#গোধূলি_বেলায়_তুমি_এসেছিলে
#আনিশা_সাবিহা
পর্ব ৩ (২য় খণ্ড)
রাগিনীর ভেজা স্নিগ্ধ মুখশ্রী দেখে ভীষণ সুস্থিরতা অনুভূত করল কোহিনূর। তবে তার প্রেয়সীর এই শুকনো এবং ফ্যাকাসে মুখ সেই সাথে চোখের আশপাশটা ফোলা দেখে কিছুটা দ্বিধান্বিত হলো সে। তবে রাগিনীর এই অদ্ভুত প্রতিক্রিয়া দেখতে বেশ ভালো লাগছে তার। চোখে অন্তরীক্ষের সমান বিস্ময় এবং টলটল চোখে স্তম্ভিত হয়ে দাঁড়িয়ে সে। দূরে দাঁড়িয়েই শব্দহীন হেসে ঘাড় কাত করে ভ্রু উঁচিয়ে ইশারা করল রাগিনীর অভিমুখে। তার ইশারা যেন রাগিনীর নিকট এক অদ্ভুত প্রশ্ন হয়ে এসে পৌঁছাল তা হলো, ‘কেমন চমকে দিলাম?’
নিজের সমস্ত অভিমানগুলো মিইয়ে পড়ল কোহিনূরের এই হাসোজ্জল চেহারা দেখে। প্রতিক্ষা বৃথা ছিল না তবে! কোনোকিছু না ভেবেই এবং লোক সমাগমের তোয়াক্কা না করেই সে একপ্রকার ছুটে এসে দাঁড়াল কোহিনূরের সংলগ্নে। এখন চোখ দুটো বিশ্বাস করল মানুষটি সত্যিই তার সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সে এসেছে। তাকে দেখে হাসতে গিয়েও থামল রাগিনী। চোখমুখ জড়িয়ে ফেলল সে। মুখ ঘুরিয়ে নিলো। সঙ্গে সঙ্গে কোহিনূর তার দিকে একটু ঝুঁকে ফিসফিসিয়ে বলল,
“বেশি অপেক্ষা করিয়ে ফেললাম?”
“কেন এসেছেন? আপনি কী করে জানলেন আমি এখানে আছি? কে বলেছে আপনাকে?”
“আমি তোমার পায়ের প্রতিটা ধাপ সম্পর্কে খবর রাখার ক্ষমতাটুকু রাখি ডিয়ার!”
চোখমুখটাতে আরো বেশি রাগের ছাপ ফুটিয়ে তুলল রাগিনী। চোখ রাঙিয়ে প্রশ্ন করল,
“আমি বলেছি এসবের খবর রাখতে? সব তো শে’ষ করে দিয়েছেন। আর এখন এসেছেন দরদ দেখাতে?”
কোহিনূর হেসে রাগিনীর ডান গালটা টেনে ধরল।
“তুমি গেলে তো বিয়ের আগেই বউ হারা হয়ে যাব আমি! সেকারণেই তোমায় সর্বশক্তি দিয়ে হলেও আঁটকে রাখছি আপাতত।”
“আপনি হেড অফিসে কী বলেছেন বলুন তো? বলেছেন আমরা স্বামী-স্ত্রী? আমাদের বিয়ে হয়েছে?”
সোজা হয়ে দাঁড়াল কোহিনূর। পকেটে হাত দিয়ে এমন ভান ধরল এই ভয়ানক মিথ্যে বলার জন্য তার কোনো অনুশোচনা নেই। বরং বেশ কনফিডেন্স নিয়েই বলল,
“মাঝে মাঝে অনেক বড়ো কাজ সম্পাদনের জন্য একটু-আধটু মিথ্যে বলতে হয়।”
ভ্রু কুঁচকায় রাগিনী। তারপর তেতে উঠে বলে,
“কী এমন বড়ো কাজ সম্পাদন করবেন আমায় বউ হিসেবে পরিচয় করিয়ে?”
“আমার এই মনের রানির মান ভাঙাব। এটাই বা কম কীসে? এটা তো আমার রাজকার্য!”
