#গোলকধাঁধা
#লেখনীতে -ইসরাত জাহান ফারিয়া
#পর্ব-৬
বুকের ওপর ভারী কিছু অনুভব করায় প্রত্যয়ের ঘুম ভেঙে গেলো। চোখ খুলে তাকিয়ে সে চমকে ওঠলো। সোহা ওর বুকের ওপর বসে নিজের ইচ্ছেমতো খেলা করছে। প্রত্যয় খানিকক্ষণ ওকে দেখে হতবিহ্বল হয়ে পাশে তাকিয়ে দেখলো সিরাত এখনো গভীর ঘুমে তলিয়ে আছে। ও ধীরগতিতে সোহাকে নামানোর চেষ্টা করতেই বাচ্চাটা শব্দ করে কেঁদে ওঠলো। সেই শব্দে কানে তালা লেগে যাওয়ার যোগাড়, সিরাতের ঘুম ভাঙলো। সোহাকে প্রত্যয়ের কাছে দেখে ধরফড়িয়ে ওঠে বসে দূরে সরিয়ে নিলো। মাথায় হাত বুলিয়ে ওকে শান্ত করার চেষ্টা করে বলল,
‘বাচ্চাটাকে কাঁদাচ্ছিলেন কেন?’
প্রত্যয় নিজেও ওঠে বসলো, ‘মাথার সব প্রোটিন
কি নিঃশেষ হয়ে গেছে যে উল্টোপাল্টা বকছো? আমি কখন ওকে কাঁদালাম?’
‘তাহলে ও কাঁদলো কেন?’
‘আমাকে গিনিপিগ বানিয়ে খেলছিলো তোমার মেয়ে, নামাতে চেয়েছি সেজন্য চিৎকার করেছে। ঠিক
তোমার মতো।’
প্রত্যয়ের কথা বিশ্বাস না করে সিরাত বলল,
‘আপনাকে আমার তো চেনার বাকি নেই। আপনার
সব হুমকি আমার স্পষ্ট মনে আছে। যেই সুযোগ পেয়েছেন তেমনি সোহার ওপর শোধ নিচ্ছেন।’
প্রত্যয় বিরক্তি ওঠে যেতে যেতে নিজেকেই
বলল, ‘পাগলের প্রলাপ কানে
নিস না।’
সিরাত আগুন চোখে তাকালো, ‘আমি পাগল!’
‘নিজের অস্তিত্ব অস্বীকার করো নি বলে খুশি হলাম।’
সিরাত বোকার মতো তাকিয়ে রইলো। আর প্রত্যয় হাসতে হাসতে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো!
সিরাতও ওঠলো। সোহা কে ফ্রেশ করিয়ে, খাইয়ে নিজের সব কাজকর্ম সেরে নিলো। ভার্সিটির জন্য
তৈরি হয়ে রইলো। না চাইতেও প্রত্যয়ের সঙ্গে ওকে বেরুতে হলো। পথিমধ্যে সোহাকে বাড়ি নামিয়ে দিয়ে যাবে। গাড়িতে বসে সোহা ভীষণ খুশি। বারবার এটা-ওটা ধরছে, হাসছে দু’পাটি দাঁত বের করে। আর সিরাত আদুরে কথা বিনিময়ে ওর সাথে সঙ্গ দিয়ে খেলছে। প্রত্যয় লুকিং গ্লাসে এসব দেখে গলা খাকারি দিলো। সিরাত বিরক্ত চোখে তাকাতেই বলল, ‘এসে গেছি!’
সিরাত দেখলো ওর বাড়ির সামনে গাড়ি থেমেছে। ও সোহাকে নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে পড়লো। প্রত্যয় খানিকটা ইতস্তত করে ডাকলো ওকে, ‘এই মেয়ে, শুনো!’
সিরাত ঘুরে তাকালো, ‘কী?’
‘এটা নিয়ে যাও, সোহার জন্য!’
