তোর নামের রোদ্দুর২ পর্ব 30

0
1093

#তোর_নামের_রোদ্দুর-২
#লেখনিতে:মিথিলা মাশরেকা
পর্বঃ৩০

বড় টেবিলটার একপ্রান্তের চেয়ারে কাচুমাচু হয়ে বসে আছি।আরেকপ্রান্তে শুদ্ধ বেশ সুন্দর পায়ের উপর পা তুলে বসে মিটমিটিয়ে হাসছেন।মাহি পাশেই বসে সুন্দরমতো গালে হাত দিয়ে সবাইকে দেখে চলেছে।আর আশেপাশের কয়েকজোড়া চোখ বিস্ময়ে আমার দিকে তাকিয়ে।এক আপু বলে উঠলো,

-শুদ্ধ?এই বাচ্চা মেয়েটা তোর বউ?

পাশের আরেক আপু বললো,

-এই বালিকা বধু কোথথেকে এনেছিস তুই শুদ্ধ?

এক ভাইয়া বললো,

-শুদ্ধ?ভাবির বয়সটা কিন্তু একটু বেশিই কম!

আরেক ভাইয়া তার মাথায় চাটি মেরে বললো,

-ওর বয়স নিয়ে কমেন্ট করার আগে কথা বলা শেখ ডাফার!একটু!বেশিই!কম!

-কথা বুঝিস না তুই,আর ডাফার আমি?এনিওয়েজ,তোর সাথে পরে ডিল করছি।কোথায় ছিলাম আমি?ও হ্যাঁ,ভাবিটা ছোটমানুষ!তোকে সামলানো তার পক্ষে….

একটার পর একটা কথা এভাবে শুনে চলেছি।কিছু বলতে তো পারবোই না।অপেক্ষা করে আছি কখন শুদ্ধ মুখ খুলবেন।উনি একটু নড়েচড়ে বসলেন।মনেমনে খুশি হলাম আমি।ভাবলাম এবার হয়তো উনি কিছু বলবেন।আমার ভাবনার কাথায় বরাবরের মতো আগুন দিয়ে উনিও মাহির মতো টেবিলে হাত রেখে তাতে থুতনি ঠেকিয়ে বসলেন।আগ্রহ নিয়ে শুনতে লাগলেন সবার কথা।মনেমনে নিজের কপালে হাজারটা চড় লাগালাম।কপালটাই এমন আমার।এই লোককে নিয়ে যা ভাববো উনি তো তার উল্টোটাই করবেন।এক ভাইয়া বললেন,

-কিরে শুদ্ধ?এভাবেই শুনবি শুধু?কিছু বল তো!

উনি এতোক্ষনে মুখ খুললেন।বেরস গলায় বললেন,

-আমি কি বলবো?তোরাই বলতে থাক!আমি শুনি!শুদ্ধর বউ বলে কথা!পেটপুরে খাইয়ে তো দেবো,কিন্তু ওকে নিয়ে প্যারাগ্রাফ না রচনা করলে তোদের তো আত্মিক শান্তি মিলবে না!সো ইউ মে কন্টিনিউ!কন্টিনিউ!

ওরা সবাই মিলে হাসাহাসি করতে লাগলো।এদিকে আমি ঠোটে মেকি হাসি ঝুলিয়ে রইলেও হাত পা ঘেমে উঠছে আমার।শুদ্ধকে কয়েকশ কথা শোনাবো আজ বাসায় গিয়ে,সেগুলোই গোচ্ছাছি বসে বসে।সবার সামনে এভাবে বসিয়ে এইসব কথা শোনালেন উনি আমাকে?হাসির পর্ব শেষে শুদ্ধ বললেন,

-ওকে গাইস,লেট মি কনফেস!এই সেই রোদ্রময়ী,শ্যামাপাখি।যার জন্য শুদ্ধ চব্বিশটা বছর,এতোটাআআ কাল সিঙ্গেল ডিগ্রি নিয়ে বেচে আছে।আর ওর বয়সটা?বিয়েটা কিন্তু ওর আঠারো শেষ হওয়ার পরই করেছি।সো ওটা ম্যাটার করে না।দ্যা মেইন থিং ইজ,শি ইজ মাইন!

