বর্ষণের সেই রাতে ❤Extra_Part

0
1297

#বর্ষণের সেই রাতে ❤
#লেখিকা: অনিমা কোতয়াল
#Extra_Part
.
অাদ্রিয়ানের ঐ ভালোবাসি শব্দটা শোনার সাথে সাথেই অনিমা হ্যাং হয়ে গেছে। যদি সবকিছু স্বাভাবিক হতো তাহলে হয়তো সবচেয়ে বেশি খুশি ও হতো। কিন্তু ওর কপালে ভালো কিছু থাকতেই পারেনা, ওর কপালটাই এরকম, ভালোবাসাটা ওর জন্যে লেখা নেই। অনিমাকে চুপ থাকতে দেখে আদ্রিয়ান অনিমার কপালের চুল সরিয়ে দিয়ে বলল,

— ” তোমার উত্তর জানতে চাইনা আমি। শুধু আমার মনের কথাটা তোমাকে জানিয়ে দিলাম।’

অনিমা ভ্রু কুচকে তাকালো আদ্রিয়ানের দিকে, অনিমার উত্তর যে আদ্রিয়ান জানতে চায়না সেটাতো ওর প্রপোজের স্টাইল দেখেই বুঝে গেছে। নতুন করে বলার কী আছে। আদ্রিয়ান অনিমার কপালের কপাল ঠেকিয়ে বলল,

— ” ভালোবাসি তোমাকে আর আমি জানি যে তুমিও বাসো। কিন্তু সেটা বুঝতে পারছোনা বা বুঝতে চাইছোনা। অথবা জেনে বুঝেও স্বীকার করছো না। কিন্তু আমার কাছে এটা মেটার করেনা যে তুমি আমাকে ভালোবাসো কী না। আমার কাছে এটাই গুরত্বপূর্ণ যে আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমাদের জন্যে আমার একা ভালোবাসাটাই যথেষ্ট।”

অনিমা একদৃষ্টিতে আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে, আদ্রিয়ানের কথাগুলো ওকে ঘোরের মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। আদ্রিয়ানও অনিমার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ করেই অনিমার হুস এলো। ও আদ্রিয়ানের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে করতে বলল,

— ” আমি ভালোবাসি না আপনাকে। ছাড়ুন আমায় ।”

আদ্রিয়ান অনিমাকে আরো কাছে টেনে নাকে নাক ঘষে দিয়ে বলল,

— ” যতো যাই বলো ভালোতো তুমি আমাকেই বাসবে জানপাখি।”

‘জানপাখি’ শব্দটা শুনে অনিমার বুকের ভেতরে কেমন ধক উঠল। কেনো জানিনা এক অদ্ভুত ভালোলাগা ছুয়ে গেলো ওর মনকে। চোখ নিয়ে ওর অজান্তেই পানি গড়িয়ে পরল, কিন্তু এই ভালোলাগা ওর জন্যে না। অনিমা নিজেকে স্বাভাবিক করে বলল,

— ” আমাকে যেতে হবে আমার কাল আমার অফিস আছে।”

আদ্রিয়ান অনিমাকে ছেড়ে দিয়ে একটূ দূরে সরে বসে বলল,

— ” যেতে হবেনা কয়েকদিনের জন্যে তোমার ছুটি।”

আদ্রিয়ানের কথা শুনে অনিমা চরম অবাক হয়ে বলল,

— ” মানে কী? অফিসটা কী আমার জামাইর যে? আমি চাইলেই আমায় ছুটি দিয়ে দেবে?”

আদ্রিয়ান অনিমার নাক টিপে দিয়ে বলল,

— ” বড্ড বেশি কথা বলো তুমি, এখন চুপচাপ শুয়ে পরো। এসব তোমাকে জানতে হবেনা।”

— ” দেখুন আপনি কিন্তু…”

আদ্রিয়ান অনিমার ঠোটে আঙুল দিয়ে বলল,

— ” হুসস আর একটা কথাও না, আমি বাধন খুলে দিচ্ছি চুপচাপ শুয়ে পরো, একটুও ছটফট করবে না। তাহলে কিন্তু আবার বেধে দেবো।”

এটুকু বলে আদ্রিয়ান অনিমার হাত পা খুলে দিয়ে বলল,

— “শুয়ে পরো। একটাও কথা না ওকে?”

