তুমি অতঃপর তুমিই
পর্ব-০৯
Writer Taniya Sheikh
আবছায়ার মাঝে চোখ মেলল ইমা৷ অনুভব করল নরম তুলতুলে বিছানায় শায়িত সে। এই অনুজ্জ্বল আলোয় পুরো রুমটায় এক ঝলক নজর বুলিয়ে নিল। বেশ বড়সড় রুমটা। ইমা উঠে বসল। মাথার কাছের থাই গ্লাস ঠিকরে বাইরের আকাশের চাঁদের আলো মুখে পড়ছে। তাতেই নিজের অর্ধ ছেঁড়া শার্ট চোখে পড়ল। অন্তর্বাস সহ বুকের কিছু অংশ উন্মুক্ত হয়ে আছে। পরক্ষনেই মনে পড়ল তখনকার ঘটনা। ইমার কান্না পেল খুব। কিন্তু এলো না কান্না। ভেতরে সব যেন গুমোট বেঁধে আছে। ভার ভার লাগছে সব। বুকের শার্ট দু’হাতে জড়ো করে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করল ইমা। সঙ্গে সঙ্গে পাশ্ববর্তী কিছুর সাথে ধাক্কা লাগতেই ঝনঝন শব্দে কী যেন পড়ল ফ্লোরে। দুই হাতের কনুই বুকে ঠেসে, মুঠে ঠোঁট চেপে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে রইল ভয়ে৷ সেকেন্ড সময়ের ব্যবধানে বন্ধ চোখের পাতার উপর বৈদ্যুতিক বাতির তীক্ষ্ণ আলো উপলব্ধি করে। ভীরু চোখজোড়া মেলতেই শানকে দেখল সে। ইমার দৃষ্টি আঁটকে গেল শানের চোখে আর ঠোঁটে।
” কী হয়েছে? ইমা, কথা বলো প্লীজ! হেই আর ইউ ওকে? ”
ইমা নিবিড়ভাবে দেখছে শানকে। এমন করে উদ্বিগ্ন হতে মা’কে ছাড়া আর কাউকে সে দেখেনি। এমন মায়াও কারো চোখে ছিল না কোনোদিন তার জন্য। ইমার কান্না পাচ্ছে আবার। ” ধ্যাৎ! বার বার কেন কান্না পাচ্ছে? আমি কী তবে ছিঁচকাদুনে মেয়ে হয়ে যাব?” ঠোঁট উল্টাতেই শানের হাতের হালকা ঝাঁকুনিতে ঘোর কাটল। শান উদ্বিগ্ন স্বরে প্রশ্ন করল ফের,
” আর ইউ ওকে?”
” হু।” অস্ফুটে বের হলো ইমার গলা থেকে।
শান যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। ঝুঁকে বললো,
” ভয় পেয়েছিলে?”
” হু!”
” ভয় নেই। আমি আছি তো। বসো এখানে।”
শানের ” আমি আছি তো” কথাটা ইমার হৃদয় ছুঁয়ে গেল। বিমোহিত নয়নে চেয়ে রইল অ্যাশ কালার টিশার্ট পরিহিত সুদর্শন পুরুষটার দিকে। শান নিজ হাতে টুকরো হওয়া শোপিচের অংশবিশেষ তুলে ডাস্টবিনে ফেলে। শানকে এগোতে দেখে আবার দাঁড়িয়ে যায় ইমা। শান খেয়াল করল দু’হাতে শার্ট ধরে বুক ঢাকার চেষ্টা করছে ইমা। ঘুরে আলমারি খুলে সেখান থেকে ব্লাক টিশার্ট এনে এগিয়ে ধরল ইমার সামনে।
” এটা পরো। আমার বাসায় লেডিস ড্রেস নাই। সো এটাই সম্বল। তোমার সমস্যা নেই তো এতে?”
