#প্রতিদান
পর্ব:7
#লেখিকা_নুসরাত_শেখ
খাবার খাওয়ার সময় মুনতাহাকে দেখতে পেলাম না।
মরিয়ম মুনতাহা কোথায় ওকে খেতে ডাকো।(আসফি)
আফা মনিতো বাইরে গেছে।আপনি খাইয়া নেন আফায় আইলে খাইবনে।(মরিয়ম)
রাত সাড়ে নয়টা বাজে ও বাইরে কি করে?(আসফি)
আফায় বলল কালকে নাকি হেয় হোস্টেল এ চলে যাইব।তার জন্য রুম খুজতে গেছে।(মরিয়ম)
হোস্টেল যাবে কেন?(আসফি দাড়িয়ে)
আজকে হের মামা আইছিলো পঞ্চাশ হাজার টাকার জন্য। তার জন্য আফায় চায় হেয় হোস্টেল এ থাইকা পড়ালেখা করব ।তার লাইগা রুম দেখতে গেছে।(মন খারাপ করে মরিয়ম)
ওর মামা কিসের টাকা চাইতে আসছিল?(আসফি)
ছোট আফারে তো আপনার দাদা কিনা আনছে আপনার লাইগা বিশ লক্ষ টাকা দিয়া। হের মা বাপ নাই ।নানাটা মরতে না মরতেই হের মামা হেরে বেইচা দিছে।আর আপনের দাদা প্রতি মাসে এর জন্য পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতেও রাজি আছিল।তাই টাকা নিতে আসছে।এখন আপনি সুস্থ হয়ে গেছেন আপনার দেখাশুনা তো আর করোন লাগেনা।তাই আফা আমারে বলল যে হেয় চলে যাইব।এতে নাকি আপনিও খুশি থাকবেন।সত্যিই ভাইজান আফা গেলে আপনি খুশি হবেন?(কান্না করে মরিয়ম)
ও কখন গেছে বাইরে?(কথা এড়িয়ে আসফি)
এইতো ঘন্টা খানেক হইব। আইসা পরব।আপনি খাইয়া নেন।(মরিয়ম)
না ও আসুক এক সাথে খাব।(আসফি)
অনেক বলার পর রুম পাইছি।মহানগর মহিলা কলেজ ন্যাশনাল হসপিটাল এর সামনেই।এই কলেজ থেকেই এইচ এস সি পাশ করেছি।টিচার রা সবাই এই চিনে আমাকে।পড়ালেখা ও ফাংশন গুলোতে খুব একটিভ ছিলাম তো তাই।রুম দিতে চায়নি অনেক অনুরোধ করে রুপ পাইছি।তারপর গেছিলাম ব্যাংকে টাকা তুলতে।আমার ব্যাংকে পাচ লক্ষ টাকা আছে ।মায়ের জমি বেচার টাকা।মামা এটার খবর জানেনা।নাহলে কবেই এই টাকা নিয়ে যেত।এটা আমার মেডিক্যাল এর পড়ার খরচ চালাতেই রাখা।বাসায় এসে ডাইনিং এ ঢুকতেই আসফির মুখোমুখি হলাম। ও সোফায় বসে টিভিতে খবর দেখছে।আমি রুমে চলে আসলাম কোন কথা না বলেই। ও কথা বলেনা আমি কেন বলব?এসে হাত মুখ ধুয়ে রুমে আসতেই দেখি আসফি খাটে বসে আছে।আমি তাড়াতাড়ি ওরণাটা খাট থেকে নিয়ে শরীরে জড়িয়ে নিলাম। তারপর টাওয়াল দিয়ে মুখ মুছে নিলাম। ও কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়েই থাকল।