অনিমা কিছু না বলে শুয়ে পরলো কারণ ও জানে এখন কিছু বললে বা করলে আদ্রিয়ান আবার ওর হাত পা মুখ বেধে রেখে দেবে। আদ্রিয়ান মুচকি হেসে সোফায় গিয়ে শুয়ে পরলো। আদ্রিয়ান হাত ভাজ করে মুচকি হাসতে হাসতে অনিমাকে দেখে যাচ্ছে। অনিমা আদ্রিয়ানকে ওভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে উলটো ঘুরে শুয়ে পরলো। সেটা দেখে আদ্রিয়ান ভ্রু কুচকে ফেলল। তারপর কিছু একটা ভেবে মুচকি হেসে বলল,

— ” এক মিনিটের মধ্যে যদি এদিকে না ঘোরা হয়, তাহলে কিন্তু আমি বেডে চলে আসবো। আই থিংক কেউ সেটা পছন্দ করবে না।”

অনিমা চোখ বড়বড় হয়ে গেলো। বুঝতে পারলো যে ওকেই বলছে, বেডে আসবে মানে কী? সত্যিই চলে আসবে নাকি। অনিমা এসব ভাবতে ভাবতেই আদ্রিয়ান বলল

— ” আর থার্টি সেকেন্ড দেখবো আমি।”

অনিমা জানে এই ছেলের বিশ্বাস নেই সত্যিই চলে আসতে পারে। তাই তাড়াতাড়ি আদ্রিয়ানের দিকে ঘুরলো কিন্তু চোখ বন্ধ করে রাখল যাতে ওকে দেখতে না হয়। আদ্রিয়ান হালকা হেসে আবারো ওর জানপাখিকে দেখায় মনোযোগ দিলো। অনিমা মাঝেমাঝে এক চোখ খুলে তাকায় আর আদ্রিয়ানকে দেখে সাথে সাথেই চোখ বন্ধ করে নেয় কারণ প্রতিবারই আদ্রিয়ানকে তাকিয়ে থাকতে দেখে। এরক কয়েকবারই হলো অনিমার এসব বাচ্চা বাচ্চা কান্ডে হেসে দেয় আদ্রিয়ান। এভাবেই দুষ্টোমি করতে করতে আস্তে আস্তে দুজনেই ঘুমিয়ে পরে।

_______________

বেডের খাটে হেলান দিয়ে মনমরা হয়ে বসে আছে অরুমিতা। অনিমাকে কাল থেকে ফোনে পাচ্ছেনা ফ্লাটেও নেই কোথায় গেলো মেয়েটা? রিক নিয়ে যায় নি তো? এসব চিন্তায় তীব্র অরুমিতা দুজনেরই মাথা খারাপ হয়ে আছে। হঠাৎ ফোন বেজে উঠতেই অরুমিতা তাকিয়ে দেখে আশিসের ফোন, ওর মন ভালো নেই তাই রিসিভ করে বলল

— ” কী বলবেন বলুন?”

আশিস জানে অরুমিতার মন খারাপ তাই ওর মাইন্ড ফ্রেশ করতে মজা করে বলল

— ” আরে এটা কোনো কথা হলো? কোথায় আমি ভাবলাম কোথায় আজ সারারাত দুজন প্রেমালাপ করবো তুমি এভাবে বলছো? কতো আনরোমান্টিক তুমি।”

এতে অরুমিতার মুড ভালো হওয়ার পরিবর্তে আরো চটে গেলো। অরুমিতা রেগে বলল

— ” আপনি এসব ফাউল কথা বলতে আমাকে ফোন করেছেন?”

— ” আরে এগুলোই তো কাজের কথা। আমি কোথায় ভাবলাম…”

অরুমিতা এবার চরম রেগে গিয়ে আশিসকে থামিয়ে বলল

— ” সাট আপ। কী পেয়েছেন কী আপনি? যখন তখন ফোন করে বিরক্ত করে চলেন। আপনার সবসময় মজার মুড থাকলেও অন্য কারো নাও থাকতে পারে এটা বোঝেন? তাই নূন্যতম সেলফ রেসপেক্ট থাকলে ভবিষ্যতে এসব মজা করতে আসবেন না আমার সাথে।”

অরুমিতাকে নিয়ে আহামরি সিরিয়াস না হলেও অরুমিতার এসব কথায় খানিকটা কষ্ট পেলো আশিস। নিজেকে স্বাভাবিক করে বলল

