প্রেম পিয়াসী পর্ব ৮

0
660

#প্রেম_পিয়াসী ❤️
#লেখিকা_মুহতারিযাহ্_মৌমিতা
#পর্ব_______৮

মোট তিন ঘন্টা সম্পূর্ণ করে শেষ হলো দ্বিতীয় ক্লাসটা। সেদিন এতো রাগারাগি করার পর ইলহাম মনে মনে ভেবে নিয়েছিলো রাদ হয়তো সত্যি তাকে আর আসতে দিবেনা ভার্সিটিতে। কিন্তু আজ সকালে উঠে নিজেই সঙ্গে করে নিয়ে এলো তাকে। ইলহাম অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলো তার পানে। অবশ্য তাতে তার বিন্দু মাত্র গ্রাহ্যকরন ছিলোনা বললেই চলে। তার মন কখন কি বলে, সে হয়তো নিজেও জানেনা। পুরো দস্তুর পা/গ/ল লোক একদম।

—-“কিরে ইলহাম? আজকাল দেখি, চিনেও চিনিস না। ব্যপার কি রে?”

দূর থেকে এক মেয়েলি কন্ঠ ভেসে আসতেই আগ্রহ মন্ডিত দৃষ্টিতে তাকায় ইলহাম। নুরী দাঁড়িয়ে আছে। তার এবং নুরীর ডিপার্টমেন্ট একই। কিন্তু সখ্যতা একদম নেই বললেই চলে। কেবল নুরী নয়, মিশমিশের মৃ//ত্যু//র পর থেকে ইলহামের আর কারোর সাথেই সেই সখ্যতাটা গড়ে ওঠেনি কোনোদিন।

ইলহাম মলিন হাসে। বলে,

—-“তেমন কিছু না রে। ক্লাসে আসি, ক্লাস করি আবার চলে যাই। তাড়া থাকে।”

নুরী বসে তার পাশের চেয়ারটায়। মাত্র কয়েক মিনিট গড়ালো ইলহাম একটা কফির অর্ডার চেয়ে বসেছে ক্যান্টিনে। নুরী তার পাশে বসাতে সে ক্যান্টিনের ছেলেটাকে ডেকে আরেক কাপ কফি দিতে বলবে কি, তার পূর্বেই বেশ রসালো কন্ঠে বলে উঠলো নুরী,

—-“শুনলাম আজকাল গু/ন্ডা/পা/ন্ডা/র বাড়িতে উঠেছিস? কিছু চলছে নাকি তলে তলে!”

—-“কি বলছিস আবোলতাবোল।”

—-“আবোলতাবোল বলছি, নাকি সত্যিটা স্বীকার করতে চাস না।”

—-” অস্বীকার করার কি আছে? আমি রাদের সঙ্গে থাকি। আর সে অবশ্যই কোনো গু/ন্ডা/পা/ন্ডা নয়। নাম করা বিজনেস ম্যানদের মধ্যে বিশেষ একজন।”

ইলহামের প্রতিবাদী গলায় উত্তরটা পেয়ে মুখে তাচ্ছিল্যের হাসি ফুটে উঠলো নুরীর। পূর্বের ন্যায় একই স্বরে বলে উঠলো,

—-“বাবাহ! এতো দেখি এখনই টান। তা হ্যাঁ রে? বিয়ে করবে তো? নাকি এভাবেই খেয়ে দেয়ে…”

ইলহামের রা/গে কপালের রগ ফুলে উঠলো। রাগান্বিত দৃষ্টিতে নুরীর পানে তাকাতেই নুরী খিটখিট করে হেসে উঠলো। হাসতে হাসতে ঢলে পড়ার মতো অবস্থা। ইলহাম ছোট্ট করে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। নিজের ক্রো-ধটা পি-ষে নিলো নিজের ভেতরেই। নুরী সবসময়ই লাগামহীন মেয়ে। ওর কথা এবং কাজের কোনোটিরই ঠিক নেই। তাই মুখ লাগতে যাওয়াটাও হবে বোকামি।।

—-“শোন ইলহাম, তোকে একটা ফ্রী এডভাইস দিবো। এইসব খাওয়া-পরা লোকদের থেকে যত পারবি দূরত্ব তৈরি করে রাখবি। বুঝি তো, তোদের আসল সমস্যা হলো টাকা! টাকা দেখেছিস ওমনি ঝাঁপিয়ে পরেছিস! আরে বাবা, ভালো-মন্দ বিচার করে নে। কয়দিন পর কি খবরের কাগজের হেডলাইন হওয়ার সখ আছে নাকি?”

