গোধূলিলগ্ন ২৬

0
366

উপন্যাসঃ”গোধূলিলগ্ন”
শান্তনা আক্তার
পর্বঃ২৬

পাঁচদিন হতে চলল কিন্তু এখনও পর্যন্ত নুরুল বাড়িতে পা ফেলেনি সেদিনের ঘটনার পর থেকে।কোথায় আছে না আছে সেই ব্যাপারে মিতু কোনরূপ খোঁজ নেয়নি। সে তার মেয়েকে নিয়ে সর্বক্ষণ ব্যতিব্যস্ত হয়ে থাকে। এ নিয়ে রোজ নিয়ম করে মছিদা তার তীর্যক কথার বাণ দ্বারা শাসিয়ে যান মিতুকে। মিতু বেশিরভাগ সময় তা অগ্রাহ্য করে। কখনো বা মছিদার কিছু কথার পিঠে মুখ খুলে প্রতিবাদ জানায়।
দুপুরের জলন্ত উত্তাপ কাটিয়ে গগনে সিঁদুর রাঙা প্রলেপ দখল করে আছে। হালকা বাতাসের তোড়ে এক গাছের ডালপালা অন্য গাছে গিয়ে মিশে যাচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে। মিতু মায়াকে জোরপূর্বক ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। মায়া মোটেও ঘুমোতে চাচ্ছে না। একটা সময় মিতু জোড়ালো ধমক প্রয়োগ করল। ‘এত নড়ানড়ি করলে ঘুম আইবো তোর চোখে? চুপচাপ আমার বুকের মইধ্যে মাথাখান দিয়া ঘুমাইতে পারোস না?’

মায়া ঠোঁট উল্টে বলল, ‘ঘুমাইতাম না। ভাল্লাগে না।’

‘না লাগলেও ঘুমাইতে হইব। প্রতিডা দিন তোর ঘুম নিয়া কাহিনি৷ চুপচাপ ঘুমা কইতাছি।’

‘আমার মন চাইতাছে না ঘুমাইতে। আমি ঘুমামু না।’

মিতু কপাল কুঞ্চিত করে বলল, ‘তোর কবে ঘুমাইতে মন চায়? আর একটাও কথা কইলে আমি যামুগা তোরে ছাইড়া। আর মা ডাকতে পারবি না আমারে। তারপর তোর বাজান আর দাদী তোরে একলা পাইয়া যহন মারবো, তহন বুঝবি।’

মায়ার চোখ উপচে পড়ে পানিতে। চোখের পানি গড়িয়ে পড়তেই শব্দ করে কেঁদে ফেলল। মিতুর কোলে ঢুকে গিয়ে বলল, ‘আমারে ছাইড়া যাইও না আম্মু। আমারে নিয়া যাইবা যেইহানেই যাও।’

মিতু মেয়ের মাথায় চুমু এঁকে বলে, ‘না,না। আমার মায়ারে রাইখ্যা আমি কোনহানে যামু না। আমার কলিজা তুই। তোরে ছাড়া কেমনে থাকুম ক আমারে? তুইতো আমা….’

হঠাৎ দরজায় ঠকঠক শব্দ হতেই কথা অসম্পূর্ণ রেখে থেমে গেল মিতু। সাথে ভয়ও পেল। ভাবছে নুরুল এসেছে বোধয়। মায়াও তাই মনে করে মিতুর বুকের সঙ্গে আরো ঘনিষ্ঠ হয়ে লেপ্টে গেল। পারলে বুকের মধ্যে ঢুকে গিয়ে লুকিয়ে পড়তো। মিতু গলা উঁচিয়ে সন্দিহান কন্ঠে বলল, ‘কে? কে দরজায় ঠকঠকানী দিতাছে?’

দরজার ওপাশ থেকে আওয়াজ আসল,
‘আন্টি দরজা খুলুন, আমি মণি।’

মণির কন্ঠ পেয়ে মায়া এক লাফে মিতুর কোল ছেড়ে উঠে বসে। ঝড়ের গতিতে দরজার কাছে গিয়ে বলে,
‘মণি তুই আইছোস আমার ধারে!’

