#প্রেমময়নেশা(The Story of a psycho lover)
#পর্ব-৩০+৩১(লন্ডনে প্রবেশ)
#Jannatul_ferdosi_rimi(লেখিকা)
কাল-পরশুর মধ্যেই আমার লন্ডনের ফ্লাইট। সবাই আমার জন্য অনেক খুশি।কিন্তু আমার মধ্যে তেমন কোনো ইন্টারেস্ট নেই।মা ও সুমু আমার সাথে মিলে আমার ব্যাগ গুছাতে সাহয্য করছে। তখনি কলিংবেল বেজে উঠে। মা বলে উঠলো—এখন আবার কে এলো?? সুমু বলে উঠে- আমি দেখি কে এসেছে। সুমু গিয়ে দরজা খুলতে যায়। মা বলে উঠলো- তুই কি এই বিলাইটা কেও অইখানে নিয়ে যাবে।
টকোপির মতো ভদ্র বিড়াল ছানাকে এইরকম বিলাই বলাতে টকোপি বোধহয় মন খারাপ করেছে। আমি টকোপিকে কোলে নিয়ে আদর করতে করতে বলে উঠলাম- মা বিলাই কি ভাষা? ওর নাম টকোপি।
মাঃ বিলাই তো বিলাই
তখনি সানা প্রবেশ করে।
আমি তাড়াতাড়ি গিয়ে সানা আপুকে জড়িয়ে ধরলাম।
রিমিঃ আমাকে বুঝি তোমার মনে পড়েনা??
সানা আপু??
সানাঃ তোমাকে মনে না পড়লে কাকে পড়বে বলতো??
তুমি তো আমার জুনিয়ার ভাবি।
কথাটা শুনেই আমার মন খারাপ হয়ে গেলো।
সানা রিমির অবস্হা বুঝতে পেরে কানে হাত দিয়ে বলে উঠলো-
সরি।
আমি বলে উঠলাম- কোনো সরি না। আমি তো তোমার জুনিয়ার ভাবিই। তোমার ভাই ঠিক ফিরে আসবে।
তখনি কাব্য কেঁদে উঠলো। সানা বলে উঠলো-
সুমু আপু আর ফারহান ভাইয়ার ছোটু না??
আমি বলে উঠলাম- হুম কাব্য আমাদের সুমু আর ফারহান ভাইয়ার ছেলে।
সানা কাব্যকে নিয়ে আদর করে যাচ্ছে।
সানাঃ হুম শুনেছি খালামনি(মিসেস কলির)কাছ থেকে শুনেছি। আমিও ভেবেছিলাম হসপিটালে যাবো কিন্তু আমার এক্সাম চলছিলো তাই।
সুমুঃ বাহ কাব্য দেখি সানার সাথে একেবারে মিশে গিয়েছে।
আমি বলে উঠলাম- তোমার ছেলে যা সহজে কারো কাছে যায়না।
সানা আপু বলে উঠলো- বাচ্চা সবসময় আমার পছন্দ।।
তখনি ফারহান প্রবেশ করলো।
ফারহান ঃ শালিকা সাহেবা কতদুর।
ফারহানকে দেখে সানার বুকেত ভিতর মচর দিয়ে উঠলো। যতই হোক ফারহানকে ভালোবাসতো সে। কিন্তু বলা হয়নি। থাক না কিছু না বলা কথা। ফারহান সুখে থাকুক তার স্ত্রী ও সন্তান কে নিয়ে।
সানা কে দেখে ফারহান বলে উঠলো-
আরে সানা তুই? কেমন আছিস??
সানা বলে উঠলো- ভালো আছি ফারহান ভাইয়া।
জুনিয়ার ভাবির সাথে দেখা করতে এসেছি। ভাবি তো অই বাড়িতে যাই না।
ফারহানঃ ওহ।
আমি বলে উঠলাম- অনেকে পছন্দ করেনা। তাও ভালোমার জন্য যাই। আজকেও যাবো ভালোমার কাছে। কালকে তো ফ্লাইট। সানা আপু আমি তো কয়েকদিন দেশে থাকবো না তুমি কয়েকটা দিন ভালোমার সাথে থেকো
সানাঃ আচ্ছা।
(আসলে ভালোমাকে একা রেখে যেতে ইচ্ছা করছেনা। সানা আপু থাকলে একটু ভরসা পাবো)
।।।।
আমান বই গুলো গুছিয়ে নিচ্ছে। আমানের বোন ছোয়া রান্না ঘর থেকে এসে বলে উঠে-
ভাইয়া তোমার গুছানো শেষ??
