#দেবী
লেখিকাঃ #Srotoswini_স্রোতস্বীনি(ছদ্মনাম)
কপি করা সম্পুর্ণ নিষেধ।
২৮ঃ
“অভিমান” যা কেবল আপন মানুষের সাথেই করা হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে অভিমান করা ব্যাক্তিই এতে বেশি ভোগে। যেমনটি ঘটছে রুহুলের সাথে। রুহুলের মনে তীব্র অভিমান হয়েছে। এত ভালোবাসার পরেও কাকন কেন তার সাথে এমন করে। তবে সেই অভিমানে রুহুলের চিন্তা হচ্ছে তার এমন অভিমান দেখে যদি বিবিজান কাদে তাহলে যে বিবিজানের তুলনায় তার নিজেরই অধিক বেদনা হবে। রুহুল নিজেও মনে করে কাকন অল্প বয়সী। জ্ঞান বুদ্ধি কম তাই হয়তো এমন করে। কিন্তু কাকনের চেয়েও অল্প বয়সী মেয়েরাও সংসার করছে। বাচ্চা কাচ্চাও হয়েছে কারো কারো। অথচ কাকন সর্বদা রুহুল এর ভালোবাসা উপেক্ষা করে।লেখিকা স্রোতস্বীনি। এত বার বললো, থেকে যান মঞ্জিলে, যাবেন না মহিলাশালায়। কিন্তু তার বিবিজান যে নিজের কথায় অনড়। সেই রুহুলের ভালোবাসার সুযোগ নিয়ে মহিলাশালায় গেলো। তাও সাতদিন থাকবে। রুহুল ও মনে মনে পণ করলো যা ই হোক না কেন সে তার বিবিজানের সাথে আজ কথা বলবে না।
ট্রেনের জানালা দিয়ে প্রকৃতি দেখছে রুহুল। দমকা হাওয়া রুহুলের চুল গুলো উড়িয়ে দিচ্ছে বারংবার। তবে মনের গহীনে জমেছে তীব্র অভিমান। কেন তার বিবিজান বোঝে না সে যে রুহুলের অভ্যাস হয়ে গেছে। আর প্রত্যেক টা মানুষ অভ্যাসের দাস।
_______________________
জামালের কক্ষে বসে আছে দুলাল সিরাজী। সাথে আছে মহীবুল। মহীবুল জামাল সিরাজীর কাছেই বসে আছে। জামাল আর মহীবুল দুজনেই মাথা নত করে আছে।
দুলাল সিরাজীর কথার উপর কথা এই সিরাজপুরে কারো বলার সাহস নেই। লোকটা যতটা দয়ালু তার চেয়েও ভয়ংকর হতে পারে।তবে বাইরের লোকজন তার এই ভয়াবহতা বোধহয় জানে না।
দুলাল সিরাজী গলা ঝেড়ে কেশে উঠলেন। যা জামাল আর মহীবুলের হৃদগতি আরো বাড়িয়ে দিলো। জামাল যেন এখনি ঘামা শুরু করে দিয়েছে। হাত ভাঙার আসল বিষয়টি যদি তার আব্বাজান জানে তাহলে লজ্জাজনক ব্যাপার হয়ে যাবে।তবে আর কি কারন আছে যার কারনে জামালের কক্ষেই দুলাল এলো।
দুলাল সিরাজী দুজনের দিকেই চাইলেন।তারপর বললেন,” সামিয়ার বিয়ার আগেই হাত ডা তো ভাংলা। তয় পা তো ঠিক আছে। হাইটা কি মিলঘরে যাওয়া যায় না। কত কাম পইড়া থাকে।”
জামাল মাথা নিচু করে বললো, “আসলে আব্বাজান আমার হাতডা খুব ব্যাদনা করে তাই যাইতাছি না।ভাবছি যে একবারে সামিয়ার বিয়ার শেষেই যামু। ”
–“বিয়া কি তোমার যে তুমি বিয়ার পর যাইবা। ”
–” না আব্বা আমার বিয়া হইবো কেন। আর কইলাম তো যামু। মহীবুল তো দেখাশুনা করতাছেই। ”
–“কাম চোরা স্বভাব আর গেলো না তোমার। এই জন্যই আইজ তোমার এই দুর্গতি। তাইলে আসল কথা কই? ”
আসল কথা শুনে জামাল মহীবুল একে অপরের দিকে চাইলো।এখন আবার কি বলবে।
দুলাল সিরাজী জামালের ভাঙা হাত ধরলেন। আলতো করে হাত ছোয়ালো তারপর বললো, “হবীবুল্লাহ রে কেন পাঠাইছিলা তোমরা ওইদিন? ”
জামাল সিরাজীর যেন জান যায় যায় অবস্থা। বললো, “আ আব্বা আমরা পাঠামু মানে সেইদিন তো রুহুলের সামনে কই…”
