#তোমাতে_আসক্ত_আমি
#ইরিন_নাজ
#পর্ব_৩
— বন্ধুরা আমি এসে গেছিইই……
হঠাৎ আ*ক্র*ম*ণে লা*ফি*য়ে উঠলো মুন আর আরশি। মুন আহির মাথায় একটা চা*টি মে*রে বললো,
— এভাবে পা*গ*লা ষাঁ*ড়ে*র মতো চি*ল্লা*ই*লি কেন? আরেকটু হইলেই তো হা*র্ট টা বাইর হইয়া হাতে চইলা আইতো। থু থু উফঃ আল্লাহ কি ভ*য়*টা পাইছি।
মুনের কথায় খিলখিল করে হাসতে লাগলো আহি। যেনো খুব মজার কিছু বলেছে মুন। মুন রে*গে ওর মাথায় আরেকটা চা*টি মা*র*লো। কিন্তু এতে আহির হাসি কমার বদলে আরও বেড়ে গেলো। আরশি আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো ক্যান্টিনের সবাই ওদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে যেনো এখানে কোনো সা*র্কা*স চলছে আর ওরা জো*কা*র। আরশি আহি কে নিজের পাশের চেয়ারে টে*নে বসিয়ে দিলো আর মুন কেও চোখের ইশারায় বসতে বললো,
— কি সা*র্কা*স শুরু করসোস তোরা?দেখ তো একবার আশেপাশে সব কেমনে তাকায় আছে। আচ্ছা এসব বাদ দে আহি তুই দুইদিন কই গা*য়ে*ব ছিলি? কতো ফোন দিলাম তাও ধরলি না।
আহি হাসি থামিয়ে বললো,
— আরে ইয়ার বলিস না অনেক জ্ব*র উঠছিলো। তাই আসতে পারি নাই। আর এই জ্ব*র নিয়ে একাধারে ফোন গু*তা*চ্ছি*লা*ম তাই আমার জ*ল্লা*দ ভাই টা ফোন নিয়ে গেছে। তাই আর তোদের কে বিষয় টা জানাতে পারি নাই।
ওদের কথার মাঝেই ক্যান্টিনে হাজির হলো দলের বাকি সদস্যরা। সবাই সিট দখল করে গোল হয়ে বসলো। রাহুল দুঃ*খী দুঃ*খী মুখ করে বললো,
— ওই রশি জানিস কি হইছে?
আরশি রাহুলের মুখে রশি ডাক শুনে ওর দিকে রা*গী দৃষ্টিতে তাকালো। রাহুল আরশি কে রা*গ করতে দেখে দাঁ*ত বের করে হা*ব*লা*র মতো হা*স*লো। যেকোনো সময় তার পি*ঠে আরশির শ*ক্ত*পো*ক্ত হাতের থা*বা পড়তে পারে। দ্রুত বললো,
— সরি দোস্ত ওই মুখ ফ*স*কে বলে ফেলছি। যেটা কইতাসিলাম সে*ডা শুন। অনেক বড় ঘটনা ঘটে গেছে রে।
রাহুল কথা টা বলেই আবার দুঃ*খী দুঃ*খী মুখ করলো। আবির বি*র*ক্ত হয়ে বললো,
— আরে শা*লা মাইয়াদের মতো ঢং করোস কেন? কাহিনী কি সে*ডা বল।
মোহনা আবিরের কথা শুনে ওর হাতে জোরে একটা চি*ম*টি কা*ট*লো। দাঁ*তে দাঁ*ত চে*পে বললো,
— মাইয়াদের মতো ঢং মানে কি হ্যা? আমরা ঢং করি? তাইলে তোরা কি করোস ব*জ্জা*ত পোলা। কাল যে মাইয়াদের মতো গ*পা*গ*প আমার বেলপুরি নিজের পে*টে চা*লা*ন দিলি আমি ভু*ই*ল্লা গেছি ভাবসোস?
আবির জি*ভে কা*ম*ড় দিলো। চো*রে*র মতো এদিক ওদিক তাকাতে লাগলো। সে ভেবেছিলো সবাই ভুলে গেছে। তার আর ট্রিট দেয়া লাগবে না কিন্তু এই মহিলা কি আর নিজের বেলপুরির কথা ভুলবে? অসম্ভব। এবার আহি হালকা কা*শি দিয়ে বললো,
— কিরে রাহুল বলোস না কেন কি হইছে?
