#প্রেমের_উষ্ণ_ধোঁয়াতে
#লেখিকাঃ আসরিফা সুলতানা জেবা
#পর্ব___৩
গলা থেকে স্কার্ফ টা খুলে বিছানায় ছুঁড়ে মা/রতে গিয়ে থমকে গেল নিশাত। স্কার্ফ টা সম্পূর্ণ মেলে চোখের সামনে ধরল। নয়ন যুগল স্থির হলো বড়সড় ছিঁড়ে যাওয়া জায়গা টায়। স্পষ্টয়মান যে সেফটিপিনের কারণে ছিঁড়েছে। রাগে দুঃখে এবার কান্না পাচ্ছে ওর। প্রহরকে বি/শ্রী গা*লি দিতে স্পৃহা জাগ্রত হচ্ছে। মস্তিষ্ক জুড়ে কিলিবিলি করছে চিন্তা। কিন্তু ওর যে আড়ালেও প্রহর ভাইকে গা”লিগালা”জ করার সাধ্য নেই। জীবনে দু’টো মানুষকে ও ভয়ংকরভাবে ভয় পায়। প্রথমজন প্রহর ভাই,দ্বিতীয়জন ওর আপন ভাই সৌরভ। জন্মের পর বুঝ হতেই প্রহরের অত্যা/চারের ভুক্তভোগী ও। রাস্তায় পেলে কিংবা স্মরণিকা নিবাসে গেলে কথায় কথায় মাথায় মে/রে বসা, গালে থাপ্প-ড় দিয়ে শিষ বাজিয়ে প্রস্থান করা। কোনো কিছু একটু এদিক সেদিক হলে ডেকে নিয়ে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে শাসানো। নিশাতের মাঝে মাঝে তার প্রহর ভাইকে উম্মাদ মনে হয়। এক বদ সাইকো। অন্য সবার জন্য প্রহর ভাই হিরো, চকলেট, ডার্ক কফি, হট এসব হলেও ওর বেলায় কেবল, কেবলই সাইকো। সাইকো প্রহর ভাই। তিনটে বছর গ্রামে আসে নি কত শান্তি ছিল ওর রঙিন প্রাণে,জীবনে। এখন সব শান্তি মিলিয়ে যাবে হয়তো। শঙ্কায় কাটবে প্রতিক্ষণ।
মা’কে বুঝিয়ে বানিয়ে স্কার্ফ ছিঁড়ার জন্য মিথ্যে বলতে হবে। নতুন স্কার্ফ আনাতে হবে আজকের মধ্যেই। এই ছেঁড়াটা ও কখনই পড়বে না। কেন পড়বে?বাপের টাকা কি কম আছে?নামীদামী মানুষ রফিক আজমের আহ্লাদী মেয়ে সে। মা ত্যাড়া হলেও বাবা বেশ আদর করে ওকে। হতাশামিশ্রিত নিঃশ্বাস বেরিয়ে এলো নাকের ছিদ্র গলিয়ে। স্কার্ফ টা রেখে বাথরুমের দিকে অগ্রসর হতে নিলে দরজায় কড়া নাড়ে কেউ। সেদিকে পা বাড়িয়ে দরজা খুলতেই কণ্ঠনালি শুকিয়ে গেল। অস্ফুটস্বরে বলল,” ভাই?”
সৌরভ মাথা নাড়াল। সন্দেহাতীত দৃষ্টি মেলে রাখল কয়েক পল। পরক্ষণেই মুখে মৃদু হাসি এঁকে নরম কণ্ঠে প্রশ্ন করে,
” ভাইকে কি আজ নতুন দেখছিস?চমকাচ্ছিস কেন?”
নিশাত ব্যতিব্যস্ত হয়ে বলে উঠল,” চমকাচ্ছি কোথায়?তুমি তো সচরাচর আমার রুমে কারণ ছাড়া আসো না,তাই। কিছু বলবে ভাই?”
” তুই নাকি আমার রুমের সামনে থেকে দৌড়ে এসেছিস?কেন?কাঁপছিলি নাকি?”
