#প্রণয়ের_সূচনা
#লেখিকা_Nazia_Shifa
#পর্ব_৩৫
_____________________________
বৃষ্টির বেগ কমে গেছে বেশ খানিকটা।সন্ধ্যা ঠেলে রাতের আগমন ও ঘটেছে বহু আগে।রাত সাড়ে নয়টা এখন।মিসেস আফিয়া আর ইসহাক সাহেব বাসায় ফিরেন নি।বৃষ্টির কারণে আসতে দেয়নি তাদের অগ্যতা থেকে যেতে হয়েছে উত্তরাতেই।মিসেস আফিয়া ফোন করেছিলেন সূচনাকে।টেবিলে খাবার বেড়ে দিয়ে সূচনা তিথি আর ইরাকে ডাকতে গেল।ইরার রুম লক করা বরাবরের মতো।তিথির জ্বর উঠেছে।তার জ্বরের কথাটা মিসেস আফিয়া আর ইসহাক সাহেব কে জানায়নি। অযথা চিন্তা করবেন।সিজনাল ফিভার,ঘরে একজনের হলে অন্য জনের ও হয়ে যায়,ঔষধ খেলে ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু তিথি ঘুমাচ্ছে, সূচনা ডাকেনি, ঘুমাক।সবার খাওয়া শেষ হলে সে খাইয়ে দিবে।মিসেস আফিয়া বলেছিলেন তাকে -”আমার চার ছেলে মেয়ের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল হচ্ছে তিথি।একটু কিছু হলেই একেবারে নিস্তেজ হয়ে যায়। সব আমার ওপর ছেড়ে দেয়। অসুস্থ হলে পানিটা পর্যন্ত খাইয়ে দিতে হয়।’প্রায় সব পরিবারে এমন একজন থাকেই।ইরার রুমের দরজায় নক করতে নিলেই দরজা খুলে যায়। মানে ভে/ড়ানো ছিল দরজা।সূচনা দরজায় দাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলো-
–‘ইরা আসব?
–‘হ্যা আসো।
সূচনা ভেতরে প্রবেশ করলো।কাবার্ডের ড্রয়ারে কিছু একটা খুজছে ইরা।সূচনার দিকে না তাকিয়ে ই ইরা জিজ্ঞেস করলো-
–‘কিছু বলবে ভাবি?আমাকে ডাকতে, আমিই আসতাম।
–‘তুমি রুম থেকে বের হও?
পাল্টা প্রশ্ন করলো সূচনা। তার গলার স্বরে কিঞ্চিৎ ক্ষো/ভের আভাস তা টের পেল ইরা।ইরার উত্তর না পেয়ে সূচনা আবার বললো-
–‘ সারাদিন তো রুমে থাকো,তিথি পড়ায় ব্যস্ত থাকে,তোমার ভাইয়া অফিসে।আমি একা থাকি, তুমিও রুমে পড়ে থাকো।দেখো,আমাদের সবারই মন খা/রাপ হয়,মাঝেমাঝে তার কারণ থাকে,মাঝেমাঝে বিনা কারণেই মন খারা/প হয়।কিন্তু তার মানে এই না যে সেই মন খা/রাপ নিয়ে পড়ে থাকতে হবে। নিজের মন ভালো হওয়ার কারণ নিজেই হও, নিজের ভালো বুঝতে শিখো।কত মানুষ আসবে, যাবে কিন্তু একটা সময় তুমি একা হয়ে যাবে,একাই যাবে যেমন একা এসেছ।তুমি যেভাবে থাকছো তাতে মন খা/রাপ কমছে বই বাড়ছে। মন খা/রাপ কে পেলে পুষে নিজের মধ্যে স্থায়ী হওয়ার জায়গা দিচ্ছ। মানুষ যখন দেখবে আমরা দুর্বল হয়ে পড়েছি তখন তারা সেই সুযোগ নিয়ে আমাদের আ/ঘাত করবে।তোমার দুর্বল জায়গা মানুষকে দেখিও না।বুঝেছো?খেতে আসো এখন।
একটানা কথাগুলো বলে গেল সূচনা। ইরা হাতের কাজ থামিয়ে দিয়েছে, দৃষ্টি এক জায়গায় স্থির ছিল এতক্ষণ। সূচনার শেষ কথায় মাথা নাড়িয়ে বুঝালো যে সে বুঝতে পেরেছে।তাকে আসতে বলে সূচনা চলে যেতে ধরলে ইরা পেছন থেকে বলে উঠলো-
–‘চলেই যেহেতু যাবে তাহলে তারা আসে কেন ভাবি?
