তুমিময় আসক্তি ২ পর্ব ২৮

0
740

#তুমিময়_আসক্তি_২
#আলো_ইসলাম(লেখিকা)
“২৮”

–রুদ্র মেয়েকে নিয়ে তার কেবিনে আসে। চেয়ারে বসতেই রোদ রুদ্রর গলা জড়িয়ে ধরলে রুদ্র বলে আজ আবারও স্কুল থেকে এসেছো। যদি মা জানতে পারে তাহলে কিন্তু খুব রাগ করবে মামনী। রুদ্রর কথায় রোদ ঠোঁট এলিয়ে হেসে বলে উহু মা কিছু বলবে না। কারণ মা এখন তার আরেক মেয়েকে নিয়ে ব্যস্ত। রোদের কথায় রুদ্র ভ্রু কুচকে সন্দিহান হয়ে বলে তার মানে রাদ দোলার কাছে গেছে?
– হুম আমি আর রাদ প্ল্যান করে টিফিন পালিয়েছি কথাটা বলে স্বার্থক হাসি দেয় রোদ।
আচ্ছা তার মানে দুই দুষ্টু বুড়ি যুক্তি করে এই কাজ করেছো। কিন্তু মামনী তোমরা স্কুল থেকে আসলে কীভাবে। আমার জানা মতে তোমাদের স্কুল থেকে তো পালানোর সুযোগ নেই৷ রুদ্র বিস্ময় রেখে বলে।

– ওহ বাবা সে অনেক কাহিনি। বাদ দাও তো। আচ্ছা তুমি কি খুশি হওনি আমাকে দেখে মুখটা মলিন করে বলে রোদ। রুদ্র হাসে রোদের এমন বাচ্চামো দেখে।
আমার মা এসেছে আর আমি খুশি হবো না তাই কখনো হয়েছে যে আজ হবে সেটা৷ অনেক খুশি হয়েছি মা তোকে দেখে।
– রোদ আবারও সাদরে রুদ্রকে জড়িয়ে ধরে বলে আমিও হ্যাপি তোমাকে দেখে৷ অনেক মিস করছিলাম তোমায় আমি। তাই তো এইভাবে চলে আসলাম।

– তবে এটা একদম ঠিক নয় মামনি। যদি রাস্তায় কোনো বিপদ তখন কি হবে? তাছাড়া তোমার মা কিন্তু কষ্ট পাবে এইভাবে স্কুল ফাঁকি দিয়ে আসলে। তোমার যদি আমার কাছে আসতে ইচ্ছে করে আমাকে ফোন দিয়ে বলতে। আমি গাড়ি পাঠিয়ে দিতাম।

– তুমি কি এখন আমায় বকবে বাবা। আদর করবে না? গাল ফুলিয়ে বলে রোদ। রুদ্র আর কি করবে। মেয়েরা তো তার প্রাণ ভোমরা। মেয়েদের দুষ্টামি গুলো বেশ উপভোগই করে সে।
– আচ্ছা মামনী খেয়েছিস তুই কিছু? রুদ্রর কথায় রোদের মুখের হাসিটা মিলিয়ে যায়। রুদ্র ভ্রু উঁচিয়ে তাকিয়ে বলে টিফিন কোথায় দেখি?

– আসলে বাবা আমার টিফিনটা আমার একটা বন্ধুকে দিয়ে এসেছি। মাথাটা নিচু করে নুয়ে যাওয়া কন্ঠে বলে রোদ।

দিয়ে এসেছো মানে? রুদ্রর কথায় রোদ বলে আসলে বাবা ওর খাবার টা নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো। তো আমি যখন খাবোই না। তোমার কাছে আসছি তাই আমার খাবার টা ওকে দিয়ে এসেছি খেতে।
মেয়ের কথায় কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে রুদ্র রোদের দিকে। এরপর মুচকি হেসে বলে কিন্তু না খেয়ে থাকলে তো শরীর খারাপ করবে মা। অনেকটা সময় চলে গেছে। চল আমি তোকে খাওয়াবো এরপর রুদ্র রোদকে নিয়ে ক্যানটিনে যায়। রোদ ও রুদ্রর সাথে হাসতে হাসতে চলে যায়।

আসুন এবার বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক!!!

