#তোমাতেই_খুজি_আমার_পূর্ণতা🤗 (২৩)
#Maisha_Jannat_Nura (লেখিকা)
____”ভাই দ’য়া’ক’র আমার উপর, আমার জীবন আমাকে ভি’ক্ষা দে। কথা দিচ্ছি অনেক অনেক দূরে চলে যাবো তোর আশেপাশে আর কখনও দেখতে পারবি না আমায়, আর কখনও তোর কোনো ক্ষ’তি করার কথা কল্পনাও করবো না।”
____”তোমাকে ক’ষ্ট করে যেতে হবে না, দূরে যাওয়ার ব্যবস্থা আমিই খুব যত্ন নিয়ে করে দিবো ভা ভা ভাইয়া। কিন্তু তার আগে আমার কিছু বিষয় জানার আছে আগে সেগুলো জেনে নেই পরেরটা পরেই দেখা যাবে।”
____”ক কি কি জানতে চাস তুই!”
____”নূরার সাথে তোমরা কি করেছো? কোথায় রেখেছো ওকে তোমরা?”
____”যদি ক কথা দি দিস তু তুই আমাকে মা’র’বি না তা তাহলেই বলবো ও কোথায় ন নয়তো বলবো না!”
____”তুমি বরাবরই খুব বুদ্ধিমান স্বভাবের ছেলে, কিন্তু কি বলোতো এই বুদ্ধি গুলো যদি ভু’ল জায়গায় না খা’টি’য়ে সঠিক জায়গায় খা’টা’তে তাহলে তোমার অবস্থা আজ এতো ক’রু’ণ/শো’চ’নী’য় হতো না। কিন্তু এখন তো আর কিছু করার নেই। আচ্ছা ঠিক আছে কথা দিলাম আমি তোমাকে মা’র’বো না। এবার বলো….”
____”৫ বছর আগে,আশ্রমের কর্মকর্তাকে দিয়ে বাচ্চা পা’চা’রে’র ফে’ই’ক কল করিয়ে যে ঠিকানা বলেছিলেন তিনি সেই ঠিকানায় সন্ধ্যার পর নূরা একাই চলে আসে। আমাদের প্লান অনুযায়ীই সব এগোচ্ছিলো। নূরার উপস্থিত হওয়ার কিয়ৎক্ষণ পরই আমদের লোকেরা নূরার কি’ড’ন্য’প করে আমাদের একটা আ’স্তা’না’য় নিয়ে আসে। সেইসময় ই নূরার জায়গায় আমরা তারিনকে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। তারিনকে দিয়ে তোকে মা’রা’র পর নূরাকে মে’রে ফেলার প্লান ছিলো আমাদের। তারিন ওর কাজ স’মা’প্ত করেছে শোনামাত্র আমরা নূরাকে একটা ফাঁকা ব্রিজে নিয়ে আসি। নূরাকে খু’ন করে পানিতে ভাসিয়ে দিবো তাহলে ওর খু’ন হওয়া নিয়ে পরবর্তীতে কোনো ঝা’মে’লা’য় পড়তে হবে না আমাদের কাওকে। কিন্তু ওকে আমরা কিছু করার পূর্বেই ও আমাদের সকলের চোখে ধু’লো দিয়ে স্বইচ্ছায় ব্রিজ থেকে লা’ফ দিয়েছিলো। ব্রিজের নিচে পানির গভীরতা অনেক বেশি ছিলো তাই আমরা ভেবে নিয়েছি নূরা মা’রা গিয়েছে। ওকে খো’জা’র চে’ষ্টা করি নি।”
কামালের মুখে নূরার মৃ’ত্যু’র অ’নি’শ্চ’য়’তা’র কথা শুনে তীব্রের বুকের বাম পার্শ্বে চি’ন’চি’নে ব্য’থা অনুভব হতে শুরু করে। মনের কোনে কি’ন্ঞ্চি’ত আশার আলো ফুটে উঠে নূরা হয়তো বেঁচে আছে ভেবে। তীব্রকে নীরব ভাবে বসে থাকতে দেখে কামাল নিজেই আবারও তীব্রকে উদ্দেশ্য করে বলে…
____”ভাই এটাই সত্যি, আমি বা বাবা আমরা আর কেও নূরার বিষয় নিয়ে কিছু জানি না। গত ৫ বছর ধরে আমাদের চোখেও পরে নি নূরাকে। এ এবার আমাকে ছেড়ে দে ভাই, আ আমাকে তো তুই মা’র’বি না বলে কথা দিয়েছিলি। আমি আমার কথা রেখেছি এবার তুই তোর কথা রাখ।”
তীব্র ঘা’ড় বা’কি’য়ে কামালকে একপলক দেখে নেয়। তারপর ঠোঁটের কোনে বাঁকা হাসির রেখা ফুটিয়ে তুলে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। কামালের থেকে বেশ খানিকটা দুরত্ব বজায় রেখে দূরে গিয়ে দাঁড়িয়ে পরে তীব্র। তারপর কামালকে উদ্দেশ্য করে বলে….
