#প্রিয়তার_প্রহর
বোনাস পর্ব
লেখনীতেঃ #বৃষ্টি_শেখ
প্রিয়তা এক অন্যরকম নারীতে রূপান্তরিত হয়েছে। আগে তার দিনের অগ্রভাগ কাটতো ফোন টিপে,ভাইয়ের সাথে আড্ডা দিয়ে আর নয়তো টিভি দেখে। এখন সেসবের কিছুই হচ্ছে না। বরং বাইরে বাইরেই কেঁটে যাচ্ছে সময়। আরহামকে সময় দেওয়া হচ্ছে না। নিজেকে নিয়েও ভাবতে ভালো লাগে না প্রিয়তার। বিকেলে আজ ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরল প্রিয়তা। সদর দরজার সামনেই আরহামকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখল। ছেলেটার গা উন্মুক্ত। নীল রঙের একটি ঢিলঢালা প্যান্ট পরেছে। প্রিয়তাকে দেখে এক দৌড়ে ছুটে আসল আরহাম। হেসে বোনের কোলে উঠতে চাইল। ক্লান্ত থাকা সত্বেও আরহামের নরম শরীরটা বুকে আগলে নিল প্রিয়তা। ছেলেটাকে দেখলে বোঝাই যায় না ওর পাঁচ বছর। যে কেউ দেখে বলবে বড়জোর চার বছর। রোগা পাতলা বলে আরো ছোট লাগে। উদাম শরীরে আরহামকে আরো মোহনীয় দেখায়। সমস্ত সৌন্দর্য ভর করে ছেলেটাতে। ভাইকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে আরাম অনুভব করলো প্রিয়তা। ক্লান্তি দূর হয়ে গেল যেন। প্রশান্তিতে চোখ বুজে নিল। আরহামের নাকে চুমু খেয়ে বললো,
” গোসল করো নি? বিকেল হয়ে গিয়েছে।
আরহাম প্রিয়তার মতো ভ্রু কুঁচকে তাকাল। পিটপিট করে চোখের ঘন পাপড়ি একত্রে করল। আগ্রহী কণ্ঠে বললো,
” তুমি কি করে জানলে আমি গোসল করিনি?
” আমি বুঝি। গা খালি কেন তোমার?
” গুসল করতে ভালো লাগে না। শীত লাগে।
“গরম পানি করে দেই? গোসল না করলে মন ও শরীর দুটোই খারাপ লাগে বুঝলে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হয় সবসময়। তাহলে সবাই বাচ্চাদের ভালোবাসে।
হাঁটতে হাঁটতে ঘরে এলো প্রিয়তা। গ্যাসের চুলায় পানি বসাল পাতিলে। হালকা গরম হলেই নামিয়ে নিল পাতিল। ঠান্ডা পানির সাথে গরম পানির মিশ্রণে আরহামের গায়ে ঢালল। খিলখিল করে হেসে উঠল আরহাম। এখন কোন অভিযোগ নেই তার। গায়ে পানি ঢালতে আরাম বোধ হচ্ছে। গরম পানির পরিমাণ একদমই হালকা দিয়েছে প্রিয়তা। ঠান্ডা এখনো সেইভাবে পড়েনি।
গা মুছে দিতে দিতে প্রিয়তা আজকের সব কথা জানতে চাইল। সারাদিন আরহাম কি কি করেছে সেসবের কৈফিয়ত চাইল। আরহাম কথার মাঝে একসময় ডেকে উঠল। বললো,
“আপু।
প্রিয়তা আরহামের শরীরে লৌশন দিতে দিতে বললো,
” বলো।
” না কিছু না। অন্যরকম ভঙ্গি করলো আরহাম।
” কি বলো?
” আমার র্যাকেট কই? তুমি না আনবে বলেছিলে?
