‘দেইখো, বড় হলে আমি তোমাকেই বিয়ে করবো। তোমাকেই আমার ভালো লাগে, একমাত্র তোমাকেই আমার মনে ধরেছে। তুমি যে সারাদিন প্রজাপতির মতো উড়ে বেড়াও, সেটা আরো বেশি ভালো লাগে!’
১২ বছর বয়সী বালক মিফানের কথা শুনে মুখে হাত চেপে হাসতে হাসতে বটগাছের তলায়ই বসে পড়লো অনিন্দিতা। দাঁত কেলিয়ে বলল, ‘তুই আমাকে বিয়ে করবি কি রে? তুই আমার হাঁটুর বয়সী হয়ে আমাকে বিয়ে করার স্পর্ধা দেখাস? তোর তো শখ ভালো রে!’
‘তুমি আমার থেকে বড় না, আমি তোমার থেকে বড় বুঝেছো! আর আমি তো তোমাকেই বিয়ে করব।’
অনিন্দিতা হাত নাড়িয়ে বলল, ‘হ্যাঁ যা যা করিস। দেখবোনি, বড়ো হো আগে।’
অনিন্দিতার কথাটা পছন্দ হলো না মিফানের। সে তেড়ে এসে অনিন্দিতার চুল ধরে টেনে দিল। অনিন্দিতা মিফানের হাত মুছড়ে দিয়ে বলল, ‘তোর সাহস কত বড়! আমি তোর থেকে বয়সে ৮ মাস ১০ দিন ৪ ঘন্টা ৩৯ সেকেন্ডের বড়, এটা কি মাথা থেকে বেরিয়ে গেছে? বলে দিবো, ছোট কাকিমাকে?’
মিফান অনিন্দিতার কথা খুব একটা পাত্তা দিল না। বড় বড় পায়ে হাঁটা দিলো বাড়ির রাস্তায়। অনিন্দিতা ও পিছু নিল।
বাড়ি এসে চেঁচিয়ে ডাকল ছোট কাকিমা, অর্থাৎ মিফানের মাকে! তিনি রান্না ঘরে ছিলেন, ব্যস্ত হাতে শাড়ির আঁচলে হাত মুছে বললেন, ‘কি হয়েছে বাবা, কাজের সময় এত ডাকাডাকি কেন?’
‘ছোট কাকিমা তোমার ছেলে আমাকে বিয়ে করতে চাচ্ছে, ওকে তুমি সাবধান করে দাও না হলে আমি ওকে মেরে নাক ফাটিয়ে দেবো। ও আমার থেকে ছোট হয়ে কেন আমাকে বিয়ে করতে চাইবে?’
ছোট কাকিমা এগিয়ে এসে বললেন, ‘বিয়ে করতে চাইলেই বুঝি বিয়ে হয়ে গেল? তোরা তো বাচ্চা মানুষ, দুষ্টুমি করে কত কথাই তো বলিস!’
অনিন্দিতা মুখ ঘুরিয়ে অন্যদিকে তাকাল। এমন সময় মাথায় গামছা পেঁচিয়ে পাশের ঘর থেকে বেরিয়ে এলো অরিন আপু। অরিন আপু মিফানের বড় বোন।
সে মিফানের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘তুই বিয়ে করবি? লাইক সিরিয়াসলি! এই তোর মুসলমানি হয়েছে এখনো?’
অরিনের কথা শুনে অনিন্দিতা আর ছোট কাকি দুজনেই দমফাটা হাসিতে ফেটে পড়লো। মিফান শুধুমাত্র শুকনো কন্ঠে আহত মুখে বলল, ‘হয়েছে তো। পাড়ার মসজিদের ইমাম আজাদ কাকু-ই তো করে দিয়েছে সেই কত বছর আগে!’
.
.
১২ বছর পর…..
