? বান্ধবীর ভাই যখন বর ?
Part – 7
__________________________________
7,,,,,,,,,,,
খাওয়া শেষ হতেই নীল পরি কে বলল
– পরি ফ্রেস হয়ে এসো।
পরি মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি জানালো কিন্তু পরক্ষণেই চুপসে গেল।
নীল পরির কোনো হেলদোল না দেখে বলল
– কোনো সমস্যা হচ্ছে পরি ?
পরি বেশ অস্বস্তি তে পরে গেল একে তো নীলের সাথে তিন বছর পর দেখা তার উপর এই সমস্ত ঘটনা।
পরি কোনো মতেই অস্বস্তি কাটাতে পারছে না।
নীল বিষয়টা খানিকটা বুঝতে পেরে বলল
– অস্বস্তি কেন করছো?
যেকোনো পরিস্থিতি তেই তো তুমি নিজেকে মানাতে সক্ষম আর আগে তো আমায় যখন তখন হুটহাট যা ইচ্ছে বলে দিতে।
তাহলে আজ সংকোচ করছো কেন?
নীলের কথাতে পরি খানিকটা লজ্জা পেল।
কারন সেই ছোট্ট সময় গুলো তে পরি যা তা কান্ড করতো তা ভাবলেই পরির এখন লজ্জা লাগছে।
পরি নিজেকে সামলে নিয়ে যথাসম্ভব সংকোচ কাটিয়ে বলল
– আসলে আমার তো জামা কাপড় লাগবে ।
পরি এই কথাটা বলেই নিচু হয়ে রইলো।
পরি কে দেখে নীল ই
বোকা বনে গেল।
আসলেই তো নীল যদি না বলে তাহলে মেয়েটা জানবে কি করে ওর জামা কাপড়ের কথা।
নীল নিজের মনে নিজেকে কয়েকটা গালি দিয়ে তারপর কাবাড থেকে এক ডজন কাপড় বের করে পরির সামনে রাখলো।
পরি কে কিছু না বলতে দিয়ে ই নীল বলল
– যেটা ইচ্ছে পড়ে নিয়ো।
আমি একটু পর আসছি।
এই বলেই নীল রুম থেকে হনহনিয়ে বের হয়ে গেল।
পরি খানিকটা অবাক ই হলো নীল এতো জামা কাপড় ও আনিয়ে রেখেছে।
সব কিছু যেন মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে ওর।
কি হচ্ছে এসব ,,,,,,, এটা কি সেই তিন বছর আগের নীল যে পরির একটা ম্যাসেজের রিপলে ও দিতো না।
পরি এ সমস্ত ভাবনার কোনো উত্তর পায় না।
তাই সব ভাবনা বাদ দিয়ে সাওয়ার নিতে বাথরুমে চলে আসে।
_______________________
নীল নিচে যেতেই সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ে।
নীল কে দেখে অনিক যেন হাফ ছেড়ে বাঁচল।
কারন এতোক্ষন এরা সবাই পাগল করে দিয়েছে ওকে।
অনিকের থেকে সমস্ত ডিটেলস নিতে ব্যস্ত ছিলো ওরা।
আর সবার প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অনিকের যা তা অবস্থা।
নীল ওদের পাশে সোফা তে বসতেই
নীলের বন্ধুরা সবাই নীল কে আড় চোখে দেখতে লাগলত। যার ফলে নীল ওদের দিকে ভ্রু কুঁচকে বলল
– এভাবে ভ্যাবলার মতো কি দেখছিস ?
লিমন ভ্রু নাচিয়ে বলল
– মামম্মা এই সমস্ত কিছুর মানে তো বোঝাও।
পরির সাথে কি চলতো আগে ?
হুমমম
আমরা যখন বলতাম তখন তুমি নিজে রে নিরামিষ দাবি করতে মিয়া।
আর এখন দেখি তুমি পুরাই আমিষ,,,,,,,,,,,,
লিমনের কথাতে নীল ভ্রু কুঁচকে বলল
– এই সব কিছু ই না। তোরা যা জানতি তাই সত্যি শুধুমাত্র ওর প্রতি মনের অনুভূতি টা তদের কে জানাই নি।
দ্যাটস ইট।
নিশাত চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে বলল
– মানে কি ?
নীল সোফা থেকে উঠে দাড়িয়ে বলল
– মানে কিছুই না।
ওকে আমি সেই প্রথম থেকেই ভালোবাসি।
কিন্তু ওকে বলি নি,,, আর দূরে সরিয়ে দিয়েছিলাম।
কিন্তু তাই বলে তো আমি ওকে সারা জীবনের জন দূরে সরাতে পারি না ।
ওকে ছাড়া প্রতি মুহূর্ত বিষাক্ত লাগে,,,,,,
কি করে ওকে অন্যের হতে দেই বল।
সবাই একসঙ্গে বলে উঠলো।
ওহোহহহ হোওও
মামম্মা তুমি তো সেই লেবেলের প্রেমিক।
নীল মৃদু হেসে বলল
– এখন কি আপনারা ডিনার করতে যাবেন ?