–“এই চপ শু*****চ্চা, একটা মিছা কথা কইবি তো তোর এই সিরাজী মঞ্জিলে শেষ দিন হইবো।”
মহীবুল দুলাল সিরাজীর হাত ধরে বললো, “দাদাজান আমরা জানি আপনে আমাগোই সন্দেহ করেন সবকিছুতেই। কিন্তু এইবারে আমাগো হাত নাই। আর হাবিবুল্লাহ তো আমাগো লোক ই আছিল।”
–“হাবিবুল্লাহ তোর বাপের চামচা আছিল। তোর বাপের ইশারা ছাড়া নড়েও না।তাইলে তগো কমু না কারে কমু”
–“দা দাদাজান আপনে হুদাই আমাগো সন্দেহ করতাছেন। আমরা নিশ্চিত এইডা এমন কেউ করছে যারা আপনের ক্ষতি চায়। তাই না আব্বা ”
জামাল ছেলের সাথে সায় মিলিয়ে বললো, “জি আব্বা”
দুলাল সিরাজী দাড়িতে হাত বুলাতে বুলাতে বললো, “হাবিবুল্লাহ রে কি তোরা কাউ রে খুন করতে পাঠাইছিলি। মিছা কথা কইবি না।”
–“আ,,আমরা কেন খুন করবার পাঠামু। আপনে তো হজ্জে যাওয়ার আগেই কইছেন আপনি বাইচা থাকতে জানি আমরা আর কোনো খুন না করি।আমরা তো আর আপনেক অমান্য করমু না তাই না আব্বাজান। ”
–“তাইলে যে হাবিবুল্লাহর বউ যে কইলো হেলাল নিজে হাবিবুল্লাহর লগে রাইতে দেহা করবার গেছিলো।এইডা যদি পুলিশ জানে সিরাজী মঞ্জিলেই দোষ আসবো।”
মহীবুল আবারো বললো, “ওইডা আসলে আব্বার জন্য মদ আনার জন্য দাদাজান। বিশ্বাস করেন কছম আপনের আমরা হাবিবুল্লাহরে অন্য কামে পাঠাই নাই। ”
–“ঠিক আছে তরে বিশ্বাস করলাম। কিন্তু হাবিবুল্লাহর বউ আইজ ও থানায় গেছিলো। যদি আমার বংশের মান নষ্ট হয় তগো আমি জ্যান্ত গারমু। কথাডা মাথায় রাখিস।ভুইলা যাস না হাবিবুল্লাহ আমাগো অতীতের সাক্ষী।” কথাটি বলেই দুলাল সিরাজী চলে গেলেন।
দুইজন ই যেন হাফ ছেড়ে বাচলো। জামাল কপালের ঘাম মুছে বললো, ” রুহুল ছাড়া হাবিবুল্লাহ রে কেউ মারে নাই মহী এইডা আমি নিশ্চিত। কিন্তু রুহুলের নাম কইলে রুহুলের তো কিছুই হইবো উলটা আব্বাজান আমাগোই দোষ দিবো। ”
মহীবুল বললো, “আগেই কইছিলাম রুহুল জানলে তিনজন রেই শেষ করবো। হাবিবুল্লাহ যদি মরার আগে নাম কইয়া যাইয়া থাকে তাইলে আমরা শেষ। ”
জামাল বললো, “হেলালের গবর মাথার এই বুদ্ধিডা শুইনাই বিপদ হইলো। মাঝখান থিকা হাবিবুল্লাহ রে হারাইলাম। ”
–“সা’লা বিলালের পয়দা ডারে খুন করবার মন চাইতাছে।ওই হেলাল আবুল্লার কথা হুইনা হাবিবুল্লাহ রে পাঠানো ডাই ভুল হইছিল তা না হইলে অন্তত নিজের লোক থাকতো।”
জামাল শয়তানি হেসে বললো, “সবুর কর সুযোগ বুইঝাই হেলাল রে খুন করমু। আর দোষ দিমু রুহুলের ঘাড়ে। আব্বাজান তখন খুনি রুহুলরে তো আর কর্তা বানাইতে পারবো না তরেই সিরাজী মঞ্জিলের কর্তা বানাইবো। রাজত্ব করমু আমরা। ”
__________________________
আজ একসপ্তাহ পর রুহুল ঢাকা থেকে সিরাজপুরে এসেছে। সব কাজ সেড়ে সে ভীষণ ক্লান্ত। সিরাজী মঞ্জিলে আসার পর সকলেই রুহুল কে ঘিরে রেখেছে। মুল কারণ সকলের জন্য রুহুল উপহার নিয়ে এসেছে।সামিয়ার বিয়ে উপলক্ষে বেশির ভাগ কেনাকাটা রুহুল ঢাকা থেকেই করেছে।লেখিকা স্রোতস্বীনি। নতুন পোশাক পাওয়ার আনন্দ সকলের ই আছে। তাই সকলেই বসার ঘরে অধীর আগ্রহে নিজেদের উপহার দেখছে। আর রুহুল যার যার উপহার তার তার হাতে দিচ্ছে।