ইমা চট করে টেনে বুকে জড়িয়ে নিল টিশার্টটা। শান ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই লজ্জায় আরক্ত হয়ে উঠল ইমার মুখ। এভাবে খপ করে নেওয়াটা যে ঠিক হয়নাই ভেবেই তার যতো লজ্জা। শান মুচকি হেঁসে ঘুরে দাঁড়িয়ে বললো,
” কাপড় পাল্টে বসার ঘরে আসো।” বাইরে থেকে দরজা টেনে চলে গেল শান৷ ইমা ঠোঁট টিপে নিজের অদম্য অনুভূতিকে সামাল দিতে চেষ্টা করল, হয়ত পারল না। বুকে জড়ানো শানের টিশার্টখানা ধীরে ধীরে নাকের কাছে এনে লম্বা শ্বাস নিল। মুহূর্তে শিহরণ জাগে দেহের রন্ধ্রে রন্ধ্রে।
শান চুলায় খাবার গরম করে একে একে টেবিলে সাজাতে ব্যস্ত। ইমাকে জড়তা নিয়ে বেরোতে শান আড়চোখে দেখল। ঘোর লেগে যায়। এই রাত হতে কী পারত না তার মধুচন্দ্রিমা মধুক্ষণ। হায়ঃ এ যে কেবলই সবরের রাত। এমন আরও কতো রজনী সবর করতে হবে কে জানে? শান নিজের উত্তেজনায় লাগাম টানে। খাবার টেবিল ছেড়ে রান্নাঘরে যেতে যেতে বলে,
” বসো। খেয়ে নাও।”
শানের জিম করা পেশিবহুল বডি। ইমার চেয়ে ঢের প্রসস্থ দেহগড়ন। টিশার্টি তাই ঢুলা হয়েছে খুব। তবুও বেমানান হয়ত লাগছে না। লাগবেই বা কেন? ইমা যেন নিজেকেই নিজে পাল্টা জবাব দিল। ইতস্তত ভঙ্গিতে এসে বসল চেয়ারে। মাঝরাতে ঘুম ভাঙে না তেমন ইমার। আজ অভুক্ত শুয়েছিল বলেই জেগেছে। এই যে শান তার এতো কেয়ার করছে। নিজে প্লেটে তুলে দিচ্ছে খাবার। এই মাঝরাতে কোনো পুরুষ কী এতোটা করে? একি কেবলই স্বপ্ন! নাকি তার ঘোর। শান কেন এতো কেয়ার করবে তার? কিসের জন্যে? সে তো ইমাকে দু’চোখে সহ্যই করতে পারত না। ইমা এসব ভেবে আনমনা হয়ে যায়। ইমাকে আনমনে খাবার নাড়াচাড়া করতে দেখে শান বললো করে,
” কী হলো খাও?”
” হুমম।” না এ যে সত্যি। সে সত্যিই বাস্তবে আছে। শানের চোখে চোখ পড়তেই মাথা নুয়ে চুপচাপ খাচ্ছে ইমা। আজ নিজেকে দূর্বল মনে হচ্ছে। ঠিক সময় শান না আসলে মরা ছাড়া তার হয়ত কোনো গতিই আর থাকত না। সবাই তখন বলত এমন ধেড়ে মেয়ের এই হওয়ার ছিল। মেয়ে মানুষ হবে নম্র, সভ্য। এ তো ছিল ফুলন দেবী। ঠিকই হয়েছে এমন হয়ে। ইমার কষ্ট তো কেউ আগেও বোঝে নি, পরেও বুঝবে না। ফুলন দেবী ইচ্ছা করে কী কেউ হয়? ইমার কী মন চাই না অন্য সব মেয়ের মতো সাজানো গোছানো সুন্দর জীবনের। কিন্তু সে আট কপালে। পিতৃ, ভাতৃ বিয়োগ তাকে বাধ্য করেছে এমন হতে। যেদিন মামীরা তার মা’কে বাড়ি ছাড়া করে রাস্তায় নামানোর জন্যে উৎপাত জুড়েছিল, সেদিন যে তাকে বদলাতেই হয়েছিল। ওমন সহজ সরল থাকলে তো কবেই পথে নামতে হতো ওদের। বেঁচে থাকার লড়াইয়ে কতোকিছু হতে হয়। ইমার গুমোট বাঁধা ভেতর ক্ষয়ে দু’ফোটা নোনাজলে সিক্ত হয়। শান অদূরে দাঁড়িয়ে দেখছিল সব। ইমাকে ঘিরেই যে তার সকল ধ্যান জ্ঞান। একদন্ড চোখের আড়াল হলেও বুকে যন্ত্রণা হচ্ছে এখন। শান তরকারির বাটিটা টেবিলে রাখতেই ইমা চোখ মোছে। নিচু গলায় বলে,
” আমার বোন কই?”
” বাসায় পৌঁছে দিয়েছি ওকে।”
ইমার মুখে চিন্তার রেশ দেখে শান ফের বললো,
” ভয় নেই। ওকে বলেছি বাসায় যেন এসব না বলে এবং তুমি ফ্রেন্ডের বাসায় আছ এটা জানায় সবাইকে।”
” এতো কেন করছেন আমার জন্যে? ”
” করলে কী ক্ষতি আছে?” শান চেয়ার টেনে বসল। গ্লাসে পানি ঢেলে এক চুমুক দিতেই ইমা বললো,
” তা বলিনি।”
” তবে কী? ভয় হচ্ছে একা আমার সাথে থাকতে?”
” আপনি এখানে একা থাকেন?” বিস্ময়ে গলা চড়ে গেল ইমার। শান নির্বিকার।
” হ্যাঁ!”
