#প্রেমের_উষ্ণ_ধোঁয়াতে
#লেখিকাঃ আসরিফা সুলতানা জেবা
#পর্ব_____৩০
সবে গভীর নিদ্রা ভর করেছিল সৌরভের মলিন,কালচে চোখ দুটিতে। বহু রাত্রি ভালো ঘুম আসে না তার। ধরা দিতে চায় না খুব সহজে। তৃপ্তিদায়ক ঘুমের আশায় যুগ যুগ অপেক্ষা করতে হবে যেন। সুখ,ভালোবাসা, শান্তির সহিত ঘুমও পালায় তা সে হাড়েমজ্জায় টের পেয়েছে। সদ্য চোখে আসা ঘুম ফের পলায়ন হলো মোবাইল ফোনের মস্তিষ্কে উত্তাপ তুলে দেওয়া শব্দে। বিরক্তি সামলে হাত বাড়িয়ে মোবাইলটা নিল সে। নাম্বারটা,নামটা দেখে হতবাক হয় ভীষণভাবে। বিশদভাবে মুখাবয়বে লেপ্টে পড়ল বিস্ময়। কণ্ঠে ক্রোধ,গম্ভীরভাব,
‘ ক’টা বাজে জানিস? ‘
ওপাশ থেকে তড়িৎ করে রিনিঝিনি স্বরের আওয়াজ এলো,
‘ মাত্র ভোর সাড়ে তিনটা। ‘
‘ এটা তোর মাত্র মনে হইল?’– চাপা স্বরে গর্জে ওঠে সৌরভ।
শিমুল তোয়াক্কা করল না। ফোনটা নিয়ে ডান পাশ ফিরে শুয়ে পড়ল। প্রবেল উৎসাহিত গলায় বলে উঠল,
‘ একটা স্বপ্ন দেখছি সৌরভ ভাই। ‘
সৌরভের মেজাজ এবার বোধহয় বিরক্তির চূড়ান্ত পর্যায়ে। চোখ জ্বলছে ঘুমের অভাবে।
‘ তুই স্বপ্নের কথা বলার জন্য আমাকে এই অসময়ে কল দিয়েছিস? মে”রে চাপা ভেঙে দিব,ফাজিল! ‘
‘ বকছেন কেন? বকবেন না প্লিজ। স্বপ্নটা আপনাকে নিয়েই দেখছি। মেলা সুন্দর একটা স্বপ্ন। ‘
মায়া মেশানো মিষ্টি স্বর, যা পুরুষের হৃদয় নিংড়ে দিতে সক্ষম। সৌরভের বক্ষস্থলটা ধ্বক করে উঠল। ধীরে ধীরে বা হাতটা নিয়ে নিজের হৃৎপিন্ড বরাবর রাখল সে স্পন্দন পরখ করতে। বড্ড শীতল হয়ে পড়েছে অভ্যন্তর।
‘ বকছি না। কী বলবি জলদি বল,আমি ঘুমাব। ‘
এত সময় যাবত অবিরত বকবক করলেও এখন শিমুলের কণ্ঠরোধ হয়ে আসছে লজ্জায়। শরমে মরমে তার মর**ণ দশা। কপোলদ্বয় উষ্ণ হয়ে ওঠেছে। হৃদয়কুহর হতে কিছু কথা বের হলো। মনের,মস্তিষ্কের, স্বপ্নে দেখা সাজানো গোছানো লজ্জামিশ্রিত কথা,
‘ আমি দেখেছি মামা আমাদের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছেন। আপনি বাড়িতে বলেছেন আমাকে ছাড়া বাঁচবেন না। আমাকে বিয়ে করবেন। তারপর! তারপর মাঝ দিয়ে মনে নেই। কিন্তু আমাদের বিয়ে হয়েছে। ফুলশয্যার রাতে অনেক চিন্তায় ছিলেন আপনি। আমাকে কাছে ডেকে বললেন তুই কি আমাকে একটু জড়িয়ে ধরবি শিমুল? লজ্জায় আমি আপনার বুকে মাথা রাখলাম। তখনই আপনি কানতে কানতে কইলেন আমি একজনরে ভালোবাসতাম শিমুল। সত্যিই কি আপনি কাউকে ভালোবাসতেন সৌরভ ভাই?’
