বান্ধবীর ভাই যখন বর ? Part – 8

0
1210

? বান্ধবীর ভাই যখন বর ?
Part – 8
_____________________________
8,,,,,,,
নীল পরি কে নিয়ে ছাঁদের এক কোনে বসে আসে।
এই মূহুর্তে তারা দুজন ই চন্দ্র বিলাস করছে।
আজকের চাঁদ টা পরিপূর্ণ,,,, প্রতি টা সুখের মুহূর্তে ই চাঁদ তার পরিপূর্ণ রূপ দেখায়।
আসলে এটা কি কাকতালীয় ভাবে ঘটে ,,,,,নাকি ভবিতব্য তেই থাকে।
এতো শতো ভাবার সময় নেই নীলের কাছে।
নীল তার পরির জন্য সাথে বসে চন্দ্র বিলাসে মক্ত।
চাঁদের আশে পাশে ছোট ছোট তাঁরা রা আলো ছড়াতে ব্যস্ত।
আকাশের নক্ষত্রের দিকে তাকালে পুরো পৃথিবী যেন স্তব্ধ হয়ে যায় নীলের।
কিন্তু তার আকাশের সব থেকে মূল্যবান নক্ষত্র যে পাশেই বসে আছে ।
যার জন্য কিছুতেই আকাশের নক্ষত্ররা তাকে আকর্ষণ করতে পারছে না।
বার বার নীল তার আকাশের নক্ষত্রের দিকে তাকাচ্ছে।
হিসেব মোতাবেক আজ তাদের বাসর রাত।
কিন্তু এই বাসরে কোনো ফুল নেই ,,,, নেই কোনো তারকা বাজি।
আছে শুধু নিস্তব্ধতা আর ক্লান্তি।
হাজারো ক্লান্তি যখন নীল কে ঘুমে আচ্ছন্ন করতে পারে নি আজ তার আকাশের একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র তাকে বার বার ঘুমোতে বলছে।
এক রাস ক্লান্তি যেন ওর উপর জেকে বসেছে। কারন আজ নীলের আকাশ পরিপূর্ণ,,, নেই খামতি ।
তাই নীল আজ তার
পরির কাঁধে মাথা রেখে ঘুমের রাজ্যে হারাবে।
নীল ক্লান্তি ভরা চোখ নিয়ে পরির দিকে তাকালো।
ঘুমু ঘুমু স্বরে বলল
– পরি আমি তোমার কাঁধে মাথা রাখতে পারি ?

নীলের কথাতে পরি চমকে উঠলো।
কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে থেকে ,, হালকা ভাবে মাথা নাড়ালো।
নীল সম্মতি পেয়ে এক মুহূর্ত দেরি করলো না ,,, সোজা পরির কাঁধে মাথা ঠেকিয়ে দিলো।
ওর কান্ডে এমন মনে হচ্ছে যে যদি কোনো ভাবে এক সেকেন্ড এর হের ফের ও হয় তো নীল পরির কাঁধে মাথা রাখতে পারবে না।
পরি এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।
এই সব স্বপ্ন ই তো বুনেছিল সে।
কিন্তু সব কিছু আষাঢ়ের মেঘে ঢাকা পড়ে গিয়েছিলো কেন।
কোনো এক ম্যাজিশিয়ান বুঝি ম্যাজিক করে আজ সমস্ত কালো মেঘ সরিয়ে দিলো।
নীলের মাথা তে হাত ছুঁইয়ে দিতে গিয়ে ও পরি হাত নামিয়ে নিলো।
নীল তো তার স্বামী তাহলে এতো কেন সংকোচ তাকে ছোঁয়ার মাঝে।
একটা সময় তো স্বপ্নে তাকে কতো শত বার কতো ভাবে ছুইয়ে ছে।
আজ এতো টা কাছে পেয়ে ও কেন এতো সংকোচ।
পরি নিজের ভাবনাকে বদলে নিয়ে ডুবে গেল অতীতের স্মৃতি র পাতাতে।

______________________

আম্মু আম্মু কোথায় গেলে তুমি।
মিসেস রাহেলা খুন্তি হাতে মেয়ের ডাকে হনহনিয়ে আসলেন।
কি হয়েছে কি ?
আম্মু দেখো বাজে কয়টা 9 টা বাজে আমি কখন রেডি হবো আর কখন স্কুল যাবো।

মিসেস রাহেলা বিরক্তি নিয়ে বললেন
– আপনাকে আর ও এক ঘন্টা আগে ডেকে গিয়েছি।
আপনি উঠছি বলে আবার ঘুমিয়ে পড়েছেন।

পরি চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে বলল
– তার জন্য কী আর ডাকবে না ?
আর তাছাড়া টেনে উঠাতে পারলে না আমায়।