— ” আমার ফোনে তুমি ডিসটার্ব হও এটা জেনেও আমি তোমাকে কল করতাম কারণ আমার ভালো লাগে তোমার সাথে কথা বলতে। তোমাকে আগেও বলেছি ভালোবাসি আমি তোমায়, কিন্তু তুমিযে এতোটা বিরক্ত বোধ করবে সেটা বুঝতে পারিনি। সরি ফর দ্যাট। আর কখনো নিজে থেকে বিরক্ত করবোনা তোমাকে, গুড বাই।”

এটুকু বলেই ফোনটা রেখে দিলো আশিস। অরুমিতা থম মেরে বসে রইলো, শুধু শুধুই ছেলেটাকে এতো কথা শোনালো। আসলে এতোটাই ডিসটার্বট ছিলো যে হঠাৎই মাথা গরম হয়ে উঠল আর কীসব বলে দিলো। এখন নিজের কাজে নিজেরই আফসোস হচ্ছে ওর কিন্তু ইগোর জন্যে কল ব্যাক করতে পারছেনা। একরাশ মন খারাপ নিয়েই শুয়ে পরল অরুমিতা।
আর ওদিকে আশিস কিছুক্ষণ মন খারাপ করে বসে থেকে ওর কোনো এক গার্লফ্রেন্ড কে ফোন করে টাইমপাসে বিজি হয়ে গেলো। এখন এটাই মাইন্ড ফ্রেশ করার একমাত্র উপায়।

__________________

বাইরে তীব্র গতিতে বৃষ্টি হচ্ছে, বাজ ও পরছে মাঝে মাঝে। রিক আজকে আবারো ড্রিংক করে টলতে টলতে বাড়ি এসছে। সিড়ি দিয়ে ওপরে উঠতে যাবে তার আগেই মিস্টার রঞ্জিত এসে বললেন,

— ” দাড়াও রিক।”

রিক পেছনে ঘুরে পিটপিট চোখে তাকিয়ে মাতাল কন্ঠে বলল

— ” প্লিজ ড্যাড। রাত দুপুরে তোমার স্পিচ দিয়ো না, আ’ম নট ইন মুড।”

— ” হ্যা সেটাই তোমার তো শুধু মদ গেলার আর ঐ মেয়ের নাম জপারই মুড থাকে।”

রিক বিরক্ত হয়ে বলল

— ” যা বলার ডিরেক্টলি বলো।”

মিস্টার রঞ্জিত সোফা থেকে উঠে এসে রিকের সামনে গিয়ে দাড়িয়ে বলল

— ” সামনে পার্টির ইলেকশন মাথায় আছে এটা?”

রিক চোখ ডলতে ডলতে ভাঙ্গা গলায় বলল

— ” সো? আমি কী করবো? ”

মিস্টার রঞ্জিত এবার রেগে গিয়ে বললেন

— ” কী বলতে চাইছো তুমি? তুমি একজন ক্যান্ডিডেট ভূলে যাচ্ছো সেটা?”

— ” নো ড্যাড, বাট পার্টি তো আমাদেরই সো চাপ নিয়োনা। তুমি সামলে নাও।”

— ” কিন্তু তোমাকে তো একটু হলেও প্রেজেন্ট থাকতে হবে নাহলে কীসের ভিত্তিতে জেতাবো তোমাকে?”

— ” দেখো ড্যাড আমি আগেও বলেছি আর এখোনো বলছি এসবে আমার ইন্টারেস্ট নেই তোমার জোরাজুরিতেই এসব ইনভল্ব হচ্ছি নাথিং ইলস। আমার এখন অনিকে খুজতে হবে সেটাই বেশি ইমপরটেন্ট, তারপর এসব ভাবা যাবে।”

এটুকু বলেই রিক রুমে চলে গেলো। মিস্টার রঞ্জিত রাগে ফেটে যাচ্ছেন। ওই একটা মেয়েই সব ভেস্তে দিচ্ছে। এখন তো গলার কাটার মতো আটকে আছে, না পারছে গিলতে আর না পারছে উগলাতে। ঐদিন যদি রিক ওখানে না চলে আসতো তাহলে এই ঝামেলায় পরতেন না উনি।

_________________

বাজ পরার আওয়াজে চিৎকার করে উঠে বসলো অনিমা। ভয়ে হাত পা কাপছে ওর দুই হাতে চেপে ধরে কেঁদে যাচ্ছে। অনিমার চিৎকারে আদ্রিয়ানের ঘুম ভেঙে গেলো, বাজ পরার আওয়াজেই ও বুঝতে পারলো কী হয়েছে। ‘সিট’ বলেই উঠে লাইট জ্বালিয়ে অনিমার কাছে গিয়ে বসলো। অনিমা চোখ মুখ খিচে কানে হাত দিয়ে বসে আছে আর কেঁদে যাচ্ছে। আদ্রিয়ান অস্হির হয়ে বলল

— ” অনি তাকাও কী হয়েছে?”

