#প্রেমের_উষ্ণ_ধোঁয়াতে
#লেখিকাঃ আসরিফা সুলতানা জেবা
#পর্ব___১৫
প্রহর হালকা ভেজা তোয়ালেটা আনল বাথরুম থেকে। নিশাত তখনও বিছানায় শুইয়ে আছে। এতটা সময় প্রহরের অর্ধ উদোম দেহটা ছিল তার ওপর। দেহ দু’টোর দুরত্ব ছিল, ছুঁয়ে দেয় নি তবুও বিনা স্পর্শে সমগ্র দেহ শিউরে উঠছিল বার বার। ভয়ে এখনো হৃৎপিণ্ডের লাব ডাব, লাব ডাব শব্দ ক্রমাগত বাড়ছে। উঠতে পর্যন্ত পারছে না। চিকন শরীরটা ভয়ের ঠ্যালায় কমজোর হয়ে পড়েছে। প্রহর নিঃশব্দে ওর হাত দুটো শক্ত করে ধরে একত্রে করে নিল। কব্জিতে ক্ষীণ ব্যথা অনুভূত হলো ওর। তবুও চুপসে রইল সে। তোয়ালে দিয়ে হাত বাঁধতে দেখে কণ্ঠস্বর কাঁপল,
‘ কি করছেন?’
‘ চুপ। ‘
সশব্দে ধমকে উঠে প্রহর। কণ্ঠে ক্রোধ, ঝাঁঝ। নিশাতের অন্তঃপুরের অবস্থা শোচনীয়। চোখ থেকে ফটাফট অশ্রু গড়াতে লাগল। কাজল লেপ্টে গেল। মাথার ক্রাউন সরে গিয়ে চুল এলোমেলো। প্রহর হাত বেঁধে টেনে উঠে বসাল ওকে। বলল,
‘ তোর জন্যই আমার মেজাজের গতিবিধির পরিবর্তন হয়। তোর জন্যই মুড নিয়ন্ত্রণে থাকে না। তোর জন্যই তিন বছর আগে বার্থডে সেলিব্রেট করা বন্ধ করেছি। এখন তুই এসেছিস ঊষার কথায় সেজেগুজে আমাকে উইশ করতে? জুতা মে””রে গরু দান? একদম কাঁদবি না। ‘
দশম শ্রেণী পড়ুয়া গ্রামে বড় হওয়া নিশাতের আজও তেমন বুঝ হয় নি। তবে এটা অনুধাবন করল প্রহর ভাই একটুও বদলায় নি,আগের মতোই নি””ষ্ঠুর ওর সাথে। কান্না বন্ধ করতে গিয়ে আরো বাড়ল। আওয়াজবিহীন, নিঃশব্দে গাল ভিজিয়ে গলা বেয়ে বুকে এসে ঠেকছে অশ্রুবিন্দু। প্রহর ফের চাপা গর্জন করে,
‘ কাঁদলে শা””স্তি দ্বিগুণ হয়ে যাবে নিশু। চুপ,চুপ। আমি খারাপ জানিস না? তোকে সহ্য করতে পারি না আমি। তোদের বাড়িতে গেলে মামু অপমান করে। তোর মুখ দেখলে মামুর মুখ মনে হয়,তাই তোকে অসহ্য লাগে। আবার তিন ফুটের শরীরে একটা ডাবল সাইজের গাউন পড়েছিস। বি*শ্রী লাগছে দেখতে। ‘
নিশাত নাক টানছে। পা*গল লাগছে তার প্রহরকে। এত সুন্দর করে সেজেগুজে এসে উইশ করার পর কেউ এমন ব্যবহার করতে পারে! থাকবে না ও এখানে। অনেক কষ্টে বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। মাথা নুইয়ে রেখে কম্পনরত গলায় বলে,
‘ আম,,আমি চলে যাব। ‘
‘ যা। ‘
