ছন্দহীন পদ্য
.
পর্ব_২২
.
আঁধার রাত্রি। বাড়ির পেছনের জঙ্গল থেকে কিছু জোনাক পোকা মিটমিট আলো জ্বালিয়ে এদিকে আসছে আর যাচ্ছে। পদ্য রেইনট্রি গাছের গোড়ায় দুইহাতে মুখ ঢেকে বসে আছে। নির্জন, নিস্তব্ধ এই স্থানে শব্দ বলতে নানান পোকা-মাকড়ের ডাক আর পদ্যের ফোঁপা কান্না। সে ঠিক বুঝতে পারছে না এখন কী করবে। তবে নাঈম ভাইয়ের বউয়ের কথাই ঠিক। উনার সঙ্গে কথা বলতেই এখানে এসেছিল। সত্যিই তো অনিক ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করা ঠিক হবে না। একজন নিরপরাধ ব্যক্তিকে তার জীবনের সঙ্গে জড়ানো অন্যায়। অনিককে ভালোবাসে সে, অবশ্যই ভালোবাসে। এখন নতুন এই আগন্তুককে সে বিয়ে করে দেহ ছাড়া আর কী দিতে পারবে? অনিক ছাড়া আর কারও স্পর্শে কি তার মন জেগে উঠবে? কখনও না। তাহলে কেন সে বিয়ে করতে যাচ্ছে? মন থেকে যাকে স্বামী হিসাবে গ্রহণ করতে পারবে না তাকে বিয়ে করা তো অন্যায়। কেন আরেকজনের জীবন নষ্ট করবে সে? এই একটা বিয়েই তো তিনটা জীবনকে এলোমেলো করে দেবে। সে নিজেই বা কি করে অনিককে ছাড়া এই দীর্ঘ জীবন কাটাবে? অনিকেরই বা কী হবে? পদ্য ভাবতে পারে না আর। কান্না আসে। বেপরোয়া কান্না। দুইহাতে মুখ ঢেকে নিজের কান্না সামলে রাখতে এতটাই ব্যস্ত ছিল যে। মতিন সাহেব কখন রেইনট্রি গাছের নিচে এসে দাঁড়িয়েছেন, পদ্য টেরই পায়নি। তিনি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছেন। খানিক পর এগিয়ে এসে মাথায় হাত রেখে বললেন, ‘ঘরে আয় তো মা।’
পদ্য কেঁপে উঠে মাথা তুলে তাকায়। বাবাকে দেখে অপ্রস্তুত হয়ে যায় সে৷ চকিতে চোখ মুছে স্বাভাবিক হয়ে বললো, ‘হ্যাঁ বাবা, আসছি।’
– ‘আয় আমার সাথেই আয়।’
পদ্য পিছু পিছু গেল। এখন কান্নার কারণ কী বলবে সে? বাবা স্পষ্ট শুনেছেন হয়তো। ঘরে এসে মতিন সাহেব বিছানায় বসে বললেন, ‘মনিসা এখান থেকে যা তো মা।’
মনিসা চলে গেল। মনিরা বেগম টেবিলে রাতের খাবার দিচ্ছিলেন। পদ্যের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘কি হয়েছে? এই রাতেরবেলা বাড়ির পেছনে কেন গিয়েছিলি?’
মতিন সাহেব হাত তুলে থামিয়ে দিয়ে পদ্যকে টেনে কাছে বসালেন। তারপর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন, ‘বলতো মা কী হয়েছে। সত্য বলবি। তুই এই রাতের বেলায় রেইনট্রি গাছের গোড়ায় বসে কান্নার কারণ কী?’
পদ্য বাবার কাঁধে মুখ লুকিয়ে নাক টেনে বললো, ‘কিছু না আব্বা।’
– ‘কিছু না বলবি না। কিছু তো আছে। এত লুকোচুরি না করে বল। আব্বাকে বল, শুনি কি হয়েছে।’
– ‘আমার যাইহোক আব্বা, তোমাদের ইজ্জৎ যাবে এমন কিছুই আমি করবো না।’
– ‘কী বলিস মা এগুলো? কি হয়েছে বলতো? বল আব্বাকে।’
পদ্যের কান্নার তোড় আরও বেড়ে গেল। মনিরা বেগম পাশে বসে বললেন, ‘কী হয়েছে বল তো মা। তুই বাড়ির পেছনে বসে কাঁদছিলি না-কি? তোর হাবভাব দেখে তো ধীরে ধীরে বুঝতেছি কিছু একটা আছে৷ তুই আমাদের বলছিস না কেন?’
– ‘মা এগুলো শুনলে তোমরা কষ্ট পাবে। আমি যতই কষ্ট পাই। তোমরা যা চাও তাইই হবে।’
মতিন সাহেব মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন, ‘আমাদের কষ্ট আর ইজ্জতের কথা বলছিস কেন মা? কী হয়েছে বলবি তো।’
মনিরা বেগম তাড়া দিয়ে বললেন, ‘তোর কি এই বিয়েতে মত নাই? কোনো পছন্দের ছেলে আছে না-কি?’
মতিন সাহেব যোগ করে বললেন, ‘হ্যাঁ, যদি থাকে বল। এতদিন থেকে বলছিস না কেন? তোর পছন্দের ছেলে থাকলে অনেক আগেই তো বিয়ে দিয়ে দিতাম। এখানে ইজ্জতের কি আর আমাদের কষ্টের কিরে মা? তোদের সুখ-শান্তি থেকে বড়ো আর কিছু কী আছে? তোদের সুখই তো আমাদের সুখ। আমাদের কষ্ট আর ইজ্জতের কথা ভেবে নিজে কষ্ট পাচ্ছিস কেন? সব বল আব্বাকে, বল।’
পদ্যের কী যে হলো। বুক ফেটে যেন কান্না আসছে৷ বাঁধ ভাঙা কান্না। তবুও ফোঁপাতে ফোপাঁতে বলেই ফেললো, ‘অনিক আমাকে বিয়ে করতে চায় আব্বা। আমিও পছন্দ করি তাকে। তবুও তোমাদের কথা ভেবে ওকে বারবার ফিরিয়ে দিয়েছি, অপমান করেছি। কিন্তু আব্বা আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে, আমার বিয়ে হলে ছেলেটা ম*রে যাবে। তোমরা প্লিজ আমার বিয়েটা ভেঙে দাও।’ পদ্য কথাগুলো বলেই এখান থেকে চলে গেল পাশের রুমে। এত কান্না পাচ্ছে কেন! সে বিছানায় গিয়ে বালিশে মুখ গুঁজে রইল।
মতিন সাহেব যেন বাকরূদ্ধ হয়ে গেছেন। শূন্যদৃষ্টিতে মেঝের দিকে তাকিয়ে আছেন। প্রাথমিক বিস্ময় কাটিয়ে মনিরা বেগম এগিয়ে গেলেন পদ্যের কাছে। গিয়ে মাথায় ধাক্কা দিয়ে বললেন, ‘কী বললি তুই পদ্য? তোর কী মাথা ঠিক আছে? অনিক তোর বয়সে ছোটো। সারাদিন আপু বলে ডাকতো। এই কথা মুখে আনলি কীভাবে? এতদিন যেহেতু চুপ ছিলি, বিয়ে পর্যন্ত চুপই থাকতি।’
পদ্য বালিশ থেকে মুখ তুলে বললো, ‘আম্মা, মুখ যখন খুলেছি তাহলে পরিষ্কার একটা কথা শুনে রাখো। আমি বিয়ে করবো না। বিয়ে ভেঙে দাও।’
– ‘তো কাকে করবি? যে আপু ডাকে তাকে? লোকে বাড়ি এসে থু থু দিয়ে যাবে। এসব কথা মুখেই আনবি না।’
– ‘আমি অনিককেও বিয়ে করবো না আম্মা। বিয়ে ছাড়াই থাকবো। বিয়ে ভেঙে দাও। এটাই আমার ফাইনাল কথা।’
– ‘ও আচ্ছা, মা-বাপ রাইখা এখন তুই ফাইনাল কথা বলবি, তাই না? দুই পয়সা রুজি করে খাওয়াচ্ছিস বলে মুখ ফুইটা গেছে তোর?’
– ‘এখানে রুজির কথা আসছে কেন আম্মা?’
– ‘রুজির জন্যই তো এত তেজ। না হইলে ছোট ভাইয়ের মতো একটা ছেলের সাথে পিরিত কইরা, মা-বাপকেও আবার শুনাইতি না। লজ্জা-শরমের মাথা খেয়েছিস।’
– ‘অকারণ প্যানপ্যান করবে না আম্মা। আমি কোনো তেজ দেখাচ্ছি না। অনিককেও বিয়ে করতে বলিনি। বলেছি বিয়েই করবো না।’
– ‘তো এক কথাই তো হইল। অনিককে ছাড়া বিয়ে করবি না।’
– ‘হ্যাঁ, তুমি যা বুঝো তাই।’
মনিরা বেগম দাঁত কটমট করে তাকিয়ে থেকে রুম থেকে বের হয়ে গিয়ে মতিন সাহেবের সামনে দাঁড়ালেন।
– ‘চুপচাপ বসে আছো কেন এখন? মেয়েরে আরও আহ্লাদ দিয়ে মাথায় তুলে রাখো।’
মতিন সাহেব তবুও চুপচাপ বসে রইলেন।
.
নাঈম অফিসে যাওয়ার পর আফরা পুনরায় অনিকের দরজার সামনে গেল। ভেজানো দরজা খুলে বললো, ‘কল বা মেসেজ কিছুই দেয়নি পদ্য?’
অনিক বালিশ থেকে মাথা তুলে বললো, ‘ভাবি কেন বারবার একই প্রশ্ন করছো? রাতে দুইবার, ভোর সাতটার সময় একবার, এখন আবার। সমস্যা কী? স্বপ্ন দেখো না-কি কিছু?’
আফরা দরজা লাগিয়ে আবার নিজের রুমে চলে এলো। মেয়েটি এখনও কল দেয়নি কেন? এত করে বুঝানোর পরও একটু বুঝলো না? অনিক আজ রাতের খাবারও খায়নি। ভোরে নাশতার জন্য ডাকলে বিরক্ত হচ্ছে৷ তার আলো না-কি অসহ্য লাগে। ছেলেটা কখনও একেবারে স্বাভাবিক, আবার কখনও রেগে যাচ্ছে। এভাবে কতদিন? এদিকে নাঈম আর তার বাবা আছে ইভাকে নিয়ে। ইভা যেন সব সময় সঙ্গে থাকে, কথা বলে। তাদের কথা হলো জো*র করে হলেও ইভার প্রেমে ফেলে ছাড়বে। পদ্যও চায় অনিক স্বাভাবিক হোক। সেটা যদি নতুন করে ইভার প্রেমে পড়ে হয়। তাতেও অসুবিধা নেই৷ কিন্তু এটা তো অনিশ্চিত। অনিক প্রেমে তো পড়ছে না। অন্যদিকে পদ্যের বিয়ে হতে চলেছে। একবার বিয়ে হয়ে গেল কি আর করার থাকবে? আফরার অস্থির লাগছে। পদ্যের উপরও মেজাজ খারাপ হচ্ছে। একটা ছেলে ক্রমশই নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে কেউই বুঝতেই চাইছে না। একজন আছে কথা বললে প্রশ্রয় পেয়ে যাবে, তখন ভুলতে কষ্ট হবে। আর বাপ-ভাই আছে ইভাকে নিয়ে। আফরা ইভার রুমে গেল।
রুমে নেই সে। বারান্দায় গিয়ে দেখে রেলিঙ ধরে বিষণ্ণ মনে দাঁড়িয়ে আছে মেয়েটি।
– ‘কিরে ইভা, ভার্সিটিতে গেলি না যে?’
ফ্যাকাসে মুখে হেঁসে ওর দিকে তাকায় ইভা। তারপর বলে, ‘দুলাভাই গতকাল ভোরে বললেন কয়েকদিন ভার্সিটিতে না গিয়ে অনিককে একটু সময় দিতে।’
– ‘ও আচ্ছা।’
ইভা বুকে হাত বেঁধে রেলিঙে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে বললো, ‘আপু আমি ভাবছি তোমাদের এখান থেকে চলে যাব।’
আফরা কাছে গিয়ে ওর কাঁধে হাত রেখে বললো,
– ‘আরে কেন? কী হয়েছে?’
– ‘তোমাদের কী মনে হয় আমাকে? আমি রাস্তার সস্তা মেয়ে? শুরু থেকেই তোমরা আমাকে অনিক ভাইয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছিলে৷ আমি যেন উনাকে মুগ্ধ করতে পারি৷ বৈরাগী এই পুরুষকে যেন সংসারের দিকে ফেরাতে পারি। মাঝে মাঝে অপমানবোধ করতাম। কিন্তু কেন যেন মানুষটা আমাকে চম্বুকের মতো নিজের দিকে টেনে রেখেছিল। তাই নিজের অজান্তেই তোমাদের কথামতো চলেছি। হ্যাঁ, আমি স্বীকার করে নিচ্ছি, অনিক ভাইকে আমার শেষদিকে অনেক ভালো লাগতে শুরু করেছিল। কিন্তু গতকাল ভোরে নাঈম ভাইয়ের ফোনালাপ থেকে বুঝলাম অনিক ভাই অন্য কাউকে ভালোবাসে। এখন তারা মরিয়া উঠেছে আমি যেন বেশি করে মিশি। তাদের ছেলেকে বিপথ থেকে ফিরিয়ে আনি। তোমরা আমাকে উনার ভালোবাসার মানুষ আছে সেটা বলোনি। নাঈম ভাইও কাল গ্রামে ফোনে কথা বলে রান্নাঘরে এলেন। এসে সেটা গোপন রেখে বললেন, ‘ইভা অনিককে সময় দিয়ো। কি যে করো তুমি৷ অনিককে প্রেমের সাগরে হাবুডুবু খাবাতে পারো না? তোমার মতো সুন্দরী থাকতে তালতো ভাই বিয়ে করতে চায় না। এটা কিছু হইল?’
তুমি বুঝতে পারছো কথাগুলো? এসব কী? তোমাকে কেউ এরকম বললে কেমন লাগতো। যাইহোক, অন্যের বিষয় জানি না। আমার ইগোতে লাগছে এসব। এতদিন নিজেকে যা সস্তা করেছি, এনাফ। আর আমি পারবো না। তুমি জানো? গতকাল সন্ধ্যায় কেন বাইরে নিয়ে গেছি তোমার দেবরকে? সেটাও নাঈম ভাইয়ের জন্য৷ উনি মেসেজ দিয়ে বলেছেন। আমার ধারণা ওরা দু-দিন পর বিরক্ত হয়ে বলবে, ‘ইভা অনিকের রুমের দরজা বন্ধ করে কাপড় খুলে ওর সামনে বসে থাকো গিয়ে। দেখি শা*লার ব্যাটা কীভাবে ঠিক থাকে।’
মানে পুরো বিষয়টা আমার খুবই আত্মসম্মানে লাগছে আপু। আমি নিতে পারছি না৷ শুধু মাত্র অল্প হলেও অনিক ভাইয়ের প্রতি আমার দূর্বলতা ছিল বলে এতদিন মেনে নিয়েছি। ইভেন আমি উনার একটা উপন্যাসের চরিত্রের মতো হতে চাইতাম। কিন্তু এখন নিজেকে গুটিয়ে নিতে চাই। উনি আরেকজনকে ভালোবাসে, এটা জানার পরও আমি কীভাবে এসব করবো? আমারও তো একটা মন আছে৷ আজ তোমার দেবরের যে অবস্থা। সেটা আমারও তো হতে পারে দু’দিন পর..।’ আর বলতে পারলো না ইভা। মুখ লাল হয়ে চোখ ফেটে জল এলো। আফরা এগিয়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে মাথায় বুলিয়ে বললো, ‘স্যরি ইভা, আমি নিজেও এতটা গভীরভাবে ভাবিনি। তোর সাথে সত্যিই অন্যায় হচ্ছে।’
– ‘আপু একটু আগে আব্বাকে কলে বলেছি। আমি বাড়ি চলে যাব। বাড়ি থেকে মাঝে মাঝে ভার্সিটিতে আসব।’
– ‘কী বলিস এসব? এখানে থাক, আমি নাঈমকে বলবো তোকে আর এসবে না জড়াতে।’
– ‘না, আপু। তুমি আর জোরাজুরি করো না। আমাকে যেতে দাও। আর ওদেরকে বলবে বাড়িতে গেছে। মাস খানেক থাকবে। আর কিছু বলার দরকার নেই।’
– ‘সত্যিই চলে যাবি?’
– ‘হ্যাঁ, একটু পরই বের হব।’
আফরা আর কিছু না বলে নিজের রুমে চলে এলো। মাথা ধরছে। সবকিছু কেমন তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। কী করবে না করবে কিছুই বুঝতেই পারছে না। তার এত সমস্যা কী? নিজের বাপ-ভাইই যদি না বুঝে সে একা কী করবে? দীর্ঘ সময় এভাবে শুয়ে থাকার পর আবার উঠে গেল অনিকের দরজার সামনে। খানিকক্ষণ ইতি-উতি করে দরজায় ধাক্কা দিয়ে খুলতেই অনিক বিছানা থেকে মাথা তুলে তাকিয়ে বললো, ‘আবার কি ভাবি?’
– ‘যোগাযোগ করেনি পদ্য?’
– ‘এদিকে আসো তো তুমি।’
আফরা গিয়ে চেয়ারে বসে। অনিকও বিছানায় উঠে বসে বললো, ‘সমস্যাটা কী বলো তো? তোমার কেন মনে হচ্ছে তুমি বলতেই পদ্য আমার সাথে যোগাযোগ করে ফেলবে?’
আফরা অবাক হয়ে বললো, ‘তুমি জানলে কীভাবে আমি বলেছি?’
– ‘সেটা তোমার জানা লাগবে না।’
– ‘আসলে আমি ওকে কল দিয়ে অনেক বোঝালাম। মেসেজেও বললাম তবুও..।’
অনিক অট্টহাসিতে ঘর কাঁপিয়ে তুলে বিদ্রুপ করে বললো, ‘এত বুঝিয়েও কাজ হয়নি, তাই না? কাজ হবে না। এই মেয়ে একটা হৃদয়হীন নারী, পাথর মানবী.. ।’ এটুকু বলে থামে সে। তারপর একটা সিগারেট বের করে ধরিয়ে পুনরায় টান দিয়ে বলে, ‘নিশ্চয় অনেক বুঝিয়েছো। অনেক আবেগ, অনুভূতি আর মনের মাধুরি মিশিয়ে বুঝিয়ে ভেবেছো কাজ হয়ে যাবে। হবে না ভাবি। কাজ হবে না৷ অকারণ অস্থির হইয়ো না। শান্ত থাকো। মনে করো এই মেয়েকে কিছু বলা মানে এই ঘরের দেয়ালকে বলা, দেয়ালকে সারাদিন বললে কোনো জবাব পাবে? পাবে না…।’
‘চুপ করো অনিক, আর তুমি কী সারাদিন এই অন্ধকার রুমে এভাবে শুয়ে থাকবে? চেহারার অবস্থা দেখেছো কি হয়েছে? উঠে ফ্রেশ হয়ে কিছু খাও।’
অনিক মুচকি হেঁসে সিগারেট দেখিয়ে বললো, ‘এই যে খাচ্ছি।’
__চলবে…
লেখা: জবরুল ইসলাম