#গোলকধাঁধা
#লেখনীতে -ইসরাত জাহান ফারিয়া
#পর্ব-১৫
কি যদি হলো! সিরাতের রাগটাগ গলে একদম পানি হয়ে গেলো। কথাগুলো নাটকীয় মনে হলেও প্রত্যয়ের চোখের দৃষ্টিতে সে মিথ্যে কিছু দেখলো না। বরংচ খুঁজে পেলো আকুলতা!
সিরাত বারান্দায় দাঁড়িয়ে। দৃষ্টি দূরে। আকাশে আজ রোদ নেই। চারদিকে কেমন বিষন্ন ভাব। তেমনি সিরাতেরও! হাজারো চিন্তায় মশগুল মস্তিষ্কটা যেন
খুব ক্লান্ত। আজ খুব করে বাইরে যেতে মন চাচ্ছে, ঘুরাফেরা করতে ইচ্ছে করছে। ইতস্তত করে
মিনারাকে গিয়ে জানালো নিজের ইচ্ছের কথা।
কিন্তু মা-দাদীর থেকে মুখ ঝামটা ছাড়া আরকিছুই পেলো না। দাদী ধমকের সুরে বলল,
‘এই ঝড়বৃষ্টির দিনে অত গুরাগুরি কি লো? কু-বাতাস লাগবো শরীলও। বইয়া থাক ঘরে দরজা-বাড়ি
লাগায়া। পোয়াতি মাইয়াগো অহন অত রঙ করনের সময় না।’
মিনারাও শ্বাশুড়ির কথায় সায় জানালেন। বাবার দিকে আশা নিয়ে তাকিয়েও লাভ হলো না। শিমুল সাহেব পত্রিকাতে চোখ বুলাতে বুলাতে বললেন,
‘জেদ করিস না মা। এখন যাওয়ার কোনো সময় না।’
দাদী বললেন,
‘নাতজামাইয়ের অনুমতি ছাড়া পোয়াতি মাইয়া কই যাবি তুই? কিছু হইলে তো আমাগো ছাড়বো না তোর নেতা জামাই।’
সিরাতের ভীষণ কাঁদতে ইচ্ছে করলো। বেজার মুখ করে ঘরে চলে এলো। কোথাও শান্তি পাচ্ছে না। মন খারাপ করে বসে রইলো অনেকক্ষণ। ঘোর ভাঙলো আচমকা একটি কান্ডে। ঠোঁটের হাসিটাও চওড়া হলো তখুনি। পেটের ভিতর নড়চড় করা অস্তিত্বটা যেন ওর ভাবনাগুলোকে পালটে দিলো এক লহমায়। আসলেই তো! এত সুন্দর বাবা হওয়ার অনুভূতিগুলো থেকে সে সত্যিই বঞ্চিত করছে প্রত্যয়কে! কিছু মুহূর্ত গভীর চিন্তায় ডুব দিয়ে ফোনটা হাতে নিলো। আনব্লক করলো সে প্রত্যয়কে। সেদিন মানুষটার আকুলতা টের পেলেও ‘হা’ ‘না’ কিছুই বলে নি। কিন্তু এখন মা – দাদীর মুখ ঝামটা খেয়ে একমাত্র নিজের আপন বলতে ওই মানুষটাকেই মনে হলো ওর! সিরাত কল করলো ওর ভালোবাসার পুরুষটিকে, যাকে সে দিনের পর দিন অভিমান করে দূরে সরিয়ে রেখেছে! মন শক্ত করে কল করলো ও প্রত্যয়কে। দু’বারের মাথায় রিসিভ হলো। তবে ওকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ইতস্তত করে ক্ষীণ স্বরে বলল,
‘আমার বাইরে যেতে ইচ্ছে করছে। এখুনি, এই
মুহূর্তে।’
ওর কথা শেষ হওয়ার আগেই প্রত্যয়ের চমকিত
স্বর শোনা গেলো,
‘আমি আসছি এক্ষুনি।’
‘বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে!’