কথায় আছে চো’রের মন পুলিশ পুলিশ। নিশাতেরও হয়েছে তা। ভেবেছে প্রহর ভাইয়ের সাথে ওকে দেখে ফেলল এটাই ভাইয়ের রাগের কারণ। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে কারণ টা অন্য কিছু। সৌরভ যা তুখোড়, তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন সহজে মিথ্যা বলে পার পাওয়া যাবে না। তবুও নিজেকে সামলে নিচু গলায় প্রতুত্তরে জানায়,
” তুমি রেগেছিলে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আর কিছু না ভাই। সত্যি বলছি। ”
সৌরভ পকেট থেকে ডেইরি মিল্কের প্যাকেট টা বের করে নিশাতের হাতে ধরিয়ে দিল। বোনের জন্য প্রতিদিন একটা করে আনে সে। আরেক জনের জন্যও আনে। সেও তার জীবনের বিশেষ কেউ। এ বাড়ির প্রত্যেক টা মানুষ জানে নিশাত কতটা চকলেট প্রেমিকা,ভালোবাসে। চলে যেতে নিয়ে কি ভেবে ঘাড় বাঁকিয়ে কৌতূহলী মনোভাব ব্যক্ত করে। জানতে চায়, ” শিমুল স্কুলে যায়?”
নিশাত যারপরনাই অবাক। ভাই শিমুলের কথা জিজ্ঞেস করছে?ওই বাড়ির মানুষগুলোর সাথে সৌরভও কথা বলে না,যায় না। মাথা উপর নিচ করে বলল,” হুম। ”
” স্কুল থেকে ফেরার সময় তোর সাথেই ফিরে?”
” হুম। ”
” তুই লুকিয়ে ওই বাড়ি যাস এটা কিন্তু আমার কানে এসেছে নিশু।”
ধ্বক করে উঠল নিশাতের বুকটা। ভাই জেনে ফেলেছে? একেই বুঝি বলে চো”রের সাতদিন গৃহস্থের একদিন। ভয়ে কুঁকড়ে গিয়ে মিনমিন করে বলে ” আমি শিমুলের জন্য যাই ভাইয়া। ”
” হুম বুঝেছি। ওইটা আমাদের ফুপুর বাড়ি। কিন্তু বাবার নিষেধ অমান্য করতে পারব না। তাছাড়া প্রহর,প্রত্যয় দুই ভাই আস্ত বেয়া/দব। রাজনীতি করে দিনকে দিন আরও ঘাড়ত্যাড়া, বখাটে হয়েছে। মনে করে সব জায়গায় চাইলেই নিজেদের পাওয়ার খাটাতে পারবে। শিমুলের জন্য গেলেও ওদের থেকে দূরে থাকবি। ঘনঘন যাস না,বাবা শুনলে তোকে কখনও ক্ষমা করবে না। শিমুলের থেকেও দূরে থাকবি পারলে। এটুকু বয়সে,,”
বলতে গিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে নিল সৌরভ। বর্ণমালারা গলায় দলা পাকিয়ে। ভেতরের রাগ, জেদ তাঁদের কণ্ঠ পথে হেঁটে বাহিরে উন্মুক্ত হলো না। আর একটাও শব্দ করল না সে। নিশাতের উৎসুক চাউনি অবজ্ঞা করে দ্রুত বেগে প্রস্থান করল। কিন্তু নিশাত চিন্তার জগতে পাড়ি জমিয়েছে। আজ এক কান দু কান করে ভাইয়ের দৃষ্টিগোচর, কর্ণকুহর হলো। ভাগ্যিস কিছু বলে নি। কিন্তু বাবা?বাবা জানলে মুখ ফিরিয়ে নিবে ওর থেকে। এদিকে ফুপুর বাড়ির প্রতি টানও যায় না।
——————
উজ্জ্বল সাহেব উত্তপ্ত মেজাজ নিয়ে ছেলের ঘরে ঢুকলেন। বাবাকে দেখেও হেলদোল হলো না প্রহরের। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে কফিতে চুমুক দিয়ে বলল,” এসব ছোটোখাটো মিটিংয়ে আগ্রহী না আমি,তাই যাই নি। আপনি রাগ করলেও কিছু করার নেই। ”
” তোরা দুই ভাই বেয়া/দবের খাতায় নামটা চিরকালের জন্য লিখিয়েছিস?আরেকটা ঢাকা শহরে এক মেয়ের পেছনে ঘুরে জীবন নষ্ট করে ফেলছে। নিজের স্ট্যাটাস ভুলে বসেছে। ও কি মেয়ে পাবে না?ওই ঢাকা ভার্সিটি পড়ুয়া মিডল ক্লাস মেয়েটাই লাগবে ওর?”