সিরাত দেখলো একটা বড় বক্স। তাতে বাচ্চাদের
টয়েস, চকলেট সহ নানা হাবিজাবি জিনিস। এসব কখন এনেছে গুন্ডাটা? আর সোহাকেই বা দিচ্ছে কেন? ও সন্দেহ নিয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘এসব কেন?’
‘এমনি!’
‘লাগবে না। আপনার জিনিস আপনি রাখুন।’
‘একবার যখন বলেছি দ্বিতীয়বার আর বলবো না।’
ঠান্ডা হুমকি। সিরাত হকচকিয়ে গেলো। গুন্ডা’টা
হয়তো আবার রেগে কিছু একটা করে বসবে।
সেজন্য বাধ্য হয়েই গিফট বক্সটা নিলো সে। তাচ্ছিল্য করে বলল,
‘আপনার যে কয়টা মুখোশ আমি ভেবেই পাচ্ছি না।’
‘অন্যের বিষয়ে না ভেবে নিজেকে নিয়ে ভাবো। ওকে দিয়ে তাড়াতাড়ি ফিরে আসো। লেইট হয়ে যাচ্ছে।’
প্রত্যয় গম্ভীর কণ্ঠে বললো। সিরাত আর দাঁড়ালো না। সোহাকে মা’য়ের কাছে দিয়ে এলো। বারবার করে বলে এলো খেয়াল রাখতে। এরপর দ্রুতই ফিরে
এলো। প্রত্যয় গাড়ি স্টার্ট করে ভার্সিটির দিকে
রওয়ানা হলো। সিরাত একটু পর বলল, ‘আমার ফোনটা কি পেতে পারি?’
প্রত্যয় ড্রাইভ করতে করতে ভ্রু উঁচিয়ে গমগমে স্বরে জিজ্ঞেস করলো,
‘কী করবে? স্বামীর নামে উল্টাপাল্টা পোস্ট লেখবে সোশ্যাল মিডিয়ায়?’
সিরাত চেহারা কালো করে বলল, ‘সেটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার।’
প্রত্যয় ছোট্ট করে বলল, ‘ওহ! আই সী!’
‘পাবো তো?’
‘ভেবে দেখবো।’
সিরাত একটু বিরক্ত হলো, ‘আমার জিনিস ফেরত দেবেন সেখানে এত নাটকীয়তার কি আছে? নাকি
ভয় পাচ্ছেন আমাকে?’
প্রত্যয় হাসলো, ‘আমাকে ইঁদুর ভাবলে ভুল করবে।’
সিরাত টিপ্পনী কাটলো,
‘জানি তো আপনি বেড়াল।’
‘উহু, বাঘ।’
‘জোক্স অফ দ্যা ইয়ার।’
সিরাত উচ্চস্বরে হেসে ওঠলো। প্রত্যয় নির্বিকার
ভঙ্গিতে গাড়ি চালাচ্ছে। হেলদোল হলো না সিরাতের তাচ্ছিল্যতায়। তবে সিরাতের উচ্চ স্বরে হাসিটা ওর ভেতরে আগুন জ্বালিয়ে দিলো। কিন্তু ব্যাপারটা
একটুও বুঝতে দিলো না ওকে। শান্ত হয়ে বাকি
পথটুকু পাড়ি দিলো সে। ভার্সিটির সামনে গাড়ি থামাতেই সিরাত নামলো। পেছন থেকে গমগমে
স্বরে প্রত্যয় ডেকে বলল, ‘নাও।’
পেছনে ফিরতেই খুশিতে চকচক করে ওঠলো
সিরাতের চোখ। দ্রুত নিজের ফোনটা হাতে নিয়ে খুশিতেই বলে ফেললো, ‘থ্যাংক্স পাওয়ার যোগ্য
না আপনি, তাই দিলাম না।’
ভার্সিটিতে বাকি সময়টা বেশ ভালোই কাটলো সিরাতের। তবুও তক্কেতক্কে রইলো। কিন্তু আজ আর উল্টোপাল্টা কিছু ঘটার খবর পেলো না সে। বাড়ি ফেরার সময় ও ক্যান্টিনের সামনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলো প্রত্যয়ের জন্য। কিন্তু ওর বদলে এলো মাহিন। এসেই চওড়া হাসি দিয়ে বলল, ‘ভাই পাঠাইসে। সে দলের ঝামেলায় ব্যস্ত, আসতে পারে নাই। আসেন আফনেরে দিয়া আসি।’.