আমি নিজ থেকে কথা বলব না থাক তুমি তোমার রাগ নিয়ে আমিও থাকব আমার অভিমান নিয়ে। ভালোবাসি বলে তোমার দেওয়া সব কষ্ট সহ্য করা পসিবল না।আমি ভবিষ্যত এর ডাক্তার হব।আমার মনে মায়া থাকলেও কঠোরতা বেশি থাকতে হবে।নাহলে আমার সামনে কারো কষ্ট সহ্য করতেই পারবনা।একজন ডাক্তার এর সবচেয়ে বেশি সাহস থাকা লাগে।সাহস বিহিণ কোন ডাক্তার এই জগতে নেই।তারা অনেক কষ্টের সংবাদ ও এমন ভাবে বলেন যেন কিছুই হয়নি। মৃত্যুর সংবাদ ও তারা এত্ত সহজে বলে যেন এর চেয়ে সহজ কোন বিষয় এই দুনিয়ার মধ্যে নেই।আর সেই জায়গায় তোমার কঠোরতা আমি সব সময় মানব তাও অনুচিত।ও আরও কিছুক্ষণ চুপথেকে বের হয়ে যেতে গিয়েও ফেরত আসল ।(মুনতাহা)
ও কেন যাবে?ওকে আমি যেতে দিবনা ব্যাস।
তুমি হোস্টেল এ যাচ্ছ না মনে থাকে যেন?এখন খেতে চলো।(আসফি)
কেন সেইদিন না বললা ঢাকায় গিয়ে যেন আমি আমার স্বামীর কাছে চলে যাই।এভাবে না বলে সোজা বললেই পাড়তা তোমার বাড়ি খালি চাই ।খালি করে চলে যেতাম।শুধু শুধু এত্ত বাহানার কি দরকার। আর আমি কাল হোস্টেল সিফট করব।আর খেয়ে আসছি ।তুমি গিয়ে খেয়ে নেও।
বলেই আলমারির থেকে ব্যাগ বের করে খাটে রাখলাম। তারপর জামা বের করতে লাগলাম।
কি সমস্যা দাড়িয়ে আছ কেন?যাও খেয়ে ঘুমিয়ে পড়।নাহলে শরীর খারাপ করবে।
হঠাৎই আসফির কান্ডে মাথা হ্যাং হয়ে গেল। ও আমার সব জামা গুলো ব্যাগ থেকে বের করে ওলটপালট করে খাটে ফিকে মারল।তারপর গিয়ে গেট লক করে আবার আমার সামনে আসল।আর কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার চুল গুলো মুঠো করে ধরে ওর সাথে চেপে ধরল।এত্ত জলদি সব হল আমি কিছু করার আগেই হতভম্ব হয়ে গেলাম। (মুনতাহা)
তোমাকে বিশ লক্ষ টাকার বিনিময়ে কিনা হয়েছে আমার জন্য। আর তুমি আমাকে রেখেই চলে যাবা মানে?এই মেয়ে খবরদার ভুলেও কোনদিন আমার থেকে দূরে যাওয়ার কথা ভাববে তো তোমার এমন হাল করব ভাবতেও পারবেনা।এখন খেতে আস?
(আসফি)
আসফি ছাড়ো ব্যাথা পাইতেছি।আমি ছাড়তে বলছি আসফি ছাড়ো বলছি আমার চুলে ব্যাথা পাচ্ছি।
আমার চিৎকার ওর কানে যাচ্ছে না।ও এক মনে আমার মুখের দিকে তাকিয়েই আছে।হঠাৎই আমার কপালে চুমু খেয়ে সোজা হয়ে দাড়ালো।আমি শকড করল কি ও?
