#তুমি_গহীন_অনুভব
#পর্ব_৮
#লেখিকা_আজরিনা_জ্যামি
ইরজার কথা শুনে ওপাশের লোকটা মনে হয় একটু ঘাবড়ে গেল উনি সাথে সাথেই ফোন কেটে দিলেন! তা দেখে ইরজা মুচকি হাসলো। আইজান বলল,,
“তোমার জামাই অসুস্থ অথচ তুমি মুচকি হাসছো এটা ঠিক না।”
তখন ইরজা বলল,,
“একটু আগে কে যেনো বলেছিল তার কিছুই হয় নি। তাহলে আমি কাঁদবো কোন দুঃখে আমি তো এই হাসলাম এই লোকের কথা শুনে আমাদের থ্রেট দিল অথচ আমি একটু কথা বললাম আর উনি ফোন কেটে দিল তাই। কিন্তু ইনি তো শরীফুল আলম নয়। তারমানে আমাদের মেন শত্রু শরীফুল আলম নয়। আরো অন্য কেউ। দিন দিন সবকিছু আরো জটিল হয়ে যাচ্ছে।”
“জটিল তো তখন থেকেই হচ্ছে যখন আসিফ অসুস্থ হয়ে পরলো। স্কেস অর্ধেক বানানো হলো তারপরেই আসিফ মারা গেল। শুধু চোখ দুটো আর নাক আঁকা হয়েছিল তারপরেই আসিফ মারা যায়। ওটুকু দিয়ে কিছু বোঝা যায় নি।”
“ওহ আচ্ছা সেই জন্যই আপনি আমাকে কিছু জানান নি। আপনি সুস্থ হয়ে নিন তারপর স্কেসটা আমাকে দেখায়েন।”
“আচ্ছা।”
তখনি আয়েশা চৌধুরী ভেতরে ঢুকলো হাতে খাবার নিয়ে সাথে ফায়জা আর স্বপ্না। তা দেখে ওদের কথা ওখানেই বন্ধ হলো। আয়েশা চৌধুরী ছেলেকে দেখে আবারও কান্না শুরু করে দিল। হাজার হোক মা তো ছেলের এরকম দৃশ্য কোন মা-ই সহ্য করতে পারে না। তিনি পরম যত্নে আইজানকে খায়িয়ে দিলেন। তারপর কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করলেন গাড়ি কিভাবে চালায় এরজন্য বকাও দিলেন। আইজান বুঝদার বাচ্চাদের মতো শুধু মাথা নাড়িয়ে গেল। ওনারা আইজানের রেস্টের জন্য চলে গেলেন তখনি ইশতিয়াক চৌধুরী এলেন আইজানের রুমে ইরজার লেখা জিনিস নিয়ে। এসেই বলল,,
“ইরজা এই তোমার জিনিসপত্র!”
“ধন্যবাদ বাবা যাকে আনতে দিয়েছিলে সে কি কোন প্রশ্ন করেছিল।”
” সে প্রশ্ন করলেই আমি বুঝি উত্তর দিব।”
“তা অবশ্য ঠিক।”
“আর আইজান তুমি কি একটু দেখে গাড়ি চালাতে পারো না। এরকম একটা দিনে এরকম কান্ড বানিয়ে দিলে। এর থেকে বড় যদি কোন ক্ষতি হতো তখন। এরপর থেকে সাবধানে গাড়ি চালাবে।”
আইজকা মুখটাকে লটকিয়ে বলল,,
“ঠিক আছে বাবা।”
ইশতিয়াক চৌধুরী চলে গেলেন তা দেখে ইরজা বলল,,
“নুন ওষুধ খেয়ে নিন আর হ্যা একটা ইনজেকশন দিতে হবে।”
“ইনজেকশন আবার কেন?”