সৌরভের হৃদয় গহনে স্তব্ধতা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ল অকস্মাৎ। উঠে বসল সে তাৎক্ষণিক। মৃদু চেঁচিয়ে প্রশ্ন ছুড়ল। ধমকালো কঠিনরূপে।
‘ এসব কী বলছিস তুই? ফোন রাখ,এখনই রাখবি। ‘
শিমুলের জীর্ণ গলায় সেই একই প্রশ্নাতীত বাক্য,
‘ আপনি কি কাউকে ভালোবাসতেন?’
টনক নড়ল সৌরভের। দ্রুত বেগে মাথায় তিক্ত এক বিষয় হানা দিল। বুঝল স্বপ্ন কেবল শিমুলের মনগড়া কাহিনী। আসলে সে প্রশ্নটার উত্তর চায়। সেই প্রশ্নের উদগত হলো কোথা থেকে! আন্দাজে ঢিল ছুড়ছে নাকি জানে ও! সজাগ দৃষ্টি আধো আধো অন্ধকার কক্ষে মেলে ধরল। নিরাসক্ত সৌরভ, ‘ না। ‘
উদগ্রীব হয়ে গেল শিমুল। গলা ভিজে ওঠেছে মেয়েটার। সুন্দর সুন্দর চোখজোড়া টপাটপ অশ্রু ফেলছে হয়ত। অনায়াসে তা বুঝতে পারছে সৌরভ। কি মধুর,ক্রন্দন মিশেল সুর,
‘ মিথ্যা বলতেছেন আপনি। আমি জানি পিংকিরে আপনি পছন্দ করতেন। এ কারণেই আমারে দেখতে পারতেন না। জানবার পর থেকে আমি এক ফোঁটাও শান্তি পাইতেছি না, না থাকতে পেরে কল দিলাম আপনারে। ‘
সৌরভ খনখনে গলায় জিজ্ঞেস করল,’ এসব তোকে কে বলল?’
জবাব দেয় নি শিমুল। কণ্ঠ তার বিষাদ,অশ্রুকণায় পরিপূর্ণ। কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে। এ মর্ত্যলোকের সকল যন্ত্রণা তারই গলা চেপে ধরছে যেন বার বার। ওপাশে সৌরভ নিস্তব্ধ হয়ে শুনছে,অনুভব করছে ওর শ্বাস-প্রশ্বাসের আওয়াজ। মিনিট তিনেক কাটল। এক হাতে চোখ মুছে শিমুল আকুতিভরা কণ্ঠে শুধায়,
‘ আমরা যাকে ভালোবাসি সে আমাদের কেন চায় না? আর আমরা যাকে চায় না সে আমাদের কেন পাগলের মতো চায়? আপনি কি আমাকে একটাবার পাগলের মতোন চেয়ে দেখবেন সৌরভ ভাই? বিশ্বাস করেন,এবার ঠকবেন না আপনি। ‘
টুপ করে কল সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। মোবাইলটা বন্ধ করে দরদর করে ঘামছে সৌরভ। রাত বাড়লেই বাড়ে ঠান্ডা। শীত অতীব সন্নিকটে দাঁড়িয়ে প্রকৃতির। অপেক্ষা তার কখন বিদায় ঘন্টা বাজবে হেমন্তের। অথচ হিমশীতল পরিবেশেও সুঠাম দেহ হতে বিন্দু বিন্দু ঘাম ঝরছে। গলায় শুষ্কতা। শিমুল আস্তে আস্তে হৃদয় নাড়িয়ে তুলছে দিনকে দিন। এ মেয়ের কথা,কণ্ঠস্বর,কান্না,সান্নিধ্য ঘায়েল করে ফেলছে সৌরভের হৃৎপিণ্ড তারই সম্মতি বিহীন। না, আজ আর ঘুম হবে না। তার ঘুম কেড়ে নিয়েছে স্মরণিকা নিবাসে বসবাসরত সেই শিমুল ফুল। ইতোমধ্যে অনুরক্তির বীজ বপন করে ফেলেছে ভঙ্গুর হৃদয়স্থে। চারা গজিয়ে ফুল ফোটবার আগেই সতর্ক হতে হবে ওর। আদৌ কি পারবে তা!