–” রুদ্র আর দোলা কেউ কারো মুখোমুখি হয়নি এত বছরেও। তবে রুদ্র সব সময় দোলার খবর রেখেছে দূরে থেকে। দোলা যে রুদ্রর জন্য কখনো ভাবেনি বা ভাবেনা তা নয়। তবে দুজনই যেনো দুমেরু থেকে দুজনের সাথে আছে৷ শরীর দুইটা আলাদা থাকলেও হৃদয় যেনো সেই এক জায়গায় আবদ্ধ। শুধু কাছে আসাটাই হয়ে উঠেনি তাদের। একটা সম্পর্কে যদি ইগো নামক শব্দটা প্রবেশ করে তাহলে সে সম্পর্কের দুরত্ব টা বৃদ্ধি পাই সব সময়। ইগো শব্দটা যেনো একটা সম্পর্কে বিষবৃক্ষ ন্যায়। তেমন রুদ্র আর দোলার সম্পর্কে ইগো নামক শব্দটা জেঁকে বসে গেছে৷ যার ফলে তাদের আর কাছাকাছি আসা হয়ে উঠেনি কখনো। অবশ্য রুদ্রর দিক থেকে অপরাধ। যার ফলে সে কখনো আর দোলার সামনে আসার সাহস পাইনি৷ রুদ্র ভেবেছে দোলা একদিন হুট করে তার সামনে এসে দাঁড়াবে আর বলবে সব অপরাধের শাস্তি শেষ এবার একসাথে থাকা যাক। কিন্তু সেটা হয়নি যার ফলে তার অপেক্ষাও শেষ হয়নি।
তবে দোলা! দোলার মধ্যে বিষয় টা ছিলো আগে-পরে যাকে সহজ ভাবে আমরা ইগোতে চিনি। আবার সেই সাথে জুড়ে আছে অভিমান। দোলার মতে রুদ্র তার কাছে আগে আসবে আবারও বলবে সম্পর্কটা ঠিক করতে। দোলা তখন আর রুদ্রকে ফেরাবে না। কিন্তু সে কোনো ভাবেই আগে রুদ্রর সামনে যাবে না আর না বলবে চলো আবার সব ঠিক করে আমরা পাশাপাশি চলি একসাথে থাকি। দুজন মানুষের দু’ভাবনায় সম্পর্কটা ছন্নছাড়া হয়ে উঠে৷ যার জন্য এতটা সময় পরেও তারা এক হতে পারেনি৷ তবে রুদ্রর পরিবারের সাথে দোলার সম্পর্ক বরাবরই স্বাভাবিক আর নিবিড়। তেমন রুদ্রর ও দোলা বাদে সবার সাথে সম্পর্কটা ভালো। শুধু আসল দুজন মানুষেরই বোঝাপড়াটা হলো না৷ সত্যি বলতে বেশি বাড়াবাড়ি জিনিসটা কখনোই ভালো না৷ আবার বেশি বেশি কোনো জিনিস কখনোই সুফল বয়ে আনে না । রুদ্র আর দোলার যে দুরত্ব এটা সত্যি প্রকারের বাড়াবাড়ি বা বেশি বেশি। যার জন্য তাদের মধ্যেকার বন্ধুত্ব, পবিত্র বন্ধন সব আজ ঠুনকো হয়ে ইগো আর অপরাধের কাছে হেরে গেছে।

– দোলার জমজ বাচ্চা হয়৷ আর দুইটাই মেয়ে সন্তান। যাদের সম্পর্কে ইতি মধ্যে আপনারা জেনেছেন। রুদ্রর দুইটা মেয়ে সন্তান হয়েছে শোনার পর রুদ্রর মধ্যে যে খুশির আমেজ যে আনন্দ ছিলো সেটা প্রকাশ করার মতো না৷ দোলার ডেলিভারির আগ মুহুর্ত পর্যন্ত রুদ্র যেনো ছটফট করে গেছে৷ দোলার কষ্টে সেও যেনো অংশীদার ছিলো এমন একটা অনুভূতি ছিলো তার মধ্যে। রুদ্র আড়ালে থেকে সবটা করে গেছে দোলার জন্য। বেবি হওয়া পর দোলা প্রস্তাব রাখে রুদ্রকে একটা সন্তান দিতে চাই আর একটা সন্তান তার কাছে রাখতে চাই। তখন রুদ্র রাজী হয়না৷ তার মতে দুইটা মেয়েই দোলার কাছে থাকবে। কারণ মা-হারা কোনো ভাবেই করতে চাইনা রুদ্র তার মেয়েদের। রুদ্র ভেবেছিলো বেবি হওয়ার পর হয়তো দোলা সবটা মানিয়ে নেবে সন্তানদের জন্য হলেও। কিন্তু তখনো রুদ্রর ভাবনা ভুল ছিলো। দোলা কখনো নিজ থেকে ধরা দিতে আসেনি তার কাছে। একদিকে দোলার অনুপস্থিতি আরেক দিকে সন্তানদের আহাজারি সব কিছু মিলিয়ে রুদ্র যেনো আবারও উন্মাদ হয়ে যায়। দূর থেকে সন্তানকে দেখে আসা! আবার কখনো রত্না চৌধুরীকে দিয়ে নিয়ে আসতো ওদের। এইভাবে যায় এক বছর। কিন্তু রুদ্রর মধ্যে তার সন্তানদের জন্য ভালোবাসা মায়া বাড়তে থাকে দিন দিন। এটা যখন দোলা খুব ভালো করে উপলব্ধি করতে পারে তখন আবারও দোলা বলে একজন কে নিয়ে যেতে। এবং সে সাথে জুড়ে দেয় বেশ কিছু অজুহাত।