______________
শুক্রবারের সকালটা বিষন্ন লাগছে অনিন্দিতার। রবিবার পরীক্ষা রয়েছে, পরীক্ষার চিন্তায় উগ্র মস্তিষ্ক কিছুতেই মন বসাতে পারছে না। প্রকৃতিতে রূপের মাধুরী, চারিদিক সুশোভিত করে শীতল পরশের মাদকীয়তা; তবুও মনটা খুব বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে। কোথাও ঘুরতে যাওয়া উচিত, কিন্তু…! বিষন্ন মন আরো খামখেয়ালি হয়ে গেলো। খামখেয়ালি ভাবটা কেটে গেল, কারো সাইকেলের টুংটাং আওয়াজে। বারান্দা থেকে দৃষ্টি নামিয়ে নিচে তাকালো অনিন্দিতা। মিফানকে দেখতে পেল, সাইকেলের বেল বাজাতে। অনিন্দিতা লক্ষ্য করলো ওকে। কালো টি-শার্ট আর ব্লু রং এর গ্যাবার্ডিন প্যান্ট পরনে। চুলগুলো ঘামে ভিজে কপালের সাথে লেপ্টে আছে।
ছেলেটা বোধহয় চোখের সামনে বড় হয়ে গেল। এইতো দুইদিন আগ পর্যন্তও অনিন্দিতার পিছে পিছে ঘুরতো আর বলত, ‘আমি শুধুমাত্র তোমাকেই বিয়ে করবো।’
অবশ্য অনিন্দিতা নিজেও বড় হয়েছে, অনার্স ফাইনাল ইয়ারে আছে এইবার। পুরনো কথা মনে পড়তেই অনিন্দিতা আপন মনে হেসে উঠলো। সামনে থাকা চুলগুলো কানের পিছনে গুঁজে দিয়ে রেলিং ধরে ঝুঁকে বলল, ‘ওই বাঁদড়মুখো কি ব্যাপার? বেক্কলের মত সাইকেলের বেল বাজাচ্ছিস কেন? কিছু চাই!’
‘অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছি। তোমার পাত্তাই পাওয়া যাচ্ছে না, ভুল করেও তো এই অধমের দিকে তাকাচ্ছিল না। তাই সাইকেলের বেল বাজিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করছিলাম।’
‘এরকম ঘেমে নেয়ে কোথা থেকে এলি? বাসায় আয়, অন্ততপক্ষে এক গ্লাস লেবুর শরবত বানিয়ে খাওয়াই তোকে। খাবি?’
‘লেবুর শরবত! তোমার নিজ হাতে বানানো হলে তো নিম পাতার শরবত অমৃত।’
অনিন্দিতা কপালে হাত দিয়ে আফসোসের ভঙ্গিতে বলল, ‘হায়রে এইটুকু ছেলে কি হারে পাম দেওয়া শিখছে? আয় আয়, আমার হাতের অমৃত খেয়ে আমাকে উদ্ধার কর।’
মিফান সাইকেল মূল ফটোকে বাম সাইডে পার্ক করে ঘরে ঢুকলো। আনিসা আর আনিকা মামা মামা করতে করতে এগিয়ে এলো।
মিফান দুজনকে হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরতেই আনিসা গম্ভীর কন্ঠে বলল, ‘মামা আমার চকলেট কই?’
মিফান শুকনো মুখে এদিক সেদিক তাকালো। বর্তমানে একটা মাত্রই চকলেট রয়েছে তার পকেট, সেটাও তার ব্যক্তিগত প্রজাপতির জন্য! কিন্তু এখন এই দুই ভাগ্নি তো বায়না শুরু করে দিবে, এদের চকলেট না দিয়েও পাড় পাওয়া যাবে না। আনিসাকে আদুরে গলায় বলল, ‘মামা যাওয়ার সময় দোকান থেকে চিপস কিনেই আবার এসে দিয়ে যাব। কেমন!’
এমন সময় অনিন্দিতা আমি মিফানের সামনে গ্লাসটা বাড়িয়ে দিল। মিফান ডক ডক করে সবটুকু লেবুর শরবত একেবারে খেয়ে নিল। তারপর একটা তৃপ্তির নিঃশ্বাস নিয়ে অনিন্দিতাকে বলল, ‘লবণ কম হয়েছে, লেবুর পরিমাণও কম লাগলো। এই, তোমার বাবা কি বাসায় লেবু লবণ কিছু আনে না? একজনকে খাওয়াবে একটা জিনিস, একটু ভালো করে করতে হয় তো। মনোযোগ কোন দিকে থাকে তোমার?’
