#তোমার_আসক্তিতে_আমি_আসক্ত
#নুশা_আহমেদ
#পর্ব_৯
রিফাত খুব ভালো ছেলে ফুপ্পি তুমি প্লিজ আংকেল কে বুঝাও। রিফাত আমার সাথেই ক্লাস এইট পর্যন্ত পরেছে, তারপর ক্লাস নাইনে উঠার পর আমরা আলাদা হযে গেছি সে কমার্স আর আমি সাইন্স । রিফাতের স্বপ্ন ছিল ব্যাংকে চাকরি করা আর আমার ডাক্তারি করা আর তার জন্যই আমরা আলাদা হয়েছি। রিফাত কিন্তু ছাএ হিসেবে খুব ভালো আর তার ফেমেলীর সবাই ভালো । রিফাত তো মনে হয় ব্যাংকে ভালো একটা পদেই আছে তুমি আংকেল কে রাজি করাও। ছেলে ভালো, ভালো একটা চাকরি করে এখন তো তাদের পজিশন টাও বদলে যাবে তাই না ।
বাড়ির ভিতর আসার পর থেকে সায়ান একাধারে বোঝাচ্ছে নুশার আব্বু আম্মু কে । আর দুই জনই সায়ানের কথা খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছে। নুশার আম্মু কিছুটা রাজি হলেও নুশার আব্বু এক পায়ে না তিনি শুধু সায়ানের বাবার অনুরোধে সায়ানের সাথে বিয়ে দিতে রাজি হয়েছেন এখন যেহেতু বিয়েটা ভেঙ্গে গেছে তাই তিনি এবার আর অন্য কারো সাথে বিয়ে দিতে রাজি হবেন না একেবারে তার বন্ধুর ছেলের সাথে বিয়ে দিবেন এতে করে উনার বন্ধুত্ব আরো গাড়ো হবে আবার ব্যবসার দিকেও একটু লাভ হবে। নুশার বাবার বন্ধুর বড় ব্যবসা আছে আর বন্ধুর ছেলেও বাবার সাথে এই ব্যবসায় সাহায্য করে। তাই উনি এক পায়ে রাজি এই বিয়েতে,,
সায়ানের কথা শুনে তারিন বেগম কি করবেন সেটাই বুঝতে পারছেন না। উনার কাছেও রিফাত কে মোটামুটি ভালোই লেগেছে কিন্তু স্বামীর অবাধ্য তো উনি হতে পারবেন না। তারপরও নুশার বাবার দিকে তাকিয়ে মিয়িয়ে যাওয়া কন্ঠে বললেন,
-দেখো নিশির আব্বু সায়ান কিন্তু ঠিকই বলছে। একটু চিন্তা ভাবনা করে দেখো রিফাত কিন্তু দেখতে শুনতে ভালো ছেলেই । তোমার বন্ধুত্ব রক্ষার জন্য কি তুমি তাদের আলাদা করে দিবে । আমিও তো প্রথম তোমার কথায় রাজি ছিলাম তোমার বন্ধুর সাথে বিয়ে দেওয়া নিয়ে তাই তোমার মেয়েদের আমি ঐরকম ভাবে রাখতে চেয়েছিলাম যাতে কোনো রিলেশনে না জড়িয়ে যায় কিন্তু কি হলো আমাদের অগোচরে ঠিক সেই পথেই চলে গেলো । এখন তাদের কথা চিন্তা করে অবশ্য তুমি রিফাত কে মেনে নেও, বিয়েতে রাজি হয়ে যাও।
-কিন্তু , তোমরা বুঝতে চাচ্ছো না আমি তো কথা দিয়ে দিয়েছি। তারিন বেগম কথা শেষ করতেই নুশার আব্বু বলে উঠলো কথা গুলো ।
নুশার বাবার কথা শেষ হতেই সায়ান বলে উঠলো,
-আংকেল আপনি কথা দিয়েছেন তো কি হইছে এখন মানা করে দেন।
নুশার বাবা কিছুক্ষণ চুপ করে কিছু একটা ভাবতে লাগলেন । ভাবা শেষ হতেই তিনি নুশার মার দিকে আর সায়ানের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,
-আচ্ছা তোমরা যা ভালো বুঝো তাই করো । রিফাতের সাথে আমার মেয়ে যদি ভালো থাকে তাহলেই আমার শান্তি ।
নুশার বাবার কথা শুনে সায়ান নিজেও স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলো যেনো এটা তার কাছে বড় একটা কাজ ছিলো যা থেকে সে একটু মুক্তি পেলো । নুশার মাও যেনো নুশার বাবার কথা শুনে খুশি হলো। সায়ান খুশি হয়ে বললো,
-আলহামদুলিল্লাহ , তাহলে কি আংকেল রিফাত কে জানিয়ে দিবো তার মা বাবাকে এখানে পাঠাতে।
