তবুও_বর্ষণের_অপেক্ষা ২৮.

0
2191

#তবুও_বর্ষণের_অপেক্ষা
২৮.
#WriterঃMousumi_Akter

“আজ বৃষ্টি উজাড় করে নিলো
আমার লজ্জার সমস্ত উপকরণ
সাক্ষী রইলো প্রিয় বর্ষারাণী
তবুও বৃষ্টি অপবাদ সমস্ত আকাশজুড়ে
আহা!কি লজ্জা
লজ্জা কি শুধুই আমার
ঈশ্বর কি জানেন
আজ বৃষ্টি উজাড় করে নিলো
আমার লজ্জার সমস্ত উপকরণ”

ইস সত্যি কি লজ্জা।উনি আমাকে লজ্জা পেতে দেখে এমন একটি কবিতা আবৃত্তি করলেন।কথা গুলো আমার কিন্তু আবৃত্তি করলেন উনি।এটা কিভাবে সম্ভব আমার মনের কথা আমার মুখে আসে নি কিন্তু উনার মুখে ঠিকই এসেছে।লজ্জায় সত্যি লাল হয়ে গেলাম আমি।

বিভোর ভাই আমাদের ডাকছেন।বিভোর ভাই মারাত্মক একজন হাসি ঠাট্টার মানুষ। বিহান ভাই কে ডেকে বলেন বিহান এত গুলা ব্যাচেলর মানুষের মাঝে তুই একমাত্র প্রাণী যে কিনা মিঙ্গেল।আর এখানে উপস্হিত সকল ভদ্র মহিলা আর পুরুষ রা সবাই সিঙ্গেল।তুই যে বার বার সুযোগ খুজে রোমান্স করার চেষ্টা চালাচ্ছিস সেটা কি রিতীমত অন্যায় না।

বিহান ভাই বিভোর ভাই কে উদ্দেশ্য করে বলেন কে সিঙ্গেল বিভোর।

ক্যানো এই যে তোর হতভাগা ভাই টা তোর কি উচিত না বাড়িতে তোর কাকা কাকি কে বুঝিয়ে শুনিয়ে তাদের বড় ছেলের বিয়েটা করিয়ে দেওয়া।তোর কাকা কাকির তো বয়স হয়েছে তাইনা।তাছাড়া এখনকার যুগে মানুষ বেশীদিন বাঁচে না।মরার আগে তোর তো উচিত তাদের বৌমার মুখ টা দেখিয়ে দেওয়া।বিশ্বাস কর ভাই তুই একবার শুধু বলবি কাকা কাকি বিভোর এর বিয়ের বয়স হয়েছে ওরা কালকের মাঝেই আমার বিয়ে দিবে।

বিহান ভাই বলেন সিরিয়াসলি এটুকু বললেই হবে শুধু।

বিভোর ভাই বলেন না আর একটু কথা যুক্ত করে দিবি সেটা হলো আমার প্রাণপ্রিয় শালী রিয়াকে বিভোর এর সাথে মারাত্মক মানাবে। আর তাছাড়া রিয়া মেয়েটা মারাত্মক ভালো। জাস্ট তুই ভাল বললেই আম্মু আব্বু লাফাবে রিয়াকে তাদের ঘরের বৌ বানানোর জন্য।

বিহান ভাই বলেন এর বিনিময়ে আমি কি পাবো বিভোর।

তুই আবার কি পাবি অলরেডি আমার আদরের বোন তো নিয়েই নিয়েছিস আর কি লাগে।

বিহান ভাই চরম বিরক্তি নিয়ে বলেন তোর কি আমাকে পেশাধার ঘটক মনে হয় বিভোর।আমি এইগুলা ঘটকালি করে বেড়াবো।তাছাড়া নিজেই বেকার অবস্থায় বিয়ে করেছি।আবার তোর মতো বেকারের জন্য বিয়ের প্রস্তাব পাঠাবো রিয়ার বাসায়।এইদিকে নিজেই বাল্যবিবাহ করেছি আবার নিজে দায়িত্ব নিয়ে বাল্যবিবাহ করাবো আরেকটা।আমাকে সারাজীবন জেল খাটাতে চাস।

