#প্রেমনদীর_মাঝি
#পর্ব_৪
#মুসফিরাত_জান্নাত
পুরো এক দিন উৎকণ্ঠা নিয়ে কাটার পর রাতের আকাশে আরও একটি নতুন উৎকণ্ঠার সম্মুখীন হলাম আমি। গভীর রাতে উনি এমন তাল হারিয়ে পড়ে গেলে আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম।ওনার মতো ভারী মানবকে বয়ে ঘরে আনা আমার পক্ষে অসম্ভব ব্যাপার।তাই নিচে নেমে রহিম চাচাকে ডেকে এনে ওনাকে ভেতরে নেওয়ার ব্যবস্থা করলাম।তারপর জলপট্টির আয়োজন করতে লাগলাম।জ্বর কমাতে হলে ওষুধ দরকার।আর একদম খালি পেটে ওষুধ দেওয়া সম্ভবও নয়।এদিকে রান্না ঘরে যাওয়ার অভ্যেস তেমনটা নেই।এই ভর রাতের বেলায় ঠিক কি রান্না করবো বা বাড়ির ফ্রিজে কোথায় কি রাখা আছে তাও এক ভাবনার বিষয়।তাছাড়া হুট করে অন্যের বাড়ি এসে এভাবে হাত লাগানোটাও অস্বস্তিকর।তবুও দরকারের খাতিরে লজ্জা ঠেলে নিচে নেমে গেলাম।খালামনির ঘর থেকে কোনো আওয়াজ আসছে না।নদী আপু ও নিশির ঘরে উঁকি দিয়ে দেখি দুজনে এলোমেলো হয়ে ঘুমাচ্ছে।কান্নার পানি শুকিয়ে টান ধরে লেপ্টে আছে দুজনের গালে।চোখের পাপড়িতে এখনো ভেজা ভাব দৃশ্যমান।অর্থাৎ খুব বেশি সময় হয়নি তাদের ঘুমানোর।তাই আর বিরক্ত করলাম না।রহিমা চাচিকে ডাকতে গিয়েও কণ্ঠ থেমে গেলো আমার।রহিম চাচা ও রহিমা খালা এ বাড়ির কাজের লোক।দুজন স্বামী স্ত্রী দরজা বন্ধ করে ঘুমাচ্ছে।একটু আগে বিরক্ত করে আবারও ডাকাটা আহাম্মকের কাজ মনে হলো।তাই বাধ্য হয়ে নিজেই কিচেনে গেলাম।অনেক খোঁজা খুঁজির পর ফ্রিজে ডিম, ও কিচেনে নুডলস এর প্যাকেট পেলাম।কিছুটা স্বস্তি মিললো আমার।চা, নুডলস, ডিম ভাজি এমন ছোট খাটো রান্না আমার শেখা আছে।তাই নুডলস রান্না করতে খুব একটা বেগ পেতে হলো না আমাকে।যদিও পেঁয়াজ কা’টতে গিয়ে চোখের পানি একত্রিত হয়ে বহিরাগত হলো।সাথে ঝাপসা চোখে পেঁয়াজ কা’টতে নিয়ে হাতের খানিকটা কে’টে গেলো।তবুও সেসবে মন দিতে পারলাম না এখন।কষ্ট করে রান্না শেষে বাটিতে সস দিয়ে নুডলস সাজিয়ে চটপট ঘরে গেলাম।উনি আচ্ছন্নের মতো পরে রয়েছেন।দেখে কেমন মায়া হলো।দৌড়ে গিয়ে ওনাকে সামলে নিয়ে কোনো মতো খাইয়ে দিলাম।তারপর ফার্স্ট এইড বক্স থেকে প্যারাসিটামল ৫০০মি.গ্রি. ট্যাবলেট খাইয়ে চিৎ করে শুইয়ে দিলাম।উনি ঘোরের মধ্যে থেকেই শুয়ে রইলেন।ঘোরে থাকা স্বাভাবিক।থার্মোমিটারে ১০৪° সেলসিয়াস জ্বর ছিলো।এখন একটু কম অনুভুত হলো।কিন্তু আর মেপে দেখলাম না।ওনার ঘুম জরুরি।তাই মাথায় হাত বুলাতে লাগলাম।ওনার চুলের সংস্পর্শে আঙুলের কা’টা স্থানে ব্যাথা অনুভুত হলো।অথচ সেদিকে খেয়ালই এলো না।দ্বায়িত্ববোধটা হয়তো এমনই।