‘আমার বউ তার ইচ্ছে আমাকে জানিয়েছে,
বৃষ্টিকে ভয় পাই না-কি আমি? উহু, তা নয়। আজ যত ঝড়বৃষ্টিই হোক না কেন ঘরণির মনের ইচ্ছে অবশ্যই পূরণ করবে তার বর।’
প্রত্যয়ের বলা কথাগুলো ঝড়ো হাওয়ার বেগে হৃদয়ে নাড়া দিলো। সিরাতের কপালের ভাঁজ নরম হয়ে এলো। মন খারাপ ভাবটা নিমিষেই হারিয়ে গেলো ধোঁয়াশায়!এই পুরুষটি কীভাবে ওর মন ভালো করে দিতে পারলো দু-তিনটা শব্দতে? নিজের পুরুষ বলেই কি?
সিরাত তৈরি হলো, তবে আয়নায় অপলক নিজের দিকে তাকিয়েই রইলো। ইদানীং একটু মেদ বেড়েছে, দেখতে কেমন অচেনা মনে হয় নিজের কাছে নিজেকেই! ওর লজ্জা লাগলো কেমন যেন তাই সাজগোজটা একদমই করলো না। ঘন্টাখানিক পর ম্যাসেজ এলো ফোনে,
“এই বউ! দ্রুত কিন্তু সাবধানে আসবে।
নিচে আছি।”
সিরাত হেসে ফেললো। এই লোকটা আজকাল প্রায়ই তাকে “বউ” বলে ডাকে। ব্যাগটা নিয়ে ঘর থেকে বেরুতেই মিনারা অবাক হয়ে বললেন,
‘কই যাস এখন?’
সিরাত গায়ে মাখলো না কথা। মা-বাবা, দাদীর ওপর অভিমানে গাল ভারী হয়ে আছে ওর। কিছুটা
অন্যরকম সুরেই বলল,
‘আমি আমার বরের সাথে ঘুরতে যাচ্ছি। আশা করি এবার আর তোমাদের সমস্যা হবার কথা নয়।’
মিনারা অবাক হয়ে বললেন,
‘পাগল হলি? একটা চড় মারবো বেয়াদব! জামাই এসেছে নাকি?’
‘হুম, নিচে অপেক্ষা করছে। আমাকে নিয়ে
বাইরে যাবে।’
মিনারা শাসনের সুরে বললেন,
‘নিশ্চয়ই তুই জেদ করেছিস! আরে বাইরে
আকাশের কি অবস্থা দেখছিস না? জামাইকে বল
ঘরে আসতে। কত সময় পরে আছে ঘুরাফেরার,
এখনি যাওয়ার কি আছে?’
সিরাত মুখ গোঁজ করে বলল,
‘কারণ আমার এখুনি ইচ্ছে করছে, পরে না!’
মিনারা আটকাতে চাইলেও শিমুল সাহেব ইশারায় তাকে বারণ করলেন। ইদানীং বড্ড জেদ করছে মেয়েটা। সিরাত নামতেই দেখলো প্রত্যয় গাড়ির
সামনে দাঁড়িয়ে আছে। কানে ফোন। ওকে দেখে ফোন কেটে এগিয়ে এসে বলল,
‘কোথায় যাবে?’
সিরাত জানে না সে কোথায় যাবে। চিন্তাও করেনি। শুধু এই অদ্ভুত সুন্দর বিকেলটা ঘরে কাটাতে ইচ্ছে করছিলো না বলেই বাইরে বেরুনো। খানিকটা রুষ্ট গলায় ও বলল,
‘জানি না।’
প্রত্যয় এহেন কথা শোনে নি আর। নিজেই বললো যেতে চায়, এখন বলছে জানে না? অদ্ভুত! এক মুহূর্ত চেয়ে থেকে এরপর ভ্রু কুঁচকালো,
‘তাহলে?’
