#প্রেমের_ঐশ্বর্য
#আনিশা_সাবিহা
শেষ পর্ব (শেষাংশ এক)
পুনম বেশ কয়েকবার চোখের পাতা ফেলে তাকিয়ে রইল। হাতে থাকা তলো’য়ারটি নামিয়ে নিল। হাসিটা প্রসারিত হতেই অস্বাভাবিক বড় নেত্র যুগল ছোট হয়ে এলো। তারপর সামনে ফিরে তার প্রতিপক্ষের হাতে তলো’য়ার ছুঁড়ে দিয়ে বলল,
“নাও। তোমার আরো অনুশীলনের প্রয়োজন!”
কথা শেষ করেই এবার পিছু ফিরে বেরিয়ে এলো সেখান থেকে। অদ্ভুত সুভাব বইছিল বাতাসে। সেখান থেকে তা তৎক্ষনাৎ মিলিয়ে গেল। ময়দান থেকে বের হতেই তার কান টেনে ধরল কেউ। পুনম চোখমুখ খিঁচে তাড়াহুড়ো করে বলে উঠল,
“আরে আরে আরে! হোয়াট আর ইউ ডুয়িং মেরি জান? সবাই দেখছে। আমার প্রেস্টিজ চলে যাচ্ছে না?”
তার কানটা ছেড়ে দেওয়া মাত্র কানে হাত বুলাতে থাকল পুনম। বড় বড় দুটো শ্বাস ফেলল। কান থেকে যেন ধোঁয়া বের হচ্ছে। সামনে থাকা সেই জনের দিকে তাকিয়ে চোখ দুটো সরু করে বলল,
“সকাল সকাল কোথায় একটু আদর ডেকে খাওয়াবে কি! নয়ত আমার কান ধরতে চলে এসেছো?”
মাধুর্য কড়া চোখে তাকায়। এই সামনে থাকা হাসোজ্জল কিশোরী অর্থাৎ পুনমকে সামলাতে হিমশিম খেতে হয় তার। সে কাঠকাঠ গলায় বলে,
“আমাকে কি এভাবে জ্বালিয়ে যাবে বলে ঠিক করে রেখেছো? প্রথমে তোমার মা এখন তুমি! মায়ের ছোট্ট একটা স্বভাবও যদি না পেতে! মায়ের কপি তো হয়েই গিয়েছো। তবুও আমার কথা একটু তো রাখার চেষ্টা করো!”
পুনম ঠোঁট উল্টায়। কপাল কুঁচকে বলে,
“ওহ হো! তোমার কথা আমি ফেলতে পারি বলো? কোন কথাটা ফেলেছি? ফেলতে চাইলেও তো কান ধরে করিয়েছো!”
“আজকে তোমার কলেজ যাওয়ার কথা ছিল না?”
জিহ্বা কাটে পুনম। অন্যদিকে চোরের মতো তাকায়। তারপর গলা খাঁকারি দিয়ে মাধুর্যের দিকে চোখ দুটো স্বাভাবিক করে পলকহীন নজরে তাকায়। মাধুর্য তার চোখের দিকে তাকাতেই তার চোখের ওপর হাত দিয়ে ধমকে আবারও বলে ওঠে,
“আমার সঙ্গে এসব চালাকি চলবে না। আমি তোমার মায়েরও মা! সকাল সকাল কলেজ না গিয়ে একে তো ময়দানে চলে এসেছো। তার ওপর আমার মন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছো?”
পুনম কিছু বলে না। চুপসে যাওয়া চোখেমুখে তাকিয়ে থাকে। মাধুর্য এবার কড়া সুরেই বলে,
“এই এলিনাকেও বলেছিলাম তুমি রাজ্য থেকে বেরিয়ে কলেজ গেছো কিনা সেটার খেয়াল রাখতে। আমি ব্যস্ত। এই মেয়েটা যে কি করে!”
পুনমের হাসি পেল। তবে মাধুর্যের সামনে হাসলে যে তাকে আরো কত কথা শুনতে হবে তার ঠিক নেই! আবারও কান টেনে ধরতে পারে। তাই হাসি আটকানোর চেষ্টা করে গেল সে। ফোলা ফোলা এবং টান টান গাল দুটো ফুলে উঠল হাসি আটকানোর চেষ্টায়। পুনমের ভাবভঙ্গি দেখে মাধুর্য কিছু একটা বোঝবার চেষ্টা করল। বুঝেও উঠল। আঁখি দুটো বড় বড় করে তার উদ্দেশ্যে বলে উঠল,
“দাঁড়াও! তুমি এলিনাকে নিজের দৃষ্টি দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করেছো নাকি?”