বিভোর ভাই বলেন বাল্য বিবাহ তাতে কি?রিয়ার পাক্কা বিয়ের বয়স হয়ে গিয়েছে।

বিহান ভাই কপাল কুচকে ফোন স্ক্রল করতে করতে বলেন,, হ্যাঁ তোকে বাল্যবিবাহ করিয়ে দেই। বছরে বছরে ছেলে মেয়ে হোক তোর।বাংলাদেশ এ জনসংখ্যা বৃদ্ধি করে পরিবেশ দূষণ কর।আমি সিওর তোকে আজ বিয়ে দিলে গুনে গুনে দশ মাস দশ দিনের আগেই তোর ছেলে মেয়ে হয়ে যাবে।পরিবেশের এক্কেবারে ত্যানাত্যানা অবস্থা করে ফেলবি।তোর শতাধিক সন্তান জন্ম হবে।এটা দেখে সরকার ডিপ্রেশনে চলে যাবে।তারপর তোকে খুজে বের করবে কে এই বংশধর এর আদি পিতা।তোকে খুজে পাওয়ার পরে চিরুনি তল্লাসী চলবে কে এই বিয়ের ঘটক যার দ্বারা এত বড় অনর্থ ঘটে গিয়েছে।অবশেষে পুলিশ আমাকে খুজে পেয়ে চিড়িয়াখানায় বন্দী করবে।কারণ তারা মনে করবে আমি বাইরে থাকলে এরকম আর দু চার টা বিয়ে দিলে দুনিয়া দুদিনে ঘনবসতিপূর্ণ হয়ে যাবে।মোট কথা আমি এই মারাত্মক রিস্ক নিতে রাজি নই।

বিভোর ভাই দুই হাত জড়ো করে বলেন,, মাফ চাই ভাই বিহান।মারাত্মক আকারের মাফ চাই।অসম্ভব রিকুয়েষ্ট করে মাফ চাইছি।আমি বিয়ে করতাম না।জিন্দেগীতেও না।তোর মতো ঘটক লাগবে না।আজ থেকে আর বিয়ের নাম নিতাম নাহ।বিদায় পৃথিবী। রিয়া ওগো প্রিয়তমা আমাকে ভুলে যাও।আমাকে চিরকুমার ই থাকতে হবে।

আমি হা করে৷ তাকিয়ে আছি। উনার এই ভয়ানক লজিক আমার মাথার মাঝে চরমআকারে ঘুরপাক খাচ্ছে।আমার ব্রেইন প্রায় ড্যামেজ হওয়ার পথে।

কারো মুখে কোনো কথা নেই। সবার মাথার মাঝে বিহান ভাই এর দেওয়া লজিকগুলো ঘুরপাক খাচ্ছে।

আমি হতবাক ভাবে প্রশ্ন করলাম বিহান ভাই আপনি কি যুক্তিবিদ্যার স্টুডেন্ট।মানে আপনি কি সায়েন্স চেঞ্জ করেছেন।নাকি যুক্তিবিদ্যা নিয়ে ডাক্তারি পড়ছেন।

বিহান ভাই একটু নড়েচড়ে বসে বললেন এগুলা জানতে গেলে যুক্তিবিদ্যার স্টুডেন্ট হওয়া লাগে না।তোদের মতো পাগল দের সাথে থাকলে এমনি আইডিয়া চলে আসে।

এইদিকে রিয়া বলে ওঠে বিভোর ভাই দিয়া আপনার বোন হলে আমি আপনার কি হই।

বিহানের লজিক অনুযায়ী দিয়া আমার বোন হলে ওর ক্লাসমেট কাজিন আমার বউ হওয়াটা কাজিনগত অধিকার।তাহলে তুমি আমার বউ হচ্ছো আর আমার আব্বু আম্মুর বৌমা। জৈষ্ট পুত্রর বউ।

বিভোর ভাই এর কথা মানে হাসতে হাসতে দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম।

মেহনুবা আপু রিকুয়েষ্ট করলো বিহান ভাই এর কাছে সে একটা গান শুনবে।বিহান বললো ওয়েট শুনাচ্ছি বলেই জাস্টিন বাইবার এর একটা গান চালিয়ে দিলেন।মেহনুবা আপু বলে ওঠে বিহান ভাই আমরা আপনার কন্ঠে গান শুনতে চাই।বিহান ভাই ভ্রু কুচকে বলেন আমি এসব গান টান জানিনা।আর এখন আমি ঘুমোবো তোমরা পাশের রুমে গিয়ে ঘুমোও। আমার যা হাসি পাচ্ছে বিহান ভাই কাউকে বলতেও পারছে না যে তোমরা চলে যাও।উনার মহা বিরক্তি দেখে হাসিতে পেট ফেটে যাচ্ছে আমার।

