#বর্ষণের সেই রাতে ❤
#লেখিকা: অনিমা কোতয়াল
#পর্ব- ১০
.
— “যতো খুশি উড়ে নাও বেইবি। কারণ আবারও খাচায় বন্দি হবার সময় এসে গেছে তোমার। আমি খুব শিঘ্রই তোমাকে বলব ‘ওয়েলকাম ব্যাক টু মাই হেল সুইটহার্ট’। এতো বড় বুকের পাটা এখনো কারো হয়নি যে আমার হাত থেকে তোমাকে বাচাবে। কারো হয়নি ! কারোর না।”
রিক এসব বলতে বলতেই হনহন করে রিকের রুমে ঢুকলেন রঞ্জিত চৌধুরী। ওনার মুখে বিরক্তির ছাপ পরিষ্কার। ভ্রু কুচকেই সারারুমে চোখ বুলালেন উনি, এটা নতুন না প্রায় ড্রিংক করে বাড়ি ফিরে এইধরণের পাগলামী করে রিক। কিন্তু এই মুহূর্তে মিস্টার রঞ্জিত একটু বেশিই বিরক্ত হচ্ছেন, ছেলের এইরকম ছেলেমানুষি মোটেও সহ্য হচ্ছেনা তার তাই রাগী গলাতেই বললেন
— “কী শুরু করেছো তুমি রিক। এভরিথিং হ্যাস আ লিমিট।”
রিক হাতে ধরে রাখা ভাঙা বোতলটা মেঝেতে আছাড় মেরে কোনো মতে টলতে টলতে উঠে দাড়িয়ে চেচিয়ে বলল
— “লিমিট মাই ফুট। এন্ড ইউ প্লিজ ডোন্ট টক টু মি ড্যাড। তুমি একজন মিনিস্টার, তোমার তো এত্তো পাওয়ার। কিন্তু তোমার এইসব পাওয়ার আমার কোন কাজে লাগছে হ্যা? জাস্ট টেল মি? ”
মিস্টার রঞ্জিত রাগান্বিত গলায় বললেন
— “কী বলতে চাইছো তুমি?”
— “তোমার এত্তো পাওয়ার এত্তো লোক দিয়েও একটা সামান্য জার্নালিস্টের মেয়েকে খুজে বের করতে পারছোনা।”
— “ওর বাবা কোনো সামান্য জার্নালিস্ট ছিলোনা। একটা গোটা নিউস কম্পানি চলতো ওর বাবার কথায়, আর যাকে তুমি সামন্য জার্নালিস্ট বলছো সেই সামান্য জার্নালিস্টই তোমার বাবাকে শেষ করে দেবার ক্ষমতা রেখেছিলো। এই যে মন্ত্রীর ছেলে বলে এতো গর্ব করো সেটাও থাকতোনা। আজীবণ জেলের ঘানি টানতে হতো আমাকে। সেই জন্যেই ওকে শেষ করতে হয়েছিলো আমার। বুঝলে?”
রিক টি-টেবিলে একটা লাথি মেরে বলল
— “না না আমি কিচ্ছু বুঝিনি আর আমি এতো কিছু বুঝতে চাইও না। আই জাস্ট ওয়ান্ট হার। আমার শুধু ওকে চাই ড্যাড। এট এনি কস্ট ওকে এনে দাও আমার কাছে। হোয়াই ডোন্ট ইউ আন্ডারস্টান্ড? হোয়াই?”
এটুকু বলেই খাটে বসে পরল রিক, মিস্টার রঞ্জিত এবার একটু বিরক্তি নিয়ে বললেন
— “একটা সামন্য মেয়ের জন্যে এতোটা হাইপার হওয়ার কী আছে আমিতো সেটাই বুঝতে পারছিনা? তুমি একটা ইশারা করলে তোমার জন্যে মেয়েদের লাইন পরে যাবে কেনো ঐ মেয়ের পেছনে পরে আছো?”