হাসিটা দমিয়ে ভ্যাবাচেকা খেয়ে তাকায় পুনম। না বোধক মাথা নাড়ায়। তবে তাকে বিশ্বাস করা যে যাবে না সেটা বুঝতেই পেরেছে মাধুর্য। সে আগের মতোই রেগে রেগে বলে উঠল,
“ঘরে এসো!”
পুনমের বুঝতে বাকি থাকে না যে আজকেও মাধুর্য ঝড় তুলে ছাড়বে। সকলে মাধুর্যকে দেখে মাথা নুইয়ে ফেলে। মাধুর্য হাত দিয়ে ইশারা করতেই সোজা হয়ে দাঁড়ায়। আর দৃঢ় দৃষ্টি পুনমের দিকে রাখতেই মাথা নিচু করে দ্রুত পা চালিয়ে আসে। সকলে সরে যায় তাদের যাওয়ার জন্য।
ভ্যাম্পায়ার প্রিন্সেস পুনম! বয়সটা সতেরো হলেও কয়েকদিন পর আঠারোতে পড়বে। তার চেহারার দিকে একবার দৃষ্টিপাত করলে কোনো দুজনের সম্মিলিত রূপ ভেসে উঠবে। সেই নীলাভ স্বচ্ছ হরিণী নেত্রপল্লব যখন পলক ফেলে তাকায় তখন যেন হুবহু কারোর প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে। অ’স্ত্র চালনার সময় যখন প্রতিদ্বন্দ্বীর প্রতি তার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি যেন #প্রেমের_ঐশ্বর্য এর অনুরূপ! খাঁড়া নাক ও ছোট কপাল স্মরণ করিয়ে দেয় সেই ঐশ্বর্যের প্রেমিক পুরুষটিকে। তার মুচকি হাসিতে যেন দেখা যায় প্রেমকে। তার ঘন কালো ও ঢেউ খেলানো কেশ যেন সমুদ্রের ঢেউ। তবে যেটা তাদের থেকে আলাদা সেটা হচ্ছে এক বিশেষ ক্ষমতা। যে কাউকে কিছু মূহুর্তের জন্য নিয়ন্ত্রণ করার এক ক্ষমতা রয়েছে তার চোখে। তবুও সেই চোখ যে সেই নারীর প্রতিচ্ছবি! পুনম হচ্ছে সেই প্রণয়ের মিলনের প্রমাণ। প্রেম ও ঐশ্বর্যের র’ক্ত!
মাধুর্য প্রাসাদে প্রবেশ করা মাত্র এলিনাকে দেখতে পায়। সে দুপুরের রান্নার জন্য সবাইকে নির্দেশ করছে। কি কি রান্না হবে সেসব বলছে। মাধুর্য এগিয়ে গেল তার দিকে। মাধুর্যকে দেখামাত্র মাথা নুইয়ে নেয় এলিনা। মাধুর্যের পিছন পিছন পা টিপে এসে দাঁড়ায় পুনম। বেঁধে রাখা চুল খুলে ফেলে এলোমেলো চুল এদিক ওদিক করে চোরের মতো তাকিয়ে নখ কামড়ে যাচ্ছে সে। মাধুর্য গম্ভীর কন্ঠে জিজ্ঞেস করল,
“এলিনা, তোমার না পুনম কলেজ গেছে কিনা সেটা খেয়াল রাখার কথা ছিল? তুমি এখানে কি করছো?”
এলিনা উদ্ভট দৃষ্টিতে তাকায়। মাথা ঘুরে ওঠে। মস্তিষ্কে হানা দেয় স্মরণ হওয়া কথাগুলো। সত্যিই তো! সে এখানে কি করছে? সে কিছু বলতে উদ্যত হয়। কিন্তু মাধুর্য তার আগেই বলে ফেলে,
“থাক তোমায় কিছু বলতে হবে না। আমি জানি এটা পুনমের কাজ।”
“আই এম সরি। আসলে প্রিন্সেস পুনম আমাকে….”
“আমি জানি এলিনা।”
গাঢ় দৃষ্টিতে পুনমের দিকে চোখ রাখে মাধুর্য। জোর সুরে বলে ওঠে,
“নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করছো তুমি? এই শিখিয়েছি তোমায়? তুমি জানো তোমার জন্য তোমার দাদিমাকে কথা শুনতে হয়েছে। একে তো কলেজ করো না। তার ওপর এক্সামে মাত্র ফোরটিন মাকর্স হ্যান্ড্রেড এর মধ্যে! যতটুকু কলেজ করো তাও নাকি এর স্যার ম্যামদের সাথে ঝগড়া বাঁধিয়ে দাও। কলেজের এক লেকচারার যে তোমাদের ফার্স্ট ক্লাস নেয় সে কাল তোমার দাদীমাকে কল করে ওয়ার্নিং দিয়েছে।”
“এটা নিশ্চয় ওই তামিমের কাজ! সে শুধরাবে না। ম্যাথ এক্সামের আগের দিন ঝগড়া হয়েছিল তারই ফল ওই ফোরটিন মার্কস। ইচ্ছে তো করে নখ বসিয়ে…”
কটমট করে কথাগুলো বলছিল পুনম। মাধুর্য হতবাক! তাকে কথা শেষ করতে না দিয়েই আবার ধমকের গলায় মাধুর্য বলে ওঠে,
“শাট আপ! তুমি নিজে পড়াশোনা না করে স্যারের ওপর দোষ চাপাচ্ছো। আর কোন সাহসে তুমি স্যারের নাম ধরে কথা বলো?”
