#প্রেম_পিয়াসী ❤️
#লেখা_মুহতারিযাহ্_মৌমিতা
#পর্ব___________১৯.
শ’খানেক বাঁধা বিপত্তিকে একরকম তোয়াক্কা না করেই অনন্যা এবং প্রণয়ের বিয়ের সমস্ত ব্যবস্থা নিজ হাতে করলো রাদ। আজ সন্ধ্যায় বিয়ে তাদের। বাড়ি ভর্তি মেহমানরাও পরিবারের ন্যায় দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে গেলো। কেউ কেউ পুরো দমে সাপোর্ট করছে তাদের আবার কেউ কেউ ছ্যা ছ্যা করে ম/র/ছে। ওদিকে আলভির বাড়ি থেকে কল এলো, তাদের ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না দু’দিন ধরে। সুতরাং, এই বিয়ে আপাতত স্থগিত রাখা হলো। রাজিয়া বেগমের মাথায় হাত। ওতো বড়লোক ছেলেটা এমন করে হাত ছাড়া হয়ে গেলো ভাবতে গেলেই তার প্রেশার লো হয়ে আসছে। ওমনি জ্ঞা/ন হারায়, ম/রে যায় এমন অবস্থা। প্রণয়ের বাবা মা-কে ডেকে পাঠালো রাদ। অতঃপর নিজেই প্রস্তাব রাখলো অনন্যা এবং প্রণয়ের বিয়ে নিয়ে। প্রণয়ের বন্ধু হিসেবে রাদকে তারা সবসময়ই খুব ভালো জানে। তাই রাদ যেহেতু এই প্রস্তাব তাদের কাছে দিয়েছে তবে, নিশ্চয়ই খারাপ নয়। জেনে বুঝেই দিয়েছে। তাছাড়া, অনন্যাকেও তারা চিনতো অন্তুর ছোট বোন হিসেবে। অনন্যা ভীষণ ভদ্র এবং গুনী মেয়ে বলেই জানে তারা। তাই আপত্তি করার আর কোনো অবকাশ রইলো না।
আজ তাদের বিয়ে। হাজার ব্যস্ততা ঘিরে ধরেছে রাদকে। অন্য সময় হলে এই ব্যস্ততা ঠেলে নিজের কাজে ডুবে থাকতো রাদ। তবে আজ যেন তা পারলো না। বরং স্ব-ইচ্ছেতে গাদা গাদা ব্যস্ততা টেনে আনছে নিজের দিকে। দেখতে হবে তো, ব্যস্ততার শীর্ষ ঘিরে কে আছে? তার একমাত্র ছোট বোন। যাকে সে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। এবং অপরপ্রান্তেই দাঁড়িয়ে আছে তার প্রিয় বন্ধু। সুতরাং, খানিক এক্সট্রা ব্যস্ততা তো চাই-ই চাই।
রাদের হুকুমে কেনা, দুটো শাড়ি এবং একটা লেহেঙ্গাটা নিয়ে বসে আছে ইলহাম। কোনটা পড়বে? মাথা জুড়ে বিভ্রান্তিদের হাতছানি। তিনটে জিনিসই ভীষণ মনোজ্ঞ। ইচ্ছে করছে সব কটা একসাথে মিক্স করে পড়তে। কথাটা ভেবে একবার হাসিও পেলো। সবগুলো আবার একসাথে পড়া যায় নাকি? কিন্তু কি’বা করার। হাতে নিয়ে ওলট-পালট করে দেখছে তিনটাই। তীক্ষ্ণ চাহনিতে দেখার সঙ্গে সঙ্গে মাথায় যেন ক্রমশ চেপে বসছে বিরক্তির পাহাড়। ধ্যাৎ! কোনোটাই পড়বেনা। বরং অন্যকিছু পড়বে। এসব বাছাই টাছাই হচ্ছে না তার দ্বারা। বড্ড অদ্ভুত কাজ এসব। সে ভেবে পায়না মেয়েরা মার্কেট ঘুরে শত শত ড্রেসের মাঝে কি করে নিজেদের পছন্দ বেছে নেয়। সে তো কেবল তিনটে ড্রেস নিয়েই হিমশিম খাচ্ছে।