নাকি এখনো মাথা টা নষ্ট করবেন।
রিয়াদ বলল
– না দাদা ভাই এখন খুব খিদে পেয়েছে।
তাড়াতাড়ি চলো,,,,,,
কিন্তু জিহান বলল
– দাদা ভাই ভাবি নিয়ে আসলা এখন বাসর সাজাবো না নাকি?
নীল মুচকি হেসে বলল
– সে তো সাজাবি ই বটে তবে আজকে না যখন বিয়ে করবো তখন।
জিহান চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে বলল
– আবার বিয়ে ?
তোমার মনে কি চলে হুমমম ?
নীল হাসতে হাসতে বলল
– আরে বেটা আবার বিয়ে বলতে পরি কেই বিয়ে।
কিন্তু সেটা সবার মতামত নিয়ে ধর্ম মতে হবে।
লিমন বলল
– তুই বেটা জিনিস ই বটে।
নীল হাসতে হাসতে বলল
– তদের বন্ধু বলে কথা।একটু তো ডাফার হবো ই।
সবাই একসাথে হাসতে লাগল।
তারপর সবাই একসাথে ডিনার করতে চলে গেল।
_______________________
পরি সাওয়ার নিয়ে রুমে এসে ট্রাওয়াল দিয়ে ভালো মতো চুল গুলো মুছে নিল।
আয়নার সামনে দাঁড়াতেই সে নিজেকে দেখে চমকে গেল।
কারন সে তার নিজেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন রূপে দেখছে।
মনে হচ্ছে একদিনের মাঝে ই কেউ ওর চেহারার লাবন্যতা বাড়িয়ে দিয়েছে।
নিজেকে দেখতে বেশ ভালো লাগছে ওর।
মাথার চুল গুলো খুলে রেখেই সুন্দর করে বেঁধে নিয়ে বেডে এসে বসে পড়লো।
চারিপাশে একবার চোখ বুলিয়ে নিলো।
রুম টা এতো সুন্দর করে গুছিয়ে রাখা আর এতো সুন্দর ডেকোরেশন,,,যে পরি বেশ কিছুক্ষণ সময় নিয়ে চারিপাশ খুটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলো।
বিশাল বড় রুমের পাশে খোলা বারান্দা।
পরির ইচ্ছে হলো একটু বারান্দাতে যেতে।
তাই সে বারান্দা তে চলে গেল।
বারান্দায় গিয়ে হা হয়ে গেল।
এটাকে কি বলে তা পরির জানা নেই ,,,, কারন এটা রিতি মতো একটা ছোট্ট পার্ক ই বটে।
বারান্দা টা রুমের থেকে ও বিশাল। রুমের থেকে বারান্দা বড় হয় তা পরির জানা ছিলো না।
চারিপাশে নানা রকমের ফুল গাছ লাগানো।
এক সাইটে বিশাল বড় দোলনা যা আরটিফিশিয়াল ফুলে সজ্জিত ।
চারিপাশে রঙিন ডিম লাইট লাগানো আর থেকে থেকে নানান ধরনের পশু পাখির স্ট্যাচু ।
সেই স্ট্যাচু গুলো তে বসার জন্য সুন্দর আসন।
এই বারান্দার মাঝে চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য দেখে পরি কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে গেল।
তারপর ছুটে গিয়ে সেই সমস্ত সৌন্দর্য উপভোগ করতে লাগলো।
পরি এই মুহূর্তে সেই ছোট্ট বাচ্চা পরি হয়ে গেছে।
মনের মধ্যে সমস্ত ক্লান্তি দূর হয়ে গেছে।
আজকের ঘটনা গুলো পরির মন থেকে এই মুহূর্তে আকাশের মেঘ হয়ে উবে গেছে।
পরির এই ছোট্ট বাচ্চামি গুলো ব্যালকনির দরজার পাশে দাড়িয়ে উপভোগ করতে লাগলো নীল।
তার মনে হচ্ছে,,,,, হাজার বছর ধরে খাঁচায় থাকা কোনো বন্দিনী আজ মুক্তি পেয়েছে।
যার জন্য মুক্ত বিহঙ্গের মতো ডানা মেলে উড়ে বেড়াচ্ছে।
এই সুন্দর মূহুর্তে নীল পরির বাচ্চামো তে হাড়িয়ে গেল।
ইসসস যদি এই সময় টা থমকে যেত।
খুব কি ক্ষতি হতো তাতে ?
( আসসালামুআলাই রির্ডাস। কাল থেকে বড় করে দেওয়ার চেষ্টা করবো ।
গল্প কেমন হচ্ছে জানাবেন প্লিজ । একটু পেচালো তো বটেই। আশা করি শেষ অব্দি পড়লে ভালো লাগবে।
আমার লেখা গল্প পেতে পেজ এ লাইক ফলো আর বন্ধুদের ইনভাইট দিয়ে পাশে থাকুন )
বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাপ করবেন ।
? হ্যাপি রিডিং ?
চলবে
ফাতেমা তুজ