ভাইয়ারা সবাই তার কাধ চাপড়াতে চাপড়াতে হেসে বললেন,

-ও হো হো ভাইইইই!জিও!জিও!

এক আপু বললো,

-কি দিলি তুই‌ ইয়ার!বিয়েটা শেষমেষ ওকেই করলি?এজন্যই ফোনে তোর বউয়ের নাম হাজারবার জিজ্ঞেস করাতেও বললি না তুই!এই এতোবড় ঝটকাটা একদম সামনে থেকে দিবি বলে?

শুদ্ধ হেসে ঘাড় নাড়লেন।এই আপুটার কথায় কিছুটা হা হয়ে আছি আমি।তারমানে শুদ্ধ ওনাদের সবাইকে আগেই বলেছেন আমার কথা।তার রোদ্রময়ী,শ্যামাপাখির কথা।এবার লজ্জা লাগতে লাগলো আমার।শুদ্ধ একেএকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন আমাকে।এরমধ্যে পিযূশ নামের এক ভাইয়া উঠে গেলেন।আর শুদ্ধ তার ফোনটা বের করে কাউকে কল লাগালেন।আসার পর থেকেই কথার ফাকে ফাকে অনবরত ফোন করে যাচ্ছেন উনি কাউকে।এক আপু বললো,

-এতো কাকে ফোন করছিস শুদ্ধ?

-আরে আ্…..

-এন্ড হেয়ার হি কামস্!গিভ ইট আপ ফর মিস্টার আয়ান চৌধুরী!

পিযূশ ভাইয়া রেস্ট্রুরেন্টের গেইটের কাছে দাড়িয়ে আরেকজন ভাইয়ার কাধে হাত রেখে বললেন কথাটা।আপাদমস্তক দেখলাম‌ লোকটাকে।পরনে ইন করা নীল‌ শার্ট,কালো প্যান্ট,কালো সু,স্পাইক করা চুল,ক্লিন শেইভড্ চেহারা,বেশ ফর্সা।লম্বাও।সবকিছুর উর্ধ্বে যা ছিলো,সেটা তার গম্ভীরতা।বাকি সবার মতো হাসিখুশি নন উনি।শুদ্ধ উঠে দাড়িয়ে একছুটে গিয়ে জরিয়ে ধরলেন তাকে।সে মানুষটা মৃদ্যু হাসি রেখে হাত রাখলেন শুদ্ধর পিঠের উপর।অদ্ভুতভাবে আমার দিকেই তাকিয়ে আছেন উনি।অস্বস্তিতে চোখ নামিয়ে নিলাম।শুদ্ধ ওনাকে ছেড়ে আনন্দের সাথে বললেন,

-এতোক্ষনে আসার সময় হলো তোর?তখন কল করে তো বললি সবার সাথেই আছিস!কোথায় ছিলি তুই এ কয়দিন?অফিসেও নেই,ফোনও রিসিভ করিস নি।আন্টিকে ফোন করেছিলাম,সে বললো বোনকে নিয়ে নাকি বাইরে গেছিস।তোর বোন….

-রিল্যাক্স!একসাথে এতোগুলো প্রশ্ন করলে কিভাবে উত্তর দেবো?আর এসেছি যখন,প্রশ্নগুলোই আগে কাটানোর চেষ্টা করবো!

-হ্যাঁ,কিন্তু তুই….

-ভাবিকে তো দেখা ইয়ার!

ওনারা এগোলেন আমার দিকে।শুদ্ধ বললেন,

-সিয়া?ও আয়ান।আয়ান চৌধুরী।আমার একদম ছোটবেলার ফ্রেন্ড!বলতে পারিস সবচেয়ে পুরোনো!আর আয়ান?এইতো!এই সে!

আমি সালাম দিলাম ওনাকে।উনি উত্তর নিয়ে বললেন,

-কেমন আছো ইনসিয়া?

-জ্বী আলহামদুলিল্লাহ ভালো।আপনি?

-ভালো।

শুদ্ধ বললেন,

-আয়ান?তুই জানিস ওর পুরোনাম ইনসিয়া?