আমানঃ হ্যা রে তেমন একটা নেই।
আমার শুধু তোকে নিয়েই চিন্তা হচ্ছে। তুই কীভাবে থাকবি??
ছোয়াঃ ভাইয়া এর আগেও তো তুমি কতবার গিয়েছো।
আমানঃ কিন্তু তখন তুই হোসটেলে ছিলি। এখন এতো বড় বাড়িতে কীভাবে থাকবি??
ছোয়াঃ আমি পারবো ভাইয়া!
(আমান তাও নিজেকে শান্ত রাখতে পারেনা আদরের ছোট বোন তার বাবা-মা কেউ নেই বেঁচে এই বোন তার সব)
আমানঃ নিজের খেয়াল রাখবি।
ছোয়াঃ তুমি আমাকে নিয়ে চিন্তা করোনা আমি নিজের খেয়াল রাখবো।
।।।।।??
ভালোমাকে সুপ খায়িয়ে দিচ্ছি আমি।
আমি বলে উঠলাম- আমি কিন্তু চিন্তায় থাকবো!!
তুমি ঠিক মতো মেডিসিন নিবে।
ভালোমাঃ এইযে তুইও আবারো ডাক্তারি শুরু করে দিলি। এতো চিন্তা করিস কেন?? তুই ভালোমতো লন্ডনে যা এবং ভালোমতো ফিরে আয়।
আমি বলে উঠলাম- নিশ্চিন্ত থাকতে বললে তো আর থাকা যায়না ভালোমা। এই বাড়িতে যে তোমার খেয়াল এক্টুও রাখা হয়না।
ভালোমা আর কিচ্ছু বলল না।
আমি বলে উঠলাম– সানা আপু থাকবে।
ভালোমাঃ চিন্তা করিস না তো। সাবধানে যাহ।
তখনি রুশনি এসে বলে উঠলো-
শুনলাম তুমি নাকি বিদেশে যাচ্ছো??
রিমিঃ হুম
রুশনিঃ সবার সামনে যে অয়নের শোকের নাটক টা করো সবার থেকে সিম্পেথি পেতে এখন সব শেষ??
ভালোমাঃ কি বলতে চাস??( রেগে)
রুশনিঃ বলছি যে অয়নের জন্য এতোই যখন কস্ট তাহলে লন্ডনে যাচ্ছো কেন??।
।
আমি বলে উঠলাম–
যদি উনাকে সেখানে পেয়ে যাই বলতে পারেন সেই আশায়৷ আর সিমপেথি অন্তত আমাকে পেতে হয়না।
ভালোমা মুচকি হেঁসে দেন।
রুশনি মুখে ভেংচি দিয়ে চলে যায়।
।।।।।।
আমি ভালোমাকে জড়িয়ে ধরি।
।।।।।।।
আমরা বাকি সব স্টুডেন্টসরা চলে এসেছি এয়ারপোর্টে। ফারহান ও সুমু ও এসেছে। কাব্য বাসায় তার দাদুর সাথে।
বাবা আম্মু আমাকে সব বুঝিয়ে দিচ্ছে। সানা ও ভালোমাও এসেছে।
ভালোমাঃ সাবধানে থাকবি কিন্তু!!
আমি বলে উঠলাম–ভালো মা এই শরীর নিয়ে আসতে গেলে কেন??
ভালোমাঃ আমার মেয়ের জন্য এসেছি।
মাঃ আমরা কিন্তু চিন্তায় থাকবো।
বাবাঃ আমাদের ফোন করবি রে মা।
তখনি আমান গাড়িতে নামতে নামতে বের হলো।
আমি ছাড়া বাকি মেয়েরা হা হয়ে রয়েছে।
ভালোমাঃ অইতো আমান চলে এসেছে।
আমানঃ আসসালামুলাইকুম!!