কাকন রন্ধনশালায় কাজ করছিল। রুহুল এসেছে শুনে কাকনের যেন আনন্দ রাখার জায়গা নেই। কতদিন পর আবার সেই প্রিয় মুখটার দেখা পাবে কাকন।আর দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ শব্দ ‘বিবিজান ‘ যা রুহুলের মুখে থকে শুনবে কাকন।
কাকন তাড়াতাড়ি করে উঠবে তখনি মালেকা ঝাজালো গলায় বললো,”আগে কাম সারো তার পর যাও। রুহুল তো আর চইলা যাইতাছে না। সাতদিন তো মহিলাশালায় যাইয়া গায়ে হাওয়া লাগাইয়া আইছো। তাও কাম ফাকি দেওয়ার ধান্দা। ”
কাকন মাথা নিচু করে ফেললো। বললো, “আমি কাজ ফাকি দেওয়ার জন্য যেতে চাই নি ছোট আম্মা। আসলে উনি অনেক দুরের পথ পাড়ি দিয়ে এসেছেন ক্লান্ত হয়েছে হয়তো তাই ভাবলাম শরবত করে নিয়ে যাই।”
–” তোমার শরবত করা লাগবো না। তুমি তোমার কাম করো। রানু রে কইলেই দিয়া দিবো। ”
কাকন আর টু শব্দ করলো না তবে ঠিকই রুহুলের কাছে যেতে ইচ্ছে করলো। কাকন নিরবে নিজের কাজ করতে থাকলো।
মালেকার কথামত রানু রুহুল কে শরবত দিতে গেলো। বসার ঘরে রুহুল বসে আছে আর সকলের জন্য আনা পোশাক দিচ্ছে। রুহুলের চোখ দুটি বার বার তার বিবিজান কে খুজছে। এসেছে বেশ অনেক্ক্ষণ কাকন কি একটি বার আসতে পারছে না। রানু কে দিয়ে শিরবত পাঠানো হলো তার জন্য। এত অবেহেলা কেন রুহুলের প্রতি। শুনেছে নিশ্চয় রুহুল এসেছে তাও কেন এত অবজ্ঞা।রুহুলের অভিমান যেন আরো কয়েকগুণ বেড়ে গেলো।
_____________________
কাকন কাজ করছিল সুভা রন্ধনশালায় এখনো কাকন কে দেখে চেতে গেলেন। বললো, “তুমি এখনো এখানে কি করছো কাকন। খোকা এসেছে শোনোনি তুমি এক্ষুনি খোকার কাছে যাও। ”
কাকন বললো, “আম্মা আসলে ছোট আম্মা বললো সব কাজ করে তারপর যেতে তাই আর কি।”
–“সে বললবে আর তোমাকে করতে হবে। আমার খোকা এসেছে সেই কখন অথচ তুমি এখনো এগুলো নিয়ে পড়ে আছো। কেন বাড়িতে কি কাজের লোকের অভাব নাকি যে স্বামীর কাছে যাওয়ার ফুরসৎ নেই।”
মালেকা বললেন, “শোনো আপা আমার মাইয়ার বিয়া তাই মেলা কাম। এই জন্য কাকন বউ রে কইছি কাম করতে। কামের মিয়া ও তো কাম করতাছে।আর তাছাড়া বাড়ির বউ কাম তো করবোই।”
–‘হ্যা কাজ করবে তবে স্বামীর কাজ সবার আগে।”
সুভা কাকন কে ধমকের শুরে বললো, ” কাকন এখনো এখানে কি করছো জলদি হাত ধুয়ে খোকার কাছে যাও। আর খোকা কে খেতে দাও। ”
সুভার এমন ধমকানো কথায় কাকনের একটুও কষ্ট লাগে নি। বরং সে খুশিই হয়েছে সে তো চাচ্ছিল রুহুলের কাছে যেতে। কাকন তাড়াতাড়ি হাত ধুয়ে ছুটলো রুহুলের জন্য।
কাকন বসার ঘরে গেলো। কাকন কে দেখেই ননদেরা মুখ চিপে হাসলো। কাকন রুহুলের পাশে গিয়ে বললো, “আসুন খেতে বসবেন। ক্ষুধা লেখেছে নিশ্চয়ই। ”
রুহুল অভিমানে একবারো কাকনের দিকে তাকালো না।বিনাবাক্যে সরাসরি ভোজনকক্ষে চলে গেলো। কাকন রুহুলের যাওয়ার পানে চাইলো। ভাবলো হয়তো অনেক ক্ষুধা পেয়েছে তাই এভাবে চলে গেছে। কাকন খাবার গরম করে বিশাল বড় খাবার টেবিলে সব পদের খাবার রাখলো। রুহুল নিজের মতো করেই খেয়ে নিলো।