ইলহাম জ্ব/লে উঠলো অপমান বোধে। তীব্র
আ/ক্রো/শে ফেটে পরে কিছু বলতে নিলেই কারোর আগমন ঘটে ঠিক তার পাশের চেয়ারটায়। ইলহাম থম মে//রে যায় তাকে দেখে। তার মুখের কথাও ফুরিয়ে আসে এক প্রকারে।

—-“ইশশ! তোমার বড্ড আক্ষেপ হবে তাই না নুরী?”

রাদের গম্ভীর কন্ঠটি কানে বাজতেই আঁ/ত/কে ওঠে নুরী। ও কোনো ভাবেই এই মুহুর্তে আশা করেনি রাদকে। ভ-য়ে ওর গলা শুঁকিয়ে এলো। মনে হলো যেন, যমের দুয়ারে দাঁড়িয়ে আছে সে। ম/র/ন তো পাক্কা সার্টিফিকেট একদম।

—-“ম..মিহাদ আবরিশাম..”

—-“রাদ।”

মুচকি হেসে নিজের নাম উচ্চারণ করে রাদ। নুরী ঢোক গেলে। চেয়ার ছেড়ে উঠে পালানোর সুযোগ খুঁজতে খুঁজতে ইলহামের উদ্দেশ্যে বলে,

—-“ই..ইলহাম! ত..তোরা কথা বল। আ..আমি ব..বরং উঠি!”

—-“সেকি? তোমার কথা এতো জলদি শেষ? না না, এটা কেমন একটা হয়ে গেলো না? এই যে এক্ষনি বলছিলে আমরা খাওয়া-পরার লোক! এন্ড ইলহামের টাকা পয়সা দেখে লোভ হওয়া এট অল!”

নুরীর মুখটা চুপসে যায় পানসিটের ন্যায়। রাদ যে তাকে তার কথাতেই শা/সা/চ্ছে সে কথা বুঝতে বাকি নেই তার। এখন ভ/য় হলো, এই মা/ফিয়া লোকটা আবার ক্ষে/পে উঠে না তার কপালেই ব/ন্দু/ক ঠেকায়।

—-“ও..ওতো আমি ম..মজা করছিলাম, স্যার। আ..আপনি প্লিজ সিরিয়াসলি নিবেন না। ইলহাম কিন্তু আমার খুব ভালো ফ্রেন্ড। আস্ক করুন ওকে?”

নুরী জোর পূর্বক হাসার চেষ্টা করে বলল কথাগুলো। রাদ আঁড়চোখে চোখে তাকালো ইলহামের পানে। ইলহাম নিশ্চল ভঙ্গিতে বসে আছে। নুরীর শেষোক্ত কথাটা শুনতে অবশ্য একটু নড়েচড়ে বসলো। রাদ তাকে কিছুই জিজ্ঞেস করলো না। বরং পূনরায় নুরীকে বলল,

—-“আই থিংক দেয়ার ইজ নো নিড টু আস্ক হার, নুরী। বিকজ, আই নো বেটার দ্যান হার! কে ওর রিয়েল ফ্রেন্ড এন্ড কে ওর ফেইক ফ্রেন্ড।”

নুরী বিষম লেগে কেশে উঠে। এখানে তার আর কিছুই বলার নেই। কেবল সুযোগ খুঁজছে ছুটে পালানোর।

—-“সুইটহার্ট? ক্যান উই গো..”

রাদ চেয়ারের সাথে পিঠ ঠেকিয়ে বেশ আরাম করে বসলো। পরনে মেরুন রঙের শার্টের হাতাটা ফোল্ড করতে করতে ডান হাতে মাথার চুল গুলো ঠিক করলো। অতঃপর ইলহামের দিকে তাকিয়ে যাওয়ার কথা বলে উঠলো।

ইলহাম সামনে বসে থাকা নুরীর দিকে একবার দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো। কিন্তু তাকে আর কিছু বলতে গেলো না। ছোট্ট করে নিঃশ্বাস ছেড়ে রাদের উদ্দেশ্যে বলল,

—-“চলুন।”

—-“বাই দ্য ওয়ে, কিছু অর্ডার করেছিলে এখানে?”