পুনমের মুখটা বেলুনের মতোই চুপসে যায়। এলিনাও ঢোক গিলে না। মাধুর্য নরম মনের হলেও একবার যদি আগুনের মতো ধপ করে জ্বলে ওঠে তবে তাকে নেভানো মুশকিল! মাধুর্য দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে। কিছুটা শান্ত গলায় বলে দেয়,
“আজ থেকে তুমি কলেজ যাবে। তাও প্রতিদিন। এখানে আসবে কম। এখানে এলে পড়াশোনা তো ছুটেই যায় তার ওপর সারাদিন ঘোড়া নিয়ে দৌড়ে বেড়াও নয়ত ময়দানে। দাদীমার কাছে থাকবে। এখন যাও।”
মাধুর্যের পরিষ্কার কথা। পুনম আর কোনো পাল্টা জবাব দিল না। এবার যদি কিছু বলার চেষ্টাও করে কপালে শনি লিখা আছে। এলিনার দিকে তাকাতেই এলিনা তাকে ইশারা করে বলে মাধুর্যের কথা শুনতে।
ভ্যাপসা গরম। চারিদিকটা রোদে খাঁ খাঁ করছে। মাথার একদম উপরে সূর্য মামা। দরদর করে ঘামছে পুনম। একহাতে ছাতা অন্যহাতে পাতলা ব্যাগ আর চোখে সানগ্লাস লাগিয়ে ক্যাম্পাস দিয়ে হেঁটে চলেছে সে। মুখে থাকা চুইংগাম চিবাতে চিবাতে বিরবির করে বলল,
“আজকে ওই লেকচারারের গলা টিপে ধরে তবেই বাড়ি ফিরব। তারপরেই শান্তি!”
রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে চুইংগাম দিয়ে একটা বড় বেলুন ফুলিয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়ল সে। কিছুক্ষণ ফুলিয়ে রাখার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলো। চুইংগাম নাকে মুখে লেগে গেল কাশতে কাশতে মুখ থেকে বাকি চুইংগাম ফেলে দিয়ে চেঁচিয়ে উঠে বলল,
“হোয়াট দ্যা…!”
ছাতা ফেলে দিয়ে হাতটা চোখে মুখে রেখে লেগে থাকা চুইংগাম তুলতে চেষ্টা করতে থাকে পুনম। অন্যদিকে কারো বিকট চিৎকার শুনে মুখ থেকে হাত সরিয়ে হকচকিয়ে তাকায় সে। আকস্মিক ঘটনায় হতভম্ব সে। চোখ দুটো ভালো করে তাকাতেই সূর্যের তীব্র তাপ এসে তার চোখমুখে পড়ে। চোখমুখ খিঁচে ফেলে সে। চোখ দুটো হালকা খোলা রেখে দেখে সামনে একজন পুরুষকে। চেনা নয় সেই ব্যক্তি। অচেনা! ব্যক্তিটির চোখেমুখে রাজ্যের বিরক্তি। হলুদ ফর্সা ত্বক ইতিমধ্যে ধারণ করেছে রক্তিম বর্ণ। মানুষটাকে আপাদমস্তক দেখে নিল পুনম। পরনে সাদা শার্ট। শার্টের দিকে লক্ষ্য করতেই দেখা গেল তার খাওয়া চুইংগামটি। এবার বুঝতে দেরি হলো না পুনমের। ব্যক্তিটি ক্ষেপে গেছে এই কান্ডে। সানগ্লাস পড়ে থাকলেও এবার সবটা অস্পষ্ট লাগছে পুনমের। হাত-পা জ্বালা করছে। থাকা যাচ্ছে না সূর্যের তাপ। একহাত দিয়ে অন্যহাত বুলাতেই মৃদু চিৎকার দিয়ে উঠে তাকায় সে হাতের দিকে। লাল রঙের দাগ ইতিমধ্যে হাতে বসে গেছে। অন্যদিকে কর্ণকুহরে ভেসে আসছে পুরুষটির রূঢ় কন্ঠ।
“হোয়াটস ইউর প্রবলেম? চোখে দেখো না? আমার শার্ট নষ্ট করে দিয়েছো। কোন ইয়ার তুমি?”
