#প্রিয়তমা_প্রজাপতি🩷 [পর্ব-০৭]
~আফিয়া আফরিন
অনিন্দিতা সকাল সকাল তার বাবার পাশে এসে বসলো। আলম খন্দকার অনিন্দিতা কে এই সময় দেখে অবাক হলেন। অবাকের রেশ ধরেই জিজ্ঞেস করলেন, ‘কি ব্যাপার মা এ সময় আমার কাছে? কিছু বলবে?’
অনিন্দিতা ঘাড় কাত করে সম্মতি জানালো। তারপর থেমে থেমে বলল, ‘আব্বু তুমি যে সেদিন বিয়ের কথা বলেছিলে, তাতে আমি রাজি। কিছুদিন ভেবে সময় নিলাম একটু।’
আলম খন্দকার অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি সত্যি রাজী?’
‘হ্যাঁ আব্বু।’
‘তাহলে আমি কি ওদের সাথে কথাবার্তা বলব? এরই মধ্যে একদিন বাড়িতে আসতে বলি, কি বলো?’
‘তোমার যেটা ভালো মনে হয় তাই করো।’
অনিন্দিতা বাবার সাথে বাদবাকি কথাবার্তা শেষ করে ঘরে এল। বিছানায় লম্বা হয়ে শুয়ে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিলো। কেউ বোধহয় বুকের উপর কয়েক টনের পাথর বিছিয়ে দিয়েছে। নিঃশ্বাস নিতে এতো কষ্ট!
বিয়ে করার সিদ্ধান্ত টা হুট করেই নেওয়া, মিফান কে ভুলে যাওয়ার উপায় মাত্র।
অনিন্দিতার জীবনে তার মা-বাবার উপরে আর কিছু আছে বলে মনে হয় না। ছোটো থেকে বাবা খুব আদরে আদরে বড় করেছে। না চাইতেও ছোটখাটো চাওয়া পাওয়া গুলো পূরণ করেছে। অনিন্দিতার মনে পড়ে না, সে চেয়েছে আর তার সেই আবদার অপূর্ণ রয়ে গেছে। বরং প্রতিবার চাওয়ার থেকে বেশি পেয়েছে। মা-বাবা তাকে কখনো ‘মা/আম্মু’ সম্বোধন ছাড়া কথাই বলত না। এতো ভালোবাসা অনিন্দিতার মস্তিষ্ক বেঁধে দিয়েছে, বিবেক আটকে দিয়েছে। বারবার মনে হয়, বাবার মুখের উপর কিছু বলা তার পাপ; বিশাল বড় অপরাধ। আর এই অপরাধ সে কিছুতেই করতে পারবেনা। দরকার হলে নিজের বুকে পাথর চাপা দিয়ে রাখবে।
মিফান ছোটো মানুষ, পাগলামি করছে। এই পাগলামি হয়তো কিছুদিন পর সেরেও যাবে। কিন্তু অনিন্দিতা নিজের মনকে আটকে রাখার মতো কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছিল না। তাই, অনেক ভাবনা চিন্তা করে এই বিয়ের সিদ্ধান্তে এলো।
মিফানের কথা শুনলে তার বাবা মা কি রকম রিয়েক্ট করবে সেটা তার জানা নেই। কিন্তু তাদের মনোভাব যে ইতিবাচক হবে না, এটা অনিন্দিতার ভালো করেই জানা আছে।
জীবনে প্রতিটি সুখে দুখে মা-বাবা ছায়ার মতো পাশে ছিলেন। কত ঝড় ঝাপটার মধ্যেও কখনো ভুল বুঝেন নাই। বরং সব সময় মেয়েকে সাপোর্ট দিয়ে গেছেন।
সেই অনিন্দিতা এখন যদি মা-বাবার অবাধ্য হয়ে যায়, তাহলে কেমন হবে? মিফান এর সাথে তার সম্পর্কটা মানার ছোটখাটো একটা চান্স ছিল, তাও সেটা বয়সের জন্য পিছিয়ে গেল।
.
.
মিফান বারান্দায় হেলান দিয়ে আকাশের চাঁদ তারা গণনা করছিল। মনটা তার ইদানিং খুব বিষন্ন। আর হবেই না কেন, অনিন্দিতা যে কথা বলে না?
দেখা হলেও এড়িয়ে চলে যায়। এমন কেন করেন এটা? একটু ভালোবাসাই তো চাইছে মিফান, জায়গা সম্পত্তি তো আর চেয়ে বসে নাই। ভালোবাসার বদলে অনিন্দিতা শুধু তাকে এক বুক হাহাকার দিয়ে যাচ্ছে।
কি হয় সব নিয়ম ভেঙ্গে একটু ভালোবাসলে? অনিয়ম করলে কি খুব সমস্যা হবে? ফ্যামিলি আর কয়দিন মানবে না? এক বছর, দুই বছর অথবা পাঁচ বছর; কিন্তু একটা সময় পড় তো ঠিকই মেনে নিবে। তাহলে এতো হাহাকার কেন? অনিন্দিতা এই সামান্য জিনিসটা বুঝতে পারছে না কেন?