—-“হু,কফি।”

—-“ওকে দ্যেন, তুমি গাড়িতে গিয়ে অপেক্ষা করো। আমি কফিটা নিয়ে আসছি।”

ইলহাম মৃদুভাবে মাথা নাড়লো। অতঃপর আর বসে না থেকে চলে গেলো গাড়ির কাছে। এদিকে রাদ গেলো তার জন্য কফি নিতে। ইলহাম গাড়ির দরজা খুলে প্রবেশ করবে কি, তার পূর্বেই কেউ এসে ক্ষ/প করে তার হাতটা ধরে ফেললো। ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে গেলো ইলহাম। ইলহাম এই মুহুর্তে এখানে রাদ ব্যতীত কাউকে এক্সপেক্টই করেনি। কিন্তু যাকে দেখলো, তাকে দেখতেই মাথা ঘুরে গেলো তার। এ যে অন্তু!

—-“আর কত ছেলের জীবন ন/ষ্ট করবে তুমি? আমাকে ভালোবাসার মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে এখন.. এখন না জানি আবার কোন বড়লোক ছেলেকে ফাঁদে ফেলেছো তুমি। তোমার উদ্দেশ্য টা কি বলো তো ইলহাম? কি চাও তুমি?”

ইলহামের আপাদমস্তক কেঁপে ওঠে অন্তুর এমন তীর্যক বানীতে। ভীষণ রা-গে ফোঁস করে ওঠে ভেতরটা। সে ছেলেদের জীবন ন/ষ্ট করে? সে? আর এসব কথা কে বলছে? এই লোকটা! যে কি না দিনের পর দিন নারী নেশায় আসক্ত হওয়া ছাড়া এবং মানসিক অশান্তি দেওয়া ছাড়া তাকে কোনোদিন কিছু দিতেই পারেনি!

ইলহাম ঝাটকা মে//রে সরিয়ে নেয় নিজের হাত।
রা/গে ক্ষো/ভে দাঁতে দাঁত চেপে বলে ওঠে,

—-“যা করেছি এবং যা করছি সত্যি বলতে কোনোকিছুতেই আমার কোনো আক্ষেপ নেই অন্তু! ফ্যাক্ট, আমি ভালো আছি! অন্তত তোমার মতো এপজন চিপ মানুষের থেকে আলাদা হয়ে তো অনেক বেশি ভালো আছি।”

অন্তু ঝাঁঝ মিশ্রিত গলায় বলে ওঠে,

—-“তোমার মতো থার্ডক্লাস মেয়েদের কাজই তো এটা। এতে তো অবাক হওয়ার কিছু নেই। তা এবার কি দান মা/র/লে? এই তো, ক’দিন আগেই শুনলাম চেতন নামে একটা ছেলের সাথে এনগেজমেন্ট করতে যাচ্ছিলে। কিন্তু হয়নি। তোমার সব আশা,ভরসা,লোভ-লালসা সব ভঙ্গ করে দিয়ে চেতন এই এনগেজমেন্টটা ভে/ঙে দেয়। তো বলো? কি লাভ হলো বড়লোক ছেলে খুঁজে?”

ইলহাম অবাক হয়।

—-“প্রথমত, এই এনগেজমেন্ট আমি বা চেতন আমরা কেউই ভা/ঙিনি। এবং দ্বিতীয়ত, আমার কোনোদিনও টাকা-পয়সা, লোভ-লালসা এসব ছিলো না অন্তু। এমন কি আমি এটা অব্দি জানতাম না, চেতন ধনী নাকি গরীব! চেতনের বিশাল বড় বাংলো আছে নাকি ছোট্ট কুঁড়েঘর আছে!”