পুনমের চোখ জ্বালা করছে। তাকাতে পারছে না। ফট করে পুরুষটিকে অগ্রাহ্য করেই তার পাশ কাটিয়ে ঝড়ের বেগে দৌড় দেয়। চোখের পলকে সামনে থাকা মেয়েটি গায়েব হতেই হতবাক হয় সেই ব্যক্তি। আশেপাশে তাকায়। কোথায় গেল মেয়েটা?
ক্লাসরুমে বসে হাঁপাচ্ছে পুনম। গলা শুঁকিয়ে কাঠ হয়ে এসেছে। ছাতাটা বাহিরেই ফেলে এসেছে। একটু পানি পেলে খুব ভালো হতো! মাথা নিচু করে নিস্তেজ হয়ে লাস্ট বেঞ্চের দিকে বসে আছে সে। মাঝেমধ্যে প্রায় পুড়ে যাওয়া হাত নাড়ছে। জানালার থাইয়ের দিকে তাকাতেই কিছুটা আঁতকে উঠল সে। গালে লাল লাল দাগ উঠেছে। এজন্য মাধুর্য তাকে বার বার বলেছিল রাস্তায় ছাতা না সরাতে। হঠাৎ তার পাশে এসে দুজন মেয়ে বসে। পুনম মাথা উঠিয়ে তাকায়। তাদের মধ্যে একজন পুনমের ছাতা এগিয়ে দেয়। আর বলে,
“তোমার চোখমুখ, হাত আর গলার অবস্থা অনেক খারাপ। আমাদের ওয়াশরুমে চলো। পানি দিলে ভালো লাগবে। আর ছাতাটা অনিভ্র স্যার দিল তোমায় দিতে। আর তোমায় বেশি করে পানি দিতে বলল!”
এবার দুটো মেয়ের দিকে উৎসুক দৃষ্টিতে চাইলো পুনম। তাদেরকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বলে,
“অনিভ্র স্যার?”
“হ্যাঁ। উনিই তো বললেন তোমার নাকি সমস্যা হয়েছে। ছাতাটাও দিয়ে বললেন এটা তোমার তাই দিয়ে দিতে। ওইযে দাঁড়িয়ে আছেন উনি।”
পুনম কৌতুহলী দৃষ্টিতে বাহিরে তাকালো। ক্লাসরুমের ওপর প্রান্তে দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে রয়েছে এক মানব। এইতো সেই পুরুষ! পুরুষটির চোখ দুটো অশান্ত। উনি তো পুনমকে ঝাড়তেই ব্যস্ত ছিলেন তাহলে তার সমস্যা কখন খেয়াল করলেন?
আকাশে সুন্দর চাঁদ। পরিপূর্ণ চাঁদের আলোয় আলোকিত হয়েছে কক্ষ। আলাদা করে আলো জ্বালানোর প্রয়োজন হয়নি আর। জোনাকিরাও ভিড় করছে পুনমের আশেপাশে। সে মাধুর্যের কোলে মাথা দিয়ে একমনে জোনাকির খেলা দেখছে। মাঝেমাঝে মৃদু হাসছে। হাসির কারণ সে নিজেই জানে না। শুধু চারিপাশে ভাসছে সেই পুরুষের অশান্ত চোখ। মাঝে মাঝে বুকের বা পাশে হাত রাখছে সে। ধকধকানি বাড়ছে সেই পুরুষের স্মরণে! এর কারণেই বোধহয় এমন হাসি?
পুনমের হাসি খেয়াল করে মাধুর্য তার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলল,
“কি ব্যাপার? এতো হাসি কেন হঠাৎ?”
পুনম তার হাসোজ্জল মুখ লুকায় মাধুর্যের কোলে। আর চাপা সুরে বলে,
“কিছু না।”
একটু থামে পুনম। আবার জানালা দিয়ে চাঁদের দিকে চেয়ে বলে,
“#প্রেমের_ঐশ্বর্য এর জয়ের গল্পটা আরেকবার শোনাবে মেরি জান? তোমার মেয়ের জয়ের এক আলাদা গল্প?”
মাধুর্য থামে। থমকে যায়। বুকের ভেতরটা হাহাকার দিয়ে ওঠে। পরক্ষণেই মুচকি হাসিতে যেন সব অন্ধকার কাটে। নম্র সুরে বলে,
“প্রতি রাতে এই জয়ের গল্প শুনে কি পাও?”
পুনম হাসে। উঠে সোজা হয়ে বসে। বড় শ্বাস নিয়ে বলে,
“একটা অদ্ভুত শান্তি! একটা অদ্ভুত অনুভূতি! শোনাও না!”
