তোমাতেই অস্তিত্ব আমার পর্ব-৩০

0
2508

#তোমাতেই_অস্তিত্ব_আমার
লেখনীতে:মিথিলা মাশরেকা

৩০.

বিয়ে নয় আজ আমার!তবুও বধুবেশে বরের হাতে হাত রেখে বাসা ছাড়লাম।আসার সময় বিদায়ী কান্নাটাও বাদ যায় নি।বিয়ের পাঁচমাস পর আব্বু সেই মানুষটার হাতেই তুলে দিলেন আমাকে যার থেকে এতোদিন আগলে,লুকিয়ে রেখেছিলেন।আরমানের কথা শুনে একফোটা চোখের জল ফেলে তখন ওনাকে জড়িয়ে ধরে বলে ওঠেন,

-বাবা আরমান,যা হয়েছে ভুলে যাও।ক্ষমা করে দাও আমাদের।খুব বড় ভুল করে ফেলেছি মিথিকে তোমার কাছ থেকে আলাদা করে।এতোটাই অন্ধ হয়েছিলাম মেয়ের ভালোর কথা ভেবে,তোমার নির্দোষ হওয়া বা পরিবর্তনের কথা মাথায় আনতেই পারি নি আমি।

আরমান বললেন,

-আমি যা,সবটাই‌ মিথির।খুব ভালোবাসি ওকে।ওকে পেতে আমি সব ছাড়তেও পারি,করতেও পারি।

আমি শুধু দেখছিলাম।এ দুটো মানুষ একে অপরকে কিছুক্ষন আগ অবদি কথা শুনিয়ে যাচ্ছিলেন।আব্বু তো আরমানকে সবরকমের অপমানই করেছেন।আর উনি?উনি আছেন শুধু আমাকে নিয়ে!এতোটাও ভালোবাসা যায় কাউকে?

-আঙ্কেল অনুমতি দিন।আমার আম্মু পাঁচটা মাস হলো তীর্থের কাকের মতো আশা করে আছে তার বৌমা ঘরে তুলবে বলে।শুধুমাত্র মিথির জন্য,ও ফিরে এসেছে সুস্থ্যভাবে এমনটা শুনে আব্বুও কিছুদিন আগে কানাডা থেকে ব্যাক করেছে।

আশরাফ আঙ্কেল বললেন,

-হ্যাঁ মাহবুব।এবার আমাদের যেতে দে।ও বাসায় সবার সাথে এখনো দেখা হয়নি আমার।

আব্বু মৃদ্যু হেসে মাথা নাড়লেন।আমার হাত নিয়ে আরমানের হাতে দিয়ে বললেন,

-তুমি ঠিকই বলেছিলে আরমান।আজ আমি বলতে বাধ্য,মিধির জন্য তোমার থেকে যোগ্য কাউকে কোনোদিনই পেতাম না আমি।

আমার দিকে ঘুরে বললেন,

-আমাকে ক্ষমা করে দিস!তোকে তোর সবটা থেকে এতোদিন বঞ্চিত করেছি আমি।আমার জন্যই…

আমি আবারো কেদে আব্বুকে জরিয়ে ধরে বললাম,

-থাক না আব্বু।আজ আপনার ইচ্ছাতে ও বাসায় যাবো আমি,এর থেকে বড় প্রাপ্তি আর কিছুই না।

সবাই হাসিমুখে বিদায় জানালো আমাকে।কিন্তু আমি কেদেছি।আব্বু,আম্মু,রিয়াপি,মাইশু রিজোয়ান,কবির আঙ্কেল সবাইকে জরিয়ে কেদেছি।বাসার বাইরে বেরিয়ে ফুল দিয়ে সাজানো গাড়ি দাড় করানো দেখতে পেলাম।আরমান সেই ভুবনভুলানো হাসি দিয়ে হাত বারিয়ে গাড়িতে তুললো আমাকে।ছেড়ে আসলাম সবাইকে।নতুন একটা পৃথিবীর উদ্দেশ্য।হয়তো সেদিন বিয়ের পর না পালালে সবটাই ঠিক থাকতো।ওনার বুকে মাথা রেখে কাদছিলাম।আরমান বললেন,

-ওহ্ শিট!

মাথা তুলে নাক টেনে বললাম,

-কি হলো?