মণি বলল, ‘হুম, দরজা খোল।’

মায়া দরজার নব ঘুরায়। কিন্তু উপর থেকে ছিটকিনি লাগানো থাকায় খুলতে পারেনা। ছিটকিনি অবধি পৌঁছাতে না পেরে চেয়ার আনতে যায়। মিতু বুঝতে পেরে উঠে গিয়ে দরজা খোলে। মণি মিতুর পাশ কেটে ভেতরে ঢুকে প্রফুল্লচিত্তে ছুটে গিয়ে মায়াকে জড়িয়ে ধরল। সাথে বলল, ‘আম্মু ঘুমাচ্ছে। তোর কাছে আসতে দেয়না। লুকিয়ে আসছি তোর সাথে খেলতে।’

মায়া উপচে পড়া আনন্দসমেত বলল,
‘চল খেলি! তোর সাথে কতদিন খেলিনা আমি।’

মায়া ও মণি একে অপরের গলা জড়িয়ে কত কথাই না বলল একাধারে। মিতু এক দৃষ্টিতে চেয়ে রইল ওদের পানে৷ হঠাৎ চোখের কার্ণিশে দুর্বোধ্য রহস্যের অস্তিত্ব অনুভব হতেই অস্ফুটস্বরে উচ্চারণ করল, ‘নয়না!’
***
”ওই যে আধার রাত, সে রাতের কারণ কি জানো?
আমার চোখ বলে, সে রাত যেন তোমার টানা দু’চোখের কাজল।
যে কাজল পাহারা দেয়, সমস্ত তারাদের ছাড়িয়ে তোমার ওই চাঁদবদন মুখ।
যে মুখ কেড়ে নেয় আমার মন,প্রাণ ও চিবুক৷
আমি রাত ভালোবাসি, রাতের আধারে শুনতে পাবে আমার হাসাহাসি।
আমি রাতের নিশাচর পাখি, চাঁদের ছোঁয়া পাইনা বলে চাঁদের আলো মাখি।
আমায় নিকষকালো অন্ধকার বেশ টানে, কারণ সেই জানে, আমার বেঁচে থাকার মানে।
তুমি দুরন্ত এলোকেশী, ও কেশে মুখ ডোবালে রাতের আধারে ভাসি।
ও রাত, তুমি কষ্ট দিওনা আমার চাঁদকে,
সে কষ্ট পেলে যে হুতুমপেঁচারাও কাঁদে,
যে কান্নায়, সমস্ত ধরণী কাঁপে।
আমি তোমার ভরসায় তাকে ছেড়েছি, তুমি সর্বদাই দেখে রেখো তাকে,
শুধু জেনে রেখো, আমার শূন্য কুঠুরি তাকে ঘিরেই বাঁচে।”

‘আমি বিমোহিত! আপনি কিভাবে এগুলো লিখেন বলুনতো? সারাদিন এত কাজের ভীড়েও, ফেসবুকে লিখালিখির সময় পান কোথায়?’

কাব্য একগাল হেসে বলল, ‘সময় লাগে নাতো। একটুও সময় লাগে না।’

‘সময় লাগে না!’ আশ্চর্যান্বিত হয়ে বললেন রাত্রি।

‘না, একটুও সময় লাগে না। লিখতে বসলে শব্দগুলো চোখে ভাসে। সেগুলো ধরেই লিখে ফেলি। সর্বোচ্চ ৫-১০ মিনিট ব্যয় হয় মাত্র।’

‘স্ট্রেঞ্জ! আপনি সত্যিই অসাধারণ এক মানুষ। আপনার কাজকর্ম,আচার-আচরণই তার জলজ্যান্ত প্রমাণ স্যার। বলা বাহুল্য, কবির খেতাব পেতে বেশিদিন সময় লাগবে না আপনার।’

রাত্রি কথাটা শেষ করার সাথে সাথে কাব্য বলে ওঠে,
‘আমার তা জানা নেই। তবে যাই করি না কেন, মন থেকে করি।’

‘আপনি অত্যন্ত ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এক পুরুষ। আপনার সাথে বিগত একটি বছর ধরে কাজ করছি। কাজের সূত্রে হলেও,আপনাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। আশা করি আপনিও আমাকে খুব ভালো করেই চেনেন।’

কাব্য শান্ত গলায় বলল, ‘জ্বি, তাইতো আপনার সাথে জীবনের সবচেয়ে বড়ো অংশটা শেয়ার করেছি।’

‘সেদিন আপনার অতীত জানতে পেরে আমি নিজেকে ভাগ্যবতী বলে মনে করছি। আমার সৌভাগ্য আছে বলেই আপনি আমার সঙ্গে এত বড়ো একটা বিষয় শেয়ার করেছিলেন।’ বলল রাত্রি।

কিছুক্ষণ পিনপতন নীরবতা ধরে রইল দুজন। নিস্তব্ধতা ভেঙে হঠাৎ রাত্রি জিজ্ঞেস করে,
‘আপনি আর কতদিন এভাবে মিতুর স্মৃতিকে ঘিরে বেঁচে থাকবেন?’

