#প্রেমের_উষ্ণ_ধোঁয়াতে
#লেখিকাঃ আসরিফা সুলতানা জেবা
#পর্ব____৩৪
ঊষার লাজুক নজর ঝুঁকে স্থির হলো নিজের হাতের করপুটে। নিটোল ওষ্ঠাধর কম্পিত হতে গিয়েও থমকালো। হলো নিস্তব্ধ। কী জবাব দিবে ও! মিছামিছি উত্তরবিহীন তার কাছে কোনো সদুত্তর সাজানো নেই। থাকলেও সেই উত্তরে মিশে আছে ভয়াবহ প্রলয়। প্রহর নির্মল,শ্বেত পাঞ্জাবির হাতা গুটিয়ে হৃষ্টপুষ্ট কনুই পর্যন্ত গুছিয়ে রাখল। তপ্ত দুপুরে ধোঁয়া উঠা কফির মগে তীক্ষ্ণ নজর নিবিষ্ট রেখে শান্ত কণ্ঠে বলে উঠে,
‘ তুই সত্য লুকাতে চোখ নিচু করে ফেললি। কিন্তু তোর এই নত মাথা আমাকে সুন্দর করে উত্তর দিয়ে দিল। এই অপূর্ণ, অপ্রকাশিত ভালোবাসা থেকে পালাতেই এত জলদি বিয়ে করে নিচ্ছিস?’
ঊষা অধোবদনে ক্ষীণ স্বরে বলল,
‘ পালাতে হলে কবেই এ বাড়ি ছেড়ে দিতাম ভাইয়া। পালিয়ে যাচ্ছি না । শুধু মনে হলো জীবনটা গুছানো প্রয়োজন। ‘
প্রহর বক্র চাউনি নিক্ষেপ করে জিজ্ঞেস করল,
‘ তুই কি আমার সাথে কথা বলতে লজ্জা পাচ্ছিস? ‘
তড়াক করে সোজা হয়ে বসে ঊষা। ব্যগ্র হয়ে বলল,
‘ না ভাইয়া। লজ্জা পাচ্ছি না। তুমি আমার মনের কথা ধরে ফেলেছ এটাই আমার জন্য অনেক। বাবা ছাড়া কেউ জানত না। নিজের মধ্যে কথাটা কয়েক বছর ধরে লুকিয়ে রেখে ধীরে ধীরে ম**রে যাচ্ছিলাম মনে হচ্ছিল। এই যে তোমার কাছে এখন মন খুলে বলতে পারছি কত ভালো লাগছে জানো? ‘
‘ যাকে এত ভালোবাসলি,বাসিস তাকে কখনো জানাবি না?’
প্রহরের সোজাসাপটা প্রশ্নসূচক বাক্য শুনে ঊষার অন্তঃপুর অশান্ত হয়ে উঠে। চিত্তে শুরু হয় শঙ্কার তোলপাড়। ভীষণ আকম্পন কণ্ঠস্বর,
‘ না ভাইয়া। আমি প্রত্যয় ভাইয়াকে কখনো বুঝতে দিতে চাই না আমি তাকে পছন্দ করি৷ নয়ত আমি ভাইয়ার সামনে দাঁড়াতে পারব না। সবসময় মনে হবে ভাইয়া তো আমাকে ভালোবাসে নি,তাহলে আমি কেন ভালোবাসা প্রকাশ করে আমাদের সম্পর্কের রূপ বদলে দিয়েছি? আজ যেমন করে সহজে ভাইয়ার সাথে মিশতে পারি,এটা জানার পর আর স্বাচ্ছন্দ্যে মিশতে পারব না। এমনকি ভাইয়াও আমার সাথে দূরত্ব বজায় রাখবে,কথা বলবে না আগের মতো। তোমার কাছে একটা অনুরোধ ভাইয়া এটা কাউকে বলো না। দূরে চলে গেলেও আমি আগের মতোই তোমাদের আদরের জায়গায় থাকতে চাই। প্রত্যয় ভাইয়ার ভোরের পাখি ডাক থেকে বঞ্চিত হতে চাই না। প্লিজ ভাইয়া। ‘
সিগারেটের ছোঁয়ায় ঈষৎ পোড়া ঠোঁটে স্মিত হাসি সমেত প্রহর উঠে দাঁড়ায়। ঊষাকে উদ্দেশ্য করে বলে,
‘ আমি অনেক আগেই প্রত্যয়ের জন্য তোর ভালোবাসা বুঝিয়ে গিয়েছি। শুধু সামনে কি হবে সেটার অপেক্ষায় ছিলাম। প্রত্যয় মৃন্ময়ীকে না চাইলে আমি ধরে বেঁধে ওকে তোর বানিয়ে দিতাম। দেখ,আমি তোর কাজকর্মে বুঝে গেলাম তুই ওকে ভালোবাসিস কিন্তু গর্দভটা বুঝল না। একদম নিশুর মতো গাধা। চোখের সামনে ভালোবাসা, কানার মতো না দেখে চলে যাচ্ছে। আমার তো সন্দেহ হচ্ছে আদৌ গাধাটা মৃন্ময়ী নামের মেয়েটাকে ভালোবাসে কি-না! ওর তো আবার মেয়েদের সাথে টাইমপাসের খারাপ স্বভাব আছে। ‘
ঊষা দাঁড়িয়ে বলল,
‘ সত্যিই বাসে ভাইয়া। নয়ত এত মাস কি পেছন পেছন ঘুরত?’