– যেহেতু দোলার পড়াশোনা শেষ হয়নি। তাই কোনো চাকরি আপাতত সে করতে পারছে না। দ্বিতীয়ত রাশেদ মিয়া প্রায় অসুস্থ থাকায় ঠিক ভাবে কাজ করতে পারে না। রুদ্রর অফিস থেকে অনেক আগেই রিটায়ার নিয়েছে সে। রুদ্র চেয়েছিলো দোলার পরিবারের দায়ভার নিতে কিন্তু দোলা কখনো রাজী হয়নি। তাই দোলা জানায় যে একসাথে দুই সন্তানের খরচ বহন করা তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তাই রুদ্র যেনো একজনকে নিয়ে যায়। আসলে এটা ছিলো সম্পুর্ণ মিথ্যা যেটা রত্না চৌধুরী খুব ভালো করে বুঝে গিয়েছিলো। দোলা চাইছিলো রুদ্র যেনো একজন কে তার কাছে রাখে। যাতে করে সে সুখে থেকে তার একটা সন্তানকে নিয়ে। একজন মা যতই অভাবী হোক না কেনো সন্তান কখনোই তার কাছে বোঝা হয়না। কিন্তু রুদ্রর জন্য এ-রুপ কথা বলতে হয় দোলাকে। রুদ্র সেটাই বিশ্বাস করে নেয় পরে। কারণ দোলাদের অবস্থা সত্যি ভালো ছিলো না সে-সময়। আবার রুদ্রর থেকেও কোনো রকম সাহায্য নিতে নারাজ ছিলো দোলা। তাই রাদের যখন এক বছর বয়স তখন রুদ্র তাকে নিয়ে চলে আসে তার কাছে। এরপর থেকে রোদ আর রাদ আলাদা হয়ে যায়। রুদ্রর দুই মেয়ের নাম রোদেলা চৌধুরী আর রুদ্রাণী চৌধুরী। সবাই ছোট করে রোদ আর রাদ বলে ডাকে। রোদ থাকে মায়ের কাছে আর রাদ তার বাবার কাছে। এইভাবেই চলছে তাদের সংসার তাদের জীবন। তবে দুই মেয়ে যাতে কখনোই বাবা-মায়ের অভাব ফিল না করে তাই তাদের জন্য রুদ্র বা দোলার কাছে আসা নিয়ে কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব নেই। রোদ আর রাদ যখন থেকে একটু করে বুঝতে শিখেছে তখন থেকেই দুজন যাওয়া আসা করে। রত্না চৌধুরী বা তানিয়া ওদের নিয়ে আসতো দিয়ে আসতো আবার দোলা নিজেও কখনো এসেছে৷ এইভাবে রোদ আর রাদ দুজন দুজনের ভালো বন্ধু হয়ে উঠেছে৷ তাদের সম্পর্কে যেনো বোনের না। খুব ভালো একটা বন্ধুত্বের। রোদ আর রাদ সবে অষ্টম শ্রেণীতে। রোদের তুলনায় রাদ অনেক দুষ্টু প্রকৃতির।

–সজল দোলাকে অনেক ভাবে সাহায্য করেছে। যার ফলে দোলা পড়াশোনা শেষ করে আজ এই পজিশনে আসতে পেরেছে। তানিয়া আর সজলের বিয়ে হয়েছে প্রায় ১৩ বছর হলো। ওদের ঘরেও একটা মেয়ে সন্তান আছে যার নাম তানজিলা। রাজ আর আশা বাইরে আছে। রাজ কোম্পানির কাজের জন্য এখন বাইরে থাকে বেশি। রাজ আর আশার একটা ছেলে সন্তান হয়। যার নাম আবির। সবাই বেশ ভালোই আছে স্ত্রী সন্তান নিয়ে৷ শুধু রুদ্র আর দোলার সম্পর্কটায় বিচ্ছেদে কাটিয়ে দিলো।