–‘কিছু মানুষের আগমনই হয় চলে যাওয়ার জন্য হয়তো স্বইচ্ছায় নয়তো নিয়তি বাধ্য করে।কিন্তু কারো জীবন থেমে থাকেনা কারো জন্য,বাঁচতে হয়।যা হয় তার পেছনে কারণ থাকে কোনো না কোনো। হয়তো বুঝতে আমাদের দেরি হয় কিন্তু কারণ ছাড়া কিছু হয়না।
–‘যদি স্বইচ্ছায় যেয়ে থাকে?
–‘এমনটা নাও তো হতে পারে।
–‘প্রমান দেখেছি আমি।
–‘চোখের দেখা সবসময় সঠিক হয় না।অনেক সময় আমরা ঔ জিনিসটাই দেখি যেটা সাজিয়ে গুছিয়ে আমাদের সামনে রাখা হয়,তখন পরিস্থিতি এমন হয় যে তার অন্তরালে থাকা সত্যি টা ঘে/টে দেখার মতো জ্ঞান টুকু হারিয়ে ফেলে মানুষ।
–‘ এমনটা না সবার বেলায় না ও তো হতে পারে।
–‘তাহলে ধরে নাও সে তোমার ছিলই না।আর যদি সে তোমার ভাগ্যে থেকে থাকে তাহলে সে ফিরবে।বাদ দাও,খাবার সব ঠান্ডা হয়ে গেল তাড়াতাড়ি চলো।
–‘তুমি জানলে কি করে যে আমি…
–‘তোমার আর আমার বয়স কিন্তু প্রায় কাছাকাছি ইরা।এই বয়সে কি হয়, আর তোমার ব্যবহার দেখে সর্বপ্রথম এটাই মাথায় আসবে সেটা স্বাভাবিক। এই সময়টা এমনই।
–‘হুম।ভাবি..
–‘বলো।
ইরা বললো না কিছু। এগিয়ে গেল সূচনার দিক।আচ/মকাই জড়ি/য়ে ধরলো সূচনাকে। বললো-
–‘থ্যাঙ্কিউ সুন্দর করে বোঝানোর জন্য।
তাকে সোজা করে দাড় করিয়ে তার গাল টি/পে দিল বাচ্চাদের মতো।বললো-
–‘অনেক হয়েছে কথা এবার খেতে চলো।
–‘হুম।
___________________________
প্রণয় আর ইরা এতক্ষণ তিথির রুমেই ছিল।সূচনা তিথিকে খাইয়ে দিয়ে রান্নাঘরে গিয়েছে সবকিছু গোছাতে।সূচনা সব কাজ শেষে তিথির রুমে আসলে প্রণয় নিজের রুমে চলে গেল।ইরা মেডিসিন দিয়েছে তিথিকে।তিথির দুপাশে দুজন বসে আছে,, তিথি চুপচাপ শুয়ে আছে। সূচনা মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে জিজ্ঞেস করলো-
–‘একটু ভালো লাগছে এখন?
–‘একটু্।
–‘চিন্তা করো না..ঠিক হয়ে যাবে।
–‘ভাবি ঠিকই বলছে তিথি।তুই ঘুমানোর চেষ্টা কর,আমি তোর সাথে শুই আজকে।ভাবি তুমি যেয়ে শুয়ে পড়ো।
–‘ভাবি তুমি আমার সাথে ঘুমাও।
ইরার কথার পিঠে তড়িৎ গতিতে বললো তিথি। ইরা দ্বিম/ত করে বললো-
–‘আমি আছি তো ভাবি রুমে যেয়ে থাকুক।
–‘না।ভাবি ও থাকবে তুমিও থাকবে।এমন করো কেন আমি না অসুস্থ।
মুখটা ল/টকিয়ে বললো তিথি।সূচনা ফিক করে হেসে দিল।বললো-
–‘সমস্যা নেই দুজনই থাকব।আমি একটু বলে আসি।থাকো।
সূচনা রুম থেকে বেরিয়ে এলো তার রুমে যাওয়ার উদ্দেশ্যে।সূচনা যেতেই ইরা হালকা করে তিথির কান টে/নে দিয়ে বললো-
–‘শুরু হয়েছে, অসুস্থ হলেই সব আহ্লাদ উপচে পড়ে তোর তাই না।
–‘একদম ঠিক ধরেছো। হিহিহি।
–‘একটু আগে কে যেন বলছিল “আমি না অসুস্থ। এখন আবার দাত কে/লাচ্ছে কে?