—-“লেহেঙ্গাটা পড়ে নিন ম্যাম। খুব মানাবে।”
ব্যস্ত একখানা গলা ভেসে এলো দরজার ওপাশ থেকে। ইলহামের বুঝতে অসুবিধা হলো না গলাটা কার। অতএব, পেছন মুড়ে প্রত্যাশিত মুখখানা দেখতেও অযথা সময় ব্যয় করতে পারলো না। অতি জলদি পেছন মুড়ে তাকালো রাদের পানে। রাদের বাহ্যিকরূপে আবেগে আপ্লূত ইলহামের দৃষ্টি। একি দেখছে সে। যেন ব্রিটেনের রানী এলিজাবেথের একমাত্র প্রিন্সেস দাঁড়িয়ে আছে তার সামনে। অফ হোয়াইটের গরজিয়াছ শেরওয়ানিটা তাকে এতোটা ফুটিয়ে তুলবে ভাবতে পারেনি ইলহাম। তবে ধারণা ছিলো, মানুষটাকে ভীষণ মানাবে। তাই নিহাকে বলে তাকে কিনিয়েছিলো এই শেরওয়ানিটা। বুকের চওড়া জায়গাটুকু জুড়ে গোল্ডেন স্টোন গুলো চোখ ধাঁধিয়ে জলজল করছে। শেরওয়ানির হাতা গুলো বেশ মার্জিত ভাবে ফোল্ড করে গুটিয়ে রেখেছে কনুই অব্দি। বাঁ হাতে ঝুলতে থাকা সিলভার রঙের ব্রান্ডের ঘড়িটা বারবার চিকচিক করছে আলোতে। ডানহাতের একটা সোনার ব্রেসলেট। সামথিং স্পেশাল কিছু আছে ঐ ব্রেসলেটে। যতদিন অব্দি ইলহাম মানুষটাকে দেখেছে সেই অব্দি কখনোও হাতে ব্রেসলেট ছাড়া কখনো দেখেনি। ডানহাতটা তুলেই কপালে ঘামের সাথে লেপ্টে থাকা ছোট চুলগুলোকে ঠেলে দিলো পেছনে। অমনি দৃশ্যমান হলো তার চওড়া ললাট। যার ডান পাশে জমজ দুটো তিলের সমাগম। গরমে সিদ্ধ হয়েছে সে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে। শুঁকিয়ে আসা ঠোঁট জোড়া কতক্ষণ দাঁত দিয়ে কামড়ে রেখে প্রবেশ করলো ভেতরে। বড় বড় করে নিঃশ্বাস ফেললো বার কয়েক।
ইলহাম কিছু না বলে একগ্লাস পানি নিয়ে ধরলো তার সামনে। রাদ একগাল হেসে পানিটুকু শেষ করলো এক ঢোকে। অতঃপর খালি গ্লাসটা এগিয়ে দিলো ইলহামের পানে। ইলহাম গ্লাসটা রেখে আসার জন্য পা বাড়ালে যেতে দিলো না রাদ। হাত ধরে বসালো তার পাশে। ইলহাম বসলো চুপটি করে। রাদ ক্লান্তমুখে হাসলো। ইলহামের হাতটা শক্ত করে চেপে রেখে নিবেদন করে বলল,
—-“সুইটহার্ট? ক্যান আই আস্ক ইউ সামথিং?”
—-“হু, বলুন?”
ইলহাম ছোট্ট করে জানতে চায় রাদের নিবেদন। রাদ হঠাৎ ঘুরে বসে ইলহামের পানে। সহসা ইলহামের দু’গালে হাত রাখে এক অধিকার বোধে। ইলহাম বাঁধা দেয়না। কেননা, তার মনে হয় এটা রাদের অধিকার। যা বাঁধা দিলে বিপরীত রূপ নিয়ে দাঁড়ায়। যেটা খুব একটা সহনশীল বা স্বাভাবিক হয়না তার জন্য। তাই বাঁধা না দেওয়াটাই শ্রেয় বলে মনে হয় তার।
—-“ড্যু ইউ বিলিভ মি?”
