিয়ে দিবে।
আমাকে অনেক ভাবে
রিকোয়েস্ট করল আমি রাজি হইনি।
অনেক জোরাজোরি করছিল আমি আর
সামলাতে না পেরে।
তখন আমি বাবাকে
বলে দেই তোমার কথা।
তখন বাবা রাজি ছিল।
আমাকে তোমার
জন্য একমাস টাইম দিয়েছিল।
তুমি ফিরে
আসো নি আমি আন্টিকে অনেক কল
করেছি।
আন্টি রিসিভ করে নি।
এখন বাবার দেওয়া মাস শেষ।
বাবা
আমাকে বলেছিল যদি তুমি না আস।
বাবা
যার সাথে আমার বিয়ে ঠিক করবে তাকেই
আমার বিয়ে করতে হবে।
আমি যখন তোমার কথা বাবাকে
বলেছিলাম।
বাবা আমার কথা রেখেছিল।
তুমি তখন আসো নি।
এখন আমার বাবার
কথা রাখা উচিত।
তাই রাজি হয়ে গেলাম
বাবার পছন্দ করা ছেলেকে বিয়ে করতে।
এখন তুমি ফিরে এসেছো তবে এখন আমার
কিচ্ছু করার নেই।
আগামীকাল আমার
বিয়ে আর বিয়ের কারনেই আমি ঢাকায়
গিয়েছিলাম।
আজ আমি আবার গ্রামে চলে যাচ্ছি
বিয়ের জন্য।
বাবাকে আমি তারপর তোমার
কথা বলে ছিলাম।
এখন বাবা কর্তব্যে অটর।
আমি তোমাকে সত্যি অনেক ভালোবাসি।
পারলে বাবাকে বলে এসে আমাকে নিয়ে
যাও।
আমি তোমার সাথে যেতে ইচ্ছুক।
তবে সেটা বাবার ইচ্ছা চাই।
আর না হলে আমাকে লাস্ট একবার দেখে
যেও।
.
–ইতি জুলি
.
.
আমার চারপাশ অন্ধকার হয়ে আসছিল।
আমি কি করব,ভেবে পাচ্ছিলাম নাহ।
আমি ভাবছিলাম এখন জুলির গ্রামে
যেতে হলে লাগবে একদিন।আমি কাল জুলির
বিয়েতে গিয়ে পৌঁছাবো।সবার সামনে
আমার কিছু বলার সাহস নেই। তবু বলতে
হবে??? না পারলেও জুলির ভালোবাসার
জন্য পারতে হবে।
.
–আমি সবার আগে মাকে বলি। মা আমার
কান্না ভরা চোখ দেখে। আমার সব কথা
মেনে নেয় এমনকি সে আমার সাথে যায়
জুলির বাবাকে মানাতে।
–পরেরদিন আমি আমার পুরো পরিবার
জুলির বিয়েতে উপস্থিত।
–আমি কোন কিছু নাহ ভেবেই। সোজা
গিয়ে সবার সামনে জুলির দেওয়া সেই
ফুলটা দিয়ে জুলিকে প্রপোজ করে দি।
.
তখন আমি বললাম..
আমিঃ- সত্যি তোকে অনেক ভালোবাসি।
তুই কি আমাকে একটা সুযোগ দিবি তোকে
সারা জীবন আগলে রাখার।
–জুলি কান্না জরিত কন্ঠে কোন কিছু না
ভেবে আমাকে হ্যাঁ বলে দিল।
–আমি তো ভয়ে শেষ। তবে কেউ আমাকে
কিচ্ছু বলল নাহ।সবাই আরো খুশি হয়ে হাত
তালি দিচ্ছিল।
আমি কিছু বুঝতে পারলাম নাহ।
তখন জুলি আমাকে বলল..
জুলিঃ- অবশেষে তুই
তোর বান্ধুবিকে প্রপোজটা করেই দিলি।
এখন জানতে চাইবি নাহ। আমার বিয়ে
হচ্ছে বরটা কে???
আমি বললাম..
আমিঃ- কে?
জুলি বলল..
জুলিঃ- তুই,,!!
আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি নাহ।
জুলি বলল..
জুলিঃ- সেদিন তুই আন্টিকে আমার
কথা বলার পর। আন্টি বাবাকে কল করলো।
বাবা আন্টির কথা শুনে আমার বিয়ে টা
ভেঙে দেয়।
তোর সাথে বিয়ে দিতে রাজি হয়।
তবে তোকে বলতে চেয়েছিলাম। বলি নি
কারন।
তোকে বললে তোর এত ভালোবাসা। আর এই
প্রপোজটা তো পেতাম নাহ। বিয়ের আগে
কে না চায় সবার সামনে এত সুন্দর একটা
প্রপোজ পেতে।
আমিঃ- পাগলি একটা।
.
তারপড় আমি মাকে জরিয়ে ধরে একটা
ধন্যবাদ দেই।কারন সব মা বাবাই তার
ছেলে মেয়ের বেস্টাই খুঁজে তাকে দিতে
চায়।
এবং অবশেষে জুলির সাথে ওই দিনেই
আমার ধুমধাম করে বিয়ে হল।
.
–তারপর বাকিটা ইতিহাস।যান আপনি
বিয়ে করে বাকিটা দেখে নিয়েন..!!
.
.
সমাপ্ত