রাগিনী দাঁত কটমট করে প্রতিত্তোরে বলল,
“নিকুচি করেছি আপনার রাজকার্যের। আমার মতো অবিবাহিত মেয়েকে বিবাহিত বানিয়ে দিলেন লজ্জা করে না আপনার?”
কোহিনূর মৃদু হেসে রাগিনীর আরেকটু নিকটে আসে। একটু নিচু হয়ে ধীর গলায় বলে,
“তুমি হ্যাঁ বললে এখনি এই মূহুর্তে বিয়েটা সেরে নিতে রাজি আছি। একদম নাচতে নাচতে তোমায় কোলে তুলে কাজি অফিসে যাব। বিলিভ মি!”
রাগিনী কিছু বলার আগেই কোহিনূর আপনাআপনি হকচকিয়ে কিছুটা দূরে সরে গেল। মাথা নিচু করে নেত্রপল্লব বড়ো করে মেলে তাকাল রাগিনীর হাতে থাকা ছোট্ট রিও এর দিকে। এই ফা’জিল বিড়াল ছানা আবারও আঁচড়ে দিয়েছে তাও কোহিনূরের পেটে। এই কান্ড বুঝতে পেরে রাগিনীও দুম করে বলল,
“দেখেছেন? রিও নিজেও বুঝে গিয়েছে আপনি চূড়ান্ত লেভেলের অসভ্য একটা লোক। ঠিক সেকারণেই বিয়ের কথা তুলতেই সে আপনাকে বুঝিয়ে দিয়েছে।”
“এই ছোটু আমাকে সহ্যই করতে পারে না তোমার মতোই।”
রাগিনী এবার ঠোঁট টিপে হাসে। পরক্ষণেই কালো হয় মুখ। তার বাবা তাকে যেতে বলেছে। অথচ এই মানুষটা এখন তার সামনে। এখন তার সামনে দিয়ে যাওয়া কি সম্ভব হবে? এই মানসিক উদ্বেগ তাকে রেহাই দিতে চাইছে না। কারোর মন রাখতে কারোর মন ভাঙতে হবে। নিজের লাগেজ জোরে চেপে ধরল রাগিনী। এবার ঘোষণা হলো, ‘আর কিছুক্ষণের মধ্যেই সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ছাড়তে চলেছে। যাত্রীরা দ্রুত নিজের আসন গ্রহণ করে নিন।’
রাগিনীর এই নীরবতা কোহিনূরকে অন্য কিছু বোঝালো। মেয়েটা যে এখন ট্রেনে ওঠার চিন্তাভাবনা করছে সেটা বোধগম্য হলো তার। তাই সে কৌশলে রাগিনীর কোমল হাতটা স্পর্শ জোরে জোরে বলল,
“স্বামী-স্ত্রী মাঝে একটুআধটু মনমালিন্য তো হতেই পারে রাগিনী। তাই বলে তুমি আমাকে ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারো না। আমাকে ছেড়ে যেও না প্লিজ!”
এত জোরে এমন ধরনের কথা বলায় ফ্যালফ্যাল করে কোহিনূরের পানে চাইল রাগিনী। তারপর আঁড়চোখে দেখে নিলো আশপাশ। লোকজনের বর্তমানে মূল কৌতূহল যেন তারাই। সে কথায় ঝাঁঝ মিশিয়ে বলল,
“একদম সিনক্রিয়েট করবেন না। সকলে আমাদের দেখছে। ছাড়ুন আমাকে।”
“সেটাই তো বলছি। সবাই দেখছে আমাদের। তাহলে কেন সিনক্রিয়েট করছ? ফিরে চলো আমার সাথে। সামান্য ঘটনায় স্ত্রী কখনো স্বামীকে ছেড়ে যায়?”
“উফফ…বাড়াবাড়ি করবেন না খবরদার। কী স্ত্রী স্ত্রী করছেন?”
