ধর্ষন করে বিয়ে পর্ব-১৫

0
933

ধর্ষন করে বিয়ে
.
লেখকঃ সানভি আহমেদ সাকিব।
পর্ব ১৫
.
খেতে বসেও এইসব সহ্য করা লাগতাছে।
কিছুই বলতে পারছেনা কারন বাবা মা
পাশে বসা তাই।
আর সহ্য করতে না পেরে পা দিয়ে নিলিমার পা চেপে ধরে সানভি।
নিলিমা মুচকি হেসে উঠে।সানভি আরো জোরে চেপে ধরে।নিলিমা মাথা নিচু করে হাসে।
সানভি আরো রেগে যায়।কিন্তু বাবা মার সামনে কিছু করতে পারেনা।
খাওয়া শেষ করে সানভি রুমে গিয়ে বসে।
নিলিমাও যায়।
নিলিমা রুমে ঢুকার সাথে সাথে সানভি তার হাত ধরে টান মেরে বিছানায় ফেলে দেয়।
,
– ওই মেয়ে সমস্যা কি তোমার??একটু শান্তিতেও থাকতে দিবেনা নাকি?(সানভি)
– আমি আবার কি করলাম??(নিলিমা)
– কি করোনাই তাই বলো।খেতে বসেও তোমার যন্ত্রনা আর ভালো লাগেনা।(সানভি)
– তো আমি কি করবো? আমাকে তো বউ হিসেবে মানোই না তাহলে তুমি শাষন করার কে??(নিলিমা)
– হ্যা মানিনা তাই আমার থেকে দুরে থাকার চেষ্টা করবা।আমি তোমাকে যাস্ট সহ্য করতে পারিনা।(সানভি)
– আচ্ছা এরপর থেকে তোমার দুরে দুরে থাকবো হইছে।(নিলিমা)
– হুমমম।(সানভি)
– আমি ভেবেছিলাম তুমি আমাকে ভালোবাসো কিন্তু না ধর্ষক কখনো কাওকে ভালোবাসতে পারেনা।(নিলিমা)
,
নিলিমা রাগ করে চলে যায় ওয়াশরুমে।
ভিষন কান্না পায় তার। কি দোষ ছিলো তার?
বারবার একটা কথাই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে সানভির থেকে দুরে থাকতে হবে।
কেনো বেহায়ার মতো ঘুরি তার পেছনে।আমারো একটা পার্সোনালিটি আছে।
,
হিহিহি পার্সোনালিটি সানভি সাতটা বছর পার্সোনালিটি ধুয়ে মুছে দিয়ে রাস্তায় সবার সামনে থাপ্পড় খেতো।তখন তার একবারো মনে হয়নি তারও পার্সোনালিটি আছে।মনে হয়েছে ভালোবেসে মেরেছে লোকে কি বলবে তাতে আমার কি।
আর দুদিন এর অপমানেই পাল্টে গেলো চিন্তাভাবনা।
যাই হোক গল্পে ফিরি।
.
নিলিমা ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখে সানভি রুমে নাই।
সে দরজাটা আটকে দিয়ে নিশ্বব্দে কাদে।
সারাদিন আর সানভির দেখা মিলেনা নিলিমার।
চিন্তা হয় অনেক।দুপুরেও খেতে আসেনি।
কোথায় গেলো সে।অস্থির হয়ে উঠে নিলিমার মন।
বারবার ফোন দিতাছে ফোনটাও বন্ধ।
.
সন্ধার পর সানভি বাসায় ফিরে।
পকেটে এক প্যাকেট সিগারেট আর একটা দিয়াশলাই এর বাক্স।
বেশ স্বাভাবিক ভাবেই রুমে ডুকে।
নিলিমা সানভিকে দেখা মাত্রই জড়িয়ে ধরে।
সকালের কথা মনে হতেই ছেড়ে দেয়।
– সরি।(নিলিমা)
সানভি ছাদে চলে যায়।
একটা সিগারেট ধরায় সে।
চেইন স্মোকার এর মতো টানতে থাকে সে।
বাসায় সিগারেট খাওয়া নিষেধ তবে রাত্রিবেলা ছাদে কেও আসেনা।তাই খাচ্ছে।
তার ও ভিষন কষ্ট হচ্ছে।
অনেক দিন হলো সিগারেট খায় সে।
কিছুটা হলেও শান্তি পায় সিগারেটের বিষাক্ত ধোয়ায় হ্রদয় পুড়িয়ে।
.
একটার পর একটা সিগারেট খেতে থাকে সে।
আর চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ে অজস্র নোনা পানি।
প্রত্যেকটা ফোটা নিলিমার প্রতি ভালোবাসার প্রমান।
বারবার থাপ্পড় খেয়ে যখন ফিরে আসতো।
রাত গভির হলে মুখ চেপে কাদতো সানভি।
ভাবতো আর যাবোনা কখনো তাকে দেখতে।
কিন্তু পরেরর দিন সকাল হতেই মনটা কেমন যানি করে উঠতো।
বলতো একটাবার দেখে আসি আড়াল থেকে।
আজকে আর সামনেও যাবোনা কথাও বলবো না চড় ও খাবো না।শুধু দেখেই চলে আসবো।