“আমি বলেছি তাই আমি আপনাকে নিয়ে কোন রিস্ক নিতে চাই না।”
“ওহ আচ্ছা।”
ইরজা আইজানকে ওষুধ খায়িয়ে দিল ইনজেকশন ও দিল। তারপর ওকে শুইয়ে দিল। আইজান ওষুধের জন্য তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে গেল। তখন ইরজা ওর কপালে চুমু দিয়ে বলল,,
“আপনার সাথে যে এটা করেছে তাকে আমি একদিন কঠিন শাস্তি দেব। আপনি জানেন না আপনাকে ঐ অবস্থায় দেখে আমার কেমন লাগছিল বারবার মনে হচ্ছিল বাবার মতো আপনাকেও না আমি হাড়িয়ে ফেলি। খুব ইচ্ছে করছিল আপনাকে জরিয়ে ধরতে কিন্তু পারলাম না। ঐ অবস্থায় আপনাকে দেখতে পারছিলাম না। এর জন্য তাকে শাস্তি পেতেই হবে।”
কিছুক্ষণ পর ইরজা নিচে এলো সবাই আইজান কেমন আছে জিজ্ঞেস করল। ও সবাইকে বলল আইজান ঠিক আছে এখন ঘুমাচ্ছে। তখন আয়েশা চৌধুরী বললেন ইরজার কাছে এসে বলল,,
“ইরজা এখন খেয়ে নাও সে কোন সকালে খেয়েছো আইজানের খবর না পেয়ে তো খাওয়াই হয় নি তোমার।এখন চলো।”
“না মা এখন খাবো না আমার ভালো লাগছে না।”
“তুমি না সবাইকে বললে আইজান ঠিক আছে আর এখন তুমিই এরকম করছো। আরে আইজানের সেবা তো তোমাকেই করতে হবে তাই তোমাকেও সুস্থ থাকতে হবে। এখন চলো খেয়ে নাও আমি তোমাকে খায়িয়ে দেব।”
আয়েশা চৌধুরী ইরজাকে জোর করে নিয়ে গেলেন ইরজাকে সামনে বসিয়ে ওকে খায়িয়ে দিতে লাগলেন। বাড়ির সকলে মুগ্ধ চোখে ওদের দেখলো। কেউ কেউ মুখ ভেটকালো ঠিকই। তখন ফায়জা এলো ওখানে আর বলল,,
“আচ্ছা ভাবি তুমি কাগজে কি লিখে দিলে?”
ইশতিয়াক চৌধুরী ওখানেই ছিলেন উনি বললেন,,
“তোমার এত জানতে হবে না। শুধু এটুকু জেনে রেখো ওখানে প্রয়োজনীয় জিনিস ছিল।”
_____________________
রাতে সকলে ছাদে বসে আছে। কাল তিশা চলে যাবে তাই কাজিন মহল সবাই মিলে প্ল্যান করেছে তিশাকে কিছু সেরা মূহুর্ত দেবে। আইজান ও বোনের খুশির জন্য অসুস্থ শরীর নিয়েই এসেছে ইরজা প্রথমে মানা করলেও আইজানের বোনের প্রতি ভালোবাসা দেখে নিয়ে এসেছে। সবাই গোল হয়ে বসেছে আইজানকে চেয়ার দেওয়া হয়েছে ইরজাকেও তাই। সবাই মিলে ভাবলো ট্রুথ অর ডেয়ার খেলবে। সবাই রাজী। বোতল ঘুরানোর কথা হলেও সবাই বললো অন্য ভাবে খেলবে তাই চিরকুট এর ব্যবস্থা করা হলো। একটা করে চিরকুট উঠানো হবে যার নাম আসবে তাকে ট্রুথ আর ডেয়ারের মধ্যে থেকে নিয়ে খেলতে হবে। ফায়জা হচ্ছে চিরকুট উঠানোর দায়িত্বে ফায়জা প্রথম চিরকুট উঠালো নাম আসলো তিশার এক কাজিনের সে ট্রুথ নিল ফায়জা প্রশ্ন করলো “ক্রাশ আছে?” উত্তরে ছেলেটা বলল,,
