#চিত্তবৃত্তি
#জান্নাতুল_নাঈমা
#পর্ব_১৮
চৌধুরীর বাড়ির মেজো ছেলে মহিউদ্দিন। ছোটোবেলা থেকেই গা ভাসা স্বভাবের। বদমেজাজি, আর দুরন্ত মনা। লোকে বলে মেজো সন্তানরা একটু আলাদা প্রকৃতির হয়৷ মহিউদ্দিন যেন তারই দৃষ্টান্ত। বড়ো ভাই, ছোটো ভাই যখন ক্যারিয়ার গড়তে ব্যস্ত। সে তখন রাজনীতি নামক ভয়াবহ পথটায় উন্মাদ গ্রস্ত। টেনেটুনে স্নাতকোত্তর পাশ করেই পড়ালেখার পাঠ চুকিয়ে দেয়। পুরোদমে রাজনীতিতে ঢুকে পড়ে। এরপর একদিন মাঝরাতে বাড়িতে পুলিশ আসে। প্রবল আত্মসম্মান সম্পন্ন ব্যক্তি মোতালেব চৌধুরী। পেশায় এডভোকেট। কড়া আইনের লোক। তার বাড়িতে কিনা পুলিশ! তবু মেজো ছেলে মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে এসেছে! পুরো বাড়ি জুড়ে বজ্রপাত ঘটে। চৌধুরী গিন্নি ব্লাড প্রেশার বাড়িয়ে জ্ঞান হারায়। দুই ছেলেকে মায়ের দেখভালের দায়িত্ব দিয়ে মেজো ছেলের সঙ্গে থানায় চলে যায় চৌধুরী সাহেব। ছেলে এবং অভিযুক্ত ছেলের বন্ধুদের থেকে বৃত্তান্ত শুনে বুঝতে পারে এটা বিরোধী দলের ষড়যন্ত্র। ছেলের স্বভাব, কর্মকাণ্ড দেখে প্রথমে সন্দেহ করলেও পরবর্তীতে ভুল ভেঙে যায়। শতহোক মহিউদ্দিন তার রক্ত। এতটা নিচে নামার সাহস ওর রক্তের হবে না। পরিপূর্ণ বিশ্বাস আর ছেলের পক্ষে লড়াই করার শক্তি খুঁজে পায় সে। তিনমাসের মাথায় সফলতাও অর্জন করে। তার ক্যারিয়ারে প্রায় প্রতিটা কেসই সফল। কারণ সে সত্যের পক্ষে লড়াই করে। মিথ্যা কেসের দায়িত্ব সে নেয় না।
সে যাত্রায় বিপদ কেটে যায়। কিন্তু চৌধুরী গিন্নির মন থেকে ভয় কাটে না৷ আর না নিজের স্বভাবে পরিবর্তন আনে মহিউদ্দিন। যে পথ তাকে এত বড়ো বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছিল। সে পথ ছাড়তে পারে না সে। মা কসম দেয়, প্রতিজ্ঞা করায়। সপ্তাহ এবং মাস ব্যবধানে সে কসম, প্রতিজ্ঞা ভুলে যায় সে। কখনো মারপিট করে বাড়ি ফেরে কখনো বা মার খেয়ে রক্তাক্ত হয়ে৷ কিন্তু যেদিন নেশাগ্রস্ত হয়ে মধ্যরাতে বাড়িতে পা দেয়। সেদিনই চৌধুরী সাহেব আর গিন্নির টনক নড়ে। মেজো ছেলের অধঃপতন দেখে শিউরে ওঠে তারা। জীবনে প্রথমবারের মতো ছেলের গায়ে হাত তুলে মোতালেব চৌধুরী। ক্রোধে দিশেহারা হয়ে সিদ্ধান্ত নেয় ত্যাজ্য পুত্র করবে মহিউদ্দিনকে। কিন্তু দু’পা জাপ্টে স্ত্রীর করা অনুরোধে সেই পথ থেকে সরে আসতে বাধ্য হয় সে৷ ছেলেকে হুমকি, ধামকি দেয়। সুযোগ দেয় শেষ বারের মতো। স্ত্রী সহ পরিবারের সকলকে দায়িত্ব দেয় যেভাবেই হোক ছেলেকে সৎপথে ফিরিয়ে আনার৷ নয়তো সে তার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে বাধ্য হবে। বাবার ক্রোধ, দাপটের