” একটা মেয়েতে যদি মনপ্রাণ সব আঁটকে যায় অন্য টা দিয়ে কি করবে?”– কথাটা বলে পুনশ্চঃ কফিতে চুমুক বসালো।
ছেলের ত্যাড়া কথাতে উজ্জ্বল সাহেব বলে উঠলেন,” তিনটে বছর পর এসে তুমিও একই পথে হাঁটছ। মাস দুয়েক পর ইলেকশন আর তুমি এসেই একটা মেয়ের জন্য ছুটে গিয়েছ। মিটিং টা করে গেলে হতো না?এসেই ওকে দেখতে হবে তোর?”
” এত বছর না দেখে থাকতে আমার কেমন অবস্থা হয়েছিল সেটা সম্পর্কে আপনার আন্দাজ নেই। কলিজা আমার পুড়েছে আপনার না। চোখের ব্যথায় আমি কষ্ট পেয়েছি নির্ঘুম রাত কাটিয়ে,আপনি না। ”
উজ্জ্বল সাহেব হতাশ হলেন। কাকে কি বলছেন উনি?সামনে উনার চেয়ারম্যান ইলেকশন সেই কারণে দু ছেলেকে ডাকা। নয়তো দু’টোকে অনেক কষ্টে শহরে আঁটকে রেখেছিল৷ সেখানে উনার বড় ভাই মেয়র পদে আছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে প্রহর হবে সামনের নেতা। কিন্তু ছোট ছেলে প্রত্যয়কে নিয়ে ভীষণ চিন্তাগ্রস্ত। মৃন্ময়ী নামের এক মেয়ের জন্য পাগলপ্রায় সে। মেয়েটাও নিজের কথায় অটল। কোনো বড়লোক বাপের রাজনীতি করা ছেলের সাথে সম্পর্ক দূর কথা বলতে ইচ্ছুক না। প্রচন্ড প্রতিবাদী মেয়েটা। বাবা ইসলামি ব্যাংকে কর্মরত। তিনি ছেলের পাগলামিতে একবার প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিলেন কিন্তু সোজাসাপ্টা সবার সামনে না করে দেয় মেয়েটা। এমনকি বলে, ” আমি ভদ্র ঘরের মেয়ে বলে আপনার ছেলের কান্ড সহ্য করছি,এমন ছেলের কাছে আমি কখনও বিয়ে বসব না। ”
না আর কথায় পারবেন না তিনি। শুধু বলে গেলেন,” রফিক আজম তোমাকে মেয়ে দিবে না আর সেই বাড়ির কোঠায় আমি ম/রার আগেও পা রাখব না। তুমি যেই খেলায় মত্ত হয়েছ তা এখুনি ইতি টানো। ”
প্রহরের জটিলতা বিহীন সিধেসাধা বাক্য, ” উঠিয়ে নিয়ে আসব। ”
এ কথার পিঠে কথা বলার উপযুক্ত শব্দ খুঁজে পেলেন না তিনি। পারবেও এই ছেলে। ডর ভয় ভিতরে নেই বললেই চলে। তবুও রফিক আজম ছেড়ে দেবার পাত্র নন। আর এ বাড়ি উনার জন্য কাল/সাপের গর্ত। সেটা তিনি গ্রামের হাটবাজারে নিজ মুখেই বলে থাকেন। এই তো গেল বাজারে বসে চা খাচ্ছিলেন এক লোক কথায় কথায় বললেন,” চেয়ারম্যান সাহেব আপনার বউয়ের ভাই আপনার নামই শুনবার পারে না,সেদিন কইল আপনাদের বিশাল বড় বাড়িটা কাল/সাপের গর্ত। আপনারা হইলেন কাল–সাপ। ”
এটা শুনে কিয়ৎক্ষণ থমথমে মুখে স্থির বসেছিলেন তিনি। পাছে আলতা কষ্ট পাবে তাই সেধে রফিক আজমের সঙ্গে ঝ”গড়া লাগতে যান না। বউকে বড্ড ভালোবাসেন। ভালোবাসার জন্যই তো এত মনোমালিন্য।
.