সবাই বিহান ভাই কে আচ্ছা আকারে ধরলো তার গান গাইতেই হবে।বিহান ভাই কোন ভাবেই গান গাইবেন না।সবাই আমাকে ধরলো আমি যেনো বিহান ভাই কে বলি গান গাওয়ার জন্য।সবার রিকুয়েষ্ট এ বিহান ভাই কে বললাম এটা আমার ও ইচ্ছা আপনার কন্ঠের গান শুনবো।বিহান ভাই ফোন থেকে চোখ সরিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলে তোর ও ইচ্ছা।আমি মাথা নেড়ে বললাম হ্যাঁ আমার ও ইচ্ছা।
বিহান ভাই কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে গান শুরু করেন,,

“তোমার ইচ্ছে গুলো, ইচ্ছে গুলো
তোমার ইচ্ছে গুলো ইচ্ছে হলে
আমায় দিতে পারো
আমার ভালো লাগা, ভালোবাসা
তোমায় দেবো আরো

তুমি হাতটা শুধু ধরো,
আমি হবো না আর কারো
তোমার স্বপ্ন গুলো আমার চোখে
হচ্ছে জড়সড়

তোমার ইচ্ছে গুলো, ইচ্ছে গুলো
তোমার ইচ্ছে গুলো ইচ্ছে হলে
আমায় দিতে পারো
আমার ভালো লাগা, ভালোবাসা
তোমায় দেবো আরো

তোমার আবেগ মাখা খামখেয়ালী
হাঁটছে আমার পিছু,
আমার আসা যাওয়ার পথের বাঁকে
পাইনি অন্য কিছু

তুমি হাতটা শুধু ধরো,
আমি হবো না আর কারো
তোমার স্বপ্ন গুলো আমার চোখে
হচ্ছে জড়সড়

তোমার ইচ্ছে গুলো, ইচ্ছে গুলো
তোমার ইচ্ছে গুলো ইচ্ছে হলে
আমায় দিতে পারো
আমার ভালো লাগা, ভালোবাসা
তোমায় দেবো আরো

আমার হৃদয় যেন বানভাসি হয়
তোমার স্রোতের টাণে
আমি তোমার কাছে যাবোই যাবো
একলা থাকার দিনে

তুমি হাতটা শুধু ধরো,
আমি হবো না আর কারো
তোমার স্বপ্ন গুলো আমার চোখে
হচ্ছে জড়সড়

তোমার ইচ্ছে গুলো, ইচ্ছে গুলো
তোমার ইচ্ছে গুলো ইচ্ছে হলে
আমায় দিতে পারো
আমার ভালো লাগা, ভালোবাসা
তোমায় দেবো আরো”

গান টা যে উনি সম্পূর্ণ আমাকে উদ্দেশ্য করে গাইলেন সেটা বুঝতে বাকি নেই কারো।গান টা শুনতে শুনতে যেনো আমি উনার ইচ্ছের শহরে প্রবেশ করে ফেলছিলাম।এমন সময় বিহান ভাই এর ফোন নিয়ে মেহনুবা আপু চিৎকার দিয়ে ওঠে।

জানেন বিহান ভাই বাইরে প্রচন্ড ঝড় বৃষ্টি সেই সাথে আমার মনেও আপনার জন্য,,
ফোনে লকের জন্য মেহনুবা আপু পুরাটা পড়তে পারলেন না।বিহান ভাই বলেন ফোন দে মেহু।পারসোনাল জিনিস নিয়ে টানাটানি কেনো?আলিপ বলে বিহান ভাই বিয়ের পরেও মেয়েরা কত সিরিয়াস আপনাকে নিয়ে।বিহান ভাই আলিপ কে বলেন আমি আর আমার বউ কে নিয়ে মানুষ কেনো যে বিয়ের পরেও সিরিয়াস সেটাই বুঝি না।তারা কেনো যে এটা বুঝে না আমরা একে অপরের পরিপূরক।বিহান ভাই যেনো আলিপ কেই কথাটা ছুড়ে দিলেন।এইদিকে রিয়া, বিভোর ভাই, মেহনুবা আপু সবাই বিহান ভাই এর মেসেজ দেখবেই।বিহান ভাই তো কিছুতেই তার ফোনের মেসেজ দেখতে দিবে না।এক পর্যায়ে ফোন টা আমার হাতে চলে এলো।বিহান ভাই এর ফোন নিয়ে ঘাটাঘাটি করার সাহস আমার নেই।আমি নিরিবিলি ফোন টা বিহান ভাই এর হাতে দিয়ে দিলাম।বিহান ভাই আমাকে বলেন ফোন টা খুলেই দেখ।আমি উনার দিকে তাকিয়ে বললাম লক জানিনা।বিহান ভাই বলেন একটু ভেবে দেখ কি হতে পারে।আমি উনার দিকে তাকিয়ে বললাম কি হতে পারে।উনি আমাকে বললেন আই লাভ ইউ দিয়া।আমি মিষ্টি হাসি দিয়ে ফোন টা খুললাম।ইনবক্সে অনেক মেয়ের মেসেজ সেখানে বিহান ভাই এর কোনো উত্তর নেই।আমি ফোনটা আবার বিহান ভাই কে দিয়ে দিলাম কারন উনাকে সন্দেহর মতো কিছুই নেই।