অন্তু শব্দ করে হেঁসে ওঠে। ইলহাম আন্দাজ করে নেয় এই হাসি তাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে হাসছে অন্তু। গত দুই বছর পূর্বে অন্তু এবং তার মাঝে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়েছিলো। এবং সেখান থেকেই দু’জন দু’জনের প্রেমে পড়ে। প্রথমে তো বেশ ভালোই যাচ্ছিলো তাদের সম্পর্কটা। কিন্তু হঠাৎ একদিন সব তছনছ হতে শুরু করে। কেননা, অন্তু তার আড়ালে আরও একাধিক মেয়ের সাথে সম্পর্ক রাখে। এমনকি ব্যাপারগুলো এতোটাই জঘন্যতম ছিলো যে,ইলহাম এক রকম মানসিক রোগীতে পরিনত হয়ে পরেছিলো। ক্রমাগত তাকে বেড শেয়ারের জন্য অন্তুর ফোর্স করা,দিনের পর দিন তার শারীরিক গঠন নিয়ে মন্তব্য করা এর কোনোটাই মেনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছিলোনা ইলহামের জন্য। তাই সে বাধ্য হয়, এই সম্পর্ক ভে/ঙে ফেলতে। এবং সে সেটাই করেছিলো। কিন্তু তাতে যেন ইলহামের অশান্তি বাড়লো বৈ কমলো না এক বিন্দুও। সম্পর্ক ভাঙার পর থেকে অন্তু তাকে অন্য ছেলেদের দিয়ে অপমান করাতে, হ্যারা-স-মে-ন্ট করাতে উঠেপড়ে লাগে। গত দুই বছর যাবত অন্তুর এসব মানসিক ট-র্চা-র মুখ বুঁজে সহ্য করে আসলেও এখন আর একদম করেনা। এমনকি আর কোনো কিছুতেই সে ছাড় দেয়না অন্তুকে।

—-“কি বলো তো অন্তু, যে মানুষটা সত্যি সত্যি ভালোবাসতে জানে সেই পারে তার ভালোবাসার মানুষটাকে সম্মান করতে এবং অবশ্যই তার সম্মান রক্ষা করতে। সে নিশ্চয়ই তোমার মতো এতোটা জ-ঘ-ন্য হয়না। যে নিজে পারছেনা বলে, তার মতোই আরও দশটা কুকুর ভাড়া করে! কেন? তার একসময়ের ভালোবাসার মানুষকে ছোট করতে! সত্যি বলতে আমি আর এখন এসব নিয়ে ভাবিনা। কষ্ট পাওয়া তো অনেক দূরে থাক। আমার এখন তোমার এসব কান্ডতে স্রেফ হাসি পায়।”

অন্তু তেতে ওঠে। রাগে ফোঁস করে ওঠে পূর্বের ন্যায় পূণরায় ইলহামের হাতটা চেপে ধরে। জোর করে নিজের দিকে টেনে এনে দাঁত কামড়ে রাগের বহিঃপ্রকাশে বলল,

—-“খুব বড় বড় কথা বলতে শিখেছো দেখছি! যখন আমার সাথে বেড শেয়ার করতে রাজি হয়েছিলো তখন কোথায় ছিলো এসব বুলি?”

—-“অন্তু!”

ঝাঁঝালো কণ্ঠে চেঁচিয়ে উঠলো ইলহাম। অতিরিক্ত রাগ এবং ঘৃনায় র-ক্তি-ম আভায় ঘিরে উঠেছে তার মুখ খানা। ভেতরটা জ্ব/লেপু/ড়ে যাচ্ছে অন্তুর কুৎসিত রুচিসম্পন্ন কথায়।

অন্তু পৈশাচিক আনন্দে হেসে উঠলো। ইলহামের চোখ জোড়া সিক্ত হলো অপমানের আঁচে। মানুষ পারে না এমন কিছুই নেই! যে মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব সেই মানুষই পশুর চেয়েও নি/কৃ/ষ্ট! আর সেটারই জলজ্যা/ন্ত উদাহরণ এই লোকটা।

—-“বলবো আরও কি কি করতে চেয়েছো আমার সাথে? লোক জড়ো করে বলি তোমার কিচ্ছা কাহিনি? লোকেরও ঠিক তোমার মতোই আনন্দ হবে। ট্রাস্ট মি!”