“তবে শোনো। শত বাঁধা পেরিয়ে একজন ডেভিল কুইন যখন হয়ে উঠেছিল ভ্যাম্পায়ার কুইন এবং একজন সাধারণ মানুষ যখন হয়ে উঠেছিল ভ্যাম্পায়ার কিং তখন পাল্টে গেছিল তাদের ভাগ্যের লিখন। এক অদ্ভুত সুখের উল্লাসে ভরে গিয়েছিল এই রাজ্য। সেটা সম্ভব হয়েছিল শুধুমাত্র তাদের জন্যই। রাণী আগলে রেখেছিল প্রতিটা প্রজাকে নিজের সন্তানের মতো। হয়ে উঠেছিল ঐশ্বর্য থেকে রাণী সাহেবা সেই সাথে #প্রেমের_ঐশ্বর্য।”
অতীত…
প্রেম ও ঐশ্বর্যের অভিষেকের পর সেই সুখময় সংসারের কেটে গেছে চারটি বছর। তখন সবকিছু যেন তাদের মনের মতো। এতোসব ব্যস্ততার মধ্যেও যেন রয়েছে প্রেম ও ঐশ্বর্যের এক অন্য নিজেদের জগত। তাদের নিজেদের এক ছোট্ট পৃথিবী। সেই পৃথিবীতে শুধু তারা এবং তাদের ছোট্ট প্রিন্সেস পুনম রয়েছে। পুনমের বয়স তখন এক বছরের কাছাকাছি। ভালো করে হাঁটতে শিখেনি এখনো। টলমল করে মেয়েটা। তবুও পুরো প্রাসাদ জুড়ে প্রতিদিন তাকে নিয়ে হুড়োহুড়ি চলে। অন্যদিকে প্রেমের মা মিসেস. পরিণীতা আর সেই সাথে তার বাবাকেও প্রেম জানাতে সক্ষম হয়েছে ঐশ্বর্যের আসল পরিচয়। প্রথম প্রথম তারা আপত্তি করেছিল। ঐশ্বর্যকে দেখে ভয়ে ভয়ে থাকতো। তবে ঐশ্বর্যের নম্র আচরণ সবটা পাল্টে দেয়। তারাও ভ্যাম্পায়ার রাজ্যে প্রবেশের অনুমতি পায়। সেই রাজ্যে তখন সুখপাখির আনাগোনা!
ভ্যাম্পায়াদের জন্য এক অন্যতম রাত হচ্ছে পূর্ণিমার রাত। এই রাতটা তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়। মানুষদের জগতে বাস করলে আবার এই রাতটাই ততটায় ভয়ানক হয়ে ওঠে। কারণ চাঁদের আলো যখনই ভ্যাম্পায়াদের ওপর পড়ে তখনই জেগে ওঠে ওদের আসল রূপ। সেদিনও ছিল তেমনই এক রাত। ঐশ্বর্য সেদিন ভ্যাম্পায়ার রাজ্যেই ছিল ছোট্ট পুনমকে নিয়ে। তখন হাত-পা নাড়িয়ে মায়ের কোলে খেলতে ব্যস্ত পুনম। মাঝে মাঝে আপনমনে হেঁসে উঠছে। তার হাসি দেখেই ঐশ্বর্যও শব্দ ছাড়াই হাসছে। যখন মেঘে ঢাকা চাঁদটা পরিপূর্ণ রূপ ধারণ করে তখন জানালার দিকে মেয়েকে নিয়ে এগিয়ে যায় ঐশ্বর্য। পুনমকে জানালার কাছে দোলনায় শুইয়ে দেয়। রাজকীয় কাজ করা দোলনায়। সাদা রঙের চাদর এবং বালিশ। উপরের অংশটা সাদা ফুল দিয়ে সাজানো। যখন পুনমকে শুইয়ে দেওয়া হয় তখন যেন তাকে শুভ্রতার রাজকন্যা দেখায়। ফ্যালফ্যাল করে তাকায় ঐশ্বর্য নিজেই। গোলগাল মুখে যখন চাঁদের রশ্মি বর্ষিত হয় তখন মুচকি হেঁসে মেয়ে দুহাত মুঠো করে হাতে আলতো করে চুমু খায় ঐশ্বর্য। আর আপনমনে বলে,
“শুভ্রতার রাজকন্যা পুনম!”
