#তুই__আমার
#লেখাঃ সাফিয়া_জান্নাত_মুন
#পর্ব ৮ম
——–
মিসেস পুতুল চৌধুরী এগিয়ে এসে মেঘার গালে টাশ করে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো মেঘা টালসামলাতে না পেরে নিচে ফ্লোরে পড়ে গেলো।
মিসেস পুতুল চৌধুরী রাগে জ্বলজ্বল করছেন তিনি উচ্চ স্বরে বলতে লাগলো,
এই ফকিন্নির বাচ্চা তোর এইসব প্লান ছিলো? নিজের মেয়ের মতো ভালোবাসা দিয়েছিলাম তার এই মূল্য দিলি তুই? তোর ওই অসভ্য বোন টাকে আমার ভালো ছেলেটার ঘাড়ে চাপাবি বলে।
মেঘা চমকে উঠলো মিসেস পুতুলের কথা, তার বোন মানে মিশু? চোখ ঘুরাতে দেখলো মিশু ঠায় দারিয়ে আছে তার পড়নে সেম পোষাক যা মেঘা পড়েছে এর মানে কি মিশু আর কবির ভাইয়া বিয়ে হয়ে গেছে?
মেঘা উঠে দারালো।
পাশ থেকে শরীফ চৌধুরী চিৎকার করে বললো,
এই বিয়ে আমি মানি না। এইসব কার চক্রান্ত ছিলো আমি জানি না কিন্তু আমি মিশু কে এই বাড়ির বউ মানি না।
হ্যা হ্যা বাবা জীবন এই মেয়েকে তুমি ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেও শুধু এই মেয়ে না এদের দুই বোন কে তুমি বের করে দেও তো।
না মা মেঘার কোনো দোষ আমি খুঁজে পাচ্ছি না এইসব এই মিশুর কারসাজি ওকে ধাক্কা মেরে বের করে দিবো এই বাড়ি থেকে, আমি আবার কবিরের সাথে মেঘার বিয়ে দিবো আজকেই।
মামুর কথায় আমার বুকের ভিতরটা কেঁপে উঠলো নিজের ছোট বোনের সংসার আমি কিভাবে ভেঙ্গে যেতে দেই আমাকে কিছুই কররে হবে।
না মামু এইসব আমি প্লান করে করেছি। আমি মিশুকে এই বাড়ির বউ বানাতে চেয়েছিলাম তাই আমি এইসব করেছি মামু।
মামু আমার কথায় ধপ করে বসে পড়লেন। তিনি কোনো কথা বলছেন না, আমি আস্তে আস্তে তার কাছে গিয়ে তার পায়ের কাছে বসে পড়লাম তার পা ছুঁয়ে বললাম, আমাকে ক্ষমা করে দেও মামু আমি ভুল করেছি। এর জন্য যে শাস্তি দিবে আমি মাথা পেতে নিবো। আমার কথায় মামু চুপ করে আছে আমি ঢুকরে ঢুকরে কাঁদছি।
কেউ একজন আমার চুলের ঝুটি ধরে উপরের দিকে টেনে তুললো কে দেখার জন্য ঘুরতে দেখলাম মামিমা, তিনি তার মুষ্টিবদ্ধ আমার চুল আরো শক্ত করে ধরে মুখ উঁচিয়ে বললেন
তোকে এই মুহূর্ত এই বাড়ি থেকে বের করে দিবো আমি, তোর ছায়া আর সহ্য হচ্ছে না আমার।
আয়েশা খালা বাধা দিতে আসলে, মামিমা তাকে সরিয়ে দিয়ে আমায় টেনে হনহন করে নিয়ে গেলো বাহিরের দিকে আমায় জোরে ধাক্কা দিয়ে ছুরে ফেলে দিলো আমি কারো বুকের মধ্য পড়লাম।
মুখ তুলে দেখার আর প্রয়োজন বোধ করলাম না তার রূিদয়ের প্রতিটি স্পন্দ চিনি আমি। এই পিশাচ টার জন্য আজ আমি এমন নারকীয় যন্ত্রণা সহ্য করছি সব কিছুইর জন্য এই দায়ী।
কাব্য ভাইয়া আমার হাত ধরে টেনে ভিতরে নিয়ে গেলেন।
মা মেঘা কোথায় যাবে কি করবে একা একটা মেয়ে?
সেই দায়িত্ব আমার না কাব্য,সে মরে মরুক বাঁচে বাচুক তার কোনো দায়িত্ব আমি নিবো না তুই শুনে রাখ।
কাব্য বিরক্তিভাজন হয়ে বললো, তোমায় নিতে হবে না মা আজ থেকে মেঘার সব দায়িত্ব আমি নিবো।
মানে তুই কি বলতে চাস?
আমি মেঘা কে বিয়ে করবো।
এই মেয়েকে আমি নিজের ছেলের বউ হিসাবে কোনোদিন মেনে নিবো না।
মা আমি আমার কথা বলে দিয়েছি যদি তোমরা মেঘা কে বের করে দেও ওর সাথে আমিও বের হয়ে যাবো এই বাড়ি থেকে।
কাব্য,, মিসেস আর মিস্টার চৌধুরী আর কোনো কিছুই বলতে পারছেন না তাদের বলার আর কিছুই নেইও।
কাব্য মেঘার হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলো, কাজী সাহেব কে বললো কাজী সাহেব বিয়ে পড়ান।
কাজী সাহেব যথা নিয়মে বিয়ে শুরু করলেন,
আপনি মরহুম সাইফ রহমার এবং মরহুম আফিয়া রহমানের বড় কন্যা মোছাঃ মেঘলা রহমান মেঘা আপনার সহিত ১০ লাখ এক টাকা দেনমোহর ধার্য করিয়া জনাব শরিফ চৌধুরী এবং পুতুল চৌধুরীর ছোট ছেলে মোঃ কাব্য চৌধুরীর সাথে বিবাহ ধার্য করা হইলো রাজি থাকলে বলুন কবুল,
আমি নিশ্চুপ এভাবে বিয়ে হয় তা আমার জানা ছিলো না। আমার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে নিজের বোনের জন্য হলেও এই পিশাচ কে আমার বিয়ে করতে হবে,,অপর পাশ থেকে নানি বলে উঠলো,,
ছি ছি শেষমেশ আমার ছোট নাতির মাথা চিবিয়েছে ডাইনি টা। আমি আগে বলেছিলাম কে শুনে কার কথা?