দ্বায়িত্বের চাপে শারীরিক মানসিক কষ্ট একদম ফিকে হয়ে যায়।একারণেই হয়তো আম্মুকে দেখতাম কা’টা, ছুলে যাওয়া, পোড়া হাত নিয়েও এক হাতে সব কাজ সামলাতে।ক্লান্ত শরীরেও আমাদের অসুস্থতায় খেয়াল রাখতে।আজ যেনো নিজের মাঝে মায়ের সেই রুপটাই হানা দিলো।তাই সকল ব্যাথা বেদনা উপেক্ষা করে ওনাকে ঘুমানোর চেষ্টা চালালাম।এভাবে কতো সময় কাটলো জানা নেই।ধীরে ধীরে সময় গড়াতে লাগলো,ভোরের সন্নিকটে রাত্রির পদার্পণ হলে হুট করে ঘুমের কোলে ঢলে পরলাম।
_____
স্তব্ধ পরিবেশ, সবার ঝিম ধরা মস্তিষ্ক জুরে একই চিন্তার বিচরণ হলেও সময়ের টানে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হয়।কারো শূন্যতা অন্য কারো স্বাভাবিক কর্ম সম্পাদন খুব বেশিদিন আটকে রাখতে পারে না।তেমনি কোনো ঘটনাও আমাদের খুব বেশিদিন একঘেয়ে করে রাখতে পারে না।তবুও কোনো কোনো ঘটনার প্রভাব কাটতে একটু বেশিই দেরী হয়ে যায়।এই ঘটনা কি সেই খাতায়ই নাম লিখিয়েছে? হয়তো লিখিয়েছে।কিন্তু তার রেশ কাটিয়ে ওঠা কল্যানকর।তাই তো এই সাত সকালে কানে কানে দ্বায়িত্ববোধ এসে আমাকে বলে যাচ্ছে, ওঠ পুষ্প, এখন তুই অন্য বাড়ির বউ হয়ে গিয়েছিস।এভাবে এত বেলা অবধি ঘুমালে তোর খালামনির বদনামের তালিকা সুদীর্ঘ হবে।তাছাড়া ওই ঘটনার প্রভাবটা কাটিয়েও তুলতে হবে তো নাকি? এই বোধটাই এখন জাগিয়ে তুললো আমাকে।কিন্তু ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি এখন আর সাত সকাল নয়, বেলা নয়টা বাজে।তড়িঘড়ি করে উঠলাম আমি।ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হওয়ার সময় দেখি আঙুলের ডগার কা’ টা স্থানে মলম লাগানো।কে লাগিয়েছে বুঝতেই মনটা প্রশান্তিতে ছেয়ে গেলো।অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করলো মনের কোনে।কিন্তু পরক্ষণেই মনে মেঘ জমলো।এটা নিয়ে প্রশান্তিতে খুশি হওয়ার কিছু নেই।লোকটা আর আমার থাকবে না।হয়তো এই পরিবারের ভাঙা অংশ পুনরায় গড়তেই সম্পর্ক ত্যাগ করতে হবে আমাকে।তবে কেনো ওনাকে নিয়ে মিছে এই অনুভুতি?নিজেকে শাসালাম আমি।এমন অনুভুতি মনে ঠায় দেওয়া যাবে না।নিজেকে ফ্রেশ করে নিচে নামলাম দ্রুত।আজ বাড়িতে রান্না হয়েছে।টেবিলে ভীষণ অযত্নে পড়ে রয়েছে ওসব।সবাই যার যার ঘরে পড়ে আছে।কিন্তু শুধুমাত্র নিভৃত ভাইকে কোথাও দেখতে পেলাম না।কথাটা জিজ্ঞেস করায় রহিমা চাচি বললেন,
“নিভৃত বাবু হসপিটালে গেছে।”
এটা শুনে আঁতকে উঠলাম আমি।
“একি! জ্বর শরীরে হসপিটালে গেলো?অসুস্থ শরীরে কাজে যাওয়াটা কি খুব জরুরী ছিলো?”