-সে তোমরা যা ভালো বুঝ । যেদিন আসবে তারা তার আগে আমাকে একটু জানিয়ে রেখো বলে উঠে গেলেন উনি বসা থেকে আর রুমের দিকে তাকিয়ে এগিয়ে গেলেন।
এদিকে নুশা তো দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে থেকে তাদের সব কথাই শুনেছে । বাবার রাজি হওয়াতে তো তার এখন লুঙ্গি পরে লুঙ্গি ডান্স দিতে ইচ্ছে করছে । তার বোন এখন এখানে নাই হোস্টেলে থাকে এখানে থাকলে তো সেও জানতে পারতো তার এতো বড় খুশির সংবাদ । আপু এতো সুন্দর একটা খবর শুনে হার্ট ফিল না করে বসে আবার । ভাবতে ভাবতেই ভিতরে গিয়ে বিছানায় বসে পরলো আর মনে মনে দুঃখ প্রকাশ করলো এখন তার কাছে মোবাইল নাই মোবাইল টা থাকলে এতোক্ষণে সব কিছু বলে দিতো নিশি কে।
নুশার ভাবনার মাঝেই দরজায় টুকা দেওয়ার শব্দ কানে এলো। দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে সায়ান দাড়িয়ে আছে ।
নুশাকে তাকাতে দেখে সায়ান বলে উঠলো,
-আসতে পারি নুশা রানী ।
সায়ানের দিকে তাকিয়েই নুশা বলে উঠলো,
-ডোন্ট কল মি নুশা রানী , আমি কোনো রানী টানী না তাই এমন রানী বলে ডাকবেন না। ভাইয়য়া,,,, কিছুটা টেনে বলে উঠলো ।
সায়ান নুশার কথা শুনে বাকা একটা হাসি দিয়ে বিছানায় নুশার পাশে বসে নুশার দিকে তাকিয়ে বললো,
-তুমি সবার কাছে রানী না হলেও আমার কাছে তুমি আমার নুশা রানী।আমার মনের রানী তুমি তাই আমি তো রানী বলেই ডাকবো।
-না আপনি আমাকে রানী বলে ডাকবেন না।
-আমি তো ডাকবোই ।
-না।
-কেনো,,,?
-কারন আমি কোনো রানী না যে আপনি রানী বলে ডাকবেন।
-তুমি তো বুড়িও না নিশাত যে তোমায় বুড়ি ডাকে।
-সেটা আমার ভাই আমাকে ভালোবেসে ডাকে।
-তাহলে আমি কি তোমায় ভালোবাসি না। আমি তো তোমার জীবন সাথী হিসেবে ভালোবেসে রানী বলে ডাকি।
এবার আর কিছুই বললো না নুশা নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো।
সায়ান নুশার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে বলে উঠলো আসি তাহলে নিশির গায়ের হলুদের আগে মনে হয় আর আমাদের দেখা হবে না। তোমাকে না দেখে তোমার কথা না শুনে আমি থাকতে পারি না তাই প্লিজ আমি নিশাতের মোবাইলে ফোন দিলে ফোনটা একটু হাতে নিও আর একটু কথা বইলো। আর ভালো থেকে লক্ষিটি।
সায়ান নুশার উওরের আশায় নুশার মুখের পানে তাকিয়ে আছে কিন্তু কোনো উওর না পেয়ে কষ্ট মনে নিয়ে বের হয়ে গেলো রুম থেকে। তারপর নুশার আব্বু আম্মুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বের হয়ে গেলো বাড়ি থেকে । নুশার মা খাওয়ার সায়ান কে বলেছিলো কিন্তু সায়ান খাবে না বলে বের হয়ে গেলো।
_________
নিশি পড়ার টেবিলে বই সামনে রেখে বসে আছে ঠিক কিন্তু তার মন পরে আছে অন্য যায়গায়। বাবা জীবনেও রাজি হবে না রিফাতের সাথে বিয়ে নিয়ে । এবার নিশ্চিত আব্বুর বন্ধুর ছেলের সাথে বিয়ে হযে যাবে। নিশি তো অনেক চেষ্টা করছে রিফাত কে ভুলা কিন্তু রিফাত কে ভুলা তো নুশার জন্য অনেক কঠিন ব্যাপার মনে হচ্ছে কোনো ভাবেই যেনো ভুলতে পারছে না । রিফাতের সাথে কাটানো সব কথা যেনো নিশির মাথায় ঘুরাঘুরি করছে বের হতেই চাইছে না । নিশির ভাবনার মাঝেই নিশির রুমমেট আনিকা নিশির কাঁদে ধরে বললো,