অনিন্দিতা মিফানের মাথায় গাট্টা মেরে বলল, ‘অতিথি আপ্যায়ন নির্ভর করে কাকে খাওয়াবো তার ওপর? তোর মত বাঁদরমুখো কে খাওয়ালাম তো, তাই একটু লবণ চিনি লেবু কম করেই দিয়েছি। সব জিনিস তো আর সবার পেটে হজম হয় না!’ শেষ কথাটা ভেংচিয়ে বলল অনিন্দিতা।
মিফান উত্তরে কিছু বলল। এমন উদ্ভট কথা অনিন্দিতা সব সময়ই বলে, এটা একপ্রকার তার বাজে অভ্যাস। অবশ্য সবার সাথে না, মিফানের সাথেই এই টুকটাক ফাজলামি গুলো করা হয়। কারণ, মিফান কখনো এসব নিয়ে তর্ক করে না বা কোন কথাও বলে না। শুধু চুপচাপ শুনে যায়। তাই অনিন্দিতা তাকে খ্যাপানোর জন্যই এসব কথা বলে। কিন্তু, ছেলে তো একদম নির্বিকার!
মিফান আশেপাশে চোখ বুলিয়ে বলল, ‘বড়োমা কই, দেখি না কেন? আমি এলেই তো জামাই আদর করে, আজ কই? আমি এসেছি, আমার শ্বাশুড়ি কই?’
অনিন্দিতা দাঁতমুখ খিচিয়ে বলল, ‘আপুকে নিয়ে মা বাইরে গেছে। আর এই ছোট্ট দুই যন্ত্রণাকে আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে গেছে। আমার পরীক্ষা, আমি পড়াশোনা করব নাকি দুটোকে সামলাবো? তার মধ্যে তুই আবার এসে হাজির! যা তো, ভাল্লাগে না।’
‘আচ্ছা যাচ্ছি, আনিসা আর আনিকা কে নিয়ে গেলাম আমাদের বাসায়। আপু আসলে ফোন দিও, এসে দিয়ে যাবোনি।’
‘তাড়াতাড়ি যা তো। সময় নেই অসময় নেই, শুধু ডিস্টার্ব!’
মিফান কখনোই অনিন্দিতার কোন কথা গায়ে মাখে না। কারন, অনিন্দিতার স্বভাব টাই এমন ত্যাড়া ব্যাঁকা টাইপের। মুখে বলবে ভালো লাগে না, কিন্তু মুখের ওই ভালো না লাগাটাই তার সবচেয়ে বেশি প্রিয়!
আনিসা আর আনিকা অনিন্দিতার বড় বোন অবনীর দুই মেয়ে। জমজ দুজনে, সাত বছর বয়স।
মিফান দুজনকে নিয়ে বেড়িয়ে পড়ল। অনিন্দিতার বাড়ি থেকে তাদের বাড়ির দূরত্ব খুব একটা বেশি নয়, হেঁটে গেলে ১২ অথবা ১৩ মিনিটের রাস্তা। দুজন বাচ্চাকে নিয়ে সাইকেলে যাওয়া সম্ভব নয়, তাই সাইকেল এই বাড়িতে রেখে হাতে রওনা দিল। যাওয়ার পথে দুজনকে দুটো চিপস কিনে দিল। তৎক্ষণাৎ মনে পরল, অনিন্দিতার জন্য পকেটে রাখা চকলেট টা রয়েই গেছে। দেওয়ার কথা কিভাবে যেন মাথা থেকে বেরিয়ে গেছে, থাক ব্যাপার না। পরে যখন দুজনকে দিতে আসবে তখন দিয়ে দেওয়া যাবে।
মিফান দুজনকে নিয়ে বাড়ি ফিরতেই মিনিট খানেকের মাথায় অবনীর ফোন পেল।
‘কি রে, শুনলাম তুই আমার বাচ্চা দুটোকে নাকি কিডন্যাপ করে নিয়ে গেছিস? সমস্যা কি, বাড়ি এসে আমার বাচ্চা-কাচ্চা ধরে নিয়ে যাস?’
‘তোমার বোনকে বলেই নিয়ে এসেছি আপু। আর সে নাকি পড়াশোনা করবে, বাচ্চাদের যন্ত্রণায় ডিস্টার্ব ফিল করছে তাই নিয়ে এসেছি।’
‘হুহ! ওর আর পড়ালেখা? সারাদিন টই টই করে ঘুরে বেড়ায়, আড্ডা দিয়ে বেড়ায়; আর আমার বাচ্চাকাচ্চার কাছে আসে পড়াশোনার দোহাই দিতে!’