নিরলস,স্থির কণ্ঠস্বর। মস্তিষ্কে আগুন জ্বলছে প্রহরের। সাহস কি করে হলো এই মেয়ের এত সেজেগুজে আসার! নিশাত বাঁধা হাত নিয়ে ভারী গাউনে ধীরস্থির পায়ে হাঁটছে। ফিরে একবার প্রহরের দিকে তাকায়। ঠোঁট ভেঙ্গে কান্না আসছে। অল্পতেই বড্ড আ ঘাত পেয়েছে ওর অপরিপক্ক মনটা। জ্ঞান, বুঝ ধ্যানও তো পুরোপুরি হয় নি ওর। সবে যখন হওয়া শুরু তখন থেকেই প্রহরের দ্বারা রীতিমতো অত্যা-চারিত হয়ে আসছে। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে দেহটা টেনে সিঁড়ি বেয়ে সদর দরজায় এসে থমকে দাঁড়ায়। আরেকটু হেঁটে গেইট অব্দি আসে। দারোয়ান ওকে দেখে গেইট লাগিয়ে দেয় সাথে সাথে। বিনয়ী আচরণ করেন। বলেন,
‘ আপনি যেতে পারবেন না। ‘
ছোট ছোট আকৃতির চোখ দু’টো লাল নিশাতের। কিশোরী মন জেদ দেখিয়ে বলে,
‘ আমি চলে যাব। গেইট খুলে দিন। ‘
‘ আপনাকে যেতে দিতে নিষেধ। ‘
‘ কে মানা করেছে? ‘
‘ আমি। ‘
পেছন থেকে চেনা স্বর শ্রবণগ্রন্থিতে পৌঁছাতেই তড়াক করে ঘাড় ফিরিয়ে দেখে প্রহর। খালি শরীরেই চলে এসেছে। নির্লজ্জ লোক। সামনের দিকে পা বাড়াতেই প্রহর ওকে কোলে তুলে নিয়ে সোজা হাঁটতে শুরু করল। নির্বাক,স্তব্ধ সে। নড়ল না। যা মর্জি হয় করুক, কথা বলবে না ও। রুমে এনে ওকে বিছানায় বসিয়ে বলে উঠল,
‘ তুই যেতে পারবি না। আমার মন ঠিক হয়েছে, শা-স্তি দেবো না তোকে। আমি যেহেতু এনেছি, রক্ষা করা আমার দায়িত্ব। আমাকে আমার কর্তব্য পালন করতে হবে৷ রাজনীতিবিদের কর্মই জনগণের সেবা করা। সেই হিসেবে তুইও সেবার অন্তর্ভুক্ত। ‘
নিশাত নিশ্চুপ থাকবে বলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে। চোখ ফুলে গিয়েছে তার। প্রহর বেড সাইডের টিস্যু বক্স থেকে টিস্যু নিয়ে ওর কাছে আসল। চিবুকে আঙ্গুল চেপে ধরে ফ্যাকাসে মুখশ্রীটা তুলে ধরে নিজের দিকে। দুই জোড়া চোখের মিলন ক্রিয়া ঘটতে ঘটতে অসমাপ্ত থেকে যায়। শানিত চাহনিতে চোখ রাখতে পারে না নিশাত। চক্ষুদ্বয় নিমীলিত হয়ে আসে তৎক্ষনাৎ। শ্যাম পুরুষের রোষপূর্ণ চাহনি ওর নরম হৃদয়স্থে গভীর দাগ কাটে। প্রহর টিস্যু দিয়ে গালের কালি মুছে দিয়ে বলে,
‘ তুই সাধারণ থাকলে আমার খারাপ লাগে,অসাধারণ হলে আরো বেশি খারাপ লাগে। সবদিক থেকে তুই আমার খারাপ করিস,তাই আমি তোকে বাঁচাতেই তোর সাথে খারাপ করতে হয়। ‘
নিশাত এরকম রহস্যজনক কথার মানে ধরতে পারে না। নিরবতা ভঙ্গ করে তীব্র অভিমান, ব্যথা নিয়ে দৈবাৎ বলে উঠে,
‘ আমি পিংকির কাছে যাব। ‘
প্রহর তোয়াক্কা করল না। উৎফুল্ল গলায় জিজ্ঞেস করে,
‘ খালি হাতে উইশ করতে চলে এলি,কেক কই?’