“ক্রাশ ছিল কিন্তু সে আমাকে বাঁশ দিয়ে বিয়ে করে আমার সামনে দিয়েই ঘুরে বেড়ায় কিন্তু মুই কিছু করতে পারি না। তখন মমতাজের একটা গান মনে পড়ে বন্ধু যখন বউ লইয়া না! না! ওটা জামাই হবে বন্ধু যখন জামাই লইয়া আমার বাড়ির সামনে দিয়া হাট্টা যায় বুকটা ফাইট্টা যায়।
মেয়েটার কথার ভঙিতে সকলে হেঁসে উঠল তখন তুহিন বলল,,
“তাহলে ভাই ক্রাশের নামটাও কইয়া ফালাও আমি দেখি আমার ভাই কারে দেখে জ্বলে। কারে দেখে তার বুকটা ফাইট্টা যায়।
এ কথা শুনে সকলে আরেক দফা হেঁসে নিল। তখন ছেলেটা বোধহয় লজ্জা পেল আর বলল,,
“থাক ভাই আমি ক্রাশের নাম বলতে পারুম না। তোমরা অন্য চিরকুট ওঠাও এমনিতে আমার প্রশ্নের উত্তর আমি দিয়ে দিছি।”
ফায়জা আরেকটা চিরকুট উঠালো তাতে আসলো মলির নাম তা দেখে ফায়জা হাসলো আর বলল,,
“মলি আপু ট্রুথ না ডেয়ার?
ফায়জার হাসি দেখেই মলি বুঝতে পারছে কিছু গন্ডগোল করবে তাই ও রিস্ক না নিয়ে বলল ট্রুথ।এ কথা শুনে ফায়জা বলল,,
“আচ্ছা মলি আপু তুমি তোমার ননদ কে বিয়ে দিচ্ছো না কেন?”
এ কথা শুনে মলি তো থতমত খেলোই সাথে মলির ননদ ও মনে হয় শুকনো মাটিতে আছাড় খেল। বাকি সবাই ফায়জার দিকে তাকিয়ে আছে আইজান তো বিষয়টা ভালো ইনজয় করছে। মলি আমতা আমতা করে বলল,,
“আসলে ভালো কোন ছেলে পাচ্ছি না তাই।”
ফায়জা তিশা তুহিন আর আইজান একটু সুর লাগিয়ে বলল,,
ওওওওওওওও
সকলে আরেক দফা হেঁসে নিল। মলি একটু লজ্জাও পেল। তখন ফায়জা আবার চিরকুট উঠালো তার মধ্যে নাম উঠলো তিশার তিশা ট্রুথ নিল ফায়জা প্রশ্ন করলো,,
“তিশা আপু তুমি যখন বিদায় নিয়ে গাড়িতে উঠে কাঁদছিলে তখন তোমার জামাই প্রথম কি বলেছিল তোমাকে?
এ কথা শুনে সকলে ফায়জার দিকে তাকিয়ে রইল এই মেয়ে কি লজ্জা শরম সব শেষ করে ফেললো। তিশা লজ্জা মাখা হয়ে বলল,
“তোর দুলাভাই বলেছিল তিশা আর কান্না করো না তুমি যদি আরো কান্না করো তাহলে কিন্তু আমিও কেঁদে দিব।”
তখন সকলে হেঁসে উঠল তুহিন বলল,,
“যাক আমার বোন জামাই টা এখন এখানে নেই নাহলে কি লজ্জাটাই না পেত।
তখন ফায়জা বলল,,
“আরে তোমরা সবাই ট্রুথ নিচ্ছো কেন? কেউ ডেয়ার তো নাও এখন তার নাম উঠবে তাকে ডেয়ার নিতে হবে।আমি কিছু শুনবো না তবে হ্যা তাকে সহজ ডেয়ার দিব। ”
সকলে মত দিল এখন উঠলো ইরজার নাম অগত্যা ইরজা কে ডেয়ার নিতে হলো তখন আইজান চোখ দিয়ে কি যেনো ইশারা করলো ফায়জা কে ফায়জা মুচকি হেসে বলল,,
“ভাবি তোমার ডেয়ার হলো ভাইয়াকে ভালোবাসি বলবে সেটা তোমার স্টাইলে !”