রিক ঝাড়া দিয়ে দাড়িয়ে চিৎকার করে বললো
— “কারণ আমার ওকেই চাই। আর আমি কোনো কিছু চেয়ে পাইনি এটা কখোনো হয়নি আর না হতে দেবো। তুমিতো ওকে মেরে ফেলতে চেয়েছিলে তাইনা? কাউকে লাগবেনা আমার। তোমাকেও না আমি একাই ওকে খুজে বার করতে পারবো। কাউকে লাগবে না।”
মিস্টার রঞ্জিত এবার একটু নরম গলায় বললেন
— “দেখো বেটা।”
— “লিভ মি এলোন।”
— “আমার কথাটা…”
রিক এবার চিৎকার করে বলল
— “আই সেইড লিভ মি এলোন”
মিস্টার রঞ্জিত বুঝে গেছেন এই ছেলে এখন আর তার কোনো কথাই শুনবে না। এই ছেলেকে তিনবছর ধরে বুঝিয়ে আসছে কিন্তু ছেলের মন কিছুতেই ঘোরাতে পারছেনা। যা করার ভেবে চিন্তে ঠান্ডা মাথায় করতে হবে। এসব ভেবে রুম থেকে চলে গেলেন উনি। রিক উঠে ধরাম করে দরজাটা লাগিয়ে দিলো তারপর দেয়ালে টানানো বিশাল এক ছবির দিকে তাকিয়ে বলল
— “আমার কাছ থেকে পালিয়ে তুমি একদমি ঠিক করোনি। তোমাকে এর অনেক বড় মূল্য দিতে হবে, অনেক বড়। আমার হিংস্রতার কিছুই তুমি দেখোনি তবে এবার দেখবে। এবার আর ড্যাডের আশায় বসে থাকবোনা আমি নিজে খুজবো তোমাকে নিজে। আই এম কামিং সুইটহার্ট।”
ছবিটার দিকে তাকিয়ে বাকা হেসে বিয়ারের বোতলে চুমুক দিলো রিক।
।
রাত ১২ টা ১৭, অনিমা ফোনটা সাইডে রেখে খাটে হেলান দিয়ে বসে কোলের ওপর ল্যাপটপ রেখে নিজের আর্টিকেল রেডি করছে। তবে বারবার আড়চোখে ফোনের দিকেও তাকাচ্ছে। নিজের অজান্তেই সে আদ্রিয়ানের ফোনের জন্যে অপেক্ষা করছে। কিন্তু এখনও ফোন আসছেনা বলে অনিমার মনটাও বেশ অনেকটাই খারাপ হয়ে আছে। বললোতো ফোন করবে সারে বারোটা বেজে গেছে এখোনো ফোন করলো না? হয়তো ভূলে গেছে, ওরতো আর কাজের অভাব নেই হয়তো কাজের চাপে মনে নেই ওর কথা এসব ভাবতে ভাবতে ফোনের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস নিলো অনি, তারপর আবারো কাজে মন দিলো। কিছুক্ষণ পরেই রিংটোনের আওয়াজে চমকে উঠল অনি। আদ্রিয়ানের চিন্তা বাদ দিয়ে কাজে মন দিয়েছিলো সে, তাই এই হঠাৎ আওয়াজে একটু কেপে উঠেছে। পাশের বালিশে মোবাইলের স্ক্রিণে চোখ পরতেই মুখে হাসি ফুটে উঠল ওর কারণ সেভ করা না থাকলেও নাম্বারটা চিনতে একটুও দেরী হয়নি। মুচকি হেসে ল্যাপটপটা অফ করে সাইডে রেখে ফোনটা রিসিভ করে বলল
— “হ্যালো”
— “এখোনো জেগে আছো? আমিতো ভেবেছিলাম ঘুমিয়ে পরেছো।”
— ” আপনার ফোনের জন্যেই জেগে ছিলাম।”
কথাটা বলার সাথে সাথেই জিবে কামড় দিলো অনিমা। আনমনে কী বলে ফেলল সেটা নিয়েই অফসোস হচ্ছে এখন ওর। আদ্রিয়ান নিশ্চই ওকে হ্যাংলা একটা মেয়ে ভাবছে। আসলে অনেক সময় এরকম হয় মানুষ যখন তার অনুভূতির চরম সীমায় পৌছে যায় তখন শব্দের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকে, উত্তেজনা এতো তীব্র পর্যায়ে চলে যায় যে নিজের বাক্যগুলোও তখন বড্ড অবাধ্য হয়ে যায়। এমনি অবস্হা হয়েছে অনিমার। আদ্রিয়ানও অনিমার কথা শুনে একটু অবাক হলো, পরোক্ষণেই ঠোটের কোণে হালকা হাসি ফুটে উঠল। আর অনিমা যে আনমনেই কথাটা বলে ফেলেছে সেটা বেশ ভালোই বুঝতে পারছে ও। অনিমাকে আরেকটু অসস্থিতে ফেলার জন্যে আদ্রিয়ান মুচকি হাসি দিয়ে বলল
—- “আমার ফোনের ওয়েট করছিলে?”