আয়ান ভাইয়া হালকা‌ হেসে বললেন,

-ভুলে যাচ্ছিস কেনো?তোর বিয়ের দিন আজাদ‌ ম্যানশন সাজানোর দায়িত্বে আমি ছিলাম।তাছাড়া আজাদ গ্রুপের সিইও হিসেবে সেই গ্রুপের একমাত্র উত্তরসুরীর বউয়ের নাম জানা,ইজ ইট আ বিগ ডিল?

শুদ্ধ নিচদিক তাকিয়ে অদ্ভুতভাবে হেসে বললেন,

-এর থেকেও আরেকটা‌‌ বড়‌ কারন আছে আয়ান!

আয়ান ভাইয়া খানিকটা থমকে গেছেন।শুদ্ধ নিজেকে আবারো স্বাভাবিক করে নিলেন।আয়ান ভাইয়ার কাধে হাত রেখে বললেন,

-তুই আমার বেস্টফ্রেন্ড।সো অ্যাম আই।তাই এটুকো বাড়তি খোজ নিতেই হতো তোকে।অ্যাম আই রাইট?

আয়ান ভাইয়া মাথা উপরেনিচে নাড়ালেন।এক আপু বললো,

-এ তুই কাকে নিয়ে আসলি পিযূশ? শুদ্ধর বেস্টফ্রেন্ড এসে গেছে।এবার আমাদের সবার পাত্তা তো কেটে‌ গেলো!

-ঠিক বলেছিস প্রত্যাশা!আয়ান এসেছে না?শুদ্ধ এবার পারলে ওকে কোলে করে নিয়ে ঘোরে!

সবাই হাসতে লাগলো আবারো।আমি আড়চোখে মাহীর দিকে তাকালাম।হা করে আয়ান ভাইয়ার ‌দিকে তাকিয়ে আছে ও।অস্থির লাগতে শুরু করলো আমারই।এভাবে সবার সামনে একটা ছেলের দিকে তাকিয়ে আছে কিভাবে ও?ওর হাতে টান মেরে নিচু আওয়াজে বললাম,

-মাহি?চোখ‌ সরাও!

ও ওভাবে তাকিয়ে থেকেই বললো,

-আমার চোখ আমার কথা শুনছে না ইনসিয়া ভাবি!

-কি করছো টা কি তুমি?

-ভাইয়াটা কি ড্যাশিং!তাইনা ইনসিয়া ভাবি?সবগুলোর মধ্যে এ্….

-মাহি তুমি….

-সিয়া?

শুদ্ধ ডাক লাগালেন।এখানে‌ কথা বলার সুযোগ নেই ওর সাথে।চিন্তা একটাই!এখন সবার সামনে কোনো সিনক্রিয়েট না করলেই হয়!
খাওয়া শেষে আপুগুলোর সাথে কথা বলছিলাম।প্রত্যাশা,ইতি,সামিহা।শুদ্ধ আয়ান ভাইয়ার সাথে একসাথে‌ দাড়িয়ে বাকি সবার সাথে কথা‌ বলছেন।ইতি আপু বললো,

-জানো ইনসিয়া,তোমার কথা অনেক শুনেছি শুদ্ধর কাছে।ও‌ ঠিক যা যা,যেভাবে যেভাবে বলেছিলো তোমার বিষয়ে,সবটাই একদম আয়নার মতো প্রতিফলিত হচ্ছে তোমার মাঝে।আসলে অনেক ভালোবাসে ও তোমাকে।এতোটা ভালো না বাসলে এভাবে কারো বর্ননা দেওয়া যায় না।

প্রত্যাশা আপু বললো,

-ঠিক বলেছে ও।একসাথে পড়েছি চারবছর।বরাবরই ও এটিচিউড বয়।ভার্সিটির হাজারটা মেয়ের ক্রাশ।কাউকেই পাত্তা‌ দিতো না।হুট করে একদিন বলে উঠলো এক শ্যামাপাখির প্রেমে পরেছে।তারপর থেকে ওর মুখে এই‌ শ্যামাপাখি ছাড়া অন্যকিছু শুনিনি।ডিটেইলস্ জানতে চাইলে এককথা বলতো,যেদিন অধিকারবোধটা করে নিতে পারবে,সেদিন বলবে।আজ দেখো,ওর ঘরের বউ তুমি।সে পরিচয়েই আমাদের সবার সামনে তুমি।