–” মা আমরা একসাথে থাকবো কবে? রোদ আমি বাবা তুমি কবে একসাথে হবো? হঠাৎ রাদের এমন কথায় চমকে উঠে দোলা। এটা যে আজ প্রথম শুনছে দোলা এমন নয়। প্রায় রোদ আর রাদ এমন কথা বলে আর দোলা ততবারই এড়িয়ে যায় কথাগুলো।
– দোলাকে চুপ থাকতে দেখে রাদ দোলার হাত ধরে ঝাকিয়ে বলে ওমা বলো না৷ কবে আসবে তুমি আমাদের বাড়ি। আমার ভালো লাগে না তোমাকে ছাড়া থাকতে। রোদের সাথে স্কুলে দেখা হয় শুধু আর মাঝে মাঝে ওই বাড়িতে গেলে। আমরা তো চাইলেই একসাথে থাকতে পারি মা। তাহলে কেনো তুমি আর রোদ আলাদা থাকো। জানো মা বাবাও ভালো নেই। তোমার ছবিকে দেখে প্রায় যেনো কি বলে আর কাঁদেও। আমি না বাবাকে অনেক বার কাঁদতে দেখেছি জানো৷ কিন্তু বাবা সবার সামনে এমন ভাবে থাকে যেনো বাবা খুব সুখী। এতটুকু মেয়ের মুখে এই কথা প্রায় শুনতে আর ভালো লাগে না দোলার৷ বুকটা যেনো ভারী হয়ে আসে। নিশ্বাসটাও আটকে আসে মাঝে মাঝে৷ এদিক থেকে রাদের বায়নাটা বেশি হয়েছে৷ রোদ যখন বলে তখন দোলা ধমকিয়ে চুপ করিয়ে দেয় বা অন্য কিছু বলে সে কথা চাপা দেয়৷ কিন্তু রাদকে দোলা চাইলেও বকতে পারে না৷ কারণ একে তো রাদ দূরে থাকে দোলার থেকে তাছাড়া মায়ের প্রতি যে তার অন্য রকম একটা ভাবনা আছে এটা দোলা বেশ ভালোই উপলব্ধি করতে পারে।

– রাদ সোনা৷ আমার একটা জরুরি কাজ আছে। তুমি তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও৷ এরপর তোমাকে মামা দিয়ে আসবে বাড়ি কেমন। ( রোকনও এই কোম্পানিতে চাকরি করে) রাদ মনটা খারাপ করে মাথা নিচু করে হ্যাঁ বলে। দোলা রাদের দিকে তাকিয়ে এক ফোঁটা পানি ফেলে আবার সেটা সঙ্গে সঙ্গে মুছেও ফেলে।

— রোদ মামনী খাবার খেয়ে তুমি বাড়ি যাবে কেমন? আমি তোমায় গাড়ি করে পাঠিয়ে দেবো। এরপর আমাকে আরেকটা মিটিং এটেন্ড করতে হবে। সামনে তো ফ্রাইডে আছে৷ আমি তোমাকে সেদিন নিয়ে আসবো ওকে?

তুমি যাবে আমাকে আনতে বাবা? রোদের কথায় ঘাবড়ে যায় রুদ্র। ভীতো চোখে তাকিয়ে সংকীর্ণ কন্ঠে বলে আমি গাড়ি পাঠিয়ে দেবো মামনী।

– বাবা! তুমি আর মা কবে একসাথে হবে? রোদের একই প্রশ্নে থমকে যায় রুদ্র। অসহায় চোখে তাকিয়ে থাকে।
– জানো বাবা আমার না খুব ইচ্ছে করে তুমি মা রাদ আমরা একসাথে থাকবো। সবাই মিলে কত আনন্দ করবো। দাদিমা থাকবে আমাদের সাথে। সবার বাবা-মা একসাথে থাকে শুধু তুমি আর মা আলাদা। কিন্তু কেনো বাবা?