কাব্য স্মিত হাসি দিয়ে বলল, ‘আপনি না কিছুক্ষণ আগে বললেন কবির খেতাব পেতে বেশি সময় লাগবে না?’ পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিল কাব্য।

‘হু, তো?’

‘আমার কলমের কালি শুধুই মিতুবুড়িকে খোঁজে। সেই কালির প্রতিটি শব্দ আমার মিতুবুড়িকে ঘিরে। মিতুবুড়ির জন্যই লেখালেখি। ভাবনার জগতে ছোটাছুটি। যবে থেকে মিতুবুড়িকে জীবনের সাথে জড়িয়েছি, ঠিক তবে থেকেই লেখালেখির নেশাটা আমাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরেছে। খুব ছোটবেলা থেকেই লেখার প্রতি টান রয়েছে।’ কথা শেষে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল কাব্য। এরপর পুনরায় বলল,
‘আমি একজন ব্যর্থ প্রেমিক। যার জীবন ছেয়ে গেছে ব্যর্থতার মিছিলে।’

‘আপনার মতো ছেলেকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাওয়া সত্যি ভাগ্যের ব্যাপার। আপনি চোখের পলকেই যেকোনো মেয়ের হৃদয় কাড়তে পারবেন। আপনার স্ত্রী হওয়ার জন্য সাধনা করা লাগবে যে-কারোই। আপনার মনে জায়গা করতে অলৌকিক শক্তির প্রয়োজন।’

‘ভুল বললেন রাত্রি। আমি খুবই অযোগ্য, নিকৃষ্ট। তাইতো নিজের ভালবাসার মানুষটিকে ধরে রাখতে পারলাম না। আমার মনে জায়গা খালি নেই। সবটা জুড়ে আমার মিতুরবুড়ির রাজত্ব।’

রাত্রি আহত হলো। তার শিরা-উপশিরায় হাহাকারের বন্যা বইতে লাগল। নিজেকে ধাতস্থ করে বলল,
‘এভাবে কেন বললেন? আপনি অযোগ্য নন। আপনার ভাগ্যে ছিলনা বলে মিতুকে আটকাতে পারেননি। অবশ্য এতে মিতুর কোনো দোষ নেই। তখন সে অবুঝ একটা মেয়ে ছিল। সেই মহূর্তে ভালো-মন্দ বিচারের বোধবুদ্ধি ছিলনা তার। সব দোষ তার লোভী পিতা-মাতার। হামাগুড়ি দেওয়া বাচ্চারা আগুন চিনে না। আগুনে শরীর দগ্ধ হয়ে ছাই হয়ে যায়, এটা তারা জানে না। তাদের জানানোর দায়িত্ব পিতা-মাতার বা অন্যান্য বড়োদের। ঠিক সেভাবে মিতু বিয়ে জিনিসটা বোঝার আগেই তার উপর জুলুম করা হয়েছে।তাকে ধাক্কা মেরে নরকে ফেলা হয়েছে স্যার!’

‘আমিও জানি সেটা। তবে মেনে নিতে খুবই কষ্ট হয়। এখনো আমার মন চায় মিতুবুড়িকে। আমি চোখ বুজলে মিতুর সাথে কাটানো মুহুর্তগুলো দেখতে পাই। শুধুমাত্র আব্বুর আদেশের দড়ি বেঁধে রেখেছে আমায়। আমি যে মুক্ত হয়েও বাঁধাপ্রাপ্ত।