————————————-
বিরাট এক অমানিশার রাত ঘুম ছাড়াই কাটালো নিশাত। মস্তিষ্ক, চক্ষু কোনোকিছুকেই বিশ্রাম দেয় নি ও। ঘুমোলে সকালে যদি নির্দিষ্ট সময়ে উঠতে না পারে! তাহলে প্রহর ভাইকে দেখবে না ও। চিন্তায়,বিশৃঙ্খল অনুভূতি, মনের উতালপাতাল ভাবনা কোনো কিছুই ওকে ঘুমোতে দেয় নি। ঘুম আর ওর মাঝে ছিল এসব মিলিয়ে বড়সড় একটা শক্তপোক্ত প্রাচীর। চেয়ারের উপরের দিকে থুতনি ঠেকিয়ে সময় গুণতে লাগল। ঘন্টার কাটা তখন আটটার ঘরে। প্রহর ওকে ঠিক ন’টা ত্রিশে বাস স্ট্যান্ডে থাকতে বলেছে। ওঠে দাঁড়াল চকিতে। সবচেয়ে চমৎকার সিঁদুর লাল রঙা জামাটা রাতেই বের করে রেখেছিল। সেটা নিয়ে ত্রস্ত পায়ে ঢুকল গোসলখানায়। সেড়ে বেরুতেই চোখজোড়া বড় বড় হয়ে যায়,হানা দেয় ভয়। চমকে ওঠে,শিউরে ওঠে। ভয়ের দমকে কিঞ্চিৎ কেঁপে ওঠে কায়া।
রোকেয়া বিছানা ঝাড়ছিলেন। নিশাতের ঈষৎ কাঁপুনি নেত্রযুগলে বিঁধতেই সংশয়ের চাহনি নিক্ষেপ করলেন উনি। প্রশ্নও সন্দেহ মেশানো,
‘ এত সকালে অমন রঙিন জামা পইড়া কই যাইতেছিস?’
নিশাত ভড়কালো। সদুত্তর উঁকি দিচ্ছে না ওর মন দুয়ারে। ইনিয়েবিনিয়ে বলল,
‘ স্কুলে অনুষ্ঠান আছে আম্মু। সবাই স্কুল ড্রেস ছাড়াই যাইব।’
‘ কই আমি তো আগে শুনলাম না!’
‘ হঠাৎ বলছে,তোমারে বলা হয় নাই। ‘
‘ শিমুল যাইব তোর লগে?’
‘ হু। ‘
এক বুক সাহস নিয়ে পরিপক্কভাবে গুছিয়ে মিথ্যা জবাব দিল নিশাত। মা’য়ের মনে কী চলছে কে জানে! গত কয়েকদিন যাবত সে খেয়াল রেখেছে রোকেয়ার কথা,আচরণ ওর প্রতি অনেক কঠোর। পূর্বের থেকেও বহুত শক্ত। রোকেয়ার অধরদ্বয় আলগা হলো না। মৌনমুখে বিছানা ঝেড়ে রুম ঝাড়ু দিতে লাগলেন তিনি। নিশাত দোনোমোনো করছে। মা’র ভাবগতি তাঁর অল্পস্বল্প বুঝদার মনে শঙ্কার তীব্রতা বৃদ্ধি করে চলেছে ক্রমাগত। তৈরিও হতে পারছে না সে। রোকেয়া দরজার কাছে গিয়ে ঘাড় বাঁকিয়ে গাম্ভীর্য সমেত আওড়ালেন,
‘ সাইজা নিচে আয়। খাইয়া তারপর যাবি। যাওয়ার আগে মনে কইরা গাড়ি ভাড়া লইয়া যাইস। হাইট্টা যাবার দরকার নাই। ‘
‘ আচ্ছা। ‘
‘ ঢাকা,ঢাকা। এক্ষুনি একটা বাস যাইব আফা। পরের বাস এক ঘন্টা পর। আফনে কি এহনই যাইবেন। গেলে উইঠা যান জলদি। ছাড়বার সময় হইয়া গেছে। ‘