-আরে ইয়ার!এটা কি করলাম আমি?

-মানে?

-সর্বনাশ করেছে।

-কি হলো বলবেন তো!

-এই দেখো,তুমি তো বেশ বিয়ের সাজেই আছো।আমি কি বিয়ের গাড়িতে করে বউ নিয়ে এই টি শার্ট পরে বাসায় ঢুকবো?

ফিক করে হেসে দিলাম ওভাবেই।উনি নিজের বুক হাতে চেপে ধরে বললেন,

-ওভাবে হেসো না বউ।

বউ ডাক শুনে সেদিন দোকানের কথা মনে পরলো আমার।ওনার হাতের উপর মাথা রেখে অভিমানের স্বরে বললাম,

-আপনি চাইলে সবটা বলতে পারতেন আমাকে।

উনি দুহাতে আমায় জরিয়ে বললেন,

-হুম।চাইলে তোমাকে বাসায় নিয়েও আসতে পারতাম।তুমি লিগালি ওয়াইফ আমার।কিন্তু চেয়েছিলাম যাতে তোমার সবটা মনে পরে।ভালোবাসি তোমাকে মিথি।আগেরবারের মতো জোর করতে চাইনি।

-তাই বলে এতোটা কষ্ট দিলেন নিজেকে?

-হতো কষ্ট,কিন্তু তোমাকে জড়িয়ে রাত পার করলে কিছু মনে থাকতো না আমার।আজ থেকে আর স্লিপিং পিলস্ দিয়ে বুকে জরাতে হবে না তোমাকে।

অবাক হয়ে বললাম,

-তারমানে আপনি?

-হুম।আমিই থাকতাম তোমার কাছে।কি করবো বলো?তোমাকে ছাড়া রাতগুলো আরো বিষাদময় মনে হতো।তোমার বাসার ডুপ্লিকেট চাবি রিয়াপি দিয়েছিলো।

আর কোনো কথা বলেনি।ঘাপটি মেরে ওই বুকের মাঝেই ছিলাম।খুজে পাচ্ছিলাম আমার নিত্যসকালের সঙ্গী,সেই ঘ্রান।কি বলারই বা থাকে আমার আর?কেউ এতোটা ভালোবাসে আমাকে এটা ভেবে শুধু স্বর্গীয় সুখ অনুভব করছিলাম।সন্ধ্যা গরিয়ে গেলো।এক বিশাল বাড়ির সামনে গাড়ি থামলো।বাসাটা অনেক সুন্দরভাবে সাজানো।ছোটছোট রঙিন লাইটস্,দেয়ালে দেয়ালে ফুলের তোড়া দেখেই বোঝা যাচ্ছে এটা বিয়েবাড়ি।আরমানের হাত ধরে বেরিয়ে এলাম।দরজায় এগোতেই দেখলাম এক ভদ্রমহিলা,একজন লোক,আরু দাড়িয়ে।আমাকে দেখেই আরু যেইনা এগোবে ভদ্রমহিলা আমাকে জরিয়ে ধরে কাদতে কাদতে বললেন,

-আমার ঘরের লক্ষ্মী এসে গেছে।

বুঝলাম ইনি আরমানের আম্মু।আমাকে ছেড়ে কপালে চুমো দিয়ে বললেন,

-এতোগুলো দিন যে কিভাবে ওয়েট করেছি।আর বেশিদিন গেলে তো…

ভদ্রলোক বললেন,

-থাক না।কান্না থামাও।বৌমা,তুমি ভেতরে এসো।

আরু বললো,

-হ্যাঁ,হ্যাঁ।আম্মু,সাইড দাও তো।আমিও তো দেখি বানধুপি উরফ ভাবিজি কে।

আরমানের আম্মু বলে উঠলেন,
-থাম।তুই তো দেখেছিসই ওকে এতোদিন।আরমানও দেখেছে।এবার আমার আর তোর আব্বুর পালা।

ওনাদের কথার ভাবভঙ্গি দেখে মনেই হচ্ছে না এতো কান্ড করে এ বাসায় এনেছে আরমান আমাকে।হয় কিছুই জানেন না,নয় সবটাই জানেন।এতোক্ষন চুপচাপ দেখছিলেন সবটা আরমানও।মিটমিটিয়ে হেসে বললেন,

-এটা কেমন কথা আম্মু!এতো কাঠখড় পুরিয়ে বউ আনলাম!আমার কোনো ভ্যালু নেই এখন?