তবে কি অনিন্দিতাকে নিয়ে প্রতি মধ্যরাতে লাল হলুদ সোডিয়াম নিয়ম আলোয় কিন্তু এই অচেনা শহরটাকে দেখার প্রয়াস অপূর্ণই থেকে যাবে?
মিফান আকাশের দিকে তাকিয়ে কি মনে করে হাসল।
ফিসফিসিয়ে বলল, ‘তুমি মানেই দম বন্ধ করা হাহাকার দুঃখ, তুমি মানেই এক বুক কষ্ট, তুমি মানে আমার শূন্যতা, তুমি আমার হৃদয় জমে থাকা আহত স্মৃতির ভিড়, তুমি আমার সময়ের সাথে বাড়তে থাকা অভিমান, তুমি আমার কল্পনাতে ডুবে থাকা এক অনন্য রমনী, তোমার মাঝে আমার নিজের ছায়া লুকায়িত! সবকিছু শেষে তুমিই আমার দুঃখ, তুমিই আমার ভালোবাসা। তোমার মত এত যত্ন করে দুঃখ তো কেউ আমায় দিতে পারেনা, তোমার মত এত যত্ন করে কেউ ভালবাসতে পারে না। দুঃখ ছাড়া কি ভালোবাসা বাঁচে?’
মিফানের মনে হল, অনিন্দিতা কি কখনো তাকে আসলেই ভালবেসে ছিল?
অনিন্দিতার এক দিকের খবর মিফান জানেনা। আজ সকালেই ক্যাম্পাসের গেটে অনিন্দিতার জন্য অপেক্ষা করছিল। অনিন্দিতাকে দেখতে পেয়েই তার পথ রোধ করে দাঁড়ালো। অনিন্দিতা কিছুটা হকচকিয়ে প্রশ্ন করল, ‘রাস্তা ছাড়।’
‘বলো আমায় ভালোবাসো, তাহলে ছেড়ে দেবো।’
‘পাগলামি করিস না মিফান। আমার একটা ইম্পোর্টেন্ট ক্লাস আছে, তোর এসব ফালতু পাগলামির জন্য আমি আমার ক্লাস তো মিস দিতে পারব না। তোর বকবক শুনে আমি আমার ইম্পরট্যান্ট টাইমও নষ্ট করতে পারবো না। সর সামনে থেকে।’
‘সরবো না।’ চোয়াল শক্ত করে উত্তর দিল মিফান।
‘তোর কি একটুও নিজস্ব ইগো নেই? তোকে এত দূর দূর করি, তবুও কি তোর লজ্জা শরম হয় না। সেলফ রেসপেক্ট নাই তোর?’
‘যাকে ভালোবাসা যায়, সাথে এত ইগো, সেলফ রেসপেক্ট বা ফরমালিটি কিছুই দেখানো যায় না। তাকে শুধু ভালবাসতে হয়, নিজের গতিবেগে। আর আমার ইগো আসলেই নাই, ইগো তো তোমার। আগামীকাল তো বেঁচে নাও থাকতে পারি, ভালবাসলে আর এত অপেক্ষা করিও না।’
‘অপাত্রে রে ভালোবাসা দান করছিস মিফান।’
মিফন এক হাতে কপালে থাকা ঘাম মুছল। হাত-পা নাড়িয়ে, মাথা ঝাঁকিয়ে উগ্র কণ্ঠে বলল, ‘আমার ভালোবাসা আমি পাত্রে দান করবো না অপাত্রে দান করব সেটা সম্পূর্ণ আমার ব্যাপার। তোমার কি সমস্যা তাতে? তুমি কি তোমার ভালোবাসা অপাত্রে দান করছো? তুমি তো তোমার ভালোবাসা যক্ষের ধনের মতো আগলে রেখেছো! তার বেলায় কিছু বলেছি আমি?’
‘তোর এই আবেগ মাখা কথাগুলো আমার কাছে বিষ পানের মত লাগতেছে। মানুষ তার সুবিধা অনুযায়ী ভালোবাসে, আর সেই সুবিধা অনুযায়ী ভালোবাসার ইতি টানে।’
‘তোমার কি আমাকে সুবিধাবাদী মনে হয়?’
‘এইতো তুই সুবিধাবাদী না, কিন্তু পরবর্তীতে যে কখনো হবি না তার কি গ্যারান্টি আছে?’
