প্রিয় সুখ-৩৫

0
586

প্রিয় সুখ-৩৫
__________
নীল সাদা ফুলের ডিজাইন করা দু’ টি হাই ব্যাকের সিঙ্গেল সোফার সাথে তিন সিটের একটি সোফা। পিছনের দেয়াল জুড়ে জাহাজের নানা রকমের দৃশ্য চিত্রপটের উল্লেখ্য বিষয়ে থাকার দরূনে যে কোন মানুষ ঘরে প্রবেশ করে বুঝতে সক্ষম এই ঘরের মনিব একজন চূড়ান্ত জাহাজ প্রেমি। জাহাজের, হাতে তৈরি ছবি থেকে সুরু করে বিখ্যাত কিছু ফটোগ্রাফির ছবিও দৃশ্য মান। সামনে একটি কাচের গোল টেবিল। সোফার সামনের দেয়ালে ঝুলছে একটি বড় জাহাজের ছবি। টিভি কই? মানুষটা পৃথিবীর কোন যুগে বসবাস করছে বলা যাচ্ছে না। ঘরের কোথাও টিভি নেই তার। বিভিন্ন গাছের ছবি, জাহাজের ছবি এমন ভাবে রুমে জড়িয়ে আছে এটিকে একটি জলজ্যান্ত বাগানময় জাহাজ মনে হচ্ছে। এই বাগানময় জাহাজের রুমে বসে আছে মিতু আপু। এখান পর্যন্ত স্বাভাবিক বিষয় মনে হচ্ছে নীহারিকার। বিমুগ্ধ সম্পর্কে তাদের ডাবল কাজিন হওয়ার সুবাদে তার বাসায় আসা, ঘুরা, বসে থাকা, বা পরমানন্দে উল্লাস করা অতি সাধারণ বিষয় হলেও একুই বাসায় আপাত দৃষ্টিতে দু’ শত্রুর এক সাথে বসে থাকা ওতো স্বাভাবিক বিষয় হওয়ার কথা নয়। দু’ টি সোফায় শাহিন ভাইয়া আর মিতু আপুকে বসে থাকতে দেখে চমকে নীহারিকার চোখ বেড়িয়ে আসার উপক্রম। নীহারিকা প্রিয়মের দিকে তাকাল। এই বান্দাও এখানে! কি করছে এরা? বিমুগ্ধ দু’ পাশে হাত উচু করে ঝুঁকে শরীর নেড়েচেড়ে নিয়ে এক সোফায় বসল। খুবই স্বাভাবিক। তার মত স্বাভাবিক মানুষ দুনিয়া খুঁজলে পাওয়া দুষ্কর। নীহারিকা ক্লান্ত গলায় বিশ্ব বিস্ময় জড়িয়ে বলল,’ কি হচ্ছে এখানে? এসব কি? আপনি কিছু বলছেন না কেন?’
প্রিয়ম গম্ভীর মুখে বিমুগ্ধের পাশে বসল। সবার দিকে চোখ বুলাল নীহারিকা। তারপর নিজেও প্রিয়মের পাশে বসল। মিতু আপুর দিকে তাকিয়ে আরও একবার চমকে গিয়ে বলল,’ তোর মুখে স্কচটেপ কেন?’ হাতের দিকে তাকিয়ে নীহারিকা স্মিত হাসল। শাহিন ভাইয়ের হাতে আপেল। ছু/রির সাহায্যে কেঁটে নীহারিকার দিকে এক প্রকার ছুড়ে দিয়ে বললেন,’ বেশি কথা বলে তোমার বোন। নেও আপেল খাও। শুনেছি তোমার প্রিয় ফল। আমারও। শালি দুলাভাইয়ের মাঝে মিল থাকা শুভ লক্ষণ।’
‘ আপনি আমার দুলাভাই?’ আপেলে কামড়া বসাল নীহারিকা বাচ্চাদের মত।
‘ এই পর্যন্ত না। কিন্তু হব। দুলাভাই হিসেবে আমি কেমন?’
‘ বলা যাচ্ছে না। আগে দুলাভাই হয়ে উঠুন তারপর বলব। তো এই টাই বুঝি আপনার?’ নীহারিকা মিতু আপুর হাতের দিকে তাকাল। হাত টাই দিয়ে শক্ত করে বাঁধা। মুখ বাঁধা হাত বাঁধা। বুঝায় যাচ্ছে তাকে বন্দি করার ফন্দি এটি। মিতু আপু ছটফট প্রকৃতির। চড়ূই পাখির মত তিনি নড়াচড়া করছেন পা ঝাঁকাচ্ছেন। নীহারিকা তপ্ত গলায় বলল,’ এসব কি করছেন আপনারা? ওকে এভাবে বেঁধে রেখেছেন কেন?’