অনিমা আদ্রিয়ানের আওয়াজ পেয়েই আদ্রিয়ানকে দেখে ওকে জাপটে ধরে শব্দ কলে কাঁদতে লাগল। আদ্রিয়ান একহাতে অনিমার পিঠ জরিয়ে ধরে মাথায় ওপর হাত বুলাতে বুলাতে বলল

— ” কিচ্ছু হয়নি। এভরিথিং ইজ ফাইন। কেনো এতো ভয় পাচ্ছো বলো?”

অনিমা উত্তেজিত হয়ে বলল,

— ” স্লিপিং পিলস, প্লিজ আমাকে স্লিপিং পিলস দিন। প্লিজ।”

আদ্রিয়ানের খুব বেশি কষ্ট হচ্ছে অনিমাকে এভাবে দেখে, তবুও নিজেকে সামলে বলল

— ” নো। স্লিপিং পিলস পাবেনা তুমি।”

অনিমা করুণ স্বরে বলল

— ” প্লিজ।”

— ” না বললাম তো। ভয়ের থেকে পালাতে নয় ভয়ের মোকাবেলা করতে শেখো। তোমাকে এই সিচিউশন ফেস করতে হবে। ”

কিন্তু অনিমা কোনো কথাই শুনছেনা প্রচন্ড হাইপার হয়ে যাচ্ছে, পাগলের মতো বিহেভ করছে। অাদ্রিয়ান এবার আর সহ্য করতে না পেরে ঘুমের ঔষধ এনে খাইয়ে দিলো ওকে। অনিমা ওটা এমনভাবে খেলো যেনো চরম তৃষ্ণার্ত কোনো ব্যাক্তিকে পানি দেওয়া হয়েছে। আদ্রিয়ানের বুক ফেটে যাচ্ছে অনিমার এই অবস্হায়। ও অনিমাকে শক্ত করে নিজের বুকের সাথে চেপে ধরল। অনিমা ফোঁপাতে ফোপাঁতে বলল

— ” প্লিজ আব্বুকে বাঁচান ওরা মেরে ফেলবে আব্বুকে। প্লিজ কিছু করুন প্লিজ।”

অনিমা কিছুক্ষণ কান্না করে দিয়ে আবারো বলে উঠল,

— ” অামাকে যেতে দিন, আমি কিচ্ছু করিনি প্লিজ। ”

এরকম নানারকম কথা বলে চলেছে অনিমা আর অাদ্রিয়ান ওকে বুকে জরিয়ে ধরে রেখে মনোযোগ দিয়ে ওর কথা শুনছে আর একটার সাথে আরেকটা মেলানোর চেষ্টা করছে। একপর্যায়ে অনিমা থেমে যেতেই আদ্রিয়ান বুঝলো ও ঘুমিয়ে গেছে। কিন্তু আদ্রিয়ান অনিমাকে বুক থেকে সরালো না, ওকে বুকে নিয়েই খাটে হেলান দিয়ে শুয়ে রইলো। আর গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে গেলো। এই বাজ পরা তীব্র বৃষ্টিকে ও এতো ভয় পায় কেনো? কী কারণ হতে পারে এর? কী এমন হয়েছিলো? কীকরে জানবে ও ওর অতীত? অনিমা ছাড়া আর কে জানতে পারে? হঠাৎ করেই ওর অরুমিতা আর তীব্রর কথা মনে পরলো। ইয়েস একমাত্র ওরাই জানতে পারে সব সত্যিটা। ওকে ওদের সাথে কথা বলতে হবে আর কালকেই। আদ্রিয়ান সাথে সাথেই অরুমিতা আর তীব্রকে মেসেজ করে দিলো। তারপর অনিমাকে আরো শক্ত করে বুকে জরিয়ে ধরল। আজ ওর আর ঘুম আসবেনা, ওর কানে শুধু অনিমার করুণ আর্তনাদগুলোই বাজছে। কিছুতেই মনকে স্হির করতে পারছেনা কিছুতেই না।

