#তোমাতেই_খুজি_আমার_পূর্ণতা🤗 (২০)
#Maisha_Jannat_Nura (লেখিকা)
চি’ন্তা’র ঘো’র থেকে বেড় হয়ে তীব্র ঐ মধ্যবয়সের লোকটিকে উদ্দেশ্য করে বলে…
____”নূরা কোথায়? তোরা কি করেছিস ওর সাথে?”
মধ্য বয়সের লোকটি কান্নারত কন্ঠে বলে…
____”ম্য’ম এর কথা আমি জানি না বস। ওনার সাথে ওরা (তীব্রের শ’ত্রু পক্ষের লোকেরা) কি করেছে আমি কিছু জানি না। আমি যতোটুকু জানতাম সব আপনাকে খুলে বলেছি ইতিমধ্যে। এবার আমাকে ছে’ড়ে দিন বস, আমাকে মু’ক্তি দিন।”
____”মুক্তি তো তোকে দিবো, তারআগে এটা বল কে কে জড়িয়ে আছে তোদের এই কার্যকলাপের সাথে।”
মধ্য বয়সের লোকটি কয়েকবার শুকনো ঢো’ক গি’লে নেয়। তারপর বলে…
____”আপনার অফিসের ম্যনেজার আবদুল মান্নান সাহেব, ওয়াসিফ, আপনার আপন চাচা ম’ন্ত্রী কামরুল হাসান, তার বড় ছেলে কামাল হাসান আর আপনার বি’পক্ষ দলের নেতা মিরাজ উদ্দিন খোকন একত্র হয়ে আছেন। আর এরাই মূল হো’তা। ম্য’ম আদেও বেঁচে আছেন কি না, কোথায় আছেন সেই সব তথ্য ওরাই আপনাকে দিতে পারবে। আমি আর কিছু জানি না বস।”
লোকটির কথা শেষ হতেই তীব্র কয়েক ল’হ’মা নিরব থাকে। তারপর বসা অবস্থা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে কালো পোশাকধারী ব’ডি’গা’র্ড’কে ইশারা করে কিছু বলে দ্রুত পায়ে বেরিয়ে যায় অ’ন্ধ’কা’রা’চ্ছ’ন্ন রুমটি থেকে। তীব্রের ইশারা বুঝতে পেরে কালো পোশাকধারী লোকটি আরো দুজন লোককে সাথে নিয়ে ঐ মধ্য বয়সের লোকটিকে চেয়ার থেকে খুলে একটা স্ট্রে’টা’রে শুইয়ে দিয়ে আবার বে’ধে ফেলে। মধ্য বয়সের লোকটি চিৎকার করে মু’ক্তি চাইছে৷ কিন্তু কেও ওর সেই চিৎকার কানে তুলছে না।
কালো পোশাকধারী লোকগুলো ধা’রা’লো ছু’রি নিয়ে মধ্য বয়সের লোকটিকে সঙ্গানে রাখা অবস্থাতেই শরীরের চামড়া ছি’ল’তে শুরু করে। মধ্য বয়সের লোকটির ক’রু’ণ আ’র্ত’না’দ আর ছু’টা’র প্রচেষ্টায় কোনো পরিবর্তন হয় না কালো পোশাকধারী লোকগুলোর মাঝে৷ তারা তাদের কাজে ব্যস্ত। ধীরে ধীরে শরীরের অ’ঙ্গ গুলোকে ছোট ছোট টু’ক’রো করে ফেলে। একটা সময় আর য’ন্ত্র’ণা সহ্য করতে না পেরে মধ্য বয়সের লোকটি মা’রা যায়।
সব গুলো টুকরো একত্র করে কালো পোশাকধারী লোকগুলো একটা লোহার খা’চা’র সামনে এসে দাঁড়িয়ে পরে। খাঁ’চা’র ভিতর পায়চারী করতে করতে থেমে থেমে হুং’কা’র ছাড়ছে একটা ক্ষু’ধা’র্ত কালো চামড়ার ভা’ল্লু’ক। কালো পোশাকধারী লোকগুলো তাদের হাতে থাকা গো’স্তে’র সব গুলো টুকরো সেই খা’চা’র ভিতর ঢে’লে দেয়। নিমিষের মধ্যে ক্ষু’ধা’র্ত ভা’ল্লু’ক’টি সব গুলো গো’স্তে’র টুকরো ভিষণ আ’মো’দে’র সাথে খে’য়ে ফেলে। ধরনীর বুক থেকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় একজন পা’পী কী’ট।
————————-
সকাল বেলা ঘুম ভা’ঙা’র পর থেকে সম্পূর্ণ বাড়ি জুড়ে তীব্রকে দেখতে না পেয়ে আমার কপালে চি’ন্তা’র ভা’জ স্পষ্ট হয়। গতকাল রাতে তীব্রকে সব খু’লে বলার পর ওর করা প্রতিত্তুর গুলো শোনার পর থেকেই আমার মন অ’স্থি’র হয়ে আছে। কোনো কিছুই ভালো লাগছে না, শুধু মনে ভ’য় কাজ করছে। তীব্রকে হা’রি’য়ে ফেলার ভ’য়।
ড্রয়িং রুমে সোফার উপর বসে আমি মনে মনে আল্লাহকে ডাকতে শুরু করি, আমার থেকে যেনো তীব্রকে তিনি কে’ড়ে না নেন। তীব্র আমাকে ভালো না বাসলেও আমি ওকে ভালোবাসি আর আমি জানি আমি পারবো আবারও তীব্রের মনে ভালোবাসার সৃষ্টি করতে আমার ভালোবাসা দিয়ে। তীব্র ও আমাকে ভালোবেসে ফেলবে। সেই সুযোগ আমি হা’রা’তে চাই না। সব কী’ট দের যথাযথ শা’স্তি দিয়ে আমি আর তীব্র সুস্থ স্বাভাবিক জীবন কাটাতে চাই।
আমার চি’ন্তা’র মাঝে তীব্র মূল গেইট দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে। আমি দ্রুততার সাথে বসা অবস্থা থেকে উঠে দাঁড়াই, তীব্র আমার থেকে বেশ খানিকটা দুরত্ব বজায় রেখে দাঁড়িয়ে পরে জিঙ্গাসা করে…