মিসেস রাহেলা স্পেশাল কুকারের সিটির শব্দে হন হনহনিয়ে পরির রুম থেকে যেতে যেতে বললেন
– আপনাকে ডাকা ছাড়া কি আর কোনো কাজ নেই ?
এখন তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে,, না হলে স্কুলে যেতেই পারবি না।
পরি মায়ের যাওয়ার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে লাফ দিয়ে উঠে যায় ওয়াসরুমে,,,, কোনো রকমে ফ্রেস হয়ে এসে একটা রুটি কোনো মতে শেষ করেই দৌড় লাগায় স্কুলের উদ্দেশ্যে।
মিসেস রাহেলা গলা ফাটিয়ে বললেন
– ধীরে ধীরে যাহহহ।
না হলে পড়ে যাবি তো।

পরি আসছি বলেই পা বাড়ালো।
স্কুল সড়ক থেকে এক কিলোমিটার দূরে।
বাসা থেকে সড়কে যেতে ও দশ মিনিট প্রয়োজন হয়। ভাগ্য ভালো থাকাতে
সড়কে যেতেই রিক্সা পেয়ে যায়।
পরি রিক্সা তে উঠে বলে মামা তাড়াতাড়ি যান।
কয়েক মিনিটের মধ্যেই রিক্সা স্কুল গেটের কাছে পৌছে যায় ।
পরি ভাড়া মিটিয়েই দৌড় লাগায়।
স্কুল গ্রাউনে পৌছাতেই দেখে পিটি কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে।
পরি কোনো মতে ব্যাগ কাঁধে নিয়েই সারির পেছনে গিয়ে দাঁড়ায়।

পিটি শেষ হলে যখন সারি বদ্ধ হয়ে ক্লাসে যাচ্ছিলো তখন ইংরেজি স্যার আটকিয়ে দেন।
ইংরেজি স্যার পরি কে অনেক আদর করেন।
নিজের মেয়ের মতো ভালোবাসি ওকে,,,, ওনার মেয়ে ও পরির সাথে ই এবার সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে

স্যার কে সালাম জানাতেই স্যার সালামের জবাব নিয়ে বললেন
– মামনি আজ এতো দেরি কেন।
পরি মাথা চুলকোতে চুলকোতে বলল
– স্যার আম্মু ডেকে দিয়েছিল ।কিন্তু আবার ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।

পরির কথাতে স্যার হাসতে লাগলেন।
তারপর টুকিটাকি কথা বলে পরি কে ক্লাসে যেতে বললেন ।
পরি স্যার কে বিদায় জানিয়ে চলে আসলো।
ক্লাস রুমে এসেই দেখলো পরির বান্ধবী হাফসা ওর জন্য সিট ধরে রেখেছে।
পরি হালকা হেসে বেঞ্চে বসে পড়লো।
হাফসা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো ,,,,,,
– কি রে আজ এতো লেট কেন ?
আমি তো ভেবেছিলাম আজ আসবি ই না বোধহয়।

পরি বই বের করতে করতে বলল
– আরে না আসবো না কেন।
ঘুমের জন্য লেট হয়ে গেছে।

হাফসা পরির গালে দুটো টেনে বলল
– ঘুম কুমারী রে।

পরি হেসে বলল
– হয়েছে হয়েছে আজ পড়া কমপ্লিট করেছিস তো ?

হাফসা মাথা ঝাকালো,,,, স্যার ক্লাসে আসতেই ওরা চুপ হয়ে গেল।

প্রথম ক্লাসের স্যার চলে যেতেই ওরা গল্প শুরু করে দিলো।
হাফসা তো দুঃখের খবর শুরু করে দিয়েছে।
কারন ওর ভাই নাকি আজ রিমোট নিয়ে ওর সাথে মারামারি করেছে।
মাথায় আচ্ছা করে গাট্টা মেরেছে ওকে।
পরি হাসতে হাসতে বলল
– আমার ভাই টা ও রে এক নম্বর বজ্জাত।
খালি মারামারি করে আমার সাথে,,, ছোট দেখে কিছু বলতে ও পারি না।

হাফসা হতাশ হয়ে বলল
– সব ভাইয়া রাই বজ্জাত।
তোর তো তা ও ছোট ভাই আর আমার তো বড় ভাই।

হাফসার কথায় পরি ভ্রু কুঁচকে বলল
– তোর বড় ভাই ,,,,, আমি তো জানতাম ই না।
অবশ্য তোর সাথে তো আমার কিছুদিন ধরে ফ্রেন্সশিপ জমে উঠেছে।

হাফসা হালকা হেসে বলল
– হুমমম তা ও ঠিক।

পরি মুচকি হেসে বলল
– তোর ভাইয়ের নাম কি রে ?

