#নয়নতারা
পর্ব ২৭
(আমার আইডি আবার ডিজেবল করে দেওয়া হয়েছে।
আজ মন একটু ও ভালো নেই।আর হ্যাঁ Suvhan Arag এই নামে একজন ফেক আইডি খুলেছে।আমার আইডি অফ আছে।আপনারা কেউ এই নাম দেখলে রিকোয়েস্ট দেবেন না।কিছু হলে তার জন্য আমি দায়বদ্ধ নই।আমি আইডি আবার খুললে বা আইডি ঠিক হলে আপনাদের জানিয়ে দেব।
আমি আল্লাহর রহমতে কষ্ট করে এ অবধি এসেছি।ইনশাহআল্লাহ আল্লাহ চাইলে কেউ আমাকে আটকাতে পারবে না।সবাই দোয়া করবেন)
রাতের চাদরে ঢেকে গেছে চারিদিক।আধারের ঘনঘটা।নাফিজ এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে আকাশের দিকে।অন্ধকারের মাঝেও যেন আকাশে সে একটা জ্বলন্ত তারার উপস্থিতি দেখতে পাচ্ছে।টিপ টিপ করে জ্বলছে তারা টা।
—-আমার ভেতরের অন্ধকার টাতে ও যে আমি এরকম আলো দেখতে পাচ্ছি।টিপ টিপ করে জ্বলছে।দিন যাচ্ছে তার আলোর ঝলকানি বাড়তেই আছে।এই আলো কি এবার সত্যি সত্যি গ্রাস করে নেবে আমাকে!মুছে কি দেবে আমার সব অন্ধকার।
নাফিজ ট্রাউজারের পকেটে হাত ঢুকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
—-দশটা বেজে গেছে।তুই না ঘুমিয়ে ওখানে দাঁড়িয়ে কি করছিস?
লতিফার গলা শুনে পেছনে ফিরলো নাফিজ।
—-মা তুমি!
—-পানি আনতে যাচ্ছিলাম।দেখলাম তোর ঘরে এখনো আলো জ্বলছে।ঘুমোচ্ছিস না কেন?সকাল থেকে তো তোর ডিউটি শুরু আবার।তাড়াতাড়ি ঘুমো তাহলে তাড়াতাড়ি উঠতে পারবি।
—-কিসের ডিউটি র কথা বলছো মা?কাল তো শনিবার।কাল ও তো ছুটি।
—-ভোরবেলা সাইকেল চালিয়ে যেই ডিউটি দিতে যাস সেটির কথা বলছি।
মায়ের কথা শুনে নাফিজ ভীষণ লজ্জা পেয়ে গেল।নাফিজ মাথা নিচু করে এক হাত দিয়ে মাথা চুলকাচ্ছে।লতিফা নাফিজের চুল গুলো একটু নেড়ে দিল।
—-ঘুমিয়ে পড়।
—-আচ্ছা।
মুচকি হাসি দিতে দিতে লতিফা চলে গেল।
;;;;;
“নাফিজ ভাইয়া” ছোটো সাইজের খাতার মলাটের পেছনে কাচা হাতের লেখায় বড় করে লেখা রয়েছে নামটি।তাও পেনসিল দিয়ে।যে কেউ দেখলে বুঝবে এটা বাচ্চাদের লেখা।
—-কি করছো তুমি?