.
নিশাতদের বাড়িটা তিনতলা বিশিষ্ট। সামনে খোলা আঙিনা। নিচের দু’টো তলায় মানুষজন থাকলেও,উপরের গুলো খালি পড়ে থাকে। বেশ ভূতুড়ে ভূতুড়ে সবকিছু। বাড়িতে তিন চাচা,চাচী, বাবা-মা, চারজন চাচাতো বোন ও সৌরভ ভাই মিলিয়ে বসবাস। তার ছোট ফুপুও এখানে থাকেন। বিয়ের দু মাসের মাথায় বিধবা হন তিনি। তারপর আর বিয়ে বসেন নি। সেই থেকে বাবার বাড়িতেই থাকেন। রফিক আজম চেয়েছেন ছোট বোনের জীবনে আরও একবার রঙিন প্রজাপতি, ফুলের সুবাস এনে দিতে কিন্তু নিশাতের ছোট ফুপু ছিলেন নারাজ। শুভ্র জীবনকেই আপন করে নিয়েছেন তিনি। বাড়ির ডান দিকে গোয়াল ঘর,পেছনদিকে পুকুর। পুকুর পাড়ে বসেই নিশাতের দিনের অনেকখানি সময় কাটে,বলতে গেলে এটা ওর ভালো লাগার একটা অংশ।
গোধূলি লগ্ন পেরিয়েছে সেই কখন। নিশাত গলায় ওড়না ঝুলিয়ে তিড়িং বিড়িং করে এলোমেলো পা ফেলে বাহিরে এলো। এসেই দেখে ছোটোখাটো আয়োজন চলছে আঙিনায়। মাছ কাটার আয়োজন। বাড়ির ছোট বড় সব আনন্দিত চক্ষে মাছ কাটা অবলোকন করছে। ঘরের এক কোণে ঝুলন্ত বাতিটা টিমটিমে হলদেটে রশ্মি ছড়াচ্ছে আঙিনায়। সেই দীপ্তিতে রোকেয়া ও পিংকির মা মিলে তিনটে বড় বোয়াল মাছ নিয়ে বসেছেন৷ আজ দোকান বন্ধ করে বাজার থেকে বাড়ি ফেরার জন্য অগ্রসর হতেই হইচই শুনে মাছ বাজারের দিকে পা বাড়ান রফিক আজম। গিয়েই দেখলেন সন্ধ্যা বেলায় বড় বড় বোয়ালের সমাহার। বোয়াল মাছ নিশাতের খুব পছন্দের। মেয়ের পছন্দ মানে উনারও পছন্দ। মেয়ে হাসলে যেন উনার অভ্যন্তরে অনাবিল প্রশান্তির সমীরণ বইয়ে যায়। মেয়েকে দেখামাত্র রোকেয়া ভারী গলায় বললেন,
” তোর আব্বাকে চা দিয়ে আয়। ”
” আচ্ছা। ”
” শোন। ”
নিশাত মান্য, বাধ্য মেয়ের মতো করে বলল,” বলো। ”
” তোর ছোট চাচাকেও দিস। সেই বিকেল থেকে তার ঘরে বসে। ”
” আচ্ছা। ”
যেতে যেতে নিশাত ওর ছোট চাচার কথা ভাবতে লাগল। বুঝ হওয়ার পর থেকে দেখে আসছে মানুষ টা বেশ শান্ত, দৃঢ়,চাপা স্বভাবের। পুরো দিন গ্রামের প্রাইমারী স্কুলে মাস্টার হয়ে কাটায়, রাত্রির প্রহর টা নিজের সাজানো গুছানো লাইব্রেরিতে। বয়স ওনার পয়ত্রিশ কিংবা ছত্রিশ হবে। কিন্তু এত বছরের জীবনটা বড্ড একার। তিনি নিজ দায়িত্বে সঙ্গী করে নিয়েছেন বইপুস্তককে। চা বানিয়ে প্রথমে বাবার ঘরে উঁকি দিল ও। দোকানের হিসেব কষছেন তিনি। অতীব নিরবে সমুখের টেবিলে চায়ের কাপ রেখে বেরিয়ে আসল ফটাফট। হিসেবকালে বাঁধা বাবার বিরক্তির কারণ। আরেকটা কাপ হাতে নিয়ে ক্ষুদ্র কক্ষ টার সম্মুখে এসে দাঁড়াল। আস্তে করে ডাকে,
” কাকা!”