সবাইঃ ওয়াইকুমুসসালাম!
ফারহানঃ আমার বন্ধ্র এসে পড়েছে এখন সমস্যা নেই।।
মাঃ আমান বাবা তোমার ভরসায় কিন্তু মেয়েটাকে ছাড়ছি
ভালোমাঃ রিমির খেয়াল রাখিস বাবা।
আমানঃ আপনারা আমার উপর ভরসা রাখতে পারেন(মুচকি হেঁসে)
বাবাঃ সে তো আমাদের আছেই (নিঃশ্বাস ফেলে)
সুমুঃ এখন কি শুধু্ই কথা বললে হবে??
ফ্লাইট এর টাইম হয়ে যাচ্ছে তো।
সবাইঃ হ্যা!!
।।।।।।
In london,,
আয়ুশ বাস্কেট বলটা নিয়ে সিড়ি থেকে নামতে থাকে।
নিদ্র ও মল্লিকা ব্রেকফাস্ট করছে।
আয়ুশ সবাইকে বলে উঠে–গুড মর্নিং!!
সবাই ঃ গুড মর্নিং!!
তখনি ইশান হাই তুলতে তুলতে নিচে নামে।
নিদ্র বলে উঠে–
আমার ছোট ছেলে ওয়াও!!
সকালে এতো বড় সারপ্রাইজ (মজা করে)
ইশানঃ বাপি তুমিও না!!
নিদ্রঃ তা কি করবো বলো??
তোমাকে তো পাওয়াই যায়না।
মল্লিকাঃ ছেলেটা ব্রেকফাস্ট করছে।এইসব না বললে কি নয়।
নিদ্রঃ ওকে ওকে!!
আয়ুশঃ তা তুই কি সবসময় নাইট ক্লাব নিয়েই থাকবি?? কাল কিন্তু তোদের হসপিটালের
বড় কনফারেন্স
(ইশান একজন নাম মাত্র ডক্টর)
নিদ্রঃ কাকে কি বলছো?
সে কি জানে?? সে একজন ডক্টর।
নাহ সারাদিন নাইট ক্লাব।।
ইশান রাগ দেখিয়ে বলে–
আমার মনে হয় ব্রেকফাস্ট করাই ভুল হয়েছে।
ইশান চলে যায়।
আয়ুশ জানে এইসব এ হবে। তাই সে ব্রেকফাস্ট
করতে থাকে।
।।।
মল্লিকাঃ এইরকম না করলে কি হতো না???
নিদ্র ঃ আয়ুশ বেটা।
আয়ুশঃ হুম বলো বাপি!!
নিদ্রঃ তুমিও কি এইভাবে ঘুড়ে বেড়াবে।
তুমি অন্তত অফিসে জয়েন করো।
মল্লিকাঃ আহা! এখন তো একটু করবেই নাকি।
নিদ্রঃ তুমি চুপ করো। কয়দিন পরে আয়ুশের বিয়ে।
ইশার বাবা-মা নিশ্চই বেকার ছেলের সাথে তাদের মেয়ের বিয়ে দিবেনা
মল্লিকাঃ আমাদের যা আছে তা দিয়ে তার আজীবন বসে খেতে পারবে ডার্লিং!!
আয়ুশঃ সবাই প্লিয শান্ত হও! আমি রাজি ওকে??
বাট কাল বা পরশু!!
এই বলে আয়ুশ বাস্কেট বলটা নিয়ে সিল্কি চুল গুলো
সরিয়ে চলে যায়।
।।।।।
(লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)
এদিকে।।
আমি সবাইকে বিদায় দিয়ে প্লেনের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। মনটা খারাপ লাগছে। এতোদুর সবাইকে রেখে সত্যি মন মানছেনা। আচ্ছা উনি যদি এসে আমাকে না পায় তখন। সাহস হচ্ছেনা মনে হচ্ছে আমার না যাওয়াই ভালো হবে। এই বলে আমি যেতে নিলে।
আমান খপ করে আমার হাত ধরে ফেলে বলে উঠে-
কোথায় যাচ্ছো???