-না নেই।তুই ঘরে যা।আপাততো মিথিকে আমরা আদর যত্ম করবো।ভালোবাসবো।

-ঘরে যাবো?আর তোমরা ভালোবাসবে মানে?আমারটা কই রাখবো?

উনার লাগামহীন কথাটা শুনে মাথা একদম নিচু করে নিলাম আমি।ইচ্ছা করছে আকাশ নয় মাটি দুভাগ হয়ে যাক।আমি হয় আকাশে,নয় পাতালে ঢুকে যাই।এসব কথাও কোনো ছেলে তার মাকে বলে?ছিহ!

-কেনো?এতোদিন ভালোবাসোনি?থাকতে তো ওরই কাছে।বিদেশফেরত আব্বুকেও তো সময় দাওনি।এখন শাস্তি পাও।আমাদের কাছে থাকবে মিথি।তুমি যাও।বউপাগল ছেলে একটা।

আরমানের বাবার গলায় এসব কথা শুনে আর পারলাম না দাড়িয়ে থাকতে।প্রচন্ড অস্বস্তি হচ্ছে আমার।হাত কচলাচ্ছি আর উসখুশ করছি।আরু বললো,

-নট ফেয়ার!তোমরা সব বলে দিলে আমি কি বলবো আব্বু আম্মু?ভাইয়া,তুই যে সেদিন মিথিকে ডক্টর দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলি অজ্ঞান করে সেদিন তোহ…

আরমান আরুর মুখে চেপে ধরলেন।তারপর ধীরে কিছু একটা বললেন আর আরু চুপ মেরে গেলো একদম।আমি শুধু মনে করার চেষ্টা করছিলাম সেদিন কি হয়েছিলো যা আরু জানে,আমি না।

-আফরোজ!

আশরাফ আঙ্কেলকে দেখে সবাই অবাক হলো।আরমানের বাবা জরিয়ে ধরলেন ওনাকে।আমাদের ভেতরে এনে বসানো হলো।এরমধ্যে সুহানা আপু নিচে নেমে আসলেন।চোখমুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিলো অনেক কান্নাকাটি করেছেন উনি।প্রথমে আমাকে দেখে রিয়্যাক্ট করলেও আট বছর আগের নিখোজ বাবাকে দেখে ইমোশনাল হয়ে পরেন উনিও।আরমান সবটা খুলে বলেন সবাইকে।সুহানা আপুকে বোঝান,যদি সিয়াম আমাকে বিয়ে করতে না চাইতো তাহলে আশরাফ আঙ্কেলের হদিস পাওয়া যেতো না।তাই‌ আশরাফ আঙ্কেলকে খুজে পাওয়ার ক্রেডিট নাকি আমার।সুহানা আপু সবটা শুনে আমাকে জরিয়ে কাদতে থাকেন।আরমানকে নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি না করতেও বলেন,বাবাকে নিয়ে কানাডা চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সুহানা আপু।
এসব কথার মধ্যে জোর করে আমাকে খাইয়ে দিলে লাগলেন আরমানের আম্মু।কয়েকবার মুখে নিয়ে পানি খেয়ে বললাম,

-আর পারবো না আন্টি।

উনি রাগী গলায় বললেন,

-না খেতে হবে।সকাল থেকে পেটে পরেনি কিছু।আমি জানি।

-কিন্তু আন্টি…

-কিসের আন্টি?আম্মু বল।

….

-বল!

-আচ্ছা বেশ।আম্মু।

-বাহ্!আমাকে আব্বু কে বলবে?