বিহান ভাই এর পাশে গিয়ে তোহা আপু বসলেন আমিও বিহান ভাই এর পাশেই বসে আছি।বিহান ভাই এর ফোনের ওয়ালপেলারে আমার আর উনার ছবি দেওয়া।তোহা আপু বিহান ভাই কে বলে বিহান তোমার ফোন টা একটু দাওতো বেবি।বিহান ভাই ডিরেক্ট বলে দিলেন সরি আমার ফোন পারসোনাল জিনিস এটা কাউকে দেওয়া যাবে না।

দিয়া কে দিলে যে।

দিয়া আমার বউ।ফোনের থেকে অনেক বেশী ইমপরটেন্ট দিয়া আমার কাছে তাই আমি ফোন দিয়া কে দিয়েছি।

আবির ভাইয়া সবাইকে তাড়া দেন বাসায় যাওয়ার জন্য।বৃষ্টি হালকা কমেছে।কারোর ই যাওয়ার তেমন ইচ্ছা নেই।আবির ভাইয়ার জোরজুরিতে সবাই যেতে বাধ্য হলো।ভাইয়া যাওয়ার জন্য বিহান ভাই জোর পূর্বক টাকা গুজে দিলেন।ভাইয়া তো কিছুতেই নিবে না বিহান ভাই এর জোরজারিতে নিতে বাধ্য হলো।ল্যাপটপ নিয়ে না জানি কত গুলা কথা আমাকে শুনিয়ে ছাড়বে বিহান ভাই তার ঠিক নেই।

যাওয়ার সময় তোহা আপু আমাকে বেশ খানিকটা কড়া কড়া কথা শুনিয়ে গেলো।

দিয়া অনেক ভাল আছিস তাইনা।অথচ এই ভাল থাকার কথা আজ আমার ছিলো।বিহানের পুরা জীবনের দখলে আজ তুই।বিহান কত বেশী কেয়ারিং তোর প্রতি কিন্তু এগুলা সব আমার হওয়ার কথা ছিলো বলেই তোহা আপু কেঁদে দিলেন।

তোহা আপুরা চলে যাওয়ার পর থেকে আমার মন টা বড্ড খারাপ হয়ে গেলো।তোহা আপু ভাল নেই।আপু বিহান কে চাই।কিন্তু আমি কিভাবে বিহান কে দিবো।আমি যে বিহান কে বড্ড বেশী ভালবাসি।

বিহান ভাই বুঝতে পারেন আমার মন খারাপ।বিহান ভাই আমার গলা জড়িয়ে ধরে বলেন দিয়া একটা জিনিস ভাবছি।আমি সন্দিহান ভাবে প্রশ্ন করলাম কি ভাবছেন।বিহান ভাই বলেন ভাবছি একটা বেবি নিলে কেমন হয়।আমার প্রচন্ড বেগে কাশি পেয়ে যায়।কাশতে কাশতে দম নিতে পারছি না।মানে কি?উনি কি বলতে চাইছেন।বিহান ভাই বলেন দিয়া বেবি নিলে কেমন হবে বলতো।আমি বললাম আহহহ বেবি।ভাল হবে খুব ভাল হবে নিন টা একটা বেবি।বিহান ভাই আমাকে বলেন সিরিয়াসলি খুব ভাল হবে।তার আগে বল কিভাবে বেবি হবে তোর।আমি বললাম মানে।

মানে তুই এভাবে ঘন ঘন ভাই ডাকলে বেবি হলে সে আমাকে বাবা না মামা ডাকবে।

আমি হেসে দিয়ে বললাম মামা ই তো বলবে।আমার মামাতো ভাই আমার বর হলে আমার বেবির ও মামা হবে।