এইটা কেমন অসভ্যের মতো কাজ?লজ্জা করল না এখন এই বেইমান কে চুমু খেতে?আর তুমি জানোনা আমি মেরিড তোমার সাহস হয় কিভাবে আমাকে চুমু খাও তুমি?(চিৎকার করে মুনতাহা)
ওর চিৎকার এ মেজাজ আর ও গরম হয়ে গেল। এইবার ওকে টেনে আলমারির সাথে চেপে ধরে ওর দুইহাত চেপে ওর ঠোঁট জোড়া নিজের দখলে নিয়ে নিলাম। ও শকড ছুটার জন্য পা দিয়ে আমার পায়ে পাড়া দিয়ে রাখছে।ওর এই পিচ্চি পায়ের ভার আমার কাছে কিছুইনা।অনেকক্ষন পর ওর গলার মধ্যেই মুখ গুজে দিতেই ও চিৎকার করে উঠল(আসফি)
আমার হাজবেন্ড আছে আসফি তুমি এমনটা করতে পারোনা।আসফির কান্ডে আমি শকড। ও রাগের মাথায় এসব করছে।পরে রাগ কমলে অনুশচিত হবে।তাই ওকে থামাতে হবে।আমি ওর ভালোবাসার জন্য বৈধ হলেও ওর কাছে একজন আশ্রিত মেয়ে।আমি ওর ভালোবাসা গুলো গ্রহন করব যখন ও বউ হিসেবে ভালোবাসা দিবে।এসব ভাবছিলাম হঠাৎই আসফির কথাতে আমি শকড। (মুনতাহা)
মিথ্যা বলবানা একদম।তুমি মেরিড হলে তোমার হাজবেন্ড এর কাছে না গিয়ে হোস্টেল এ উঠবে কেন?আর তোমার মামা তোমাকে আমার কাছে রেখে যাওয়ার জন্য বিশ লক্ষ টাকাই বা নিবে কেন?তুমি এখন আমার। তোমার উপর অধিকার ও আমার। তোমার থাকা খাওয়ার সব কিছুর দ্বায়িত্ব ও আমার। এখন খেতে চল।
বলেই বের হতে নিলাম কিন্ত মুনতাহার কথা শুনে থেমে গেলাম মেজাজ পুরাই বিগড়ে গেল তাই ঘুড়েই দিলাম একটা ঠাঠিয়ে চর।(আসফি)
আসফি চলে যাচ্ছিল ।কেন ওর অধিকার আমার উপর দেখাবে কিসের অধিকার। আমার উপর ওর অধিকার থাকলেও সেইটা ওর কাছে অজানা।তাই রাগ নিয়েই ওর উদ্দেশ্য বললাম।
টাকার বিনিময়ে কিনেছ বলে তোমার আমার উপর অধিকার এসে গেছে।কিসের অধিকার বল তো।তোমার যখন তখন আমার রুমে আসার,কিস করার আর ভবিষ্যত এর পিপি হওয়ার।
এইটা বলতে দেড়ি আমার গালে জোড়ে একটা থাপ্পর পড়তে দেড়ি হয়নি।হারামি এই নিয়ে দুইদিন দুইটা থাপ্পর মারল।রাগের মাথায় কি বলে ফেলছি।তাই জন্য মারবি।হঠাৎই আমার গলার মধ্যে হাত দিয়ে ওর একহাত দিয়ে ঠোঁট টেনে ধরল।আমাকে একপ্রকার ধাক্কা দিয়ে আলমারির সাথে চেপে ধরল। (মুনতাহা)
নেক্সট টাইম তোর মুখ থেকে এই শব্দ আর শুনলে তোর ঠোঁট ছিড়ে ফেলব আর গলা টিপে মেরে ফেলব।খুব বেড়ে গেছিস না তোর বাড়া কমানোর ব্যাবস্থা করছি।কালকের মধ্যেই তোরে বিয়ে করব আমি তারপর তোকে আমার অধিকার এর ধরন দেখাব।অধিকার কাকে বলে তা দেখার জন্য প্রস্তুত হো।
বলেই ওকে ছেড়ে রুম থেকে বেড়িয়ে নিজের রুমে চলে গেলাম। কত্ত খারাপ কথা বলল ও।আমি ওর উপর জোর করি টাকা দিয়ে কেনা হয়েছে ওকে আমার পিপি বানাব বলে।কালকে বিয়ে হতে দে দেখবি আসফির অধিকার এর ধরন কত্ত প্রকার ও কি কি?(আসফি)