সামিহা আপু বললো,

-ওকে বুঝতে শিখো ইনসিয়া।আমরা ওর ব্যাচমেট ঠিকই,কিন্তু কোনোভাবেই বুঝে উঠিনি ওকে।হয়তো শুধু ব্যাচমেট বলেই বুঝে উঠি নি ওকে।আমাদের কাছে শুদ্ধ মানে বরাবরই রহস্য।দুবছর আগে থেকে সেটা আরো গভীর।সবটাই নিজের মাঝে গুটিয়ে রেখেছে ও।কাউকেই বলেনি।ইনফ্যাক্ট আয়ানকেও না।আয়ান আর শুদ্ধ কিন্তু দো জিসম এক জান টাইপ।তবুও আয়ানও নাকি বুঝতো না কি হয়ে যেতো ওর হুটহাট।নাকি বোঝার চেষ্টাই করতো না কে জানে!

সবটা চুপচাপ শুনলাম।শুদ্ধরা এগিয়ে আসলেন আমাদের দিকে।এক ভাইয়া বললেন,

-তাহলে ইনসিয়া?সব কথার শেষ কথা,তুমি বোন আমাদের অনেক জুনিয়র।তোমায় নাম ধরেই ডাকবো আমরা।তখন এমনি জাস্ট লেগপুল করতে ওসব বলেছি।কিছু মনে করো নি তাইনা?

মুচকি হেসে মাথা নেড়ে না বললাম।ভাইয়াটা আমার হাতে একটা গিফটবক্স ধরিয়ে দিয়ে বললেন,

-এটা আমার তরফ থেকে।

-এসব….

-কোনো বাহানা নয়।নিতেই হবে!

শুদ্ধ বললেন,

-এসব আবার কেনো নাফি?তোকে কি…

-শুধু নাফি নয়,আমরা সবাই ছোটখাটো কিছু গিফটস্ এনেছি ইনসিয়ার জন্য।আর তুই!একটা কথা বলবি না।স্টে আউট অফ ইট!

সামিহা আপুর চোখ রাঙানিতে শুদ্ধ দু হাত তুলে পিছিয়ে গেলেন।সবাই হেসে দিলো তার কাজে।একে একে সবাই উপহারগুলো দিয়ে শুভকামনা জানিয়ে বেরিয়ে যেতে লাগলো।শুদ্ধ পুরোটা সময় আয়ান ভাইয়ার পাশে দাড়িয়ে থেকেই বিদায় জানালেন সবাইকে।মাহির তখনো কোনো হেরফের নেই।সবাই বেরিয়ে গেলে আয়ান ভাইয়া শুদ্ধকে বললেন,

-শুনেছি তোদের এনগেইজমেন্টটা দু বছর আগেই হয়েছিলো?

শুদ্ধ অন্যদিক তাকিয়ে শব্দহীন হাসলেন কিছুটা।তারপর আয়ান ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বললেন,

-অনেকটাই জানিস দেখছি।

-অনেকটাই লুকিয়ে গেছিস দেখছি।

-এটা টোটালিই ফ্যামিলির উপর ডিপেন্ডেন্ট ছিলো।

-কোনটা?এনগেইজমেন্ট?

-না।লুকিয়ে যাওয়াটা।

আয়ান ভাইয়া একটু অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলেন তার দিকে।তারপর নিজেকে সামলে বললেন,

-ওহ!যাই হোক,ইনসিয়া?তোমার জন্য কোনো গিফট্ আনি নি আমি।তো….

-ইটস্ ওকে।আপনি সময় করে এখানে এসেছেন,এটাই‌ যথেষ্ট।

-বলছো?আমার আসাটা তোমার জন্য এনাফ ছিলো?