নিশাত শরীর গুটিয়ে বাসস্ট্যান্ডেের এক কর্ণারে এসে দাঁড়ালো। দুইজন লোক আসা অব্দি থেকে বিরক্ত করে চলেছে তাকে। গুণে গুণে চারবার সে জবাবে বলেছে ঢাকা যাবে না। কিন্তু ফলাফল শূন্য। ক্রমশ বিরক্তি বাড়ছে,একটা সময় অতিক্রম করে ঘা ঘেঁষে দাড়াচ্ছে ওই দু’জনের মধ্যে একজন। এই একজনকে ও চিনে। উজ্জ্বল সাহেবের বিশ্বাসযোগ্য সহযোগী শামসুল হকের ভাতিজা। মেয়েদের দেখলেই উত্ত্যক্ত করায় ঝাঁপিয়ে পড়া তার নিত্যকার রুটিন। আরেকটু সেঁটে গেল ও। প্রহরের দেওয়া সময়ের বিশ মিনিট আগেই এসে উপস্থিত হয়েছে। পরিণামে এমতাবস্থায় পড়ল। ছেলেটা ওর লম্বা ঘোমটার দিকে ঝুঁকে হাসল। সিগারেটে পোড়া ওষ্ঠে তির্যক হাসি বিচরণ করছে তখন। কণ্ঠনালি হতে মুক্ত হচ্ছে গায়ে আ*গুন লাগানো,দুমড়েমুচড়ে দেওয়া শব্দ,
‘ কিরে নিশু নাগরী ব্যাপার স্যাপার নাকি! এইখানে কী করো সোনাপাখি? অত সুন্দর কইরা নতুন বউয়ের লাহান সাইজা আইছিস ক্যান? নাগর না আসলে আমার সাথে চল। আমি কিন্তু প্রেম দিতে কিপ্টামু করমু না। ‘
‘ সুখ কী বেশি দিবি তুই? আমারে এক ঝলক দেখা তো তুই কেমন প্রেম দিতে পারবি। ‘
করপুটে জামার খানিক অংশ মুষ্টিমেয় করে পল্লব নেতিয়ে কেঁদে যাচ্ছিল নিশাত। চিরচেনা, হাস্যরসাত্মক স্বর কর্ণধারে পৌঁছাতেই ঝটপট চোখ মেলে চাইল। ভরসা খুঁজে পেল সমুখের শ্যামপুরুষের চেহারাতে। ছেলেটাও ফিরে তাকালো পেছনে। নিমিষেই নিশাত থেকে ছিটকে পড়ল। মাথা নুইয়ে সালাম দিল। বলল,
‘ কেমন আছেন ভাই?’
‘ ওরে ততক্ষণ পেটাবি যতক্ষণ না আমার আত্মা তৃপ্ত হয়। সইতে না পেরে ম–রে গেলে মাটিতে ধামাচাপা দিয়ে দিবি। কুলা**ঙ্গার বেঁচে থেকে কী করবে!’
ছেলেটা আঁতকে উঠল তৎক্ষনাৎ। তড়তড়িয়ে বলে,
‘ আমি কি কোনো ভুল করেছি ভাই?’
‘ তোকে উত্তর দিতে ইচ্ছে করছে না। ‘
প্রহরের দায়সারা জবাবে নিশাত বিস্ফোরিত নেত্রে চাইল। চাহনি আরো গভীর হলো পর পর তার রোষপূর্ণ কণ্ঠে,
‘ জাস্ট তোকে নিশুর সামনেই খু**ন করে ফেলতে ইচ্ছে করছে। কু**ত্তার বা**চ্চা তুই জানতি না ও আমার আপন হয়? জানতি না?’
অবস্থা দুর্বিষহ আঁচ করতে পেরে ছেলেটা প্রহরের পায়ের নিকটস্থে হামলে পড়ল। কমবেশি স্ট্যান্ডে উপস্থিত সকল মানুষজন জড়ো হয়ে গেল এখানটায়। বডিগার্ডদের জন্য কাছে এসে ভিড়তে অক্ষম। প্রহর বডিগার্ডদের উদ্দেশ্য করে বলে,
‘ নিয়ে যা না ভাই। আর হ্যাঁ গ্রামের কোথাও যেন এ কথা না রটে। জায়গাটা ক্লিয়ার করো। ‘
‘ ওকে স্যার। ‘
‘ কখন এসেছিস?’