____”আবরার রহমান তীব্র কখনও কথা দিয়ে কথার খে’লা’প করে নি আর করবেও না। তোমাকে আমি মা’র’বো না কিন্তু….কিন্তু….আমার আ’ন্ডা’রে কর্মরত গা’র্ড’রা তো তোমাকে মা’র’তে পারবে কি বলো ভা ভা ভাইয়াহহহহ….!”
কথাগুলো বলেই তীব্র অ’ট্টো’হাসিতে মে’তে উঠে। তীব্রের মুখে এহেনু কথা শুনে কামালের অবস্থা আগের থেকে আরো বেশি শো’চ’নী’য় হয়ে দাঁড়িয়েছে যেনো। তীব্র কয়েক জন কালো পোশাকধারী গা’র্ড’কে ইশারা দিতেই তারা কামালের নিকট অগ্রসর হতে শুরু করে। কামাল চিৎকার করে তীব্রের কাছে জীবন ভি’ক্ষা চাইছে বারং বার। কিন্তু তীব্র সেসব কানে না নিয়ে গো’ডা’উ’ন থেকে বেড়িয়ে আসে। কালো পোশাকধারী গা’র্ড’রা কামালের শরীরের প্রত্যেকটি অংশ ছোট ছোট টু’ক’রো করে কা’ট’তে শুরু করে।
কামালের আ’র্ত’না’দ সম্পূর্ণ ঘরকে কা’পি’য়ে কা’পি’য়ে তুলছে কিন্তু কেও সেই আ’র্ত’না’দ’কে গুরত্ব দিচ্ছে না সকলে সকলের কাজে ব্য’স্ত। কামালের হাত আর পা সম্পূর্ণ কা’টা শে’ষ হলে গার্ডরা সবাই ওর সন্নিকট থেকে সরে দাঁড়ায়। কামালের ঠিক নিচে মেঝেতে একটা বিশালাকার চারকোনার ঢাকনা রাখা আছে। একজন ব’ডি’গা’র্ড রুমের ক’র্ণা’রে গিয়ে একটা সুইচে চা’প দেয়। ধীরে ধীরে সেই ঢাকনাটি খু’লে যেতে শুরু করে।
ঢাকনার আড়াল থেকে বেড়িয়ে আসছে ফু’ট’ন্ত আ’গু’নে’র লে’লি’হা’ন শি’খা’র মাত্রাতিরিক্ত তাপ। কামাল এর মনে হচ্ছে সেই তাপে ওর শরীরের বাকি অংশ জ্ব’লে পু’ড়ে শে’ষ হয়ে যাচ্ছে। আরেকজন কালো পোশাকধারী গা’র্ড সেলিং এর সাথে আ’ট’কে থাকা দড়িটা কে’টে দেয়, সঙ্গে সঙ্গে কামাল সেই লে’লি’হা’ন অ’গ্নি’শি’খা’র মাঝে পড়ে যায়। ঢাকনা খুলে দেওয়ার কাজ করা লোকটি আবারও সুইচটিতে চা’প প্রয়োগ করে, ধীরে ধীরে খুলে যাওয়া ঢাকনাটি ব’ন্ধ হয়ে আসে। স্বাভাবিক কোনো মানুষ এই গো’ডা’উ’ন এ প্রবেশ করলে বুঝতে স’ক্ষ’ম ই হবে না এই রুমের মেঝের আ’ড়া’লে এমন কা’র’সা’জি লু’কা’য়ি’ত রয়েছে।
——————————–
গো’ডা’উ’ন থেকে বে’ড়ি’য়ে তীব্র রহমান মন্ঞ্জিলে আসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
আমি ড্রয়িংরুমে সোফায় বসে দা’ত দিয়ে ন’খ কা’ট’ছি আর তীব্রের আসার অপেক্ষা করছি। সেইমূহূর্তে মূল দরজায় ভে’দ করে কেও ভিতরে প্রবেশ করছে এমন মনে হওয়ায় মূল দরজার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করি। তীব্র প্রবেশ করছে দেখে ঠোটের কোনে হাসির রেখা ফুটে উঠে, কিন্তু তীব্রের দিকে ভালোভাবে লক্ষ্য করতেই আমার ঠোটের কোনায় লেগে থাকা হাসির রেখা মিলিয়ে যায় মূহূর্তেই। ভিষণ অ’গো’ছা’লো, অ’বি’ন্য’স্ত দেখাচ্ছে তীব্রকে।
আমি বসা অবস্থা থেকে উঠে দ্রুত পায়ে তীব্রের সন্নিকটে এগিয়ে যাই। নিজের সামনে আমার অবস্থান বোঝা মাত্র তীব্র আমাকে জড়িয়ে ধরে। খু’ব শ’ক্ত ভাবে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয় তীব্র আমাকে। হু’ট করে তীব্রের এমন রূপ আমাকে পু’ড়া’চ্ছে। মনের কোনে চা’পা ক’ষ্ট অনুভব হয়। কি হয়েছে ওনার? শুকনো ঢো’ক গি’লে নিজেকে স্বাভাবিক রেখে তীব্রকে উদ্দেশ্য করে বললাম….