প্রহরের মোবাইল বাজছে। কলটা তার সেক্রেটারির। দুই রাত পার হলেই গ্রামের চেয়ারম্যান ইলেকশনের জন্য মনোনয়ন দেওয়া হবে। আশ্চর্যজনক বিষয় হলো এবার উজ্জ্বল সাহেবের বিপরীতে যে ব্যক্তি সর্বদা লড়াই করেন সে ইলেকশনের পদপার্থী হবে না। এবার নতুন কেউ উজ্জ্বল সাহেবের বিপরীতে লড়বেন। মানুষটা কে জানার জন্যই লোক লাগিয়েছে সে। হয়ত জেনে গেছে! দুজনের কথার মধ্যে তৃতীয় কারো অস্তিত্ব, দখলদারি অপছন্দ তার। কলটা কেটে দিয়ে মোবাইলটা বন্ধ করে দিল৷ মুখোভঙ্গি শক্ত হলো কিছুটা। নিরলস কণ্ঠে বলল,
‘ তোকে একটা কথা বলি ঊষা। এটা হয়ত তুই খারাপ দিকে নিবি,নয়ত সঠিকটা উপলব্ধি করে ভালোভেবে মনে জায়গা দিবি। আমাদের ছেলেদের জেদটা বেশি। জেদে আশেপাশের মানুষকে পরোয়া করি না। যেটা চাই,মানে চাই-ই। পছন্দ হওয়া কোনো কিছু যদি আমাদের বিপরীতে থাকে এক প্রকার আক্রোশ জমা হয় মনে। তখন উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়ায় হাসিল। যেকোনো উপায়ে হাসিল করতেই হবে৷ প্রত্যয়কে আমি ছোট থেকেই চিনি। ওর জেদের পাল্লা আমার থেকেও ভারী। সেটা তুইও জানিস। যেটাকে ও ভালোবাসা বলে দাবি করছে,যেটা ছাড়া বাঁচবে না বলছে হতে পারে সেটা তার জেদেরই অংশ। কারণ মৃন্ময়ী মেয়েটার কাছে পদে পদে প্রত্যাখ্যান পেয়েছে সে। তুই যে আজ শাড়ি পড়েছিস ওর কথায় রাইট? গতরাতে রুমে যাওয়ার সময় প্রত্যয়ের লাস্ট কথাটা আমার কানে এসেছে। বিয়ের কথাটা শুনেই মনমরা হয়ে থাকছে। আবার বড় আব্বুর সাথে এক চোট বেয়া**দবিও সেরে ফেলেছে। তার একটাই কথা এখন তোকে বিয়ে দেওয়া যাবে না। কেন দেওয়া যাবে না? তোকে ছাড়া ওর অভ্যাসগুলো শেষ হয়ে যাবে বলে? না, ব্যাপারটা অন্যকিছু। উত্তরটা আমি জানাব না তোকে। জানাবে সময়। আর তুই যদি কষ্টে বিয়েতে রাজি না হয়ে স্বেচ্ছায় মন থেকে হয়ে থাকিস, তাহলে বলব পিছু হটিস না। ভালো কিছু অপেক্ষা করছে তোর জন্য। শাড়িতে তোকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে। একটা সেলফি তুলবি ভাইয়ার সাথে? ‘