আদ্রিয়ান যে ওকে লজ্জায় ফেলতেই ঘুরিয়ে প্রশ্নটা করেছে সেটা অনিমা বেশ ভালোই বুঝতে পারছে। মনে মনে আদ্রিয়ানের ওপর একটু রাগও হচ্ছে, কিন্তু সেই রাগটা প্রকাশ করার কোনো উপায় নেই। এটা মানুষজাতির আরেকটা বিরম্বনা হঠাৎ পরিচিত, অল্প পরিচিত, সম্মানীয় এসব ব্যাক্তির ওপর বিরক্তি বা রাগের অনুভব হলেও সেটা প্রকাশ করা যায় না, যদি করা হয় তাহলে তাকে অশোভনীয় ব্যবহার বলা হয়। তাই অনি রেই রাগটা নিজের মধ্যে চেপে রেখে একটু ইতস্তত করে বলল
— ” আপনি বলেছিলেন তাই আরকি…”
— ” হুমম..ডিনার করেছো?”
— ” হ্যা অনেক আগেই। আপনি করেছেন?”
— “ডিনার করেই তোমাকে কল করলাম।”
— “এতো দেরীতে ডিনার করলেন?”
— “তোমাদের বাড়ি পাঠানোর পরেই স্টুডিওতে গিয়েছিলাম একটু আগে ফিরলিম।”
— “ওহ”
— “শুধুই কী আমার ফোনের জন্যে অপেক্ষা করছিলে নাকি অন্যকিছুও?”
— “নাহ মানে সময় কাটানোর জন্যে আর্টিকেল টাইপ করছিলাম।”
এরপর ওরা দুজনেই কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো, কেউ কিছুই বলছেনা কিন্তু একে ওপরের নিশ্বাসের শব্দ মন দিয়ে শুনছে, আর সেটাও দুজন দুজনের অজান্তেই। এই নিরবতায়ও এক অদ্ভুত শান্তি আছে, যেই শান্তিটা দুজনেই অনুভব করতে পারছে। নিরবতা ভেঙ্গে আদ্রিয়ান নিজেই বললো
— “আজকের দিনটা কেমন লাগল?”
অনি কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললো
— “সত্যি বলবো?”
— “আই হেইট লাইং।”
— “অনেকদিন পর মন খুলে হেসেছিলাম”
অনিমার উত্তরটা শুনে আদ্রিয়ান কেনো জানি মনের ভেতরে এক অদ্ভুত শান্তি অনুভব করলো। তাই ও হেসে দিয়ে বলল
— “যাক কারো হাসির কারণ তো হতে পারলাম।”
অনি কিছু না বলে কানে ফোন নিয়েই ধীরপায়ে হেটে ব্যালকনিতে চলে গেলো। অনিকে চুপ থাকতে দেখে আদ্রিয়ান বলল
— “কখন থেকে আমিই বকরবকর করে যাচ্ছি। কিছুতো বলো?”
— “কি বলবো?”
— “আচ্ছা তুমি এতো শান্ত কেনো বলোতো? একদম চুপচাপ। কিন্তু তোমাকে দেখে কিন্তু মনে হয়না যে তুমি এতো শান্ত। মনে হয় একটা চাঞ্চল্য আছে তোমার মধ্যে যেটা কোনো কিছুর নিচে চাপা পরে গেছে।”
খানিক চমকে উঠলো অনিমা। এটাতো সত্যিই যে ও এতো শান্ত ছিলোনা। পরিস্হিতি ওকে চুপ করিয়ে দিয়েছে। একসময় ওর চাঞ্চল্য আর দুষ্টুমী আশেপাশের মানুষকে অতিষ্ট করে তুলতো আর আজ? একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো অনিমার ভেতর থেকে। তারপর নিজেকে কোনোরকমে সামলে বলল
— “নাহ সেরকম কিছু না”
— ” আচ্ছা বাট অ..নি..মা.. কতো বড়ো নাম তোমার? আমি এতো বড় নামে ডাকতে পারবোনা তোমাকে।”
অনিমা তো চূড়ান্ত পর্যায়ে অবাক হলো। ‘অনিমা’ নামটা ওনার কাছে এতো বড় মনে হলো? অনিমা নিজের বিষ্ময় কাটিয়ে ওঠার আগেই আদ্রিয়ান বলল
— ” তাই তোমাকে আমি ইন শর্ট অনি বলে ডাকবো ওকে?”