এরই মাঝে দুজনের কথোপকথনের মাঝে এক বয়স্ক মহিলা বলে উঠলেন,
“ও মেয়ে! কী হইছে গো? তোমার সোয়ামিরে দেখে মনে হইতেছে তোমারে অনেক ভালোবাসে। সংসারে একটু ঝামেলা হয়। আমরা আমাদের সময় কতো মানিয়ে চলছি। তোমরা আধুনিক মাইয়ারা সব একটু কিছু হইলেই সংসার ছাড়ো! এইডা ঠিক না বাপু!”
রাগিনী একেবারেই হতবিহ্বল এবং বেক্কল হয়ে গেল! মাথাটা ভনভন করছে তার। সে কিছু বলতে চেয়েও পারল না। তার পূর্বেই কোহিনূর সুযোগ পেয়ে গড়গড় করে বলে দিল,
“আপনি একটু বোঝান তো আমার বউটাকে। ভুল করেছি। ক্ষমাও চেয়েছি। তবুও সে বোঝে না। তাকে ছাড়া ছন্নছাড়া হয়ে যাব যে!”
বয়স্ক মহিলাটি সব শুনে মাথা নাড়ালেন। ফের রাগিনীর দিকে চেয়ে বললেন,
“শোনো মেয়ে! বাড়ি ফিরে যাও। এমন সোয়ামির ভালোবাসা সবাই পায় না।”
এবার রাগিনী চোখ রাঙাল কোহিনূরের দিকে। লোকটি ফা’জিলের মতো ঠোঁট কামড়ে হাসছে। রাগিনীর ইচ্ছে করছে নাকে ঘু’ষি দিতে। বয়স্ক মহিলাটি চলে গেলেন। কোহিনূর ধীর সুরে বলে উঠল,
“এবার না গেলে কিন্তু তোমার এই ছোটু বিড়াল ছানা সহ তোমায় কোলে তুলব। আমার লাজলজ্জার বালাই কম। তুমি কিন্তু শরমে মুখ লুকানোর জায়গা নাও পেতে পারো।”
রাগিনী বেশ ভালোই বুঝতে পারল লোকটি এবার ভয়া’নক কাহিনী ঘটিয়ে ফেলতে পারে। সুড়সুড় করে হাঁটা ধরল সে মাথা নুইয়ে। মনও যে টানছে না ট্রেনের দিকে। মনের কথায় শোনা যায়। কোহিনূর মুচকি হাসে। রাগিনীর হাতের লাগেজ নিজের হাতে নেয়। আঁড়চোখে তাকায় রাগিনী। আজ যখন ঘোষণায় কোহিনূর কথাগুলো বলছিল সে উপলব্ধি করেছে তার ভালোবাসা একদম খাঁটি। মানুষটির ভালোবাসা কখনো খাদ ছিল না!
গাড়ির জানালার পাশে একমনে বসে থাকা রাগিনী ভাবছে তার বাবার প্রতিক্রিয়ার কথা। বাবা নামক মানুষটাকেও প্রচণ্ড রকম ভালোবাসে সে। তার কথার অমান্য করে তাকে চিন্তায় ফেলে দিতে সে কখনোই চায় না। কিন্তু তার বাবাও তো তাকে সবসময় বুঝত! হঠাৎ কেন বুঝছে না কে জানে?
পাশেই বসে থাকা রিও আর কোহিনূর রীতিমতো যুদ্ধ করছে। কোহিনূর চাইছে রাগিনীর কাছে গিয়ে একটু বসতে। কিন্তু এই বিড়াল ছানাটা কি তা হতে দিচ্ছে? রাগিনীও ইচ্ছে করে তাদের মাঝে রিও কে রেখে দিয়েছে। কোহিনূর তাকে হাত দিয়ে অন্যপাশে সরিয়ে নিতে চাইলে সামনের পা তুলে হা করে তাকাচ্ছে সে। এমতাবস্থায় সে বিরক্তি হয়ে বলল,
“শোনো রাগিনী, আমাদের বিয়ের পর মোটেও এই ছোটুটাকে আমার বাড়িতে জায়গা দেব না। ওকে তোমার বাড়িতেই রেখে আসবে।”
অন্যমনস্ক হয়ে বসে থাকা রাগিনী কোহিনূরের কথায় সরু চোখে তাকিয়ে বলে উঠল,
“কী শখের বাহার! আমি ওকে নিয়েই যাব।”
কোহিনূর এবার রিও কে তুলতে সক্ষম হয়। তাকে অন্যপাশে রেখে রাগিনীর পাশ ঘেঁষে বসে সে। তাকে আলতো ধা’ক্কা দিয়ে বলে,
“তাহলে স্বীকার করলে আমার বাড়িতে আমার বউ হয়ে যাচ্ছো?”