নিশাত অধোমুখে জবাব দেয়,
‘ এক,,একটু আগে। ‘
প্রহর বক্র চাউনি নিক্ষেপ করল। জানতে চাইল,
‘ গলা কাঁপছে! ভয় পেয়েছিস বেশি?’
নতমুখে মাথা নাড়াল নিশাত। সাথে সাথেই চোখ উপচে নামে নোনতা পানির ঢল। প্রহর মোটেও বিচলিত হলো না। স্বাভাবিকভাবেই বলে উঠল,
‘ শিমুল,প্রত্যয়, ঊষা গাড়ির কাছে অপেক্ষা করছে,চল। চোখ মুছে নে।’
নিশাত মন্থর গতিতে হেঁটে পিছু পিছু আসল। গাড়িতে হেলান দিয়ে প্রত্যয় একমনে সামনে তাকিয়ে ছিল ভাইয়ের অপেক্ষায়। ঊষা ও শিমুল একে অপরের সঙ্গে কথা বিনিময় করছিল। ওকে দেখেই এগিয়ে আসতে চাইলে প্রহর সুপুষ্ট হাতখানা উঠিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করে মুহূর্তেই। ঊষা চরম হতাশ। শিমুল মন খারাপ করে বলে,
‘ আমরা কি এখন যেতে পারব না ভাবীর কাছে? ‘
নিশাত কিংকর্তব্যবিমূঢ়,হতভম্ব। বিদ্যুৎপৃষ্ঠের ন্যায় চমকালো সে। মস্তিষ্কের প্রতিটা নিউরন ভজকট পাকিয়ে ফেলল । ভাবী! পরক্ষণেই শুনল প্রহরের শীতল কণ্ঠ,
‘ বক্সটা এনেছিস?’
দ্রুত হাতে বক্সটা ব্যাগ থেকে বের করে বাড়িয়ে দিল ও। প্রহর হাতে নিয়ে শশব্যস্ত হয়ে আদেশ করল,
‘ আঙ্গুল বাড়া। ‘
অপ্রকৃতস্থ চাউনিতে তাকায় নিশাত। বুঝতে ব্যর্থ সে। দমকা হাওয়া এলো। ওর মন, জীবনের সব উল্টে পাল্টে গেল প্রহরের করা কাজে। ওর হাতে ঝলমল করছে একটা আংটি, যা ওর চিকন আঙ্গুলে ঢিল হলো একটুখানি। জলোচ্ছ্বাসের তীব্র ঝাপটা সামলে উঠবার প্রস্তুতি নিতে না নিতেই দ্বিগুণ হারে বাড়িয়ে দিল প্রহর,
‘ এটা আমার রাজনীতিতে আয় করা এক পয়সা দিয়েও কিনি নি। ছোট থেকে মিনি ব্যাংকে অল্প অল্প করে জমানো টাকায় কিনেছি নিশু। যার কারণে খুব বেশি বড়,ভারী না এটা। কমদামী একটা স্বর্ণের আংটি কিন্তু আমার হৃদয়ের জমানো সবকিছুর উদাহরণ। তুই আমার এটা বুঝতে কি তোর আর কষ্ট হবে ?’
নিশাত উত্তর দিল না৷ ঠকঠক করে কাঁপছে সে শ্বাসপ্রশ্বাসের বেগতিক,উন্মাতাল ক্রিয়ায়। প্রহর হাঁটুতে ভর দিয়ে কংক্রিটের পথের বুকে বসে পড়ল। হাতটা ধরে রেখেই প্রগাঢ় অনুভবের সহিত বলে,
‘ আমার হবি তিলবতী? শা*সাব,মার*ব,ঠিকঠাক আগলেও রাখব। এগুলো মেনেই কি আমাকে চাইবি আমৃত্যু? ‘
#চলবে,,,!
( ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। লিখতে লিখতে দেরি হয়ে গেল। এজন্য দুঃখিত আমি।)