দূর আলাপন,পর্ব:৭+৮

0
373

দূর আলাপন
পর্ব-৭
______________
সেদিন অপরাহ্নে আকাশে ভীষণ মেঘ করে হঠাৎ শুরু হওয়া শ্রাবণের সেই ধারা বর্ষন চলল অবিরত দু’দিন। এই ঘোর বর্ষার মাঝেই মারুফ সাহেব নিনাদকে বললেন শিউলি ফুআম্মা ও আফরিনকে নিয়ে আসতে। নিনাদ দুঃখ প্রকাশ করে জানাল এ সপ্তাহের শেষে তার ভিসা ইন্টারভিউ। কিছুটা পড়াশোনা আর প্রস্তুতির ব্যাপারও আছে। তাই চাইলেও আসতে পারছে না সে। শিউলি ফুআম্মা আর আফরিন শহরে নতুন। নিনাদ না এলে তাদের আসার প্রশ্নই ওঠে না।

মারুফ সাহেব দাওয়াতের দিন পেছালেন অবশেষে। আগামী মাসের প্রথম শুক্রবার অর্থাৎ নিনাদ আমেরিকা যাওয়ার ঠিক পনেরো দিন আগে তিনি আসতে বললেন তাদেরকে। তিহা আর ছোটন ভীষণ উৎফুল্ল হয়ে উঠল। রওশানও আসবে সেদিন। তাদের মা-ছেলেতে খুশি যেন আর ধরে না।

কিন্তু দিন যত এগিয়ে আসতে লাগল সবার আগ্রহ ফুরিয়ে আসতে লাগল তত। আর মাত্র কয়েকটা দিন। তারপর চলে যাবে নিনাদ। এরপর দীর্ঘ এক বছরের জন্য বিচ্ছেদ ও অপেক্ষা। এই এক বছর সময়টা যেন সামান্য ক’টা দিন হয়েও বড় দীর্ঘ মনে হতে লাগল সকলের কাছে। বহু আগে থেকেই সেসময়ের সমস্ত রসদ জোগারজন্তের ব্যাপার তিহা নিয়মিত তাড়া দিতে লাগল নিনাদ কে। রওশানও খানিক পর পর কল করে এই-সেই উপদেশ দিচ্ছে। কিভাবে চলতে হবে, কোনটা করা যাবে, কোনটা করা যাবে না সেসব নিয়ে জ্ঞান দিয়ে চলেছে দিনরাত।
রাতদিন নিনাদকে নিয়ে তিহা, রওশানের এই ক্রমাগত আদিখ্যেতা দেখে বিরক্তিতে তিতিক্ষার গা জ্বলতে থাকে।
-‘বিদেশ তো যাচ্ছে না, যেন রকেটে চড়ে মঙ্গল গ্রহে যাচ্ছে এলিয়েন খুঁজতে। ন্যাকামি দেখে মাথা ধরে গেল আমার। অসহ্য!’ সেসব দেখে মুখ ভেঙচিয়ে একথাই বলে তিতিক্ষা।

________________

-‘তিতিক্ষা, একবার এদিকে আয় জলদি।’
ড্রয়িংরুমের ফুলদানিতে জারভেরা ফুলগুলো রেখে তিতিক্ষা দ্রুত পায়ে বুবুর কাছে এল।
‘উঠোনের কোণের লেবু গাছটা থেকে লেবু পাতা ছিড়ে নিয়ে আয় দুটো। ‘
বোনের কথা শেষ হওয়া মাত্রই আজ্ঞা পালনে আবার সে ছুটল বাইরেই পানে। পেছন থেকে তিহা চেচিয়ে বলল, ‘দেখিস, সাবধানে যাস। পা পিছলে পরিস না যেন। বৃষ্টি পড়ে উঠোনের মাটি স্যাতঁস্যাঁতে হয়ে আছে ভীষণ। ‘ সেকথা তিতিক্ষার কান পর্যন্ত পৌঁছাল কিনা বোঝা গেল না। সে উড়ে চলে গেল ।
কথা শেষ করে তিহা রান্নায় মন দিল। সকালে সে এসে ঢুকেছিল রান্নাঘরে। তারপর আর একবারও এখান থেকে বেরোনোর সুযোগ হয়নি। নিনাদ আসবে, তৃপ্তি করে একটু খাবে, তাতেই তার প্রাণ জুরাবে। কেউ না জানুক, সে জানে। নিনাদকে সে কতটা ভালোভাসে। কোনদিন নিজের আপন ছোট ভাই ছাড়া আর কিছু ভাবেনি নিনাদকে। নিনাদের খুশি তাই সবার আগে। সেটুকু হলে তার আর কি চাই !
হঠাৎ অস্ফুট একটা চিৎকারে তিহার ভাবনা ছুটে গেল। বাইরে থেকেই আসছে আওয়াজ টা। খানিকক্ষণ আগে তিতিক্ষাই না গেল সেদিকে!