—-“হ্যাঁ, অবশ্যই বিশ্বাস করি। বিশ্বাস না করার তো কিছু হয়নি!”
রাদ কথাটা অন্যকিছু ভেবেই জিজ্ঞেস করেছে। কিন্তু ইলহামের উত্তরটা এতোটা নিঃসংকোচ হবে ভাবতে পারনি। একটু অবাকই হলো যেন। কেননা, এই ইলহাম এবং সেই তিনমাস পূর্বের ইলহাম এক নয়। শ শ মাইল পার্থক্য দু’জনের মাঝে।
রাদ মুচকি হাসলো। স্বভাবসুলভ ইলহামের দু’গালে আলতো করে স্লাইড করতে করতে চুমু আকলো ললাটে। ফের বলল,
—-“আমিও তোমায় সেইম ভাবেই বিলিভ করি, সুইটহার্ট। আমি জানি তুমি আমাকে হার্ট করে এমন কিছুই করবেনা।”
রাদের কথাটা শুনে ইলহামের সমস্ত মুগ্ধতা যেন এক নিমিষে মিলিয়ে গেলো। হঠাৎ তার চোখের সামনে অন্তুর মুখখানা ভেসে উঠলো। অনন্যা এবং প্রণয়ের বিয়েটা হওয়াতে অন্তু ভীষণ ক্ষে/পে আছে তাদের প্রতি। পাছে, ক্ষো/ভে পড়ে এমন কিছু করে না বসে যাতে তাদের এই সুন্দর,সাবলীল, বোঝাপড়া সম্পর্কটার বিচ্ছেদ আসে। আচ্ছা, তার কি উচিৎ অতীতে ঘটা সব ঘটনা রাদকে বলে দেওয়া? কেননা, আর যাই হোক রাদ যে তাকে কোনোদিন ছাড়বে এ কথা সে বুঝে গেছে। আর সেভাবেই দিনকে দিন রাদের প্রতি এক অন্যরকম ভালোলাগা অনুভব করতে পারছে সে। সে চায়না এই সুন্দর অনুভূতি গুলোর মৃ//ত্যু হোক। সেটাও অন্তুর মতো একটা জ/ঘ/ন্য মানুষের জন্য। এবং অবশ্যই সে চায়না তাদের এই সুন্দর সম্পর্কটা ভুল বোঝাবুঝি দিয়ে শুরু হোক। একদম চায়না। হ্যাঁ, হয়তো রাদ তাকে প্রথমে ভুল বুঝবে। ক/ষ্ট পাবে। সেগুলো কি স্বাভাবিক নয়? অবশ্যই স্বাভাবিক।
চোখের সামনে রাদ তুড়ি বাজাতে দৃষ্টি কাঁপে ইলহামের। অর্থাৎ তার ভাবনায় ছেদ পড়ে। হকচকিয়ে তাকায় রাদের দিকে। রাদ তার গাল চেপে বলে,
—-“কি এতো যোগসূত্র মেলাচ্ছেন ম্যাম? রেডি হতে হবে তো?”
ইলহাম মলিন দৃষ্টি মেলে কয়েক মুহুর্ত তাকিয়ে থাকে রাদের দিকে। সবটা জেনে রাদের কি রিয়াকশন হবে সেটা ভেবেই ভেতরটা কাঁপছে তার। সে কোনো ভাবেই চায়না রাদ তার কারনে ক/ষ্ট পাক। কেন চায়না জানেনা সে। আর জানতেও চায়না। ব্যস, ক/ষ্ট দিতে চায়না।
—-“হ..হ্যাঁ র..রেডি হবো!”
রাদ কপাল কুঁচকে নেয়। ইলহামকে কে কিঞ্চিৎ ঘাবড়ানো দেখা যাচ্ছে। হয়েছি কি ওর?
—-“সুইটহার্ট, তুমি কি ঠিকাছো?”