মাহমুদা বেগম খোঁপা করতে করতে ঘরে ঢুকছিলেন।এসেই দেখেন আব্রাহাম সাহেব বাচ্চাদের হোমওয়ার্কের খাতা নিয়ে ঘাটা ঘাঁটি করছেন।
—-আরে তারার ছোটো বেলার খাতা।ওর সেই নার্সারি থেকে এই অবধি সব বই খাতা তো রেখে দিয়েছি।আজ স্টৌর রুমে গিয়ে দেখে নিয়ে এলাম।কি সুন্দর লিখতো আমার মামোনি।
—-এখন আরো সুন্দর হাতের লেখা ওর।
—-তা ঠিক বলেছো।
—-এখন এসব রেখে ঘুমাও।
—-পুরানো স্মৃতি তাই দেখছি।আমাদের মেয়েটা কতো বড় হয়ে গেল তাই না।
—-হ্যাঁ তাই।আমি তো কখনো ভাবতেও পারিনি আমাকে কেউ মা বলে ডাকবে।
কথা বলতে বলতেই মাহমুদা বেগম আবেগে কেঁদে ফেললেন।আব্রাহাম সাহেব খাতা রেখে উঠে গিয়ে মাহমুদা বেগমের কাঁধে হাত রাখলেন।
—-এসব বলবে না মাহমুদা।এখন তুমি মা।তারার মা।
—-জানো মেয়েটা যখন আমাকে মা বলে ডাকে ওর প্রতি ডাকে আমি যে কি সুখ পাই তোমাকে বলে বোঝাতে পারব না।এই ডাকটা শোনার জন্য কতো চেষ্টা করেছিলাম।কতো বছর অপেক্ষা করেছিলাম।আমি তো আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম।অথচ দেখ আজ আমার সব আছে।
—-আমি তো সব সময় তোমাকে বলেছি আল্লাহ সম্পদ,সন্তান সন্ততি,ফসল সবকিছু নিয়ে তার বান্দার পরীক্ষা নেন।বান্দা ধৈর্য ধারণ করলে আল্লাহ্ তাকে ফেরান না।আরো ভালো কিছু উপহার দেন তাকে।দেখো হঠাৎ করেই আমাদের জীবনে কেমন সব অন্যরকম হয়ে গেল।
—-ঠিক বলেছো।একদম আমার মনের মতো করে আমি গড়তে পেরেছি তারা কে।
—-নেও এখন ঘুমিয়ে পড়ো।
—-তুমি ঘুমাও।আমি তারা আর গাসু কে দুধ দিয়ে আসি।না হলে গাসু খেলে ও তোমার মেয়েকে জীবনে আমি ছাড়া কেউ দুধ খাওয়া তে পারবে না।
—-আচ্ছা যাও।
আব্রাহাম সাহেবের বিছানা তৈরী করে মাহমুদা বেগম রান্না ঘরের দিকে গেলেন দুধ আনতে।
;;;;;
গাসু সেই কখন থেকে ঘরে পায়চারি করছে।তার মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে কতোটা চিন্তিত সে।তারা মুখে হাত দিয়ে খাটের ওপর বসে গাসুর হাঁটা পর্যবেক্ষণ করছে।
—-গাসু কি হয়েছে এবার তো বলো।
—-আফা আমি কেমন রহস্যের গন্ধ পাইতেছি।এই তো এহনো আইতেছে ।একদম তেলাপোকা আর বাঁশপাতা ভাজলে যে গন্ধ হয় সেই ই রকম।
—-ইয়াক!কি বলো তুমি!
—-সত্যি আফা।
—-কি রহস্য?
—-আফা ঐ ফুলচোর ডার মতিগতি আমার ঠেক লাগতেছে না।
—-ফুলচোর!
তারা ভ্রু নাচিয়ে গাসুর দিকে বিস্মিতচোখে তাকি য়ে আছে।
—-হ আফা ফুলচোর।
—-এটা কে?
—-ঐ যে ঐ ধলাকদু থুক্কু ঐ বেটা তো ধলা না হ কালাকদু থুক্কু ঐ বেটা তো কালা ও না।কিরাম জানি?
—-আরে কি বলছো কি গাসু।
—-ঐ হ্যাঁ পাইছি।নশশি কালারের ঐ নশশী কদু ক্যাপ্টেন।
—-ক্যাপ্টেন!
—-হ আফা।ওর চালচলন একদম ঠিক লাগতেছে না।ঐ বেটার জন্য আপনার খালি নজর লাগে ।
—-কিহ! তুমি কি পাগল গাসু!
—-আফা আমি একখান মালা ওরডার দিমু ড্রেনলাইনে।
—-ড্রেন লাইন আবার কি?
—-ঐ যে ইন্টারনেট এ অর্ডার দেয় না।
—-ও আল্লাহ।ওটা অনলাইন।
—-ঐ তো।ঐ হানে।একটা লঙ্কা লেবুর মালা।
—-ওটা তো তুমি পাবে না।ও নিয়ে কি করবে?
—-আপনার গলায় ঝুলিয়ে দিব।তাইলে ঐ নশশী বানদরডার নজর লাগবে না।
“তুমি কার নজর লাগার কথা বলছো গাসু?”
মাহমুদা বেগম দুটো দুধের গ্লাস নিয়ে ঘরে ঢুকলেন।তারা গাসু কে ইশারায় চুপ করতে বললো।
—-ও মা কিছু না।ওর কথা বাদ দেও।ও একটা পাগল।এ আর নতুন কি?
—-নেও এবার দুজনে দুধ শেষ কর।
—-মা দেখ দুধ থেকে পচা গন্ধ আসছে।
—-তারা!একদম দুষ্টুমি করবে না।খেতে হবে।
তারা নাক টিপে মাহমুদা বেগমের দিকে তাকাচ্ছে। আর একটু করে চুমুক দিচ্ছে গ্লাসে।
চলবে———-
আইডি র সমস্যা তে মন ভালো নেই।দেওয়ার ইচ্ছে ছিল না।আপনারা অপেক্ষা করবেনতাই দিছি।সরি everyone.