‘আচ্ছা আমি কি এখন ওদেরকে নিয়ে আসব?’
‘তো কি তুই ওদেরকে তোর কাছে রেখে দেওয়ার কথা ভাবছিস? কিডন্যাপার কোথাকার!’
‘আমি কিডন্যাপার? তাহলে এখন লাখ খানেক টাকা রেডি কর, না হয় তোমার বাচ্চাকাচ্চা আর ফেরত পাচ্ছ না।’
‘বেশি কথা না বলে ওদের নিয়ে আয়।’
‘আচ্ছা তুমি টাকা রেডি কর আমি আসছি। আসার পথে এই সেই চকলেট, চিপস, আইসক্রিম কিনতে কিনতে ইতিমধ্যেই দুজন আমাকে ফকির বানিয়ে ফেলছে। তার খেসারত কে দিবে?’
‘তুই হইলি মামা। ভাগ্নিরা মামাদের পকেট ফাঁকা করবে না তো কার করবে? আর নকশা করবি না, নিয়ে আয় দু’জনকে।’
মিফান ফোন রেখে পরপর দুইটা হাই তুলল। তারপর বিছানায় লম্বা হয়ে শুয়ে পড়লো। আনিসা সেই মুহূর্তে এসে বলল, ‘মামা মামা পানি খাব, পানি দাও!’
মিফান বিরক্তি কন্ঠে বলল, ‘ঘরে কি আমি ছাড়া আর মানুষ নাই? যাও গিয়ে অন্য কারো কাছ থেকে পানি চেয়ে খাও।’
‘তুমি না দিলে পানি খাব না।’
মিফান শোয়া থেকে উঠে বলল, ‘আর খেতেও হবে না। তোমাদের মামনি ফিরে এসেছে, চলো বাড়ি দিয়ে আসি।’
‘তাহলে কিন্তু রাস্তায় যেতে যেতে কোক খাওয়াতে হবে।’
‘মাফ দে বাপ, আর ফকির করিস না। বাড়ি যাবি এখন, তোদের মামণি কে বলবি না হয় খালামণিকে বলবি।’
আনিসা আর আনিকা দুজনেই চুপ হয়ে গেল। তারা জানে, বাড়িতে মামনি অথবা খালামনি কেউ কোক কিনে দিবে না। কোক কিনে নিতে চাইলে বলবে, ‘এসব পঁচা খাবার। এগুলো ভালো মানুষ খায় না। যদি খুদা লাগে তাহলে ঘরে ভাত আছে ভাত খাও।’ এটুকু বলেই ভাত বেড়ে নিয়ে আসবে।
আনিসা আর আনিকা তাদের মামণিকে বোঝাতেই পারে না, এসব তাদের অপছন্দ। ভীষণ অপছন্দ! একমাত্র মিফান মামা ছাড়া তাদের হ-য-ব-র-ল আবদার কেউ পূরণ করে না। মাঝে মাঝে খালামনিও একটু-আধটু আর কি!
মিফান মুখে যতযাই বলুক না কেন, বাচ্চা দুটোর আবদার সে পূরণ করলো।
বাড়ি ফিরতে যে যার মত আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেল। অবনী মিফান কে এসে বলল, ‘আমার ছোট ছোট বাচ্চাদের কিডন্যাপারের জন্য তার প্রিয় পায়েস রান্না করেছি। তাড়াতাড়ি খাইতে আসুন কিডন্যাপার!’