তিহা বাইরে এসে দেখল তিতিক্ষা মাঝ উঠোনে বসে আছে একহাত বা-পায়ে চেপে ধরে। ব্যাথায় তার মুখ ফ্যাকাসে সাদা বর্ণ দেখাচ্ছে। তিহা কাছে এসে ভীত স্বরে বলল, ‘কি হল তোর? এভাবে বসে আছিস কেন?’
তিতিক্ষা অস্ফুট স্বরে বলল, ‘পা মচকে গেছে।’
-‘হায় আল্লাহ! কিভাবে? এত করে বললাম বাইরে কাঁদা মাটি। সাবধানে হাঁটতে…। এখন আমি কি করি! আব্বাও তো বাড়ি নেই। ‘
তিহা বোনের কাছে বসে পড়ল,’বেশি মচকে গেছে?’
-‘জানি না, কিন্তু…. ‘
-‘খুব ব্যাথা করছে?’
তিতিক্ষা ফোপাঁতে ফোপাঁতে ওপর নিচ মাথা নাড়লো।
-‘আমার সাথে উঠে ঘরে যেতে পারবি না? একটু চেষ্টা করে দেখ।’
অনেকক্ষণের চেষ্টায় বোনের সাহায্য নিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে তিতিক্ষা ঘরে এল। পায়ে বরফ লাগিয়ে, তিহা অস্থির হয়ে বারবার কল করতে লাগল মারুফ সাহেব কে। রান্না করতে এসে কিছু জিনিস নেই দেখে সে নিজেই বাজারে পাঠিয়েছিল বাবাকে। এখনো ফেরার নাম নেই। ফোনকলও রিসিভ করলেন না তিনি। তিহা ভীষণ অস্থির হয়ে এবার তার স্বভাবমত একটা কাজ করে বসল। বিপদে পড়লেই যা সে সবসময় করে। বাবাকে ফোনে না পেয়ে সে কল করল নিনাদকে।

নিনাদ ধানমন্ডিতে এসেছিল ছাত্র পড়াতে। তাকে পরিস্থিতি জানিয়ে দ্রুত ডাক্তার নিয়ে আসতে বলল তিহা। আধঘন্টা পর একটি ছেলেকে সাথে নিয়ে চিন্তিত মুখে নিনাদ এসে হাজির হল। তিহা দরজা খুলতেই শুষ্ক কণ্ঠে তাকে জিগ্যেস করল, ‘পা কি বেশি মচকে গেছে নাকি?’

পাশের ছেলেটিকে দেখে তিহার ততক্ষণে মেজাজ বিগড়ে গেছে। ভীষণ ফর্সা, লম্বা মত, চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা পড়া ছেলেটি নিতান্তই বাচ্চা। এই বাচ্চা ছেলে কি চিকিৎসা করবে তার বোনের!
নিনাদকে ভেতরে টেনে এনে তিহা বিরক্তি মেশানো স্বরে ফিসফিস করে বলল,’কোথ থেকে এই বাচ্চা ছেলেকে ধরে এনেছিস তুই? এ করবে চিকিৎসা? ‘
নিনাদ রাগী স্বরে উত্তর করল,’তোর ‘কোলের আবু’ বোনের চিকিৎসার জন্য তো শহরের সব ডাক্তার লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে না? আমি যাব আর ধরে ধরে নিয়ে চলে আসব!
এ আমার পরিচিত ছোট ভাই। এদিকেই থাকে, ইন্টার্ন ডাক্তার। এঁকে নিয়ে গিয়ে দেখালে দেখা, নইলে বিদাই করে দেই।’
তিহার গলায় স্বর কোমল হল একটু । ‘আচ্ছা ঠিক আছে, রাগ দেখাচ্ছিস কেন! ওকে নিয়ে আয় ভেতরে। কিন্তু তিতিক্ষা কে তো জানিস, সব বিষয়ে কেমন গোঁড়ামি ওর। ডাক্তার দেখে এখন আবার কি বলে কে জানে!’

ডাক্তার আসছে শুনে তিতিক্ষা হাউ মাউ করে কান্না জুড়ে দিয়েছে ততক্ষণে। ছেলে বেলা থেকেই ডাক্তারে তার ভীষণ ভয়। কান্নার শব্দ শুনে তিহা দৌড়ে এল ঘরে। নিনাদও আসছিল পেছনে। তিতিক্ষা রাগে, যন্ত্রণায় ফোসফাস করতে করতে বলল, ‘ডাক্তার ছাড়া আর কেউ যেন না আসে ঘরে। ‘
সেই ছেলেটিকে ভেতরে পাঠিয়ে দিয়ে নিনাদ তাই বাইরে দাঁড়িয়ে রইল।