ছোট্ট পুনম কি বুঝল তা জানা নেই। তবে সে শব্দ করে হেঁসে উঠল। দুই গালেই টোল পড়তেই তার হাসির মাধুর্য বাড়ল বেশ। তারপর ঐশ্বর্যের খেয়ালে এলো পুনমের চোখ দুটো। তার চোখ সবুজ বর্ণে পরিণত হচ্ছে। গায়ের রগ গুলো আস্তে আস্তে ফুটে উঠছে। ঐশ্বর্য তার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। বেশ ক্লান্ত লাগছে ঐশ্বর্যের। তাই সে পিছু ফিরে গিয়ে বিছানায় বসে। পাশে থাকা চারকোনা আকারের টেবিলে রেখে দেওয়া ছবির দিকে তাকায়। প্রেম আর তার ছবি। প্রেম তার দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে। আর ঐশ্বর্য সামনের দিকে। ছবিটা তখনকারই! লোকটাকে মনে পড়ছে ভীষণ। যদি এই মূহুর্তে প্রেমের বক্ষে মাথা রাখতে পারতো তবে এক নিমিষে দূর হতো সমস্ত ক্লান্তি। তবে আজ বোধহয় তা সম্ভব নয়। এসবের বাহিরে তার একটা মনুষ্য জীবন রয়েছে। তার সেই জীবনের কাজকর্মকে প্রধান্য দেওয়া প্রয়োজন! আর ঐশ্বর্য এসবে তাকে বিরক্ত করতে চায় না। একদমই না। তাই সে কোনোরকম অভিযোগও করে না।
রাতটা তখন গভীর হতে থাকে। চোখ দুটো লেগে আসে ঐশ্বর্যের। আধশোয়া হয়ে ঘুমে তলিয়ে যেতে থাকে তার অজান্তেই। টিমটিম করে জ্বলছে টেবিলের বড় বাটির পানিতে থাকা প্রদীপ। হঠাৎ ঘুমের মাঝেই তার চোখের সামনে ভাসতে থাকে অদ্ভুত সব দৃশ্য! চারিদিকে দেখতে পায় লা’শের সমাহার। অস্থির হতে থাকে ঐশ্বর্যের মুখভঙ্গি। এদিক ওদিক হাত-পা ছুঁড়তে থাকে। তবুও চোখের সামনে থেকে যায় না সেই দৃশ্য। আর লা’শের প্রতিটা মুখ ঐশ্বর্যের চেনা। সকলে তারই রাজ্যের প্রজা! তারই প্রাসাদের কেউ। মুখ চিনতে পেরে সর্বাঙ্গ কেঁপে ওঠে ঐশ্বর্যের। সে পাগলের মতো ডাকতে থাকে সকলকে। কেউ চোখ মেলে তাকায় না। এসব দেখে তার নিঃশ্বাস আঁটকে আসে। চারিপাশ অন্ধকার হয়ে আসে। তখনই চোখেমুখে গরম নিঃশ্বাস আর ঠান্ডা বাতাস অনুভব করতেই ধড়ফড়িয়ে ওঠে ঐশ্বর্য। চোখ দুটো দ্রুত মেলে উঠে বসতে চায়। কিন্তু তার সামনে ভাসছে এক পুরুষালি হাসোজ্জল অবয়ব। খোঁচা খোঁচা দাড়ি আর প্রশস্ত দেহ চিনতে ভুল হয় না তার। তৎক্ষনাৎ কাঁপা দুটো হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে পুরুষটিকে। তার বক্ষে নিজের মাথা রাখে। চোখ দুটো বুঁজে ফেলে বড় বড় শ্বাস ফেলতে থাকে।
আচমকা ঐশ্বর্যের এই কাজে কিছুটা বিস্মিত হলেও পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নেয় প্রেম। অতঃপর তার একহাত দিয়ে ঐশ্বর্যের মাথা আর আরেকহাত তার পিঠে রেখে মাথা বুলিয়ে দিতে দিতে থমথমে সুরে প্রশ্ন করে,
“আবারও বুঝি খারাপ স্বপ্ন দেখেছো এ্যাংরি বার্ড?”
ঐশ্বর্য চোখ খোলে। প্রেমকে ছাড়তে চায়। তবে এবার প্রেম ধরে রাখে তাকে। নিজের সঙ্গে আগলে রাখে। ঐশ্বর্য আগের মতোই উত্তর দিয়ে বলে,
“হু!”
ঐশ্বর্য গত কয়েকদিন ধরে অদ্ভুত আর খারাপ স্বপ্ন দেখে চলেছে। আর তা নিয়ে রাতে বিচলিত হয়ে পড়ে। প্রেম তাকে সামলায়। প্রেমের হাতের বাঁধন আলগা হতেই ঐশ্বর্য কিছুটা সরে উঠে বসে বলে,
“আপনার না আজ এখানে থাকার কথা নয়? কাল সকাল সকাল তো মিটিং আছে আপনার। তো এখানে এতো রাতে এলেন যে…?”