আমি বলে উঠলাম- আমার মনে হচ্ছে যাওয়া ঠিক হবেনা!!
উনি যদি।
আমানঃ প্লিয রিমিপাখি একটু বুঝো। যদি সত্যি তোমার সাইকো ফিরে সে ঠিক লন্ডনেও পৌছে যাবে।
আমি কিছু না বলে চুপ হয়ে রইলাম। টকোপি আমানের সাথে ঘুড়ঘুড় করছে।
টকোপিও যাবে আমার সাথে।
মন খারাপ করে বসে পড়লাম!! প্লেন চলতে শুরু করলো।
টকোপিকে কাছে ডাকলাম কিন্তু না সে আমান স্যার এর সাথেই থাকবে।
মনে হচ্ছে কত দিনের চেনা তাদের আল্লাহ।
আমানঃ( সত্যি আমার পাখিটাকে বুঝানো অনেক কস্টকর। শেষ পর্যন্ত যেতে রাজি হয়েছে এইটাই অনেক)
।।।।।
আয়ুশ কিছু একটা গভীরভাবে ভেবে চলছে।
আদি এসে বলে উঠে–
কি ভাবছিস রে??
আয়ুশঃ পরশু দিন ম্যাচ!!
আদিঃ হুম জনি কিন্তু সহজে ছেড়ে দিবেনা।
আয়ুশঃ জিতার জন্য বদটা সব করতে পারে।
আদিঃ আমাদের আয়ুশ বাবুকি কম নাকি।
আয়ুশ কিছু একটা ভেবে বাঁকা হাঁসি দেয়।
—আমরা সবাই এয়াপোর্ট এ নেমে পড়লাম।
লিসা বলে উঠলো-
ওয়াও লন্ডন আমার তো বিশ্বাস-ই হচ্ছেনা
আরেকজন বলে উঠলো-
আমারও বিশ্বাস হচ্ছেনা।।
আমানঃ কিন্তু এইটাই সত্যি!!
কিন্তু এদিকে আমার এক অন্যরকম ফিলিং হচ্ছে কিন্তু এমন কেন হচ্ছে আমার সাথে জানিনা আমি।
এই অনুভুতির নাম কি???
আমান রিমিকে এইভাবে দেখে বলে উঠলো-
কি হয়েছে রিমিপাখি?? এনি প্রব্লেম??
আমি বলে উঠলাম- নাথিং এলস!!
বাকি সবাই নিজেদের মতো কথা বলে যাচ্ছে কিন্তু বুকের ভিতর যেন রীতমত ঝড় হচ্ছে।
।।।।।।।
আমরা সবাই হোটেলে পৌছে গিয়েছি।
হসপিটাল থেকেই সব ব্যাব্সহা করা!!
তাই সমস্যা হয়নি।
টকোপিকে অনেক কস্টে আমান স্যার এর কাছে নিয়ে এসেছি!!
কি জানি টকোপির আমান স্যার কে কেন এতো পছন্দ।
অনেক ক্লান্ত তাই আমিও ঘুমের রাজ্যে চলে গেলাম।।
রাতে হঠাৎ অনুভব করি।
আমাকে কেউ গভীরভাবে পর্যবেক্ষন করে যাচ্ছে। যা এক গভীর স্পর্শ।
।।।।।।
।
।
।
।
।
।
।
#দ্বিতীয়_অধ্যায় ?।।।
চলবে কি??
(২ টা পার্ট দিয়েছি। ঘটনমুলক কমেন্ট আশা করবো
আজকে জানতে পারলাম আর ১০ দিন পর আমার পরীক্ষা। আমি একেবারে শেষ কতটা চাপ যাচ্ছে চিন্তা করেন। কীভাবে যে গল্প দিবো আল্লাহ জানে তাও কস্ট করে লিখতে চেস্টা করবো। কিন্তু এতো কস্ট করেও লিখে রেসপন্স না পেলে লেখার ইচ্ছেটাই শেষ হয়ে যায় ??)