ঊষা মাথা হেলিয়ে হ্যাঁ বুঝালো। মলিন মধ্যাহ্নে মুঠোফোনের ক্যামেরায় বন্দী হলো ভাই-বোনের দারুণ এক মুহূর্ত। পরক্ষণেই দ্বিধান্বিত মন নিয়ে কফির মগ হাতে তুলে নেয় ঊষা। নিগূঢ় চিন্তায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল মন মস্তিষ্ক। প্রহর ভাইয়া কি মৃন্ময়ীকে প্রত্যয়ের জেদ বলল! এটা কীভাবে সম্ভব! নিঃসন্দেহে অসম্ভব এটা। মৃন্ময়ীর জন্য নিজেকে কষ্ট দেওয়া, রাত-বিরেতে ছুটে যাওয়া, বিয়ের প্রস্তাব পাঠানো,বেহায়া হয়ে উঠা এত! এতকিছু কেবলই জেদ! প্রহর ভাইয়া ভুল করেও অযৌক্তিক কথা বলে না। তাহলে এসব? কোথাও প্রশ্ন একটা থেকে যায়। ঊষা নিজেকে বুঝালো প্রত্যয়ের ওর প্রতি ভালোবাসা স্বাভাবিক, বোন ভেবে বাসতেই পারে। বোনের জন্য অস্থির হওয়াটাও নরমাল। সে মৃন্ময়ীকেই ভালোবাসে। মেয়েদের সাথে টাইমপাস আর ভালোবাসা এক নয়। ফোনআলাপে সময় নিয়ে কথা বলা,আর পিছু পিছু পাগ**লের মতো ছুটে যাওয়ায় ঢের তফাত।
কফি নিয়ে রুমে ঢুকল ও। প্রত্যয় বিছানায় নেই। উঁকি দিয়ে দেখল বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। সূক্ষ্ম একটা নিঃশ্বাস ছাড়ল ঊষা। তারস্বরে ডাকল,
‘ কফি নিয়ে যাও ভাইয়া। ‘
বারান্দা থেকে রাগান্বিত স্বর এলো তীব্র গতিতে,
‘ সকালে আসিস নি কেন?’
‘ বুয়াকে পাঠিয়েছিলাম। দরজা ভেতর থেকে আঁটকে ঘুমাচ্ছিলে,তাই আর ডাকি নি। তাছাড়া আমার একটা ক্লাস ছিল, মেডিক্যালে যেতে হয়েছে। সামনে পরীক্ষা।প্রয়োজনীয় ক্লাসগুলো কীভাবে মিস করি বলো?’
‘ বেরিয়ে যা রুম থেকে। ‘
ক্রোধমিশ্রিত, দৃঢ় কণ্ঠ। ঊষার ভেতরটা কম্পিত হলো। জখম হলো রুঢ় স্বরে। ফিরে চলে যেতে নিলে ঝড়ের বেগে এসে ওর হাতটা চেপে ধরল প্রত্যয়। হিসহিসিয়ে বলে উঠল,
‘ বিয়েতে হ্যাঁ বলার সময় মনে ছিল না সামনে পরীক্ষা? আমাকে সকালে ডেকে দেওয়ার সময় তোর মনে হলো সামনে পরীক্ষা? জামাইয়ের মুখ না দেখেই আমাকে অবহেলা? আমাকে এখন অপছন্দ তোর?’