বিহান ভাই বলেন তাহলে তুই ও মামা ডাক সেটাই ভাল হবে।

আমি হেসে দিয়ে বললাম সে কি কথা।

কথা হলো তুই আমাকে আর ভাই ডেকে ডেকে নিহত করিস না তো।বিহান বলবি জাস্ট বিহান।

আপনি না আমার বড় বিহান বলে ডাকি কিভাবে।

এত বড় মানুষ কে ভালবাসতে পারলি আর বিহান বলতে পারবি না।বাই দ্যা ওয়ে দিয়া আমার মতো একটা হ্যান্ডসাম ছেলেকে কি ভাই ডাকতে ভাল লাগে তোর।ভাল ভাবে তাকিয়ে দেখ আমার দিকে।

বিহান ভাই এর দিকে না তাকিয়ে মনে মনে বললাম আপনাকে দেখেছি অজস্রবার আর অজস্রবার ই আপনার প্রেমে পড়েছি।কিন্তু লজ্জায় বলতে পারিনি।

দিয়া ভাবছি তুই তো নিজেই পুচকি।তোর আরেক টা পুচকি হবে কেমন হবে।

আমি উনার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে বললাম বিহান ভাই বেবি কিভাবে হবে।

বিহান ভাই আমার কথা শুনে যেনো আকাশ থেকে পড়লেন।বেবি কিনে আনতে হয় তোকে যেমন ফুপ্পি কিনে এনেছিলো।

এবার বল তোর মন খারাপ কেনো হয়েছিলো।এতক্ষণে বুঝলাম আমার মন খারাপ ভাল করতেই উনার এত আয়োজন।এসব বেবি টেবি সব ই বাহানা।আসল কাহিনী আমার মন খারাপ ভুলিয়ে দেওয়া।

বাইরে ঝিরি ঝিরি বাতাস সাথে টুপ টাপ বৃষ্টি। বৃষ্টি আবার ও খুব জোরে শুরু হলো।ঝুম বৃষ্টি বাইরের কিছুই শোনা যাচ্ছে না বৃষ্টিতে।হঠাত আমার গায়ে জ্বর চলে এলো।এটা বৃষ্টিতে ভেজার ফলস্বরুপ এমন হয়েছে।ঠান্ডায় শরীর হীম হয়ে আসছে।বিহান ভাই খেয়াল করেন আমি বার বার হাঁচি দিচ্ছি।বিহান ভাই আমাকে কোলে তুলে নিয়ে বেডে সুইয়ে দিয়ে কম্বল গায়ে দিয়ে দেন।কিন্তু আমার কোনো ভাবেই ঠান্ডা যাচ্ছে না।ঠান্ডায় মারাত্মক কাঁপছি।মূহুর্তের মাঝেই প্রচন্ড জ্বর চলে এলো।জ্বরে কোনো কিছুর হুঁশ নেই আমার।বিহান ভাই কে জ্বরের ঘোরে আষ্টে পিষ্টে জড়িয়ে ধরলাম।

আমি লজ্জায় উনার কাছে ঘেষেও ঘুমোই না।কিন্তু জ্বরে খেয়াল নেই আমি কি করছি না করছি।নিজের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে উনাকে জড়িয়ে ধরে ভুল ভাল বকছি আমি।

বিহান ভাই খুব ভয় পেয়ে যান আমাকে এমন করতে দেখে।

বিহান ভাই আমাকে বার বার ডেকে চলেছেন এই দিয়া দিয়া।দিয়া এমন করছিস কেনো?দেখ তুই আমাকে জড়িয়ে ধরে এমন পাগলামো করবি না আমি কিন্তু সহ্য করতে পারছি।

বিহান ভাই আপনি আমাকে এত বকেন কেনো?কেনো এত বকেন।আপনি বুঝেন না আপনি বকলে আমার কষ্ট হয়।

বিহান ভাই কপালে চুমু দিয়ে বলেন আর বকবো না।

সারারাত বিহান ভাই মাথায় জলপট্টি দিয়েছেন আর মিনিটে মিনিটে জ্বর মেপেছেন।রাতে এক বিন্দু ও ঘুমোন নি।

চলবে,,
(স্টোরি নিয়ে আপনাদের ব্যাক্তিগত মতামত প্রকাশ করলে খুশি হবো)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here