আমার প্রশ্নে কপাল কুঁচকে খানিকটা বিরক্তি প্রকাশ করলেন চাচি।তারপর বললেন,
“বিয়ে উপলক্ষে তিন দিনের ছুটি নিছিলো।ছুটি শেষ। তাই বলে আরেক দিন ছুটি নেওয়া যেতো না?এতো করে কইলাম, আরেকদিন ছুটি নেও।আজকের দিনটা বিশ্রাম নেও।কিন্তু কে শোনে কার কতা।হু হ্যা একখান উত্তরও দিলো না।কাজে চলে গেলো।উত্তর দিবো কি? আমি তো কাজের বুয়া।আমার কতার কোনো দাম আছে নাকি? এই যে সকাল থেইকা বাড়ির সবাক কইতেছি খাওয়ার জন্যে, কেও কি পেটে কিছু তুলছে?সব ঘরের মধ্যে খিল দিয়া বইসা আছে।আমার হইছে যত জ্বালা…।”
এক নাগারে বকবক করতে করতে চাচি নিজের ঘরে চলে গেলেন।ওনাকে থামাতে রহিম চাচা বললেন,
“আহ! রহিমা, কি শুরু করলা?এবার একটু থামো তো।কেও খাওয়ার মানসিকতায় আছে নাকি?আর বাবুর জ্বর সাড়ছে বল্যাই কাজে গ্যাছে।তাছাড়া গ্যাছে ভালো করছে।বাড়িত থাইকা চিন্তায় চিন্তায় আবারও জ্বরে পড়ার থেইকা, কাজে যাইয়া মানুষের মধ্যে চিন্তামুক্ত থাকা ভালো।”
রহিম চাচার কথাটা চট করে পছন্দ হলো আমার।সব কিছুতেই একটা পজিটিভ দিক থাকে।এটাকে খুঁজে বের করতে পারলেই চিন্তামুক্ত থাকা যায় মনের মেঘ ক্রমেই সরে গেলো।ওনার জ্বর সেড়েছে শুনে মনটাও হালকা হলো।যাক, রাতের পরিশ্রম বৃথা যায় নি।
একটু পর নদী আপু ও নিশির জন্য বরাদ্দকৃত ঘরের দিকে পা বাড়ালাম আমি।রহিমা চাচি একটু বাড়িয়েই বলেছেন।ঘরের মাঝে ওরা চুপটি করে বসে রইলেও দরজায় ছিটকিনি লাগানো নয়।আমি ধীর পায়ে এগিয়ে গেলাম ওদের কাছে।আমাকে দেখেও ভাবাবেগশূন্য দুজন।যেনো আমার উপস্থিতিতে কিছু যায় আসে না ওদের।নিশি খানিকটা বিরক্তও হলো।সেসব উপেক্ষা করে আমি বললাম,
“আমি জানি তোমরা আমার উপর মনোক্ষুণ্ণ করে আছো।আমি এ বাড়ির বউ না হলে এমন কিছুই হতো না।কিন্তু আমি কি আদোও এখানে সেচ্ছায় বিয়ে করেছি বলো?”
আমার কথা শুনে নিশি জবাবে বললো,
“তো কি এই বিয়ে করে তোমার কপাল পুড়েছে বোঝাতে চাইছো?আর এজন্য এখন তোমার দুঃখ দেখে আমাদের আফসোস করতে হবে?”