‘ তাহলে কি তোমাদের পূজা করব? তোমরা কি মহান কেউ?’ শাহিন ভাই নীহারিকার উপরে ক্ষিপ্ত। আশ্চর্য সে কি করল? প্রিয়ম চিন্তিত গলায় বলল,’ এরা আমাদের ধরে এনেছে।’
‘ কারা?’ নীহারিকা বিমুগ্ধের দিকে চোখ গরম করে তাকাল। বিমুগ্ধ দু’ হাত অপরাধ শিকার করার ভঙ্গীতে বলল,’ আমরা।’
‘ লজ্জা করছে না আপনার? এসব কি শুরু করেছেন? মিতু আপুকে তুলে নিয়ে আসলেন ভালো কথা। প্রিয়মকে কেন নিয়ে আসলেন? আবার আমাকে। ফাইজলামি না।’ মিতু আপু অবাক। মুখ বন্ধ। তা না হলে জানতে চাইত তাকে তুলে নিয়ে এসে এরা কি জান্নাতী কার্য সম্পাদন করেছে যে ভালো বলছে! প্রিয়ম রেগে তাকাল বিমুগ্ধের দিকে। তার সুরে বলল,’ আপনি আমার আপুকে তুলে নিয়ে এসেছেন? এতো সাহস?’
‘ তোর বোন নিজ পায়ে হেঁটে এসেছে। আমি কিছুই করিনি। কথায় কথায় বোনের বডিগার্ডের রোল প্লে করতে আসবি না প্রিয়ম।’ প্রিয়ম দমে গেল। এখানে কি হবে বা হচ্ছে সেও বুঝতে পারছে না। তাকে শাহিন ভাই নিয়ে এসেছে ভার্সিটির গেট থেকে। ভাবল ভাইয়া হয় তো দেখা সাক্ষাৎ করতে এসেছে। কিন্তু মিতু আপুর এই অবস্থা দেখে সে শিহরিত। কথা বলার ভাষা বিলুপ্ত। মিতু আপু নীহারিকাকে ইশারা করল। নীহারিকা না শুনার ভান করে রইল। কথা হচ্ছে সে খুলবে না। অসহায় মিতু আপু।

ধীরে সুস্থে মাথা কাত করে তিশা দেখল ঘরের ভিতরে কে আছে। বুঝতে পারল চার, পাঁচজনের অস্তিত্বের কথা। তারপর ধপাধপ পা এগিয়ে সে ভিতরে প্রবেশ করল। তার পিছনে ঢুকল মুহিত মুহিতা অর্পণ। শান্ত আজ এই দলে নেই। বেচারা মিস করছে সিনেমা। আফসোস করল তিশা। নীহারিকা সোফায় বসে আপেল খাচ্ছে। শাহিন ভাই দুলাভাই যোগ্য হওয়ার প্রয়াসে ব্যস্ত। তিনি টেনে দিচ্ছে সেই আপেল। খুব হাসি খুশি কথা হচ্ছে তাদের দু’ জনের মাঝে। রাগে, দুঃখে, অভিমানে মিতু আপুর কান্না চলে আসছে। নীহারিকা এক সময় অসহ্য হয়ে উঠল। মিতু আপুর মুখের টেপ খুলে দিতেই তিনি চিৎকার করে অকথ্য ভাষা শুরু করলেন। নীহারিকাকে লক্ষ্য করে বললেন,’ কুত্তা তোরে আমি দেখে ছাড়ব। অভিশাপ দিলাম তোর জীবনে এরচেয়েও কঠিন দিন আসবে। তোর বিয়ে হবে ভয়ংকর ভাবে। দেখে নিছ। তুই কাঁদতে কাঁদতে যদি বিয়ে না করেছিস আমি আমার কান কাঁটব, নাক কাঁটব।’ নীহারিকা বিরক্তি সুরে বলল,’ আচ্ছা। এখন কি করবি? তোকে এরা ধরে নিয়ে এসেছে কেন? কাহিনী খুলে বল।’
‘ কাহিনী তোর মাথা। হাত খোল আগে। এই শাহিন ভাইকে আমি আজকে নিজের হাতে জ/বাই করব।’
‘ রেগে যাচ্ছিস কেন? কি হয়েছে?’
মিতু আপু কিছুই বললেন না। অত্যন্ত হতাশ হয়ে বসে রইলেন। তার অফিসের এক কলিগের সাথে পরিচয়। কথা হয় অল্প বেশিও নয়। ছেলে কলিগ থাকা যেন মহা গুনাহ। কি মনে করে নিজেকে এই শাহিন ভাই বুঝতে পারছেন না তিনি। অসভ্য একজন লোক। নিজের জেলাসি কন্ট্রোল করতে পারেনা তাই বলে তাকে এভাবে তুলে নিয়ে আসবে? মিতু আপুর শরীর জ্বালানো রাগ। কিন্তু তবুও তিনি বসে বসে আপেল খাওয়া দেখছে। এই ব্যক্তিকে এখন ঠিক কি করতে পারলে তিনি শান্ত হবেন বুঝতে পারছেন না। তিশাদের সাথে আরও একজন অপরিচিত ব্যক্তিকে দেখে অবাক হয়ে গেল নীহারিকা। কালো ব্লেজার গায়ের লোকটি একটি ব্যাগ হাতে নিয়ে টেবিলের উপরে রাখল। নীহারিকা উঠে আসল। সাথে প্রিয়মও। মিতু আপু শাহিন ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে আছে এখনও। প্রিয়ম ফিস ফিস করে বলল,’ এরা কি করতে চাইছে তুই জানিস?’