এ কথা শুনে ইরজা লজ্জা পেল আর অন্য দিকে ঘুরে তাকালো। ইরজা কিছুই বলছে না তখন আইজান বলল,,
“বুঝলি তো ফায়জা তোর ভাবি মনে হয় ভয় পাচ্ছে নাহলে এতক্ষনে আমাকে বলে দিত!”
তখন ইরজা বলল,,
“মোটেও না আমি ভাবছিলাম কিভাবে বলবো খুব সহজ করে!”
“আমার হাত ধরে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলবে তাহলে আমি মানবো!”
সকলে হৈ হৈ করে উঠলো। ঠিক তখনি হালকা বৃষ্টি পরতে শুরু করলো। এমনিতেও সন্ধ্যার পর থেকে বাতাস ছিল মেঘ ও সেজেছিল ওরা খেয়াল করে নি। বৃষ্টি পরতেই সবাই ছাদ থেকে উঠে পরলো। কিন্তু আইজান বসেই রইলো তা দেখে ইরজা বলল,
“আপনি উঠছেন না কেন? এই শরীরে বৃষ্টি তে ভেজার কথা ভুলে যান। তারাতাড়ি উঠুন!”
“আজকে তুমি ভালোবাসি না বললে আমি উঠবো না।”
“কি সময় কি হেঁয়ালি করছেন?”ভিজে যাবেন তো?
“না তুমি না বললে আমি উঠবো না! আমার হাত ধরে আমার চোখে চোখ রেখে বলবে?
“আপনি উঠুন আমি রুমে গিয়ে বলবো পাক্কা প্রমিস।”
“আমি জানি তুমি বলবে না।”
“আপনি তো জানেন আপনার শুভ্রপরী কোন কথা দিলে কথা রাখবে!”
ইরজা আইজানকে নিয়ে রুমে চলে গেল বাকিরা আগেই ছাদ থেকে চলে এসেছে। ওরা একটু ভিজে গেছে ইরজা তা দেখে বলল,,
“তাড়াতাড়ি চেন্জ করুন নাহলে অসুস্থ হয়ে পরবেন এমনিতেও আপনি অসুস্থ।’
তখন আইজান মুখ লটকিয়ে বলল,,,
“না আমি আজকে তোমার মুখে ভালোবাসি আগে শুনবো তারপর সব করবো। আর তুমি বলেছো রুমে এসে বলবে এখন বলো।”
“আরে বলবো তো তার আগে আপনি চেন্জ করে নিন।”
“সত্যি তো!”
“হুম সত্যি! এখন শার্ট খুলুন আমি আপনাকে সাহায্য করছি চেন্জ করতে।
ইরজা আইজানকে সাহায্য করলো। তারপর নিজে চেন্জ করে আসলো। ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আসতেই দেখলো আইজান বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। ইরজা মুচকি হেসে পেছন থেকে বলল,,
‘ইয়া হায়াতি বেলকনিতে কি করছেন?’
আইজান মুচকি হেসে বলল,,
“তোমার ইয়া হায়াতি অর্থ সেদিনই বের করেছি কিন্তু তোমাকে বলা হয়ে উঠেনি।”
“তা কি অর্থ বের করেছেন?”
“আমার জীবন!”