____”কি হয়েছে আপনার! এমন অ’গো’ছা’লো অ’বি’ন্য’স্ত দেখাচ্ছে কেনো আপনাকে? বলুন আমায়!”
তীব্র আমাকে বুকের সাথে জড়িয়ে রাখা অবস্থাতেই ভেজা কন্ঠে বলে….
____”৫ বছর আগে ওরা নূরাকে মে’রে ফেলার চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু নূরা ওদের চোখ ফা’কি দিয়ে ব্রিজ থেকে লা’ফ দিয়েছিলো। জানি না নূরা আ’দে’ও বেঁচে আছে কিনা। আমার বুকের ভিতর ভিষণ য’ন্ত্র’ণা হচ্ছে। আমার ১ম ভালোবাসা হা’রা’নো’র য’ন্ত্র’ণা আমাকে গভীর ভাবে পু’ড়া’চ্ছে তৃপ্তি। এই অ’স’হ্য’ক’র য’ন্ত্র’ণা আমি আর নিতে পারছি না। আমাকে একটু শান্তি দাও, আমি ভালো থাকতে চাই। আমাকে একটু ভালো থাকার উপায় বলে দাও প্লিজ তৃপ্তি প্লিজ……”
তীব্রের আ’কু’ল কন্ঠে আমার নিকট শান্তি চাওয়ার আবেদন আমাকে দূ’র্ব’ল করে দিচ্ছে। নিজের ভালোবাসার মানুষটি যখন দ’রু’ণ য’ন্ত্র’ণা’য় পু’ড়’তে থাকে তখন মনে হয় সেই একই য’ন্ত্র’ণা’য় নিজেও পু’ড়ে শে’ষ হয়ে যাচ্ছি। পরক্ষণেই তীব্রকে স্বাভাবিক করার উপায় ভেবে পেয়ে আমি তীব্রের নিকট থেকে নিজেকে ছা’ড়ি’য়ে নিয়ে বলি….
____”আপনি আপনার রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিন। আজ আপনার জন্য আমার তরফ থেকে সারপ্রাইজ আছে। আমার দেওয়া সেই সারপ্রাইজ টাই পারবে আপনাকে শান্তি দিতে। কোনো রূপ প্রশ্ন করবেন না।”
তীব্র আমার দিকে অ’স’হা’য় মুখশ্রী নিয়ে তাকায়, আমি তবুও জো’ড় পূর্বক তীব্রকে নিজের রুমে পাঠিয়ে দেই। তীব্র চলে যেতেই আমি টি-টেবিলের উপর থেকে আমার ফোন হাতে উঠিয়ে নিয়ে শফিক ভাইয়াকে কল করি। সারপ্রাইজের প্লা’ন’টি শফিক ভাইয়াকে শেয়ার করি৷ আর ওনাকে যা যা করতে হবে সেটাও বুঝিয়ে বলে দেই। কথা বলা শেষ করে আমি সিড়ি বেয়ে উপরে আমার রুমে চলে আসি। আলমারী খুলে তীব্রের দেওয়া ১ম উপহার পাওয়া শাড়িটি বের করি। হালকা গোলাপি রংয়ের সাদা পাথরের কাজ করা অসম্ভব সুন্দর শাড়িটি। শাড়িটি আগে পড়া হয়ে উঠে নি, বিয়ের পর পড়বো বলে যত্ন করে রেখে দিয়েছিলাম। বিয়ের পর অনেক ঝা’মে’লা পেড়িয়ে আজ সেই দিনটি এসেছে। শাড়িটা বিছানার উপর রেখে তোয়ালে নিয়ে ওয়াশরুমে প্রবেশ করি।
#চলবে…………