সিরাত বুঝতে পারলো কেন আজ গন্ডগোল বাঁধেনি। গুন্ডাটা ঝামেলায় ব্যস্ত, ভালোই হয়েছে! ও বলল, ‘লাগবে না। আমি একাই পারবো।’
মাহিন নাছোড়বান্দা, ‘একলা যাইতে মানা
করছে ভাই। চলেন ভাবী।’
সিরাত জানে প্রত্যয়কে। তবে মাহিনের ব্যবহার দেখে আশ্চর্যান্বিত হয়ে বলল, ‘কি ব্যাপার মাহিন ভাই, এত সম্মান দিয়ে কথা বলছেন যে? আগে তো তুমি করে বলতেন।’
মাহিন লজ্জা পেলো, ‘এহন তো ভাবী লাগেন!
আগের কথা মনে কইরেন না আর।’
সিরাত বলল,
‘এখনো সময় আছে, ভালো মানুষির পথে আসুন।’
মাহিন দাঁত বের করে হাসলো, ‘ওই আরকি! চলেন।’
___________
দিন কয়েক পরের কথা। রাতে সিরাত বসে বসে ফোন স্ক্রল করছিলো, প্রত্যয় তখনো ফেরেনি। এমন সময় ফোন এলো অনলের। সিরাত রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে অনলের ব্যস্ত গলা শোনা গেলো, ‘কি খবর?’
সিরাত হেসে বললো, ‘ভালো। কিন্তু মতলব কি?
এই অসময়ে ফোন যে?’
‘আজ দুই পক্ষের আবারও সংঘর্ষ, হাতাহাতি হইসে। অনেক পোলাপান আহত, একজন নিহত হইসে। খবর জানোস কিছু?’
সিরাত ভড়কে গেলো। হাসি হাসি মুখে মেদুর ছায়া পড়লো। বিস্ময় নিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
‘বলিস কি! আমি তো কিছুই জানি না।’
‘সে কী! তোর জামাই আই মিন প্রত্যয় ভাই কই?’
সিরাত চিন্তিত হয়ে উত্তর দিলো,
‘জ জানি না। এখনো ফেরে নি।’
অনল বুঝলো সিরাত এই ব্যাপারে কিছুই জানে না। আর হঠাৎ এই খবর শুনে ভড়কে গেছে। সেজন্য ও শান্ত গলায় হেসে বলল, ‘আরে টেনশন নিস না। আমি খোঁজ নিচ্ছি। খবর পেলেই জানাবো তোকে। ওকে?’
সিরাত ব্যস্ত গলায় বলল, ‘আমার টেনশন হচ্ছে।’
‘রিল্যাক্স দোস্ত। খবর পেলেই জানাবো।’
ফোন কেটে হতভম্ব হয়ে বসে রইলো সিরাত। কি করবে বুঝতে পারলো না। ঘড়িতে রাত দশটা বেজে পনেরো মিনিট। অন্যদিন সাড়ে নয়টাতেই বাড়ি ফেরে প্রত্যয়। আজ এত দেরি কেন হচ্ছে! প্রত্যয়কে কল করলো, ওপাশ থেকে বন্ধ এলো৷ সিরাতের এবার আশঙ্কা হলো। বাড়ির কেউ-ই এই ব্যাপারে জানে না। সবাইকে জানানো উচিৎ হবে কি-না একবার ভাবলো। ঠিক করলো জানানোটাই ঠিক। দরজা খুলে দ্রুতপদে ছুটে গেলো শ্বাশুড়ির ঘরে। এই ঘরে হাতে গোনা দু’বার এসেছে সে। মুশফিকা চৌধুরীর সাথে ওর একদম জমে না বলতে গেলে। তবুও ইতস্তত করে কড়া নাড়তেই মুশফিকা চৌধুরীর গলা শোনা গেল,
‘খোলা আছে।’
সিরাত ঢুকলো। ওকে দেখে অবাক হলো মুশফিকা চৌধুরী। সিরাত উৎকন্ঠিত গলায় জিজ্ঞেস করলো, ‘বাবা কোথায়?’
মুশফিকা চৌধুরী কাঠ গলায় উত্তর দিলেন,
‘ওয়াশরুমে। বসো।’
সিরাত বসলো। কিন্তু ভীষণ উত্তেজিত সে। মুশফিকা চৌধুরীকে কিছু বললো না ও। আমির সাহেব ফ্রেশ হয়ে বেরুলে তাকেই সিরাত সবকিছু খুলে বললো। এসব শুনে তিনি ভীষণ চিন্তিত হয়ে পড়লেন। প্রত্যয়ের ফোন অসংখ্য কল দিলেন, সুইচড অফ বলছে। আমির সাহেব দিশেহারা হয়ে একে-ওকে ফোন দিয়ে ছেলের খোঁজ নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। এভাবেই আরও একঘন্টা কেটে গেলো। কিন্তু খোঁজ পেলো না। সিরাতের হুট করেই মাথা ঝিমঝিম করতে লাগলো।
রাত বারোটার দিকে অন্তু, মুহিব, মাহিনকে সঙ্গে নিয়ে হাতে-পায়ে অসংখ্য চোট পেয়ে বাড়ি ফিরলো প্রত্যয়। কিন্তু সেদিকে ওর খেয়াল নেই। ফোনে কাউকে প্রচন্ড ধমকাচ্ছে ও। এদিকে আমির সাহেব রাগ সামলাতে না পেরে পুত্রের গালে সশব্দে
চড় বসালেন, ‘তোর বাপ কি মরে গেছে যে এসবে
যাস? আজকের পর থেকে তোর এসব নেতাগিরি বন্ধ।’
প্রত্যয় গালে হাত দিয়ে অবাক চোখে তাকালো,
‘তুমি আমাকে মারলে?’
‘আরো আগে যদি মারতাম তাহলে এই দিন দেখতে
হতো না।’
প্রত্যয় কাহিনী ধরতে না পেরে আবারও জিজ্ঞেস করলো, ‘হয়েছেটা কি তোমাদের?’
আমির সাহেব গমগমে স্বরে বললেন, ‘নিজের অবস্থা দেখেছো? হাত-পা কেটে রক্ত ঝরছে আবার জিজ্ঞেস করছো কি হয়েছে? তোমাকে এই অবস্থায় দেখার জন্য বড় করেছিলাম?’
এতক্ষণে বিষয়টা পরিষ্কার হলো প্রত্যয়ের কাছে।
ও বিরক্ত হলো। বাড়িতে এই খবর কে দিয়েছে? তাদের তো জানার কথা নয়! আমির চৌধুরী আবারও গর্জে ওঠলেন, ‘মায়ের অবস্থা দেখে এসো। বেয়াদব ছেলে।’
প্রত্যয় আশেপাশে নজর বুলিয়ে দেখলো সিরাত
সিঁড়ির মাথায় থমথমে চেহারা বানিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্রত্যাশার চেহারাও শুকনো। ও তাকাতেই সিরাত আর প্রত্যাশা গটগটিয়ে হেঁটে সেখান থেকে চলে গেলো। প্রত্যয় এক গ্লাস পানি খেয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে মায়ের
ঘরে গিয়ে দেখলো মুশফিকা চৌধুরী বেহুঁশ হয়ে পড়ে আছে বিছানায়। হাত-পায়ে মালিশ করছে
প্রত্যাশা। সিরাত মাথায় পানি ঢালছে। এসব দেখে প্রত্যয় হতভম্ব হয়ে গেলো। বাড়ির পরিবেশ অনুকূলে নয় দেখে মুহিব, অন্তুদের সে বিদায় দিয়ে দিলো।
জ্ঞান ফেরার পর ছেলেকে দেখে যেন প্রাণ ফিরে পেলেন মুশফিকা চৌধুরী। কেঁদেকেটে অস্থির হলেন। প্রত্যয় মা’কে ভুজুংভাজুং বুঝ দিয়ে শান্ত করলো।
তখন ভোর চারটে। প্রত্যয় আপাতত পরিস্থিতি সামলে ক্লান্ত হয়ে ঘরের দিকে পা বাড়ালো। কাটা ক্ষত গুলো জ্বলছে ভীষণ! ঘরে এসে দেখলো সিরাত ফার্স্ট এইড বক্স নিয়ে বসে আছে। ওকে দেখেই এগিয়ে এসে আদেশের সুরে বলল, ‘বসুন।’
সিরাতের থমথমে চেহারা দেখে বাধ্য ছেলের মতো বসলো প্রত্যয়। এন্টিসেপটিক, তুলা বের করে কপাল, মুখ, হাতে কেটে যাওয়া ক্ষত পরিষ্কার করতে করতে সিরাত শক্ত গলায় বলল, ‘পাঞ্জাবি খুলুন।’
‘লাগবে না, ওখানে কাটেনি।’
প্রত্যয় মানা করলো। কিন্তু পরক্ষণেই সিরাতের ভস্ম করা দৃষ্টি দেখে ভড়কে গিয়ে একটানে পরণের পাঞ্জাবি খুলে ফেললো। সিরাত তুলা দিয়ে বুকের ক্ষত পরিষ্কার করতে গিয়ে চেপে ধরতেই প্রত্যয় ‘আহ’ বলল চেঁচিয়ে ওঠলো। সিরাত ভ্রু কুঁচকে বলল, ‘কি হলো?’
‘মানবতার মাতা নার্সগিরিটা রয়েসয়ে করুন।’
সিরাত অবাক হওয়ার ভান করে বলল, ‘সে কী! আপনার তো ব্যথা পেলেও অনুভব করার কথা নয়। যেভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের শাস্তি দেন, মজাই তো মনে হয় আপনার কাছে!’
কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিঁটাটা বেশ ভালোই বুঝতে পারলো প্রত্যয়। নিচে তাকিয়ে মৃদু হেসে আচমকা কোমড়
চেপে ধরে অনেকটা কাছে টেনে আনলো। আকস্মিক এমন কান্ডে অপ্রস্তুত হয়ে পড়লো ও। রেগে বলল, ‘ভালো হচ্ছে না কিন্তু!’
‘এ কথাটা আগে তোমার ভাবা উচিৎ ছিলো
আমার ঘরনি!’
বলে আরো শক্ত করে ধরলো। সিরাত নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে ব্যর্থ হলো। প্রত্যয় বাঁকা হাসতেই অজানা আশঙ্কায় শিওরে ওঠলো ও। ছটফট করতে করতে রাগী গলায় বলল,
‘মার খেয়েও স্বভাব বদলায়নি।’
প্রত্যয় সেভাবেই ফিসফিস করে বলল,
‘বদলাবেও না।’
‘ছাড়ুন আমাকে!’
প্রত্যয় ওর ঘাড়ে এবার দাঁত বসালো। সিরাত আর্তনাদ
করে ধাক্কা দিয়ে ওকে দূরে সরিয়ে দিলো। ব্যথিত
গলায় বলল, ‘আপনি কি ভালো হবেন না? কি
করলেন এটা?’
‘প্রতি’শোধ নিলাম।’
‘মানে? কীসের প্রতি’শোধ?’
প্রত্যয় রাগে ফোঁসফোঁস করতে করতে বললো,
‘দু-ফোঁটা চোখের জলও তো ফেললে না। বাকি সবাই আমার জন্য চিন্তিত, কান্নাকাটি, হুলস্থুল করেছে। এদিকে আমার বউ হয়ে তুমি কি করলে? শুধু এন্টিসেপটিক আর তুলো দিয়ে সেবা? আমার মনের সেবা কে করবে?’
সিরাত বিস্ময়ে বাক্যহারা হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো!
’
[ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।]
চলবে…