____”এখন শরীর ঠিক আছে তো তোমার?”
আমি আমার দৃষ্টি তীব্রের উপর স্থির রেখে শীতল কন্ঠে বলি…
____”সব পা’পী’দে’র শা’স্তি দিতে গিয়ে আমার থেকে দূরে চলে যাইয়েন না দয়া করে। আমি আপনার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য কা’ঙা’ল হয়ে আছি। আমাকে এভাবে য’ন্ত্র’ণা দেওয়ার অধিকার আপনার নেই।”
আমার কথা শুনে তীব্র চ’ট করেই তাকায় আমার দিকে। ওর এই দৃষ্টি আমার বুকের ভিতরটা মু’চ’ড়ে দেয় যেন। আমি তীব্রের প্রতিত্তুরের আশায় আছি। তীব্র আমাকে হ’তা’শা’র অতল সাগরে ছে’ড়ে দিয়ে কোনো টু শব্দটি না করে সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে যায় দ্রুত পায়ে। আমি তীব্রের যাওয়ার পা’নে তাকিয়ে আছি। চোখ জোড়া দিয়ে ঝরঝর করে নোনা জল গড়িয়ে পড়ছে। ঠোঁট চে’পে কান্না নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করি। আমার মন যেন থেমে থেমে চিৎকার করে জানতে চাইছে….
____”সবকিছুর ভি’ড়ে আমার দো’ষ কোথায়? ভালোবাসা আমাকে এতো ক’ঠি’ন য’ন্ত্র’ণা কেন দিচ্ছে? প্রতিটি ক্ষ’ণে আমি শে’ষ হয়ে যাচ্ছি। যাকে নিজের সবটা উ’জা’র করে ভালোবাসি সেই মানুষটির চোখের দিকে তাকালে নিজের জন্য এক চিলতে পরিমাণ ও ভালোবাসা দেখতে পাই না, এর থেকে গভীর য’ন্ত্র’ণা আর কিছুতে আছে কি!”
————————-
ওয়াসিফ এর হু’ট করে গা’য়ে’ব হয়ে যাওয়ার খবর তীব্র অনেক আগেই পেয়েছিলো। বিষয়টা নিয়ে তখন এতোটা মাথা ঘা’মা’য় নি, কিন্তু এখন খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে ওর চারপাশে এমন অনেক বি’ষা’ক্ত কী’টে’রা বাস করছে যারা নিজেদের স্বা’র্থে এতোটুকু পরিমাণ আ’চ আসতে দিতে রাজি না। তার জন্য যদি নিজের র’ক্ত’কেও আ’ঘা’ত করতে হয়, হ’ত্যা করতে হয় সে বিষয়ে কেও দু’বার ভাববে না।
মা’ফি’য়া জগৎটি এমনই, এখানে কোনো সম্পর্কের কোনো মূল্য নেই। বাবার স্বার্থে ছেলে ব্য’ঘা’ত হা’ন’লে ছেলেকে খু’ন করবে তেমনি ছেলের স্বা’র্থে বাবা ব্য’ঘা’ত হা’ন’লে বাবাকেও ম’র’তে হবে। নিজের জীবন একান্ত নিজের সম্পদ, তাই নিজের সম্পদকে একান্ত নিজেকেই র’ক্ষা করে এই মা’ফি’য়া জগতে প্রতিটি প’দ’ক্ষে’প ফেলতে হয়।
তীব্র এখন আর কাওকে পুরোপুরি বিশ্বাস করবে না, যাকে দিয়ে কোনো কাজ করাবে বলে ঠিক করবে ১ম এ তার সবথেকে দূ’র্ব’ল জায়গা গুলোকে জেনে নিয়ে নিজের ক’ব্জা’য় রাখতে হবে নয়তো কখন কে আবার পিঠ পিছনে আ’ঘা’ত করে বসে তার তো কোনো নিশ্চয়তা নেই। পা’পে’র সাম্রাজ্য গড়ে তোলা ভিষণ সহজ, কিন্তু পা’পে’র সাম্রাজ্য ধ্বং’স করে ভালোর সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করার পথ অত্যন্ত ক’ঠি’ন, ভ’য়া’ব’হ, অনেক বা’ধা পে’ড়ো’তে হয়।
—————————
কে’টে যায় ২দিন,