‘ না জানি না। তোর কি মনে হচ্ছে?’
‘ বিয়ে হবে।’
চমকে গেল নীহারিকা। মৃদূ চেঁচিয়ে বলল,’ কার বিয়ে?’
‘ তোর কি মনে হচ্ছে তোর বিয়ে হবে? জাওয়াদ নেই এখানে। অন্য কারো বিয়ে হবে।’
হঠাৎ দু’ ভাই বোনে চিৎকার করে এক সাথে বলল,’ মিতু আপু!’
মিতু আপু ভয়ে লাফিয়ে উঠলেন যেন। অপরিচিত ব্যক্তির সামনে বেশ বিব্রত কর পরিবেশ। কাছে এসে বললেন,’ কি হয়েছে চিৎকার করছিস কেন?’
‘ তুই পালিয়ে বিয়ে করবি আগে বলিস নি কেন?’
মিতু আপুর চোখ গোল গোল হয়ে মারবেল আকৃতি ধারণ করল,’ পালিয়ে! বিয়ে! কে করছে? আমি কোন বিয়ে টিয়ে করছি না।’
তিনি এক প্রকার লাফিয়ে প্রিয়মের পিছনে গিয়ে দাঁড়াল। প্রিয়ম নীহারিকা হতভম্ব হয়ে গেল। শাহিন ভাই কাছে আসলেন নায়কের মত হেঁটে। একজন কালো মানুষকে নায়ক হিসেবে কেমন দেখাবে বলা যাচ্ছে না। স্মার্টন্যাসের ভিত্তিতে ভালো নায়ক তিনি হতে পারবেন। পাক্কা অভিনেতা বলা চলবে। সে ভালোই অভিনয় করতে পারে। প্রিয়মকে ফিসফিস করে কিছু বললেন। মিতু আপু যতই শুনতে চেয়েছিল কিন্তু পারেনি। নীহারিকা এখনো স্তব্ধ, বিমূঢ়, হতবুদ্ধি। হঠাৎ ফোন বেজে উঠল। বাবার নাম্বার দেখে ভয়ে পেয়ে গেল নীহারিকা। কানে ধরতেই তিনি বাজখাঁই গলায় বললেন,’ মিতু বিয়ে করছে এটা তুমি জানতে? আমাদের বলোনি কেন?’
‘ আমি এসব কিছুই জানতাম না বাবা। এই মাত্র জানতে পেরেছি।’
‘ ঠাট্টা- তামাসা করছ আমার সাথে? প্রিয়ম, তুমি দু’ জনেই মিতুর কাছে আছো এখন তাই না?’
‘ হ্যাঁ আছি। কিন্তু…’
‘ কিন্তু বলতে কিছুই দেখছি না।’ বাবার হাত থেকে মা ফোন এক প্রকার ঝাপিয়ে কেঁড়ে নিয়ে বললেন,’ মিতুর যে এমন একটা প্ল্যান ছিল তোরা সব জানতি। তোরা সবাই মিলেই যুক্ত এসবে। তামাশা বানাই ছাড়লি সব কটা মিলে। ভাগ্যিস শাহিন ছেলেটা ভালো। তাই আগেই আমাদের এসব বলে দিয়েছে। মানে তোর পালিয়ে বিয়ে করতে মন চেয়েছে ভালো কথা কর। কে মানা করছে? তাই বলে একবার বিয়ের আয়োজন করে সারা গ্রামে অপমান করে নিজের পরিবারের নাক ডুবিয়ে পরে পালিয়ে সেই একুই মানুষকে বিয়ে করবি এটা কেমন কথা? তোরা কেউ বাসায় আসবি না। আমি যেন চোখের সামনে না দেখি তোদের।’
বাবা রেগে গেলেন। তার গলা পাওয়া যাচ্ছে। স্ত্রীকে তিনি ধমক দিয়ে বলছেন,’ বাসায় না আসলে কোথায় থাকবে? রাত কত হয়েছে দেখছ?’