” আপনার ফ্যামিলি?”
” এই যে এখানেই তো আছে।”
ইমা আশপাশে দেখে শানের দিকে তাকিয়ে ভ্রুকুটি করে কাঁপা গলায় বললো,
” মানে?”
শান গ্লাস টেবিলের উপর রেখে মুচকি হাসল। চোখ তুলে ইমার দিকে তাকিয়ে বললো,
” আমার ফ্যামিলি বলতে আমিই আছি।”
” মানে?”
” কী মানে মানে করছ বলো তো?”
” সরি!” ইমাকে পুনরায় মন খারাপ করতে দেখে শান এক নিবিষ্টে চেয়ে রইল। কিছুক্ষণ পর বললো,
” আমি এতিম ইমা।” শান কথাটা বলে উঠে রুমে চলে গেল। ইমার বুকটা ধ্বক করে ওঠে কথাটা শুনে। মনে পড়ে গেল গণবিয়ের আসরের কথা। গলায় আর খাবার ঢুকছে না। হাত ধুয়ে বসে পড়ল পাশের সোফায়।
শান কিছু সময় পরেই বেরিয়ে দেখল ইমা সেখানে নেই। এদিক ওদিক তাকাতেই ব্যালকনিতে ছায়া দেখে শান্ত হলো হঠাৎ অশান্ত হওয়া শানের মন। টেবিল পরিষ্কার করে, খাবার ফ্রিজে রাখল। দু’কাপ কফি হাতে চলে এলো ব্যালকনিতে। ইমা একমনে চেয়ে ছিল দূর আকাশের চাঁদের দিকে। শান মৃদু কাশতেই তড়িৎ গতিতে ঘুরে দাঁড়াল। কফির কাপটা এগিয়ে ধরে শান বললো,
” চলবে?”
ইমা মৃদু মাথা ঝাঁকিয়ে কাপটা হাতে নিল। সে কফি খেতে অভ্যস্ত নয় তবুও নিল কেন জানে না। শুধু জানে তার ভালো লাগছে এই মানুষটার সঙ্গে সময় কাটাতে, তার সকল কথা চুপচাপ শুনতে,তাকে দেখতে নয়ন ভরে। আচ্ছা এমনটা কখন হয়? কী জানি! ইমার ভাবনায় ছেদ পড়ে শানের ভরাট গলার স্বরে,
” এতোটা চুপচাপ তোমাকে দেখব ভাবি নি আমি।”
” আমাকে নিয়ে ভাবেন নাকি আপনি?” কথাটা বলেই জিহ্বা কামড়ে চোখ বন্ধ করে মুখ ঘুরিয়ে নিল। শান ঠোঁট কামড়ে হেঁসে কফির কাপে চুমুক দিয়ে বললো,
” ভাবলে কী অপরাধ হয়ে যাবে?”
ইমা অবনত মুখে মাথা নাড়ায়। শান ব্যালকনিতে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে, ইমার দিকে চেয়ে কফির কাঁপে চুমুক দিচ্ছে। কফির স্বাদ যেন বেড়ে যাচ্ছে তাতে বহুগুন। ইমার এই রূপ সত্যি শান আশা করে নি। ওর সেই মারমুখী রূপে যতোটা না মুগ্ধ হয়েছিল এখন যেন তারচেয়ে বেশি হচ্ছে। নিজেকে দূরে রাখায় দায় হচ্ছে শানের। দু’জনে মুখোমুখি দাঁড়ানো। একজন মুখ নুয়ে কাপ ঘুরাচ্ছে হাতের উপর, অপরজন তাকে দেখে দেখেই রাত্রি না ফুরানোর দোয়া মাগছে। ইমার দমবন্ধ হয়ে আসার উপক্রম এভাবে এই মানুষটার সামনে দাঁড়িয়ে। এখানে থেকে সরে দাঁড়াবে দাঁড়াবে করেও সরা হচ্ছে না ওর। খুবই সতর্কে একবার চোখ তুলতেই বুকের ভেতর তোলপাড় শুরু হলো ঐ মোহময় নজরে বিদ্ধ হয়ে। নিজেকে আবার আগের মতো চটপটে করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালালো ইমা। কিন্তু পারছেই না। মনটা বার বার দূর্বল হচ্ছে সেই সময়ের আতঙ্কে রেশ কাটাতে না পেরে। বহুক্ষণ এভাবে দাঁড়ানোর পর ইমা চোখ তুলে শানের দিকে তাকাল। শান চোখ সরিয়ে বাইরে দৃষ্টি রাখে। ইমা ঠোঁট শক্ত করল তা দেখে। অনুতপ্তের সুরে বললো,
” সরি!”