–‘তিথি বলেছে আর তিথিই দাত কেলা/চ্ছে।আজকে সুযোগ হয়েছে আমরা তিনজন একসাথে শুবো আর অনেক গল্প করব। ঠিক আছে?
–‘সে দেখা যাবে এখন একটু উঠে সোফায় বস তো।বিছানা টা ঠিক করি।
–‘আচ্ছা।
_________________________
সামনে ল্যাপ্টপ রেখে কানে ব্লুটুথ লাগিয়ে কিছু একটা করছে প্রণয়।সে বিছানায় বসা আর সূচনা দরজার সামনে দাড়ানো। তার দিকেই তাকিয়ে থেকে ধীর পায়ে এগোতে নিলেই প্রণয় ফ/ট করে তাকালো তার দিকে। সূচনা কিঞ্চিৎ লা/ফিয়ে উঠলো সাথে পা ও থেমে গেল।প্রণয় অবাক হওয়ার ভঙ্গি/মা করে বললো-
–‘আশ্চর্য তোমার রুম, তোমার বর সব তোমার তবুও এত লুকোছাপা, ভয় যে কেন তোমার সেটাই বুঝিনা।
প্রণয়ের কথায় সূচনার ভ্রু যুগল কুঁ/চকে এলো কিঞ্চিৎ।বিছানার দিকে এক ঝ/টকায় এগিয়ে গিয়ে বললো-
–‘প্রথমত আপনি লুকোছাপার কথা বলছেন তাহলে শুনুন এটা আমার রুম,আপনি আমার বর,রুমের সব আমার সেটা সবাই জানে তো লুকোছাপার প্রশ্ন ই আসেনা।আর আপনাকে ভ/য় পেতে যাব কেন?আপনি বাঘ না ভাল্লুক নাকি পূর্নজন্মের রাফসান হক যে কে/টে টুকরো টুক/রো করে ফেলবেন সেজন্য আপনাকে ভ/য় পাব।আপনি একটা…
প্রণয় ও ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করলো-
–‘আমি একটা কী?বলো।
সূচনা সেখানেই চুপ হয়ে গেছে। তার এতক্ষণে হুশ এসেছে আর সাথে ছাদের একেকটা মুহুর্ত যেন জী/বন্ত হয়েছে চোখের সামনে যার দরুন এখন মাথা তুলে তাকানো ও তার দায় হয়ে পড়েছে।নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করলো-তুই এত বো/কা কেন সূচি।জীবনেও কী বড় হবি না?
–‘বলো আমি কী?
কোনোরকম মাথা হালকা তুলে ফো/কলা হাসি দিল সূচনা।মুখটা ছোট করে ইনোসেন্ট ভাব নিয়ে বললো-
–‘আপনি একটা ভোলা ভালা, ইনোসেন্ট ছেলে, আপনাকে ভ/য় কেন পাব বলুন।আপনার মতো ভালো আর ইনোসেন্ট আর দু একটা নেই।হেহেহে।
প্রণয় মুখ বা/কিয়ে হাসলো দু হাত বু/কে ভাজ করে বললো-
–‘আমার মতো ভালো ছেলে আর দু একটা পাবেনা তা ঠিক কিন্তু আমি মোটেও ইনোসেন্ট না।
–‘কে,,কেন?