মিফান আর কিছু বলল না। অনিন্দিতা পিছপা হল, তার ক্লাসের সময় হয়ে আসছে।
মিফান শুধুমাত্র পেছন থেকে একটা কথাই তার উদ্দেশ্যে বলল, ‘যেখানে চাইলেই নতুন কাউকে ভালোবাসা যায়, সেখানে আমি দিনকে দিন অবহেলা সহ্য করে যাচ্ছে শুধুমাত্র তোমার ভালোবাসা পাওয়ার প্রতীক্ষায়!’
অনিন্দিতা এগিয়ে এলো। মিফানের উদ্দেশ্য কিছু তিক্ত বাক্য ছুড়ে দিল, ‘আমার প্রতীক্ষায় আর তোকে কখনোই বসে থাকতে হবে না। আব্বু আমার জন্য পাত্র দেখেছে। দুই-একদিনের মধ্যে হয়তো কথাবার্তা বলে সবকিছু ফাইনাল হয়েও যাবে। বিয়ে ঠিক হলে তো খবর পাবি, এসে দাওয়াত খেয়ে যাস।’
আর একটা মুহূর্ত ও অনিন্দিতা থামল না। হন হন করে হেঁটে চলে গেল। আর মিফানের সমস্ত পৃথিবী ওখানেই থমকে গেলো। চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে ‘তোমাকে আমার খুব দরকার!’ কিন্তু যে মানুষটা হারিয়ে যাচ্ছে তাকে কি এসব বলা যায়?
প্রজাপতি, হ্যাঁ তার প্রজাপতি তার থেকে উড়াল দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। এটা কি কখনো সম্ভব?
অবনীর কাছে ফোন দিয়ে খোঁজখবর নিল। জানতে পারল, আসলেই অনিন্দিতার বিয়ের কথাবার্তা চলছে। বাকি পথটুকু হেঁটে মিফানের বাড়ি যাওয়ার আর শক্তি রইলো না।
একটা বড় গাছের ঝুপড়ির নিচে বসে পড়লো। দুহাত মাথায় চেপে ধরল। এত দুর্বল প্রেমিক কেন সে? এত দুর্বল তার প্রেম! কষ্ট হচ্ছে ভীষণ, লো ফিল হচ্ছে। বারবার নিজেকে দোষারোপ করছে মিফান, হয়তো কমতিটা তার ভালোবাসার মধ্যেই রয়েছে।
সে কেন মজনুর মতো সাহসী প্রেমিক হতে পারছে না? কেন নিজের চাচা চাচির কাছে গিয়ে অনিন্দিতাকে ভিক্ষে চাইতে পারছে না। নাহ, অনিন্দিতা তো তার জীবনে ভিক্ষা করে পাওয়া কোন বস্তু হতে পারে না। সে তো অনেক সাধনার।
পৃথিবীতে এত কিছু থাকতেও মিফান নিজের অস্তিত্বের চেয়েও বেশি ভালোবেসে ফেলেছে অনিন্দিতার অস্তিত্বকে। এ বাঁধন কি এত সহজে ছিন্ন করা যায়? সৃষ্টিকর্তা কি এতটা নিষ্ঠুর হবেন?
টলমল পায়ে কোনমতে মিফান বাড়ি এলো। শরীর টা টেনে নিয়ে আসতে প্রচুর কষ্ট হয়েছে, ভারি ভারি লাগছে নিজেকে। বাড়ি ফিরে বিছানায় গা এলিয়ে দিল। আর কিছু তার মস্তিষ্কে আসছে না। যা হচ্ছে হোক। পুরো দুনিয়া অন্ধকার লাগছে, চোখ ঝাপসা থেকে ক্রমশ ঝাপসা হয়ে আসছে।
রাতের দিকে মিফানের গা কাঁপিয়ে জ্বর আসে। জ্বরের মাত্রা এতটাই বেশি ছিল যে, সে রাতে আর জ্ঞান ফিরে নাই। মিফানের মা টের পাওয়া মাত্র ডাক্তার ডেকে আনেন।
ডাক্তার কিছুক্ষণ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানান, ‘শরীর দুর্বল। মাথায় বেশি চাপ পড়ার কারণে এই অবস্থা হয়েছে। একটু খেয়াল রাখবেন ছেলের প্রতি, এইটুকু ছেলের আবার এত চিন্তা কিসের?’
প্রেসক্রিপশন লিখে দিয়ে তিনি চলে গেলেন।
সকালবেলা ও মিফানের অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না। তবে হ্যাঁ, জ্ঞান ফিরে ছিল তখন।
.
.