কিছু বলার মতো খুজে পেলাম না।এতো গুরুগম্ভীর একটা লোক শুদ্ধর বেস্টফ্রেন্ড কিভাবে হতে পারে‌ সেটাই‌ ভাবছি।অবশ্য ওনার পার্সোনালিটিই বলে দিচ্ছিলো উনি রগচটা টাইপেরই হবেন।আর মাহি এই পার্সোনালিটিতেই আটকে আছে।আমি শুদ্ধর দিকে তাকালাম।উনি পকেটে দুহাত গুজে আয়ান ভাইয়ার মুখের দিকে অতিআগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে।আয়ান ভাইয়া শব্দ করে হেসে বললেন,

-রিল্যাক্স!খুব তাড়াতাড়িই তুমি তোমার গিফট্ পেয়ে যাবে।এন্ড ট্রাস্ট মি,আয়ান চৌধুরী এমন কিছু গিফট্ করবে তোমাকে যা আজীবন মনে থাকবে তোমার।

আজীবন মনে রাখার মতো গিফট্!ভেতরটা অস্বাভাবিকভাবে ধক করে উঠলো আমার।তবুও জোর করে হাসি টানলাম ঠোটে।আয়ান ভাইয়া শুদ্ধর দিকে ফিরে বললেন,

-আজ আসি।ভালো থাকিস।

-অফিস জয়েন করবি কবে থেকে?জানিসই তো,তোকে ছাড়া আজাদ গ্রুপ অচল।

আয়ান ভাইয়া খানিকটা হাসলেন।বললেন,

-অচল?এটা বাড়াবাড়ি বললি না তুই?

-তোকে নিয়ে যাই বলবো কম পরবে।শুদ্ধর কাছে আয়ান কে‌ নিয়ে বলার শেষ নেই।এন্ড ইউ নো দ্যাট!

-হয়েছে হয়েছে!বউকে ফেলে বন্ধুকে নিয়ে পরলি?তোর বউ রাগ না করে ফেলে আবার?এনিওয়েজ!কাল থেকেই চেষ্টা করবো অফিস যাওয়ার।

শুদ্ধ জরিয়ে ধরলেন ওনাকে।আয়ান ভাইয়া আমার দিক তাকিয়ে পিঠে একহাত রাখলেন তার।শুদ্ধকে আরেক ভাইয়া ডাক লাগাতেই উনি চলে গেলেন সেদিকে।আয়ান ভাইয়া যাওয়ার আগে‌ আমার দিকে তাকিয়ে ‌বাকা হেসে বললেন,

-টেক কেয়ার।

মাথা নাড়লাম।উনি বেরিয়েই যাচ্ছিলেন।কিন্তু মাহির সামনে দাড়িয়ে গিয়ে বললেন,

-ইউ টু টেক কেয়ার।

মাহি লাজুক হাসলো।উনি বেরিয়ে গেলেন।সবার সবটাই ঠিক আছে।কিন্তু আয়ান ভাইয়ার ব্যবহার মোটেও সুবিধার লাগছিলো না।ওনার কথাবার্তা,আচরন,গম্ভীরতা কোনোটাই ভালো লাগে নি আমার।শুদ্ধ ওনাকে নিয়ে কতোটা এক্সাইটেড।আর উনি?শুদ্ধকে‌ নিয়ে তার মাঝে আলাদা কোনো উপলব্ধি চোখে পরে নি আমার।তার উপর মাহির বিষয়টাও‌ ভাবাচ্ছে।গাড়িতে শুদ্ধ ড্রাইভ করতে করতে বললেন,

-কি এতো ভাবছিস বলতো তুই সিয়া?

-হুম?কিছু না।

-এক কাজ কর,আমার কাধে মাথা রাখ।বেটার ফিল করবি।

পেছনে তাকালাম।মাহি কানে হেডফোন গুজে জানালায় হাত রেখে মাথা ঠেকিয়ে চোখ‌ বুজে আছে।শুদ্ধর কথামতো তার কাধে মাথা রাখলাম।সত্যিই শান্তি লাগছে।তবুও কেনো জানি না কোথাও কোনো অজানা আশংকা চারপাশ থেকে ঘিরে ধরতে লাগলো আমাকে।কেমন যেনো ভেতরটা ভারী ভারী লাগছে আমার।ভয় হতে লাগলো হঠাৎ করেই।সবটা এভাবেই থাকবে তো?

#চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here