অকস্মাৎ হেঁচকা টানে ঊষা শুরুতে চমকালেও প্রত্যয়ের
কথাগুলো শুনে শীতল হয়ে গেল। কণ্ঠে খানিকটা উত্তাপ,
‘ এগুলো কেমন অস***ভ্যতামি ভাইয়া? হতেই পারে আমার হবু হাসবেন্ড এর চেহারা আমার পছন্দ। এতে তোমার অবহেলা কোথায় হলো? তুমি কি চাও বিয়ে না বসে এই বাড়িতে তোমাদের সামনে থেকে থেকে বুড়ী হই? আমার ভবিষ্যৎ নেই? সংসারের স্বপ্ন নেই? যেখানে আমি বলছি বিয়ে করেও পড়াশোনা চালাতে পারব, তাতে তোমার কী সমস্যা? ‘
প্রত্যয় ঝটকা মে**রে হাতটা ছেড়ে দিল। কৌতুক মিশেল হাসিতে বলে উঠল,
‘ ঠিকি তো আমার কি সমস্যা! ‘
বলেই হাত দিয়ে টেবিল থেকে কফিভর্তি মগটা ছুঁড়ে ফেলল দূরে। সিরামিকের চিত্রিত মগটার টুকরো টুকরো অংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ল মেঝেময়। ঊষার অক্ষিকোটরে ভয় জমা হলো। প্রত্যয়ের দিক তাকালো ভীতু দৃষ্টে। তোয়াক্কা করল না প্রত্যয়। বরং বলল,
‘ আমি জীবনে অনেক দোষ করে ফেলেছি। এলোমেলো করে ফেলেছি নিজেকে। চল এখন নিজ হাতে তোর বিয়ের আয়োজন করে পুণ্যের কাজ করি। ‘
ঊষা নিস্পন্দ, নীরব। ক্ষণে ক্ষণে পাল্টাচ্ছে প্রত্যয়ের কথা,ভাবভঙ্গি। গতকাল থেকে হঠাৎ কি এমন হলো যে সেকেন্ডই প্রত্যয় এমন অদ্ভুত আচরণ শুরু করেছে!
‘ তোর বিয়ের লেহেঙ্গা কী রঙের?’
অতিশয় অবাকতা গভীরভাবে ছুঁয়ে দেয় ঊষাকে। বিস্ময়ে আবিষ্ট হয়ে জবাব দিল,
‘ মেরুন। ‘
‘ সুন্দর কালার। নিচে যা এখন। আমার রুমে আর আসিস না। নয়ত তোর জন্য খারাপ হয়ে যাবে। ‘
‘ কী হবে? ‘
‘ অনেককিছু। তুই বুঝবি না। তাড়াতাড়ি বের হ আমার রুম থেকে। আমি তোকে মে”””রেও ফেলতে পারি। ‘
‘কি!’– ঊষা হতবাক।
প্রত্যয় দরজা দিকে পা বাড়িয়ে সাফ সাফ বলে উঠে,
‘ তুই তো দূর হবি না,আমিই দূর হই। ‘
ঊষার মস্তিষ্ক ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। স্নায়ুযুদ্ধ চলছে অভ্যন্তরে। দরজার দিক তাকিয়ে দেখে প্রত্যয় দাঁড়িয়ে আছে, তাকিয়ে আছে ওর দিকে নিষ্পলক, নির্নিমেষ। চোখে চোখ আঁটকাতেই কেঁপে উঠল গলা।
‘ তোর হবু হাসবেন্ড এর এড্রেস আর নাম্বারটা দে। ‘
‘কেন?’
‘ স্পেশাল মিট করব। এত আয়োজন করে তুলে দিব,আগে একবার বরকে দেখব না? তোকে আদিমযুগের মেয়ে লাগছে যার কি-না বিয়ের আগে বর দেখতে নিষেধ। ‘
ঊষা দ্রুত বলল,
‘ ছেলে রাজি ছিল। আমি ইচ্ছে করেই মিট করি নি।’
‘ আমি করব,নাম্বার দে। ‘
সমুখের পুরুষের ভাবগতি যথেষ্ট সন্দেহজনক। অত্যন্ত নিরুপায় হয়ে নাম্বারটা দিল ঊষা। ওর ও তো আজ বিশেষ একজনের সঙ্গে মিট করার কথা। বিয়ের আগে সব সমাধান করে দিয়ে যেতে চায় ও। বাবাকে বলেছে বিয়ের পরও দু’টো বছর এখানে থাকবে। কিন্তু সত্যি এটাই চলে যাবে সে এখান থেকে। অন্যের অর্ধাঙ্গিনী হয়ে প্রত্যয়কে চোখের সামনে অপলক দেখে দেখে সবকিছু বিগড়ে দিতে চায় না। বাড়াতে চায় না চাপা যন্ত্রণা। যেই নতুন মানুষটার সাথে ওর জীবন জড়াতে যাচ্ছে, তাকে ও বিন্দুমাত্র ভালোবাসে না। সংসারটা প্রকৃতির ধরাবাঁধা নিয়মেই করবে। ততদিনে যদি ভালোবাসা জন্মায়!