কাছে বরাবর তুচ্ছ মহিউদ্দিন। মায়ের অসহায়ত্বও তার বিবেকে প্রশ্ন তুলে। তার পেছনে বড়ো ভাই আর মা অক্লান্ত পরিশ্রম করে। এসব জটিলতার ভীড়ে হঠাৎ চৌধুরী গিন্নির মাথায় বুদ্ধি আসে ছেলেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিয়ে করাবে। বিয়ে করে বউ ঘরে আনলে ছেলে আর বাহিরমুখী হয়ে থাকবে না। স্ত্রীর এমন সিদ্ধান্তে মত দেয় মোতালেব চৌধুরী। একমাসের মধ্যে মেজো ছেলেকে বিয়ে করিয়ে বউ ঘরে তুলে। বড়ো ছেলের আগেই মেজো ছেলের বিয়ে নিয়ে লোকের অনেক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। অনেকে আবার ভিতরের খবর টুকিটাকি জানে বলে বিনা প্রশ্নে দাওয়াত খেয়ে, বউ দেখে চলে যায়।
বিয়ের পর বেশ ভালোই দিন কাটছিল। বাবার টাকায় বউ নিয়ে আমোদ-প্রমোদে ব্যস্ত মহিউদ্দিন। এভাবেই দিন গড়িয়ে মাস। মাস গড়িয়ে বছর পেরোয়৷ মোতালেব চৌধুরী ছেলেকে মানুষ করতে পারেনি৷ এই আফসোস ছিল। দিনশেষে ছেলের দ্বারা আর যেন সম্মানহানি না হয়৷ তাই বউ সহ তার দায়িত্ব পালনও করছিল। বড়ো ছেলে ততদিনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। নিজের পছন্দের নারীকে বিয়ে করে ঘরে তুলে৷ এরপরই শুরু হয় পারিবারিক দ্বন্দ্ব, কলহ। দিন দিন যেন মহিউদ্দিনের স্ত্রীর চোখের বিষ হয় বড়ো ছেলের বউ ইরাবতী। এদিকে পরপর দুই পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় মেজো বউ। পরিবারে সদস্য বাড়ে অথচ মহিউদ্দিন ভাবলেশহীন। এই নিয়েও মেজো বউ পারভিনের আক্রোশের শেষ ছিল না। বাড়ির বড়ো ছেলে রোজগার করছে। সংসারে পয়সা ঢালছে। তা নিয়ে মনে হিংসা জন্মায়। সে হিংসা থেকেই স্বামীর সাথে বনিবনা কমতে থাকে। একদিকে বড়ো ভাবিকে সহ্য করতে পারে না। তার স্বামী কর্মঠ বলে। অন্যদিকে নিজর স্বামীও দু’চোখের বিষ হয়ে ওঠে অকর্মণ্য বলে। ছেলেরা বড়ো হয় দাদুভাই আর বড়ো চাচার সাপোর্টে। তবু দিনশেষে পারভিন ইরাবতীকে সহ্য করতে পারে না৷ বাচ্চা ধারণ করতে দেরি হচ্ছে বলেও ইনিয়েবিনিয়ে নানারকম কথা শোনায়। আড়ালে সব সময় প্রার্থনা করে ইরাবতী যেন সন্তান ধারণ করতে না পারে৷ এমতাবস্থায় ইরাবতীর জীবনে সুখ বয়ে আমে চৌধুরী বাড়ির ছোটো বউ তাহমিনা। পেশায় ডক্টর হওয়ার সুবাদে সে ইরাবতীকে চিকিৎসা দেয়। পরম করুণাময়ের দয়ায় তাহমিনা প্রথম অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরপরই ইরাবতী অন্তঃসত্ত্বা হয়। জন্ম হয় ইমনের। এরপর থেকেই পারভিন মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অনুভব করে সে তার সংসারে সুখী নয়। সুখী না হতে পারার যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে সে। মহিউদ্দিন ছাড়া বাড়ির প্রতিটি ব্যক্তিই বুঝতে পারে পারভিনের সমস্যা। এরপর পারভীন যখন তৃতীয় বার অন্তঃসত্ত্বা হয়। তখন মোজাম্মেল চৌধুরী মেজো ভাইকে আলাদা ডেকে অনেক কিছু বোঝায়। সু পরামর্শ দেয়। তার পরামর্শ, পরিবারের সাপোর্ট, সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বাবার বন্ধুর রেফারেন্সে চাকরি পেয়ে পা বাড়ায় ঢাকা শহরে।
মানুষের জীবন বহমান স্রোতের মতো। আর জীবনের গল্পগুলো এক একটা তীর বা কিনারা। মহিউদ্দিনের জীবনের প্রথম গল্প পারভিন স্রোতের তোড়ে এক তীর থেকে কীভাবে ছিটকে যায় অন্য তীর নয়নতারার কাছে? কীভাবেই বা সেখান থেকে ফিরে আসে? এক জীবনে অনেক গল্প তৈরি হয়। সে গল্প গুলো ঢেকে যায় অতীত নামক মরীচিকার আড়ালে। কখনো কখনো সেই অতীত আবার উঁকিও দেয়। গাঢ় চিহ্ন হয়ে ফিরে আসে জীবনে। মহিউদ্দিনের জীবনে সেই চিহ্ন ফিরে এসেছিল খুব তাড়াতাড়িই। যা মিথ্যার বেড়াজালে এতগুলো বছর বন্দি ছিল। আজ তবে সেই বেড়া ডিঙনোর সময় এসেছে!
বাবার কড়া সিদ্ধান্ত শুনে ঘামতে শুরু করল মহিউদ্দিন। মোতালেব চৌধুরী সদ্যই হুমকি দিয়ে গেছে তাকে,
‘ হয় আমার কথা মেনে চলো। নয়তো আজ সবার সম্মুখে স্বীকার করো সেই অতীত। যা আমরা মিথ্যা দিয়ে এতগুলো বছর ঢেকে রেখেছি!
পৃথিবীতে অনেক সন্তান আছে। যারা নিজ জন্মদাতা সম্পর্কে দূরে থাক তার পরিচয় সম্পর্কেও অবগত নয়৷ মহিউদ্দিন সেই দলের নয়। নিজের বাবা সম্পর্কে খুব সুক্ষ্ম ধারণা রয়েছে তার। যেই ধারণা গুলোই ওই মুহুর্তে তার শরীর অসাড় করে দিয়েছিল।
***
নতুন একটি দিনের সূচনা। কারো জীবনে নতুন গল্পের সূচনাও বোধহয়। আজকের সকালের চিত্রটা বেশ অন্যরকম। বাড়ির পরিবেশ একদম শীতল। ডাইনিং রুমে একসঙ্গে নাস্তা করতে বসেছে সবাই। দাদুভাইয়ের ডানপাশে ইমন, বাম পাশে মুসকান। ছোটো ছেলের পরিবারের কেউ উপস্থিত নেই। রাতে নাইট ক্লাবে কাটিয়ে সাতসকালে ওঠতে পারেনি ইভান। তার বাবা, মা দু’জনই কাজের সুবাদে বাড়ির বাইরে। ছোটো বোন ইমা ছুটেছে ফিজিক্স প্রাইভেটে। পারভিনের বড়ো ছেলে ইমরান চাকরির সুবাদে বউ নিয়ে আলাদা থাকে। ছোটো ছেলে আনিস বাড়িতেই। সেও নাস্তা করতে বসেছে সবার সাথে। উপস্থিত আছে তার মেয়ে ইয়াশফা আর স্বামী মহিউদ্দিন। খাওয়ার ফাঁকে দাদুভাই পারভিনকে বললেন, আজ ইমন, মুসকানকে নিয়ে এক জায়গায় বেড়াতে যাবে সে। মহিউদ্দিনও সঙ্গে যাবে। এ কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে ফেলল পারভিন। বুড়ো আহ্লাদ দুইটাকে নিয়ে বেড়াতে যাবে ভালো কথা। তার জামাইকে কেন টানাটানি করছে? জোর পূর্বক হেসে পারভিন বলল,
‘ কত কাজ এসব ফেলে ও ঘুরতে যাবে? ‘
চোখ কটমট করে স্বামীর দিকে তাকাল পারভিন। তাকে আশ্চর্যের চরম পর্যায়ে পৌঁছে দিয়ে মহিউদ্দিন চোখ তুলে তাকাল না অবধি। ক্রোধে গজগজ করতে থাকল পারভিন৷ দাদুভাই বললেন,
‘ এদিকের ভার আমি আজ আনিসের ওপর ছেড়ে গেলাম। ‘
কেশে ওঠল পারভিন৷ ছোটো ছেলে সম্পর্কে বেশ ধারণা আছে তার। এই ছেলেকে ভার! ঢোক গিলল সে। আমতা আমতা করে বলল,
‘ বাবা ও কী করে কী করবে? ‘
‘ সে নিয়ে তুমি চিন্তা করো না। কী দাদুভাই সামলাতে পারবা না? ‘
আনিস লাজুক হাসল। এই প্রথম দাদুভাই তাকে স্নেহ দিয়ে ভরসা করেছে। এবার নিজেকে প্রমাণ করতে হবে। ইমনের মতো প্রিয় নাতি হয়ে ওঠতে হবে৷ ভেবেই মাথা ঝাঁকাল সে। পারভিন ঢোক গিলল আবারো। একবার ছেলে, স্বামী আরেকবার শ্বশুরের পানে তাকাল। জোর পূর্বক হাসল ঈষৎ। নাস্তার পুরো সময়টাই ইমন আর মুসকান মাথা নিচু করে রেখেছিল। ইমন রেখেছিল রাগে, অভিমানে৷ আর মুসকান দ্বিধা, অস্বস্তিতে। নাস্তা শেষে মহিউদ্দিন দ্রুত উপরে গিয়ে তৈরি হয়ে নিল। তৈরি হয়ে নিল দাদুভাই, ইমনও। মুসকান নানারকম দুঃশ্চিন্তায় নিমজ্জিত হয়ে আস্তেধীরে তৈরি হলো। সে জানে না আজ তাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শুধু জানে এই যাওয়াটাই তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেবে। এ বাড়িতে পা রাখবে নতুন এক মুসকান হয়ে। দাদুভাইয়ের ভাষ্য অনুযায়ী ভাবনা গুলো মাথায় এঁটে আছে তার৷
গাড়িতে অপেক্ষা করছে ইমন। পেছনে মহিউদ্দিন আর দাদুভাই বসে আছে। বার বার হাত ঘড়িতে সময় দেখছে ইমন৷ সাধারণত মেয়েদের তৈরি হতে বেশ সময় লাগে৷ কিন্তু মুসকান অন্যান্যদের তুলনায় আলাদা৷ তার সাজ বলতে পরিপাটি পোশাক। আর দীর্ঘ কেশ গুলো গুছিয়ে আঁচড়ে নেয়া। তাহলে এত দেরি হচ্ছে কেন? অধৈর্য হয়ে ওঠল ইমন। কিয়ৎক্ষণ কেটে গেল। শেষবার সদর দরজায় অধৈর্য দৃষ্টিতে তাকাল সে। অমনি দেখা মিলল গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে আসা কাঙ্ক্ষিত তরুণিমার। ধাতস্থ হয়ে মুখ জুড়ে কঠিন গম্ভীরতা ফুটিয়ে তুলল। আগত নারীর প্রতি চরম বিরক্তি বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর চেষ্টা করল। তার শক্ত চোয়াল দেখে যেন তরুণী বুঝতে পারে এখনো ঠিক কতটা রাগান্বিত সে। নিজেকে শক্ত খোলসে আবৃত করলেও মনে মনে বেশ উৎফুল্লতায় ভুগছে সে৷ কারণ আজ সব হিসেব চুকিয়ে দেবে। কথায় আছে কারো পৌষ মাস তো কারো সর্বনাশ। এতদিন তার সর্বনাশ চলেছে আর মুসকানের চলেছে পৌষ মাস। আজ থেকে তার পৌষ মাস শুরু৷ তার মানে কী মুসকানের সর্বনাশ? নিঃসন্দেহে সর্বনাশই বলা চলে। হৃদয়ে যখন কঠিন প্রেমের ঝড় ওঠে। আর সেই ঝড় থামানো পুরুষটি নির্লিপ্ত রয়। তখন তো সর্বনাশের আগুনে জ্বলতেই হয়। আকস্মিক অধর কোণে বাঁকা হাসি ফুটল ইমনের। মুসকান গাড়ির কাছাকাছি আসতেই দৃষ্টি অন্যদিকে রেখে ডোর খুলে দিল। কিঞ্চিৎ চমকাল মুসকান। পরোক্ষণেই সামলে নিল নিজেকে। আড়চোখে দেখল ইমন৷ মনে মনে বলল,
