তাজ ইলোর প্রণয়ালাপন পর্ব:১৬

0
364

#তাজ-ইলোর প্রণয়ালাপন
লেখনীতে—ইলোরা জাহান ঊর্মি
পর্ব:১৬

সকাল সকাল বাবা চলে যাচ্ছে শুনেই আমি তার পেছন পেছন ঘ্যানঘ্যান করা শুরু করলাম। হঠাৎ করে বাবার একটা জরুরী কাজ পড়ে গেছে, তাই এখনই চলে যেতে হচ্ছে। কিন্তু বাবা বলল আমাকে তাজ ভাইয়ের সাথে যেতে হবে। আমার সব গুছিয়ে নিতে নিতে না-কি তার অনেক দেরি হয়ে যাবে। অনেকক্ষণ বাবার সাথে ঘ্যানঘ্যান করার পরও যখন বাবা রাজি হলো না তখন বাধ্য হয়ে আমি থেকেই গেলাম। কী আর করা? তাজ ভাইয়ের সাথে আগামীকালই যেতে হবে। যার জন্য বাবার সাথে যেতে চাইলাম তার সাথেই আবার ফিরতে হবে! পরে ভাবলাম আসার সময় আমি আর তাজ ভাই একাই এসেছি। কিন্তু যাওয়ার সময় তো শ্রেয়ান ভাইয়াও যাবে। এটা‌ ভেবে কিছুটা চিন্তামুক্ত হলাম। বাবাকে বিদায় জানিয়ে আমি বাড়ির ভেতরে চলে গেলাম। তাজ ভাই আর শ্রেয়ান ভাইয়া আমার পেছনেই কথা বলতে বলতে আসছেন। সামনে যে অলি কলার খোসা ফেলে রেখেছে তা আর চোখে পড়ল না। হঠাৎ বেখেয়াল হাঁটতে গিয়ে সেই খোসার ওপর পা পিছলে আমি চিৎপটাং। কানফাটানো এক চিৎকার দিয়ে আমি পা চেপে ধরে মেঝেতে বসে পড়লাম। তাজ ভাই আর শ্রেয়ান ভাইয়া একদৌড়ে আমার কাছে চলে এলেন। কিন্তু তাজ ভাইয়ের আগে শ্রেয়ান ভাইয়াই আমাকে ধরে দাঁড় করালেন। পায়ে এত বেশি ব্যথা পেয়েছি যে এখন ভর দিয়ে দাঁড়াতেও পারছি না। বাধ্য হয়ে আমি দুহাতে শ্রেয়ান ভাইয়ার হাত চেপে ধরে রাখলাম। আমার চিৎকার শুনে ইতোমধ্যে বাড়ির সবাই জড়ো হয়ে গেছে। শ্রেয়ান ভাইয়া আমাকে শক্ত করে ধরে নিয়ে সোফায় বসিয়ে দিলেন। ব্যথায় আমার চোখ দিয়ে পানি ঝরতে শুরু করেছে। মেজো কাকি দৌড়ে গিয়ে ফ্রিজ থেকে বরফ নিয়ে এলেন। শ্রেয়ান ভাইয়া আমার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে আমার পা-টা উঁচু করে ধরলেন। আমি কিছুটা ইতস্তত করে পা সরিয়ে নিতে চাইতেই শ্রেয়ান ভাইয়া ভ্রুকুটি করে বললেন,“ম্যাডাম, এখন অন্তত পায়ের ব্যথা কমাতে দাও। আপাতত নড়াচড়া বন্ধ রাখো।