_______________

রিক ওর ফার্মহাউজে রকিং চেয়ারে বসে আছে। সামনে দাড়িয়ে থাকা লোকটার দিকে হাত বাড়িয়ে বলল

— ” ওর বন্ধুদের বায়োডেটা সহ লিস্টটা দে।”

লোকটা মাথা নিচু করেই এগিয়ে দিলো লিস্টটা রিকের দিকে। রিক লিস্ট দেখে ভ্রু কুচকে বলল

— ” মাত্র দুজন ফ্রেন্ড? ”

— ” জ্বী ভাই। অরুমিতা আর তীব্র।”

তীব্র নামটা শুনেই চোয়াল শক্ত হয়ে গেলো রিকের। ছেলে ফ্রেন্ড ও জুটিয়েছে? তবুও নিজেকে সামলে বলল

— ” আদ্রিয়ান আবরার এর বাড়ি আর এপার্টমেন্টে খোজ নিয়েছিস?”

— “জ্বী ভাই কিন্তু ভাবী ওখানে নেই।”

— ” ঠিকাছে তুই যা।”

লোকটা চলে যেতেই রিক ভাবতে বসলো। তারমানে আদ্রিয়ান অনিমাকে ওর এমন কোনো এক বাংলো বা এপার্টমেন্টে রেখেছে যেটা পাবলিক ইনফরমেশন এ দেওয়া নেই। কোনো গোপন জায়গা? রিক চোয়াল শক্ত করে বলল

— ” খুব চালাক ভাবো নিজেকে আদ্রিয়ান আবরার জুহায়ের? কিন্তু তুমি ওকে যেখানেই লুকিয়ে রাখোনা কেনো খুজেতো ওকে আমি পাবোই, আর তোমার সামনে দিয়েই ওকে নিজের কাছে নিয়ে আসবো আমি।”

____________________

একটা কফিশপে আদ্রিয়ান, তীব্র আর অরুমিতা বসে আছে। নিরবতা ভেঙে আদ্রিয়ান বলল

— ” অনি আমার কাছেই আছে।

তীব্র আর অরুমিতা দুজনেই চমকে তাকালো। আদ্রিয়ান একটু কেশে নিয়ে বলল

— “কোথায় আছো সেটা এখনি বলতে পারবোনা তোমাদের তবে সেফ আছে।”

অরুমিতা আর অরু দুজনেই একটা স্বস্তির নিশ্বাস নিলো। অরুমিতা একটা শ্বাস ফেলে বলল

— ” থ্যাংক গড যে ও আপনার কাছে আছে। আমরাতো টেনশনে পরে গেছিলাম।”

অাদ্রিয়ান এবার দুজনের দিকে তাকিয়েই বলল

— ” তোমরা দুজনেই অনিমার ভালো চাও রাইট?”

তীব্র আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলল

— ” অবশ্যই চাই ও আমাদের সবচেয়ে ভালো বন্ধু ও খুশি থাকলে আর কিচ্ছু লাগবেনা আমাদের।”

আদ্রিয়ান মুচকি হাসলো তারপর বলল

— ” তাহলে তোমাদের আমাকে একটা হেল্প করতে হবে।”

অরুমিতা অবাক হয়ে বলল

—“কীকরম হেল্প?”

— ” দেখো ওর জীবণের সব বিপদের কারণ ওর অতীত, আর তাই ওকে নিরাপদ রাখতে আমাকে ওর অতীত জানতে হবে। তাই ওর অতীত টা সম্পূর্ণ খুলে বলো আমাকে। কী হয়েছিলো ওর বাবা মানে আঙ্কেল মারা যাওয়ার পর?”

তীব্র বলল

— ” এক্ষেত্রে আমাদের চেয়ে বেশি আপনাকে মাদার হেল্প করতে পারবে। আমরা কিছু কিছু ঘটনা জানি কিন্তু উনি আপনাকে সম্পূর্ণ ঘটনাটাই ক্লিয়ারলি বুঝিয়ে বলতে পারবে।”

আদ্রিয়ান উঠে দাড়িয়ে বলল

— ” চলো তাহলে আর এক মূহুর্ত ও ওয়েস্ট করতে চাইনা আমি।”

এরপর আদ্রিয়ানের গাড়ি করে ওরা তিনজনেই রওনা দিলো অনাথ আশ্রমের উদ্দেশ্য। আদ্রিয়ান খুব দ্রুত ড্রাইভ করছে ও আর ধৈর্য ধরতে পারছেনা অনিমার অতীত জানার জন্যে।
.
#চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here