“আমি না এলে আমার বদলে অন্য কাউকে তো জড়িয়ে ধরার চান্স নেই। তাই আমিই চলে এলাম। আমার বদলে যদি ভয়ে অন্য কাউকে জড়িয়ে ধরো? এতো রিস্ক নেওয়ার দরকার কি? আমি আবার এসব ব্যাপারে রিস্ক নিতে চাই না।”
ঐশ্বর্য ঠোঁট চেপে প্রেমের বুকে চাপড় মারতেই প্রেম চোখ গরম করে বলে ওঠে,
“খবরদার, এখানে স্পর্শও করবে না! এখানে আমার প্রেয়সীর বসবাস।”
ঐশ্বর্য স্থির চোখে তাকায় মানুষটির দিকে। কম সময় পার হয়নি। বহু সময় গিয়েছে। তবুও সে পাল্টায় নি। নিজের মতো করে ভালোবেসে গিয়েছে। প্রেমকে কাছে আসতে দেখেই প্রেমের ঠোঁটের ওপর হাত রেখে ঐশ্বর্য ইশারায় দূরে থাকতে বলে। প্রেম মানুষটা এক্ষেত্রে মোটেও শোনার পাত্র নয়। দূরে থাকার পাত্র নয়। তার মুখের ওপর থেকে ঐশ্বর্যের হাত সরিয়ে তা পেছনে চেপে ঐশ্বর্যের দিকে ঝুঁকে পড়া মাত্রই ঐশ্বর্য তড়িঘড়ি করে জানালার কাছে থাকা দোলনার দিকে। তা লক্ষ্য করে প্রেম আরো কাছে এগিয়ে এলো। ঐশ্বর্যের কানের কাছে মুখ রেখে বলল,
“মাই প্রিন্সেস ইজ স্লিপিং। সে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েছে কারণ সে জানে তার বাবা আর মা একসঙ্গে কিছু সময় কাটাতে চায়। যাতে সে তার জুনিয়র সিস্টার বা ব্রাদার পায়।”
লজ্জায় পরিপূর্ণ হলো ঐশ্বর্যের চেহারা। চোখ মেলাতে পারল না প্রেমের চোখে। মুখ নিচু করে প্রেমের কাঁধে মাথা রাখল। প্রেম হাসি দিয়ে বলল,
“এমন দৃষ্টি আমার এখানে গিয়ে লাগে।”
বলেই নিজের বুকের বামপাশে হাত রাখে প্রেম। ঐশ্বর্য উঠে প্রেমের গালে হাত রেখে একটু উঁচু হয়ে তার গালে নিজের ওষ্ঠদ্বয় ছোঁয়ায়। প্রেমের মনে বয়ে যায় বসন্তের হাওয়া। হৃদয়ে তীরের মতো বিঁধে সেই স্পর্শ!
ঘুম ঘুম চোখে তাকায় ঐশ্বর্য। দরজায় কেউ সজোরে কড়া নাড়ছে। চোখ ডলতে ডলতে তাকায় ঘুমন্ত প্রেম এবং মাঝখানে শুইয়ে রাখা পুনমের দিকে। তারপর বাহিরের দিকে দৃষ্টি রাখতেই দেখতে পায় এখনো আকাশের অন্ধকার ভাবটা কাটেনি ভালোভাবে। মানে সবে ভোর। এই ভোরে এতো ডাকাডাকি হজম হলো না তার। কোনো বিপদ হয়েছে নাকি? এই কথাটা ভাবনায় আসতেই বিছানা ছেড়ে ঝড়ের গতিতে দরজার কাছে গিয়ে দাঁড়াল ঐশ্বর্য। দরজাটা খুলতেই দুটো সৈন্যের বিচলিত মুখ দেখতে পেল সে। ঐশ্বর্য কিছু বলার সুযোগ পেল না। তার আগেই তাদের মধ্যে একজন বলে উঠল,
“ক্ষমা করবেন এতো ভোরে বিরক্ত করার জন্য কুইন। তবে খুব বিপদ হয়েছে। দীঘিতে একজনের লা’শ পাওয়া গেছে। আমাদেরই কেউ হবে।”
বুকটা ধক করে উঠল ঐশ্বর্যের। র’ক্ত হিম হয়ে যাচ্ছে যেন! মস্তিষ্ক শূন্য হয়ে আসছে। কিছু ভেবে না পেয়ে সৈন্যদের উদ্দেশ্য করে বলল,
“এক্ষুনি চলো সেখানে।”
যাবার আগে ঘরে পুনরায় ঢুকে চাদর জড়িয়ে নেয় ঐশ্বর্য। তারপর একপলক প্রেম ও পুনমের দিকে চেয়ে দ্রুত বেরিয়ে পড়ে দীঘির উদ্দেশ্যে। তার ঘোড়ায় চড়ে রওনা দিল দীঘির দিকে।
আলো ফুটতে শুরু করেছে তখন। দীঘির পাড়ে জমা হয়েছে অনেকে। ভীড় সরিয়ে প্রবেশ করল ঐশ্বর্য। তাকে দেখে মাথা নুইয়ে নিল সকলে। পানিতে ভিজে গেছে লা’শটা। ফুলে উঠেছে দেহ। বোঝায় যাচ্ছে বেশ কয়েকদিন পানির নিচে ছিল। সকলে চেনার চেষ্টা করছে আসলে এই মৃ’ত দেহ কার!