‘ জাহান্নামে থাকবে।’
‘ মুখ সামলে কথা বলো। নীহারিকা বাসায় এসো তোমরা দ্রুত। আমরা আলোচনা করে বিয়ের ব্যবস্থা করব।’
‘ খবরদার নীহারিকার বাবা এদের যেন আমি বাসায় না দেখি। বজ্জাতের হাড্ডি হয়েছে এক একটা। রঙ্গকৌতুক শুরু করছে।’
‘ ওরা কোথায় থাকবে এতো রাতে? আজব মহিলা তুমি। সরো ফোন দেও আমি কথা বলব। এভাবে টানা হ্যাঁচড়া করবে না আফিয়া।’
‘ কেন যেখানে সব গুলো মিলে প্ল্যান করছে সেখানে থাকবে। আমি যেন না দেখি এদের। আমার মা বোন কম অপমানিত হয়েছে এদের জন্য? তুমি একদম মাঝখানে কথা বলবে না। ছেলে মেয়েকে লাই দিয়ে দিয়ে মাথায় তুলেছ। আর এখন এক একটা হয়েছে অসভ্যের জাত।এক দম চোখ রাঙ্গাবেনা। আমি আজ কিচ্ছু শুনছি না। তোদের সবাইকে বাড়ি থেকে বেড় করে দিলাম আমি। বেয়াদপ সব।’ তিনি ফোন কেঁটে দিলেন না কি ভেঙ্গে ফেললেন বুঝা গেল না। নীহারিকা অতিশয় ভয়ে পাগল হয়ে যাচ্ছে। ঘামে তার শরীর তরতর করে ভিঁজে উঠছে। বিমুগ্ধ এসি চালু করে দিয়ে কাছে এসে বলল,’ তুমি ঘামছ কেন রাগেশ্বরী। গরম কি বেশি পড়ছে?’
নিজের সুন্দর হাসির জন্ম দাতা ঠোঁটের নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরল। লাল হয়ে উঠল তার উপরের ঠোঁট। তার চেয়েও লাল নীহারিকার চোখ। বিমুগ্ধ ভারী চিন্তিত সুরে জিজ্ঞেস করল,’ সারপ্রাইজ পছন্দ হয়নি রাগেশ্বরী?’
ক্রুর চোখ নীহারিকার। মিতু আপু এখনও কিছু জানে না। তিনি এগিয়ে এসে বলল,’ কি হয়েছে রে? বাড়ি থেকে মা কল করছে। ভয়ে তুলতে পারছি না। মা তো আমার সাথে এই এক মাসে একবারো ফোনে কথা বলেনি। তার উপরে যাওয়ার সময়ও কথা বলেনি। আজ হঠাৎ ফোন করল কেন?’
‘ কারণ তারা মনে করছে আমরা সবাই প্ল্যান করে তোকে বিয়ে দিচ্ছি। তাও শাহিন ভাইয়ের সাথেই। মানে মোট কথা এটা পূর্ব নির্ধারিত প্ল্যান ছিল। আমরা সকলে মিলে পরিকল্পনা করেছি তোদের বাড়ির বিয়েটি একটি নাটক হবে। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে তোরা পালিয়ে বিয়ে করতে চাস। মানে কি এসবের? শাহিন ভাইকে ডাক তো। এসব এদের কাজ। মা খুব রেগে আছে। অন্যদিন বাবা যা বলত আজ মা তা বলল আমাকে। আশ্চর্য।’
নীহারিকা রেগে ক্ষোভে ফেঁটে পড়ল। বিমুগ্ধের ঘর আজ তার ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করছে। সে প্রথমেই বিমুগ্ধের ড্রাইনিং টেবিলের উপরের গ্লাস ছুড়ে ভেঙ্গে ফেলতে নিচ্ছিল। বিমুগ্ধ দ্রুত ধরে বলল,’একটা গ্লাসের দাম তোমার দেশের চার হাজার টাকা। চার হাজার আছে তোমার কাছে? তাহলেই এটি ভাঙ্গার অনুমতি পাবে।’
চার হাজার! সিরিয়াসলি! একটা গ্লাস কোন পাগলে চার হাজার দিয়ে কিনবে? সম্পূর্ণ সেট হবে মাত্র ছয়শো টাকা। একটি গ্লাস একশো টাকা। বিমুগ্ধ মিথ্যে বলছে নীহারিকার ধারণা। সে ছুঁড়ে ভেঙ্গে ফেলল। ফয়সাল পাশের ঘর থেকে দৌড়ে এসে বলল,’ আল্লাহ আল্লাহ। কি করলেন? আরে আপনি? কেমন আছেন আপু?’ নীহারিকা চমকে গেল। আরে ঝালমুরির সেই ছেলেটা না? সে বিরক্ত হয়ে বলল,’ ফয়সাল তুই কি এই অসভ্য লোকের সাথে থাকছিস এখন?’
‘ এখন না। আরও অনেক আগে থেকে থাকি। আপনার আমার নাম মনে আছে?’ চকচক করা চোখ তার। বড় হয়েছে অনেক। নীহারিকা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। মিতু আপু কান্না জুড়ে দিল। খালামনির ফোন ধরতেই তিনি বললেন,’ তুই এতো জঘন্য কাজ করতে পারলি মিতু?’