আবার বিয়ে করবি আমাকে পাইলেতো করবি ।সকাল হলেই আমি পালাব।একবার তোমারে বিয়া করেই আমি পাগল হয়ে আছি দ্বিতীয় বার বিয়ে করলেতো আমি অককা তুলব।কালকে সকাল হতেই পালাব।আমার সাথে জোড় দেখানো।আমি তাড়াতাড়ি ব্যাগ গুছিয়ে নিলাম। তারপর একটু ঘুম দিলাম। ভোর পাঁচটা বাজতেই ব্যাগ নিয়ে সকাল ছয়টার মধ্যেই হোস্টেল পৌঁছে গেলাম। এখন আমাকে পাবি কোই ব্যাটা বদ।রাগের মাথায় বিয়ে করে পরে টর্চার করবি এমন গল্প অনেক পড়ছি ফেসবুকে।আমি এত্ত বোকানা হুম।এসেই ফোন বন্ধ করে দিলাম। তারপর টুকটাক গুছিয়ে নিলাম। আমার রুমমেটরা ক্লাস করতে গেছে।ওরা ইন্টার এপড়ে।আমি সব গুছিয়ে কলেজ থেকে বাইরে চলে আসলাম আমার মেডিক্যাল যাব বলে।বাইরে গিয়ে ব্রেকফাস্ট করে হেটেই মেডিক্যাল চলে আসলাম। হোস্টেল থেকে মেডিক্যাল মাত্র পাঁচ মিনিট এর রাস্তা। রিক্সা নিলে দুইমিনিট আর জ্যাম থাকলে এক ঘন্টা ও লাগে।তাই হেটে যাওয়াই উত্তম কাজ।ক্লাস করে ডাক্তার মালিহা ম্যাম এর সাথে ইন্টারনি দিলাম।সব সিজার ও নরমালে হওয়া বেবি ও বেবির মায়েদের খোঁজ খবর নিলাম। বেবিদের দেখতে দেখতে 505 নাম্বার বেডের সামনে যেতেই আত্মা কেপে উঠল। কি করুণ অবস্হা। সদ্য জন্ম দেওয়া বাচ্চার অবস্হা খুব এই খারাপ। আর ঐদিকে মায়ের অবস্হা ও ভালোনা।রক্ত লাগবে AB+ কিন্ত রক্ত পাচ্ছে না।আমার তো AB-।কিন্ত আসফি এর AB+ ।ওকে ডাকতে হবে দূর ফোনটা রেখে আসছি হোস্টেল এ।আমি ঐ বেবিকে জলদি শিশু ওয়ার্ড এ ভর্তি করানোর ব্যাবস্থা করলাম। ওনাদের থেকে ফোন নিয়েছি ঠিক কিন্ত নম্বর মনে নেই।কি যে জ্বালায় পড়লাম। হঠাৎই ডাক্তার জাকির এর কথা মনে পড়ল।দিলাম দৌড় স্যারের কাছে অনুরোধ করলাম যাতে আসফিকে ফোন করে আসতে বলে।আমার কথাতে উনি আসফিকে ফোন করলেন।(মুনতাহা)
সকালে ঘুম থেকে উঠেই মুনতাহার রুমে গেলাম গিয়ে দেখি রুম খালি ।গেল কোথায়?টেবিলের উপর একটা ছোট্ট ছিরকুটে লেখা। পাগলটার জন্য আসছিলাম
কিন্ত সেই পাগলটাই নেই আমার
সেই পাগলটার ভালোবাসাগুলো উপভোগ করতাম
কিন্ত তোমার ভালোবাসা গুলো আমাকে খুবই জ্বালায়
পাগলটার পাগলামি কে খুব ভালোবাসতাম
তোমার পাগলামি গুলোতে বিরক্ত হই
আমার পাগলটা তার পুতুল বউ কে খুব ভালবাসতো
আর তুমি ইষানিকে ভালোবাসো আর আমাকে জানিনা কি সেইটা কি করো তুমি
তোমার বোঝা হতে চাইনা।তাই চলে গেলাম। বিশ লক্ষ টাকা আস্তে আস্তে ফেরত দিব।
ইতি
মুনতাহা
সব বুঝলাম কিন্ত পুতুল বউ বলে মুনতাহা নিজেকে সম্বোধন করলো কেন?ওয়েট ওকে দাদা বিশ লক্ষ টাকা দিয়ে আমার জন্য আনছে।প্রতি মাসে টাকাও দিবে তাও এত্ত টাকা দিয়ে একজন পাগলের দেখাশোনা করার জন্য একজন লোক রাখলেও এত্ত টাকা
পাগল ও দেবার আগে তিনবার ভাববে।কিছুতো খটকা আছেই কি সেইটা?এই খটকা কিভাবে ছুটবে পেয়েছি।ডাইনিং এ গিয়ে মরিয়ম কে ডাক দিলাম ।
মরিয়ম এই মরিয়ম আমার আর মুনতাহার বিয়ের কতো মাস হলোরে?(আসফি)
এইতো স্যার দুইমাস দশদিন মনে হয়।হঠাৎই বলে মুখে হাত দিয়ে দাড়িয়ে পরলাম। এইটা কি বললাম আফা মনি কত্ত বার বারণ করছে তাও বলে দিলাম। কিন্ত স্যার এমন কথা জিজ্ঞেস করে কে?