কাকন বার বার এটা সেটা জিজ্ঞেস করছে কিন্তু রুহুল হুম,হা এভাবে উত্তর দিচ্ছে। বিষয়টা কাকনের সুবিধা লাগছে না। রুহুল তো এমন করে না। কোনো মতো খেয়ে রুহুল উঠে গেলো। রুহুলের এমন আচরণে তো কাকন অভ্যস্ত নয়। বুকের ভেতর ব্যাথা অনুভব হচ্ছে কাকনের।
কাকন ও রুহুলের পিছন পিছন গেলো। রুহুল কক্ষে যেয়ে হাতের ঘড়িটি খুলে টেবিলের উপর রাখলো। গায়ের শার্ট টা খুলছে। কাকন রুহুলের পাশে গিয়ে বললো, “আপনি এমন করছেন কেন।”
রুহুল কিছু না বলে নিজের কাজে ব্যাস্ত।
কাকন আবারও বললো, “কি হলো কথা বলছেন না কেন। আর এমনই বা করছেন কেন? ”
রুহুল এক পলক কাকনের দিকে চেয়ে কক্ষ থেকে বেরোবে ওমনি কাকন পিছন থেকে রুহুল কে জড়িয়ে ধরলো। রুহুলের পিঠে কাকনের মাথা ঠেকলো। রুহুল কাকনের হাত দুটো ছাড়িয়ে নিতে চাচ্ছে। কিন্তু মন তো বলছে বিবিজান কে বুকে টেনে নে কিন্তু রুহুলের অভিমানে সে নারাজ এত দ্রুত কাছে টেনে নিতে। রুহুল কাকনের হাত ছাড়িয়ে নিলো।
কিন্তু কাকন ও হাল ছাড়ছে না। কাকন রুহুলের সামনে যেয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরনের রুহুল কে। বললো, ” আমার ভুল হয়ে থাকলে ক্ষমা করে দিন। আমি সত্যিই বুঝতে পারি নি আপনি এত অভিমান করবেন। সেদিন রাতে তো বলেছিলেন যেতে দেবেন। কিন্তু সকালে নিষেধ করলেন ওই সময় আমার খুব ফাতিমা আপার কাছে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল।লেখিকা স্রোতস্বীনি। এজন্যই তো গিয়েছিলাম।কিন্তু তাই বলে এত অভিমান। আপনার এই অভিমান ভরা মুখ আমায় ভীষণ কষ্ট দিচ্ছে। আমি নিতে পারছি না এই কষ্ট। দয়া করে কথা বলুন আমার সাথে। ”
রুহুল নিজের বুকে গরম তরল কিছুর অনুভব করলো। যা রুহুলের হৃদয়ের অভিমান গলিয়ে দিল নিমিষেই। রুহুল কাকনের থুতনি উচু করে চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে বললো, “আমি আপনার উপর কোনো অভিমান করে নেই। আমার কাজ আছে তাই যেতে হবে। ”
–“আপনি মিথ্যে বলছেন আপনি যে বেশ অভিমান করেছেন সে আমি বুঝেছি।”
–“ওহহ এত কিছু বুঝেছেন।আর আমি সেই কখন এসেছি একবারো দেখতে আসা উচিত এটা বোঝেন নি। এখন দয়া করে এটা বলবেন না যে আপনি জানতেন ই না আমি এসেছি।”
–” আমি সত্যি বলছি আমি আসতে চেয়েছিলাম কিন্তু কাজের জন্য আসতে পারি নি। ”
–“হুহ আপনার কাছে আমি ব্যতীত সব কিছু আগে। সেটা এখন আমার বোঝা হয়ে গেছে। ”
কাকন রুহুলের এমন কথায় আবারো কেদে দিল। বললো, “সত্যি বলছি আর কোনোদিন এমন করবো না।আপনার এই এমন রূপ আমি গ্রহণ করতে পারছি না।”
রুহুল কাকন কে। বললো, “আমার একটু অভিমান আপনার সহ্য হয় না।আর আপনি যেন অভিমান না করেন সে জন্য সব করি। অথচ আপনি কি আমায় বোঝেন না নাকি বুঝেও না বুঝার ভান করেন। ”
–“আমি সব ই বুঝি। আপনি যে আমায় এত ভালোবাসেন সেটা তো বুঝি। কিন্তু ওইদিন রাতে আমার
মন ভালো ছিল না তাই গিয়েছিলাম।আর কাজের চাপে আপনি আসার পর দেখা করতে পারি নি। ”
–“কেন আপনি ন সেদিম বললেন মহিলাশায় যাওয়ার জন্য মন খারাপ। তাহলে কি মিথ্যে বলেছিলেন?”