‘তবে আপনার বাবা কিন্তু যা করেছে আপনার ভালোর জন্যই করেছে। আজ আপনি প্রতিষ্ঠিত একজন সাংবাদিক। সততার সঙ্গে কাজ করছেন। জীবনের ভয় না করে বিপদের মধ্যে ঢুকে যেতে দেখেছি আপনাকে। ঝড়,তুফান,আগুন,বৃষ্টি দ্বারা সৃষ্ট যেকোনো দুর্যোগেই আপনি ছিলেন অনড়, অটুট ও সাহসী। কত মানুষকে ন্যায় বিচার দেওয়ার জন্য দিন-রাত এক করে দিয়েছেন। না খেয়ে লড়াই করেছেন। যতক্ষণ না সফল হয়েছেন,ততক্ষণ এক ফোঁটা পানিও গলা দিয়ে যায়নি আপনার। আমি তা নিজের চোখে দেখেছি মিস্টার কাব্য। এর পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান সৃষ্টিকর্তার পরে শুধুই আপনার বাবার। তিনি কষ্ট করে আপনাকে লেখাপড়া করিয়ে এই আজকের আপনিতে পরিণত করেছে। শুধু যে টাকা পয়সা ঢেলেছে তা নয়, সঠিক শিক্ষা দান করেছে আপনার মধ্যে। আপনার বাবা জানে মিতুকে চোখের সামনে দেখলে আপনার অনেক কষ্ট হবে। আপনি ভেঙে পড়বেন। তাই আপনাকে যেতে দেননা মিতুর কাছে। আপনাকে এসব বুঝতে হবে মিস্টার কাব্য।’

রাত্রির কথার মাঝে কাব্য বাঁধা দিল না। চুপটি করে শুনে গেল সব। কাব্য জানে রাত্রির প্রতিটি কথাই যুক্তিসঙ্গত। তাই বাঁধা দেওয়ার দুঃসাহস দেখালো না। কাব্য প্রসঙ্গ বদলাতে বলল,
‘কিন্তু এখন কি হবে রাত্রি? সকল বাঁধা বিপত্তি যে আর কাজে দেবে না।’

রাত্রি ভ্রু উঁচিয়ে চাইল কাব্যর দিকে৷ কৌতূহলী চোখে বলল, ‘বুঝলাম না ঠিক।’

কাব্য দু কদম পিছিয়ে নিজের চেয়ারটায় গিয়ে হেলান দিয়ে বসল। তারপর বলল,
‘ভুলে গেলেন? তিন দিন পর আমাদের ঝিকাতুলির উদ্দেশ্যে রওনা হতে হবে কাজের সূত্রে।’

‘ও হ্যাঁ, আমার তো মনেই ছিলনা! আচ্ছা আপনি তো বলেছিলেন ঝিকাতুলি আপনার পৈত্রিক নিবাস। তাইনা স্যার?’

‘ঠিক বলেছেন রাত্রি। তবে ঝিকাতুলি কেবল আমার পৈত্রিক নিবাস নয়। ঝিকাতুলি আমার ছেলেবেলা। আমার বেড়ে ওঠার সঙ্গী সেই ঝিকাতুলি গ্রাম। অনেকগুলো বছর যাওয়া হয়না সেখানে। অনেকদিন স্বস্তির নিশ্বাস নেওয়া হয়না। শহরের কালো ধোঁয়ার স্বাদ নিতে খুবই কষ্ট হয়। প্রাণখোলা সেই আবহাওয়ার সন্ধান পাইনা কতকাল! যাই হোক, আপনি বলুন আমার জন্য কোনটা সমীচীন হবে। সেখানে গেলেই তো মিতুবুড়ির কথা মনে পড়বে আমার। আমি এখন কি করবো?’

‘ঠিক বলেছেন। আপনি তাহলে স্যারকে মানা করে দিন। আমাদের বদলে অন্য কোনো সাংবাদিক যাবে নাহয়।’ বলল রাত্রি।

‘আপনি কি ভাবছেন আমি মানা করিনি? আমি হাজারবার বলেছি অন্য কাউকে পাঠানোর কথা। কিন্তু স্যার রাজী হলেন না কোনভাবেই। স্যার বললেন আমিই নাকি পারবো এই কাজটা।’

‘হু, ইমদাদ হোসেন স্যার আপনাকে খুব বিশ্বাস করে। তাই সকল গুরুত্বপূর্ণ কাজে আপনাকেই পাঠান। তবে কাজটা কি? কিসের রিপোর্ট করতে যাব আমরা? জেনেছেন কি?’

‘গ্রামীণ অজপাড়া গাঁয়ে কি কি অভাব রয়েছে তা তুলে ধরার জন্য। যেমনঃ শিক্ষা ব্যবস্থা, চিকিৎসা সেবা,আইনগত সেবা ঠিকমতো পাচ্ছে কিনা এসব। সাথে মেয়েদের অকালে বিয়ে দিচ্ছে বা মেয়ে পক্ষ থেকে জোরপূর্বক যৌতুক আদায়,নির্যাতিত নারীদের জীবন তুলে ধরা। এছাড়া গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং অন্যান্য সদস্যরা জনহিতকর কার্যে কতটা সক্রিয় তা শনাক্ত করা। এক কথায় গ্রামের লোকেদের সকল অসুবিধাসমূহ জনসম্মুখে তুলে ধরার জন্যই যাওয়া মূলত। এতে তারা যদি সব ধরনের সুযোগ সুবিধা ও সুশাসন পায়। আর এটাই হচ্ছে মূল লক্ষ্য।’

‘কাজটা খুব ভালো। তবে স্যার, আমাদের কি বাড়ি বাড়ি ঘুরতে হবে এর জন্য?’

কাব্য বলল, ‘হুম তাতো হবেই।’

‘ফলে যদি মিতুর সাথে দেখা হয়ে যায় আপনার?’

‘হবে না। কারণ মিতুবুড়ি তার শ্বশুরবাড়িতে। সেটা অন্যগ্রামে। দেখা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। দেখা হয়ে গেলে তখন আমি জানি না কি করবো। তাই সঠিক বলতে পারলাম না। হতে পারে আমি দেখা করার জন্য মিতুবুড়ির শ্বশুর বাড়ি অবধি পৌঁছেও গেলাম। মিতুবুড়ির বেলায় নিজের প্রতি বিশ্বাস আসে না আমার।’

রাত্রি কিছু সময় ভেবে বলল,
‘তবে আপনার বাবা যদি আপনাকে যেতে না দেন, তখন?’

কাব্য বলল, ‘আব্বুর সাথে আমার কথা হয়েছে। প্রথমে নিষেধ করলেও, পরবর্তীতে রাজী হয়ে যান তিনি।’

রাত্রি জিজ্ঞাসুক দৃষ্টি মেলে বলে,
‘সব জেনেও? আপনার বাবা তো আপনাকে ঝিকাতুলি যেতে নিষেধ করেছেন। তাহলে রাজী হলেন কেন?’

‘আমি যে কাজের জন্য যাচ্ছি সেটা আব্বুর পছন্দ হয়েছে। তাই নির্দ্বিধায় রাজী হয়ে যান। আমার বিশ্বাস ছিল,সবটা শুনলে আব্বু রাজী হবেই হবে। দেখুন তাই হলো।’

‘হুম,তাহলে আর কি? ভালোই হলো।’

‘জ্বি,আপনার কাজ শেষ যখন যেতে পারেন।’

‘আপনি যাবেন না স্যার?’

‘আমার আরেকটু কাজ আছে। সেটা শেষ করেই যাচ্ছি।’

‘ও,ঠিক আছে। কিন্তু আমরা কতদিন থাকছি গ্রামে?’

‘সপ্তাহ খানেক। তারপরও আমি শিওর নই৷ তাছাড়া ইমদাদ হোসেন স্যার বলেছে জানাবে কখন ফিরতে হবে।’

‘ডান, আগামীকাল দেখা হচ্ছে তাহলে।’ শেষে ‘বায়’ বলে চলে যায় রাত্রি।
চলবে ইনশাআল্লাহ…

বিঃদ্রঃ উপন্যাসটি আগে থেকেই লিখা আছে। আমি কিছু জিনিস যোগ করে অথবা বিয়োগ করে আপলোড দেই। তাও ঘন্টা খানেক সময় চলে যায়। সম্পূর্ণ এবং নতুন কিছু লিখতে গেলে হয়তো বেশ ভালো সময় লাগতো। যা আমার কাছে নেই। তবে লিখা আছে বিধায় সময়টা কম লাগছে। গত দুইদিন ঘুরাঘুরি করে উপন্যাসে হাত দেওয়া হয়নি। ফলে আমি দুঃখিত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here