–‘ধীরে ধীরে বুঝবে।মিহু কল দিয়েছিল, কল ব্যাক করো যেও। কল দিয়ে কানের পো/কা নাড়িয়ে ফেলছিল আমার।
–‘আপনি রিসিভ করে কথা বললেই তো আর বারবার দিত না।
–‘ওর কল রিসিভ করা মানে আমার আধা ঘণ্টা সময় ওয়েস্ট করা।
–‘হুহ,,ফোন কোথায় আমার?
–‘আমার কাছে।
–‘দিন।
–‘নিয়ে যাও।
–‘দিন আপনি।
সূচনা হাত বাড়িয়ে ফোন চাইলেও দিলনা প্রণয়।বললো-
–‘কাছে এসে নিয়ে যাও।
–‘এমন করছেন কেন,ফোনটা দিন।
কোল থেকে ল্যাপ্টপ সরাতে সরাতে প্রণয় বললো-
–‘আমি কিছু ই করিনি।বললামই তো নিতে পারলে নিয়ে যাও।কাছে আসতে বলেছি জ/ড়িয়ে ধরতে বলিনি যে এত ভ/য় পাচ্ছো।তোমার মাথায় সারাক্ষণ এগুলো থাকলেও আমার অনেক কিছু ভাবতে হয়।সবসময় এসব নিয়ে থাকিনা।আসো ফোন নিয়ে যাও।
সূচনা একটু বিশ্বাস পেল বোধহয়। চিন্তাছাড়াই এগোলো প্রণয়ের দিকে।ঝু/কে হাত বাড়িয়ে ফোন নিতে গেলেই কো/মড়ে সুর/সুরি মতো অনুভব হলে টাল সামলাতে না পেরে প্রণয়ের ওপরই পড়ে গেল।প্রণয় বা/কা হাসলো।মুখে হাত দিয়ে বললো-
–‘তোমাকে বলেছিলাম কাছে এসে ফোন নিয়ে যাও আর তুমি আমার মতো ভোলা ভালা মানুষ টার ওপর হা/মলে পড়লে।এই ছিল তোমার মনে।
সূচনা চোখ মুখ কুচ/কে বললো-
–‘একদম বা/জে কথা বলবেন না।আমি কিছু ই করিনি আপনি ই তো আমার কোম…
–‘কী করেছি তোমার কোমরে?
–‘ক,,কিছু না সরুন।দিন ফোন দিন।
–‘আমি তো ধরিও নি। তুমিই লেপ্টে আছো।
নিজের অবস্থান বুঝল সূচনা।সত্যি ই প্রণয় ধরে রাখেনি তাকে।সে ই তার টি-শার্ট এর কর্লার হাত দিয়ে ধরে রেখেছে।সূচনা তড়িঘড়ি করে উঠে দাড়াতে নিলে প্রণয় হাত টে/নে ধরল।বললো-
–‘ছাাদ থেকো আসার পর যা হয়েছে তারপর তোমার ফিলিংস কেমন ছিল প্রণয়ী?
সূচনাকে চোখ মে/রে কথাটা জিজ্ঞেস করলো প্রণয়।সূচনা হাত ছাড়া/তে মোচ/ড়ামু/চড়ি করতে লাগল।তা দেখে প্রণয় ঘা/টালো না আর। আজকের জন্য থাক,আজকে অনেক লজ্জায় ফেলেছে তাকে।হাত ছেড়ে দিল প্রণয়,হাতে ফোন ধরিয়ে দিল।ফোন হাতে পেতেই সূচনা দ্রুত পায়ে উঠে চলে গেল ব্যালকনিতে।
.
.
রিং হচ্ছে কিন্তু ফোন রিসিভ হচ্ছে না।মিহুকে কল করছে সূচনা। মেজাজ খা/রাপ হচ্ছে এখন।তিথির রুমে যেতে হবে তাকে অথচ এই মেয়ে ফোনই তুলছে না।এই শেষ বার দিবে বলে যখন ডায়াল করলো তখনই রিসিভ করলো মিহু।কানে তুলে বললো-
–‘কয়টা কল দিয়েছি হ্যা।কান কই থাকে তোর?
–‘এহহহ আসছে কান কই থাকে।তেকে কয়বার কল দিয়েছি আমি সে খেয়াল আছে? আপনার কান কই ছিল ম্যাডাম?