“সেটা কখন বললাম?”
থতমত খেয়ে বলে রাগিনী। কোহিনূর প্রতিত্তোরে না বলে চুপ রইল কিছু মূহুর্ত। ফের জিজ্ঞেস করল,
“তোমার না দ্যা গ্রেট সিঙ্গার অভিরূপ চৌধুরীর সঙ্গে এঙ্গেজমেন্ট হওয়ার কথা? আমি তো গতকাল তোমার এঙ্গেজমেন্টের লাইভ টেলিকাস্ট দেখব বলে কতক্ষণ ওয়েট করলাম! কিন্তু তেমন তো কিছুই হলো না।”
বলেই একটা হতাশ হওয়ার ভাবভঙ্গি ধরল কোহিনূর। রাগিনী এবার বেশ চটে গেল। কোহিনূরের দিকে ঝাঁঝালো দৃষ্টিতে তাকিয়ে তাকে হাত দিয়ে বাহুতে চাপড় দিয়ে বলল,
“কেমন প্রেমিক পুরুষ আপনি? অন্যের সঙ্গে নিজের প্রেমিকার এঙ্গেজমেন্ট এর লাইভ টেলিকাস্টে দেখার জন্য অপেক্ষা করেন!”
বলতে বলতেই গতকাল রাতের কথাগুলো ভেবে আবারও পানিপূর্ণ হলো রাগিনীর আঁখি জোড়া। তার মাথায় হাত রেখে আলতো করে বুলিয়ে দিয়ে কোহিনূর নিজের কাঁধের সঙ্গে তার মাথা লাগিয়ে দিয়ে বলল,
“আরে বাবা, মজা করছিলাম তো।”
“আপনি প্রেমিক হিসেবে খুবই বা’জে! কোথায় আমার এঙ্গেজমেন্ট শুনে ছোটাছুটি করবেন কী! তা না করে ডোন্ট কেয়ার ভাব ধরে বসে ছিলেন। আজ এলেন তাও দেরি করে।”
কোহিনূর এবার শব্দ করে হেসে দিল। রাগিনীর চিবুক ধরে ঝাঁকিয়ে আদুরে সুরে বলল,
“আমি যে জানতাম তুমি জেদের বশে সব বলেছ। তুমি যে প্রেমিকা হিসেবে নিখুঁত ছিলে। আমি প্রেমিক হিসেবে বা’জে না হয় হলাম একটু। কিন্তু আই প্রমিস, স্বামী হিসেবে সবচেয়ে ভালো স্বামী হয়ে দেখাব!”
রাগিনী এবার খানিকটা লজ্জা পায়। মুখ ঘুরিয়ে নেয়। তারপর দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,
“কিন্তু বাবা…”
“কী হয়েছে তোমার বাবার? প্রত্যাখান করেছেন আমাকে তো? কোনো ব্যাপার না। সকলের উপস্থিতিতে এবং তোমার বাবার অনুমতিতে তোমায় আমি আমার গৃহিণী বানাব। উনার আদেশেই আমি তোমায় আমার বউরানি করতে চাই।”
“যদি রাজি না হয়?”
ছলছল নয়নে তাকিয়ে কাঁপা গলায় প্রশ্ন করল রাগিনী। কোহিনূর তার গাল দুটো দুহাতে ছুঁয়ে বলল,
“ধরে নাও রাজি হয়ে গিয়েছেন।”
“এহেম, এহেম!”
দুজনের এই সুন্দর কথাবার্তার মাঝে এবার মেহরাজের কণ্ঠে তারা দুজনই নড়েচড়ে বসল। মেহরাজ সামনের সিটে গাড়ি ড্রাইভ করছিল। এই অবস্থায় সে স্টিয়ারিং ঘোরাতে ঘোরাতে বলল,
“বলছিলাম যে স্যার, আপনার সামনে একজন সিঙ্গেল আর হতভাগা মানুষ বসে আছে। সেদিকে একটু খেয়াল রাখবেন স্যার প্লিজ!”
কোহিনূর ভ্যাবাচেকা খেয়ে একটু দূরে সরে বসে গাম্ভীর্য ধারণ করে বলল,
“ভালো করে সামনে তাকিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করো মেহরাজ!”
চশমা টেবিলে রেখে চোখটা বুঁজে মাথা হেলে চেয়ারে অন্যমনস্ক হয়ে বসে আছেন রাশেদ সাহেব। কাজে মন বসছে না উনার। পেশেন্টদের সাথে ভালো করে কথাও বলতে পারছেন না। বিরক্তি কাজ করছে। যদিও আজ উনার কাজে আসার কথা ছিল না। তবুও ব্যস্ত থাকলে চিন্তামুক্ত থাকবেন এই ভেবে আজকে নিজের চেম্বারে বসেছেন উনি। তার নিজের বন্ধু নাদিম সাহেবের সঙ্গে সম্পর্কটা বোধহয় আর রইল না। গত রাতে বেশ কথা শুনিয়েছেন উনাকে। এসব আকাশপাতাল চিন্তায় দরজায় টোকা পড়ল। রাশেদ সাহেব তাড়াহুড়ো করে নিজের চশমা চোখে দিলেন। স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করে শুকনো গলায় বললেন,
“ভেতরে আসুন।”
ভেতরে প্রবেশ করল দুজন মহিলা। রাশেদ সাহেব নিচু হয়ে তাকিয়ে ছিলেন। দুজনের উদ্দেশ্যেই তখন বললেন,
“বসুন আপনারা।”
বলেই দুজন মহিলার দিকে তাকালেন রাশেদ সাহেব। প্রথম মহিলার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
“পেশেন্ট কে?”
প্রথম মহিলাটি নির্দ্বিধায় বললেন,
“আমার ছোটো বোন। কয়েকদিন ধরে কেমন কেমন করতেছে ডাক্তার সাহেব। অনেক ডাক্তার দেখাইছি। লাভ হয়নি। আপনার তো অনেক নাম ডাক শুনছি। অনেক আশা নিয়ে আমার বোনটারে নিয়ে আসছি।”
রাশেদ সাহেব মাথা ঘুরিয়ে দ্বিতীয় মহিলাটির দিকে তাকালেন। শিরদাঁড়া সোজা হলো উনার। সমস্ত শরীর শিরশির করে কেঁপে উঠল। চোখে ভুল দেখছেন না তো? চশমাটা একটু নড়াচড়া করলেন। নাহ, সেই একই মুখ। গায়ের লোম শিউরে উঠল এবার। এত বছর পর এই মুখটির দেখা পাবেন কখনোই ভাবেন নি তিনি। বিড়বিড়িয়ে বললেন,
“শামীমা!”
রাশে সাহেবের বলা নামটি কারো কান অবধি গেল না। দ্বিতীয় মহিলাটিও ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলেন কিছুক্ষণ। তারপর চোখে স্পষ্ট ফুটে উঠল অশ্রু! তিনিও যেন আশা করেন নি এই ভদ্রলোকের দেখা আবার কখনো পাবেন। অবিশ্বাস্য লাগল মহিলাটির! লোকটার চেহারার কোনো পরিবর্তন হয়নি তেমন। শুধু চামড়া কুঁচকে গিয়েছে আর চুল পাক ধরেছে। সেই সঙ্গে জুটেছে চোখে চশমা!
চলবে…
[বি.দ্র. ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। যারা কোহিনূর আর রাগিনীর বিয়ের আশা করে আছেন তারা আরেকটু ধৈর্য ধরুন। অপেক্ষার ফল মিষ্টি হয়। গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক।]