আমি চুপ হয়ে গেলাম। শ্রেয়ান ভাইয়া কাকির হাত থেকে বরফের বাটিটা নিয়ে আমার পায়ে বরফ ঘষে দিলেন। এই মুহূর্তে ‘না’ বললেও যে শুনবেন না তা বুঝতে পেরে চুপ থাকাই সমীচিন মনে করলাম। এমনকি কাকি বরফ লাগিয়ে দিতে চাইলে তাকেও মানা করে দিলেন শ্রেয়ান ভাইয়া। কিন্তু আশেপাশে চোখ বুলিয়ে দেখলাম বাড়ির সবাই মুখ টিপে হাসছে। ব্যাপারটা দেখে আমি আহাম্মক বনে গেলাম। আমি ব্যথায় কাতরাচ্ছি আর সবাই কি না হাসছে! তাজ ভাইয়ের দিকে তাকাতেই দেখলাম সে গম্ভীর মুখে শ্রেয়ান ভাইয়ের বরফ লাগানো দেখছে। আফরা আপু একটা অয়েন্টমেন্ট এনে শ্রেয়ান ভাইয়ার দিকে এগিয়ে দিলো। শ্রেয়ান ভাইয়া আলতো হাতে আমার পায়ে অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে দিলেন। মেজো কাকি অলিকে বকাবকি শুরু করে দিলেন। সে কেন কলা খেয়ে যেখানে সেখানে খোসা ফেলে, এটাই তার দোষ। বকা শুনে অলির মুখটা চুপসে গেল। সে অপরাধীর মতো মাথা নিচু করে জড়োসড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। আমি মেজো কাকিকে বললাম,“কাকি, ও ছোটো মানুষ, এতকিছু ওর মাথায় থাকে? শুধু শুধু ওকে বকছো। থামো, নইলে মেয়েটা ভয় পেয়ে যাবে।”

মেজো কাকি থেমে গেলেন। শ্রেয়ান ভাইয়া আমার সামনে থেকে উঠে পাশে বসে বললেন,“ইলোমিলো, তোমার ভাগ্য ভালো পা-টা শুধু ফুলে লাল হয়ে গেছে। ভেঙে গেলে কী অবস্থা হত ভাবতে পারছো? দেখেশুনে হাঁটাচলা করতে পারো না একটু?”

আমি মন খারাপ করে বললাম,“খোসাটা একদমই চোখে পড়েনি ভাইয়া।”

মেজো কাকি বললেন,“রুমে গিয়ে একটু বিশ্রাম কর। কয়েকবার মলম লাগালেই ব্যথাটা কমে যাবে। চিন্তা করিস না।”

শ্রেয়ান ভাইয়া আমার হাত ধরে বললেন,“আন্টি ঠিক কথা বলেছে। চলো আমি দিয়ে আসি।”

আমি নিজে থেকে পায়ে ভর দিয়ে উঠতে পারব না তাই শ্রেয়ান ভাইয়া আমার হাতটা শক্ত করে ধরে সোফা থেকে উঠালেন। তারপর আমাকে ধরে ধরে রুমের দিকে নিয়ে গেলেন। আমি আড়চোখে একবার তাজ ভাইয়ের দিকে তাকালাম। উনি এখনও গম্ভীর শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। ওনার মুখোভাব দেখে মনোভাব বুঝতে পারলাম না। শ্রেয়ান ভাইয়া আমাকে রুমে এনে বিছানায় বসিয়ে দিলেন। তার পেছন পেছন ছোটো কাকি আর আফরা আপুও এসেছে। ছোটো কাকি আমার পা দুটো বিছানায় তুলে দিলেন। শ্রেয়ান ভাইয়া বললেন,“আরামসে রেস্ট করো। কিছু দরকার হলে কাউকে ডেকে বলবে। পা-টা বেশি নড়াচড়া কোরো না, ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে অলরেডি।”