-কি ব্যাপার সামনে বই খুলে রেখে কি এমন ভাবতেছো তুমি নিশি।
কাদে কারো স্পর্শ পেয়ে চমকে ভাবনার জগৎ থেকে বের হয়ে এলো, ঘাড় ঘুরিয়ে আনিকার দিকে তাকিয়ে বললো,
-নাহ তেমন কিছু না । বাড়ির কথা মনে পরছিলো এই আরকি।
-হুম বুঝতে পারছি মাএ একদিন হলো বাড়ি থেকে এসেছো মনে তো পরবেই।
নিশি কিছু বলতে যাবে তার আগেই নিশির মোবাইল ভ্রাইবেট হচ্ছে । টেবিলের উপরে রাখা ছিল বলে বুম বুম শব্দ করে কেঁপে কেঁপে উঠছে। মোবাইলটা হাতে নিয়ে চির চেনা নামটা জ্বলজ্বল করে উঠছে যেই নামটা অনেক পা ভালোবাসা দিয়ে লেখেছিলো নিশি। ফোনটা বাজতে বাজতে কেটে গেলো নিশি লম্বা একটা শ্বাস ফেললো সে আর মায়া বাড়াতে চায় না এই মানবের প্রতি। তার প্রতি নিয়ত মনে হয় যে যদি কোনো এক্সিডেন্টে মারা যেতে পারতো তাহলে তার একটু শান্তি লাগতো। এক্সিডেন্টে মারা গেলে আত্মহত্যার মতো মহা পাপও হবে না কারন সে তো নিজ ইচ্ছেয় গাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়ায়নি আবার সে এই সকল যন্ত্রণা থেকেও মুক্তি পেলো কারন না পারছে মা বাবাকে ছেড়ে রিফাতের কাছে চলে যেতে আর না পারছে রিফাতকে ভুলে যেতে।
নিশির ভাবনার মাঝে আবার বুম বুম করে ফোন বাজতে লাগলো আর নিশি একমনে সেই নাম্বারের উপরে নামটার দিকে তাকিয়ে রইলো। এবারও ফোনটা কেটে গেলো সাথে সাথে উপরে একটা রিফাতের নাম্বার থেকে মেসেজ আসলো মোবাইল সিমে তাই তাড়াতাড়ি ওপেন করে দেখতে পেলো সেখানে লেখা আছে,,,
প্লিজ নিশি ফোনটা রিসিভ করো ,, খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে।
মেসেজটা পরতে পরতে আবার ফোন আসলো কি করবে নিশি বুঝতে পারছে না। তার কি করা উচিত এখন বুঝতে পারছে না , অনেক ভেবে চিন্তে যেই ধরতে যাবে সাথে সাথেই কলটা কেটে গেলো আর নিশি ফেনটা ধরতে পারে নাই । ফেন কাটলে সাথে সাথে আবারও মেসেজ আসে,
কি হলো নিশি ফোন টা রিসিভ করো প্লিজ । এমন করো না তাড়াতাড়ি ফেনটা রিসিব করো।
এবার ফোন আসলে নবশি কাঁপা হাতে ফোন টা রিসিভ করে নরম কন্ঠে বলে উঠলো,
-,আসসালামু আলাইকুম ।
-আলাইকুম আসসালাম । ফোনটা রিসিভ করছিলে না কেনো।
-এমনি ভুলতে চাইছিলাম তুমাকে।
-তা ভুলতে পেরেছেন মেডাম।
-চেষ্টা চালিয়ে যাবো ।
-পারবেন না আর পারতে হবেও না কারন সব ঠিক ঠাক।
-মানে…!! অনেকটা জুড়েই বলে ফেলে নিশি তা দেখে পাশে দাড়িয়ে থাকা আনিকা বলে উঠলো ,
-নিশি তুমি ঠিক আছো তো,,,,!
নিশি হাত উঠিয়ে আনিকার নিকে তাকিয়ে ইশারা দিয়ে বুঝালো যে সে ঠিক আছে।
#চলবে,,,!
পড়া লেখা শেষ করে তারপর গল্প লেখা শেষ করতে হয় । দুপুর বেলা ৫০০+লেখি তারপর এগারোটার দিকে বাকি লেখা লেখি যতো টুকু লেখতে পারি । লেখার পর রি- চেক করতে ভালো লাগে না তাই বানান গুলো ঠিক করতে পারি না আর লেখায় প্রচুর বানান ভুল হয় আ সাজানো আগোছালো হয়৷। আমি হয়তো গল্পটা আপনাদের মাঝে ভালো করে ফুটিয়ে তুলতে পারছি না তাও হয়তো লাইক কমেন্ট এতো কমে যাচ্ছে । লেখা খারাপ হলে বলতে পারেন সমস্যা নেই বরং আমার একটু অভিজ্ঞতা হবে।
#আসসালামু_আলাইকুম