মনের সংশয় কাটাতে রাদ জিজ্ঞেস করে বসলো। ইলহাম জোর পূর্বক হাসার চেষ্টা করে রাদের সংশয় দূর করার চেষ্টা করে। বলে,
—-“ঠিক থাকবো না কেন? আপনি না শুধরোবার নন। নিজেই বলছেন রেডি হতে, অথচ নিজেই বসে আছেন সম্মুখে।“
রাদ নড়েচড়ে বসলো। গলা খাঁকারি দিয়ে হাত জোড়া নামিয়ে নিলো ইলহামের থেকে। কথাটায় খানিক বিব্রত হয়েছে সে। তবে প্রকাশ করতে চাইলোনা মোটে। মাথা চুলকে বলল,
—-“স্ সরি! তুমি রেডি হও। আমি নীচে অপেক্ষা করছি তোমার জন্য।”
—-“হু।”
রাদ উঠে চলে গেলো বাইরে। রাদের পছন্দ করে দেওয়া লেহেঙ্গাটা হাতে নিতে নিতে ইলহাম রাদের যাওয়ার পানে তাকালো। রাদ বাচ্চাদের মতো হাঁটছে হাঁটছে কিন্তু হাঁটছে না। মনে হচ্ছে বারবার দাঁড়িয়ে পড়বে। কিন্তু দাঁড়াচ্ছেও না। ইলহাম বুঝলো রাদ কিছু বলতে চায়। তাই নিজেই বলে উঠলো,
—-“কিছু বলবেন?”
রাদ যেন খুশি হয়ে গেলো। চটজলদি পেছন মুড়ে বলল,
—-“আব.. তোমার জন্য একটা গিফট ছিলো।”
ইলহাম ভ্রু নাচায়।
—-“কি গিফট।”
রাদ পকেট হাতিয়ে দুটো বক্স বের করে আনে। ইলহামের দিকে একটা বক্স এগিয়ে দিয়ে বলল,
—-“নিজেই দেখে নাও।”
ইলহাম হাত থেকে লেহেঙ্গাটা নামিয়ে রেখে উৎসুক হয়ে এগিয়ে গেলো রাদের দিকে। বক্সটা নিতে নিতে একবার তাকালো রাদের মুখে। রাদ হাসছে মিটমটিয়ে। ইলহামের সন্দেহ বাড়ছে বৈ কমছে না। কি এমন আছে ভেতরে। ইলহামের সন্দেহ বাড়ার সাথে সাথে আগ্রহ ভীষণ তেজ হলো। বড কৌতুহল নিয়ে বক্সটা খুলতেই একটা জ্যন্ত তেলাপোকা উড়ে গেলো চোখের পলকে। ইলহাম আঁ/ত/কে উঠে বক্স ছুঁড়ে ফেলে গলা ফাটিয়ে সে কি চিৎকার। তার গগনবিহারী চিৎকারের মাঝে কর্ণকুহরে প্রবেশ করছে রাদের হাসির শব্দ। ইলমাহের সারা অঙ্গ গুলিয়ে উঠলো তেলাপোকার ভ/য়ে। দৌড়ে গিয়ে লুকালো রাদের পেছনে। রাদ কোনো মতে নিজের হাসি থামাতে পারছেনা। ইলহামের যেমন রা/গ হচ্ছে তেমন ভ/য়ও হচ্ছে।
পাজি লোক একটা! এমনটা করার কি খুব দরকার ছিলো? সে তো ভালো ভেবে তাকে বিশ্বাস করে নিয়েছে বক্সটা। এই তো কিছুক্ষন আগে তার বিশ্বাস অর্জন করছিলো বসে বসে। তাহলে এই কি ছিলো তার নমুনা?
—-“সরি সরি, সুইটহার্ট। আমার কিন্তু ধারণা ছিলো না, তুমি এত্তো ভীতুর ডিম।”
ইলহাম তেতে উঠলেো। পেছন থেকে তার পিঠে দু’চার ঘা বসিয়ে দিয়ে বলল,
—-“আপনাকে বিশ্বাস করাই ভুল হয়েছে আমার! আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম, পাঁজি লোকদের বিশ্বাস করাটা জীবনের সবচেয়ে বড় বোকামি।”
রাদ হেসে কুটিকুটি। পেছনের দিকে হাত বাড়িয়ে সামনে টেনে আনলো ইলহামকে। ইলহাম গুটিশুটি মে/রে আছে। তার দৃষ্টি এলোমেলো। উড়ন্ত তেলাপোকার দিকে। তেলাপোকাটা উড়ে ঠিক কোথায় গেছে সেই ভ/য়ে/ই দুরুদুরু কাঁপছে বুক।
—-“আরে বাবা তাকাও আমার দিকে। তুমি এতো ভীতু জানতাম না তো!”