চিকিৎসা করতে এসে সেই তরুণ ডাক্তার ছেলেটি দেখল রোগীর গোঁড়ামি সত্যিই আকাশচুম্বী!
অযথাই সে ফ্যাচফ্যাচ করছে ভীষণ। অবস্থা দেখে সে কয়েকটা ওষুধের নাম লিখে দিয়ে, আগামী তিনদিন বেড রেস্টে থাকতে বলে সে নিজের পথ দেখল তাড়াতাড়ি।

ছেলেটিকে বিদায় দিয়ে এসে নিনাদ ফ্যাকাসে মুখে বাইরেই দাঁড়িয়ে রইল। তিহার হঠাৎ সেদিক খেয়াল হতেই ছুটে গেল নিনাদের কাছে। ইতস্তত করে বলল,’ তুই কি রাগ করেছিস তিতিক্ষার কথায়? জানিসই তো ও এমন। ঘাড় তেড়া। তুইও এখন এসব কথা ধরলে কি চলে! ‘
নিনাদ সেকথার জবাব দিল না। গম্ভীর মুখে বলল, ‘আমি এখন যাই।’
তিহা ব্যাস্ত হয়ে বলল-‘আচ্ছা যা, দুপুর তো হয়েই এল। দেরি করিস না আর। ফুআম্মা আর আফরিনকে নিয়ে চলে আয় তাড়াতাড়ি।’
-‘আজ থাক। এমনিতেই তিতিক্ষার পা মচকে গেছে। একটা বিপদ হল এর মাঝে আবার…… ‘
তিহা একটু অবাক হয়ে চাইল বন্ধুর দিকে। নিনাদকে এই প্রথম সে শুনল তিতিক্ষার নাম ধরে ডাকতে। নাহয় সবসময় সে ছোট গিন্নি বা আর কিছু বলে ডাকে তাকে। সে ব্যাস্ত কণ্ঠে বলল, ‘মাথা খারাপ হয়েছে তোর? তিতিক্ষার পা মচকেছে তো কি হয়েছে? পা মচকানোর সাথে এর কি সম্পর্ক? বেশি কথা না বলে ওদের নিয়ে আয় জলদি। বাবা কত আয়েস করে ফুআম্মাকে দাওয়াত দিয়েছেন…’

নিনাদ চলে গেল। দুপুরে শিউলি ফুআম্মা আর আফরিন কে নিয়ে এল। তিতিক্ষার অবস্থা দেখে শিউলি ফুআম্মা বারবার আফসোস করতে লাগলেন। আফরিন তো তিতিক্ষার পাশেই বসে রইল তখন থেকে। সেখানে বসে কত কথাই না বলতে লাগল সে। সব কথাই ঘুরে ফিরে নিনাদে এসে থামে। তিতিক্ষা নিরব হয়ে সব শোনে শুধু। কিছুই সে বলে না।