রাহুল এতক্ষন আহি কে খেয়াল করে নি। সে এবার আহি কে দেখে বললো,
— কিরে আনা যে। এতদিন পর ক*ই*থ থি*কা উ*দ*য় হইসোস? এসব বাদ দে আজকে নিজের সাথে কয় আনা আনসোস?
আহির পুরো নাম আহিয়ানা। সবাই ছোট করে আহি বলে ডাকে। কিন্তু রাহুল ডাকে আনা বলে। সবার নামের বারোটা বা*জা*নো*র অভ্যাস তার। আহি রে*গে গিয়ে না*ক ফু*লি*য়ে বললো,
— এই সব চল তো? এই বে*ডা হু*দা*ই সময় ন*ষ্ট করতেসে। ওর কিছু হয় নাই। য*ত্ত*স*ব।
রাহুল মাথা না*ড়ি*য়ে বললো,
— না না সত্যিই একটা গু*রু*ত*র ঘটনা ঘটে গেছে। আম্মা আমার বিয়ে দেয়ার জন্য পা*গ*ল হয়ে গেছে। আমি তার একমাত্র পুত্র তাই সে দ্রুত আমার বিয়ে দিয়ে পুত্রবধূ আনতে চায়। এতো বুঝাইলাম আম্মারে আমি এখন বিয়া করমু না। কিন্তু সে কিছুতেই মানবে না।
মুখ ভা*র করে বসে রইলো রাহুল। মোহনা লা*ফি*য়ে উঠে বললো,
— আরে দোস্ত কি কস? আন্টি এতো ভালো একটা কা*ম করতে চাইতেসে রে। দোস্ত শুন জলদি রাজী হয়ে যা। কতদিন বিয়া খাই না।
রাহুল মুখ ঝা*ম*টা মে*রে বললো,
— চুপ থাক তুই। আমি বিয়া করমু না। দোস্ত তোরা কিছু কর। আমার আম্মারে একটু বো*ঝা।
আরশি এক ভ্রু উঁচু করে বললো,
— করবি না কেন বিয়ে? কেউ আছে নাকি?
রাহুল তো*ত*লা*তে শুরু করলো। হা*ব*লা*র মতো হাসি দিয়ে বললো,
— আরে কি বলিস? কেউ থাকলে তোরা জানতি না? কেউ নাই, কেউ নাই।
আহি স*ন্দে*হে*র চোখে বললো,
— আমার তো মনে হচ্ছে আছে কেউ। নাহলে এভাবে তো*ত*লা*চ্ছি*স কেন? জলদি বল পরে যদি জানতে পারি তাহলে তোর খবর আছে।
রাহুল ক*পা*লে*র ঘা*ম মু*ছে বললো,
— আব না মানে আসলে হইছে কি….
আবির ঝা*ড়ি মে*রে বললো,
— কি আব না মানে আসলে লাগাইসোস। জলদি ক বে*টা। নাহলে আন্টিরে গিয়া কমু জলদি তোরে বিয়ে দিতে। এই উ*সি*লা*য় আমরাও দাওয়াত খাইতে পারমু।
রাহুল মুখটা টা ল*ট*কি*য়ে বললো,
— আমি একজন কে ভালোবাসি রে। তিন মাসের রিলেসন। অনেক ক*ষ্টে*র পর তাকে প*টা*তে পেরেছি।
আরশি হা*ই তু*লে বললো,
— নাম তুলিকা। তোদের প্রতিবেশী।
বন্ধু মহলের সবাই উৎসুক চোখে তাকালো আরশির দিকে। সবার চোখ মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে ওরা জানতে চায় আরশি কিভাবে জানলো। রাহুল চোখ বড় বড় করে বললো,
— তুই কিভাবে জানলি?
আরশি বাঁকা হেসে বললো,
— রাস্তায় তোদের ই*টি*স*পি*টি*শ করতে দেখেছি। নি*ব্বা নি*ব্বি*র মতো একে অপরকে ফুচকা খাওয়াচ্ছিলি।
আরশির কথা শুনে কা*শি উঠে গেলো রাহুলের। আরশি দাঁ*ত কে*লি*য়ে বললো,
— আর কিছু শুনবি?
