বান্ধবীর ভাই যখন বর ? Part – 9

0
965

? বান্ধবীর ভাই যখন বর ?
Part – 9
_____________________________
9,,,,,,
স্কুল থেকে সেই কখন ফিরেছে পরি।
কিন্তু খাওয়া দাওয়া তে একদম ই মন নেই তার।
সে কারো বিষয়ে তেমন কৌতুহলী না হলে ও এই নীলের বিষয়ে বেশ কৌতুহলী।
প্রথম দিক থেকেই এই মানুষটার প্রতি তার আগ্রহ বেশি।
এই মানুষটাকে এক মুহূর্তে র জন্য সহ্য করতে পারে না পরি ,,,,, কিন্তু এক অদৃশ্য কৌতুহল রয়ে ই যায় ।
যার কারনে পাশের বাসার রূপা আপুর কাছে ছুটে যাওয়া।
কথায় কথায় নীলের বেশ কিছু গল্প শোনা যাবে সেই আশায়।
বেশ কিছুক্ষণ পর বর্ষার বাসা থেকে বের হয়ে আসে পরি।
মন টা তার বড্ড খারাপ ।
এই নীল ছেলে টা এতো বাজে ,,,,,, ছিইই
রূপা আপুর কলেজে পিছু নিয়েছে।
আবার রূপা আপু কে বলে কি না ,,,, রূপা চলো আমরা রিলেশনে যাই।
এতো বার এতো মেয়ের সাথে রিলেশনে জরিয়েছে এই ছেলে।
এক্কেবারে লুইচ্চা পোলা,, যত্তসব।
পরি বাসা তে ঢুকতেই পরির মা বলল
– গোসল না করেই এ বাড়ি ও বাড়ি ঘুরতে শুরু করে দিয়েছিস।

পরি কিছু না বলেই কাপড় হাতে ওয়াসরুমে ঢুকে যায়।
লম্বা একটা সাওয়ার নিয়ে ফিরে আসে।
তারপর হালকা খাবার খেয়ে ই ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে যায়।
_____________________

পরদিন সকাল সকাল প্রাইভেট পড়তে যায় পরি।
তাই বাসা থেকে 6’30 এই বেরিয়ে পড়েছে।
পরি দের গ্রামে কোনো উচ্চ বিদ্যালয় নেই।
আর আশে পাশের ছোট ছোট ছয় সাত গ্রামের জন্য একটাই উচ্চ বিদ্যালয়।
পরি হন্তদন্ত হয়ে সড়কে আসে,,,, হাতের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলো রিক্সার জন্য ।
কিন্তু রিক্সা আসার যেন নাম ই নেই।
তাই পরি কোনো কিছু না ভেবেই হেঁটে ই স্কুলের দিকে রওনা হলো।
বেশ কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রাইভেট এ চলে আসলো।
ইংরেজি প্রাইভেট পড়ে কিছুক্ষণ স্যারের সাথে গল্প করে নিলো।
কথায় কথায় হাফসার ভাইয়ের কথা ও উঠলো।
স্যার বললেন
– নীল তো নীল ই ,,,,, বিজাতের শেষ সীমানা।
কিন্তু এমনিতে আমার সাথে বেশ ভালো সম্পর্ক।
একটু ফাজিল হলে ও নীল এমনিতে বেশ ভালো।

স্যার আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন
– মামনি এইবার কিন্তু ভালো রেজাল্ট করতে হবে।
আর জে এস সি তে প্লাস কিন্তু পেতেই হবে।
স্যারের কথা তে পরি মুচকি হেসে বলল
– আমি চেষ্টা করবো স্যার।

এভাবেই কেটে গেল বেশ কয়েকটা মাস।
অবশেষে স্কুলের এনাউল এক্সাম শুরু হয়ে যাবে।
সবাই বেশ চিন্তিত প্লাস বছরের শেষের দিকের একটা চাঁপা আনন্দ ও কাজ করছে।
সবার সাথে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলে স্কুল ছুটি হলে বের হয়ে গেল পরি।
নিচে নামতে নামতে হাফসা কে বলল
– হাফসা তোর আর আমার সিট তো পাশাপাশি হবে।
ভালো করে পড়ে আসতে হবে কিন্তু ।
হাফসা মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি জানালো।
তার স্কুল গ্রাউন থেকে বেরিয়ে রাস্তায় দুজন ই গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো।
কিছুক্ষণের মাঝেই ওরা গাড়ি পেয়ে গেল।
আর দুজন হাত নাড়িয়ে বাই জানিয়ে দু দিকে চলে গেল।
__________________