সিরাত ভড়কে যাওয়া কন্ঠে বলল,
‘আপনি এত প্রশ্ন করছেন কেন? ডেকে
অপরাধ করে ফেললাম নাকি? এমনি এমনি
কোথাও যেতে চাই।’
প্রত্যয় ওর বোকামি বুঝে হেসে ফেললো। সিরাত গম্ভীর মুখভঙ্গি করে দাঁড়িয়ে ওকে দেখে মুখ ভেঙচালো। প্রত্যয় সরু গলায় বলল,
‘চলো।’
সিরাত বিস্ময় প্রকাশ করলো,
‘কোথায়?’
‘এমনি এমনি জায়গায়, চলো নিয়ে যাই।’
প্রত্যয়ের ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসি। সিরাত গাড়িতে এসে বসলো। প্রত্যয় গাড়ি স্টার্ট করলো। সিরাতের কান্ড কীর্তি ওর মজা লাগছে। আনমনে বলে ফেললো,
‘প্রেগন্যান্ট মায়েদের যে অমন অদ্ভুত অদ্ভুত ইচ্ছে হয়, তা দেখার জন্য হলেও প্রতি বছর তোমার প্রেগন্যান্ট হওয়া উচিৎ!’
সিরাতের লজ্জায়, বিস্ময়ে, রাগে চোখ ফেটে জল
গড়িয়ে পড়লো দু-ফোঁটা। প্রত্যয় ওর অদ্ভুত আচরণে কিংকর্তব্যবিমূঢ়! কি এমন বললো সে? মজা করেই তো কথাটা বলেছে, তার বউ এসব ছোটখাটো মজা কবে থেকে সিরিয়াসলি নেওয়া শুরু করেছে? ও এবার গাড়ি থামালো। গলা ঝাড়া দিয়ে বলল,
‘আমি মজা করে বলেছি।’
সিরাত রেগে বলল,
‘আমাকে অপমান করেই তো মজা পান। আমি ভুল ছিলাম। সত্যিই আপনি আগের মতোই আছেন,
একটুও বদলান নি!’
‘আরে বাবা, মজাও করতে পারবো না?’
‘না। যারা বউকে অপমান করে সুখ পায়, তাদের মজা করার অধিকার নেই।’
প্রত্যয় ওর হাতদুটো নিজের মুঠোয় নিলো।
এরপর ব্যাকুল স্বরে বলল,
‘অপমানও করিনি, সুখও পাইনি। আমার বউ কাঁদবে আমি এরকম কোনোকিছুই ইন্টেনশনালি করতে চাইনি। আচ্ছা আর কখনো এরকম বলবো না। তুমি মানো না তবে আমাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। তোমাকে অপমান করা মানেই তো আমার অপমান। আর নিজেকে নিজে কে অপমানিত করে? বোকারা! আমি কি বোকা?’
সিরাত নিশ্চুপ। রাগ কমেছে। পেটের মধ্যে
কেমন ছুঁচো দৌঁড়াচ্ছে!প্রত্যয় একবার দেখে ওর
গাল মুছে দিয়ে এরপর বলল,
‘এই মেয়ে, কাঁদবে না। দেখো তোমার কান্না দেখে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে।’
‘হোক।’
‘তবে আমাকে ডাকলে কেন?’
সিরাত নাক টানলো। কান্নাকাটি বন্ধ করে বলল,
‘স্বামী হন যে তাই।’
প্রত্যয় টুপ করে গালে চুমু খেলো। সিরাত অবাক হয়ে বলল,
‘আপনি ইদানীং মুভি-টুভি বেশি দেখছেন তাইনা?’
প্রত্যয় হতাশ হয়ে বলল,
‘কি আর করবো বলো? রাতটা কাটাতে হবে তো! মুভি-সিরিজ ছাড়া আর কি আছে বলো? প্রেমিকা তো নেই যে, প্রেম করবো! আর বউ তো দূরদূর করে কবেই তাড়িয়ে দিয়েছে।’
সিরাত চোখ পাকিয়ে তাকালো,
‘এই আপনি কিসব দেখেন বলুন তো? একটু বেশি আদর-আহ্লাদ দেখাচ্ছেন! কোথা থেকে শিখলেন!’
প্রত্যয় বউয়ের কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে ফেললো।
অতঃপর কথার মানেটা বুঝতে পেরে ড্রাইভিংয়ে মনোযোগ দিয়ে জোরালো শব্দে হেসে ওঠলো,
‘ওহ নো!’