মিতু আপু বিশ্রী কান্নায় জড়িয়ে বললেন,’ মা আমি এসব কিছু করিনি। শাহিন ভাইকে আমি বিয়ে করব না। জীবনেও না। এটাই সত্য।’
‘ এখন ধরা খেয়ে এসব বলছিস তাই তো? ছেলেটা ভালো তাই বলে দিয়েছে। আজ তোকে না পেয়ে আমার বোন পাগল হয়ে যাচ্ছিল। আর তোরা এসব করে বেড়াচ্ছিস? বেশ কর।’
‘ আমি বিয়ে করব না মা বিশ্বাস করো।’
‘ থাপ্পড় মেরে তোর দাঁত ফেলে দিব। এতো কিছু করে এখন বিয়ে করবি না? বিয়ে তুই করবি তোর বাপও করবে। এবার বিয়ে ভাঙ্গলে তোরে ত্যাজ্য করব। আর এমনেও তুই আমার সামনে আসবি না। বিয়ে করলেও আসবি না না করলেও আসবি না।’
মিতু আপু বলতে চাইল ত্যাজ্য করার নিয়ম আমাদের ধর্মে একদমই নেই। কিন্তু বলতে পারলো না। ফোন কাঁটার পরে কল করল বাবা। তিনি খুবই দুঃখ প্রকাশ করে বললেন,’ তোদের জন্যে আমি বিদেশের মাটিতে পড়ে আছি। পরিবার ছাড়া থাকি। কষ্ট করি কি এসবের জন্য? এই দিনের জন্য? দেশের এসব খবর আমার ভালো লাগে না। আমি মনে করি তোদের একটা মতামত আছে। কিন্তু বাবা মায়ের সম্মানকে এভাবে নষ্ট না করলেও পারতি। মেয়েরা হচ্ছে পরিবারের সম্মান। এটা মনে রাখিস মা। তোর উপরে রাগ হচ্ছে না। কিন্তু আমি খুব কষ্ট পেয়েছি। বিয়ে ছেলে খেলা না। একটা ভুল করেছিলাম তার জন্য আমি অনুতপ্ত। তাই তোকেও অনেক সুযোগ দিয়েছি। তোর মা এতো বছরে যত বিয়ের কথাই বলেছে আমি সব নিষেধ করেছি। কারণ তুই চাইতি না। তোর অনুমতি বিহিন আমি আর কিছুই করিনি। কিন্তু তোর এই কাজটা আমাকে খুবই কষ্ট দিয়েছে। ভালো থাকিস।’
মিতু আপু জড়ীভূত হয়ে গেল। তার বাবা অত্যন্ত শান্ত প্রকৃতির মানুষ। মেয়ের প্রতি তিনি প্রথমেই কোপিত। কিন্তু আজকের মত কখনো এভাবে বলেনি। রাগ আর অভিমান ভিন্ন। দু’ টির চলন ভিন্ন। বাবা অভিমান করেছেন। মিতু আপু ফ্লোরে বসে মুখ গুঁজে কাঁদছে। ফয়সাল দ্রুত কাঁচ সরিয়ে নিচ্ছে। সে এই বাসায় আছে এক’ বছরের উপরে হবে। বিমুগ্ধের সাথে আগে সে অন্য বাসায় থাকত। তারপর বিমুগ্ধ এই বাসায় আসার ফলে তাকেও আসতে হয়েছে। এদের এহেন কান্ড দেখে সে নিশ্চল চোখে তাকিয়ে আছে। হল রুমে সব মানুষ। নীহারিকা মিতু আপুর পাশে বসল। বলল,’ তুই কাঁদছিস কেন? শান্ত। শান্ত আপু।’ তিশা এগিয়ে এসে বলল,’ শান্ত তো আজ আসেনি। তুমি কি তাকে ডাকছ? ফোন করব?’
বিরক্ত হয়ে নীহারিকা বলল,’ না ডাকিনি। কিন্তু আপনি এসেছেন যখন উত্তর দিন তো।’
‘ কিসের উত্তর?’
‘ এখানে কি হচ্ছে? আপনার ওই বজ্জাত বন্ধু ঠিক কি করতে চাইছে? এখনি আমরা এখান থেকে চলে যাব। ঠাট্টা করছেন আমাদের নিয়ে?’