নিশির ঝাঁঝালো কণ্ঠের বিপরীতে ধমক দিলেন নদী আপু।
“এটা কি ধরনের বেয়াদবি নিশি।ও তোর বড়।আব্বু কি এই শিক্ষা দিয়েছে তোকে?আব্বু এসব শুনলে কতো কষ্ট পাবে জানিস?এমনিতে আব্বুর মতের বিরুদ্ধে কাজ করায় উনি বাড়ি ছেড়েছেন।ওনাকে ফিরে পাওয়ার আনন্দ ভোগ করার বদলে দুঃখ সইছি।তাও থামবি না তোরা?”
কথাগুলো কিছুটা রাগের বশেই বললেন তিনি।শিক্ষা বাবা মা দুজনের সম্মিলিত প্রচেষ্টা হয়।এমনকি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মায়ের অবদান বেশি হলেও পিতার শোকে নদী আপু শুধু তার বাবার কথাই বললেন।তাছাড়া খালামনির প্রতি মন অখুশি হওয়ায় হয়তো তাকে উপেক্ষাও করলেন।নিশি আর প্রতিবাদ করলো না। আপুর এমন কথা বলার পর আর কোনো জবাব খুঁজে পেলাম না আমি। নিজেকে খুব বেমানান লাগলো এদের নিকট।তাই উঠে চলে গেলাম নিজের ঘরে।
দুঃখ গুলো বড় বিধ্বংসী হয়।মানুষের স্বভাব বদলে দেয়।শান্ত ভঙ্গিমার মানুষগুলোকে উগ্র করে তোলে।কখনো কাওকে কষ্ট না দেওয়া মানবেরা অনায়াসেই অন্যের মনকে ক্ষ’তবিক্ষ’ত করে দেয়।নদী আপু নিশি এরাও সেই বিধ্বংসী খেলায় জড়িয়ে গিয়েছেন সন্তর্পণে।খুব মিষ্টি স্বভাবের মেয়েগুলোর কথার ধরন বদলেছে।সাথে বদলেছে আমার প্রতি ওদের দৃষ্টি ভঙ্গি।নিজেকে খুব অসহায় লাগছে এখন।এ বাড়িতে বড্ড বেমানান লাগছে।চিৎকার করে কান্না করতে ইচ্ছে করছে।অথচ কণ্ঠ দ্বার ভেদ করে একটি শব্দও বের হচ্ছে না।মাথাটা কেমন ঝিম ধরে আছে।সকালে কিছু খাওয়া হয় নি।অথচ ক্ষুধাও অনুভুত হচ্ছে না।কষ্ট গিলেই যেনো পেট ভরেছে।ঠিক এই সময়ে টেবিলের কোনে পড়ে থাকা এক চিরকুটে দৃষ্টি গেলো আমার।নিভৃত ভাইয়ের লেখা দুটি লাইন জ্বলজ্বল করছে ওখানে।
“বিচ্ছেদের জন্য হাত ধরা নয়,বিচ্ছেদ কোনো সমস্যার সমাধানও হয় না।যদি বিচ্ছেদে সমাধান লেখা থাকতো, তবে এমন বিধ্বস্ততার সৃষ্টি হতো না।”
ওনার লেখার দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম আমি।কথাটা যে কাল আমার রাখা প্রস্তাবের উত্তর তা বেশ বুঝলাম।উনি আমাদের বিচ্ছেদ চান না এটাই বুঝিয়েছেন।কিন্তু কেনো?