আরমানের আব্বুর বাচ্চামো গলায় কথা শুনে হেসে দিলাম আমি।বললাম,

-আমিই বলবো আব্বু।

সবাই হাসলেন।আরু,সুহানা আপু,আরমানদের বাসার রোজি খালা,আশরাফ আঙ্কেল,সবাই বেশ অনেক হাসিখুশিভাবে কথা বললেন আমার সাথে।এটুকো সময়েই ওনাদের বিহেভ বুঝে নিয়েছি আমি।ভালো লাগছিলো।সত্যিই এমন মেয়েরা অনেক সৌভাগ্যবতী হয় যারা বিয়ের পরও এতোটা ফ্রি মাইন্ডের শশুরবাড়ির লোকজন পায়।হ্যাঁ,আমি লাকি!অনেক লাকি।আরমান কোথ্থেকে একটা শেরওয়ানি পরে এসে সোফা থেকে সোজা কোলে তুলে নিলেন আমাকে।হাটা লাগিয়ে বললেন,

-অনেক আম্মু আব্বু বানিয়েছো।রুমে চলো এবার।

আমি আবারো লজ্জায় পরে গেছি।মুখ লুকোনোর জায়গা পাচ্ছি না।বাসার বড়দের,সবার সামনে থেকে এভাবে কেউ কোলে তুলে নিয়ে অসভ্যের মতো এসব বলে?বললাম,
-ছাড়ুন আমাকে।যেতে পারবো।যাচ্ছি আমি।
উনি ওভাবে হাটতে হাটতেই চোখ পাকিয়ে বললেন,

-কথা কম বলো।

-আরে,সিড়ি তো!

-প্রয়োজন পরলে লিফট্ বসাবো এখনি।চুপচাপ থাকো।

আরু সামনে দাড়িয়ে হাত ছড়িয়ে বললো,

-হ্যাঁ,মিথি চুপচাপ থাক।ভাইয়া আমার ডানহাত চুলকাচ্ছে।

-মলম লাগা।পথ ছাড়।

-হোয়াট দ্যা…দে টাকা দে।তারপর যাবি।

-কিসের টাকা?

-শেরওয়ানি পরে এমন ঢং এ বউ নিয়ে যাচ্ছিস,যেনো আজই বিয়ে করলি!তো টাকা দে।তোর ঘর…

-যেদিনই বিয়ে হোক না কেনো!আমার বউ,আমি নিয়ে যাচ্ছি।সামনে থেকে সর আরু।

-না সরবো না।তোর ঘর…

আরমান ওকে কিছু বলতে না দিয়ে একপ্রকার ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে সোজা সিড়ি দিয়ে উপরে নিয়ে এলেন আমাকে।আরুর চেচানো,বাকিসবের হাসি কানে আসলো আমার।কিন্তু এসবে একবিন্দু ভ্রুক্ষেপ নাই আরমানের।এতোক্ষন মুখ লুকিয়ে থাকলেও রুমে ঢুকে দুম করে একটা কিল লাগিয়ে দিলাম ওনার বুকে।উনি ভ্রুকুচকে আমাকে কোলে রেখেই বললেন,

-মারলে কেনো?

-আপনি সবার সামনে আমাকে কোলে তুলে নিলেন?আবার অসভ্যের মতো ওসব কথাও বলে এলেন?

-তো কি হয়েছে?বাই‌ দ্যা ওয়ে,বউয়ের মুখে অসভ্য কথাটা বেশ লাগে শুনতে।

আবারো মাথা নামিয়ে নিলাম আমি।আরমান আমাকে নামিয়ে দিয়ে জোরে জোরে দম নিয়ে বললেন,

-আম্মু একবেলা খাইয়েই ভারি বানিয়ে দিয়েছে তোমাকে।এই কপালে কি আছে আল্লাহ মালুম!

-মানে?

-মানে রেগুলার আদর করে কোলে তুলতে গেলে কোমড়টাই তো ভেঙে যাবে আমার।

কটমটে চোখে তাকালাম ওনার দিকে।উনি আমতা আমতা করে বললেন,

-আরে,মজা করছিলাম তো।

-কোনটা?

উনি গাল ফুলিয়ে বললেন,

-আদর আর কোলে তোলা!

-আর?

-তোমার ওজন বাড়ারটা।

ওনার ওই চেহারাটা দেখে বেশ হাসি পাচ্ছিলো।কেমন যেনো ভয়ার্ত!যে লোক বাইরে ওভাবে সবাইকে ভয় দেখায়,একটু চোখ রাঙানিতে কেমন মুখ বানিয়েছে দেখো।ঠোট টিপে হাসলাম একটু।উনি হুট করে আমার কোমড় জড়িয়ে ধরে বললেন,

-টুনটুনি পাখির মতো ওজন নিয়ে ঘোরো,তোমাকে তুলতে কোনো ব্যাপার না আমার।বুঝেছো?