আমি ঘাড় কাত করে সম্মতি জানালাম। শ্রেয়ান ভাইয়া আর ছোটো কাকি আমাকে সাবধানে থাকতে বলে চলে গেলেন। তারা চলে যাওয়ার পর আফরা আপু বিছানায় উঠে আমার পাশে বসে পড়ল। তারপর আর কী? শুরু হয়ে গেল তার তাজ ভাইয়ার গান। আমি অসহায়ের মতো মুখ করে শুধু শুনে গেলাম। দুপুরে গোসলের সময় ভাগ্যিস আফরা আপু হেল্প করল। নইলে আজ পায়ের জ্বালায় গোসলও করা হত না। দুপুরের খাবারটা মেজো কাকি আমার রুমে দিয়ে গেল। সবাই মিলে আমার বেশ ভালোই যত্ন করতে ব্যস্ত। কিছুক্ষণ পর পর একজন একজন করে এসে আমার খবর নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমি তাজ ভাইয়ের দেখা পেলাম না। খবর নেয়া তো দূর, শয়তানটা একবার উঁকি দিয়েও দেখল না! সন্ধ্যা আটটার দিকে আমি বালিশে হেলান দিয়ে বসে ফোন স্ক্রলিং করছিলাম। হঠাৎ করে তাজ ভাই আমার রুমে এলেন। আমি ওনাকে একনজর দেখে আবার ফোনের দিকে মনোযোগ দিলাম। উনি এসে আমার পাশে বসলেন। না তাকিয়েও বেশ বুঝতে পারলাম উনি আমার পায়ের দিকে তাকিয়ে আছেন। কিছু সময় পর ওনার দৃষ্টি এসে আমার মুখে আটকাল। তবু আমি চোখ তুলে তাকালাম না। উনি যেহেতু সকাল থেকে একবারও আমার খবর নেয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি, আমি কেন ওনার সাথে যেচে কথা বলতে যাব? এক মিনিট, দুই মিনিট, তিন মিনিট। তারপর হুট করেই উনি আমার দুই বাহু শক্ত করে চেপে ধরলেন। আকস্মিক ঘটনায় আমি এতটাই চমকে উঠলাম যে ফোনটা আমার হাত ফসকে পড়ে গেল। ওনার মুখের দিকে তাকিয়ে আমার সাহসটুকুও ফুস করে উড়ে গেল। কারণ রাক্ষসটার চোখে-মুখে রাগ স্পষ্ট। উনি দাঁতে দাঁত চেপে বললেন,“পরপুরুষের ছোঁয়া পাওয়ার খুব শখ তাই না? শ্রেয়ান তোকে কেন ছোঁবে? বাড়িতে আরও মানুষ ছিল না? ধরে উঠিয়ে সোফায় বসানো, আইস লাগানো, অয়েন্টমেন্ট লাগানো, ধরে ধরে রুমে নিয়ে আসা। সব ওকেই কেন করতে হবে? ছেলেদের ছোঁয়া পাওয়ার এত শখ জাগলে আমাকে বলতি। শখ মিটিয়ে দিতাম।”

আমার চোখে পানি এসে গেল। অবাক দৃষ্টিতে ফ্যালফ্যাল করে ওনার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম। এসব কী বলছেন উনি? শ্রেয়ান ভাইয়াকে কি আমি বলেছিলাম ছুঁতে? তাছাড়া উনি তো আমার ভালোর জন্যই ছুঁয়েছিলেন। কিন্তু তাজ ভাই এই স্বাভাবিক ব্যাপারটা কেন এমন বাজেভাবে নিচ্ছেন? উনি আমার বাহু ধরে ঝাঁকুনী দিয়ে আবার বললেন,“মুখ দিয়ে কথা বেরোচ্ছে না এখন? আজকের পর আর কোনোদিনও যেন এমন কিছু না দেখতে হয়। সাবধানে না চললে পা ভেঙে ঘরে বসিয়ে রাখব।”

ওনার কথার উত্তর দিতে পারলাম না। বাহুতে ব্যথা পেয়ে আমি মুখ কুঁচকে কাঁদো কাঁদো স্বরে বললাম,“আমার হাতে লাগছে।”