প্রিয়তা অপ্রস্তুত হলো। আজকে ভার্সিটির মাসিক ফি দিয়ে এসেছে। তবুও কম দামি র্যাকেট কিনে দিতে চেয়েছিল আরহামকে। কিন্তু আসার পথে সে কথা ভুলেই গিয়েছে সে। মনে নেই বললেই আরহাম মন খারাপ করবে। প্রিয়তা বোকা হেসে বললো,
” দোকানে ভালো র্যাকেট পেলাম না ভাই। কাল মার্কেটে তোমায় নিয়ে গিয়ে কিনে দিবো। কাল তো ফ্রাইডে। আমি তো আছিই। একসাথে খেলবো।
আরহাম মাথা নাড়ল। প্রিয়তার শরীর ভালো লাগছে না। মাথা ব্যথা করছে। একটু বিশ্রাম নিয়ে গোসল করবে ভাবল প্রিয়তা।
_______________
ছাদে বাতাস নেই। তিন তলা থেকে চারপাশটা ভিষণ সুন্দর লাগছে। অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়েছে চারপাশ। প্রিয়তার চা খাবার অভ্যেস নেই। তবে আজ চা নিয়ে ছাদে এসেছে সে। আকাশে পাখিগুলো উড়ে বেড়াচ্ছে। বাড়ি ফেরার তাড়া বুঝি সকলেরই আছে। প্রিয়তার মায়ের কথা মনে পরল। কি সুন্দর তার মা অন্য একটা পুরুষের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রীতিলতার নেই কোন পিছুটান, নেই কোন মাতৃত্বের টান। চায়ে চুমুক দিয়ে প্রিয়তা আকাশের কয়েকটি ছবি তুলল। কয়েকটা ছবি তুলল নিজের ও। প্রিয়তার চুলগুলো ছেড়ে রাখা। ঢিলেঢালা সুতির কামিজ পড়েছে সে। মিসেস নাবিলা প্রিয়তার ছাদে থাকাকালীন সময়ে ছাদে এলেন। প্রিয়তাকে দেখে এগিয়ে এলেন সামনে। পাশে এসে দাঁড়িয়ে বললেন,
“আরহাম কোথায়? আর আমাদের বাড়ি আসে না কেন।
প্রিয়তা পাশ ফিরে তাকাল। কয়েকদিনের মাঝেই এই মহিলা খুব আপন হয়ে উঠেছে প্রিয়তার। মাঝখানে যেই ঘটনা ঘটল তাতে কারো প্রতি বিশ্বাস সেইভাবে নেই বললেই চলে। তবুও পরিচিত মানুষ হিসেবে ধরা যায়। প্রিয়তা মিথ্যে বলে এ বাড়িতে উঠেছে। মিসেস নাবিলা জানেন না প্রিয়তার পরিবারের ঘটনা, জানেন না প্রিয়তা ব্রোকেং ফ্যামিলি থেকে এসেছে। চায়ে আবার চুমুক দিয়ে প্রিয়তা বললো,
” আমি যেতে নিষেধ করেছি আন্টি।
” যা হয়েছে তা ভুল হয়েছে। কিন্তু আমরা তো কিছু করেনি। কেন ভুল বুঝছো?
” এটাই তো আন্টি। আপনি কিছু করেননি বলেই আমি লজ্জিত হয়েছি। আপনি যদি জোর দেখিয়ে বলতেন আমি বা আরহাম এসব করতে পারি না, তাহলে বোধহয় এতটা অপমানিত হতাম না আমরা। অবশ্য আমরা নতুন ভাড়াটিয়া। এতটা বিশ্বাস করবেন-ই বা কি করে? দোষ আমারই
” সাবিনা তো ক্ষমা চেয়েছে। ক্ষমা করে দাও।
” হ্যাঁ চেয়েছে। কিন্তু উনার কণ্ঠে অনুতপ্ততা ছিল না, ছিল না লজ্জিত বোধ।
” বুঝেছি। তুমি শুনবে না আমার কথা। যা ভালো বুঝো করো।ভালো থাকো। নিজের খেয়াল রেখো।
” আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে আন্টি। আমার মনে হয় আজ তা বলা প্রয়োজন। মিসেস নাবিলা চলে যেতে নিলে কথাটি বললো প্রিয়তা। দৃঢ় কণ্ঠ তার। কাঠিন্যতা বজায় চোখেমুখে।
” কি বলবে? কৌতুহলী চাহনি মিসেস নাবিলার।
” আমার বাবা-মা বিদেশে নন। উনারা বাংলাদেশেই আছেন। আমি আপনাকে মিথ্যে বলেছি।
মিসেস নাবিলা অবাক হলেন। বললেন,
” তাহলে কোথায় তারা? মিথ্যে বলেছো কেন?