ইলহাম রা/গী ফেস করে তাকালো রাদের দিকে। পেট বরাবর কনুইয়ের চাপা গুঁতো দিয়ে বলল,
—-“আমি মোটেই ভীতু নই। আপনি পাজি তা স্বীকার করুন।”
রাদ পেটে হাত চেপে কুঁকড়ে পড়ে অসহায় দৃষ্টিতে তাকায় ইলহামের রা/গী মুখের দিকে। মুখ থেকে অস্ফুট স্বরে জানান দিলো চাপা ব্যা/থাটা। ইলহাম তীক্ষ্ণ এবং রা/গী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার পানে। রাদ অসহায় ভঙ্গিতে বাচ্চা সুলভ কন্ঠে আওড়ালো,
—-“এভাবে কেউ মা/রে!”
—-“এটা আপনার শা/স্তি!”
এই বলে ইলহাম চলে যেতে নিলে রাদ পূণরায় আঁটকায় তাকে। ব্যা/থা এবং,মজা-মাস্তি ভুলে এবার সিরিয়াস ভঙ্গিতে তাকায়। অন্য হাতে ধরে রাখা ছোট্ট বক্সটা তুলে ধরে ইলহামের সামনে। ইলহাম পূর্বের ঘটনা স্বরনে হঠাৎ আঁ/ত/কে ওঠে। ভেবে নেয় রাদ এবারও একি কান্ড ঘটাবে। তাই অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,
—-“এবার কিন্তু খুব খারাপ হবে বলে দিলাম।”
রাদ ফিক করে হেসে দেয় ইলহামের ভ/য়ার্ত মুখখানা দেখে। ইলহাম ভ্রু কুঁচকে তাকায়। রাদ ইলহামকে অভয় দেয়। না সূচক মাথা নেড়ে বলে,
—-“ভ/য় পেয়োনা। এবার সত্যি সারপ্রাইজ।”
—-“তো আগেরটা কি ছিলো?”
—-“সারপ্রাইজই ছিলো একরকম।”
বলে আবার হাসতে লাগলো। ইলহাম বিশ্বাস করলো না রাদকে। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো বক্সটার দিকে। রাদ দু-হাত মিলিয়ে বক্সটা খুললো। বক্স খুলতেই ইলহামের চোখ চড়কগাছ! একি দেখছে। বক্সের ভেতর অবস্থানরত হীরের আংটিটায় চোখ ধাঁধিয়ে এলো ইলহামের। লোকটা কি পাগল? এতো দামী জিনিস কেন নিয়ে আসে সে?
—-“আমার ইচ্ছে। তোমাকে বলতে হবে? দেখি হাত দাও।”
ইলহাম চমকে ওঠে। যেন রাদ তার মনের ভেতরে তোলপাড় করা লাইন গুলো খিঁচে বাইরে টেনে আনলো। আর তাতে তালে তাল মিলিয়ে সুন্দর একখানা জবাব নিক্ষেপ করলো।
রাদের পরশে ঘোর কাটে ইলহামের। রাদ আংটিটা পড়িয়ে দিয়েছে তার হাতে। একদম পার্ফেক্ট বসেছে। গত দেড় বছরে তবে ইলহামের ছোট ছোট জিনিস গুলো ভোলেনি সে।
—-“লেহেঙ্গার সাথে পার্ফেক্টলি ম্যাচ হবে। ফাস্ট রেডী হয়ে নাও। আ’ইম ওয়েটিং।”
শেষোক্ত কথাটা রাদ ইলহামের কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিসিয়ে বলল। কথাটায় কিছু একটা ছিলো যেন। ইলহাম ভেতর ভেতর কেমন একটা কেঁপে উঠল। রাদ মুচকি হেসে প্রস্থান করলো।
#চলবে
[ বিঃদ্রঃ রাদের সারপ্রাইজ কেমন লাগলো আপনাদের?😆]