‘ ঊষা আপুর কাছে। ‘
বালিশের পাশ হতে মোবাইলটা নিয়ে প্রত্যয়কে কল লাগাল প্রহর। রিসিভ হতেই হ্যালো বলাতে সময় নষ্ট করল না। বরং এক বাক্যে আদেশ করল,
‘ কেক টা নিয়ে আমার রুমে আয়। ‘
ঊষা ছাঁদের উপর থেকে নিশাতের কান্নামুখ,ভাইয়ের কান্ড দেখেছে। প্রত্যয়ের সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসে। ওর পেছন পেছন আসে আরুশি, তুবা,নাহিদ সকলে। দরজার সম্মুখে ভিড় জমায় সবকটা। ওই তো অপরা-ধীর ন্যায় বিছানায় বসা নিশাতকে দেখা যাচ্ছে। ঊষার মনে বিষন্নতাদের প্রবেশ হয়। সে ভেবেছিল নিশাতের প্রতি ভাইয়ের দুর্বলতা আছে,নিশাতকে মানবে কিন্তু হলো তার ব্যতিক্রম। মেয়েটার কি হাল করেছে! মায়া হয়। প্রহর গায়ে টি শার্ট জড়িয়ে ভুরু কুঁচকে তাকায়। স্বাভাবিক কণ্ঠেই বলে,
‘ কেকটা রেখে যা প্রত্যয়। ‘
কেকটা রেখে প্রত্যয় করুণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করল নিশাতের দিকে। অনুমতি চায়,’ নিশুকে নিয়ে যাই ভাই?’
জবাব আসে,’ ও এখানেই থাকবে,তোরা যা। ‘
নিমিষে নিশাতের ঠান্ডা কণ্ঠ শুনে প্রত্যয়,’ আমাকে নিয়ে যাও ভাইয়া। ‘
‘ তুই এখন এই রুম থেকে বের হলে সুস্থভাবে গ্রামে ফিরতে পারবি না৷ তুই যা প্রত্যয়। ‘– শান্ত গলায় থ্রে/টমূলক বাক্য।
প্রত্যয় বেরিয়ে এসে ঊষার ওপর চিৎকারের মেলা জুড়ে দিল। রেগেমেগে আগুন সে, ‘ তোকে কতবার বলেছি এটা কোনো মজা না। তিন বছর আগে কোনো মজার ঘটনা ঘটে নি ঊষা। ভাইকে নিজের চরিত্রে দাগ বহন করতে হয়েছে। চরিত্রে দাগ লাগলে কেমন লাগে সেটা যার সাথে ঘটে সেই বুঝে। নিশুকে পাঠিয়ে ভুল করেছিস। আমি তোকে নিষেধ করেছিলাম। ‘
ঊষা সূক্ষ্ম নিঃশ্বাস ছেড়ে দিয়ে নিজের রুমে চলে যায়। ভুলটা ওরই। ভাবে নি প্রহরের জন্মদিনের প্রতি অগাধ জেদের জন্য নিশাত জড়িত। সেই মেয়েটাও তো জানে না।
.
.