খাবার-দাবার শেষে বিকেলের দিকে বাড়িটা যেন একটু ঝিমিয়ে পড়ল। আফরিন ছোটনকে নিয়ে ছাদে উঠে গেল। মারুফ সাহেব নিজের ঘরে ভাতঘুম দিতে গেলেন। নিনাদও বাইরে গেল। তিহাকে বলে গেল ফিরে আসবে খানিক পরই। শিউলি ফুআম্মা এসে তিতিক্ষার পাশে বসলেন তখন। তিতিক্ষা অসুস্থ, সব কাজ তাই তিহার একার ঘাড়ে। তাছাড়া সন্ধ্যায় রওশান আসবে। তার জন্য গুছিয়ে রাখতে হবে সব খাবার-দাবার। তিহা তাই ছিল রান্নাঘরে। শিউলি ফুআম্মা তিতিক্ষা কে বললেন, ‘তোমার আপায় গেল কই, একটা কথা ছিল তুমাগো দুই বইনের লগে। ‘
তিতিক্ষা নম্র ভাবে হেসে বলল,’ আপু তো রান্নাঘরে। আসবে বোধহয় এক্ষুনি। ‘
শিউলি ফুআম্মা কিছু অস্থির হয়ে বললেন,’ এহন কেউ নাই। কথাটা কওয়ার সুযোগ আছিল। তোমার আপায় তো দেরি করতাসে। আপ্পিনি না আবার নাইমা আসে ছাদ থাইকা।’
তারপর আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেন তিনি। তিহা তখনো আসল না দেখে এবার বললেন, ‘আইচ্ছা, থাউক। এহন তুমারেই কই। পরে যদি আর সুযোগ না পাই। তখন তুমিই কইয়ো তুমার আপারে বুঝায়া। কেমন? ‘
তিতিক্ষা মাথা নেড়ে ইতস্তত হাসল। শিউলি ফুআম্মা নিচু স্বরে বলতে শুরু করলেন, ‘তুমরার দুই বইনেরে তো নিনাদ খুব মানে। তাই তুমরার কাছেই দুঃখের কথা কই বুঝলা।
পোলাডা বিদেশ যাইতাসে। বিদেশের বাতাস গায়ে লাগলে পুলাপানের স্বভাব বিগড়ায়া যায়। তাই পোলাডারে না করছিলাম দূর দেশে যাইতে। কিন্তু কথা শুনল না। তাই ভাবছি বিদেশ যাওনের আগে ওরে বিয়া দিয়া দিমু। একবার শিকল দিয়া শক্ত কইরা বানতে পারলে আর সহজে ছুটত না। বুঝলা না?
তাই আপ্পিনিরেও আনলাম সাথে। আমি ছাড়া তো আর কোনো কাছের আত্মীয়স্বজন কেউ নাই তারার। তাই ভাবছিলাম এইহানেই ওগো বিয়াডা দিয়া দিমু।
আজকালকার পুলাপানের কি যে স্বভাব। পোলার মনে যে কি চলে, বুঝা মুশকিল। খালি গাইগুই করে। বিয়ার কথা কিছু কইলেই খালি হাসে।
এহন তুমরাই আমার ভরসা। তুমরার সব কথাই হে শুনে। তুমরা ওরে বুঝায়া রাজি করাও।’
তিনি ফের অনুরোধের সুরে বললেন, ‘আমার এই উফকার টা তুমরা করো।’
তিতিক্ষা কয়েক মুহূর্ত হতভম্ব হয়ে বসে রইল। শিউলি ফুআম্মার গুরুত্বপূর্ণ কথা তাকে হতবিহ্বল করে দিয়েছে।
সে কিছু বলছে না দেখে তিনি আবার বললেন, ‘কি কউ মায়া, করবা তো তুমরা আমার এই উফকার টা?’
তিতিক্ষা হঠাৎ সম্বিত ফিরে পেল যেন। মলিন হেসে মৃদু স্বরে সে বলল, ‘হ্যাঁ হ্যাঁ, অবশ্যই। আমি আপুকে বলব নিনাদ ভাইকে বোঝাতে। আপুর কথা উনি ফেলতে পারবেন না। দেখবেন বিদেশ যাওয়ার আগেই উনি বিয়েতে মত দেবেন।’
শিউলি ফুআম্মা প্রসন্ন মুখে হাসলেন। তিতিক্ষার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, ‘তুমি বড় ভালা মাইয়া গো।’
চলবে…….।

★অদ্রিজা আহসান

দূর আলাপন
পর্ব-৮
________________
ছোটন বিছানায় পা ছড়িয়ে বসে তার সাদা আঁকার খাতায় লাল, নীল রং তুলির ছোঁয়া লাগিয়ে নিজের ছোট্ট বেপরোয়া মনের অসংখ্য কল্পনা মিশিয়ে হিজিবিজি আঁকিবুঁকি করছিল।
পাশে তিতিক্ষা বই পড়ছিল। বইয়ের বিষয়বস্তু বোধহয় হাসির। কারণ কয়েক মুহূর্ত পর পর অস্ফুট একটা হাসির আভাসে তার মুখ ভরে উঠছিল। মাঝে মাঝে সে বইয়ের পাশ দিয়ে আড়চোখে তাকিয়ে দেখছিল ছোটন নিজের কাজ ঠিকমত করছে কিনা।
এইবার সে বইয়ে চোখ রেখেই ছোটনের উদাসী ভাব লক্ষ্য করে তাকে খানিকটা উৎসাহিত করার জন্য বলল, ‘ছোট মিয়া, পুরো মনোযোগ দাও। ভালো আঁকতে পার তো বলেছিই তো এককালে বড় উপহার পাবে।’
আঁকা ফেলে ছোটন হঠাৎ আকুল কণ্ঠে বলল, ‘কি উপহার?’
-‘তোমার না খুব বউয়ের শখ? আমি তোমাকে একটা সুন্দর বউ দেবো।’
-‘কেমন সুন্দর বউ মিমি?’
তিতিক্ষা তখন রহস্য করে হাসল। চাপা স্বরে বলল, ‘একটা লাল টুকটুকে খুব সুন্দর বউ।’
ছোটন কৃতার্থ হল। উজ্জ্বল চোখ-মুখে আরেকটা প্রশ্ন ছুড়ল সে তিতিক্ষার দিকে।
-‘লাল বউ কবে দেবে তুমি মিমি? এখনই কি দেয়া যায় না? ‘
তিতিক্ষার মন বড় প্রফুল্ল ছিল। সে হাসতে লাগল। হাসতে হাসতেই বলল, ‘ বউ তো এখনো হাতে আসে নি। কিভাবে দেই বল ছোট মিয়া? আর বউদের যে অনেক কিছু দিতে হয়। পারবে তুমি সেসব দিতে?’
ছোটন তার হিজিবিজি আঁকার খাতাটা দেখিয়ে বলল, ‘এটা দিলে হবে না? রঙ তুলিও নাহয় দেবো।’
-‘হা হবে। তোমার তাহলে এবার সত্যি বিয়ে দেয়া যায় দেখছি! অপেক্ষা কর আরও কিছুকাল। তোমাকেই আমি আমার মেয়ে জামাই করব। রোজ রোজ রসগোল্লা আর দইও খাওয়াব। রাজি? তাহলে এই কথাই ঠিক রইল? কি বল?’