ইলহাম লজ্জায়, অপমানে নিচু করে নিয়েছিলো তার মস্তিষ্ক। কিন্তু যেই না অন্তুর শেষোক্ত কথাটা তার কানের পর্দা ভেদ করে গেলো অমনি বিকট শব্দে কেঁপে উঠল চারিপাশ। না; অন্য কেউ নয়। ইলহাম নিজেই নিজের ঢাল হয়েছে এবার। ডান হাতটা অন্তু চেপে রাখায় তার সমস্ত জোর এবার জমা হয়েছিলো বাঁ হাতে। আর বাঁ হাতেই সশব্দে কসিয়ে এক চড় বসিয়ে দিলো অন্তুর বাঁ গালে। চড় খেয়ে অন্তু পিছিয়ে পরতে বাধ্য হলো। চারপাশের উপস্থিত জনতা আকস্মিক থমকে তাকালো। অন্তু গালে হাত দিয়ে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকালো ইলহামের পানে। যেন এক্ষনি চোখ দিয়ে গিলে খাবে ইলহামকে। ইলহামও ঠিক তারই মতো অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার পানে। অন্তু দাঁতে দাঁত চেপে ইলহামের দিকে তেড়েফুঁড়ে যেতেই আকস্মিক তাদের সামনে এসে দাঁড়াল রাদ। তার দৃষ্টি স্বাভাবিক। মুখের ভাবভঙ্গিও স্থীর। এর মানে পূর্বে যা যা ঘটলো তার কিছুরই সাক্ষী হয়নি সে। হলে হয়তো এক্ষনি লঙ্কাকাণ্ড বেঁধে যেতো এখানে।

—-“অন্তু! তুই এখানে?”

রাদের একহাতে ইলহামের জন্য কফি এবং অন্য হাতে বার্গার। রাদ অন্তুকে প্রশ্ন করতে করতে পায়ের সাহায্যে গাড়ির দরজা খুলে খাবার গুলো রেখে দিলো। অতঃপর আবারও সোজা হয়ে দাঁড়ালো ঠিক অন্তুর সামনে। রাদকে দেখতেই অন্তুর দৃষ্টি কেঁপে উঠল আকস্মিক। মনটা কেমন কামড়ে উঠলো, “রাদ এখানে কেন?”

রাদ পাশ ফিরে একবার তাকালো ইলহামের পানে। ফের তাকালো অন্তুর দিকে। কিছু একটা আন্দাজ করতে চাইলো। কিন্তু পারলো না। তাই ইলহামের উদ্দেশ্যে বলল,

—-“কি ব্যাপার সুইটহার্ট? তুমি এখনও এখানে দাঁড়িয়ে! তোমায় সেই কখন বললাম, গাড়িতে বসতে?”

ইলহাম ছোট্ট করে নিঃশ্বাস ছাড়লো। নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে একবার তাকালো অন্তুর পানে। অন্তু কপাল কুঁচকে তাকিয়ে আছে তাদের পানে। অর্থাৎ সে হতবিহ্বল হলো রাদের মুখে “সুইটহার্ট” শব্দটা শুনে। রাদ ইলহামকে সুইটহার্ট বলে কেন ডাকলো?

—-“হ..হ্যাঁ বসেছিলাম। হঠাৎ উনাকে এখানটায় পরে যেতে দেখে আবার বের হয়ে আসলাম। (অন্তুর দিকে তাকিয়ে) আর ইউ ওকে, ভাইয়া? হঠাৎ পরে গেলেন কিভাবে!”

অন্তুর দিকে তাকিয়ে ইলহামের শেষোক্ত বাণীতে যেমন রাদ চমকায় তার চেয়েও অধিক চমকায় অন্তু। ইলহাম তাকে ভাইয়া বলছে? কত্ত বড় দুঃসাহস!

—-“মানে? কি রে! পরে গেলি কিভাবে?”

রাদ অবাক হওয়ার চেষ্টা করে বলে ওঠে। অন্তু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে তাকায় ক্রমশ। সে জানেনা তার উত্তর কি হতে পারে। তবে এই টুকু ঠিকই আন্দাজ করতে পেরেছে, “রাদ ইলহামকে সুইটহার্ট বলছে কারন, মায়ের মুখে শোনা ‘রাদের হবু বউ’ আর কেউ নয়! ইলহাম!

অন্তুর মাথায় বাজ পরলো যেন। এটা অসম্ভব! রাদ কিছুতেই ইলহামকে বিয়ে করতে পারেনা। সে থাকতে তো অবশ্যই না।

#চলব______

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here