হাফসা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল
– বজ্জাত ভাইয়ের নাম নীল।
পরি ভ্রু কুঁচকে বলল
– নীল বাবব্বা আমার নামের সাথে এতো মিল।

হাফসা হেসে বলল
– হ্যাঁ তোর পুরো নাম তো জান্নাতুল পরিনীল।

পরি হেসে বলল
– হুমমম ।
ডাকনাম পরিনীল থেকে পরি হয়ে গেছে এখননন
হাহাহ

হাফসা হালকা হেসে বলল
– ভাইয়ার পুরো নাম রাফসান আহমেদ নীল।

রাফসান নাম টা শুনে পরি আঁতকে উঠলো।
তারপর বলল
– রাফসান ?

হাফসা মাথা ঝাকালো।

পরি কিছু ভেবে বলল
– তারমানে রূপা আপুদের এক ব্যাচ সিনিয়র রাফসান আহমেদ নীল ?

হাফসা হালকা হেসে বলল
– আরে হ্যাঁ ।
কিন্তু কেন কি হয়েছে ?

পরি মুখ কুঁচকে বলল
– তোর ভাই তো একটা জিনিস মাইরি।
আমাদের পাশের বাসার রূপা আপু কে নাকি প্রপোজ ও করেছিল।
রূপা আপু নাকি রিজেক্ট করে দিয়েছে ,,, কিন্তু তা ও রূপা আপুর পেছনে পেছনে ঘোরে।
রূপা আপু তো বলল
– রাফসান ভাইয়া নাকি নাম্বার ওয়ান লুইচ্চা ।

অবশ্য আমার নিরাজ মামার মুখে শুনেছি
– রূপা আপু ও নাকি রাফসান ভাইয়ার সাথে প্রেম করতো।

পরির কথাতে হাফসা চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে বলল
– মোটে ও না।
আমার ভাই রূপা আপু কে পছন্দ করতো না ।
উল্টো রূপা আপু ই পছন্দ করতো।
হ্যাঁ রুপা আপুর সাথে ফাজলামি করত ঠিক ই।
কিন্তু এক টা ঘটাতে রূপা আপু ভেবেছে ভাইয়া ওনাকে পছন্দ করে।

পরি আগ্রহ নিয়ে বলল
– কি ঘটনা।

হাফসা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল
– আরে আর বলিস না।
আমার ডাফার ভাইয়া বর্ষা আপু কে পছন্দ করতো। একদিন রূপা আপু আর বর্ষা আপু স্কুল গ্রাউন দিয়ে আসছিলো,,,, দোতলা থেকে ভাইয়া বর্ষা আপু কে ফ্লাইং কিস দেয়।
আর সেটা বর্ষা আপুর বদলে দেখে নেয় রূপা আপু।
যার ফলে গন্ডগোল লেগে যায়।
ইনফেক্ট ওদের দুই বান্ধবীর মধ্যে ঝগড়া ও হয়,,, যে রাফসান কাকে কিস দেখিয়েছে।

হাফসার কথা তে পরি হাসতে হাসতে গলে যায়।
নিজে কে কন্টোল করে বলে
– তাঁর মানে তোর ভাইয়ার কিস দেখাতে গিয়ে মিস হয়ে গেছে।
অতঃপর বলা যায় আঙুর থেকে শুকিয়ে কিসমিস এ পরিনত হয়ে গেছে।

পরির কথাতে হাফসা কিছুক্ষণ পরির দিকে ভ্যাবলার মতো তাকিয়ে থাকে।
তারপর হাফসা ও জোড়ে হাসা শুরু করে।
স্যার আসাতেই দুজন মুখ চেপে হাসে,,,,, কিছুক্ষণ পর হাসা থামিয়ে পড়াতে মন দেয় ।

( আসসালামুআলাই রির্ডাস। অনেকের কমেন্ট এর রিপলে দিতে পারি না সময় সল্পতার জন্য।
আর গল্প ও ছোট করে দিচ্ছি। সমস্ত কিছুর জন্য আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত ।
আশা রাখছি শেষ অব্দি পড়লে ভালো লাগবে।
কমেন্ট করে জানাবেন কেমন হচ্ছে।
আমার লেখা গল্প পেতে পেজ এ লাইক ফলো আর বন্ধুদের ইনভাইট দিয়ে পাশে থাকুন )

****New top riders****
@Sneha Bakshi
?? Apu k onk onk vlobasha.
Avabyi pashy thako??

বি: দ্র: ভুল ত্রুটি মাপ করবেন ।

? হ্যাপি রিডিং ?

চলবে
ফাতেমা তুজ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here