–‘আমি রুমে ছিলাম না, তোর ভাই শুনেছে কিন্তু সে রিসিভ করে নি।রিসিভ করে বলতে তো পারত পরে কল দেয়।
–‘করবে না কারণ সে জানে আমার কল রিসিভ করা মানে তার আধা ঘণ্টা সময় নষ্ট করা।
–‘বাহ ভাই-বোন দুজনের একই কথা।
–‘হুম।কেমন আছিস তা বল।
–‘এতদিন পর মনে হলো।
কিছুটা অভিমানী কণ্ঠে সূচনা জিজ্ঞেস করলো।
–‘দেখ রা/গ করিস না সূচি।এ কয়দিন ব্যস্ত ছিলাম।মিসেস শেখ অসুস্থ ছিলেন।ওনার বর ও ছিলেন না বাসায়। ভাইয়া আর আমাকেই সবটা সামলাতে হয়েছে।ভাইয়া তো গত চারদিন ঢাকার বাইরে ছিলেন।সকালে ফিরেছে এখন আবার অসুস্থ, জ্বর উঠেছে।
আর তুই তো জানিসই আমি এত ঝা/মেলা দেখলে এমনি হা/ইপার হয়ে যাই।
–‘আচ্ছা বুঝলাম।এখন ঠিক আছে সব?আন্টি সুস্থ হয়েছেন?আঙ্কেল ফিরেছেন বাসায়?
–‘হু।
–‘একটা কথা বল তো মিহু।
–‘বলে ফেল কী।
–‘তুই আঙ্কেল আন্টি কে নাম ধরে কেন ডাকিস?
–‘তাদের ভাগ্য ভালো এত সম্মান দিয়ে মি. এন্ড মিসেস শেখ সম্বোধন করি শুধু মাত্র আমার বাবা মা দেখে।নাহলে ওনারা যা করেছেন তারপর…
–‘এভাবে বলছিস কেন কী করেছেন ওনারা?
–‘তোর কিছু বলার আছে?
–‘আবারও এই কথাটা কে ইগনোর করছিস।
–‘আমি কালকে আসব সেটা জানাতে কল দিয়েছিলাম।এখন তোর কিছু বলার থাকলে বল নাহলে ফোন রাখলাম। আল্লাহ হাফেজ।
–‘মি..মিহু
টুট টুট শব্দ জানান দিল সংযোগ বি/চ্ছিন্ন করেছে মিহু।দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল সূচনা।এই মেয়েটা এমন কোন?যখনই এই বিষয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করা হয় তাকে সে ইগনোর করে যেন পা/লিয়ে যায়।ব্যালকনি থেকে উঠে রুমে গেল সূচনা। প্রণয় আগের ভঙ্গিতেই বসে আছে। এই একজন ল্যাপ্টপ,ফোন,বিছানা আর কোলবালিশের সাথে যেন আজন্মকাল সম্পর্ক করে নিয়েছে।এগুলো নিয়ে বসলে আর উঠতে মন চায় না।
ওয়াশরুমে নিয়ে যাওয়া বাকি মাত্র।
–‘মনে মনে না ব/কে সামনা সামনি ব/কো।আমি আরাম করে বসছি তুমিও বসো তারপর শুনবো।
সূচনার ভাবনার সুতোয় করা/ঘাত করলো প্রণয়ের উক্ত বাক্য। সূচনা সে কথা আর বাড়ালো না।স্বাভাবিক কণ্ঠে বললো –
–‘আমি তিথির সাথে ঘুমাব আজকে।ও একা ঘুমাবে না বলছে।
–‘ইরা আছে না সাথে।
–‘দুজনকেই লাগবে তার।
আচ/মকা প্রণয় ল্যাপ্টপ নিয়ে উঠে দাড়ালো। ল্যাপ্টপ পড়ার টেবিলে রেখে চুলে হাত বুলাতে বুলাতে বললো-
–‘ঠিক আছে যাও।