প্রিয়তা বুঝতে পারল তার চোখ আর নাক চুলকাচ্ছে। যেকোন সময় টুপ করে নোনা পানি ঝরবে। প্রিয়তার এটা বদ অভ্যাস। কাউকে কোন দুঃখের কথা বলতে গেলে বেশি দুঃখ লাগে। যাকে বলা হচ্ছে তার প্রতি যদি বেশি এসপেক্টটেশন থাকে তাহলে আরো বেশি কান্না পায়। প্রিয়তা আবেগঘন মুহুর্ত কাটানোর চেষ্টা করল। বললো,
“আমার আব্বু আম্মু আমার ষোল বছর বয়স থাকতেই পরকিয়ায় লিপ্ত হয়েছিলেন। আম্মু আব্বুকে রেখে অন্য এক পুরুষের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। আব্বু জেনে গিয়েছিলেন আম্মুর এই অবৈধ সম্পর্কের কথা। আম্মুকে বারবার বুঝিয়ে বলেছিলেন আব্বু। কিন্তু অন্ধ প্রেমে আটকে আম্মু আব্বুকে কোন রকম সুযোগ দেননি। তাই তো চাহিদা পূরণের জন্য অন্য এক নারীর সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন আব্বু। তখন এই সম্পর্কে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম আমি আর আরহাম। কারণ তাদের দুজনের নতুন সঙ্গী আমাদের মানতে চায়নি। আব্বুর প্রেমিকা শুধু আব্বুকেই চেয়েছিল। আব্বুর সাথে বাড়তি সন্তানকে মানবে না বলে জানিয়েছিল। অপর দিকে আম্মুর প্রেমিকও স্ত্রীর সাথে এত বড় একটা মেয়েকে সংসারে তুলবে না বলে জানিয়েছিল। তাই এই সম্পর্ক এভাবেই অবৈধ ভাবে চলছিল। এতগুলো দিন শেষে আমি বুঝতে পারলাম এভাবে আর চলতে পারে না। আমাকে কিছু করতে হবে। আব্বু আমার বিয়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল। আরহামকে আব্বুর প্রেমিকা মেনে নিয়েছে খুব তোষামোদ করে। দুজনেই ভালো সুযোগ পেলেন। আমাকে তাড়িয়ে নতুন জীবনে পা রাখার চেষ্টা করতে লাগলেন। কিন্তু আমি জানি আরহামকে তার সৎ মা ভালো বাসবে না, ভালো রাখবে না। আর আমিও ততক্ষণাৎ বিয়ে করে নিজের স্বপ্ন বিসর্জন দিতে পারবো না। তাই বাবার বাড়ি থেকে আমি চলে এসেছি। একেবারের জন্য চলে এসেছি। আর আমরা চলে আসার কয়েকদিনের মধ্যেই আব্বু আম্মু দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। তারা সুখে আছেন। এদিকে আমরা..
মিসেস নাবিলার চেহারা পাল্টে গেল মুহুর্তেই। প্রিয়তা এত বড় মিথ্যে বলবে তা বোধহয় ভাবেননি তিনি। তিনি ভাড়া দিয়েছিলেন এমন একটি মেয়েকে যার কিনা বাবা-মা বিদেশে থাকে। কিন্তু তা তো নয়।
মিসেস নাবিলা গম্ভীর স্বরে বললেন,
” এসব কথা আমাকে আগে বলোনি কেন?
” আমি যখনই কোন বাড়িওয়ালাকে বলেছি আমরা ব্যাচেলর থাকবো, তখনই তারা ফিরিয়ে দিয়েছে। তাই মিথ্যে বলতে বাধ্য হয়েছি।
” এটা ঠিক করোনি প্রিয়তা।
” আপনার কি মতামত আন্টি? আপনি যদি না চান তো আমরা এই বাড়িতে থাকবো না।
“গেলে দু মাস আগে থেকে বলে দিতে হয়। এটা রুলস। তোমার ইচ্ছে।
মিসেস নাবিলা হনহন করে চলে গেলেন। প্রিয়তা মুচকি হেসে অন্যদিকে চাইল। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে ভালো লাগল না। একদম ঠান্ডা, মিষ্টি হয়ে গিয়েছে চা। প্রিয়তা বেরিয়ে আসার আগমুহুর্তে প্রহর হেডফোন গুঁজে ছাদে প্রবেশ করলো। প্রিয়তার দিকে এক ঝলক চেয়ে কথা বলায় মনোযোগ দিল। প্রিয়তা তাকিয়ে রইল অহর্নিশ। প্রহরের ফোনে কথা শেষ হতেই প্রিয়তা জিজ্ঞেস করলো,
” উনি ধরা পড়েছে? কি যেন নাম?
