ছন্দহীন পদ্য
.
পর্ব_৪
.
পদ্য শুয়ে পড়েছিল। কিন্তু ঘুম আসছে না। আজকাল প্রায়ই এমন হয়। নিদ্রা চোখে নামে না। রাতে কত কথা মনে পড়তে থাকে, কতকিছু ভাবে৷ আগে এই জগত-সংসারটাকে খুব একটা জটিল মনে হতো না। এখন মনে হয়৷ পৃথিবী, মানুষ, সমাজ, ধর্ম সবকিছু নিয়ে প্রথম থেকে ভাবতে ইচ্ছা করে। কোথাও যেন কিছু একটা ভুল আছে। সে এটা ধরতে পারছে না৷ কেমন ভাসা ভাসা চিন্তা করে অনিদ্রায় কেটে যায় রাত। মাঝে মাঝে জলের মতো তৃষ্ণা পায় মনে, দু’একটা কথা বলতে ইচ্ছা করে অনিকের সঙ্গে। তার এখন দিন কিভাবে কাটছে- বড়ো জানতে ইচ্ছা করে। একা হলে কি নিয়ে ভাবে- বড়ো জানতে ইচ্ছা করে। নিজের মনেরও দু’একটা কথা বলার আছে। অনিককে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছা করে, আজকাল এমন লাগে কেন। এই সুন্দর সবুজ, প্রাণবন্ত পৃথিবীটাকে এত নিরস লাগে কেন? কিন্তু বলা হবে না। অনিককে প্রশ্রয় দিতে চায় না সে৷ ছেলেটা হয়তো নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছে বেশ। গুছিয়ে নিক। যা সম্ভব নয় কোনোদিন। তা নিয়ে স্বপ্ন যত কম দেখা যায় তাতেই মঙ্গল। মনিসা বেঘোরে ঘুমোচ্ছে। উঠে এসে টেবিলে বসে গেল পদ্য। একটা সময় ডায়েরি লিখতো। এখন সেটা মনিসার জন্যই সিন্দুকে তালা মেরে ফেলে রেখেছে। ওর ভীষণ কৌতূহলী মন। বয়সটাই এমন। দেখলেই পড়তে শুরু করবে। ডায়েরি এখন আর না লিখলেও ফেলে দিতে পারে না সে৷ পুরাতন সবকিছুর প্রতি ওর কেমন যেন অদ্ভুত একটা মায়া লাগে। ভীষণ মায়া। জীবনানন্দের কবিতার বইটি বের করলো। পৃষ্ঠা উলটে যেতে যেতে ‘দুজন’ কবিতায় আঁটকে যায় চোখ। আহা শেষ যেদিন কথা হয় ছেলেটার সঙ্গে। এই কবিতা নিয়েই কথা হয়েছিল। অনিক সন্ধ্যায় শহরের কোনো একটা নদীর পাড়ে গিয়ে কল দেয় তাকে। রিসিভ করতেই পড়তে শুরু করে,
‘আমাকে খোঁজো না তুমি বহুদিন-কতদিন আমিও তোমাকে
খুঁজি নাকো;- এক নক্ষত্রের নিচে তবু-একই আলোপৃথিবীর পারে
আমরা দুজনে আছি; পৃথিবীর পুরনো পথের রেখা হয়ে যায় ক্ষয়,
প্রেম ধীরে মুছে যায়, নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়…।
পদ্য থামিয়ে দেয় তাকে। নীরস গলায় বলে, ‘আমার কবিতা শোনার আগ্রহ নাই অনিক। কল দিয়েছো কেন? তোমাকে বলেছি না, আমাদের আর কোনো সম্পর্ক নেই? কেন বুঝতে চাচ্ছ না? আমি তোমার বড়ো বোনের মতো।’
– ‘আমাদের কোনো রক্তের সম্পর্ক নেই পদ্য আপু।’
– ‘তুমি আমাকে আপু ডাকো না? সবাই জানে। বুঝতে পারছো ব্যাপারটা?’
– ‘আপু ডাকলে কি সমস্যা? বয়সে বড়ো একজনকে আপু ডাকতে হয় তাই ডেকেছি। দরকার হলে ডাকবো না।’
– ‘তোমার মতো মুক্তমন নিয়ে সবাই ঘুরে বেড়ায় না৷ আপু ডাকবে আবার প্রেম করবে, এগুলো অসভ্যতামি ছাড়া কিছুই নয়।’
– ‘আচ্ছা এখন থেকে ডাকবো না।’
– ‘এখন না ডাকলেই কি সবকিছু শেষ?’
– ‘একটা সম্মোধন কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না পদ্য। মানুষের মনই আসল। সে ঠিক করবে কাকে আপুর চোখে দেখবে, কাকে আন্টির চোখে, কাকে ভাইয়ের চোখে, কাকে আঙ্কেলের চোখে। ঠিক আছে? মন যদি না চায় সমবয়সী মেয়েটির প্রতিও অনুভূতি আসবে না। জোর করেও আনা যাবে না৷ মন সমাজের মাতব্বরির পরোয়া করে না। আর বয়সে বড়ো হলে সমস্যা কি? কেউ কালো-সাদা হওয়াতে যেমন তার হাত নেই৷ বয়সে বড়ো কিংবা ছোট হওয়াতেও আমাদের হাত নেই। আমি তো পৃথিবীতে ইচ্ছা করে দেরিতে আসিনি, তাই না? তুমিও কাউকে ধাক্কা মে*রে পেছনে ফেলে আগে চলে আসোনি। তাহলে ছোট-বড় হওয়াতে আমাদের দোষ কি? আমরা কেন কেবল এই কারণে ভালোবাসার মানুষকে পাব না?’
– ‘শোনো অনিক, আমি তোমার এসব উচ্চমার্গীয় চিন্তা-ভাবনা বুঝি না। তোমার সঙ্গে তর্কে জেতাও আমার দ্বারা সম্ভব না।
আমি সাধারণ মেয়ে৷ আমি বিপ্লবী না যে সমাজ চেঞ্জ করতে নামবো। আমার এসবের ইচ্ছা নেই। পৃথিবীতে ছেলে বা মেয়ের অভাব পড়েনি যে ছোট-বড় ভেদাভেদ ভুলে প্রেম করতে হবে। আমাকে তুমি এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দাও।’
অনিক হেঁসে উঠে বললো,
– ‘তুমি অবশ্যই আমার কথা বুঝতে পারো। শুধু ভয়। সমস্যাগুলোর মুখোমুখি দাঁড়ানোর সাহস নেই তোমার। আর তুমি বললে না, পৃথিবীতে কি ছেলে মেয়ের অভাব পড়েছে যে বয়সের ভেদাভেদ ভুলে প্রেম করতে হবে। সেটার উত্তরও তুমি জানো। প্রেম হয়ে গেলে নিজের অগোচরেই হয়ে যায়।’
– ‘পাগলামি করো না অনিক। এগুলো বয়ঃসন্ধিতে হয়ই। দেখবে এক সময় ভুলে যাবে তুমি। এখন এসব মাথা থেকে বাদ দিয়ে পড়ালেখায় মনযোগ দাও।’
– ‘তোমার কি ধারণা আমার এখনও বয়ঃসন্ধি চলছে?’
– ‘তা বলছি না৷ এখন তুমি বড়ো হচ্ছ। কিন্তু তোমার বয়ঃসন্ধিতে আমার সঙ্গে চলাফেরা করায় এক ধরনের ঘোর এখনও রয়ে গেছে। নিজেকে সময় দাও, দেখবে কয়েক বছর পর নিজেই হাসবে নিজের এখনকার কর্মকাণ্ডের কথা ভেবে।’
– ‘তা কখনও হবে না পদ্য। এই যে দেখো আমি পদ্য ডাকতে শুরু করেছি। তবে আমার মন চাইলে আপু ডাকবো। মনে মনে যা ইচ্ছা ডাকবো। এটা আমার একটা জেদ৷ যদি বিয়ে হয় তোমার সঙ্গে। মানুষের সামনে আপু ডাকবো। এটাও একটা জেদ। মানুষকে আ*ঘাত করবো। ভ্রান্ত ধারণাকে আ*ঘাত করবো। আমার ফিলিংস আমি বুঝবো। মানুষ না। আপু ডাকলেও তোমাকে আমার নিজের বোন মনে হয় না৷ তো এখানে সমস্যার কি? অবশ্য তোমার সমস্যা হলে ডাকবো না। আর জেনে রেখো, আমার প্রথম প্রেম তুমি। এভাবে তুচ্ছ করে দেখো না ব্যাপারটা। বয়সের সঙ্গে ঘোর কেটে যাওয়ার মতো না এই ভালোবাসা। যাইহোক, একটা নদীর পাড়ে এসেছি। ভিডিয়ো কল দাও দেখাই।’
– ‘আমার দেখার ইচ্ছা নেই অনিক। শোনো, পাগলামি বাদ দাও। তুমি একটু আগে যে জীবনানন্দের কবিতা পড়লে না? সেখানে একটা লাইন আছে, প্রেম ধীরে মুছে যায়, নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়। লাইনটা খেয়াল করেছো?’
অনিক ‘হা-হা’ করে হেঁসে উঠে। উচ্চস্বরে হাসি, অথচ ভীষণ মাদকতা সেই হাসিতে। বয়ঃসন্ধির পালটে যাওয়া গলার কর্কশে কণ্ঠ ততদিনে তার ঠিক হয়ে গেছে। হাসতে হাসতেই বললো, ‘আপু এজন্যই তোমাকে এত ভালোবাসি। ওহ স্যরি, আপু ডেকে ফেলেছি। এজন্যই তোমাকে এত ভালোবাসি পদ্য। তুমি জায়গা মতো পঙক্তিটা ব্যবহার করে দিলে। কি নান্দনিক তোমার চিন্তা-ভাবনা। এই আকালের জনপদে তোমার মতো নারী পাওয়া বড়োই মুশকিল পদ্য।’
– ‘আমার দিকে না এসে ওই পঙক্তিতে ফিরে যাও, জীবনানন্দ কি বলেছেন। প্রেম ধীরে মুছে যায়, নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়। দেখবে তোমার এই ভালো লাগাও একদিন মুছে যাবে।’
– ‘যে প্রেম ধীরে হয়ে যায়
কারও সাধ্য নেই তা ফেরায়।’
– ‘ধীরে হলেও, তা ধীরে মুছেও যায়।’
– ‘না, কিছু প্রেম মুছে না। মুছতে গেলে আরও তীব্র হয়। এই যে তুমি আমাকে চ*ড় মেরেছিলে। অপমান করে বিদায় করে দিয়েছিলে। প্রেম কি আমার মুছে গেল? না-কি আরও তীব্র হলো? আমার তো এই মুহূর্তে ইচ্ছা করছে এই নদীর পাড়ে তোমার সঙ্গে বসে গল্প করতে, ওইযে পেছনে ভ্রাম্যমাণ চা’র দোকান। সামনের টলমলে নদীতে চাঁদের আলো পিছলে পড়েছে। দু’জন বসে চায়ে চুমুক দিতে দিতে দেখতাম। গল্প করতাম। আচ্ছা তোমার হাত ধরে কি বসতে দিতে? ইস তোমার হাতটা ধরে এখানে বসলে কি ভীষণ ভালো লাগতো জানো? আরেকটা ব্যাপার বলি , তুমি গল্প করার সময় ক’গোছা অবাধ্য চুল বারবার কপালে আসে আর তুমি আনমনে কানে গুঁজে দাও না? কি যে নান্দনিক সেই দৃশ্যটা। আমার তখন ভীষণ ইচ্ছা করে নিজের হাতে গুঁজে দিতে…।’
‘থামো বলছি, অ*সভ্য, বে*য়াদব’ বলেই পদ্য সেদিনও কল কে*টে দিয়েছিল। সবকিছু এত মনে পড়ে আজকাল। ছেলেটার এত আবেগ ছিল। কত স্বপ্ন ছিল। কত কোমল মন। যেকোনো নারীর জন্যই তো তা পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। অথচ প্রেমে পড়লো বয়সে বড়ো এক মেয়ের। এখনও বিয়েটাও করেনি। কারও সঙ্গে প্রেম হলো কি-না কে জানে। এখন আর সে পাগলামি করে না। কেন করে না? একবুক অভিমান নিয়ে, না-কি ‘প্রেম ধীরে মুছে গেছে’ অনিকেরও কে জানে। অথচ পদ্যের বুকের ভেতর এখনও কত স্মৃতি উঁকি দেয়। কি হতো যদি পৃথিবীতে অনিক আরও কয়েক বছর আগে আসতো? এত মিষ্টি একটা ছেলেকে সে পাবে না কেবলই পৃথিবীতে আগে আসার কারণে? এটাও কি একটা অপরাধ? এই অনুভূতিগুলো তখন আসতো না পদ্যের৷ এখন আসে। এর পেছনে কারণ হলো বছর দু’য়েক আগে এক ইদে বাড়িতে এসেছিল অনিক৷ সে তখন বারান্দায়। গাড়ি থেকে অনিকের ভাই-ভাবি নেমেছেন। এরপর কালো ব্লেজারের নিচে সাদা গেঞ্জি পরা এক অন্য অনিক নামলো। দাড়ি-গোঁফের সঙ্গে ঘাড় অবধি লম্বা চুল। কত বড়ো হয়েছে। সেদিন ওকে ভীষণ অচেনা লেগেছিল। পুরোদস্তুর একজন সুপুরুষ। এরপর থেকে পদ্যের অনুভূতি কেমন পালটে যেতে থাকে। ছোটভাইয়ের মতো আর লাগে না অনিককে। তবুও সে তাড়াতাড়ি ভেতর ঘরে চলে যায় সেদিন। দেখা দেবে না অনিককে।
রুমের জানালা থেকে একা একা দেখবে কেবল। ছেলেটা বারবার এদিক-ওদিক তাকিয়েছে। হেঁটে বেড়িয়েছে। এর কারণ পদ্য জানে। অনিক তার আগমনের জানান দিতে চেয়েছিল। যেন পদ্য আপু বের হয়ে গিয়ে দেখা করে। নিজ থেকে আসেনি হয়তো লজ্জায়। গালে চ*ড় মে*রে যে ঘর থেকে বের করে দেয়া হয়েছে সেই ঘরে নিজ থেকে আসবে কিভাবে ছেলেটা? পদ্য অবাক হয় সেদিন সন্ধ্যার ঠিক আগের মুহূর্তে। রুমের জানালা লাগাতে গিয়ে দেখে অনিককে। তাদের বাড়ির ছাদের রেলিঙে বাঁ হাত ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷ ডান হাতের আঙুলের ফাঁকে জ্বলন্ত সিগারেট। ধোঁয়া ছাড়ছে আকাশের দিকে তাকিয়ে। কি অদ্ভুত! অনিক সিগারেট খাওয়া ধরেছে৷ এক সময় এসবের গন্ধও নিতে পারতো না এই মানুষটা। পদ্যের মনে পড়ে ছোটবেলার একটা ঘটনা। তখন ভীষণ শীত পড়েছে। মাসটা পৌষ না-কি মাঘ ঠিক মনে নেই৷ চারদিকে তখন ওয়াজ হচ্ছে। তাদের গ্রামের মসজিদেও ওয়াজ-মাহফিল হবে। স্কুলের মাঠে মেলা বসেছে। অনিক তখন ফোরে পড়ে, সে সেভেনে৷ স্কুল থেকে ফেরার পথে কথা হয়। দু’জন সন্ধ্যার ঠিক আগে মেলায় যাওয়ার জন্য বের হবে। আর পদ্য সিগারেট খেয়ে টেস্ট করতে চায়। অনিকের দায়িত্ব হলো ওর বাবার সিগারেটের পকেট থেকে দু’টা সিগারেট চু*রি করে আনবে। পদ্যের গ্যাসলাইট নেবার দায়িত্ব। ওয়াজের মেলায় যাওয়ার পথে লুকিয়ে খাওয়া হবে। অনিক তখন ভীষণ ভীতু। সে কাজটা করতে চায় না। বাবাকে প্রচণ্ড ভয় পায়। তবুও পদ্যের জোরাজুরিতে রাজি হতে হয়। সন্ধ্যার ঠিক আগে এসে ভয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে জানায় সিগারেট নিয়ে এসেছে। পদ্য গ্যাসলাইট নিয়ে বের হয়। দু’জন মাঠে যাওয়ার পথে নির্জন রাস্তায় সিগারেট ধরিয়ে টানতে শুরু করে। অনিক টান দিয়ে আবার মুখ দিয়ে ধোঁয়া ছেড়ে দেয়ায় পদ্য বিরক্ত হয়। নাক দিয়ে বের করার জন্য চেপে ধরে। অনিক চেষ্টা করতে গিয়ে বিষম খায়। পদ্য হাসে। এক সময় অনিকের মাথা ঘুরে উঠে। বসে পড়ে রাস্তায়। সেদিনের পর আর কখনও সে সিগারেট ভয়ে হাতে ধরেনি। বড়ো হবার পরও পদ্য প্রায়ই প্রথম সিগারেট খাওয়ার কথা স্বরণ করিয়ে ক্ষ্যাপাতো অনিককে। আবার খাবে না-কি জিজ্ঞেস করতো। অনিকের কোনো আগ্রহই নেই। তার ভেতরে সিগারেট ভীতি ঢুকে গিয়েছিল। সেই অনিক এখন সিগারেট খায়। কি বিচ্ছিরি একটা ব্যাপার। পদ্য তখন খেলার ছলে খেলেও এখন তো বুঝে এটা কত বাজে অভ্যাস৷ সে জানালা বন্ধ করে অনিককে হোয়াটসঅ্যাপ আনব্লক করে। মেসেজ দিয়ে বলে, ‘অনিক তুমি সিগারেট খাচ্ছ কেন? কবে থেকে ধরেছে এটা?’
বহুদিন পরে মেসেজ দিয়েছে। ওপাশ থেকে কোনো জবাব এলো না। নির্বাক হয়ে গেছে হয়তো ছেলেটা। সবকিছুতে এতদিন ব্লক করে রেখেছিল। হুট করে তখন কল আসে হোয়াটসঅ্যাপে। আনমনে রিসিভ করে ফেলে পদ্য। ওপাশ থেকে গম্ভীর গমগমে গলায় বলে উঠে অনিক,
“আমি এক অস্বীকৃত প্রেমিক, অযাচিত নর
আজও তার বিরহে নিকোটিনে ঠোঁট পুড়াই,
ধোঁয়া করি তার নামেই উৎসর্গ;
তবু আমি আপন হতে পারিনি- রয়ে গেছি পর।”
পদ্যের অস্তিত্ব নড়ে উঠে। এই অনিককে সে চাইলেই দূরে ঠেলে দিতে পারবে না৷ এখন দেখতে ওকে বড়ো লাগলেও, তবুও তো ছোট। আপু বলে ডেকেছে সব সময়। পাড়া-পড়শী সবাই জানে। এই নব-অনুভূতি তো লজ্জার। এটা কখনও প্রকাশ পাবার নয়। নিজেকে প্রশ্রয় না দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পদ্য কল কেটে দিয়ে পুনরায় সেদিন ব্লক করে দেয় নাম্বার।
‘না ঘুমিয়ে কি করো আপু?’
পদ্য টেবিল থেকে পিছু ফিরে তাকায়। মনিসা জেগে উঠেছে। এখন আর স্মৃতি রোমন্থন করতে পারবে না সে।
__চলবে…
লেখা: জবরুল ইসলাম
বি:দ্র: সাইলেন্ট পাঠক-পাঠিকারাও একটু কমেন্ট করুন। রি*চ কম পেইজে।