ইরজা মুচকি হেসে আইজানের হাত দুটো ধরে ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,,
“আমার মুখ থেকে ভালোবাসি শোনার জন্য আকুল হয়ে আছেন সেটা আমি বুঝতে পারি। আপনি আমাকে কতটা ভালোবাসেন সেটা আমি উপলব্ধি করতে পারি।তবে আপনি আমার মুখে ভালোবাসি কথাটা শুনতে চান কারন হয়তো বা কেউ একজন আপনাকে বলেছে আমি একবারো আপনাকে ভালোবাসি বলিনি হয়তো বা আমি আপনাকে ভালোবাসি না। আপনি জানেন আমার মনের অনুভূতি তবুও আপনি তার কথার প্রলোভন হয়েছেন। একবারের জন্যও আপনার মনে হয়েছিল হয়তো আমি আপনাকে আপনার মতো করে ভালোবাসি না। কিন্তু আপনি কি উপলব্ধি করেন নি আমি আপনাকে ভালোবাসি।”
আইজান অবাক হলো ও বুঝতে পারল কিভাবে ওর মনের কথা এটা সত্যি তার বন্ধু তাকে এসব বলেছে আর সেও ভেবেছিল সত্যি হয়তো ইরজা হয়তো তাকে তার মতো ভালোবাসে না। আইজান মাথা নাড়ালো আর কিছু বলবে তার আগেই ইরজা আবারো বলল,,
“সবার ভালোবাসা এক নয়। কেউ প্রকাশ করেও তার অনুভূতি একসময় মিলিয়ে যায়। আবার কেউ প্রকাশ না করেও আজীবন থেকে যায়। আমি আপনার প্রতি আমার অনুভূতি প্রকাশে অনিচ্ছুক ছিলাম কারন আমি আপনাকে লুকিয়ে ভালোবাসতে চেয়েছিলাম। আমি আমার কাজ দিয়ে ভালোবাসি প্রকাশ করতে চাই মুখে বলে নয়। তবুও আপনি তখন শুনতে চান তাহলে এই প্রকৃতি কে সাক্ষী রেখে বলছি।
পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষের ভালোলাগার কিছু অনুভূতি রয়েছে যে অনুভূতি গুলোর মাধ্যমে মানুষ নিজের ভালো লাগা বা ভালোবাসা প্রকাশ করে থাকে। পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষের ভালোলাগার অনুভূতি গুলো তাদের প্রিয় জনদের জন্যই হয়। প্রতিটি মানুষের মনের মধ্যে প্রিয় জনদের জন্য একটি টান বা মায়া তৈরি হয় যেখান থেকে তাদের প্রতি ভালো লাগা ও ভালোবাসার সৃষ্টি হয়। ভালো লাগার অনুভূতি থেকেই ভালোবাসার সৃষ্টি হয়। ভালোলাগা আর ভালোবাসার অনুভূতি আছে বলেই পৃথিবীতে আজও সম্পর্কগুলো এত সুন্দর ভাবে টিকে আছে।
আনা উহিব্বুকা ইয়া হায়াতি!”
সব শোনার পর আইজান যেন স্তব্ধ হয়ে গেল। তখন বুঝতে পারলো ও ওর কাঙ্খিত জিনিস টা পেয়ে গেছে।তখন আইজান মুচকি হেসে বলল,,
“আনা উহিব্বুকা ইয়া ক্বালবি!”
“ইয়া ক্বালবি?”
তখন আইজান বলল,,
“আমি যদি তোমার জীবন হই তাহলে তুমি আমার হৃদয়।”
আইজান ইরজার দু হাত শক্ত করে ধরে বলল,,
“সত্যি হয়তো বা আমি আমার বন্ধুর কথায় প্রলোভিত হয়েছিলাম। তবে আমি তোমার মুখে ভালোবাসি কথাটা শোনার অনুভূতিটা নিতে চাইছিলাম। প্রিয়তমার মুখে ভালোবাসি কথাটা শোনার অনুভূতি নাকি জীবনের সেরা অনুভূতি।”
ইরজা কিছু বললো না মুচকি হাসলো। তখন আইজান বলল,,
“শুভ্রপরী তুমি গহীন অনুভব!