” কেন?” শান না তাকিয়ে প্রশ্ন করায় ইমা ভেতরে ভেতরে অভিমান করল। বললো,
” জানি না।” দ্রুত পদে বসার ঘর ডিঙিয়ে চলে গেল রান্নাঘরে। কাপের সবটা কফি ফেলে কাপ ধুয়ে পাশে রেখে ঘুরতেই শানের বুকে নাক লাগল। নাকেট ডগায় হাত বুলিয়ে চলে এসে দাঁড়াল ডায়নিং টেবিলের পাশে। শান টিস্যুতে হাত মুছতে মুছতে বললো,
” আচ্ছা তোমার ভয় করছে না? ”
” কেন?” গাল ফুলিয়ে প্রশ্ন করল ইমা। শান খেয়াল করল ইমা তার দিকে না ফিরেই জবাব দিয়েছে। টিস্যু ডাস্টবিনে ফেলে ইমার দিকে এগোতে এগোতে বললো,
” আমি একা একটা পুরুষ আর তোমার তেমন চেনাও নই। সুতরাং ভয় পাওয়ার কথাই তো তাই না?”
” চেনা নন? হ্যাঁ তাই তো! তাহলে এখানে আছি কেন? চলে যাই।”
ইমা দরজার দিকে পা বাড়াতেই শান সামনে দাঁড়ায়। বলে,
” রাগ করলে নাকি?”
” অচেনা, অজানা মানুষের উপর রাগ করব কেন?”
” তাই তো?” শান ইমার অভিমানের সুর বুঝে মুচকি হাসে। সে হাসি ইমার চক্ষুগোচর হয় না। ইমা সরে দাঁড়িয়ে বলে,
” আপনি আপনাকে বাঁচালেন কেন? না বাঁচালেই পারতেন? চেনা তো আর নই।”
” হুমম! তবে চিনব বলেই না বাঁচালাম।”
ইমা ভ্রু তুলে অভিমানি দৃষ্টিতে তাকাতেই শান ঘুরে গিয়ে সোফায় গা এলিয়ে বসল। রিমোট হাতে নিয়ে বললো,
” ভাবলাম গুন্ডি মার্কা একটা মেয়ের সাথে বন্ধুত্ব করি। কিন্তু তেমন মেয়ে পাচ্ছিলামই না। ঠিক তখন নুসরাতের কল্যাণে তোমার সাথে দেখা। ব্যস ভেবে নিলাম তোমাকে বন্ধু না বানিয়ে ছাড়ছি না।”
” বন্ধু?” ব্যগ্রস্বরে বলে কিছুটা এগিয়ে দাঁড়াল ইমা।
” হ্যাঁ! কেন হতে কী পারিনা তোমার বন্ধু? ” আরও আয়েশ করে বসে টিভি দেখায় মনোযোগ দিল। আসলে তো এসব ছলনা। তার মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু কেবল ইমা।
ইমা ভীষণ রকম রাগল মনে মনে। দু’হাত মুষ্টিবদ্ধ করে মনে মনে বললো,
” হালায় সত্যি একটা কাইষ্টা। এতোকিছু থাকতে বন্ধু বানাবে বন্ধু। তোর বন্ধুর গুষ্ঠি কিলায়। হমু না বন্ধু। বন্ধু বানিয়ে অন্য মেয়ের সাথে প্রেম করবি আর আমাকে সেটা সহ্য করতে হবে? কেন প্রেমিকা বানালে কী জাত চলে যেত?” প্রেমিকা! ছিঃ ইমা৷ কী বলোস এসব তুই? প্রেমিকা হওয়ার শখ উদয় হলো তোর শেষমেশ? ” জিহ্বা কামড়ে দাঁত কামড়ে বিরবির করে ছি!ছি! করল।
শান দূরে বসে ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসছিল ইমাকে আড়চোখে ওমন করতে দেখে। ইমা না বলুক শান তো বোঝে ইমার ভেতরে কিসের দ্বন্দ্ব চলছে এই মুহূর্তে। শান গম্ভীর ভাব নিয়ে বললো,
” ঘুমাবে, না বসবে একটু?”
” বসব না।” বলেই একপ্রকার দৌড়ে চলে আসে রুমে। রুমের বন্ধ দরজায় তাকিয়ে ঠোঁট কামড়ে শব্দ করে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে শান।
দরজা বন্ধ করে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ায় ইমা। নিজের কাছেই নিজে অচেনা সে। কোন হাওয়া বদলে তার এই দশা! ইমা আরক্ত মুখখানি করতলে ঢেকে বিরবির করে,
“ভালোবাসতে আমার ভীষন ভয় করে।
আমি তো তোমায় ভালোবাসি না বলে বলেই মরছি শরমে।”
চলবে,,,