একটু পর খালামনি উঠলেন।নিশিকে চিল্লাপাল্লা করে খাইয়ে কলেজ পাঠিয়ে দিলেন আর নদী আপুকে ভার্সিটিতে পরীক্ষা দিতে।মায়ের উপর নিরব অভিমান জমলেও প্রকাশ্যে মান্য করতে বাধ্য হলো দুজনে।ওদের পাঠিয়ে দিয়ে খালামনি এলেন আমার ঘরে।নিষ্প্রান কণ্ঠে বললেন,
“তোকে এমন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হবে জানলে হয়তো এই বিয়ের প্রস্তাব দিতাম না আমি।যাই হোক ভুল যখন হয়েছে, তা তো আর ফিরানোর উপায় নেই।তাই সামনের দিকে এগিয়ে চলতে হবে আমাদের।এখন একটু কষ্ট করে সব মানিয়ে নিতে হবে।তোর খালু খুব নরম মনের মানুষ।দেখিস সে একদিন ফিরে আসবে।আমাকে রেখে আর যাবে কতদূর বল?অতীতেই যখন যেতে পারেনি,এখন তো আমার সাথে জড়িয়ে আছে সে।”
খালামনির কথার ভাজে এক অন্যরকম আত্মবিশ্বাসের ছোঁয়া পেলাম আমি।তিনি যেনো শতভাগ নিশ্চিত খালুজান ফিরে আসবে।কথাটাতে আমিও সহমত হতে বাধ্য হলাম যখন জানতে পারলাম, খালুজান এখনো দেশ ত্যাগ করেননি।বরং ঢাকায় এক হোটেল বুক করে সময় কাটাচ্ছেন।আশার আলো দেখতে পেলাম আমি।সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।ওনার পায়ে ধরে হলেও ফিরিয়ে আনবো এখানে।নিভৃত ভাইয়ের সাথে আমার ডিভোর্সের মাধ্যমে হলেও খালুজানকে ফিরিয়ে আনবো বলে সিদ্ধান্ত নিলাম।বিকেলের বাস ধরলাম ঢাকার উদেশ্যে।সাথে নিশি ও খালামনি যাচ্ছে।নদী আপুর পরীক্ষা চলছে তাই তাকে সঙ্গে আনা হয়নি।তাকে নানুবাড়ি পাঠানো হয়েছে।সবার চোখেমুখে এক ক্ষীন আশার আলো।খালুজান হয়তো ফিরবেন।
____
বাস চলছে তার আপন গতিতে।জানালার হাওয়া ছুঁয়ে দিচ্ছে আমাকে।নিভৃত ভাই আর পাশাপাশি বসা।উনি তখন থেকে ফোন স্ক্রল করে চলেছেন।গভীর ধ্যান দিয়ে রেখেছেন।ওনাকে দেখে মনে হচ্ছে এ জগতে উনি আর ফোন ছাড়া আর কিছু নেই।উঁকি দিয়ে দেখতে চেষ্টা করলাম উনি ঠিক কি দেখছেন।আমার উঁকি দেওয়া দেখে উনি ফোনেই দৃষ্টি রেখে বললেন,
“কিছু বলবে?”
ওনার প্রশ্নটা আমার দ্বিধা কাটালো।হ্যাঁ, আমি ওনাকে কিছু জিজ্ঞেস করতেই চাইছি।কিন্তু জড়তা কাটাতে পারছিলাম না।হুট করে প্রশ্ন করাটা বেশ খাপছাড়া লাগতো।তাই মাথা নাড়লাম।উঁনি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালেন আমার দিকে।
“কি?”
আমি কিছুটা ইতস্তত করে বললাম,
“সকালে টেবিলে একটা চিরকুট পেয়েছি, আপনি লিখেছিলেন?”
“কেনো অন্য কারো লেখার কথা ছিলো?”
ধাতস্থ কণ্ঠে পাল্টা প্রশ্ন করলেন তিনি।আমি জবাবে আমতা আমতা করে বললাম,
“তা নয়।তবে আপনি বিচ্ছেদ চাচ্ছেন না কেনো?”
প্রতিউত্তরে উনি নির্লিপ্ত কণ্ঠে বললেন,
“বিচ্ছেদের নিয়তে হাত ধরিনি তাই।”
সহজ সরল স্বীকারোক্তি ওনার।এমন কথায় যে কোনো মেয়ে থমকে যেতে বাধ্য।আমিও থমকালাম।ছেড়ে দেওয়ার নিয়তে হাত ধরিনি,এর চেয়ে বিশ্বস্ত, নির্ভরযোগ্য, মনোমুগ্ধকর কথা কোনো মেয়ের জন্য আর দ্বিতীয়টি হতে পারে না।আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলাম ওনার দিকে।
চলবে