রাহুল জলদি করে বললো,
— না, না আর কিছু শুনুম না। এখন তো সবাই সব জানলি। এবার আমার মা রে একটু convince কর। তুলি এখনো অনেক ছোট। এখনো এইচএসসি ও দেয় নাই। ওর বাপ জীবনেও এইটুক বয়সে মেয়ের বিয়ে দিবো না আর আমার মতো বে*কা*র ছেলের কাছে তো নাই।
আরশি এক চোখ টি*প দিয়ে বললো,
— আমাদের সবাই কে ট্রিট দিবি প্লাস তুলির সাথে মিট করাবি তাহলে আন্টি কে বুঝাবো আর নাইলে না।
সবাই হৈ*হৈ করে উঠলো ট্রিট দিতে হবে। রাহুল চা*পে পড়ে রাজী হয়ে গেলো ট্রিট দিতে। এদের ও পরে দেখে নিবে হুঁহ।
——–
— স্যার আপনি যার খোঁজ চেয়েছিলাম তার সম্পর্কে সব জানতে পেরেছি।
নিজের কেবিনে কাজ করছিলো আবরার। তার এক লোকের মুখে কথা টা শুনে বাঁকা হাসে সে। জিজ্ঞাসা করে,
— তো কি কি জানতে পারলে?
লোকটা একাধারে বলতে শুরু করে,
— নাম আরশি রহমান। ** ভার্সিটির তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। বাবা নেই। অ*সু*স্থ মা, আর একটা মেয়ে আছে নাম রিফা যাকে উনি নিজের বোন বলেন এই দুইজন কে নিয়েই উনার পরিবার। খুব পরিশ্রমী আর সা*হ*সী একটা মেয়ে স্যার। বাবা মা*রা যাওয়ার পর থেকে অনেক স্ট্রা*গ*ল করে আসছেন।
আরশির বাবা নেই শুনে খা*রা*প লাগলো আবরারের। এই সমাজে একা একটা মেয়ের টি*কে থাকা যে কতোটা ক*ঠি*ন তার কিছুটা হলেও আইডিয়া আছে তার। কিন্তু পরোক্ষনেই তার সাথে বে*য়া*দ*বি করার মুহুর্ত টা মনে পড়লো আবরারের। সে তার লোক কে কিছু একটা বলতেই লোকটা মাথা নিচু করে বললো,
— স্যার আমার বলা তো উচিত না তবুও একটা কথা বলতে চাই। স্যার আপনি তো মেয়েদের অনেক সম্মান করেন আর এই মেয়ে টা খুব অ*স*হা*য় একটা মেয়ে। তার সাথে এমন টা না করলে হয় না?
আবরার ফোঁ*স করে একটা শ্বাস ফেলে বললো,
— আমি কখনো কোনো মেয়ে কে অ*সম্মান করি নি আর করবোও না। আমি শুধু তার চোখে ভ*য় দেখতে চাই। এটাই হবে তার শা*স্তি। আমি তার কোনো ক্ষ*তি করবো না। আর তার কোনোপ্রকার সম্মানহা*নিও হতে দেবো না। তোমাকে যা বলা হয়েছে তাই করো।
লোকটা মাথা ঝা*কি*য়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো। আবরার টেবিলের উপরে থাকা পেপার ও*য়ে*ট টা ঘু*রা*তে ঘু*রা*তে বললো,
— জাস্ট একটু ভ*য় দেখতে চাই তোমার চোখে মিস কি যেনো…ওহ হ্যা আরশি। এবার আমি দেখবো তুমি ঠিক কতোটা সা*হ*সী।
চলবে?
(আস্সালামুআলাইকুম। একটু ব্য*স্ত আছি তাই গতকাল দিতে পারি নি। আর আজও বড় পর্ব দিতে পারলাম না। সবাই একটু মন্তব্য করে জানাবেন আপনাদের আরশি কে আর তার ফ্রেন্ড সার্কেল টা কেমন লাগছে। ভু*ল-ত্রু*টি ক্ষ’মা’র দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ।)