নিশাতকে ঠেলেঠুলে রেডি করিয়ে ওর ছোট ফুপুর সাথে বাসস্ট্যান্ডে পাঠিয়ে দিল রোকেয়া। মা কেন এমনটা করল নিশাতের মনে প্রশ্ন জেগে আছে। বার কয়েক ছোট ফুপুকে জিজ্ঞেস করেও কারণ জানা গেল না। কয়েক মিনিটের মাথায় শিমুল এবং আলতাকে গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে দেখে হতবাক হয়ে গেল। প্রশ্নবিদ্ধ দৃষ্টি গিয়ে পড়ল ছোট ফুপুর ওপর। তিনি আলতো হেসে বললেন
‘ তোর বাবাকে বলে এসেছি তোকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছি। কিন্তু সত্যিটা হলো ঢাকা যাচ্ছি আমরা প্রহরের কাকাতো বোনের বিয়েতে। সকাল থেকেই অনেক বার কল দিয়েছে মেয়েটা। বলল যেকোনো ভাবে তোকে নিয়ে যেন বিয়েতে উপস্থিত হই। প্রহরও বলল তার ঘুমন্তপরীটাকে যেন নিয়ে যাই৷ ‘
নিশাতের কপোলদ্বয় লালের আস্তরণে ছেয়ে গেল। লজ্জায় মুখ ফিরিয়ে নিল ও। মা এবং ছোট ফুপু ওকে এভাবে সাপোর্ট দিবে কল্পনাও করে নি সে। প্রহর ভাই মানুষটার মন জয় করার নিখুঁত গুণ আছে বলে মনে করে ও। যেই মা ওকে প্রহর ভাইকে ভালোবাসার অপ**রাধে মারল, মোবাইলে কথা বলার পর আদরে ভরিয়ে তুলল ওকে। কি জানি কোন ধরনের ম্যাজিক করল প্রহর ভাই!
_______________________________
হুট করে ঊষার বিয়ের কথা কর্ণপাত হতেই যারপরনাই অবাক হয় আলতা, শিমুল,নিশাত সকলেই। ওদের পৌঁছাতে প্রায় সাঝের লগ্ন পেরিয়ে ধরণীতলে নেমে এসেছে আঁধার। টিমটিমে রঙিন আলোতে চমৎকার দেখাচ্ছে বাড়িটাকে। ঊষার সাথে দেখা হয় নি। এসেই শুনল সে নাকি কি এক কাজে বেরিয়েছে, কাউকেই বলে যায় নি। প্রত্যয়কে দেখল ব্যস্ত হাতে ডেকোরেশনের লোকের সাথে কাজ করতে। নিশাতকে দেখতে পেয়ে শুধু এতটুকু বলল,’ জার্নি করে এসেছিস,রেস্ট নে। ‘ কাঙ্ক্ষিত মানুষটার সাক্ষাৎ একবারও পেল না ও। এই বাড়ির প্রতিটি আনাচে-কানাচে চোখ বুলিয়ে অবাধ্য মনকে বুঝাতে শেষমেশ থামল প্রহরের রুম হতে কিঞ্চিৎ দূরত্বে। আরেকটু যেতে নিয়েও থেমে গেল পা দু’টো। বুকটা প্রচন্ড ঢিপঢিপ করছে। যাবে না সিদ্ধান্ত নিয়ে উল্টো ঘুরতেই শব্দ হলো দরজা খোলবার। ঘাড় বাঁকিয়ে দেখার আগেই শোনা গেল হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বেগতিক করে তোলা স্বর,
‘ মামুজান আমার বাপের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য চেয়ারম্যান এর ইলেকশনে দাঁড়াচ্ছে। মাথাটা খুব গরম। দৌড়ে গিয়ে এক গ্লাস ঠান্ডা পানি নিয়ে আয় নিশু, এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা আছে তোর সাথে। ‘
#চলবে,,,!
(ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)