কিন্তু পারতো না সে থাকতে।একবার দেখলেই ইচ্ছা হতো একটু কথা বলি।আর সামনে যেতেই নিলিমা প্রতিদিনের মতো একটা থাপ্পড় উপহার দিয়ে চলে যেতো।
রুটিন ছিলো তার এটা।
সানভি কতবার যে বলেছে আর নিলিমার সামনে যাবেনা কিন্তু পরেরদিন ঠিকই তার সামনে চলে গেছে।
.
বাসায় এসে কেদেছে আল্লাহ ছাড়া কেউ দেখেনি তার কান্না।
শুনতে পায়নি একটা ছেলের আর্তচিৎকার।
বুঝেনি কখনো নিলিমা তাকে।
.
অপরাধি সে।ধর্ষন করেছে নিলিমাকে।তার নেই কোনো বেচে থাকার অধিকার।
সে তো সত্তিই বলেছে ধর্ষক কখনো ভালোবাসতে পারেনা।
ছাদের একদম শেষ প্রান্তে চলে যায়।
সুইসাইড করবে সে।তার আগে সিগারেটটা শেষ করে নেই।
মনে মনে বলে সানভি একটাবার নিলিমার কাছে মাফ চাওয়া দরকার। এখন না হোক গভির রাতে হলেও তার কপালে একটা শেষ চুমু দিয়ে তারপর পাড়ি জমাবো দুর আকাশে।
.
প্যাকেটে এখনো আটটা সিগারেট বাকি।
আর একটা সিগারেট ধরায় সানভি।
নেশা লেগে গেছে তার। সিগারেটটা শেষ করে রুমে যায় সানভি।
গিয়ে শুয়ে পড়ে বিছানায়।
নিলিমা খাওয়ার জন্য ডাকতে এসে দেখে সানভি ঘুমাচ্ছে।
তাই ডাকে না সে।খাবারটা রুমে এনে রেখে সেও সানভির পাশে শুয়ে পড়ে।
কাপা কাপা কন্ঠে ডাক দেয় নিলিমা,
– সানভি??
– সানভি???
– সানভি??
কোনো সারা নেই। গভির ঘুমে আচ্ছন্ন সে।
নিলিমা সানভির বুকে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে।
একটা অন্যরকম অনুভুতি কাজ করে তার মধ্যে।কেনো যানি মনে হয় খারাপ কিছু ঘটতে চলেছে।
নিলিমাও ঘুমিয়ে পড়ে।
,
রাত গভির হয়ে যায়।আশেপাশে সবকিছু স্তব্ধ।সবাই ঘুমাচ্ছে।
সানভি জেগে উঠে। খেয়াল করে নিলিমার মাথাটা সানভির বুকে।আর সে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে।
নিষ্পাপ একটা মুখ খুবই মায়াবি।
সানভির চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে।
ইচ্ছে হচ্ছেনা সবাইকে ছেড়ে যেতে।
নিলিমার মায়াবি মুখটার দিকে তাকিয়ে ইচ্ছে হয় অনন্তকাল এভাবেই তাকিয়ে থেকে কাটিয়ে দিতে পারবে সে।
কিন্তু না সেটা সে করবে না।
জিবনের শেষ রাতটা আজ। মন ভরে দেখে নিলিমাকে।
খুব ইচ্ছা ছিলো নিলিমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাবে সে।
কিন্তু সেই ইচ্ছাটা আর পুরন হলোনা তার।
.
বারবার মাথায় একটা কথাই ঘুরে ধর্ষক কখনো কাওকে ভালোবাসতে পারেনা।
আমি ধর্ষক আমার বেচে থাকার কোনো অধিকার নেই।
অভিনয় ছিলো আমার সাত বছরের ভালোবাসা।
তাকে আপন করে পাওয়ার জেদ চেপে গেছিলো তাই করেছি ওইসব।আমি কখনো কাওকে ভালোবাসতে পারিনা কারন আমি ধর্ষক।
.
চোখ দিয়ে নিরবে পানি গড়িয়ে পড়ে সানভির।
মাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করে।
নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে মায়ের রুমের দিকে পা বাড়ায় সানভি।
বাইরে থেকে মাকে দেখে চলে আসে সানভি।
শেষ ইচ্ছাটা পুরন করে সে।
নিলিমার কপালে আলতো করে একটা চুমু দেয় সে।
তাকিয়ে থাকে নিষ্পাপ মুখটার দিকে কারন আজকেই শেষ দেখা।
আর হবেনা কোনোদিন ও দেখা।
কমে যাবে পৃথিবি থেকে একটা ধর্ষক একটা অমানুষ।
.
সানভি বারবার নিলিমার কপালে চুমু খেতে থাকে।
তারপর মনে হয় এবার সময় শেষ আর দেরি করা ঠিক হবেনা।
শেষবারের মতো বলে i love you Nilima I love you…
.
#________চলবে_______

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here