প্রহর ড্রয়ার থেকে বড়সড় একটা ছু রি বের করে। নিশাতের গলা শুকিয়ে এলো সেই দৃশ্য চক্ষু আয়নায় আঁটকাতেই। প্রহর ভাইয়ের ওপর তার আর কোনো বিশ্বাস অবশিষ্ট নেই। এই মেঘ,এই বৃষ্টি টাইপ অবস্থা লোকটার। উত্তেজিত হয়ে বলল,
‘ আমি যাব না প্রহর ভাই। এখানেই থাকব,সারারাত থাকব।’
প্রহর চেয়ার টেনে কেকটা হাতে নিয়ে ওর মুখোমুখি বসল। ছু রি দিয়ে কেকটা কেটে এক পিস নিশাতের লাল ওষ্ঠযুগলের সন্নিকটে ধরে প্রশ্ন করে,
‘ সারারাত থেকে কি করবি? তুই সারারাত থাকলে আমি চরিত্রহীন হয়ে যাব। থাকতে পারবি না তুই। কেক খা। ‘
নিশাত বিস্ময়াবিষ্ট। প্রহর ভাইয়ের ওপর নয়,নিজের ওপর। প্রহর ভাই সর্বদা উল্টাপাল্টা বলেন কিন্তু ওর কেন অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে? প্রহর ভাই চোখ রাঙালেও তার কান্না চলে আসে,একটু নরম হয়ে কথা বললে শান্তি লাগে। এই মানুষ টা সবসময় তার সাথে নরম ব্যবহার করলে এত ভয় পেতে হত না ওর। কিন্তু ওকে কাঁদাতে, মা*রতে,বকতে,অপমা*ন করতেই ভালোবাসে। ভীষণ ভালোবাসে। এটাই কঠিন, নির্ম””ম সত্য।
‘ খাব না। ‘
‘ কেন খাবি না? ‘
নিশাত খানিকক্ষণ ভেবে উত্তর দেয়,
‘ যার জন্মদিন সে আগে খায়। ‘
‘ আমার মতো বুড়োলোকের আবার কিসের জন্মদিন? ‘
নিশাত হতবিহ্বল হয়ে জিজ্ঞেস করে,
‘ আপনি বুড়ো?’
‘ তোর কি আমাকে জোয়ান লাগছে?’
‘ বুড়ো হলেন কীভাবে?’
‘ মহানন্দ গ্রামের রফিক আজম নামের এক বুড়ো আমাকে বলেছে তার মেয়ের তুলনায় আমি বুড়োলোক। তাই ভাবছি তোর জন্য কচি দেখে একটা ছেলে দেখব। ফুপাতো ভাই হয়ে মামাতো বোনের বিয়ের দায়িত্ব না নিলে জীবন বৃথা। ‘
নিশাত কিছু বলতে নিবে প্রহর ওর মুখে কেক ঢুকিয়ে দিল৷ শুধু এটুকু না৷ একের পর এক কেকের পিস খাওয়াতে শুরু করে। মেয়েটা ঢোক গিলে বলে,
‘ প্রহর ভাই, আর খাব না। আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। ‘
‘ তুই খাবি। আমি কেক খাই না। টাকা দিয়ে কিনে এনে নষ্ট করার কোনো মানে হয়? আমি তোর জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে আসব৷ ‘
‘ পেট ব্যথা করছে। ‘
‘ ওষুধ কিনে দেবো। ‘
‘ আর খেলে বমি চলে আসবে। ‘
‘ বমি হলে হবে। ‘
নিশাত উপায়ন্তর না পেয়ে বাঁচার জন্য ভ”য়ংকর এক ঘটনা ঘটালো। মুখ গুঁজে দিল প্রহরের বুকে। কেক টা পড়ে গেল মেঝেতে। খাবে না আর সে। বুকে মুখ গুঁজে রাখলে কীভাবে খাওয়াবে প্রহর ভাই? অধর জোড়া লুকিয়ে রাখল অতি সন্তর্পণে বুকে। প্রহরের ভারী কণ্ঠ শোনা যায় তক্ষুনি,
‘ যুদ্ধ লাগিয়ে দিয়েছিস তুই নিশু। ‘
যুদ্ধ লাগলে লাগুক,মুখ আর তুলবে না ও। প্রহরের বদ কান্ড থেকে রক্ষা পেতে এছাড়া আর রাস্তা খোলা দেখতে পায় নি সে। চারদিকে কেবল ছিল অন্ধকার।
————————–