তিশা দুঃখ আক্রান্ত হয়ে বলল,’ নীহারিকা এখানে কিছুই হচ্ছে না। আমাদের কথা বলা নিষেধ।’ একটু থেমে আবার বলল,’ কিন্তু বিয়ে হচ্ছে।’ তারপরই সে গায়েব। সবাই কোন রুমে আছে বুঝা যাচ্ছে না।
_________
‘ নীহারিকাকে প্রয়োজন।’ বিমুগ্ধ নিজের রুমে এসেছে। সেখান থেকে একটি পাঞ্জাবি বের করে শাহিন ভাইকে দিয়ে বলল,’ আপনি বিয়ে করবেন আমি জানতাম। কিন্তু আজই করবেন জানা ছিলো না। তবে পাঞ্জাবি আমি কিনে নিয়ে এসেছিলাম আগেই। পড়ে নিন। তবে হ্যা টাকা পরিশোধ করবেন। আপনাদের বিয়েতে আমি কোন গিফট দিচ্ছি না।
শাহিন ভাই অবাক হলেন না। বিমুগ্ধের সাথে মিশে তিনি বুঝতে না পাড়লেও একটু একটু জানেন সে কেমন।
‘ নীহারিকার বিষয়টা বুঝিয়ে বলো তাযিন।’ পাঞ্জাবি দেখে শাহিন ভাই চমকে গেল। এতো সুন্দর একটি পাঞ্জাবি তিনি কখনো কল্পনা করেননি। অফ হোয়াইট কালারের উপরে লাল জরি সুতোর সাথে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সাদা মুক্তর কাজ। এক পাশে কাজ সৃষ্টি হয়ে নিচের দিকে নেমে গিয়েছে। বিমুগ্ধের রুমটির সব আসবাবপত্র দেয়ালের সাথে লাগান। ফলস্বরূপ রুমটিকে যথেষ্ট বড় দেখায়। শাহিন ভাই বিছানায় বসলেন না। চেয়ার টেনে বসলেন। বিমুগ্ধও অপর চেয়ার টেনে বসে বলল,’ নীহারিকা মিতুয়ার দূর্বলতা জানে। ওকে ইউজ না করে বিয়ে অসম্ভব। তাই আগে তাকে রাজি করাতে হবে। আমি জানি সে রাজি হবে।’ বিমুগ্ধ হাসল। তাযিন অবাক হয়ে গেল। সে কখনো বিমুগ্ধকে তার সামনে হাসতে দেখেনি। ছেলেটার হাসি কি মারাত্নক! ছেলে হয়ে বুক ধক করে উঠল। শাহিন ভাই কিছুক্ষণ চিত্তমুগ্ধকরণ নজরে তাকিয়ে রইলেন। তারপর বললেন,’ কিভাবে রাজি করাই বলো তো? দাঁড়াও আমি যাচ্ছি কথা বলতে।’ বিমুগ্ধ চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়াল। উত্তপ্ত নয়নে তাকিয়ে বলল,’ নিজের বউয়ের সাথে কথা বলুন। রাগেশ্বরীকে হ্যান্ডেল করা সবার বিষয় নয়। সে স্পেশাল সাবজেক্ট। হ্যান্ডেল করতে হবে স্পেশাল টিচারকে।’ বিমুগ্ধ একটি ওড়না বের করে সামনে রাখল।
শাহিন ভাইয়ের সারা শরীর ভয়ে, শঙ্কায়, ভালো লাগায় শিহরিত। ভালোবাসার মানুষকে বার বার কাছে পেয়ে হারিয়ে ফেলার কষ্ট যে কতটা প্রখর তিনি বহু বছর ধরে সেটি উপলব্ধি করছেন। হাত রাখলের লাল ওড়নায়। টকটকে সেই রঙ্গে যেন তিনি ডুবে যাচ্ছেন। ভালোবাসা এতো সুন্দর কেন? কেন এতো মায়াময়? কেন মানুষকে সারাদিন নিজের পিছনে ঘুরায়? কেন দৌড়ায়? ভালোবেসে কেন মরে যেতে হচ্ছে করে? শাহিন ভাইয়ের এই মুহূর্তে ভালোবাসার ফিনফিনে বাতাসে ডুবে মরে যেতে ইচ্ছে করছে। মিতুয়া! হায় মিতুয়া! সত্যি কি ভালোবাসা থাকলে সব হয়? সত্যি কি সৃষ্টিকর্তা এতো কিছুর পরেও তাদের মিলিয়ে দিতে চাইছেন? হারিয়ে যাওয়া জিনিস ফিরে পেলে কতটা অনুভূতি শূন্য হয়ে, মুক্ত সাদা পায়রার মত অতি খুশিতে পাগল পাগল লাগে তিনি আজ বুঝতে পারছেন। শাহিন ভাই ওড়নায় নাক ডুবাল। ঠিক করল মিতু আপুকে নিজ হাতে পড়িয়ে দিবে। আচ্ছা মিতুয়া পড়বে তো? না কি আবার পালিয়ে যাবে? ধূসর রঙের মেঘের মত!