অনিমা অবাক হলেও নিজেকে সামলে নিয়ে বলল
— “তীব্র অরু আমাকে এই নামেই ডাকে আপনিও ডাকতে পারেন সমস্যা নেই।”
— “সমস্যা থাকলেও আমার কিছু করার নেই।”
অনিমা হাসলো। আদ্রিয়ান মুচকি হেসে বললো
— “তোমার ব্যাগ খুলেছিলে এসে?”
ভ্রু কুচকে গেলো অনিমার। অবাক হয়ে বললো
— “নাহ কেনো?”
— “এখোনো খোলনি? আচ্ছা ঠিকাছে এখন গিয়ে ব্যাগের মাঝের জিপটা খোলো।”
— “বাট হোয়াই?”
— “আরে খুলেই দেখো।”
— ” ওকেহ”
অনিমা রুমে ঢুকে ব্যাগ হাতে নিয়ে মাঝের জিপটা খুলল। তারপর আদ্রিয়ানকে জিজ্ঞেস করলো
— “এরপর?”
— “ভেতরে হাত ঢুকিয়ে দেখোতো কিছু পাও কী না?”
অনিমা প্রচন্ড কৌতুহল নিয়ে ব্যাগের ভেতরে হাত দিয়েই একটা প্যাকেট পেলো, সেটা দেখে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো
— ” এটা কী?”
— “খুলে দেখো।”
অনিমা প্যাকেটের ভেতরে হাত ঢুকিয়ে কিছু একটা পেলো সেটা বের করে এনে দেখলো একটা কিরিং তাও বিরবিকিউসহ। প্রচন্ড কিউট লাগছে দেখতে। বারবিকিউটা নীল রঙয়ের ড্রেস পরা আর পায়ের দিকের অংশটা নীল রং এর পালক দিয়ে ঘেরা। চুলগুলোও এক সুন্দর স্টাইলে ঝুটি করা। অনিমাতো নিজের ওপর নিয়ন্ত্রন হারিয়ে চুমু দিয়ে দিলো ওটার ওপর। তারপর এক্সাইটেড হয়ে আদ্রিয়ানকে জিজ্ঞেস করলো
— “এটা আমার?”
আদ্রিয়ান অনিমার কন্ঠে খুশির আমেজ স্পষ্ট অনুভব করলো তাই মুচকি হেসে বলল
— “তোমার ব্যাগে যখন পেয়েছো অবশ্যই তোমার। ব্যাগে আরো কিছু আছে দেখো?”
অনিমা আবারো ভ্রু কুচকে বলল
— “আবার কী?”
— “নিজেই দেখ নারে পাগলী।”
অনিমা কেপে উঠলো আদ্রিয়ানের এরকম আদুরে শব্দে। বুকের ভেতরের ধুকপুক শব্দটা বাইরে থেকেও জেনো শুনতে পাচ্ছে। একটা আজব অনুভূতি যেটা ব্যাখ্যা করার মতো শব্দ অনিমার ছানা নেই। বহু কষ্টে নিজের অনুভূতিকে দমিয়ে প্যাকেটে দ্বিতীয়বার হাত দিলো আর এবার বের হয়ে এলো একটা চকলেট বক্স। অনিমার খুশি দেখে কে। চকলেট ওর অন্যতম প্রিয় খাবার। ও এবার খুশিতে বাচ্চাদের মতো বলে উঠল
— “চকলেট?”
আদ্রিয়ান অনিমার এই উচ্ছাসিত বাচ্চা কন্ঠ শুনে হেসে দিলো, এই মেয়ে নিজেকে যতোই ম্যাচিউর দেখানোর চেষ্টা করুকনা কেনো মনের দিক থেকে এখোনো একটা বাচ্চা। এসব ভেবেই মুচকি হেসে বলল
— “হ্যা আর পুরোটাই তোমার।”
অনিমা কিছু একটা ভেবে নিজের খুশিটা দমিয়ে নিচু কন্ঠে বলল
— “এগুলো কখন করলেন?”
— “গল্প করার মাঝখানে ব্যাগে ঢুকিয়ে দিয়েছি।”
— “তখন সামনাসামনি দিলে কী হতো?”
— “এখন হঠাৎ করে পাওয়ায যেই খুশিটা পেলে, তখন দালে এটা পেতে?”