খাবার টেবিলে মোশতাক সাহেবের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় নিশাতের৷ ফর্মালিটি ব্যতীত বাড়তি কোনো কথা বের হলো না উনার মুখ থেকে। এতে আহত অনুভব করে ও। তার আসাটা বোধহয় উনার পছন্দ হয় নি। আবার হতে পারে উনি অল্পভাষী। মন্ত্রী মানুষ, গম্ভীর গম্ভীর ব্যাপার টা জায়েজ। রাতে আর কি হয়েছিল তার মনে নেই। সকালে নিজেকে নিজের রুমেই পায়। শিথানের পাশে বসা ঊষার দেখা মিলে ঘুমে ভরপুর চোখ দু’টো মেলে ধরতেই। বার কতক অপরা-ধীর ন্যায় ক্ষমা চেয়েছে ঊষা। তার বেশ লজ্জা লাগছিল ঊষার এভাবে ক্ষমা চাওয়ায়।
প্লেটে দেওয়া দু’টো রুটি থেকে একটু একটু ছিঁড়ে নিয়ে মুখে তুলছে,সাথে কিচ্ছু নেই। খাবারে বেশ অনীহা কাজ করছে,মনের হাল ভালো না মেয়েটার। থেকে থেকে প্রহরের বক্ষে ঠোঁট গুঁজে দেওয়াটা মনে পড়ছে শুধু।
মোশতাক সাহেব প্রত্যয়ের সাথে মিটিং নিয়ে কথা বলার এক পর্যায়ে জিজ্ঞেস করলেন,
‘ প্রহর উঠেছে? ‘
প্রত্যয় নম্র স্বরে প্রতুত্তর করল,
‘ভাই ঘুমাচ্ছে। ‘
‘ ওকে একটু ডেকে দিলে ভালো হতো। রাতে কথা বলতে পারি নি,আর্জেন্ট কথা আছে। ‘
‘ আচ্ছা আমি যাচ্ছি। ‘
‘ নাস্তা শেষ করে যাও। ‘
ঘুম ঘুম চোখ নিয়ে হাজির হয় প্রহর। টেবিলের উপর থেকে আপেল নিয়ে একটা কামড় বসাল। মোশতাক সাহেব পেপারে চোখ বুলিয়ে একটা পেইজে এসে থামলেন। চিহ্নিত করে একটা অংশ দেখিয়ে বললেন,
‘ এই মেয়ে তোমার রাজনীতিতে বিশাল অবদান রাখবে। শ–ত্রুপক্ষের মেয়ে বলে কথা। তাছাড়া প্রস্তাব টা তোমার প্রতিপক্ষ নিজেই রেখেছেন। দিস ইজ অ্যা গোল্ডেন অপরচুনিটি ফর আস। ‘
প্রত্যয় কথার মাঝে ফোঁড়ন কাটে,
‘ একটা মেয়েকে টার্গেট না করলে হয় না?’
‘ মেয়েকে টার্গেট করা হলো কোথায়? সে আমার বউ হতে যাচ্ছে। ‘— সোজা কথা প্রহরের।
মোশতাক সাহেব বললেন,’ দেখা করতে যাচ্ছ তাহলে?’
প্রহর চেয়ারে বসে ঊষাকে এক কাপ কফি দিতে বলল। নিশাতের প্লেট থেকে একটা রুটি নিয়ে নিল নিজের প্লেটে। নিশাত হতভম্ব। সামনে দশ থেকে বারোটা রুটি রাখা অথচ ওর থেকেই নিতে হলো! প্রহর ডালভাজি নিতে নিতে বলল,
‘ যাব,বিকালে। নিশুকে নিয়ে যাব সাথে। ‘
‘ ও কেন যাবে?’
মোশতাক সাহেব অবাক হলেন। নিশাতকে প্রহরের রাজনীতির পথের কাটা মনে হয় তাঁর। তিনি চান প্রহর বড় হোক,রাজনীতিতে রাজত্ব করুক। প্রহর মুখের খাবার টা গিলে তেজহীন দৃষ্টি নিবদ্ধ করে মোশতাক সাহেবের দিকে। বলে,
‘ ফুপাতো ভাইয়ের হবু বউ দেখতে। ‘
নিশাত এক দুঃসাহস করে বসল। গলা উচাঁলো একটুখানি,
‘ আমি যাব না৷ ‘
সহসা কথার পৃষ্ঠে শুনতে হলো,
‘ তুই বউ না দেখতে গেলে আমি বিয়ে করব না। আমার বিয়ে না করার দায় মাথায় নিতে হবে তোর। ‘
নিশাতের চিল্লিয়ে বলতে মনস্পৃহা জাগে,’ আপনি বিয়ে না করলে আমার কী প্রহর ভাই? আপনি বিয়ে করলেই বা কী? আমার কেন মন খারাপ লাগছে?’
#চলবে,,,!
(ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)