” জাফর আলী।
” এর সাথে আমি কিভাবে যুক্ত হলাম? মানে উনি কেন আমার সাথে দেখা করতে এলেন জানতে পেরেছেন?
” নাহ্। জানার চেষ্টা করছি।
‘ ওও।
“প্রিয়তা। প্রহরের নরম কণ্ঠ।
” জি?
” আরহাম মন খারাপ করে বসে আছে সিড়িতে। কেন?
আরহাম মন খারাপ করে সিঁড়িতে বসে আছে? মনে প্রশ্ন জাগল প্রিয়তার। দ্রুত পায়ে দু তলার সিঁড়িতে নেমে এলো। দেখতে পেল সিঁড়ির মাঝে দু গালে হাত দিয়ে বসে আছে আরহাম। ছেলেটার মুখটা শুকনো। প্রিয়তা আরহামের পাশে এসে বসল। কি বলবে ভেবে নিল। নিচু কণ্ঠে বললো,
“মন খারাপ কেন আমার ভাইটার?
আরহাম তাকাল প্রিয়তার দিকে। ছেলেটার চোখের মণি ঘোলা। মুখটা মলিন। বোনের গা ঘেঁষে বসে আরহাম বললো,
” আব্বুর কাছে যাবো আপু। ভালো লাগছে না।
প্রিয়তা জড়িয়ে নিল আরহামকে। মাথায় হাত বুলিয়ে দিল। বললো,
” আমি তো আছি। আব্বু কয়েকদিন পর এসে আমাদের নিয়ে যাবে। মন খারাপ করো না।
__________________
জাফর আলীর সম্পর্কে শুধু বাংলাদেশের মানুষই নয়, অন্যান্য দেশের মানুষ ও জেনে গিয়েছে ইতিমধ্যে। ইন্টারনেটে ঢুকলেই জাফর আলীর ছবি দেখা যাচ্ছে। পুরো দেশের মানুষ হতবাক। এত বড় একটা ব্যবসায়ের লুকিয়ে রাখা সত্য এত জঘণ্য?
থানায় ঢুকে একটা লোক জাফরের সাথে দেখা করে এসেছে। পুলিশ লোকটাকে চেক করে দেখা করতে দিল জাফরের সাথে। জাফর হাজতে বসে আছে। কিছু একটা ভাবছে বোঝা যাচ্ছে। লোকটা জাফরকে দেখেই মাথা নিচু করল। বললো,
” আপনি ঠিক আছেন স্যার?
জাফর রেগে গেল। এই মুহুর্তে এ ধরনের কথা শুধু বলদ রাই বলবে। এই সব লোক নিয়ে কিভাবে সে কাজ করে? এখন এ প্রশ্ন করার সমৎ? রাগান্বিত কণ্ঠে জাফর বললো,
” আমাকে দেখে কি তোমার ঠিক মনে হচ্ছে? এই রকম প্রশ্ন করো কিভাবে?
” আপনি ওই মেয়েটাকে রিজেক্ট করে দিলেন কেন স্যার? ওই পুলিশ অফিসারের জন্য মেয়েটা যথেষ্ট ছিল। এমন ফাঁদে ফেলতো যে অফিসার পুলিশ গিরি ছেড়ে দিত। নারীর ফাঁদ বড় জটিল ফাঁদ স্যার।
জাফর হাসল। বললো,
” ওই অফিসারের জন্য আমি আরেকটা মেয়েকে সিলেক্ট করেছি। গতকাল যেই মেয়েটার সাথে দেখা করলাম, প্রিয়তা। প্রিয়তা মেয়েটাকে টোপ হিসেবে ধরবো বুঝলে? অফিসারের সাথে মেয়েটার খুব ভাব। শুনেছি পাঁচ বছরের এক ভাই ছাড়া মেয়েটার আর কেউ নেই। খুবই গরীব জীবনযাপন করছে। মেয়েটাকে কাজে লাগাতে হবে।
” মেয়েটা মানবে স্যার? যদি বলে দেয় অফিসারকে? সব ঘেটে যাবে না?