অনিমা কিছু না বলে চুপ করে রইলো। আদ্রিয়ান নিজেই বলল
— “আচ্ছা ঘুমিয়ে পরো এখন অনেক রাত হয়েছে। গুড নাইট।”
অনিমা মুচকি হেসে নিচু কন্ঠে বলল
— “গুড নাইট।”
ফোনটা রেখে ক্রিনে তাকিয়ে মুচকি হাসলো অনিমা তারপর কিরিং আর চকলেট বক্সটার দিকে তাকিয়ে নিজের অজান্তেই হেসে দিলো। তিনদিন আগে অবধি যেই মানুষটাকে শুধু টিভিতে আর ইউটিউব এই দেখে এসছে, যার সাথে দেখা হওয়াও ওর কাছে সপ্ন মনে হতো, তার সাথে একটা রাত কাটানো, একটা দিন ঘোরা, ফোনে কথা বলা, তারওপর তার কাছ থেকে গিফট পাওয়া ভাবতেই কেমন যেনো লাগছে অনিমার। সবকিছু সপ্নের মতো লাগছে। কিরিং এর বার্বিকিউ টাকে হাতে নিয়ে কয়েকবার চুমু খেলো অনিমা। দুহাত ছড়িয়ে রুম জুরে ঘুরতে ঘুরতে মুহুর্তটা উপভোগ করছে ও, আজ খুব বেশি ফুরফুরে লাগছে ওর নিজেকে যার কারণ ওর অজানা। কিছুসময়ের জন্যে ও ভূলেই গেছে ওর সেই লোমহর্ষক ভয়ংকর অতীতকে।
।
রিক চৌধুরী দেয়ালে টানানো অনিমার ছবিটির দিকে তাকিয়ে একটার পর একটা চুমুক দিয়ে যাচ্ছে বোতলে। বাজ পাখির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ছবিটার দিকে। একটা হিংস্র পশু তার শিকারকে ধরার প্রস্তুতির সময় শিকারের দিকে যেভাবে তাকায় সেভাবেই তাকিয়ে আছে যেনো এক্ষুনি ঝাপিয়ে পরবে নিজের শিকারের ওপর। হাত দিয়ে ঝরতে থাকা রক্তের দিকে নজর নেই তার। সে শুধু একটা কথাই বলছে
— “গেট রেডি ফর ব্যাক টু দ্যা হেল বেইবি।”
।
ফোন রাখার পর থেকেই মোবাইল স্ক্রিনে অনিমার ছবির দিকে তাকিয়ে আছে আদ্রিয়ান। অনিমার অগোচরেই তুলেছে ছবিটা যেটাতে অনিমা মুচকি হেসে কপালের চুলগুলো সরাচ্ছে। ছবিটার দিকে তাকিয়েই আদ্রিয়ান বলল
— “জানিনা কী এমন দেখেছি তোমার মধ্যে যেটা অন্য কারোর মধ্যে দেখিনি। তোমাকে ভালোবাসি কি না এখোনো জানিনা। জানতে চাইও না। কিন্তু আমার অস্তিত্বে মিশে গেছো তুমি, তাই তুমি আমার। যদি তোমার মনে জায়গা করতে পারি তো ধুমধাম করে আনন্দের সাথে নিজের কাছে আনবো তোমাকে আর যদি সেটা না পারি তো…”
বলেই হালকা হাসলো আদ্রিয়ান তারপর ছবিতে হাত বুলিয়ে বলল
— “তবে যাই হোক। তোমার অতীত যে খুব একটা সুখকর না সেটা আমি সেদিন রাতেই বুঝেছি। কিন্তু তোমার অতীত যাই হোক আর যতো খারাপই হোক আমি তোমাকে দূরে ঠেলে দেবোনা। বরং আজ এই মুহুর্ত থেকে তোমার জীবণ থেকে তোমার অতীতের কালো ছায়াগুলো সরানোর দায়িত্ব নিজের কাধে তুলে নিলাম। আমি জানি তোমার মধ্যে এক চঞ্চল হাসিখুশি অনি চাপা পরে আছে, তাকে অামি বের করে আনবো আই প্রমিস।”
#চলবে…
.
( দেরী হয়েছে বা ছোট হয়েছে বলে কেউ লজ্জা দেবেননা। আসলে আমি HSC candidate আর পরীক্ষার ডেট ফিক্সট না হলেও পড়তে হচ্ছে কারণ চাপা টেনশন কাজ করে একটা। আর ফ্যামিলি থেকেও চাপ দেয়। যাই হোক।
happy reading?)