স্যার আপনার কি সব মনে পড়ছে তাহলে?(মরিয়ম)
না তবে সন্দেহ হচ্ছিল। তা এতোদিন সবাই লুকিয়ে রাখছিলি কেন?তোর আপা নিষেধ করছিল নাকি?(আসফি)
জ্বি স্যার। (মরিয়ম)
আচ্ছা কাজে যা তোর আপা ভাগছে বুঝছিস ওকে জলদি খুঁজতে হবে।আমি বের হবো নাস্তা বানানোর দরকার নেই আমি বাইরেই খেয়ে নিব।
বলেই রুমে আসতেই দেখি কল আসছে ।আননোন নাম্বার এর কল।কল ধরতেই ওপর পাশ থেকে বলল ন্যাশনাল এ জেতে হবে।মেডিক্যাল এ তো কালকে জয়েন হব তাহলে আজকে কি?ডাক্তার জানালেন রক্ত লাগবে আমার গ্রুপ সেম তাই যেতে বললেন।
আমি জলদি রেডি হয়ে হসপিটাল চলে গেলাম। ডাক্তার জাকির কে দেখে একটু অবাক এই হলাম। উনি আমাকে ডাক্তার মালিহার কাছে দিয়ে আসলেন।উনি কিছু পরীক্ষা করেই রক্ত নেওয়ার ব্যাবস্থা করলেন।সিজার এর বেবি হলে খুব ঝামেলা।তিন নাম্বার রক্তের ব্যাগ আমি দিয়েছি। আরো দুই ব্যাগ শেষ।রক্ত দিয়ে কিছু সময় বসেই ছিলাম। হঠাৎই ডাক্তার মালিহার সাথে মুনতাহা রুমে প্রবেশ করল।আমিতো অবাক ব্লু কালার থ্রিপিস এর উপর সাদা এপ্রোন পড়া।ও কি ডাক্তারি পড়ালেখা করছে নাকি?(আসফি)
থ্যাঙ্কস ডাক্তার আসফি মুনতাহার কথাতে জলদি এসে রক্ত দেওয়ার জন্য অনেক অনেক থ্যাঙ্কস। কালকে থেকে জয়েন হচ্ছেন আশা করি আমাদের ভবিষ্যত এ আরো সুন্দর সময় কাটবে।এখন আসি জাকির এর সাথে বাইরে যেতে হবে। (ডাক্তার মালিহা)
ওকে ডাক্তার?(আসফি)
মালিহা।বড় আপু বলতে পারেন।মুনতাহা এমনে ম্যাম বললেও আপু বলেই ডাকে বেশি।(ডাক্তার মালিহা)
আচ্ছা আপু।(আসফি)
মুনতাহা আসফির হাতে একটা বেনডেড লাগিয়ে দেও।আমি জাকির এর সাথে বাইরে যাচ্ছি। বিকালের মধ্যে আমাকে নিউ বর্ণ বেবির আপডেট টা দিও।(ডাক্তার মালিহা)
ওকে ম্যাম।
মালিহা ম্যাম যেতেই আসফির দিকে তাকালাম। দূর প্যারা একটু অভিমান করে পালাইছি এখন এই কি এত্ত ঝামেলা হোতে হল।হঠাৎই আসফির কথায় মনোযোগ দিলাম। (মুনতাহা)
ম্যাম বলছে হাতে বেনডেড করে দেও আমাকে জলদি করো।(আসফি)
বাহ এত্ত হালকাপাতলা রিয়াকশন দিল।কালকের কথা ভুলে গেছে মনে হয়।যাইহোক ওর হাতে বেনডেড করতে সামনে গেলাম। হঠাৎই ও আমাকে ধরে ওর কোলে বসিয়ে দিল তারপর কানে কামর দিয়ে বলল।(মুনতাহা)