_______
নীহারিকা মিতু আপুর চোখ মুছে দিচ্ছে। মেয়েটি এতো কাঁদতে পারে! পৃথিবীতে যেন কাঁদার জন্যেই এই নারীর জন্ম। এতো কান্নার কি হয়েছে? নীহারিকার তো কাঁদতে ইচ্ছে করে না? নীহারিকা প্রচন্ড বিরক্ত হলো। কেউ তার সামনে কাঁদলেও তার ভালো লাগে না। এই যে এখন তার রাগ উঠছে ধীরে ধীরে। একটা ঝারি দিলে কেমন হয়? মিতু আপু চিৎকার করে কাঁদবে তাহলে। নীহারিকা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। বিমুগ্ধ পাশে এসে দাড়াল নিঃশব্দে। নীহারিকা চোখ তুলে চাইল। অসহ্য দৃষ্টি নিয়ে ফিরিয়ে নিলো সেই চাহনি। বিমুগ্ধ সরলো না। দাড়িয়ে রইল। নীহারিকা না চাইতেও বার বার তাকাচ্ছে। একটা সময় বিরক্ত হয়ে বলল,’ কি চাই?’
‘ তোমাকে।’
‘ মানে কি?’
‘ উঠে এসো।’
নীহারিকা কিছু বলতে নিলো। বিমুগ্ধ চোখ গরম করে ইশারা করল। সে না চাইতেও উঠে আসল। একটি রুমে নিয়ে আসল বিমুগ্ধ। সাদা রুমের সব ফার্নিচার সাদা চাদরে ঢাকা। স্টোর রুম এটি? নীহারিকার রাগ চূড়ান্ত। তাকে এমন কদাকার রুমে নিয়ে আসল এই লোক! অপমান! নীহারিকা দরাজ গলায় বলল,’ সমস্যা কি? আপনারা কি চাইছেন?’
‘ সাহায্য করো।’
নীহারিকা চমকে গেল। বিমুগ্ধ জীবনে প্রথম তার থেকে এতো নরম সুরে কিছু চাইছে। সেও কণ্ঠ নরম করে জানতে চাইল,’ কি চাইছেন?’
‘ তোমার মিতু আপুর বিয়ে মিস্টার শাহিনের সাথে আজ এখানেই সম্পর্ণ করতে সাহায্য করো।’
‘ আপনি পাগল হয়ে গেছেন? মিতু আপু জীবনেও বিয়ে করবে না।’
‘ করবে। তুমি বললেই করবে।’
‘ সে তার মায়ের কথা শুনে না আমার কথা শুনবে? আমি এসব করছি না। উল্টো আমি নিজে এর বিপক্ষে। আপনারা এসব কি করেছেন? বাড়ি ভর্তি সবাই আমাদের প্রতিপক্ষে। বুঝতে পারছেন কি হবে বাড়ি গেলে? আমার মা তো আমাকেই ভেঙ্গে দিবে।’
বিমুগ্ধ হাসতে লাগল। পাগলের মত। একটা সোফায় বসল। ধুলো উড়তে লাগল। নীহারিকার শ্বাস কষ্ট বেড়ে যাচ্ছে। সে সাথে করে ইনহেলার নিয়ে আসেনি। এখন যদি এই অঘটন ঘটে তাহলে শেষ। বিমুগ্ধকে এভাবে হাসতে দেখে বলল,’ এভাবে হাসবেন না।’
‘ আচ্ছা হাসব না। কাজটা করছ কি না বলো?’
‘ করছি না।’ নীহারিকার ত্যাড়া জবাব। বিমুগ্ধ হাসল। মেয়েটি কেমন মুখ করেছে! ইশ। একটু থেমে বলল,’ এসব কিছুই আমার প্ল্যান ছিল না নীহারিকা। শাহিন করেছে এসব। তার আজই বিয়ে করতে হবে। আমি শুধু বিয়ের প্ল্যান বলেছিলাম। বাকিটা তিনি করেছে। এতো দ্রুত করবেন ভাবতে পারিনি। তুমি কি চাও না যে বিয়েটা হোক।’
‘ অবশ্যয় চাই। কিন্তু এভাবে নয়।’
‘ মেয়েরা যদি এতো ভালোই হতো তাহলে ছেলেদের এভাবে বৈরাগী সাজতে হতো না।’
‘ কি বলতে চাইছেন আপনি?’