আলম খন্দকার ইতিমধ্যে পাত্রের বাসায় কথাবার্তা বলা শুরু করেছেন। ওই পাশ থেকে তারা জানিয়েছেন, সময় করে এসে একদিন অনিন্দিতাকে সরাসরি দেখে যাবেন। সেই দিন আন্টি ও পরিয়ে যাবেন।
কথাবার্তা বলে দিন তারিখ ঠিক করা হলো আগামী পরশুদিন। আলম খন্দকার তার ছোট ভাই রাশেদ খন্দকারের সাথেও এই বিষয়ে কথা বললেন। রাশেদ খন্দকারই মিফানের বাবা। মূলত তার কাছ থেকেই অনিন্দিতার খবর টা জানতে পারল মিফান। এই কয়েকদিন একেবারে বেতাল অবস্থা ছিল তার, ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করতে পারতো না। উঠে দাঁড়ানোর শক্তিটুকু অবশিষ্ট ছিল না। ছাড়া ছাড়া ঘুম হতো। জেগে থাকাটাও তার পক্ষেই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। বারবার মনে পড়ে যায় অনিন্দিতার কথা।
অনিন্দিতাকে পাকা দেখতে আসার খবর শোনার পর তো বুকের ভিতর উথাল পাথাল ঝড় পুনরায় শুরু হয়েছে। কি করবে সে?
কি নিয়ে দাঁড়াবে চাচা চাচির সামনে? একটা চাকরি নেই তার? তাতে সমস্যা কি, পড়াশোনা তো জীবনে কম করে নাই। আর মাত্র দেড় বছর পর তো এমবিবিএস কমপ্লিট হবে। এরই মধ্যে না হলে টিউশন জোগাড় করে নিবে, তাহলেই তো সব দিক ফুলফিল হয়ে গেল।
এখন শুধুমাত্র বলার অপেক্ষা। মিফান একবার ফোনটা হাতে নিয়ে দেখল, অনিন্দিতা এখনো ব্লক খোলে নাই। বেড়াজালে বন্দি করে রেখেছে তাকে।
.
.
বেশ কয়েকদিন ধরে মিফানের সাথে দেখা নেই অনিন্দিতার। মনে মনে হাসে অনিন্দিতা, এইতো ছেলে তাকে ভুলতে বসেছে। সবই মোহ আর ক্ষণস্থায়ী মায়া। দীর্ঘস্থায়ী ভালোবাসা আবার তার পোড়া কপালে লেখা আছে নাকি?
অবশ্য সেদিন ছোট কাকিমা এসেছিল, বলেছিল মিফান অসুস্থ। অনিন্দিতার দেখতে যেতে ইচ্ছে হলেও, সেটাকে প্রশ্রয় দেয় নাই। দূর থেকে শুধুমাত্র দোয়া করে গেছে।
আজ অনিন্দিতাকে দেখতে আসবে। কিন্তু অনিন্দিতা? সে কাঠের পুতুলের মত বসে রয়েছে। জীবনের কাছে আর কখনোই কিছু চাওয়ার নেই তার। জীবন তাকে একেবারে নিঃস্ব করে দিচ্ছে।
পাত্রপক্ষ এলে অনিন্দিতা কে তার সাথে আলাদা কথা বলার সুযোগ দিতে বলা হলো। ছেলে এবং ছেলের পরিবার বেশ ভালো, শিক্ষিত এবং মার্জিত। ছেলে দেখতেও বেশ সুন্দর।
অবনী ছিলো, দুজনকে নিয়ে দক্ষিণ দিকের বারান্দাটায় এল। এটাই কথা বলার জন্য পারফেক্ট জায়গা।
মিফানের জ্বর আরো বেড়েছিল। দুই দিন জ্বরে ভুক্তভোগী মিফান আজ হঠাৎ টের পেলো। আজকের দিনটা অজান্তেই মনে পড়ে গেল। অসুস্থ তাকে পাত্তা দিলে চলবে না। যে করেই হোক অনিন্দিতার সাথে দেখা করতেই হবে।
বিছানা থেকে অগোছালোভাবে উঠতে গিয়ে, পায়ের সাথে পায়ে বাড়ি খেয়ে সোজা টেবিলের কোনায় আছড়ে পড়ল। কপাল বিশ্রী ভাবে কেটে গেল। রক্ত বের হতে লাগলো, কোন কিছুই পরোয়া করল না মিফান। ছুটে গেল অনিন্দিতার কাছে।
মূল ফটকের সামনে এসে ঘর কাঁপিয়ে চিৎকার করে ডাকলো, ‘তুমি আমার অনেক শখের খুঁজে পাওয়া প্রজাপতি! অনিন্দিতা প্লিজ গিভ মি দ্যা চান্স টু লাভ ইউ, আই ওয়ানা লাভ ইউ ফর এভার!’
.
.
.
চলবে…..!
[কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ]