জীবন মানে তুমি পর্ব-৪৬

0
3660

#জীবন মানে তুমি
#লেখিকা:H.B.Rini (Irini Ori)
#পর্ব:৪৬

(১৫৬)

মিসেস জামান আজকাল দাঁতের জ্বালা-যন্ত্রনায় ভুগচ্ছেন।গত দু’দিন থেকে কিছু খেতেই পারছেন না, ডাক্তারের কাছে গেলে প্রচুর খরচ পরবে সেই ভয়তে যেতে চাইছেন না।আসলে উনি হাত-ভারী স্বভাবের মানুষ,পরের টাকা মেরে খেতে পছন্দ করেন তবে নিজের বেলায় এক টাকাও নয়।কিন্তু আজ মনে হয় ডাক্তারের কাছে না গেলেই নয়, প্রচন্ড যন্ত্রনার জন্য উনি কথা বলতে পারছেন না সেই সাথে ডানপাশটা পুরো ফুলে উঠেছে।সবচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে উনি মন খুলে মানুষের সমালোচনা করতে পারছেন না।তার উপর ওনার ছেলে আদিব ওনাদের সাথে থাকেনা,মেয়ে শ্বশুড়বাড়ি আর ছয় মাসের আগে আদিবার শ্বাশুড়ি আসতে দিবেনা বলেছে,তাই রাজ্যের কাজ তাকেই করতে হচ্ছে।

মিসেস জামান রান্না ঘরে থালা-বাসনগুলো মেজে উপুর করে রেখে হাত মুছতে মুছতে ফ্রীজের কাছে যান।ফ্রীজ খুলে দু’টো বরফের টুকরা একটা গামছায় পেঁচিয়ে ডানপাশে মুখের উপর চেপে ধরে ঘরে যেয়ে বসেন।ওনার ছোট মেয়ে সাদিয়া টেবিলে বসে অংক করছিলো,মাকে দেখে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলে,
-“তোমাকে না ডাক্তারের কাছে যেতে বললাম।”
-“ডাক্তারের আহ্হ্ কাছে গেলে আহ্হ্ অনেক টাকা লাগবে।উরে বাবা মরে গেলাম,চুপচাপ নিজের কাজ কর ওমাহ্ কী ব্যাথা।”

সাদিয়া কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলে,
-“সারা জীবন তো টাকার পিছু ছুটলে,এত টাকা দিয়ে কী হবে যদি সেটা কাজে ব্যবহার করা না হয়।তুমি আজকেই ডাক্তারের কাছে যাবে।”

মিসেস জামান মেয়ের কথায় আর কিছু বললেন না।নিজের ব্যাথায় হা-হুতাশ করতে লাগলেন।বুঝতে পারলেন আজ উনাকে ডাক্তারের নিকট যেতেই হবে।বাম হাত বাড়িয়ে বালিশের উপর থেকে নোকিয়া 5310 ফোনটা উঠিয়ে মিসেস নিন্দুর নাম্বারে কল দিলেন।পাঁচবার বাজার পর মিসেস নিন্দু ফোন উঠিয়ে কিছু বলার আগেই মিসেস জামান ফ্যাসফ্যাসে গলায় বলে উঠলেন,
-“কই তুই?”
-“থানায় আপা,কী যে একটা ঝামেলায় পরেছি আপা।”
-“কী হয়েছে?তোর ভাইকে কী আবার পুলিশে ধরেছে?”
-“আরে না,সাত্তার তো এক দোকান দিয়েছে এখন,ওসব কোন কালে ছেড়েছে। কিন্তু জারিকা-মিলিস্তাকে পুলিশ ধরেছে।”

মিসেস জামান কিছুটা অবিশ্বাসের সুরে বলে,
-“মজা করতেছিস তুই আমার সাথে?”
-“আমি ক্যান আপনার সাথে মজা করতে যাবো আপা?আজব তো,আমি মরি আমার জ্বালায়।”
-“কীভাবে কী?পুলিশে ধরলো কেন ওদের?”
-“আর বলেন না,মিলি বললো ইয়ারাবীর বর ওদের নামে কেস করছে।দেখছেন আপা এই মেয়েটা কীভাবে আমাদের পিছনে লেগেছে?আপা কিছু করেন,য়ুহারকে বললাম,ও পারবেনা জানালো।দেখা পর্যন্ত করলোনা আমার সাথে,বললো সময় নেই।অথচ দিন-রাত ওই ছেমরির ওখানে পরে আছে।”

মিসেস নিন্দু নাক টেনে টেনে কাঁদতে থাকে।মিসেস জামান কিছুটা আশ্বাসের ভঙ্গিতে বলে,
-“চিন্তা করিসনা,তুই তো জানিস ও কেমন মেয়ে।ও আমাদের কথা ফেললেও নিজের বাপ-মার কথা ফেলবেনা।ইশানিকে বল,মেয়েকে বলতে।”
-“কয়েছিলাম তো আমি।কিন্তু ইয়ারাবী বলে এই বিষয়ে কিছুই করতে পারবেনা।আর রইলো জামাই,সে বলে রাজী নয়।”
-“তোর একটা বুদ্ধি দেয়।”
-“কন আপা,”
-“তুই সমীরকে পাঠা,হতে পারে ওর কথা শুনবে।”
-“সমীরের বলে কিছু যায় আসেনা এসবে।আমি এখন কী করবো আপা?ওই হারামজাদির জন্য মিলিস্তার সংসারও ভাঙ্গতে বসেছে।”
-“আচ্ছা তুই চিন্তা করিস না,এসব তো বাম হাতের মোয়া।কিছু টাকা দে পুলিশকে কাম হয়ে যাবে।”
-“সম্ভব নয় আপা,এই অফিসার টাকায় রাজী নয়।এখন বাসায় যাচ্ছি,দেখি লোক ধরে ফোন করে বের করা যায় নাকী?আপনার গলা এমন লাগছে কেন?”
-“আরে বলিস না,দাঁতে ব্যাথা হয়েছে।ডাক্তারের কাছে যাবো বলে তোকে কল দিলাম।আচ্ছা তুই যা,দেখি ইশানিকে পাওয়া যায় নাকী।রায়ীনাতো স্কুলে,আরে লাট সাহেব দিপ্তি,ওকে তো মেরে ফেললেও আমার সাথে যাবেনা।”
-“অচলা ভাবীকে নিয়ে যান।”
-“দেখি কী করা যায়।তুই চিন্তা করিস না,আমাদের মেয়েকে বাইরে বের করে আনবো।”

মিসেস জামান ফোনটা কেঁটে দিয়ে চিন্তায় পরে গেলেন।কেননা উনি নিন্দুকে বলেছেন, জারিকাদের বের করবেন।কিন্তু আজকাল উনার ইয়ারাবীকে বড্ডো ভয় করে।ভেবেছিলেন ওনার বোন মারা যাওয়ায় ইয়ারাবী আবার তেমন দুর্বল মেয়ে হয়ে পরবে।তবে তা হয়নি বরং নিজেকে আগের থেকে প্রচুর শক্ত করেছে।ছয় বছর আগের ইয়ারাবী আর এখনকার ইয়ারাবী মধ্যে অনেক পার্থক্য।হ্যাঁ,উনি নানা ভাবে ওকে হ্যারাজমেন্ট করার চেষ্টা করেন তবে ইয়ারাবীও ছেড়ে দেয়না।

অনেক চিন্তা-ভাবনার পর উনি মিসেস ইশানিকে কল দিলে সাথে সাথে রিসিভ করে বলে,
-“হ্যাঁ,আপু বল…”
-“মনে হচ্ছে খুব ব্যাস্ত।”
-“ওই আরকী,ইয়ারাবীর অপারেশন তো তাই ফাতেমা আর আমির আসছে।ওদেরই জন্য দুপুরের রান্না করছি।”
-“ওহ্হ্,তা তোর মেয়ে এখন কেমন আছে?”

মিসেস ইশানি কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলেন,
-“ভালোই আছে,”
-“অপারেশনে মোট কত খরচ পরছে?আর টাকা কী তোদেরও দিতে হচ্ছে নাকী?”
-“নারে আপু,জামাইরা সব নিজেরাই করছে।আর এত বড়লোক মানুষ,তুই ভাবলি কী করে যে আমাদের কাছে হাত পাতবে।”
-“বড়লোকদের আবার লোভ বেশি।”
-“সবাইকে নিজের মতো ভাবলে দুনিয়া চলেনা।”
-“মানে?ওই তুই কী আমাকে বলছিস?”
-“না,বল কেন ফোন দিয়েছিস?”
-“বলছি আমার সাথে একটু দাঁতের ডাক্তারের কাছে যাবি।দাঁতটাই খুব জ্বালা করছে।”
-“ঠিক আছে তুই বের হয়ে আমার বাসার সামনে আয়।আমিও কাজ শেষ করে তৈরি হয়ে নিচ্ছি।”
-“বাঁচালি তুই….”

মিসেস জামান ফোনটা কেঁটে দিয়ে তাড়াতাড়ি ঘরের আলনার উপর থেকে কালো রঙের বোরখা আর সবুজ রঙের জর্জেটের ওড়না পরে তৈরি হয়ে নেন।কেননা দ্রুত না বেড় হলে আবার জ্যামে আকটা পরে যাবেন।আর তিনি দাঁতের কষ্টটা আর বেশি ভোগ করতে চাইছেন না।তাকের উপর থেকে হাই পাওয়ারের চশমাটা নামিয়ে পরে শোকেসের একটা লকার খোলেন।তার ভিতর থেকে কালো রঙের ব্যাগটা বের করে দুই হাজার টাকা পার্সে ঢুকিয়ে আবার ব্যাগটা জায়গায় রাখেন।সাদিয়া ওর মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে,
-“দুই হাজারে হয়ে যাবে?”
-“হ্যাঁ,হবে তুই পড়তো…”
-“এত কমে,ব্যাপারটা কী?”

মিসেস জামান একটা ভ্যাটকানো হাসি দিয়ে বলেন,
-“আরে তোর খালার সাথে যাচ্ছি।বাকী টাকা ওর কাছ থেকে নিবো।”
-“মা এমন হাত-ভারী স্বভাবটা বাদ দাও।”
-“চুপ করবি।”

মেয়েকে ধমক দিয়ে ওনি বাসা থেকে বের হয়ে যান।সাদিয়া ওর মায়ের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে গ্রীল টেনে দরজা লাগিয়ে রুমে যেয়ে পড়তে বসে।

(১৫৭)

সকালে একবার টেস্ট করিয়ে আসার পরেই ইয়ারাবী ঘুমিয়েছে।এখন বাজে দুপুর বারোটা।আজকে আবরার এক মিনিটের জন্যও বসতে পারছেনা ওর।সবকিছু ঠিক থাকলেও খুব ছোটাছুটি করছে ডাক্তারদের সাথে।য়ুহার দশটা পর্যন্ত থেকে চেম্বারে গেছে,কেসের জন্য খুব জরুরি।মিসেস ফাতেমা বাসায় গোসল করতে গেছে কেননা উনি রাতে ইয়ারাবীর কাছে ছিলেন।তাছাড়া হাসপাতাল,বিশেষ করে আবরার বেশি কাউকে আসতে নিষেধ করেছে।কেননা এমন করে ইয়ারাবীকে দেখতে আসলে ওর মনে ভয় ঢুকে যাবে।

হঠাৎ করে ইয়ারাবীর ঘুম ভেঙে যায় কারোর কথার আওয়াজে।আস্তে করে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে মিসেস রায়হান,অনু,তারা আর ইমন কথা বলছে।ও ইমনকে দেখে হেসে বলে,
-“ইমু ভাইয়া কখন এসেছো?”

ওর কথার আওয়াজে সবাই ওর দিকে তাকায়।ও উঠে আস্তে করে বেডে হেলান দেয়।ইমন হেসে বলে,
-“ফড়িং,উঠে পরলি কেন?আরেকটু ঘুমাতি…”
-“ভয় করছে…”

মিসেস রায়হান হেসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে,
-“কীসের ভয় মা?দেখবে সব ভালোই ভালোই হয়ে যাবে।”
-“উনি কোথায়?”
-“বাইরে,তোর কিছু লাগলে আমাকে বল।”
-“একটু পানি খাবো…”
-“মাফ করিস মা,তোকে কিছু খেতে দেওয়া যে মানা।”
-“আম্মু একটু পানিও কী পাবোনা?”
-“আবরার আসুক,নার্স ও নেই এখানে।নয়তো শুনে তোকে দিতাম।”
-“ভাইয়া আসলে কখন?আমার জন্য কিছু এনেছো তো বাসায়।”

ইমন হেসে বলে,
-“কাল রাতে ভাইয়ার ফোন পেয়ে চলে আসলাম।আমাকে কেউ কিছু বলেনি।তোর জন্য প্রথম দিনে কয়েকটা শো’পিস আর চকলেট কিনছি।বাসায় আছে,সুস্থ হলে দিবো।”
-“সত্যি আনছো…”
-“হ্যাঁ বাবা,সত্যি এনেছি।”
-“স্টারপু,তুমি সারা রাত এখানে ছিলে।বাসায় যেয়ে ফ্রেস হয়ে নাও।”
-“না,তোর অপারেশনের পরে যাবো।”

-“উহু,ইয়ারাবী একদম ঠিক বলছে।আপু আপনি বাসায় চলে যান।”
আবরার দরজা দিয়ে রুমে প্রবেশ করার সময় কথাটা বলে।তারা বিচলিত কন্ঠে বলে,
-“কিন্তু,আবরার…”
-“আচ্ছা এতো চিন্তার তো কিছু নেই।ওর স্বামী ওর সাথে আছে,তুমি যাও।”

অনু তারা দিকে তাকিয়ে বলে,
-“দিদি একটু দাঁড়ান আমাকেও যেতে হবে।আসলে মাসীকে সাথে নিয়ে বের হতে হবে।উনি এখানের কিছু চেনেন না।”
-“আচ্ছা চলো…”
-“এক মিনিট…”

অনু ব্যাগ থেকে একটা লাল সুতা বের করে ইয়ারাবীর কাছে যায়।ইয়ারাবী ওর দিকে ভ্রঁ কুঁচকে তাকালে,অনুর ওর বাম হাতটার কব্জিতে সুঁতা বাঁধতে বাঁধতে বলে,
-“জানি তোদের ধর্মে এসব নেই,আর না তোরা মানিস।তবে আমার মনের শান্তির জন্য বেঁধে দিচ্ছি,এবার আসার সময় পা পাঠিয়েছিলো।আমাদের মতে এটা বাঁধা থাকলে বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।প্লীজ খুলিস না…”
-“আচ্ছা খুলবোনা।”

তারা আর অনু বেড়িয়ে পরে।তারার আসলে গরমের মধ্যে গোসল না করায় বেশ অস্বস্তি হচ্ছে,তাই ও শেষমেশ রাজি হয়ে যায়।আবরার ইমনের দিকে তাকিয়ে বলে,
-“তো ইমন কেমন আছো?”
-“হেতি সব জানে?”
আবরার হেসে মাথা নাড়িয়ে বলে,
-“আগা-গোড়া সব জেনেছে।”
-“এটম বোম ফাটেনি।”
আবরার আড়চোখে ইয়ারাবীর দিকে তাকিয়ে বলে,
-“বোম ডিফিউজ্ করে দিয়েছি।”

ইয়ারাবী ওদের দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলে,
-“আপনারা কী বলছেন একটু বলবেন?”
-“ওই তেমন কিছু না।”

ইয়ারাবী আর কথা না বলে একটা ঘুমের হামি তুলে।আবরার ওর দিকে তাকিয়ে বলে,
-“ঘুম পেলে ঘুমাও।এখনো অনেক দেরি।”

মিসেস রায়হান ওর চুলে বিলি দিতে দিতে বলে,
-“ভয় পাচ্ছে তাই ঘুমাতে চাইছেনা।”
-“এসবের জন্য ওর বিপি আপ-ডাউন করছে।নিজেকে শান্ত রাখো,ইনসাল্লাহ কোনো সমস্যা হবেনা।”
-“আচ্ছা ওর চুল তো কাঁটা হয়নি।”

আবরার ওর মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে,
-“আপনার পুত্রবধূ সম্পূর্ন নারাজ চুল কাঁটতে।তাই অপরাশনের আগে যেখানে করবে সেটুকু কাঁটবে।এতে যে অনেক সময় ইনফেকশন হয়ে যায় তা বুঝতে চাইনা।”
-“আহ্হ্,বকিস না মেয়েকে।নামাযের সময় হয়েছে তোরা নামায পড়ে আয়।”

ওরা চলে যেতেই ইয়ারাবী ওর শ্বাশুড়ির কোলের উপর মাথা দিয়ে শুয়ে বলে,
-“আম্মু,আমাকে একটু দোয়া করে দিবেন।খুব ভয় করছে,আসলে আগে খালামনি দোয়া করে দিতো।কিন্তু এখন তো উনি নেই।”
-“শোনো পাগলি মেয়ের কথা,দোয়া তো আমি সব সময় করছি।শোন ভয়কে জয় করবি,আবরার তো তোর সাথেই থাকবে।”

আস্তে আস্তে সময় গড়িয়ে যেতে থাকে।বিকাল চারটা সময় ওকে ওটিতে নেওয়ার কথা।এখন সাড়ে তিনটা বাজে।ইয়ারাবী ভয়তে গুটিয়ে আছে, তেমন একটা কথা বলছেনা।আবরার ওর মা,ভাই-ভাবী,জারবা,ফুপু,তারা,মেঘ,য়ুহাররা আছে।আবরার ওকে সুন্দর করে কথা বুঝাচ্ছে আর হাত দিয়ে মাথার চুলে বিলি কেঁটে দিচ্ছে।

ডা.রুপক,ইফাজের সাথে রুমে ঢুকার পর ডা.ইব্রাহীম বলে উঠে,
-“এতো বাচ্চা মেয়ে।”
ইয়ারাবী আড়চোখে তাকিয়ে বলে,
-“আই এম্ এইটটিন…”

ডা.ইব্রাহীম হালকা হেসে বলে,
-“আই নো,একটু মজা করলাম মামনি।আসলে তুমি আবরারের ওয়াইফ তো তাই।যাই হোক তোমার অপারেশন আমি করবো।স্ট্রেস নিবেনা বুঝলে।”

আবরার ডাক্তারের সাথে হাত মিলিয়ে বলে,
-“থ্যাংকস্ স্যার,আপনার ছুটি ক্যান্সেল করে আসার জন্য।”
-“এটাই তো আমাদের দায়িত্ব।আচ্ছা নার্সকে বলে ওকে ওটির জন্য রেডি করে দিতে।একটা স্যালাইন দিতে হবে আর অ্যানাস্থেসিয়া দিতে হবে।”
-“স্যার ওটিতে কিন্তু আমি থাকবো।”
-“তুমি ভেবে বলছো তো…”
-“ইয়েস স্যার…”
-“তো তোমাকেও রেডি হতে হবে।”
-“অপনারা যান,আমি ওর সাথে আসছি।”

ডা.ইব্রাহীম ওর দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলে,
-“মনে হচ্ছে ওর থেকে তোমার বেশি চিন্তা হচ্ছে।”
-“চিন্তা সবারই একটু হয়।তাছাড়া আপনাকে তো সব খুলেই বললাম।”
-“আল্লাহ ভরসা।”

ডা.ইব্রাহীম আর ডা.রুপক চলে যেতেই ইয়ারাবী কেঁদে দেয়।ওর যে কতটা ভয় করছে সেটা কাউকে বলে বোঝাতে পারবেনা।ইফাজ ওর মাথায় চুমু দিয়ে বলে,
-“পাগল হয়ে গেছিস কাঁদছিস কেন?শোন দোয়া পড়,আরে পাগলি ভয় কেন পাচ্ছিস।”
-“যদি আর না ফিরি…”

-“পাগলের মতো কী সব বলছো?কিছু হবেনা তোমার।আমরা থাকবো তো,যারা ওটিতে থাকবে সবাই তোমার পরিচিত মুখ।”
আবরার দু’হাত দিয়ে মুখটা তুলে বলে।তবুও ওর কান্না থামেনা।আসলে এমন সমস্যার সম্মুখীন যারা হয়েছে তারাই প্রকৃত মৃত্যু ভয় আর কষ্ট উপলব্ধি করেছে।ইয়ারাবীর জীবনের প্রতি মায়া ছিলোনা কিন্তু কাল আবরারের কথা শুনে নতুন করে বাঁচতে চায়,ছেড়ে যেতে চাইনা এই সুখের মুহুর্তকে।

ওকে রেডি করে ওটিতে নিয়ে যাওয়া হয়।প্রথমে একটা স্যালাইন দেওয়া হয় যা শেষ হতেই অপারেশ শুরু করা হয়।ওটির বাইরে সবাই আল্লাহর নাম নিচ্ছে।তবে মি.রায়হান ইয়ারাবীর বাবাকে ছুটি দিয়েছে এখানে উপস্থিত থাকার জন্য কিন্তু তারপরও তিনি আসেননি বলে তার প্রচুর খটকা লাগে।সবার খুব হতাশ হয় ওর বাবা-মা এই চরম মুহুর্তে উপস্থিত না থাকার জন্য।

তবে য়ুহারের এটা জেনে ভালো লাগছে যে ইয়ারাবীর এর জন্য একটুও খারাপ লাগেনি।ও যখন ইয়ারাবীর কাছে জানতে চাইলো,
-“সোনা তোর কষ্ট হচ্ছেনা ফুপু-জামাইয়ের জন্য।”
-“সত্যি বলবো একটুও নয়।”
-“মানে?”
-“যদি কেউ তোমার সম্পর্কে চিন্তা করে তবে তোমাকে কখনই ভাবতে হবে না যে তারা কেমন অনুভব করে, তারা তোমাকে প্রতিনিয়ত মনে করিয়ে দেবে সে কথা।কেননা তারা তোমার খুব আপনজন।আর আপনজন তো আমার কাছেই আছে আর সেটা হলো তোমরা।”

সত্যিই য়ুহার একদিকে যেমন অবাক হচ্ছে ওর পরিবর্তন দেখে অন্যদিকে খুশিও হচ্ছে।মিসেস রায়হান নামাযের পাটিতে বসে দোয়া করছেন ছেলের বৌয়ের জন্য।এই কয়মাসে ইয়ারাবীকে নিজের মেয়ের জায়গা দিয়েছেন,কেননা তার ছেলের প্রাণ ভ্রুমরা তো এই মেয়েটাই।

(১৫৮)

সবার মধ্যে এক প্রকার ভয় কাজ করছে।কেননা রক্ত দুই ব্যাগ লাগার কথা ছিলো কিন্তু তার থেকে বেশিই প্রয়োজন হয়েছে।তবে দুইজন ডোনার থাকায় তেমন সমস্যা হয়নি।সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার কিছুটা পরে অপারেশন শেষ হয়।ঘন্টাখানিক পরে ওকে কেবিনে দেওয়া হয়।কাউকে কেবিনে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি শুধুমাত্র ডাক্তার আর নার্স ব্যাতিত।আবরার অবশ্যই সুযোগ পেয়েছে ডাক্তার হওয়ার সুবিধায়।ইয়ারাবীর ডান হাতে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে,সেই হাতটা নিজের মুঠোয় নিয়ে মুখের দিকে চেয়ে বসে আছে।

অ্যানাস্থেসিয়া দেওয়ার আগে ইয়ারাবী বলেছিলো,
-“আবরার আপনি আমার হাত কিন্তু ছাড়বেন না।আর শুনুন বলছি যে….”
-“উল্টো-পাল্টা কিছু বলবেনা যেটার কারনে আমি রাগতে বাধ্য হই।”

ইয়ারাবী হালকা হেসে মৃদু স্বরে বলে,
-“আপনার জীবন আপনার হাতে। অতীতে কী ঘটেছে তা বিবেচনা না করে আপনি এখন সচেতনভাবে এমন একটি জীবন বেঁছে নিতে পারেন যা সুখে ভরপুর।আর জানেন আমি সেটা পেয়েছি।শুধুমাত্র আপনার জন্য,আবরার আমি চাইনা দূরে যেতে।”
-“কিছু হবেনা সামান্য একটু কাঁটাছেড়া।তুমি তো কিছু অনুভব করতে পারবেনা,কেননা তোমাকে অ্যানাস্থেসিয়া দিয়ে দিবে।”

ওটিতে যেন আবরারের হাতের উপর জান ছিলো,পুরোটা সময় মনে মনে শুধু আল্লাহকে ডেকেছে।কেননা এরা রিপোর্টে শুধু এটা দেখেছিলো টিউমারের আকৃতি ধারন করেছে কিন্তু অপারেশনের সময় দেখে টিউমারের হয়ে উঠেছে।ডাক্তার ইব্রাহীম এসে একবার চেক করে দিয়ে যায়,ইফাজ এসে আবরারের কাঁধে হাত রাখতেই আবরার কেঁদে দেয়।ইফাজ অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে বলে,
-“এখন কেন কাঁদছিস?”
-“ব্যাথাটা সহ্য করবে কীভাবে?আমরা তো ডাক্তার,আমাদের জানা আছে অপারেশনের পর কেমন ব্যাথা হয়।”
-“চিন্তা করিস না,আমি জানি তুই সামলে নিতে পারবি।আচ্ছা শোন ভাইয়া আর আব্বুকে একবার দেখিয়ে দিস।ওতো কথা বলতে পারবেনা,একবার ভিডিও কলে দেখাস।”
-“তোর কী আবার?”
-“হ্যাঁ,আজ খুব ব্যাস্ত সময় কাটছে।সিটি হাসপাতালে সার্জারি আছে আমাকে যেতে হবে, কেননা পেসেন্ট আমার পরিচিত।তাই কথা দিয়েছি থাকবো।আর পেসেন্ট একটা বাচ্চা ছেলে…”
-“তুই যা,জ্ঞান ফিরলে আমি জানিয়ে দিবো।”

ইফাজ চলে যায় সিটি হাসপাতালের উদ্দেশ্যে।রাত একটার দিকে ইয়ারাবীর জ্ঞান ফেরে।শরীরটা খুব ভারী লাগছে,মাথাটা ব্যাথায় অবাশ হয়ে আছে,গলাটাও ব্যাথা করছে, চোখ খোলার মতো শক্তিটুকু নেই।ও বুঝতে পারছেনা কী হয়েছে ওর সাথে?অনেক কষ্টে চোখ জোড়া খুলে তাকিয়ে দেখে সবকিছু ঝাপসা লাগছে,এক অদ্ভুত রকমের অনুভুতি হচ্ছে।ধীরে ধীরে ওর সবকিছু মনে পরতে থাকে।তার সাথে মাথায় ভয়ংকর রকমের যন্ত্রনা, ওর কাছে মনে হচ্ছে এই যন্ত্রনার কাছে মৃত্যু যন্ত্রনা কিছুই না।কথা বলার চেষ্টা করছে কিন্তু ব্যাথায় জোরে আওয়াজ করতে পারছেনা,মনে হচ্ছে এই যন্ত্রনার শেষ নেই।ও ব্যাথায় কেঁদে দেয়,আবরার চোখটা লেগে এসেছিলো।নার্স কান্নার শব্দ শুনে তাকিয়ে দেখে ইয়ারাবীর জ্ঞান ফিরেছে।আবরারেরও ঘুমটা ভেঙে যায়,আবরার নার্সকে ইশারা করে ডাক্তারকে ডাকতে বলে।নার্স বাইরে বেড়িয়ে যায়,আবরার তড়িঘরি করে ইয়ারাবীকে ধরে বলে,
-“কী হয়েছে সোনা?”
-“……”
-“বলবে তো কী হচ্ছেনা?মাথায় ব্যাথা করছে খুব?”

ইয়ারাবী ইশারায় কথাটা বলে।আবরার ওকে বোঝানোর চেষ্টা করে এটা নরমাল,কিন্তু ও সেসব না শুনে নিজের ব্যাথায় অস্থির।কিছুক্ষণের মধ্যে ডাক্তার কেবিনে এসে দেখে ও ব্যাথায় ছটফট করছে।ওকে একটা ব্যাথা কমানোর ইনজেকশন দিয়ে শান্ত করে।ইয়ারাবীর বামপাশ অপারেশন করেছে,আবরার ওর মাথায় সাবধানে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।সবাই এসে ওর সাথে দেখা করে যাচ্ছে তবে কথা বলছেনা।সারাদিন না খেয়ে থাকায় ওর প্রচুর পানির পিপাসা পেয়েছে,ও আবরারকে পানি দিতে বললে আবরার ওর ঠোঁটটা পানি দিয়ে বারবার ভিজিয়ে দেয়।কেননা ডাক্তারের মতে ওকে ছয় থেকে সাত ঘন্টা কোনো খাবার দেওয়া যাবেনা এমনকী পানিও নয়।

(১৫৯)

মি.ফুয়াদ তরিঘরি করে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে গুছিয়ে নেয়।মিসেস ইশানি বিছানা ঠিক করতে করতে ওনার দিকে তাকিয়ে বলেন,
-“তোমার না ছুটি দিয়েছে তোমার বস।তবে কোথায় যাচ্ছো?”
-“তোমার মেয়ে যা গন্ডোগোল করেছে সেটার সমাধান করতে…”

মিসেস ইশানি বিছানা ঝাড়ু রেখে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে ওনার দিকে প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলেন,
-“আচ্ছা আমরা যা ভাবছি তা কী আদেও ঠিক?”
-“পুলিশ নিজে এই কথা বলেছে।এই মেয়ে শুধু সংসারেও নয় বাইরেও অশান্তি বাঁধাচ্ছে।”
-“একবার যাবে নাকী শুনতে?”
-“তুমিও ঘুছিয়ে নাও,এখন গেলে মেয়েকে দেখে আসাও হবেনা।”
-“মন তো কাঁদে তবে যা করেছে নিজের পরিবার মানুষের সামনে ছোট হয়ে যাওয়া।”

মি.ফুয়াদ আর কথা বাড়ায় না।ওনার দু’জনে তৈরি হয়ে ইয়ামিলাকে নিয়ে হাসপাতালে যান।কেবিনে ঢুকে দেখে মিসেস রায়হান ইয়ারাবীকে জোর করে স্যুপ খাইয়ে দিচ্ছে,কিন্তু ও খেতে চাইচ্ছে না।এটা দেখে অবচেতন মনেই ওনার অপরাধ বোধ জেগে উঠে।মেয়ের দিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখে একদিনে অনেকটা দুর্বল হয়ে পরেছে।মাথার বামপাশে ব্যান্ডেজ করা।ইফাজ রুমে ডুকতে যেয়ে ওদেরকে দেখে বলে,
-“এসেছেন ভালো কথা তবে কোনো সিনক্রেট করবেন না।”

ওদের কথার আওয়াজে সবাই তাকিয়ে দেখে কিছুটা অবাক হয়।কেননা যাদের কাল উপস্থিত থাকার কথা তারা আজ এসেছে।ইয়ারাবী ইশারায় ওর মনিকে জিজ্ঞেস করে বলে উনারা কেন এসেছে?ওর মনি ওকে চুপ থাকতে বলে।মিসেস রায়হান অনেক কষ্টে ইয়ারাবীকে খাবার খাইয়ে উঠে মিসেস ইশানির সাথে কথা বলছেন।আবরার মেডিসিন খুলে ওকে খাইয়ে দিয়ে বিছানায় শুয়েতে গেলে নিষেধ করে ওকে বসাতে বলে।মি.ফুয়াদ ওর দিকে তাকিয়ে বলে,
-“এখন কেমন আছো ইস্মা?”

ইয়ারাবী ধীরে অনেকটা মৃদু স্বরে বলে,
-“আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।তবে দুঃখীত আমি কেসটা তুলবোনা।”
-“আমি জারিকাদের নিয়ে বলতে আসিনি।”
-“আমি জানি,আপনার বন্ধু মনিরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।তখন ছোট ছিলাম তাই বুঝতাম না কিন্তু এখন নয়।”

মি.ফুয়াদ অনেকটা উত্তেজিত কন্ঠে বলেন,
-“এটা কী ধরনের মজা?ছিঃ আমার মান-সম্মান সব ধুলোয় মিশালে তুমি।তুমি ভাবলে কী করে এমন কাজ মনির করবে?ওর কেনই বা শত্রুতা থাকবে ইস্মিতার সাথে।”
-“আপনি মেয়ে না ভাবলেও কোনো এক সময় ভাবতেন।আর হাজার হলেও আপনি আমার জন্মদাতা পিতা,যাকে ঘৃনা করতে চাইলেও সম্ভাব নয়।আমি নিজের চোখে যা দেখেছি সেটাই করেছি।”
-“তবে আগে কেন বলোনি?এত বছর পরে নাটক করতে এসেছো?”

আবরারের প্রচন্ড রাগ হচ্ছে মি.ফুয়াদের উপর।ও কিছুটা রাগ চেপে ওনার সামনে যেয়ে বলে,
-“যা বলার ও সুস্থ হলে বলবেন,আমি চাইনা আমার স্ত্রীর কোনো ক্ষতি হোক।”
-“আহ্হ্,আবরার মানছি আমার কথা বলতে,বসে থাকতে কষ্ট হচ্ছে।কিন্তু আমি না বলা পর্যন্ত শান্তি পাবোনা।আর আপনি,জানিনা কেন আমাকে সহ্য করতে পারেন না?তবে আমি যা করছি সেটা সম্পূর্ন ঠিক।নিজের চোখে খুন হতে দেখেছি ভুলবো কীভাবে?যার জন্য একটা বছর মানসিত ভারসম্য হারিয়ে ফেলেছিলাম।”

মি.ফুয়াদ অনেকটা নরম কন্ঠে বলে,
-“দেখ ইস্মা,ও আমার কাছের বন্ধু।ও ইস্মিতাকে মারবে কেন?ও এমনটা করতে পারেনা,তোমার কোথাও ভুল হচ্ছে।যখন সবকিছু হারিয়ে শূন্য তখন আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়ে ছিলো।”
-“জানেন আমার মাথার মধ্য অসহ্য যন্ত্রনা হচ্ছে।বসে থাকতে পারছিনা,মেরুদণ্ডে বল পাচ্ছিনা।মেডিসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে,তবুও বসে আপনার সাথে কথা বলছি।”

-“ইয়ারাবী কথা না বাড়িয়ে শুয়ে পরো।আর আব্বু প্লীজ ওকে উত্তেজিত করবেন না।কাল সারা রাত ব্যাথায় ছটফট করেছে।ওকে প্রপার রেস্ট নিতে হবে।আশা করি বুঝতে পারছেন সবটা।”
-“হ্যাঁ,বুঝেছি।আমি আসলে দুঃখীত,বাইরে যাচ্ছি।”
-“একটা কথা কী জানেন?ইয়ারাবী আপনাদের থেকে দূরে সরে যায়নি বরং আপনারা ওকে সরিয়ে রেখেছেন।আব্বু অন্ধবিশ্বাস কিন্তু সত্যিই খুব ভয়ংকর।”
-“মানে?”
-“কিছুনা।”

আবরার হালকা হেসে ঘাড় কাত করে নাড়ায়।মি.ফুয়াদ বেড়িয়ে যায় কেবিন থেকে।ইয়ারাবী বিছানায় শুয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখে ইয়ামিলা মায়াভরা চোখে ইয়ারাবীর দিকে তাকিয়ে আছে।ওর কাছে আসতে চাইছে কিন্তু পারছেনা ভয়ে।ইয়ারাবী হাত দিয়ে ইশারা করে ওকে ভিতরে ডাকে,কেন জানেনা আজ ওকে খুব আদর করতে ইচ্ছা করছে।ইয়ামিলা একবার আবরারের দিকে তাকায় একবার ওর দিকে।আবরার হেসে বলে,
-“বকবোনা তুমি ভিতরে আসতে পারো।”

কথাটা শুনা মাত্রই ইয়ামিলা তীরের বেগে ছুটে এসে ইয়ারাবীকে জড়িয়ে ধরে,এতে করে ইয়ারাবী কিছুটা ব্যাথা পায় তবে চুপ থাকে।হতে পারে বোনের অনুপস্থিতে বুঝতে পারছে বোন কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিলো।আবরার কিছুটা গম্ভীর কন্ঠে বলে,
-“এভাবে কেউ আসে।তোমার আপু না অসুস্থ।”

ইয়ামিলা কাঁদো কাঁদো সুরে বলে,
-“স্যরি ভাইয়া,কানে ধরছি।আসলে আপুকে মিস করছিলাম।ফুপু বললো আপু খুব নাকী রাতে ব্যাথায় কাঁদছিলো।”

ইয়ারাবী হেসে বাম হাত দিয়ে ওর গাল টেনে বলে,
-“এখন ঠিক আছি।তুই কেন কাঁদছিস…”
-“আপু আমি সত্যিই খুব মিস করি তোকে।তুই নেই বুঝতে পারি কী হারিয়েছি।”

#চলবে_____

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here