পরিরা নানা বাসাতেই থাকে।
ওর কোনো মামা ,,, খালা নেই।
তবে এস এস সি পরীক্ষার পর ওরা নিজের বাসা ঢাকা তে চলে যাবে। গ্রামে ওর নানা বাড়ি আর দাদা বাড়ির মধ্যে মাত্র চার কিলোমিটারের দূরত্ব।
পরির দাদা দাদু গত হয়েছেন বহু বছর আগে।
আর তাই গ্রামের বাসা তে পরির বড় কাকা ছাড়া আর কেউ থাকে না।
পরির বাবাকে নিয়ে তারা তিন ভাই দুই বোন।
এক ভাই ঢাকা তে সেটেল আর দু বোনের বাড়ি ও ওর দাদা বাড়ির পাশেই ।
পরি বাসা তে ফিরেই বেডে ব্যাগ রেখে সোফা তে গা এলিয়ে দিলো।
সেই সকাল 6 টায় ঘুম থেকে উঠে সারাদিন ক্লাস করে বিকেল 4’30 টে বাসায় এসেছে ও।
শরীর তো বড্ড ক্লান্ত,,, এই মুহূর্তে গোসল করার জন্য পা বাড়াতে ও ইচ্ছে করছে না।
ইচ্ছে করছে না বললে ভুল হবে পরির শরীর আগাতে পারছে না।
কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে কোনো রকমে গা ঠেলে সাওয়ার নিতে গেল পরি।
সাওয়ার শেষে এখন নিজেকে ফ্রেস লাগছে ওর।
তাই আশে পাশে চক্কর লাগালো ,,,, সন্ধ্যার আগে বাসায় ফিরে খাওয়া দাওয়া কমপ্লিট করে পড়তে বসলো।
কালকে থেকে পরীক্ষা কি না।
_________________

আজ কে পরির লাস্ট এক্সাম। তাই মনে বেশ ফুর্তি,,,,,প্রতি টা এক্সাম ই বেশ ভালো দিয়েছে ও আর হাফসা ।
পাশাপাশি সিট হওয়াতে একে অপরের বেশ সাহায্য ও পেয়েছে।
কিন্তু চারি পাশে যে টেলেন্ট এর ছড়াছড়ি ।
তাই রেজাল্ট পাওয়ার আগে পরীক্ষা ভালো হয়েছে বলা ও যায় না।
হালকা চিন্তিত হলে ও শেষ পরীক্ষার একটা বিশেষ আনন্দ রয়েছে।
যার ফলে পরীক্ষা ভালো হোক কিংবা খারাপ তাতে পরীক্ষা শেষের আনন্দে কোনো এফেক্ট পড়ে না।
পরীক্ষা শেষ হতেই সবাই হৈ হুল্লর করা শুরু করে দিয়েছে।
সবাই বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছে।হল থেকে বের হয়ে স্যার দের সাথে দেখা করে নিলো কারন পনের দিন তো স্যার দের সাথে কোনো যোগাযোগ ই থাকবে না ।
সবাই মিলে ঠিক করলো আইসক্রিম খেতে যাবে।
পরির আইসক্রিমের ওপর বিশেষ দূর্বলতা ।
যার কারনে এই ঠান্ডার মাঝে ও পরির বান্ধবী রা আইসক্রিম খেতে রাজি হলো।
সবাই যে যার পছন্দের ফ্লেবারের আইসক্রিম নিয়ে নিলো।
পরির সব ফ্লেবার ই ফেবরেট তাই ওর চুজ করতে বেশ অস্বস্তি হচ্ছিলো।
দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে এটা সেটা ভাবতে লাগলো।
হঠাৎ করেই পরির বান্ধবী সীমা বলল
– আরে ঐ দেখ দেখ নীল ভাইয়া যাচ্ছে ।

সীমার কথা তে পরি সহ সবাই সড়কে তাকালো।
বাইক দিয়ে যাচ্ছিলো নীল ,,,,, কারো সাথে কথা বলার জন্য মাঝ পথে বাইক থামিয়েছে।
হাফসা বলল
– একবার ও ভাইয়ার বাইকে উঠার কপাল হয় নি আমার।
বজ্জাতের শেষ সীমানা । আমি উঠলে কি হয় ?

নীল কে দেখে পরির বেশ রাগ হচ্ছে।
তাই সামনে যে ফ্লেবার পেল সেই আইসক্রিম নিয়েই বিল পে করে চলে আসলো।
আইসক্রিম গলে যাচ্ছে কিন্তু পরির খাওয়ার কোনো নাম ই নেই।
হাফসা কাঁধে ঝাঁকুনি দিয়ে বলল
– খাচ্ছিস না কেন ?
পরি কিছু না বলে আইসক্রিম খেতে লাগলো।
আইসক্রিম শেষ করে হালকা কথা বলে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো।

( আসসালামুআলাই রির্ডাস। ছোট পার্ট হয়েছি সময়ের জন্য । আজকাল একটু সময় সল্পতার বেগ পেতে হচ্ছে। আমি তার জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত ।
আমার লেখা গল্প পেতে পেজ এ লাইক ফলো আর বন্ধুদের ইনভাইট দিয়ে পাশে থাকুন )

বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাপ করবেন ।

? হ্যাপি রিডিং ?

চলবে
ফাতেমা তুজ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here