তুমি আমার জীবনের সুখ শান্তি।”
“আপনিও আমার গহীন অনুভব।’
___________________
কয়েকদিন পর,,
____ব্রেকিং নিউজ___
***** জেলার এম পি শরীফুল আলম একজন অসৎ লোক যে কিনা বিনা মূল্যে ওষুধ দেওয়ার কথা বলে হাসপাতাল এ খারাপ ওষুধ দিয়েছে। সেই ওষুধ খেয়ে মারা গেছে ১৪ জন। গোপন সুত্রে জানা গেছে উনি অনেক অবৈধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। এতদিন সরকার এর থেকে কাজের নামে টাকা আত্মসাৎ করে আসছিলেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সে কোন কাজই করেন নি। তিনি অবৈধ অস্ত্র ও ড্রাগ পাচারের সাথে জড়িত ছিল। কাল রাতে সব প্রমানসহ সি আই ডি অফিসাররা তার বাড়ি থেকে তাকে গ্ৰেফতার করেন। মাস খানেক আগে নাকি শরীফুল আলম মধুপুর গ্ৰামের চেয়ারম্যান কেও হত্যা করেন কারন চেয়ারম্যান নাকি তার অবৈধ কর্মকান্ডের কথা জেনে গিয়েছিলেন। শরীফুল আলম এর থেকে কিছু অবৈধ জিনিস হাতেনাতে ধরেছে সি আই ডি সেগুলো স্কিনে দেখানো হলো।
ইশতিয়াক চৌধুরী রাতে খবর শুনছিলেন তখন এই খবরটা দেখানো হয় এটা দেখে ইশতিয়াক চৌধুরী অনেক খুশি হয়। ওখানে চৌধুরী বাড়ির প্রায় সকলেই ছিলেন ইসহাক চৌধুরী ও সেখানে ছিলেন। এটা দেখে তুহিন বলল,,,
“বাবা ইনি তোমার বন্ধু ছিলেন না তিশার বিয়েতে এসেছিলেন। আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলে।”
এটা শুনে ইসহাক চৌধুরী একটু থতমত খেয়ে গেলেন আর বললেন,,
“হুম ইনিই সে তবে আমি জানতাম না ও এগুলো করে।”
বলেই ইসহাক চৌধুরী ওখান থেকে উঠে গেলেন। তখন ফায়জা বলল,,
“মধুপুর গ্ৰামের নামটা চেনা চেনা লাগছে কোথায় যেন শুনেছি কিন্তু মনে করতে পারছি না।”
তখন ইশতিয়াক চৌধুরী বললেন,,
“তোমার ছোট মাথায় আর চাপ দিতে হবে না। এগুলো ছাড়ো এরকম ঘটনা অনেক ঘটে এখন তুমি বলো তোমার পড়াশোনা কেমন চলছে?”
“বাবা পড়াশোনা তো ভালোই চলছে তবে?”
“তবে কি?”
“ভাবি কি আর পড়াশোনা করবে না? না মানে অনেকদিন তো হলো ভাবি আমাদের বাড়িতে এসেছে কিন্তু কখনো পড়াশোনার কথা শুনলাম না।”
তখন আইজান দরজা দিয়ে ঢুকতে ঢুকতে বলল,,
“তোর ভাবির পড়াশোনা শেষ আরো একবছর আগে। তোর ভাবিকে দেখতে ছোট দেখা গেলেও সে কিন্তু ছোট নয় তোর থেকে ছয় বছরের বড় ইরজা।”
এ কথা শুনে যেন ইশতিয়াক আর আয়েশা চৌধুরী ছাড়া সকলের মাথায় বাজ পড়ল। তখন ফায়জা অবাক হয়ে বলল,,
“কি বলছো? ভাবি আমার থেকে ছয় বছরের বড় কিন্তু আমি তো মনে করেছিলাম আমার থেকে দুই বছরের বড় হবে।”
“হুম তা তোর ভাবি কোথায়?”
“রুমে আছে আজকে বোধহয় ভাবির মনটা একটু খারাপ সকাল থেকেই কেমন যেন চুপচাপ।”
“আচ্ছা আমি দেখছি।”
~চলবে?
বিঃদ্রঃ আসসালামু আলাইকুম। সরি ফর লেট। অবশ্য কাল বলেই দিয়েছিলাম। আজকের পর্ব কেমন হয়েছে অবশ্যই জানাবেন। ভুল ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন ধন্যবাদ।