ছোটন হঠাৎ ভাবতে বসল কোন ত্যাগটা তার জন্য কঠিন হবে! এদিকে মিমির মেয়েকে বিয়ে করলে সে ভবিষ্যতে অনেক রসগোল্লা আর দই খেতে পারে। ওদিকে নিনাদ ইতোমধ্যে তাকে নিজের মেয়ের জামাই ঘোষণা করেছে। সে অগ্রিম অনেক আকর্ষণীয় জিনিসও নিনাদের থেকে নিয়েছে ভবিষ্যতের সেই সম্মন্ধ উপলক্ষে। কিন্তু এখন তো একটা ছাড়া চাই! দুটো লাল বউ তো তার প্রয়োজন নেই। তবে সে কোনটা ছাড়ে?

ছোটন নানান উপায় ভাবতে লাগল। কোনটাই তার যুতসই মনে হয় না। তখন তার স্কুলের বন্ধুর কথা মনে পড়ল। ছোট বাচ্চা তার খুব পছন্দ। বন্ধুর ছোট কোলের ভাইটাকে একদিন দেখে তার ঠিক এইরকম একটা বাচ্চার খুব শখ হয়েছিল। বন্ধু তখন তাকে কানে কানে কি একটা কথা বলেছিল। সেটাই এখন তার মনে পরল। চোখ তার মুহুর্তে খুশিতে জ্বলজ্বল করে উঠল। এরকম হলে আর চিন্তা কিছুই নেই। সে উৎসুক হয়ে লাফিয়ে উঠে মিমিকে বলল, ‘ মিমি, তোমার মত নিনাদ মামাও আমাকে মেয়ে জামাই করবে বলেছে। রাফিন আমাকে বলে বিয়ে করলেই সবার বাবু হয়। তুমি তাহলে নিনাদ মামাকেই বিয়ে করে ফেল। আমি তাহলে দুজনেরই মেয়ে জামাই হতে পারি।’
তিতিক্ষা শুয়ে ছিল। একথা শুনে সহসা উঠে বসল। এমনি একটা কঠিন মুখভঙ্গি করল যা সে কখনো ছোটনের সামনে করে নি। কয়েক মুহূর্ত নিরব থেকে গলার স্বর স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক রূঢ় করে সে ছোটনকে বলল, ‘স্কুলে গিয়ে তবে এইসব পাকামো শেখা হচ্ছে তোমার, না? এসব বাজে কথা শিখতে স্কুলে পাঠানো হয়েছে তোমাকে? কাল থেকে আমি যাবো স্কুলে তোমার সাথে। তোমার সঙ্গ কারা দেয় দেখব আমি। এখন আঁকা শেষ করো জলদি।’
শেষ কথাটা তিতিক্ষা একটু বেশিই জোরের সাথে বলে বইয়ে মুখ ডোবাল।
কিন্তু মন বসাতে পারল না। ছোটন ভুল বলেছে সন্দেহ নেই। কিন্তু তার প্রতি এই ব্যাবহার টা ভালো হল না। সে কি ভুল করেছে বা বলেছে হয়তো সে বুঝতেই পারেনি এখনো। তাকে বুঝিয়ে বলে ভুল শুধরাতে বলাই কর্তব্য ছিল।

তিতিক্ষা বই বন্ধ করে পাশে রেখে দিল। কোমল গলায় ডাকল ছোটনকে। ছোটনের মুখে তখন আষাঢ়ে মেঘ করেছিল। এবার শুধু বৃষ্টি নামার অপেক্ষা। তিতিক্ষা যখন তাকে ডেকে নিজের কোলে নিয়ে বসাল তখন সেই আষাঢ়ে মেঘ ভেঙে বৃষ্টি শুরু হল। ছোটন তার মিমির কাছ থেকে ভালোবাসাই পেয়ে এসেছিল চিরকাল। শাসন কখনো পায়নি। তাই আজ এই অসময়ে বৃষ্টি নামল চোখের দু’কূল ছাপিয়ে।
মাথায় হাত বুলিয়ে তিতিক্ষা তাকে নিচু স্বরে বলল, ‘ কান্না করে না বাবা। মিমি তোমাকে আর বকবে না। প্রমিজ! এখন হাসো।’ বলে তার কপালে চুমু খেল।