এরমাঝে তীব্র তারিনের খোঁজ নিয়েছে। তীব্রের শ’ত্রু পক্ষের লোকেরা তীব্রকে হ’ত্যা করার জন্যই কেবল তারিনকে ব্যবহার করেছিলো। তারিন সেই কাজ সম্পন্ন করেছে, তীব্র মা’রা গিয়েছে এমনটা ভেবে নিয়ে তীব্রের শ’ত্রু পক্ষের লোকেরা তারিনকেই মে’রে ফেলেছে। কোনো প্রমাণ তারা রাখতে চায় না, একটা ভু’ল করলে তাদের এতোগুলো বছর ধরে গড়ে তোলা পা’পে’র সাম্রাজ্য মূহূর্তেই ভে’ঙে গু’ড়ি’য়ে যেতে পারে।
তীব্র ওর চাচা কামরুল হাসান আর চাচাতো ভাই কামাল হাসানের সাথে হিসাব পরে মি’টা’বে বলে মনঃস্থির করে। তার আগে ওর অফিসে কাজ করে ম্যনেজার আবদুল মান্নানের অ’স্তি’ত্ত্ব নি’শ্চি’হ্ন করতে হবে। ডাল-পা’লা ছা’টা’ই করে ফেললে পরে গাছের মূল অংশটাকে এক কো’পে কে’টে ফেলা যাবে৷
—————————-
নিজরুমে সোফায় বসে ল্যপটপে কিছু কাজ করতে সম্পূর্ণ মনোনিবেশ করে রেখেছিলো তীব্র। আমি বেশ অনেকক্ষণ হলো তীব্রের রুমের দরজার সামানে দাঁড়িয়ে থেকে ওর কার্যকলাপ দেখছি। ইদানিং মানুষটা অনেক বেশিই পরিবর্তন দেখাচ্ছে নিজের মাঝে, কেমন যেনো আমার সাথে নিজেকে সরিয়ে রাখার চেষ্টায় ব্য’স্ত থাকে। বিষয়টা নিয়ে আমি মনে মনে ভিষণ বি’র’ক্ত। আজ এর একটা বি’হী’ত করেই ছাড়বো বলে মনঃস্থির করেছি। উনি মা’ফি’য়া কিং হতে পারেন আমিও মা’ফি’য়া কুইন।
আমার ভালোবাসা এতো তু’চ্ছ আর স’স্তা নাকি যে এভাবে পা’ত্তা না দিয়ে এড়িয়ে চলবে। এখনও পর্যন্ত তীব্রের আমাকে লক্ষ্য না করার বিষয়টা যেনো আমার কা’টা ঘাঁ*য়ে নু’নে’র ছি’টা’র মতো কাজ করছে। আমি আর একমুহূর্তের জন্য অপেক্ষা না করে দ্রুত পায়ে তীব্রের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লাম। আমার আর তীব্রের মাঝে রাখা রয়েছে একটা টি-টেবিল। আমি দ’প তীব্রের ল্যপটপটা ব’ন্ধ করে দেই, তারপরও তীব্র আমার দিকে তাকালেন ও না। আবার ও ল্যপটপ অন করতে নিলে বিষয়টা এবার অ’তি’রি’ক্ত পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে আমার।
আমি দু’হাতে টি-টেবিলটা আমাদের মাঝে থেকে সড়িয়ে দ’প করে তীব্রের কোলের উপর বসে পড়লাম। আমার হঠাৎ এমন কাজে তীব্র কিছুটা অ’প্রস্তুত হয়ে পরে। আমাকে কিছু বলতে প্রস্তুত হতে নিবে তারপূর্বেই আমি তীব্রের ঠোঁটের ভা’জে আমার ঠোঁট বসিয়ে দি। এতো সময়ের যতো ক্ষো’ভ, রাগ আমার মাঝে জমে ছিলো সব একসাথে ঝা’রা’র উপায় যেনো মিলে গিয়েছে আমার। তীব্র বিন্দুমাত্র বা’ধা প্রয়োগ করলেন না। আমার রা’গ নিয়ন্ত্রণ হতেই আমি তীব্রের ঠোঁটের ভা’জ থেকে নিজেকে মুক্ত করতে নিলে তীব্র এবার ওর দু’হাতে আমার কমোর জড়িয়ে ধরে পরম আবেশে আমার ঠোঁটের স্বা’দ গ্রহন করতে থাকে দু’জনেই কয়েক মূহূর্তের জন্য ডু’বে যাই অন্য জগতে।
#চলবে………
[😶বা’চ্চা’রা ই’গ’নো’র মাই লু’মা’ন্তি’ক কথাবার্তা😣]