ঐশ্বর্য হাঁটু ভাঁজ করে বসে। হাত রাখে লা’শের ওপর। লা’শ ঘুরাতেই সকলের চোখ বড় বড় হয়। একেবারে মুখে কোনো তলো’য়ার দিকে একটা আঘা’ত হা’না হয়েছে। ঐশ্বর্য হাত রাখে পেটে। শেষ আঘা’ত পেটেই করা। গভীর ক্ষ’ত। বুকের ভেতরটা কাঁপছে ঐশ্বর্যের। কিছু মাথায় আসছে না। মাথা ঘুরছে। চোখটা বুঁজে নিজেকে শান্ত করতে চাইলো সে। আর সৈন্যদের উদ্দেশ্যে বলল,
“এটা কার মৃ’ত দেহ খুঁজে বের করো সকালের মধ্যে।”
মাথা নাড়ালো সকলে। অন্তিম কাজ সমাপ্ত হলো সকালের মধ্যেই। ঐশ্বর্য দূরদৃষ্টি দিয়ে সেদিন দেখেছিল কিভাবে সমাপ্তি ঘটছিল তারই রাজ্যের প্রজার। তাও তার বিচার করতে করতে পারেনি ঐশ্বর্য। পায়নি কোনো রূপ প্রমাণ। সেদিন সে দেখেছিল সেই মৃ’তের কাছের জনদের আর্তনাদ। হৃদয়ে যেন তখন পাথরের বর্ষণ ঘটেছিল!
সেটাই শেষ ছিল না। ভ্যাম্পায়ার কুইন ঐশ্বর্যের দুঃস্বপ্নের মতো একে একে প্রজাদের মৃ’ত দেহ মিলতে থাকল যেখানে সেখানে। চারিদিকে তখন শুধু প্রিয়জনকে হারানোর হাহাকার ঐশ্বর্যের চোখে ভাসতে থাকল। তার মনে হলো সে একেকটা সন্তানকে হারাচ্ছে। ভাঙতে থাকল তার ভেতরটা। সে ধরতে পারল না হ’ত্যাকারীকে। শুধু নিরবে দেখে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না যেন। আর পাগলের মতো খুঁজতে থাকল এর সমাধান ও হ’ত্যাকারীকে সে ও প্রেম।
আজ আবারও মিলেছে আরেকটা লা’শ। গায়ে কাটা দিয়ে উঠেছে ঐশ্বর্যের। সে একটা কক্ষের বাহিরে অপেক্ষা করছে বেশ কিছুক্ষণ ধরে। পায়চারি করতে করতে যখন কক্ষের দরজাটা খুলল তখন কিছুটা শান্ত ও নিরবভাবে প্রবেশ করল ঐশ্বর্য কক্ষে। কক্ষে বসে লা’শটা পরীক্ষা করছিলেন রাজবৈদ্য। সে রাজবৈদ্যের কাছে দাঁড়িয়ে শান্তভাবেই জিজ্ঞেস করল,
“কি দেখলেন আপনি? কিভাবে মৃ’ত্যু হয়েছে এর?”
“বাইরে থেকে দেখলে এর মৃ’ত্যু স্বাভাবিক লাগলেও এর মৃ’ত্যু কিন্তু খুবই রহস্যময় কুইন। এই তলো’য়ারের আঘা’তে তার মৃ’ত্যু হয়নি। তার দেহে বি’ষ ছিল। এক ভয়ানক বি’ষ। শুধু তাই নয় এই দেহ বাহিরে থেকে স্বাভাবিক মনে হলেও ভেতরটা ঝলসে গেছে। আগু’নে পুড়লে যেমন হয় ঠিক তেমন অবস্থা ভেতরটা। সেদ্ধ হয়েছে একদম।”
ঐশ্বর্যের কপালে গভীর ভাঁজ পড়ে। কোনো কথা আসে না। সবটা যেন গোলকধাঁধা! হঠাৎ তার একটা কথা স্মরণে আসতেই অস্ফুটস্বরে বলে ওঠে,
“অগ্নি তলো’য়ার!”
চলবে…
[বি.দ্র. ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক। বাস্তবে এর কোনো ভিত্তি নেই। শেষ পর্বটা অনেক বড়। বিধায় ফেসবুক সাপোর্ট করছে না। তাই বাধ্য হয়ে অর্ধেক দিলাম।]
লেখিকার গ্রুপ : আনিশার গল্পআলয় (সাবির পাঠকমহল)?