কি পালানো হচ্ছে বুঝি হসপিটাল দেখে চুপ আছি।একবার হসপিটাল থেকে বের হোও তোমার খবর আছে আমার দুইমাস দশদিনের পুতুল বউ।
বলেই ওকে ছেড়ে সোজা হয়ে হাটাঁ দিলাম।ও অবাক হয়ে গেছে দৌড়ে আমার পেছন পেছন আসছে।(আসফি)
তোমার কি সব মনে পরে গেছে আসফি?(মুনতাহা)
মনে পড়ার মতো এটা কোন টিভি শো না।যে চাইলাম মনে আসবে সব ,আবার যেই চাইলাম ভুলে যাব।মনে না পড়লেও খবর নিলাম আর অনেক কিছুই জানতে পারলাম। এখন কাজে যাও সন্ধার মধ্যেই বাড়িতে যাবা নাইলে খবর আছে।
বলেই ঐখান থেকে বেরিয়ে হসপিটাল এর পরিদর্শন এ গেলাম (আসফি)
যাবনা কি করো আমিও দেখব হুম। তারপর আবার কাজে গেলাম। এখন বেবি ও ওর মায়ের অবস্হা ভালো আছে।কাজ শেষ করে দুপুর এর লাঞ্চ কমপ্লিট করে নিলাম। তারপর আরো কিছু ইন্টারনি করে পাচটার দিকে হোস্টেল চলে গেলাম। তারপর ফ্রেস হয়ে একটু ঘুম দিলাম। ঘুম ভাঙ্গল ফোনের রিংটোন এ।ঘুম চোখেই কল রিসিভ করলাম কার কল না দেখেই।হঠাৎই আসফির কথা শুনে ভাড়কে গেলাম (মুনতাহা)
আধা ঘন্টার ভিতরে বাড়ি না আসলে তোমার খবর আছে মিসেস আসফি চৌধুরী ওরফে আমার পুতুল বউ। (আসফি)
আসবো ওওওওও না।রাখতো ঘুমাইতেছি।বলেই কল কেটে ফোন সাইলেনট করে ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুম ভাঙ্গল পড়ের দিন সকালে।ঘুম থেকে উঠে দেখি সকাল ছয়টা বাজে ।ফোনের দিকে ভাল করে খেয়াল করে দেখি 119টা মিসকল।ওরে আল্লাহ রে আজকে আসফি আমার আলুর ভর্তা বানায় ছাড়বরে।রাতে না ঘুমিয়ে কল করছে সারারাত। আজকে মেডিক্যাল এ গেলে আমার কঙ্কাল দিয়েই এক্সপেরিমেন্ট করা যাইব।আর তা করব ওয়ান এন্ড অনলি আসফি দা গ্রেট লম্বু টা।ও আর জায়গা পাইলোনা আমার মেডিক্যাল এই জয়েন করতে হলো।প্যারা নাই বেবি চিল উনিতো অন্য ডিপার্টমেন্ট এর আমি আজকে যতোটা পারি লুকিয়ে এই থাকব।হাহাহা।যা ফ্রেস হয়ে ব্রেকফাস্ট করতে যাই।রান্না করতে বিরক্ত লাগে তাই আন্টির থেকে নাস্তা কিনে খাই।ব্রেকফাস্ট করে হসপিটাল চলে গেলাম। কিন্ত কথায় আছেনা যেখানেই বাঘের ভয় সেইখানেই সন্ধে হয়। আমার ও সেম অবস্হা (মুনতাহা)
**************(চলবে)*****************