হঠাৎ শুরু হওয়া অশ্রুবর্ষণ তখন হঠাৎই থেমে গেল। আড়চোখে তা দেখে তিতিক্ষা মুহুর্তকাল কি যেন ভাবল। তারপর ফিসফিস করে ভীষণ চাপা স্বরে একটা কথা ছোটনকে বোঝাতে প্রবৃত্ত হল।
-‘ছোট মিয়া, আজ যা তুমি বলেছ তা খুব বাজে কথা। এসব বাজে ছেলেরা বলে। তুমি আর কখনো কারো সামনে এসব কথা বলবে না। মনে থাকবে তো?’
ছোটন ততক্ষণে মিমির আদরে আদ্র হয়ে গিয়েছিল। সে ওপর নিচ মাথা নাড়ল।
-‘যাও, আজ আর আঁকতে হবে না। খেলা করো গিয়ে। ‘
ছোটন চলে গেল। তিতিক্ষার মুখ হঠাৎ ব্যাথাতুর হয়ে উঠল। সে যে কিসের জন্য, তিতিক্ষা তা স্পষ্ট করে বলতে পারে না। কিন্তু কোথায় যেন একটু ব্যাথা বাজল। আজ ছোটনকে তার বকা দেয়াটা বাড়াবাড়ি হয়েছে সন্দেহ নেই। ছোট বাচ্চারা এমন নানান কথা বলেই থাকে। তবে যার সাথে জড়িয়ে তাকে কথাটা বলা হল, সেটা মানতে পারে নি সে। ঘুরে ফিরে জীবনে তার যেখানে অপমান, কষ্ট, যন্ত্রণা সেখানেই যেন কোথা থেকে নিনাদের উপস্থিতি নিশ্চিত। নিনাদ শব্দটা তার জন্য দুঃখেরই কারন হয়েছে সর্বদা। নিজে যেচে কখনো তো যায়নি সে নিনাদের আশেপাশে। নিনাদই এসেছে সবসময়। দুঃখ দিয়েছে তাকে।

বিয়ে নিনাদ আফরিন কেই করুক। তার কিছু আসে যায় না। কিন্তু নিনাদ কে সে ঠিক বিশ্বাস করতে পারে না। ছোট থেকেই সে ভীষণ চঞ্চল, ভালো ছাত্র আর নিজের বিশেষ ব্যাক্তিত্বের দ্বারা সবার মাঝে প্রতিষ্ঠিত। এসব গুন দিয়ে জীবনে বহু মেয়েকে সে নিজের দিকে আকৃষ্ট করেছে। তাদের সাথে তার সম্পর্ক টা ঠিক কোন পর্যায়ের ছিল সব সে শুনেছে তিহার কাছে।
আফরিন মেয়েটা ভালো। গ্রামের সরল মনা দুরন্ত কিশোরী। ছোট বেলায় মা কে হারিয়ে সৎ মায়ের অসংখ্য লাথি-ঝাটা খেয়ে, বাবার অনাদরে বড় হয়েছে মেয়েটি। তার সুখের মধ্যে শুধু ছিল নিনাদের ফুফু, তার দূরসম্পর্কের চাচি শিউলি বেগমের স্নেহটুকু। এত কষ্টের পর এমন একটা ছেলের সাথে বিয়ে হলে সত্যিই কি সুখে থাকতে পারবে সে? শেষ পর্যন্ত জীবন টা তার আরও দুর্বিষহ হয়ে যাবে না তো।
এই এক চিন্তা আজকাল তার মাথায় জেঁকে বসেছে। বুবু কে শিউলি ফুআম্মার সেদিনের বলা প্রতিটি কথাই জানিয়েছে সে। বুবু বেশ খুশি এই সম্মন্ধে। হওয়ারই কথা। নিজের একান্ত আপনজনের মত বুবু চিরকাল নিনাদের দোষ গুলো আড়াল করতে চেয়েছে। পরের থেকে এবং নিজের থেকেও। আজ, সে যে এভাবে সবকিছু জানার পরও শুধুমাত্র নিনাদের সুখের জন্য আফরিনের জীবন ধ্বংস করতে দ্বিধা করবে না। তাও সে জানে। বুবু আরও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়েছে এই জেনে যে নিনাদের মনে যাই চলুক, তিতিক্ষা কখনোই মন ফেরাবে না তার দিকে। তাই সত্যিই সে চায় নিনাদ আর আফরিনের বিয়েটা হোক।
চাইতে পারছে না শুধু তিতিক্ষা। চোখের সামনে একটা সহজ-সরল মেয়েকে ধোঁকা খেতে দেখে কিভাবে সে চুপ থাকবে! এর জন্য কি পরকালে তাকে জবাবদিহি করতে হবে না?