কাজী সাহেব আবার বললো বলুন মা কবুল,
আমি নিঃশব্দে চোখের পানি ফেলে বললাম
কবুল হ্যা।
বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে যে যার মতো বাড়ি চলে গেছে।
শরীফ চৌধুরী দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে নিজের রুমে চলে গেলেন তার কোনো কিছুইতে যায় আসছে না তার মাইনগ্রোর ব্যাথা টা বাড়ছে তিনি এখন দরজা জানলা বন্ধ করে চুপচাপ শুয়ে পড়বেন।
নানী আজেবাজে রাজ্যর কথা বলা শেষ করে তার মেয়ে কে নিয়ে ঘরে চলে গেলেন।
আয়শা খালা আমায় কাব্য ভাইয়ার রুমে আর মিশুকে কবির ভাইয়ার রুমে রেখে গেলেন। যদিও তিনি আমাদের দুইজনের একজনকে পছন্দ করছেন না তবুও পরিস্থিতি সামল দেওয়ার জন্য এসব করছেন।
!
!
!
এখন রাত ১ টা বাজে এখনো কাব্য ভাইয়া নিজের রুমে আসেনি। কিসের জন্য এতো লেট করছে কেনো করছে তা ভাবতে চাই না আমি। আমি শুধু ভাবছি মিশু এইসব করার আগে আমায় একটা বার বললো না? ও কিভাবে পারলো সবাইকে এতো কষ্ট দিতে কেউ তো ওকে এ বাড়ির বউ হিসাবে মেনে নিবে না। আমি মা-বাবা কে কথা দিয়েছি ওকে দেখে রাখবো নাহ আমায় কিছুই করতে হবে মিশুর জন্য করতে হবে। ওকে এ বাড়ির যোগ্য বউ হিসাবে গড়ে তুলতে হবে।
দরজায় শব্দ হওয়ায় আমি দরজার দিকে তাকালাম, দেখলাম কাব্য ভাইয়া ভিতরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলেন। তিনি সোজা বিছানায় আমার পাশে এসে বসলেন। তিনি আমার পাশে বসতে রাগ কন্ট্রোল হলো না জীবনের প্রথম আমার রাগ দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে।
আমি বিছানা থেকে উঠে দারালাম। বালিশ নিয়ে সোজা মেঝে তে গেলাম কাব্য ভাইয়া আমার হাত ধরে নিজের মধ্য মিশিয়ে নিলো।
আমি তাকে সবশক্তি দিয়ে ধাক্কা দিলাম তিনি হয়তো তাল সামলাতে না পেরে ফ্লোরে পড়ে গেলেন।
আমি চিৎকার করে বললাম কি চাই আপনার? আমার এই দেহে টা? এর জন্য এতো কিছুই করেছেন আপনি ছি এতো যখন আপনার মাথায় নারীদেহের নেশা চেপে ধরেছিলো কষ্ট করে পতিতালয়ে যেতে পারলেন না। আপনি তো আমায় ভোগ করতে চান তাই না ভোগ করুন করে আমায় ছেড়ে দিন প্লিজ আমায় মুক্তি দিন।
কাব্যর চোখ ছলছল করছে। তবু কাব্য হাসি মুখে বললো মেঘ তুমি আমায় দেখে ভয় পাচ্ছো না?
না এই মেঘা আর ভয় পাবে না? বুঝলেন আপনি? এখন থেকে আপনার নোংরা কাজ গুলো কিভাবে বাজি মাত দিতে হয় সেটা এই মেঘা আপনায় দেখাবে।
তাই মেঘ? তাচ্ছিল্য হাসি হেসে বললো
হ্যা আসলে কি জানেন আমি চুপ ছিলাম এর মানে আমি দূর্বল নই আমি চুপ ছিলাম যাতে সামনের মানুষ টা বুঝে আমরা শান্তি চাই। হিংসা এর বদলে হিংসা নয় অহিংসা ও হয় আমি সেই পথে ছিলাম কিন্তু আর পারছি না।
হাহাহাহাহা মেঘ বলতো তুমি কোন বই পরেছো আমিও সেই বই কিনে পড়বো।
মেঘা অগ্নি দৃষ্টি নিয়ে তাকালো কাব্যর দিকে আর কাব্য ইনোসেন্ট চেহারা নিয়ে দারিয়ে আছে।
চলবে_________
[প্রিয় পাঠকগণ আমি নিয়মিত গল্প পোস্ট করি কখনো রাতে বা কখনো দিন, টিক সময় আসলে দিতে পারছি না তাই যেকোনোসময় করতে হয় তবু বলেন নিয়মিত গল্প দেন না এটা সম্পূর্ণ ভুল আমি রোজ গল্প টা দেই। তাই দয়া করে এমন মন্তব্য করবেন না।]