” আগে আমাকে বের করো এখান থেকে। আমি দেখে নিবো। তোমরা রিল্যাক্সড থাকো।
” আপনি বললে এখনই বের করতে পারি আপনাকে স্যার। সবই ঘুষের মামলা। উপরমহলে একটু বেশিই টাকা ঢালতে হবে। ওই অফিসার আপনার কিচ্ছু করতে পারবে না।
” কাল এখান থেকে আমি বের হবো। অফিসার বুঝবে আমাকে থানায় আনার শাস্তি কতটা ভয়াবহ। আমাকে আটকে রাখা কি এত সহজ? পুরো বাংলাদেশের সাতটা জেলায় আমার ব্যবসা। বড় বড় মন্ত্রী, ব্যারিস্টারের ডান হাত আমি। এত সহজে আমাকে হারাবে এই নাদান পুলিশ অফিসার? ফু দিলেই তো উড়ে যাবে।
হাসল দুজনে। প্রতিশোধের নেশা চাপল জাফরের মনে। এতদিনের সুনাম একদিনে বদলে গেল, এত টাকার লস হলো। এমনি এমনি ছেড়ে দেবে পুলিশকে?
_________________
অফিসে একটা নতুন কেস এসেছে। মাদকের ব্যবসা চলছে পুলিশের অগোচরে। পুরো টিমটাকে ধরতে হবে। কেসটা নেয়ার আগে প্রহর আর তার টিমকে সম্মানিত করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আগামীকাল সকালে সম্মাননা দেওয়া হবে আর বিকেলে হবে অভিযান। থানার সকলেই এ নিয়ে খুব খুশি। তানিয়া এত বড় একটা জয়ে অংশ নিতে পেরে ভিষণ খুশি। তাই তো ট্রিট দিতে এসেছে কফিশপে। কফিশপে স্যারদের সাথে চা খেতে খেতে তানিয়া বললো,
” ইতিশা ম্যাম ও সম্মান পাওয়ার যোগ্য তাইনৃ। উনি আমাদের তথ্য না দিলে আরো অনেক দিন লাগতো কেসটা হ্যান্ডেল করতে।
প্রহর সায় জানাল। বললো,
” ইতিশা ম্যাম সম্মাননা অবশ্যই পাবেন। সেসব পরে ভাবো। নতুন কেসটা নিয়ে কিছু ভেবেছো? অভিযানে যেতে হবে। ব্যবসার আসল জায়গাটা খুঁজে পেতে হবে। হাতেনাতে ধরতেই হবে।
তানিয়া বললো,
” কিন্তু রিস্ক আছে এই কেসটায়। পুরো টিমকে কিভাবে যে ধরবো। এত ঝামেলার কেস কেন আমাদেরই দেওয়া হয়?
ইহান বলে উঠল,
” এর চেয়ে বড় বড় কেস পেয়েছি তানিয়া। তোমার ভয় হলে তুমি যেও না। আমরা তোমাকে নিতেও চাইছি না। কখন কোন বিপদ হয়।
” আমি মোটেই ভিতু নই স্যার। আমি আপনাদের সাথে যাবো। পুলিশের পোশাক পড়ার পর আমি আর আপনাদের বন্ধু থাকি না। তাই এত সহানুভূতি দেখাতে হবে না। গর্বের সাথে বললো তানিয়া।
প্রহর গা এলিয়ে চেয়ারে বসল।বললো,
” অভিযান থেকে আমরা নাও ফিরতে পারি তানিয়া। ভেবে দেখো। ব্যবসাটা অনেক বড়। লোকসংখ্যা প্রচুর। আমাদের বাংলাদেশের পুলিশ গুলো শুধু নামেই পুলিশ। প্রকৃত পুলিশ সংখ্যা যেমন কম, তেমনি সাহস, পরিশ্রম ও কম। ওখানে কোথা থেকে কে এসে এট্যাক করবে আমরা ধারণাও করতে পারছি না। কালকের দিনটা আমাদের জন্য যেমন খুশির, তেমনি ভয়ঙ্কর। নিজেকে তৈরী রাখো।
চলবে?
(বিঃদ্রঃ প্রিয়তার জন্য ভয় পাবেন না। অনেক কিছুই বাকি আছে মেয়েটার জীবনে।)