______________________

নিনাদের যাওয়ার দিন প্রায় ঘনিয়ে এল। বিয়ের কোনো সারা পাওয়া গেল না। কি হয়েছে বা হচ্ছে কিছুই জানতে না পেরে তিতিক্ষা এখন স্বস্তি পাচ্ছে না আর। ওবাড়ির কারো সাথেই তার যোগাযোগ তেমন নেই। তিহা যদিও বা দিনরাত কথা বলছে তাদের সাথে। কিন্তু তার কাছে কিছুই জানতে চায় না সে। তার মনে বাঁধে। বুবুর মুখ বড় লাগামহীন কিনা তাই!

একরাতে মারুফ সাহেব বাড়ি ছিলেন না। গ্রামে গেরস্তের বাড়ি, জমিজমা তার যথেষ্ট রয়েছে। মাস দু-এক পর পর বাড়ি যেতে হয় সেজন্যই। সেখানে গিয়ে ফসল, মাছ বেচা-বিক্রি করে বাড়িঘর দেখে রেখে আসেন তিনি।
সন্ধ্যে থেকেই সেদিন আবহাওয়া মন্দ ছিল। খানিক পর পর বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। বইছে দমকা হাওয়া। নিনাদের ফ্লাইটের তখন মাত্র বাকি আর তিনদিন। সময় নেই তার দম ফেলারও!

ঘরের চারকোণে চারটা মোমবাতি জ্বালিয়ে তিতিক্ষা সন্ধ্যা রাতে বুবুকে তার বলল আজ আর ঝামেলা না-ই বা হল। ভাত না রেঁধে খিচুড়ি আর মাংস করা যাক। এই আবহাওয়ায় বেশ হবে। অতঃপর মাতা-পুত্র-ভগিনী মিলে রান্নাঘরে ধুন্ধুমার বাঁধিয়ে দিল তারা। সে রাতে প্রচন্ড ঝড় শুরু হল। সন্ধ্যায় আকাশ দেখে এতটা বোঝা যায় নি। রান্না শেষে খেতে বসবার আগে তিহার ভাতৃপ্রেম হঠাৎ জাগ্রত হয়ে উঠল। সে করুণ মুখে নিজেকে নিজেই যেন শোনাল, ‘নিনাদ যাচ্ছে বাইরে। ওখানে নাকি খাওয়ার খুব অসুবিধে। দেশী মাছ তো পাওয়াই যায় না। পেলেও খুব দাম। আর খিচুড়ি তো আকাশ কুসুম ভাবনা!
আর এখানে বসে আমি এখন….. নাহ, তোরা বরং খা। আমি খেতে পারব না। ‘
তিহার সময়ে অসময়ে নিনাদের জন্য এই অসহ্য দরদ দেখলে তিতিক্ষার গায়ে আগুন ধরে যায়। সে অদ্ভুত এক ভঙ্গিমায় মুখটা কে ভেঙচিয়ে বলল,’ তোমার ড্রামা থামাও প্লিজ। আমি একদম নিতে পারি না। নিজের সাথে সাথে এখন ছেলেটাকেও এসব শেখাচ্ছ। আল্লাহই জানে! রওশান ভাই কিভাবে সহ্য করে এসব। যা খুশি কর তুমি। নিনাদ ভাই কে ডেকে এনে খাওয়াও। সাথে তার বউ নাকি হবু বউ আফরিন যাই হোক তাকেও ডাক। একটা ক্যান্ডেল লাইট ডিনারের ব্যাবস্থা করে দাও তাদের। খেতে খেতে প্রেম করুক!’
তিহা হঠাৎ জ্বলে উঠল, ‘তুই একটা পাষাণ। দিনরাত হাদিস ঝারিস। অথচ মনে বিন্দুমাত্র দয়া-মায়া নেই তোর। নইলে নিজেই আজ বলতি নিনাদকে ডাকার কথা। বিদেশে গিয়ে ও এসব পাবে কোথায়?’
-‘বুবু, অনুরোধ। আমাকে যা খুশি তুমি বল। হাদিস নিয়ে কিছু বল না। আমি কিছু ভুল করলে সে দায় একান্তই আমার। কথায় কথায় হাদিস কোরআনের আলাপে যাওয়া বন্ধ করো।
আমেরিকা কোনো ছোট গ্রাম নয়। সেখানে অসংখ্য বাঙালি রেস্তোরাঁ আছে। তোমার কলিজার টুকরা নিনাদ ভাই খিচুড়ির অভাবে শ্বাসকষ্ট হয়ে মরবে না এটুকু নিশ্চিত! ‘
অনেক কথা প্রতি কথার পর তাদের বাকযুদ্ধ থামল। তিহা কল করল নিনাদকে।