কারো স্বরনালী হতে গম্ভীর সম্মতি আসে,” ভেতরে আয়। ”
টালমাটাল পায়ে ভিতরে এসে টেবিলের ওপর কাপ টা রাখল। আগ্রহবশত একটুখানি চোখ উঁচিয়ে চাইতেই ভাসমান হয় একটা খামের ওপর লেখা ‘ নিরু ‘ নামখানি। লেখা দেখেই বুঝা গেল বেশ পুরোনো। গভীর নজর নিবদ্ধ ছোট কাকার সেই খামের ওপর লিখা নামটায়। ও আর কিছু না ভেবে বেরিয়ে আসল। আচ্ছা কে এই নিরু?কাকা কখনও বিয়ে কেন করে নি?এখনও কত সুন্দর! এখনও বিয়ে করানো যাবে। নিশাতের মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে তার রবিন কাকার জন্য সুন্দর টুকটুকে একটা টমেটোর মতোন লাল বউ আনতে। কিন্তু ভয়ে বলতে পারে না। এত বড় ঘরে একা একা ভালো লাগছে না। পুকুর পাড়ে গিয়ে বাতাস খেলে মন্দ হয় না। সেই ভেবে দ্রুত গতিতে পা বাড়াল,সাথে নিত্য সঙ্গী মোবাইলকে আনতে ভুলে নি। পায়জামা কিঞ্চিৎ গোড়ালি থেকে উপরে উঠিয়ে ঘাটে বসে পানিতে পা ডুবিয়ে দেয়। মোবাইল টা হাতে নিয়ে মেসেঞ্জারে ঢুকল। শিমুলকে মেসেজ লিখল একটা,” বড় বিল পেরিয়ে কাল কাশবাগানে যাবি? ”
রিপ্লাই আসার আগেই নাসারন্ধ্রে সিগারেটের উদ্ভট বিশ্রী গন্ধ এসে ঠেকল। ঘাড় বাঁকিয়ে চাইতেই তীব্র গতিতে ছুটতে আরম্ভ করে হৃদস্পন্দন। কণ্ঠনালি ভেদ করে আসে,” প্রহর ভাই! ”
প্রহর হাতের সিগারেট টা ফেলে জুতা দিয়ে চেপে ধরল। গায়ের জ্যাকেট টা খুলে হাতে নিয়ে আদেশমূলক বাক্য ছুঁড়ে মা”””রে,” এদিকে আয়। ”
ভীতু নেত্রে চেয়ে চেয়ে নিশাত ঘাট ছেড়ে উপরে ওঠে আসে। আসতেই হাতের ছোট শপিং ব্যাগ টা ওর হাতে দিয়ে প্রহর ভ্রুঁ যুগল কুঞ্চিত করল। এক হাত দূরত্ব নিঃশেষ করে অকস্মাৎ চলে এলো অতি নিকটস্থে। বক্ষস্পন্দন প্রায় থমকে গেল ওর। প্রহর আলতো ঝুঁকে পড়ল ওর গলার কাছটায়। সর্বাঙ্গে তপ্ততা ছড়িয়ে পড়ে দ্রুতবেগে। খুব করে বলতে চায়,” প্রহর ভাই, ”
” চুপ। গায়ে লোশন মেখে এসেছিস,রাতের বেলায় সেজেও আছিস। কার জন্য? ”
নিশাত জবাব দিল না। চোখ মুখ কুঁচকে কম্পনরত কণ্ঠে পাল্টা প্রশ্ন করে,” আপনি এখানে কি করছেন?”
প্রহর হাসল। নিঃশব্দ হাসি। কাঠ কাঠ গলায় উত্তরে জানাল,” চুমু খেতে এসেছি। ”
#চলবে,,!
( ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)