মিফান খাওয়া বাদ দিয়ে অনিন্দিতার ঘরের আশেপাশে ঘুরঘুর করতে লাগলো। কাকে বোঝাবে সে, এই মেয়েটাকে একদিন না দেখলে তার সেই দিনটা বিষন্নতায় কাটে। দিনটাকে বিষাদ লাগে, নিজের ভেতরটা অস্থির লাগে। সুখের মধ্য প্রচুর অসুখের এর অনুভূতি হয়।
ছোটবেলায় অনিন্দিতা কে বিয়ের কথাটা হয়তো সে হারহামেশা ফাজলামি করেই বলতো। কিন্তু যখন একটু বড় হল, একটু বুঝতে শিখলো; তখন শুধু মনে হতো অনিন্দিতা ছাড়া দ্বিতীয় কারো কথার ভাবা অসম্ভব। অনিন্দিতা কে দিনরাত্রি এক করে দেখা, এটা এখন মিফানের বাজে স্বভাবে পরিণত হয়েছে। শুধু বাজে স্বভাব না, বিষাক্ত স্বভাব; যার থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার কোন উপায় নেই।
অনিন্দিতা মিফানের থেকে বয়সে খানিকটা বড়, কিন্তু এই ব্যাপারটা কে সে কখনোই বড় করে দেখেনা। ভালোবাসা টাকেই সব সময় বড় করে দেখে। কিন্তু, সমস্যা অনিন্দিতা কে নিয়ে। অনিন্দিতা তো মিফানকে পাত্তাই দেয় না।
দরজায় নক করে অনিন্দিতার ঘরে অভ্যন্তরীত হলো মিফান। পকেট থেকে চকলেট টা বের করে অনিন্দিতার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল, ‘একটা চকলেট কিনেছিলাম অনেকদিন হলো, কেউ খায় নাই অযথা আমার কাছে পড়েই থাকে। নাও খাও তুমি।’
অনিন্দিতা রক্তচক্ষু নিক্ষেপ করল মিফানের পানে। বলল, ‘তুই কত দিনকার বাসি পচা চকলেট আমাকে খেতে দিচ্ছিস?’
‘আরে বাসি পচা কেন হতে যাবে? অনেকদিন ধরে আমার পকেটে রয়ে গেছে, তাই দিলাম তোমাকে।’
‘আমাকে কি চকলেট দেওয়ার মানুষের অভাব পড়ছে? আমাকে কি দেখে তোর মনে হচ্ছে, তোর এই বাসি পচা চকলেট খাওয়ার জন্য আমি মরে যাচ্ছি! ছোট ভাই লাগিস, তাই তোর সম্মান রক্ষার্থে চকলেট টা রেখে দিচ্ছি।’
‘আচ্ছা, তাও রেখে দাও!’
.
.
.
পরদিন বিকালবেলা, চৌরাস্তার মোড়ে অনিন্দিতার সাথে তার এক ক্লাসমেটকে হেঁটে আসতে দেখল মিফান। ছেলেটাকে দেখেই মেজাজ তুঙ্গস্পর্শী হল মিফানের। দুজনে কি সুন্দর হাসতে হাসতে, হেলে দুলে হেঁটে ফিরছে।
মিফান কিছুটা দূর থেকে নিজের মনে রুষ্ঠ কণ্ঠে বলল, ‘যতবার, হ্যাঁ যতবার তুমি আমি বাদে অন্য কোন ছেলের সাথে কথা বলবে বা তার কথা ভাববে; ততবার তোমার অসহ্য মাথা যন্ত্রণা হোক। যন্ত্রণায় মাথা ছিড়ে পড়ে যাক। তুমি রাস্তাঘাটে চলতে গেলে পা পিছলে নর্দমায় পড়ে যাও। যতবার তুমি অন্যের কথা ভাববে ততবার তোমার রেজাল্ট খারাপ হোক। খেতে গিয়ে খাবার গলায় আটকে যাক। তোমার জীবন চরম হতাশায় মুখিয়ে যাক। অভিশাপ দিলাম আমি!’
.
.
.
চলবে…..!
বেশ কিছুদিন ধরে পর পর তিন-চারটা, সিনিয়র জুনিয়র কাহিনী পড়ে আমার মাথার মধ্যেও সেম জিনিসটা ঘুরপাক খাচ্ছে। তাই নিজেরও ইচ্ছে হলো, লিখে ফেললাম। এই ধরনের গল্প সাধারণত সবার ভালো লাগে না, যাদের ভালো লাগে না তাদের এড়িয়ে যাওয়ার অনুরোধ রইলো!
ভালোবাসা সবাইকে 💝
[কার্টেসি ছাড়া কপি করা নিষেধ]
#প্রিয়তমা_প্রজাপতি🩷 [সূচনা পর্ব]
~আফিয়া আফরিন
জয়েন- আফিয়া’র গল্পকাহন★シ︎✿