– রুদ্র চোখ ফিরিয়ে নেয় রাদের দিক থেকে। চাপা আর্তনাদ রুদ্রর মধ্যে।
– বাবা বলো না। কেনো আলাদা থাকো তোমরা? আবারও একই প্রশ্নে রুদ্র উঠে দাঁড়ায়। হাত ধুয়ে রোদকে ধরে উঠিয়ে বলে মামনী আমার মিটিং-এর সময় হয়ে গেছে৷ আজ তুমি যাও৷ আমি তোমাকে আবার নিয়ে আসবো। রোদও মন খারাপ করে হুম বলে রুদ্রর সাথে এগিয়ে আসে।

— এভাবে যায় আরো কয়েকটি দিন। আজ শুক্রবার। দোলার অফিস ছুটি। রোদ বায়না জুড়েছে ও বাড়ি যাবে। কারণ তানিয়া আসছে সেখানে আজ। যদিও তানিয়া ফোন দিয়ে দোলাকে যেতে বলে রুদ্রর বাড়ি। কিন্তু দোলার কিছু কাজ থাকায় যেতে পারবে না বলে। কিন্তু এটা রোদ শোনার পর থেকে একগুঁয়ে হয়ে বসে আছে৷ দোলাকে নিয়ে ওই বাড়ি যাবেই যাবে।

-আপু এমন করছিস কেনো যা-না ঘুরে আয়। তাছাড়া আন্টিও খুশি হবে তোকে দেখে। সেই তো অনেক দিন হলো এসেছিস ও বাড়ি থেকে। আন্টির শরীর খারাপ থাকায় সেও এখন আসতে পারে না তেমন। রোকনের কথায় আহত চোখে তাকায় দোলা। কারণ আজ ছুটির দিন হওয়াতে রুদ্রও আছে বাড়িতে। দোলা যতবার ওই বাড়ি গেছে ততদিন রুদ্র অফিসে ছিলো। দোলা কোনো ভাবেই রুদ্রর সামনে পড়তে চাইনা।

— তুই নিয়ে যা-না ভাই। আমার অনেক কাজ হাতে। একটা দিন পাই ছুটি। কত কাজ থাকে বাড়িতে জানিসই তো। দোলার কথায় রোকন শার্ট গায়ে দিতে দিতে বলে আমি বাইরে যাচ্ছি আপু। আমার একটা কাজ আছে। তুই নিয়ে যা রোদকে। নাহলে কিন্তু ও মন খারাপ করে থাকবে। পরে তোরই ভালো লাগবে না। কথাটা বলে রোকন বেরিয়ে যায়।
-দোলা ফোঁস করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে রোদকে বলে রেডি হতে। অনেক দিন হলো রত্না চৌধুরীর সাথে দেখা নাই। শুধু ফোনেই যা কথা হয়৷ তাই দোলা আর না করলো না আজ।

— তানিয়া এসেছে কিছুক্ষণ আগে৷ সাথে তানজিলাও আছে৷ সজল বিকেলে এসে নিয়ে যাবে ওদের সেই সাথে বেড়িয়ে যাবে এখানে থেকে । তানভীর আহমেদ অনেক দিন পর মেয়ে আর নাতনি কে পেয়ে উৎফুল্ল।

— রুদ্র ওর ঘরেই ছিলো তানিয়া আসায় রাদ গিয়ে ডেকে আনে। সবাই মিলে ড্রয়িং রুমে বসে কথা বলছে। রত্না চৌধুরীর শরীরটা তেমন ভালো যায় না আজকাল। কারণ টা বয়স বাড়ার ফল। অতঃপর আগমন হয় দোলা আর রোদের। বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করতেই রাদ দোলাকে দেখতে পাই। মা বলে চিৎকার করে উঠলে সবার দৃষ্টি সেদিকে যায়। রুদ্র আর দোলার চোখাচোখি হয়ে যায় পুনরায়। দীর্ঘ দিন পর দুজন দুজনের চোখে চোখ রাখলো আজ। রুদ্র তো হতভম্ব হয়ে গেছে দোলাকে সামনে থেকে দেখে। দোলা সে যেনো বাকরুদ্ধ, নিশ্বাস আঁটকে আসা ভাব। তানিয়া, রত্না চৌধুরী, তানভীর আহমেদের মুখে চওড়া হাসি দোলাকে দেখে। রোদ ছুটে এসে রত্না চৌধুরীকে জড়িয়ে ধরে দাদিমা বলে। রত্না চৌধুরী রোদের কপালে একটা ভালোবাসার পরশ দেয়। তানজিলা ফ্যালফ্যালে চোখে তাকিয়ে আছে শুধু। তবে রোদকে দেখে সেও খুশি অনেক।

— রুদ্রর দিক হতে দোলা চোখ সরিয়ে নেয় আগে। এদিক ওদিক তাকিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখার ভঙ্গি । রুদ্র এখনো একই ভাবে তাকিয়ে আছে দোলার দিকে। কতদিনের পিপাসা যেনো আজ তৃপ্তি নিয়ে মেটাচ্ছে রুদ্র।

– চলবে…..

❌❌কপি করা নিষেধ ❌❌

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here