-কিইইই?

উনি বড়বড় করে তাকালেন।থেমে গিয়ে আমিও রাগের মুখ বানালাম।আরমান আমার নাকে নাক ঘষে চোখ দিয়ে পাশে কিছু‌ দেখার জন্য ইশারা করলেন আমাকে।তার চোখ‌ অনুসরন করতেই চোখ ধাধিয়ে গেলো আমার।গোটা ঘরটাই ফুলে ভর্তি।

-আরুর কাজ!এজন্যই টাকা চায়ছিলো ও।

ফুলের প্রতি কোনো আগ্রহ নেই আমার,মানুষটাই তো সব।আমি একবার তার দিকে তাকিয়ে নুইয়ে গেলাম।কিভাবে যেনো তাকিয়ে আছেন আমার দিকে।শান্ত কন্ঠে বললেন,

-ভালোবাসি তোমাকে মিথি।

দম আটকে আসছে আমার।নিজেকে সামলে ওনার হাত ছাড়িয়ে পিছিয়ে গেলাম।কিছুটা ড্যাম কেয়ার ভাব ধরে আয়নার সামনে বসলাম।আয়নার ভেতরে আরমানের দিকে তাকালাম,ঠোট টিপে হাসছেন উনি।।শেরওয়ানিটা গায়ে বেশ মানিয়েছে ওনাকে।অপুর্ব লাগছে।চোখ ফিরিয়ে হাতের চুড়িগুলো খুলতে শুরু করলাম।আরমান বলে উঠলেন,

-তুমি চুড়ি খুলতে পারো?

রাগ হলো আমার।গাল ফুলিয়ে চুড়ি টানাটানি শুরু করে দিলাম।আরমান এগিয়ে এসে পাশের আলমারিতে হেলান দিয়ে দাড়িয়েছেন।একটু পর হাপিয়ে গেলাম আমি।মোটে দুটো চুড়ি খুলতে পরেছে।কি করে যে রিয়াপি পরিয়েছে এগুলো!আরমান চট করে হাত ধরে ফেললেন আমার।কিছুটা ঝুকে আমার কানের কাছে মুখ নিয়ে বললেন,

-ফার্স্ট নাইটে গায়ের গয়না মেয়েদের নিজহাতে খুলতে নেই।জানোনা তুমি?

তার উষ্ণ নিশ্বাসে চোখ বন্ধ করে নিলাম আমি।খুব আলতোভাবে একটা একটা করে আমার সব গয়না খুলে দিলেন উনি।চোখ বন্ধ করে বারবার কেপে উঠেছি তার স্পর্শে।চুলগুলো খুলে এলোমেলো করে দিলেন উনি আমার।বেশ কিছুক্ষন কোনো আওয়াজ না পেয়ে চোখ মেলে তাকালাম।দুটো নেশা ভরা চোখ তাকিয়ে আছে আমার দিকে।কী গভীর সে দৃষ্টি।আরমান কিছু বলতে যাবেন তখনি ফোনটা বেজে উঠলো ওনার।বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে নাম্বারটা দেখে রিসিভ করলেন কলটা।

-হ্যালো?

-এখনো এটাই বলছে?


-না।পারবো না।

ওপাশের কথা শুনে আরমানের চোয়াল শক্ত হয়ে গেলো।আমি কিছু না বুঝে তাকিয়ে দেখছি শুধু ওনাকে।উনি বললেন,

-বেশ,থার্ড ডিগ্রি এপ্লাই করো।

ফোনটা কেটে আমার দিকে এগিয়ে এসে হাত ধরে বিছানায় নিয়ে গেলেন উনি।বুকে জরিয়ে ধরে চোখ বুজে বললেন,

-ঘুমোও মিথি।

একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চোখ বুজলাম।এ রাতটা হয়তো অন্যরকম হতে পারতো।কেনো এমন হলো?কিন্তু আমি‌ চাইনা আমার প্রশ্নে আরমান এতোটুকো কষ্ট পাক বা অস্বস্তিতে পরুক।তাই নিরবে তার বুকে মাথা রেখেই ঘুমিয়ে পরলাম।ওটাই আমার শান্তির জায়গা।

#চলবে…

®

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here