‘ কার কাঠিন্যতা বেশি এবার প্রুফ করার সময় এসে গেছে। ‘
ঠোঁট নাড়িয়ে রাশভারি কণ্ঠে বলল,
‘ এখানেই বসতে হবে৷ লং জার্নিতে ঘুমিয়ে কাটায় দাদুভাই। তাই পেছনে জায়গা হবে না। ‘
মুখ ফিরিয়ে বলা ইমনের রাশভারি কথাগুলো শুনে বুকের ভেতর সুক্ষ্ম এক মোচড় অনুভব করল মুসকান৷ চোখ, মুখ শুঁকিয়ে ছোটো হয়ে গেল মেয়েটার। আড়চোখে তাকিয়ে সবই দেখল ইমন। নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে স্টিয়ারিংয়ে বলিষ্ঠ হাতজোড়া রাখল। মাথা নত করে ওঠে বসল মুসকান। ডোর লক করতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হলো। ইমন ভেবেছিল পারবে না৷ কিন্তু চেষ্টা বৃথা যায়নি। পেরেছে মুসকান। নিঃশব্দে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে গাড়ি স্টার্ট দিল সে। গাড়ি চলতে শুরু করলে মিররে তাকাতেই আঁতকে ওঠে মুসকান। মেজো কাকা এভাবে বসে আছে কেন? যেন কারাগারে নিক্ষেপ করা এক বন্দি আসামি বসে আছে। হৃৎস্পন্দন হঠাৎই অস্বাভাবিক হয়ে গেল তার। দুরুদুরু বুকে দৃষ্টি সরিয়ে নিল।
ড্রাইভ করার ফাঁকে ফাঁকে পাশের তরুণিমাকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে ইমন৷ দীর্ঘদিন পর এই দেখা। দেখার ফাঁকে বাঁকা হাসি ফুটছে অধরে। এই হাসির রহস্য আগামীকাল থেকেই উদঘাটন হবে। ভালোবাসা যদি সত্যি হয়। যদি মিথ্যে না হয় অনুভূতি গুলো। বেগুনি রঙের গাউন পরিহিত পাশে বসা রমণীকে প্রতি মুহুর্তে ঘায়েল করার ক্ষণ আগতপ্রায়। নিমেষে চিত্ত চঞ্চল হয়ে ওঠল ইমনের। অজান্তেই গাড়ির গতি বাড়িয়ে দিল। সিট বেল্ট না লাগানোতে মুসকানের অবস্থা টালমাটাল। আকস্মিক নিজের ঝোঁক রাখতে না পেরে উইন্ডোর কাঁচে কাত হয়ে পড়ল। ডানপাশের কান, গালে ব্যথা পেল কিঞ্চিৎ। পেছন থেকে মহিউদ্দিন বললেন,
‘ ইমন আস্তে চালা। দেখে শুনে। ‘
মুহুর্তেই গাড়ির গতি কমিয়ে আড়চোখে পাশে তাকাল ইমন। মুসকান মুখে কিঞ্চিৎ রাগ ফুটিয়ে কাঁদো কাঁদো হয়ে বসে। ইমন নিজের গাম্ভীর্য ধরে রেখে দৃঢ় স্বরে বলল,
‘ সিট বেল্ট লাগানোর জন্য কি আলাদা ভাবে এপ্লিকেশন দিতে হবে? ‘
চলবে…
ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। যারা পড়ছেন সকলেই রেসপন্স করবেন এবং শেয়ার দেবেন। যেন গল্পটা সবার নিউজফিডে যায়। ভালোবাসা নেবেন সবাই।
Baki part taratari diyen