বলার সঙ্গে সঙ্গে উনি আমার বাহু ছেড়ে দিলেন। আমি ভেজা চোখ জোড়া নামিয়ে নিয়ে এক হাত দিয়ে অপর হাতের বাহু ঘষতে লাগলাম। উনি মিনিট খানেক আমার মুখের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে যেভাবে এসেছিলেন আবার সেভাবেই চলে গেলেন। আমি শুধু বিস্ময় নিয়ে ওনার চলে যাওয়া দেখলাম। এইটুকু সময়ের মধ্যে আমার চোখে পানি ঝড়িয়ে চলে গেল লোকটা। কী হলো না হলো সবটা আমার মাথার ওপর দিয়ে চলে গেল। ওনার এমন আচরণ এই প্রথম দেখলাম। সবসময় উনি আমাকে বকেন, ঝগড়া করেন, আবার যত্নও নেন। কিন্তু এতটা রাগ কখনও দেখাননি। আর ওই কথাগুলো! এমন কথা উনি কেন বললেন আমাকে? এক মিনিট। উনি কি কোনোভাবে হিংসা করছেন? প্রাণপ্রিয় বন্ধুর সাথে হিংসা করছেন শুধু আমাকে ছুঁয়েছে বলে! হুম, রহস্য আছে। পা ভালো হয়ে গেলেই রহস্য উদঘাটন করতে নেমে পড়তে হবে। কিন্তু এই মুহূর্তে ওনার কথাগুলো মনে করেই আমার খুব খারাপ লাগছে। এমন একটা কথা উনি বলেছেন তা আমার বিশ্বাস করতেই ইচ্ছে করছে না। সরাসরি আমার চরিত্র নিয়ে কথা তুললেন! ছিঃ! ওনার সাথে আমি আর কোনোদিন কথাই বলব না। চোখ মুছে মুখ ভার করে বসে রইলাম। জেমি পাশ থেকে আমার কোলে উঠে মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষণ এভাবে তাকিয়ে থাকার পর আমার হাসি পেল। সঙ্গে সঙ্গে ও লাফিয়ে উঠল। মনে হলো ও এতক্ষণ আমার মন ভালো করার চেষ্টা করে সফল হয়েছে। আর তাই আনন্দ পাচ্ছে। এজন্যই ওকে আমি এত ভালোবাসি। তারপর আফরা আপুকে ডেকে তার সাথে রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত গল্প করলাম। রাতের খাবারটা আফরা আপু নিজেরটাসহ আমারটা রুমে নিয়ে এল। দুজন একসাথে ডিনার করলাম। খাবার শেষ করে বাবাকে ফোন করলাম। ঢাকায় পৌঁছে বাবা একবার ফোন করেছিল। কিন্তু আমি তখন আমার পায়ের কথাটা বলিনি। বললেই সে দুশ্চিন্তা করবে। এবারও বাবাকে কথাটা বললাম না। এমনিতেই আগামীকাল ঢাকায় চলে যাব। এখন এই কথাটা না বলাই ভালো। ছোটো কাকি ঘুমন্ত অলিকে কোলে করে নিয়ে রুমে ঢুকল। অলিকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে বলল,“আফরা ঘুমাতে যা। ইলোর রাত জাগার দরকার নেই।”