সূচনা কিছুটা অবাক হলো বৈকি।কিন্তু কিছু বললো না।যেতে পারলে বাঁচে।ঘুরে দরজার দিকে পা বাড়াতেই চুলে টা/ন লাগলো।চুল ধরে পিছিয়ে এলো সূচনা।বাম বাহু তে হাত রেখে টে/নে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল প্রণয়।চুলগুলো আলগোছে সরিয়ে একপাশে রেখে সূচনার ঘা/ড়ে ছোয়া/লো ও/ষ্ঠাধর। সূচনার ভাবনার বাইরে ছিল এমন কিছু।ঠোঁ/ট সরিয়ে গাঢ় কণ্ঠে প্রণয় বলে উঠলো-
–‘–‘আজকে ছেড়ে দিয়েছি তার মানে এই না যে রোজ রোজ ছেড়ে দিব।আজকে টিজার দেখিয়েছি,সামনে ট্রেলার দেখাব তারপর ফুল মুভি।গেট রেডি জান।গুড নাইট মাই নাইট কুইন।
বাহু ছেড়ে দিয়ে সূচনার থেকে সরে দাড়ালো প্রণয়।সূচনাও স্থির থাকতে পারলনা।এক প্রকার ছু/টে বের হলো রুম থেকে।যাওয়ার আগে শুধু এতটুকু বলে গেল-
–‘আপনি মোটেও ইনোসেন্ট না।
প্রণয় হাসল তার কথায়।
__________________________
তিথি ঘুমিয়ে পড়েছে অথচ বলছিল গল্প করবে।সূচনা রুমে আসেনি এখনও তাই ইরা ব্যালকনিতে যেয়ে দাড়িয়েছে।সূচনার বলা কথাগুলো ভবছিল সে।ভাবতে ভাবতে ঠিকও করে ফেলেছিল সে আর এমন মন ম/রা হয়ে থাকবেনাা,আগের মতোই ব্যবহার করবে।কিন্তু মন কী আর অত সহজে বোঝে?দীর্ঘশ্বাস ছাড়ছে সে একের পর এক।আনমনে আওড়াচ্ছে-
–‘আমি অভিমান করেছিলাম, আপনি বলেছেন -অভিমান কমলে এসো।অথচ আপনি আমার অভিমান ভা/ঙাবেন আমি তো সেই অপেক্ষায় ছিলাম মুগ্ধ সাহেব।অভিমানে অভিমানে দূরত্বের দেয়াল তৈরী হওয়ার আগে আপনি অভিমান টা ভা/ঙিয়ে নিলেও পারতেন মুগ্ধ সাহেব।
.
.
.
–‘দেখুন মিসেস শেখ আমি ঔ বাড়ি যাওয়ার জন্য আজ পর্যন্ত আপনার কাছ থেকে পার মিশন নেই নি কোনোদিন আর না নিব কখনোতাই অযথা আপনার মতামত জানাতে আসবেননা।
রু/দ্ধ কণ্ঠে নিজের মা/কে কথাটা বললো মিহু।মিসেস আফসানা চিৎ/কার করে বললেন-
–‘মিহুউউ।
–‘চে/চাচ্ছেন কেন মিসেস শেখ?
–‘মিহু ভুলে যেও না আমি তোমার মা।
–‘ভুলিনি বিধায় এখনও এতটুকু সম্মান পাচ্ছেন।আশা করি এমন কিছু করবেন না যে সেই সম্মানটুকু ও না দেই।
–‘আমিও যাব আপু।
মিসেস আফসানার পেছন থেকে বলে উঠল পিহু।তার দিকে তাকিয়ে কোমল স্বরে মিহু বললো-
–‘আজ না পাখি আরেকদিন নিয়ে যাব।তুমি স্কুলে যাও এখন।তোমাকে শুক্রবারে নিয়ে যাবে একদিন।
–‘ঠিক আছে।
পিহুর মন খারা/প হয়েছে সেটা বুঝতে পেরেছে মিহু।কিন্তু ভাবল না আর।দ্রুত পায়ে বেড়িয়ে গেল মিহু।মিসেস আফসানা তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ফু/সতে লাগলেন।
#চলবে
( আসসালামু আলাইকুম। পুরো ২১০০+ শব্দ দিয়েছি আজকে, সুন্দর মন্তব্য চাই কিন্তু আর কালকে থেকে ইনশাআল্লাহ প্রতিদিন একটা করে পর্ব দিব।হ্যাপি রিডিং💙)