বাইরে তখন ঝোড়ো হাওয়ায় পরিবেশ উত্তাল। থেকে থেকে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। বৃষ্টি পড়ছে ঝমঝমিয়ে। নিনাদ মজনু মিয়াকে আরেক কাপ চা দিতে বলে সামনের স্থির গন্তব্যে ফের দৃষ্টি রাখল। চা নিয়ে এসে নিশব্দে নিনাদের পাশে ঠায় দাঁড়িয়ে রইল মজনু মিয়া। এপর্যন্ত তের কাপ চা খেয়েছে তার সামনে গম্ভীর হয়ে বসে থাকা ঝাকড়া চুলের ব্যাক্তিটি। রাত বাড়ছে। বৃষ্টি বাড়ছে। বাড়িতে ছোট তিনটি বাচ্চার কাছে ফিরতে হবে তাকে। কিন্তু ফিরতে পারছে না। নিনাদকে ফেলে কেন সে চলে যাচ্ছে না। জানে না সে। নিনাদ জীবনে অনেকবার তার উপকার করেছে। সে অকৃতজ্ঞ নয়। হয়তো তাই তার বিবেক চলে যেতে বাঁধা দিচ্ছে তাকে।
নিনাদ এবার ঘোলা চোখে চাইল মজনু মিয়ার দিকে। চায়ের কাপ টেনে নিয়ে চুমুক দিয়ে বলল, ‘কি মজনু মিয়া? বাড়ি ফিরবে? দোকান বন্ধ করে চলে যাও। আজ খুব কষ্ট দিলাম তোমাকে। আমি আরেকটু বসব এখানে, তুমি যাও। সমস্যা নেই। ‘

মজনু মিয়া দোকান বন্ধ করে চলে গেল। সেই দোকানের সামনে একটা ভেজা বেঞ্চিতে বসে রইল নিনাদ একা। মাথার ওপর হালকা ছাউনি আছে। বৃষ্টি তাই সরাসরি গায়ে এসে লাগে না। তবুও ভিজতে কিছু বাকি নেই তার। প্রবল বৃষ্টির ছিটেফোঁটাও ভীষণ জোড়ালো।
বসে সে একদৃষ্টে তাকিয়ে রইল সামনের একতলা বাড়িটির দিকে। প্রতিদিন এখানে এসে চোরের মত লুকিয়ে বেরাতে হয় তাকে। মারুফ সাহেব রাতে বাইরে হাটতে বেরোন। দেখে ফেললে প্রশ্ন করবেন শুধুমাত্র এই ভয়েই আড়ালে থাকা। আজ তিনি বাড়ি নেই এ খবর জানে সে। আজ তাই নিশ্চিন্তে বিলাস করবে সে। কিন্তু কি বিলাস? দুঃখ নাকি সুখ? বিচ্ছেদ নাকি যন্ত্রণা? হাহাকার নাকি অনুতাপ? কি বিলাস করবে সে। জানা নেই। কিছুই তার জানা নেই। কেন তবে রাত বাড়লে রোজ রোজ এখানে লুকিয়ে-চুরিয়ে আসা? সেও জানা নেই। নিনাদ হঠাৎ ভাবে, কিসব ছেলেমানুষী কথা! রোজ সে আসছে, তাকে আসতেই হয়। নাহয় কষ্ট হয়। কি ভীষণ কষ্ট! দু’দিন পর যে বিচ্ছেদ আসন্ন, তার শোকই কি পুষিয়ে নিচ্ছে সে এভাবে রোজ রোজ পাগলামি করে? হ্যাঁ তাই, ঠিক এজন্যই সে আজও এসেছে।

এক বছরে কতগুলো দিন? এ রকম দিন তো জীবনে বহু কেটে গেছে তার। কত মাসের পর মাস, দিনের পর দিন সে এখানে আসেনি। ছলে-বলে, কৌশলে দেখা করেনি ‘তার’ সাথে ।আজ তবে বিশেষ কি? এক বছরে কি এমন বদলে যাবে? তিতিক্ষা সবাইকে নিয়ে হারিয়ে যাবে কোথাও? যাক! সে খুঁজতে জানে। ঠিক খুঁজে নেবে। তাহলে সবকিছু এমন শূন্য কেন মনে হচ্ছে। এমন কিছু কি ঘটবে সে চলে যাওয়ার পর? যা সে কখনো ভাবেই নি!
ফোনটা বেজে উঠল। রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে তিহা বলল, ‘কোথায় তুই?’
তিহা কেন এত রাতে কল করেছে। কিছু কি হয়েছে? নিনাদ সহসা উঠে দাঁড়াল। বলল, ‘আছি বাইরে। কেনো? ‘
তিহা কল করেছে খেতে যাওয়ার জন্য!
একটা মিথ্যা উত্তর দিয়ে সে ফোন রেখে দিল। বাড়ির ভেতরে গিয়ে কি হবে? সে আজ এখানে বসেই পাহারা দেবে।……..তার প্রেয়সীর বাড়ি!
চলবে…….

★অদ্রিজা আহসান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here