আফরা আপু ছোটো কাকির কথায় সম্মতি জানিয়ে চলে গেল। ছোটো কাকির হাতে অয়েন্টমেন্ট দেখলাম। কাকি সেটা আমার পায়ে যত্ন সহকারে লাগিয়ে দিলেন। তারপর আমাকে শুইয়ে দিয়ে দরজাটা ভেজিয়ে রেখে চলে গেলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমি ঘুমিয়ে পড়লাম। মাঝরাতে হঠাৎ করেই আমার পায়ে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করলাম। আমার ঘুম ছুটে গেল ঠিকই কিন্তু ততক্ষণে আমার ধুমিয়ে জ্বর এসেছে। জ্বরের প্রকোপে মাথাটা ভার ভার লাগছে। একদিকে ব্যথার কারণে পা নাড়াতে পারছি না আরেকদিকে জ্বরের কারণে মাথাটাও তুলতে পারছি না। পাশে অলি বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। আমি জ্বরে আর পা ব্যথায় চোখ বন্ধ করে বারবার ককিয়ে উঠলাম। শরীরটা খুব দুর্বল লাগছে। মনে হচ্ছে আমি জ্ঞান হারাচ্ছি। পরক্ষণেই কপালে কারো হাতের আলতো স্পর্শ পেয়ে আধো আধো চোখ খুলে তাকালাম। আবছা দৃষ্টিতে চোখের সামনে একটা পুরুষের মুখ ভেসে উঠল। সে আমার কপালে, গালে, গলায় হাত ছুঁয়ে দিচ্ছে। কিছুক্ষণ পরেই কপালে ঠান্ডা কিছু একটা অনুভব করলাম। পরক্ষণেই হঠাৎ চোখ দুটো বন্ধ হয়ে এল। তারপর যখন চোখ খুললাম তখন সূর্যের তীব্র আলোক রশ্মি এসে সারা ঘর আলোকিত হয়ে গেছে। আমি চোখ কচলে, আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসতেই পায়ে হালকা ব্যথা অনুভব করলাম। কিন্তু কালকের থেকে কিছুটা কম। পাশে তাকিয়ে অলিকে পেলাম না। হয়তো অনেক আগেই উঠে গেছে। আন্দাজ করলে এখন হয়তো সকাল সাড়ে আটটা কিংবা নয়টা বাজে। অথচ আজ কেউ আমাকে ডাকল না। এমনকি তাজ ভাইও না! পা টেনে কিছুটা ভাঁজ করে হালকা ঝুঁকে পায়ের ব্যথার জায়গাটাতে হাত বুলালাম। ফোলা অনেকটা কমে গেছে। এখন শুধু ব্যথাটুকু কমলেই বাঁচি। সোজা হয়ে বসতেই মাথাটা হালকা চক্কর দিয়ে উঠল। একহাতে মাথা চেপে ধরে চোখ বন্ধ করলাম। পরক্ষণেই আবার ঠিক হয়ে গেল। শরীরটা কেমন যেন লাগছে। মনে হচ্ছে দুর্বল হয়ে পড়েছি। শিয়রের পাশ থেকে ফোনটা নেয়ার জন্য হাত বাড়ালাম। কিন্তু ফোনের সাথে আরেকটা জিনিসও পেলাম। ভাঁজ করা একটা সাদা কাগজ। ফোনের নিচে কাগজ রাখল কে? আমি কিছু একটা ভেবে কাগজটা হাতে নিয়ে ভাঁজ খুলে ফেললাম। পরিচিত হাতের লেখা। এই একই হাতের লেখা এর আগেও দেখেছি মনে হচ্ছে। ভ্রু কুঁচকে মনে মনে পড়তে শুরু করলাম।

“জ্বরের ঘোরে একটা মেয়ে এতটা পাগলামি করতে পারে তা তোমাকে না দেখলে জানতে পারতাম না। আমি তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে দিনের চব্বিশ ঘন্টা পার করতে চাই। কিন্তু কখনও তোমার অজান্তে এমন কিছু করতে চাই না যা শুনলে তুমি কষ্ট পাবে। গতরাতে তোমার পাগলামির কারণে ঘটা ঘটনার জন্য আমি দুঃখিত বনলতা। তোমার জেদের কাছে হার মানতে হয়েছে আমায়। কারণ তোমার মনের কষ্টগুলোর কাছে আমি পরাজিত।”

আমার বুকটা ধক করে উঠল। হৃদস্পন্দন দ্বিগুণ বেড়ে গেল। গলাটা হঠাৎ শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল। তাজ ভাইয়ের চিরকুট। কিন্তু এসব কী লেখা? হ্যাঁ, মনে পড়েছে। কাল মাঝরাতে হঠাৎ প্রচন্ড পায়ে ব্যথা আর জ্বর অনুভব করেছিলাম। তারপর কপালে কিছু একটা অনুভব করেছিলাম। কিন্তু তারপর তো কিছুই মনে নেই আমার। তাহলে এমন চিরকুটের মানে কী? কাল রাতে কী এমন হয়েছিল যে উনি দুঃখ প্রকাশ করলেন? উনি আমার রুমে এলেন কখন? আর আমিই বা কী পাগলামি করেছি? কোন জেদের কাছে উনি হার মেনেছেন? হায় আল্লাহ্! আমার তো কিছুই মনে পড়ছে না। উনি এই চিরকুটের মাধ্যমে আসলে কী বুঝাতে চাইছেন? খারাপ কিছু হয়নি তো?

চলবে………………….?

(আসসালামু আলাইকুম পাঠকগণ। আপনারা অনেকেই জিজ্ঞেস করেছেন, কেন প্রতিদিন গল্প দেই না। ডিসেম্বরে আমার পরীক্ষা। তাই এখন গল্প নিয়ে বসে থাকা সম্ভব না। পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সুযোগ বুঝেই লিখতে হবে। আশা করি সবাই বুঝবেন। হ্যাপি রিডিং।?)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here