সিরাত সেই হাসির শব্দে কেঁপে ওঠলো। সেইসাথে রাগও হলো ওর। কত নির্লজ্জ এই মানুষটা! আর
কথাই বলবে না সে। বাইরে তখন সন্ধ্যে নেমেছে। ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি ঝরছে টুপটাপ। পিচঢালা রাস্তা ভিজে গাঢ় কালচে রঙ ধারণ করেছে। মৃদুমন্দ ঠান্ডা বাতাস। মানুষজন কম। দোকানপাট, রেস্টুরেন্টেও তেমন ভিড় নেই। সিরাতের পেট ক্ষিধেয় চো চো করছে। কিন্তু বলতে পারছে না সে প্রত্যয়কে। এদিকে বউয়ের মান-অভিমান ভাঙানোর চক্করে অন্যদিকে মনোযোগ নেই ওর। শুধু ব্যাকুল গলায় নিজের মনের
কথাগুলো বলে চলেছে। সিরাত একটা সময় ওকে থামিয়ে দিয়ে বলল,
‘কিছু খাবো।’
প্রত্যয় বোকার মতো তাকিয়ে রইলো। কথাটা বুঝতেই সময় লাগলো একটু। এতক্ষণ যাবৎ বউটা বাইরে, না খেয়ে আছে আর ও কি-না খেয়ালই করেনি? আহাম্মক সে! তবে মনেমনে একটু খুশিও হলো প্রত্যয়, সিরাত স্বাভাবিকভাবেই ওর কাছে নিজের
ক্ষিধের কথা জানিয়েছে বলে। রাস্তার ওপাশে বিশাল এক চাইনিজ রেস্তোরাঁর লটে গাড়ি থামালো
প্রত্যয়। জিজ্ঞেস করলো ওখানে যেতে চায় কি-না সিরাত। কিন্তু ও যেতে চাইলো না। প্রত্যয় ছাতা হাতে বেরিয়ে জিজ্ঞেস করল,
‘কি খেতে চাও? বলো আমায়।’
সিরাত চারপাশের পরিস্থিতি এবং আবহাওয়া দেখে ভাবলো বৃষ্টিভেজা পরিবেশে গরম গরম চা-বিস্কুট খাওয়ার মজাই আলাদা। সেজন্য বলল,
‘চা-বিস্কুট।’
প্রত্যয় অবাক গলায় বলল,
‘এসব কোনো খাবার হলো? পেট ভরবে নাকি? অন্যকিছু বলো, ভারী খাবার।’
সিরাত বিরক্ত হলো,
‘আনতে হবে না। আমাকে বাড়ি দিয়ে আসুন।’
‘এক্ষুণি যাচ্ছি।’
বলে দ্রুত পায়ে চলে গেলো কাছের একটা ক্যাফে’তে।
সিরাত ওর যাওয়া দেখলো। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ফিরে এলো। সিরাত দরজা খুলে দিতেই ভেতরে এসে বসলো। হাতে চায়ের ফ্ল্যাক্স আর দু-তিন রকমের কুকিজের প্যাকেট। সিরাত বিস্মিত হলো,
‘একি! চা খাবো বলেছি, এতোটাও নয় যে ফ্ল্যাক্সে
করে আনতে হবে।’
প্রত্যয় ধমকে ওঠলো,
‘তোমাকে এত ভাবতে হবে না। খেতে চেয়েছো এনে দিয়েছি, আবার কথা কীসের?’
‘আপনি আসলেই একটা যা-তা।’
প্রত্যয় কানে তুললো না ওর কথা। ওয়ান টাইম
কাপে চা ঢেলে এগিয়ে দিলো সিরাতের দিকে। প্যাকেট থেকে কুকিজ বের করে বলল,
‘নাও।’
সিরাত কাপে চুমুক দিতে দিতে বলল,
‘আপনি খান।’
‘নিজেরটা খাও, পরে বাকিসব।’
এরপরই ওর খাওয়া দেখে কৌতূহলী গলায় জিজ্ঞেস করলো,
‘আচ্ছা, শুনো! ইয়ে মানে…’
‘কী?’
প্রত্যয় ইতস্তত করলো একটু,
‘মানে আমার বাচ্চাটা তোমার চায়ে ভাগ বসালে তোমার রাগ হবে না?’
বোকার মতো প্রশ্ন শুনে সিরাত চোখ রাঙালো,
‘শুধু চা না, আমার সবকিছুতেই আপনার বাচ্চা ভাগ বসায়। আমি আর কি করবো! বাচ্চার বাপকে…’
প্রত্যয়ের মুখে আঁধার নেমে এলো,
‘গালাগাল দিয়ে উদ্ধার করো!’
‘ঠিক তাই।’
সিরাত মুখ শক্ত করে বললো। প্রত্যয় গাড়ি ঘুরিয়ে
নিলো। এরপর ফোন দিলো কাউকে। সিরাত দেখলো ওকে; কথা শুনে মনে হলো মায়ের সাথে কথা বলছে। সিরাত খানিকটা বিস্মিত হলো যখন শুনলো ও
এখন শ্বশুরবাড়ি যাবে! ও আঁৎকে ওঠল,
‘এ মা! আমি ওখানে যাবো না। বাড়ি দিয়ে আসুন প্লিজ।’
প্রত্যয় ফোন রেখে বলল,
‘তা আর হচ্ছে না আমার ঘরণি। এই গুল্টুমুল্টু বউ
ছাড়া আর একদিনও চলবে না আমার। নির্ঘাৎ মৃত্যু হবে বউ-বাচ্চার অনাহারে থাকতে থাকতে।’
সিরাত অনুনয় করলো,
‘না আমি যাবো না। লজ্জা করে আমার। এভাবে ওনাদের সামনে ঘুরাঘুরি করতে…’
প্রত্যয় এহেন কথায় বড্ড হাসলো,
‘করুক লজ্জা।’
‘আপনি কিন্তু ঠিক করছেন না।’
প্রত্যয় এবার কঠিন হলো। ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যেই সে কিছু অবান্তর কথা বলল,
‘সতীন আনলে ঠিক হবে তাইনা? শ’য়তান এমনিই আমাদের মাঝে ঢুকে বসে আছে। সুযোগ পেলেই মাথায় চড়বে। যেমন এখন তোমার মাথায় চড়ে আছে। আস্কারা দিলেই দেখবে তোমার স্বামী বিয়ে করে মাসনা নিয়ে এসেছে।’
সিরাত হতবাক হয়ে গেলো। খারাপ হোক, ভালো হোক তবুও স্বামীই তো। সতীনের সাথে স্বামীর ভাগাভাগি করার মতো এতটা দয়ালুও সে নয়। এমনিতেই নেতা পেতার আশেপাশে মেয়ের অভাব হয় না, দারুণ সুন্দরীও বটে তারা! তুলনা করলে এরমধ্যে সিরাত আর এহেন কি সুন্দরী? স্বামী যাতে পরনারীতে আসক্ত না হওয়ার সুযোগ পায় সেজন্যই সিরাত আর কথা বাড়ালো না। শ্বশুরবাড়িতে ফিরে এলো। মুশফিকা চৌধুরী বেশ আয়েশ করে বৌমাকে বরণ করলেন। খুশি যেন তার আর ধরে না! সিরাতকে নিয়ে ওর ঘরে এলেন, হাতের কাছে প্রয়োজনীয় সব গুছিয়ে দিলেন। অনাগত নাতিনাতনির জন্য কি কি শপিং করেছেন সব দেখাচ্ছে উৎফুল্ল মনে। সিরাত অবাক হলো। এরকম ভালোবাসা যেন ও নতুন পাচ্ছে। প্রত্যাশাও তাল মিলিয়ে ভাবীকে এতদিনের গল্পসল্প করছে। সংসারের মানেটা যেন হুট করে দিনের আলোর মতো উজ্জ্বল হয়ে ওঠলো সিরাতের মন-মস্তিষ্কে।
চলবে….