‘ কিছুই বলতে চাইছি না। আমি তো নিজেই এসব চাইছি না। কিন্তু তোমাদের শাহিন ভাই আমাকে ছাড়ছে না। এক বার একটু আইডিয়া দিয়েছি সে তো আমাকেই আব্বা ভেবে বসে আছে। এখন আমি কি করব?’ বিমুগ্ধ মনে মনে ভাবল শাহিন ভাই এই কথা গুলো শুনলে প্রথমে কেমন রিয়েক্ট দিবে? নিশ্চয় বিমুগ্ধের চোয়াল বাঁকাবে।
‘ অন্য ভাবে চিন্তা করুন।’ কঠিন গলা নীহারিকার। স্বাভাবিক ভাবে নিজের ছোট চুলে হাত গলিয়ে বিমুগ্ধ বিশ্রামে মননিবেশ করল। নীহারিকার রাগ হচ্ছে। সে ও তো ক্লান্ত। আর এই লোক কে দেখো কি সুখ জীবনে! অসহ্য। বিমুগ্ধ শীতল কন্ঠে বলল, ‘ মিতুয়াকে এভাবে না হলে কোন ভাবে রাজি করানো যাবে না। সে তোমার বিপরীত ধর্মী হলেও তোমার মতই ত্যাড়া প্রকৃতির।’
‘ আপনি আমাকে ত্যাড়া বলছেন?’ নীহারিকার আগুন চক্ষু। মেয়েটির চোখ কথায় কথায় এতো লাল হয়ে উঠে কেন? বিমুগ্ধের ইচ্ছে করছে এক জগ পানি এই চোখে ঢেলে দিতে। ধীরে সুস্থে সে বলল,’ তুমি সত্যি ত্যাড়া নীহারিকা। প্রচন্ড ত্যাড়া।’
‘ আপনি তো সাধু সন্ন্যাসী তাই না?’ মুখ বিকৃত করল নীহারিকা। বিমুগ্ধ হাসল। অধর ছোঁয়া হাসি। বলল,’ আমি হচ্ছি অসভ্য প্রকৃতির মানুষ। ত্যাড়ামি আমি করি না। ডিরেক্ট একশন। বলো কাজ করবে কি না?’
‘ এখনও উত্তর না।’
‘ হ্যা বলো দ্রুত।’
‘ জোর করছেন?’
‘ হ্যা করছি।’
‘ এভাবে কাজ হবে না।’
‘ তাহলে কিভাবে হবে? ফিল্মি কিছু করব? যেমন তোমায় জোর করে একটি চুম্বন বসিয়ে দিব গালে, কপালে, চোখের পাতায়, বা…..’
‘ নাউজুবিল্লাহ। আপনি আমার হাতে যে কখন খু/ন হয়ে যান আল্লাহ মালুম। বলুন কিভাবে কি করব?’ নীহারিকা দেয়ালের সাথে লেপ্টে দাঁড়াল। বিমুগ্ধ তো বহু দূর। তবুও সে ভীতু সংকীর্ণ। ভয়ে পেয়েছে চোখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে। কিছু মানুষ যখন তখন যা তা করে ফেলতে পারে। বিমুগ্ধ তাদেরই একজন। নীহারিকা খুক খুক করে কাশছে। বিমুগ্ধ মুগ্ধ হাসল। বলল ‘ শাহিন চাইছে মিতুয়া কোন মতে বিয়ে করে নিক। আগে যে তার রাগ ছিল তা এখন নেই। শাহিন থেকে প্রতিশোধ নিয়ে তিনি এখন অত্যন্ত শান্ত। আমি শুধু চাইছি তারা ভালো থাকুক। তুমি কি চাইছ না?’
নীহারিকা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। বিমুগ্ধ মানুষকে নিয়ে এতো ভাবে কবে থেকে? তাহলে সব সময় কেন বলে, আমি স্বার্থপর আমি স্বার্থপর!
‘ চুপ করে আছ কেন? মিতুয়া শাহিনকে ভালোবাসে।’
নীহারিকা চুপ করে আছে। এই জায়গায় সব শেষ। আর কিছুই চলে না। বিমুগ্ধ ধূলো বালি মাখা কাপড়ে মাথা ঠেকিয়ে বলল,’ ভালোবাসা কষ্টদায়ক নীহারিকা। তোমাকে এটি প্রচন্ড কষ্ট দিবে। যন্ত্রণায় কুণ্ঠিত করে তুলবে। তুমি বুঝতে পারবে। অনুভব করতে পারবে। ক্ষতবিক্ষত হবে। কিন্তু কাউকে বুঝাতে বা দেখাতে পারবে না। ভালোবাসা এতটাই দুর্বিষহ বেদনার নাম। যা তোমার হৃদয় আঙ্গন ভেঙ্গে দিবে। গুঁড়িয়ে দিবে। অথচ তুমি শব্দ বিহিন হয়ে ব্যথায় জর্জরিত হবে। নিপীড়িত হবে। ভালোবাসার অন্য নাম যাতনা। এর মাঝে বেঁচে থাকই ভালোবাসা।
নীহারিকা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। বিমুগ্ধ চোখ বুঝে ধূলোবালিতে শুয়ে রইল। সে জানে নীহারিকা যাবে। ব্যাকুল হয়ে মিতুয়ার পিছনে ঘুরবে। রাজি করাবে। মিতুয়াদের বিয়ে হবে। এক অন্যরকম বিয়ে। অবাকতাময় বিয়ে।
____________
চলবে………….
ভুলত্রুটি আল্লাহর দেওয়া মহান গুন ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টি দিয়ে দেখবেন। নিশ্চুয়ই ক্ষমা একটি সুন্দর গুন।
@হাফসা_আলম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here