কাকন থেমে গেলো। কি বলবে সে এখন। কাকন মাথা নিচু করে বললো, ” এটা আপনাকে বলতে পারবো না। শুধু এটুকু জেনে রাখুন ভয়ে পেয়েছিলাম কোনো কারনে তাই মহিলাশালায় গিয়েছিলাম।”
— “এই রুহুল সিরাজী এখনো জীবিত আছে। আমি থাকতেও কিসের ভয় আপনার হ্যাঁ ?”
কাকন রুহুলের এই কথায় হেসে দিলো।যা দেখে রুহুল বললো, “আশ্চর্য হাসছেন কেন এভাবে। আমি কি কোনো কৌতুক শুনিয়েছি। ”
–“না আপনি তো অভিমান কিরেছিলেন। আপনার অভিমান এখন গায়েব এই জন্য খুশিতে হাসলাম। ”
–“আপনি বড্ড বেশি দুষ্ট। আপনার এই ভোলাবালা মিস্টি চেহারার আড়ালে যে দুষ্টু রুপ আছে সেটাকি লোকে জানে। ”
কাকন লাজুক হেসে বললো, “উহু এটা শুধু আমার সিরাজী সাহেব জানেন। ”
রুহুল কাকন কে কাছে টেনে বললো, “বাহ দাদিমার মতো করে আমায় ডাকা শিখে গেছেন দেখছি।”
–“হুম এখন দাদিমার মতো সংসারীও হতে চাই।”
–“আমি চাই আমার বিবিজান সংসারী হোক।তবে আপনি আর কখনো মহিলাশালায় এতদিন থাকবেন না। এই ঘরটাকে আমার অন্ধকার কবর মনে হয় যেখানে এক অন্যরকম কষ্ট অনুভব করি আমি ”
–“বললাম তো ভুল হয়ে গেছে। আর কখনো বেশিদিন থাকবো না। ক্ষমা করে দিন না। ”
–“বেশ ক্ষমা করতে পারি তবে এক শর্তে।”
–“কি শর্ত? ”
–“শর্তটা হলো এখন আমার বিবিজানকে তার স্বামীর সেবা করতে হবে। ”
–“এত রাতে গোসল করিয়ে দিতে হবে। ঠান্ডা লেগে যায় যদি আপনার। আজ বাদে কাল বিয়ের অনুষ্ঠান।”
রুহুল কাকনের দিকে ঝুকে কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল, “উহু এই সেবা নয় সেদিন আপনি যে সেবা ভেবেছিলেন আজ সেই সেবা করতে হবে। ”
–“মা..মানে ”
–“মানে ওইটাই যেটা আপনি বুঝেছেন। ”
–“,আমার কাজ আছে, আমি যাই।”
রুহুল কাকনের হাত ধরে ফেললো। কাছে টেনে
বললো, “স্বামীর কাজের চেয়ে বড় কোনো কাজ নেই।”
#দেবী
#Srotoswini_স্রোতস্বীনি
বিদ্রঃ দয়া করে কেউ কপি করবেন না। ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট, শেয়া করে পাশে থাকবেন। পারলে পেজটিও ফলো করবেন, ধন্যবাদ।
®️ Srotoswini-স্রোতস্বীনি ✍️